#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_45
কপি নিষিদ্ধ ❌
তিশা হেটে ওসমানের কেবিনের সামনে যায়,
ও নক না করেই দরজা খুলে দেখে ওসমান কপালে আঙ্গুল ঠেকিয়ে বসে আছে তিশা দরজা লক করে ওর সামনে যেয়ে দাঁড়ায়,ওসমান কারো উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ তুলে তাকায়,
তুমি!
হ্যাঁ আমি।
তিশা একটা চেয়ার নিয়ে ওসমানের পাশে বসে।
তুমি কেন এসেছো?
আমি জানি আমার হাসবেন্ডজ্বী এখনো অব্দি কিছু খায়নি তাই আমি আমার হাসবেন্ডজ্বীর জন্য খাবার নিয়ে এসেছি।
দেখো তিশা আমি হসপিটালে সিন ক্রিয়েট করতে চাই না,তুমি বাসায় চলে যাও।
বললেই হলো না কি,আজ আমরা দুজন এক সাথে লান্চ করবো,আর আমি জানি এটা হসপিটাল আর তুমি তোমার হসপিটালে তোমার বউকে অপমাণ করবে না,তাই আর কথা না বারিয়ে চুপ চাপ খেতে বসো।
তিশা তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো।
হ্যাঁ করছি তো কি হয়েছে,আমার কাছে তোমার হেল্থ সবার আগে এভাবে সব সময় বাহিরের খাবার খেলে অসুস্থ হয়ে পরবে,আর তুমি না ডক্টর,ডক্টর হয়ে এতোটা কেয়ারলেস হলে চলবে?
এখন কথা না বারিয়ে চুপচাপ হাত মুখ ধুয়ে এসো।
ওসমান বুঝে গেছে ওর সাথে কথা বারিয়ে লাভ নেই,
তিশা ওকে না খাইয়ে এক পাও নড়বে না।
ওসমান আর কিছু না বলে ওয়াশরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে আসে,তিশা হাত ধুয়ে খাবার মেখে ওসমানের মুখের সামনে ধরে,
ভালো মতো হা করবে না কি সকালের মতো করবো?
ওসমান কিছু না বলে হা করে।
তিশা ওকে খাইয়ে দিচ্ছে নিজেও খাচ্ছে।
খাওয়া শেষে তিশা সব কিছু গুছিয়ে নেয়।
ওসমান বসে বসে পেশেন্টদের রিপোর্ট দেখছে,
আর তিশা গালে হাত দিয়ে ওসমানকে দেখছে।
আচ্ছা ওসমান কি করেছি আমি,কোন ভুলের শা’স্তি দিচ্ছো?
তুমি কোনো ভুল করো নি।
তবে কেন এমন করছো,তুমি তো এমন ছিলে না।
তোমাকে একটা কথা আর কতো বার বলবো,
আমার তোমাকে স’হ্য হয় না,ঘৃণা করি তোমাকে।
আচ্ছা ঘৃণা করো তো ঠিক আছে,আমার সাথে যা
ইচ্ছে করো সমস্যা নেই,কিন্তু প্লিজ সবার সামনে ভালো থাকার অভিনয় করো,বাবা,মামনি,ওমর,আয়েশা সবাই তোমাকে নিয়ে টেনশন করে,আমাকে নাহয় ঘৃণা করো ওদের তো ভালোবাসো,ওদের জন্য না হয় একটু অভিনয় করলে।
কি করবো আমি?
শুধু খাবারের টাইম টা বাসায় থেকো তাহলেই হবে,
সবার কথা মাথায় রেখে একটু না হয় অভিনয় করো।
ঠিক আছে করবো অভিনয় কেবলমাত্র আমার ফেমিলির জন্য,তুমি এখন যাও আমার কাজ আছে,
আর হ্যাঁ আজ রাতে আমি বাসায় আসবো না।
তিশা কিছু না বলে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়,
ও টেক্সিতে করে বাসায় চলে আসে।
তিশা হাটুতে মুখ গুঁজে কান্না করছে,কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলে গেছে,
না আমি হয়তো পারবো না তোমাকে আগের রুপে ফিরিয়ে আনতে,তুমি আমাকে এতোটাই ঘৃণা করো যে আমার মুখও দেখতে চাও না,তোমার আমাকে স’হ্য হয় না।জানি না কেন করছো এমন,তোমার সামনে নিজেকে শক্ত দেখালেও ভেতরে ভেতরে আমি ভে’ঙ্গে চুরমার হয়ে গেছি,আমি জানি না তোমার কি হয়েছে,
কি কারণে এমন করছো,সবার সামনে না হয় সুখের থাকার অভিনয় করি,এতে যদি একটু শান্তি মিলে।
তিশার কানে মাগরিবের আযানের শব্দ আসে ও চোখ মুছে,ওযু করে এসে,নামাজ পড়ে নেয়,মোনাজাতে,
তিশার চোখ থেকে অঝোর ধারায় জল পরছে,
তিশা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে,
“আল্লাহ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,আল্লাহ আমি যে আর স’হ্য করতে পারছি না,আপনি তো সব দেখছেন,সব শুনছেন,সব জানেন।আমার হাহাকার,আমার চিৎকার,
আমার কান্না সবই তো আপনি দেখছেন,আল্লাহ আমি এতোটাও দূর্বল না কিন্তু এবার যে আমি ভে’ঙ্গে পরেছি,
আমি আর নিজেকে শক্ত রাখতে পারছি না,আল্লাহ আমি শান্তিতে নেই,আমার মনের ভিতর অশান্তির আ’গু’ন জ্ব’লছে।আল্লাহ এই ইহকালে পরকালে আপনিই তো সব,কেবল মাএ আপনাকেই পাশে পাবো।
আল্লাহ আমি জানি আপনি উওম পরিকল্পনাকারী।আমরা যদি একটা ফুল চাই আপনি আমাদের শত শত ফুলের বাগান দান করেন,এবং আপনি যা করেন বান্দার ভালোর জন্যই করেন।কখনো আপনি ব্যতীত অন্য কারো সামনে হাত পাতিনি,কখনো কারো কাছে সাহায্য চাইনি,আমি সব সময় আপনার উপর ভরসা রেখেছি আর আপনিও আমাকে নিরাশ করেন নি।
আল্লাহ আমি আপনার কাছে অভিযোগ করবো না,
ভিক্ষা চাইবো,আল্লাহ আমি আমার ওসমানকে ভিক্ষা চাই।আল্লাহ আপনি আমার ওসমানকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন,আমি না জানলেও আপনি তো জানে ও কেন এমন করছে।আল্লাহ আপনার কাছে আপনার বান্দা কোনো কিছু চাইলে আপনি তো তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না,আমাকেও আপনি খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েন না,আল্লাহ আপনি আমাকে এই বি’পদ থেকে মুক্ত করুন,মুক্ত করুন,আমিন”।
চোখের জলে তিশার হিজাব ভিজে গেছে,
জায়নামাজের উপর পরেছে কয়েকশো অশ্রু কণা,
তিশার এতো কান্নার বিনিময়ে আল্লাহ কি ওকে খালি হাতে ফিরিে দিবেন?
হয়তো না,কেনো না আল্লাহ বান্দার আ’র্ত’নাদ শুনতে পান,আল্লাহ বান্দার চাওয়া কখনো অপূর্ণ রাখেন না একদিন না একদিন ঠিকই পূরণ করেন।আর মানুষ তাই পায় যা সে চায়।
তিশা রাতে খাবার খায়নি,বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ওসমানের অপেক্ষা করেছে,ও জানে আজ ওসমান বাড়ি ফিরবে না তবুও অপেক্ষা করছে,সারারাত পার হয়ে যায় তিশা দু চোখের পাতা এক করতে পারে নি,
নিদ্রাহীন রাত কাটিয়েছে নিজের প্রিয় মানুষটার অপেক্ষায়,ভোর ৫ টার দিকে তিশার চোখে ঘুম চলে আসে,ও হেলান দিয়ে বসা অবস্থায় ঘুমিয়ে পরে।
তিশার ঘুম ভা’ঙ্গে ১০ টার দিকে,তিশা চোখ মেলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১০টা বাজে,ও বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেস হয়ে আসে,ওসমান এখনও বাসায় ফিরেনি।
ওর মাথা ব্যাথা করছিল তাই এক কাপ চা বানিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে,বারান্দায় আসতেই ওর মন বিষণ্ণতায় ভরে উঠে,এই ছোট বারান্দায় ওদের হাজারো স্মৃতি রয়েছে,স্মৃতি গুলো মনে পরতেই তিশার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরে।
১২ টায় তিশা রান্নাঘরে রান্না করছিলো,ও রান্নাঘর থেকে দরজা খোলার শব্দ পায়।ও রান্নাঘর থেকে উকি মেড়ে দেখে ওসমান সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছে,তা দেখে তিশা আবারও রান্না করায় মন দেয়।
যোহরের আযান দেয় তিশার রান্নাও শেষ হয়,ও সব খাবার টেবিলের উপর সাজিয়ে রেখে রুমে চলে যায়,
রুমে এসে দেখে ওসমান বিছানায় হেলান দিয়ে ফোন চালাচ্ছে।তিশা ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসে।
ওসমান রান্না শেষ,খেতে আসো।
তিশা কথাটা বলে রুম থেকে চলে আসে,ওসমানও একটু পর নিচে এসে চেয়ার টেনে বসে পরে,তিশা খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে,কেউ কোনো কথা বলছে না,
ওরা দুজন একসাথে বসে খাবার খেয়ে নেয়,
ওসমান কিছুক্ষণ রেস্ট করে হসপিটালে চলে যায়।
তিশা ৭ টার দিকে রান্নাঘরে যেয়ে রান্নার কাজ শুরু করে দেয়,আর কিছুক্ষণ পর অবান্তিকা,ওমর,আয়েশা চলে আসবে,ওয়াহিদ কাল আসবে।
তিশা ওদের জন্য রান্না করছে।
৯ টার দিকে রান্না শেষ হয়।
নয়টা পনেরোতে ওমর আয়েশা চলে আসে,সাড়ে নয়টায় অবান্তিকা আর ওসমান চলে আসে,ওরা ফ্রেস হয়ে এসে একসাথে খেতে বসে,কথা বলছে, হাসাহাসি করছে আর খাবার খাচ্ছে,সবাই হাসিখুশি।তিশা সবার দিকে তাকিয়ে ভাবে আজ কতো দিন পর সবাই এভাবে একসাথে বসে খাবার খাচ্ছে।
আজ এক সপ্তাহ যাবত তিশা ওসমান সবার সামনে হ্যাপি থাকার অভিনয় করছে,ওরা সবার সাথে নরমাল বিহেব করছে,ওসমান এখন সবার সাথে বসে ব্রেকফাস্ট,লান্চ,ডিনার করে।সবার মনে ওদের জন্য জন্মে থাকা চিন্তার রেশ কেটে গেছে,ওসমান তিশা সবার সামনে সুখে থাকার অভিনয় করলেও রুমে চার দেয়ালের মাঝে ওদের দুরুত্ব বেরেই চলেছে,প্রতিটি রাত তিশা অশ্রু বি’স’র্জন করেছে,সুখে নেই ওরা,সুখে নেই।
আজ সকালে,
ওসমান,ওয়াহিদের ওটি থাকায় ওরা খুব সকালে বাসা থেকে বের হয়েছে।
তিশা,অবান্তিকা,ওমর,আয়েশা একসাথে নাস্তা করছে।
ওমর নাস্তা শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুলবে তখনই তিশা ওর সামনে যেয়ে দাঁড়ায়,
চলবে কি?
[কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন,কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_46
কপি নিষিদ্ধ ❌
ওমর নাস্তা শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুলবে তখনই তিশা ওর সামনে যেয়ে দাঁড়ায়,
দেবরজ্বী তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে।
হ্যাঁ ভাবিজ্বী বলো।
বাড়িতে বলা যাবে না,আমাদের অন্য কোথাও যেয়ে কথা বলতে হবে,তুমি কি ৫ টার দিকে বিজি থাকবে?
না আজ শুধু একটা ওটি আছে আমি দুপরের পরই ফ্রি থাকবো।
আচ্ছা ৫ টার দিকে আমরা একটা কফিশপে বসে কথা বলবো।
আচ্ছা,সিরিয়াস কিছু?
না ততোটাও সিরিয়াস কিছু না,তুমি এখন হসপিটালে যাও।
আচ্ছা ঠিক আছে।
ওমর দরজা খুলে বের হয়।
তিশা দরজা লাগিয়ে ওর রুমে চলে আসে।ও বসে বসে ওর আর ওসমানের ছবি দেখছে,ছবিতে ওদের কতো সুন্দর লাগছে,কতো হ্যাপি দেখাচ্ছে,ওরা তো এখন আর আগের মতন নেই,আগের মতন ভালোবাসা নেই,
আগের মতো হাসিখুশি নেই,আগের মতো শান্তিতে নেই,
কিছুই যে আর আগের মতো নেই,সব জেনো ধোঁয়াশা ভরা।ওদের এই সুখের সংসারে কার নজর লাগলো?
তিশা রান্নাঘরে এসে রান্না করায় মন দেয়,অবান্তিকা আয়েশা অন্য আইটেম রান্না করছে,এক সাথে কাজ করায় খুব অল্প সময়ে রান্নার কাজ শেষ হয়।
দুপরে সবাই একসাথে খেতে বসে,ওমর তিশা মুখো মুখি বসে আছে,খাওয়ার মাঝে ওরা একজন আরেকজনের দিকে তাকায়,তিশা ওমরকে চোখ দিয়ে কিছু ইশারা করে,ওমরও যে তিশার ইশারা বুঝে গেছে তা ওমর চোখের পলক ফেলে বুঝায়,আর ওদের এই ইশারায় ইশারায় কথা কারো চোখে না পরলেও ওসমানের চোখকে ফাঁকি দিতে পারে নি।তবুও ওসমান আর ওদের দিকে না তাকিয়ে খাওয়ায় মন দেয়।সবাই হাসি মজা করে খাবারটা শেষ করে।ওসমান,ওমর,ওয়াহিদ আবারও হসপিটালে চলে যায়।
৪:৩০ টায়,
তিশা ড্রেস চেন্জ করে,মাথায় হিজাব বাঁধছে,
আজ আকাশী কালারের থ্রি পিসের সাথে সাদা হিজাব পরেছে,ও রেডি হয়ে ওমরকে কল করে,
হ্যাঁ ভাবিজ্বী।
তোমার কাজ শেষ?
হ্যাঁ,তুমি বের হয়েছো?
রেডি হলাম এখন বের হবো,তুমিও হসপিটাল থেকে বেরিয়ে পরো।
আচ্ছা।
তিশা কল কেটে হাতে ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বের হয়।
বাহিরে যাওয়ার জন্য দরজা খুলবে তখন আয়েশা ওকে পেছন থেকে ডাক দেয়,
তিশা কোথায় যাচ্ছিস?
ওসমানের সাথে একটু বাহিরে যাবো।
ওহ,এখন কি ভাইয়ার কাছে যাবি?
হুম আগে হসপিটালে যাবো,তারপর সেখান থেকে একসাথে বের হবো।
আচ্ছা,সাবধানে যা।
হুম।
তিশা দরজা খুলে বের হয়,আয়েশা দরজা লাগিয়ে রুমে চলে আসে।
তিশা টেক্সিতে করে যাচ্ছে,ওমরও হসপিটাল থেকে বের হয়েছে।
বিকেল ৫ টা,
ওমর তিশা কফিশপে বসে আছে,
ওমর একটু কফি খেয়ে বলে,
ভাবি বলো কি বলবে।
তিশাও কফিতে চুমুক দিয়ে বলে,
কথাটা আমার হেল্থ নিয়ে।
কি হয়েছে তোমার?
বেশ কিছু দিন ধরেই মাথাটা ভিষণ ব্যাথা করে,মাথা ভার হয়ে থাকে,প্রায় সময় মাথা ব্যাথা হলে ঘাড়ের র’গ ফুলে উঠে,মাঝেমাঝে চোখেও ঝাপসা ঝাপসা দেখি ইভেন প্রচুর মাথা ঘুরায় মনে হয় যেন এখনই পরে যাবো।
তুমি কি কোনো কিছু নিয়ে টেনশন করছো?
হুম একটা ব্যাপার নিয়ে খুব টেনশনে আছি।
বমি বমি ভাব হয়?মানে বমি আসে না কিন্তু মনে হয় বমি আসবে।
হ্যাঁ এমনটাও হয়,আর যখন বমি করি তখন মনে হয় যেনো এখনই ঘাড়ের র’গ ছিঁ’ড়ে যাবে।
আচ্ছা তোমার মাথা ব্যাথা,মাথা ঘুরানো,ঘাড়ের র’গ ফুলে উঠা,মাথা ভার হওয়া,বমি বমি ভাব হওয়া,চোখে ঝাপসা দেখা এগুলো কতো দিন ধরে হচ্ছে।
প্রায় ২/৩ মাস ধরে এমনটা হচ্ছে,কিন্তু চোখে ঝাপসা দেখছি এক সপ্তাহ হবে,মানে সব সময় চোখে ঝাপসা দেখি না,মাঝে মাঝে ঝাপসা দেখি।
ওমর একটু চিন্তিত স্বরে বলে,
ভাবি তোমার ইমিডিয়েটলি চেকআপ করা উচিত।
ওমর সিরিয়াস কিছু কি হয়েছে?
ব্যাপারটা সিরিয়াসই তুমি যা যা বললে এসবই ব্রেন স্টো’কের লক্ষণ এরকম পেশেন্ট যে কোনো সময় ব্রেন স্টো’ক করতে পারে,আচ্ছা তুমি কি এই ব্যাপার গুলো ভাইয়াকে জানিয়েছো?
না তোমার ভাইয়াকে এখনো জানাই নি,তুমিও এই ব্যাপারে তোমার ভাইয়াকে কিছু বলো না।
কিন্তু কেন?
ও এমনিতেই কিছুদিন ধরে টেনশনে আছে,আমি ওর টেনশন আরো বারাতে চাই না।বাসায় তো এই জন্যই কথা বলতে চাইনি,মামনি কিংবা আয়েশা কেউ এই ব্যাপারটা জানলে চিন্তা করবে তাই আর ওদের সামনে কথাগুলো বলি নি,আমি চাইনা কেউ আমাকে নিয়ে চিন্তা করুক,আসার সময়ও আয়েশাকে মিথ্যে বলে এসেছি।
ভাবি দেখো এই লক্ষণ গুলো ভালো না এমনিতেও তোমার ব্রেন বাজে ভাবে ডে’মেজ হয়েছিলো,এখন এই ব্যাপার নিয়ে হেয়ালি করা ঠিক হবে না,তোমার ইমিডিয়েটলি কিছু টেস্ট করাতে হবে,
আর আমিই তোমাকে টেস্ট করাতে নিয়ে যাবো।
ওমর এতো ব্যস্ত হয়ো না,ঠিক আছে যাবো তোমার সাথে টেস্ট করাতে,আমি বরং পরশু দিন যাবো হসপিটালে বাসায় তো আর কিছু করা যাবে না নাহলে তো সবাই জেনে যাবে,তুমি আগে চলে যেও আমি পরে চলে আসবো।
আচ্ছা,আমি তোমাকে আগে কয়েকটা টেস্ট করাতে নিয়ে যাবো,টেস্ট করলে বুঝা যাবে যে কি হয়েছে,
তারপর তোমাকে আমি কিছু মেডিসিন সাজেস্ট করবো
তুমি সে অনুযায়ী মেডিসিন খেলে সুস্থ হয়ে যাবে,
কিন্তু হ্যাঁ একটা কথা মাথায় রেখো,এখন ব্রেনে কোনো প্রকারের চাপ নেওয়া যাবে না,কোনো প্রকার টেনশন করা যাবে না নাহলে পরে খারাপ কিছু হতে পারে,
এমনিতেও তুমি একবার এক্সি’ডেন্ট করেছিলে এবার যদি কিছু হয় তবে তো বুঝতেই পারছো আমি কি বলতে চাইছি।
হুম,আচ্ছা চলো বাসায় যাই।
হুম চলো।
ওরা কফিশপ থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
আর এতোক্ষণ ওদের সব কথা কেউ আড়াল থেকে শুনছিলো,সেই ব্যাক্তি কাউকে কল করে সব জানায়।
তিশা ওমর বাসায় চলে আসে,ওরা ওদের রুমে চলে যায়।
তিশা খাটের সাথে হেলান দিয়ে ভাবছে,
ওমর তো টেনশন করতে মানা করলো,কিন্তু টেনশন করা থামাবো কি করে,টেনশন তো আপনাআপনি চলে আসে,মাথাটা খুব ব্যাথা করছে,ওসমানকে কি কথা গুলো জানাবো?নাহ জানিয়ে কি হবে সে তো আমাকে এমনিতেও স’হ্যই করতে পারে না,আর এখন যদি শুনে আমি অসুস্থ তাহলে তো আমাকে বোঝা মনে করবে,
নাহ ওকে কিছু বলার দরকার নেই।
তিশার ভাবনার মাঝে ওসমান দরজা খুলে ভেতরে আসে,তিশা ওসমানের দিকে তাকায়,ওসমানও তাকায়,
তিশা কিছু বলবে তার আগেই ও মুখ চেপে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,ওয়াশরুমে যেয়ে মুখ ভরে বমি করছে,তিশার মনে হচ্ছে এখনই ওর ঘাড়ের র’গ ছিঁড়ে পরবে,খুব দুর্বল লাগছে,ওর মনে হচ্ছে বেসিন থেকে হাত সরালেই পরে যাবে।ও জানে এখন ও ওসমানকে কাছে পাবে না,যে ওসমান তিশার একটু ব্যাথাতে বেকুল হয়ে যেতে সে ওসমান আজ তিশার মনের ক্ষত গুলো দেখেও না দেখার ভান করছে,তিশার চোখে মুখে পানি দিয়ে আস্তে আস্তে ওয়াশরুম থেকে রুমে আসে,
তিশা বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসে,ওসমান রুমে নেই হয়তো নিচে গেছে,তিশার ভিষণ দূর্বল লাগছে,ও বসা থেকে শুয়ে পরে,শরীর দূর্বল থাকায় চোখ মেলতেও কষ্ট হচ্ছে,তিশা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে,
একটা সময় চোখে ঘুম চলে আসে।
পরদিন,
আজ শুক্রবার বন্ধের দিন,
ওমর,ওয়াহিদ নামাজ পড়ে চলে এসেছে,ওসমানের একটু কাজ ছিল তাই ও বাসায় আসে নি।
দুপুরে ওসমান ব্যতীত সবাই একসাথে খাবার খেয়ে নেয়।
চারটার দিকে,
ওমর,আয়েশা,অবান্তিকা,ওয়াহিদ,তিশা লিভিং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে,অবান্তিকা তিশা আয়েশাকে ওসমান ওমরের ছোট বেলার গল্প শুনাচ্ছে,তিশা আয়েশা ওদের ছোট বেলায় করা দুষ্টুমির কথা শুনে হাসছে।
আড্ডার আশর বেশ ভালোই জমেছে।
ওরা হাসাহাসি করছিল তখন ওসমান লিভিং রুমে আসে,ওকে দেখে সবার হাসি থেমে যায়,ওসমান ওদের কাছে এসে টি টেবিলের উপর একটা কাগজ রাখে,ওরা সবাই কাগজটার দিকে তাকায়।
চলবে কি?
[কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন,কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]