এই অবেলায় তুমি পর্ব -১৫+১৬

#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_১৫
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

হঠাৎ গাড়ির হর্ন এ হুশ ফিরলো নূরের…
নূরঃ কি হয়েছে?
রুদ্রঃ এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো? আমি দেখতে আগের থেকে বেশি সুন্দর হয়ে গেছি নাকি? আমি জানি আমি দেখতে সুন্দর, স্মার্ট, হ্যান্ডসাম একটা ছেলে। তাই বলে এভাবে তাকিও না। পরে নজর লেগে যাবে।
নূর ভাবছে সে কখন উনার দিকে তাকালো। সে তো সামনের দিকে তাকিয়ে ছিলো।এবার ভালো করে রুদ্রের দিকে তাকালো,” আপনি স্মার্ট? বলে হাসা শুরু করলো নূর। দেখেন রুদ্র ভাইয়া আমার আর কোনো জোক্স শোনার সময় নেই আমি গেলাম। বলে গাড়ি থেকে নামার সময় বুঝলো ওর হাত রুদ্রের হাতের মুঠোয়।আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল ডুবানো।নূর আবার রুদ্রের দিকে তাকালো। সামনের দিকে তাকিয়ে আছে রুদ্র।
নূরঃ ভাইয়া আমি তো চলে এসেছি….
রুদ্রঃ চলে এসেছো!! তাহলে বসে আছো কেনো যাও।
নূরঃ আমার হাত।
রুদ্র এবার নূরের হাত ছেড়ে দিলো।

নূর গাড়ি থেকে বের হতেই একটা ছেলে বলে উঠলো, ” ভাবি কেমন আছেন? ”
নূর চমকে রুদ্রের গাড়ির দিকে তাকালো।
রুদ্র চোখ ছোটো ছোটো করে নূর আর ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে।
নূর ছেলেটাকে কিছু না বলে। ইরিন কে কল দিলো। তারপর হাঁটতে হাঁটতে কলেজের ভেতর চলে গেলো।

রুদ্র চলে গেলো হসপিটালের দিকে। যাওয়ার পথে কাকে যেনো কল দিয়ে বললো নূরের সব ডিটেইলস একটু পর পর ওকে জানাতে।

——

নূর আর ইরিন কলেজ ক্যাম্পাসে হাঁটছে। ইরিন বারবার কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করতে পারছে না। আসলে কিভাবে জিজ্ঞেস করবে বুঝতেও পারছে না। যদি নূর অন্য কিছু মনে করে!!

নূরঃ কি রে কিছু বলছিস না কেনো? তুই কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত?

ইরিনঃ তেমন কিছু না। তোর বাসার সবাই কেমন আছে?
নূরঃ হুম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে।
ইরিন আবার ভাবছে নীলের কথা কিভাবে জিজ্ঞেস করবে! ইরিন ভাবলো সে তো শুধু নীল কেমন আছে? সেটাই যানতে চাইবে এতে এতো ভয় পাওয়ার কি আছে। বলতে যাবে সামনে তাকিয়ে দেখে শুভ ভাই ওদের দিকেই আসছে। আবার চুপ হয়ে গেলো।ক্লাসে গিয়ে না হয় জিজ্ঞেস করবে।

শুভঃ কেমন আছো নূর?

নূর বিরক্ত হলেও মুখে তা প্রকাশ করলো না। এই গুন্ডা বেটা কি তাহলে আমার নাম ও যেনে গেছে।ওই দিন তো সাহসী নারী সেজে অনেক কথা শুনিয়ে ছিলাম। উনি তো রেগে থাকার কথা এত শান্ত আছে কিভাবে।উনার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি উনি খুব ডেঞ্জারাস লোক।

নূরঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।আমরা দুইজন খুব ভালো আছি। আপনি?

শুভ কিছুটা রেগে বললো,” একদম ভাই বলবে না!!.. আমি তোমার ভাই হই কিভাবে?”

নূরঃ আপনাকে তো সবাই শুভ ভাই বলে।আর আপনি আমার থেকে অনেক! অনেক! অনেক বড় হবেন। আর আমার আম্মু সব সময় বলেন বড় দের সম্মান দিয়ে কথা বলবি।আমার ভুল হয়েছে আমার তো আপনাকে মামা ডাকার দরকার ছিলো। আপনার মতো আমার আম্মুর চাচির ভাবির একটা বোনের দেবর আছে। দেখতে আপনার মতো। সম্পর্কে উনি আমার মামা হবেন। আপনাকে আমার মামা ডাকার দরকার ছিলো।

শুভ বেআক্কেল এর মতো নূরের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা মেয়ে নাকি অন্য কিছু। ওকে ডাইরেক্ট মামা বানিয়ে নিলো।ওর কি তাহলে বয়স বেড়ে গেছে। ওর বয়স ২৯বছর।আজকেই গিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখতে হবে নিজেকে।বয়স এত টাই বেড়ে গেছে দেখতে মামা মনে হয়। সে যাকে বউ বানানোর প্লেন করছে সে তাকে মামা বানিয়ে দিলো।

শুভ আর নূরকে কিছু বললো না। এই মেয়ের সাথে কথা বলতে গেলে না জানি আর কি কি বানিয়ে দেয়। ইরিনের দিকে তাকিয়ে দেখে ভদ্র মেয়ের মতো চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। এবার ইরিনকে বললো,” ইরিন তোমার কি মন খারাপ নাকি শরীর ভালো না?”

দুই দিন আগেও যদি এই কথাটা শুভ জিজ্ঞেস করতো। ইরিন হয়তো খুশিতে গদোগদো হয়ে যেতো। কিন্তু আজ খুবি বিরক্ত হলো।(হুহ্ ভাই আমার খুঁজ খবর জেনে তুই কি করবি!!। )

ইরিনঃ শরীর মন দুটোই ভালো আছে মামা।
শুভঃ মামা!!!আমাকে দেখে কি তোমাদের মামা মনে হয়???
কত ফুরফুরে একটা মন নিয়ে আসছিলো বেটা ভালোবাসার কথা বলতে।দিলো তো দুই বান্ধবী মিলে মামা বানিয়ে।

ইরিনঃ আপনি তো বললেন। ভাইয় না ডাকতে। তাহলে কি ডাকবো। আঙ্কেল ডাকা যাবে না। কারন আপনি তো বিয়ে করেননি। তাই মামা খুব সুন্দর একটা নামে ডাকলাম। আপনি তো খুশি হওয়ার কথা। আপনি চাইলে কিন্তু আমি শুভ বলেও ডাকতে পারি।

লাস্টে কি না। হাঁটুর সামান মেয়েদের কাছ থেকে নিজের নাম ধরে ডাক শুনা লাগবে।শুভ কিছু না বলে রেগে চলে গেলো।

নূর আর ইরিন হাসতে হাসতে ক্লাসে চলে গেলো।

——

গেইটের বাহিরে দাড়িয়ে আছে নূর আর ইরিন। তারপর নূর একটা রিক্সা নিয়ে ইরিনকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো। আর ইরিন হাঁটছে ওর বাসার উদ্দেশ্যে।তখনি হঠাৎ কেউ পিছন থেকে ডেকে উঠলো,

“এই হরিণ ”

সাথে সাথেই থমকে দাড়িয়ে গেলো ইরিন।মুখে ফুটে উঠেছে খুশির হাসি।খুশিতে চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। যেই মেয়ে এই “হরিণ ” ডাক শুনলে রেগে বোম হয়ে যেতো। সেই আজ এই ডাক শুনে এতো খুশি। কিন্তু বলে না বেশি খুশি বেশি সময় থাকে না৷ ইরানের বেলায়ও তাই হলো।

নীল দৌড়ে ইরিনের সামনে এসে দাঁড়ালো। তারপর ইরিনের চুলের মধ্যে একটা তেলাপোকা ছেড়ে দিলো।
বেচারি ইরিন তেলাপোকা খুব ভয় পায়।ভয়ে হাত পা ছুড়াছুড়ি শুরু করলো।
ইরিনঃ প্লিজ!! প্লিজ!! নীল ভাইয়া এটা সরান প্লিজ।

নীল হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ। পেটে হাতদিয়ে হাসা শুরু করলো। আর ইরিন তো এখনো লাফালাফি করছে।
ইরিন নিজের ঘারের দিকে তাকিয়ে দেখলো তেলাপোকা ঘারে৷ এক চিৎকার দিয়ে গিয়ে নীল কে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।

নীলের হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। স্তব্ধ হয়ে গেলো সে।জীবনের এই প্রথম কোনো মেয়ে ওর এতো কাছে এসেছে।লেপ্টে আছে ওর শরীরের সাথে। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললো নীল। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো।রাস্তার মানুষগুলো কেমন যেনো চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। নীল লজ্জা পেয়ে গেলো। ইরিন এখনো ওকে জড়িয়ে ধরে আছে। আর তেলাপোকাটা ফেলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছে।নীল ইরিনের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,” হরিণ ছাড়ো!!”
ইরিনঃ না! না ছাড়বো না। আগে ওটা আমার ঘাড় থেকে ফেলুন।
নীলঃ তোমার ঘাড়ের দিকে তাকাও?
ইরিনঃ প্লিজ! প্লিজ ভাইয়া সরান না এটা!!
ইরিনকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে বেচারি খুব ভয় পেয়েছে।ভয় পেয়ে যে একজন কে জড়িয়ে ধরে আছে সেই দিকেও খেয়াল নেই।

নীল এবার কিছুটা ধমকের শুরেই বললো,” আমার হাতের দিকে তাকাও!!”
ইরিন নীলের হাতের দিকে তাকিয়ে ভয়ে নীল কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে গেলো।

নীলঃ আরে হরিণ তুমি ভয় পাচ্ছো কেনো? এটা তো রবার্টের তেলাপোকা।

রবার্টের তেলাপোকা শুনে রেগে ইরিন নীলের দিকে তাকালো।

ইরিন রেগে বলে উঠলো, ” আপনি তো ভাড়ি বেয়াদব একটা ছেলে। আরেকটু হলে আমি ভয়ে হার্ট অ্যাটাক করতাম।”

নীলঃ তোমরা মেয়েরা তেলাপোকা কে কেনো এতো ভয় পাও আমি বুঝি না।আর তুমি তো একটা নির্লজ্জ মেয়ে। আমি না হয় তেলাপোকা দেখিয়েছি। তাই বলে তুমি রাস্তায় এতো মানুষের সামনে জড়িয়ে ধরবে।আমার বউয়ের আগে তুমি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলে।নিশ্চয়ই আমার বউ শুনলে কষ্ট পাবে।[দুঃখী দুঃখী মুখ করে বললো নীল।]

ইরিন লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। সে কি ইচ্ছে করে ধরেছে নাকি!! ভয় পেয়েছিলো তাই ধরেছে।তাই বলে নীল ওকে এভাবে বলবে।কিছুটা অভিমান ও হলো।
ইরিনঃ ওই দিনের প্রতিশোধটা নিলেন বুঝি!!?
নীলঃ গুড তুমি তো দেখি আগে আগে সব কিছু বুঝে যাও।

——

পাশের বাসার তামিমের আম্মু রাবেয়া বেগম এসেছে। ড্রয়িং রুমে বসে রুদ্রের আম্মু শাহেলা বেগমের সাথে কথা বলছেন।

রাবেয়া বেগমঃ ভাবি ওই মেয়েটা কে?
শাহেলা বেগম কিছু বলার আগেই আনিতা বেগম বলে উঠলেন, ” আমার বোনের মেয়ে ”
রাবেয়া বেগমঃ কই ভাবি আমি যতটুকু জানি আপনার তো কোনো বোন নেই। আপনার মা-বাবার একমাত্র মেয়ে ছিলেন আপনি।

রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসে নূরের মেঝো আম্মু বললেন,” ঠিক বলেছেন ভাবি। আনিতা ভাবির নিজের আপন বোন নেই। তবে দূরসম্পর্কের এক বোনের মেয়ে আদিবা। ভাবছি আমার আবিরের সাথে খুব জলদি বিয়ের কাজটা সেরে ফেলবে।আপনি তো মেয়েটাকে দেখেছেনি। কতটা লক্ষি একটা মেয়ে।ঠিক এমন একটা মেয়ে খুজতে ছিলাম মনে মনে আল্লাহ মনে হয় আমার ডাক কবুল করেছেন। ”

রাবেয়া বেগম খুবি খুশি হলেন। আসলেই মেয়েটা খুব সুন্দর। আবিরের সাথে খুব মানাবে।শাহেলা বেগম,আনিতা বেগম ও খুব খুশি হলেন।

নূরের মেঝো আম্মু আবার বললেন, “আমার এক ছেলে আদি তার নিজের পছন্দে বিয়ে করেছে।বউ তো খাট থেকেই নামে না। জিসানের বউ শুভ্রতা খুবি লক্ষি একটা মেয়ে। আবিরের বউ আমি নিজে পছন্দ করেছি। আমি মানুষ চিনতে ভুল করি না।ভাবছি আজকে রাতে পুরুষরা বাসায় আসলে এই বিষয় কথা বলব।কি বলেন বড় ভাবি?

শায়েলা বেগমঃ আমার ও আদিবা কে খুব পছন্দ হয়েছে।সুন্দর, শিক্ষিত,ভদ্র সব দিক দিয়েই আবিরের জন্য একদম ঠিক আছে। আমিও রাতে কথা বলে দেখবো। কিন্তু মেঝো আবিরের নিজের ও পছন্দ অপছন্দ বেপার আছে!!..
~আমি জানি আমার আবির আমার কথা ফেলবে না।

দরজায় দাঁড়িয়ে সব কথা শুনলো নূর।খুব খুশি হয়েছে সে যাক আদিবা আপুর জীবনটা খুবই বিষাদ আর কষ্টে দিয়ে ঘেরা।একটু সুখের ছোঁয়া পেতে যাচ্ছে। মেঝো আম্মুর মতো শাশুড়ী হয় না।মাটির মানুষ বলা যায়। আবির ভাইয়ার মতো বুঝদার স্বামী পাওয়া ভাগ্যের বেপার। এই খুশির খবর কি আমি এখন দিবো নাকি রাতের জন্য আপুর সারপ্রাইজ হিসেবে থাকবে।এটা সেটা ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে গেলো নূর।

——-

রাতে শুয়ে শুয়ে একটা উপন্যাসের বই পড়ছে মাহি।সে এখনো বিয়ের সম্পর্কে কিছুই জানেনা। নূর ও কাউকে কিছু বলেনি। এটা সবার জন্য সারপ্রাইজ ।এমন সময় ওর মোবাইল বেজে উঠলো।

~হ্যালো…
ওপাস থেকে একটা পুরুষের কন্ঠ ভেসে এলো।
~আপনি একটু আপনার রুমের বারান্দায় আসবেন মাহি।
কন্ঠটা চিনতে অসুবিধা হলো না মাহির। মুখ থেকে বেরিয়ে আসলো “ফায়াজ”
~বাহ্ আমার কন্ঠটা দেখি মনে গেঁথে নিয়েছেন মিস মাহি!!..
মাহি বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে গেলো। হঠাৎ ফায়াজের ফোন কেমন যেনো সব কিছু এলোমেলো করে দিলো।কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলে উঠলো, ” নাম্বার কোথায় পেয়েছেন? ”

~আপনি এতো বেশি কথা কেনো বলেন মাহি!! বারান্দায় আসুন…
~আজব তো আপনি নাম্বার কোথায় পেলেন আগে সেটা বলুন? আর আপনি ভাবলেন কিভাবে আপনি বলবেন আর আমি দৌড়ে বারান্দায় চলে যাবো।
~আমি জানি আপনি আসবেন…
~আপনি এখন কোথায়?
~বারান্দায় আসুন বুঝতে পারবেন।…
মাহি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু কোথায় উনাকে তো দেখা যাচ্ছে না। ভালো করে তাকিয়ে দেখলো।রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে। গাঁয়ে টি-শার্ট আর টাউজার।

“আপনি এখানে কেনো?”
~কেনো এখানে আসা কি নিষেধ নাকি?.
~সব সময় বেশি বুঝেন কেনো!! ওখানে না দাঁড়িয়ে থেকে বাসায় তো আসতে পারতেন।
~কাল তো রুদ্রের বন্ধু তাই বাসায় গিয়েছি।বন্ধুর বাসায় তো আর প্রতি দিন আসা যাবে না। আপনি চাইলে আজকে শশুর বাড়ি ভেবে আসতে পারি!!…

চলবে…

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_১৬
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

নূর নিজের রুমে যাওয়ার সময়। কেউ নূরের দুই বাহু ধরে টান দিয়ে রুমে নিয়ে। সর্ব শক্তি দিয়ে ধাক্কা মারলো।নূর ছিটকে গিয়ে মেঝেতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলো।পা’য়ে খুব ব্যথা পেয়েছে।উপরের দিকে তাকিয়ে দেখে,রুহি রেগে অগ্নিগিরির মতো চেয়ে আছে।

“চরিত্রহীনা মেয়ে কোথাকার। পুরুষ মানুষের উপর এতো লোভ কেনো তোর। আগে কি ছিলি সেটা তুই আর আদি জানিস। এখন আদি আমার স্বামী। তোর মতো নির্লজ্জ মেয়ে আমি দুটো দেখিনি। অন্যের স্বামীর দিকে নজর দিতে তোর লজ্জা করলো না!!”

নূর ওঠে রুহির সামনে এসে, শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে ঠাসসসসসসসসসস করে একটা থাপ্পড় মারলো রুহির গালে।
“সবাই কে নিজের মতো ভাবিস!!ছিনিয়ে নেওয়ার সভাব তোর থাকতে পারে আমার নেই। নিজের চরিত্র আগে ঠিক কর। তোর সাহস দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না।তোকে আগেই আমার এমন কয়েকটা থাপ্পড় মারার দরকার ছিলো।নিজের স্বামীকে নিজের আচলে বাঁধতে পারিস না!!? নেক্সট টাইম কথা বলার আগে ভেবে আসবি কি বলছিস কাকে বলছিস।বেস্ট ফ্রেন্ড বলে এখনো চুপ করে আছি।অন্য কেউ হলে কি করতাম তুই নিজেই ভালো জানিস!! আর রইলো তোর স্বামী! উনাকে ভালো করে বুঝিয়ে দিস আমার আশেপাশে যেনো আসার চেষ্টা না করে।”

আজ সব কিছুই বিরক্ত লাগছে। কাকে বিশ্বাস করবে? চোখের সামনে যা দেখা যায়,সব কিছুই মিথ্যা এক সাথে থেকে এক প্লেটে খেয়েও তো মানুষ চিনা যায় না। অনেক দিন পর আবার কষ্ট গুলো বুকে খুব জ্বালা করছে। হাসিখুশির থাকার অভিনয় করতে করতে সে ক্লান্ত। এত সহজ নয় প্রথম ভালোলাগা ভালোবাসার মানুষটিকে ভুলে যাওয়া।পৃথিবীতে জঘন্যতম একটা অনুভূতি হলো প্রিয় মানুষটিকে অন্যের হতে দেখা। তারপরও চুপ থেকেছে নূর। কাউকে বুঝতে দেয়নি।নিজের মনের অবস্থা। ভাগ্যিস মন ভাঙার কোনো আওয়াজ হয় না। প্রিয় দুটি মানুষ তাকে ধোঁকা দিলো। আজ আর কারো প্রতি বিশ্বাস শব্দটা আসে না। যেখানে বেস্ট ফ্রেন্ড আর তিন বছরের ভালোবাসার মানুষটি ওকে ধোঁকা দিতে পারে। সেখানে আর কাকে বিশ্বাস করবে সে।সব পুরুষ এক যতক্ষন তুমি পটবে না, ততক্ষণ তোমার পিছু ছাড়বে না।যখন তুমি পটে যাবে পাগলের মতো ভালোবাসবে। তোমার থেকে বেস্ট কাউকে পেলে ফিরেও তাকাবে না তোমার দিকে। কিন্তু হাজার চাইলেও এই ধোঁকাবাজ কে ভুলা যায় না। হয়তো প্রথম ভালোবাসা বলে।কিশোরী মনে প্রথম প্রেমিক পুরুষ ছিলো বলে। শুধু এতটুকুই পার্থক্য আগে প্রকাশ করা যেতো আর এখন মনের ভেতর বন্ধি করে রাখতে হয় অনুভূতি গুলোকে কারণ সে এখন অন্য কারো। আমি এখন মনে প্রানে চাই ওরা ভালো থাকোক। যে আমার নয় তাকে হাজার বেঁধে রাখার চেষ্টা করলেও সে আমার হবে না।আর যে আমার তার আশেপাশে হাজার নারী ঘুরঘুর করলেও সে ফিরে তাকাবে না এটা আমি বিশ্বাস করি।এই সব ভাবতে ভাবতে বেলকনিতে বসে গিটারে টুংটাং আওয়াজ তুললো নূর,

‘এখন আমি অনেক ভালো
তোমায় ছাড়া থাকতে পারি
বলে নাতো কেউ আমাকে
করো না বাড়াবাড়ি

আমার আকাশ, আমার সবই
আমি আমার মতো গুছিয়ে নিয়েছি।
যদি স্বপ্নটাকে আপন করে দেখতে শেখালে
তবে মাঝ পথে হাতটা ছেড়ে কি বোঝালে?

ভালোবাসি তোমায় আমি একথা জানি
তবে বলব না আর আগের মতো, এখন আমি….

——
ছাঁদে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে আদিবা আর আবির।

আবির পূর্নদৃষ্টিতে তাকালো আদিবার মুখশ্রীর দিকে। কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ তাকিয়ে রইলো আদিবার সৌন্দর্যে ঘেরা মুখশ্রীর দিকে। ফর্সা গায়ের রং, মুখে ফুটে উঠেছে নিদারুন সরল্যতা,এত অপরূপ সৌন্দর্য্যের মধ্যে ও ফ্যাকাশে, ক্লান্তিকর, মলিন মুখটা ফুটে উঠেছে।
রাতের হালকা বাতাসে চুল গুলো উড়ছে লক্ষ্যহীন ভাবে।বিরক্ত হয়ে বারবার চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিচ্ছে আদিবা। কিন্তু এই অবাধ্য চুলগুলো আবার এসে পরছে মুখের উপর।
আবির মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।

“আদিবা”

হঠাৎ নিজের নাম আবিরের মুখে শুনে বিচলিত হয়ে আবিরের দিকে ফিরে আদিবা।বুকের ভেতর ধকধক তো অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে তাও আবার যেনো মনে হলো বুকের ভেতর যেনো আবার ধুকপুক করা শুরু হয়ে গেছে।

“আপনি কি বিয়েতে রাজি?”

আদিবা তাচ্ছিল্যের সুরে হেসে বললো,” আমার রাজি হওয়া আর না হওয়াই কি আসে যায়। আপনি কি আমার পরিবার বা আমার সম্পর্কে কিছু জানেন?”

আবিরের সহজ উওর, ” আমি আপনাকে বিয়ে করবো। আপনার পরিবারকে না! আমি আপনার পরিবার সম্পর্কে জেনে কি করবো!! আমার আম্মুর আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে। পরিবারের প্রত্যেক টা সদস্য চায় আমি আপনাকে বিয়ে করি।”

আদিবা আবার বলে উঠলো, ” সবাই চায় আর আপনি?”

আবিরঃ এক ছাঁদের নিচে, একি রুমে থাকতে গেলে এমনিতেই ভালোবাসা হয়ে যাবে।

আদিবাঃ কই এতটা বছর এক ছাঁদের নিচে থেকেও তো কারো ভালোবাসার মানুষ হতে পারলাম না!! আমার মনে হয় আপনি চাপে পড়ে বা আপনার আম্মুর কথা রাখার জন্য আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।

আবিরঃ তেমন কিছু নয়। আমি স্বাধীন ভাবে চলতে পছন্দ করি। আমার পরিবারের কেউ আমার উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে না। আর রইলো মায়ের কথা, তাহলে হে কিছুটা মায়ের কথা রাখার জন্য রাজি হয়েছি।আমার অবশ্য এখন বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। তবে বিয়ে তো একদিন করতেই হবে সেটা ভেবেই রাজি হয়ে গেলাম।

আদিবা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,” আমি আমার জীবনে এমন একটা মানুষ চাই।যার কাছে আমার কোনো কিছু লোকাতে হবে না।আমার সুন্দর, আমার অসুন্দর, আমার বিশ্রী সবটা নিয়ে। যার সামনে আমি নিঃসংকোচে দাঁড়াতে পারবো।নিজের দুর্বলতা গুলো যাকে অনায়াসে বলে দিতে পারবো।যে কখনো আমার দুর্বলতায় আঘাত করবে না কখনো।সে আমার খারাপ সময় বা খারাপ যেনে ছেড়ে যাবে না কখনো।যে আমার শরীর নয়, মন টাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবে সব সময়।
আদিবা আবার বলে উঠলো, ” আমি চাই আগে আপনি আমার সম্পর্কে জানোন। আমার পরিবারে কে কে আছে সব জানোন!!

আবিরঃ আমি সব জানি। আর নতুন করে কিছু জানার ইচ্ছে নেই।

আদিবা এবার চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলো, ” আমার পরিবার আর আমার সম্পর্কে জেনে আমার উপর দয়া করছেন আপনারা।আমার কারো দয়া দরকার নেই।আমি কাল কেই নতুন বাসা খুঁজে নিবো। আর আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আন্টিকে বুঝিয়ে বলবো। আজ হয়তো আপনার মনে হবে আপনার আম্মু আপনার ভালো চায়। কিন্তু যখন দেখবেন আপনার বন্ধু কিংবা ভাই শশুর বাড়ি যাচ্ছে তখন আপনার ও আপসোস হবে আজ আমার মতো এতিমকে বিয়ে না করলে।আপনিও একটা শশুর বাড়ি পেতেন। আরেকটা সুন্দর পরিবার পেতেন। সম্পর্কে আসতে আসতে তিক্ততা চলে আসবে।হয়তো তখন আপনার মনে হবে। জীবনে সব চেয়ে বড় ভুল করেছেন আমাকে বিয়ে করে। আফসোস হবে।আমি চাই না এক সময় কারো আফসোসের কারন হতে।

——

ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছে রুদ্র। সারাদিন আজকে অনেক দখল গেছে ওর উপর দিয়ে। গরমে গায়ের সাদা শার্ট শরীরের সাথে লেপ্টে আছে। এখন ঠান্ডা এক গ্লাস পানি হলে মন্দ হয় না।ওর ভাবনার মাঝেই দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হলো।
রুদ্রঃ দরজা খোলাই আছে।

হাতে গ্লাস নিয়ে রুদ্রের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে মাহি।প্রচন্ড ভয় নিয়ে হাত -পা গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাহি।

রুদ্রঃ দাঁড়িয়ে আছো কেনো ভেতরে আসো।

মাহি ভেতরে গিয়ে হাতের গ্লাসটা রুদ্রের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো, ” ঠান্ডা শরবত নিয়ে এসেছিলাম ভাইয়া।”

রুদ্র খুশি হয়ে বললো,” ধন্যবাদ মাহি।আমার এখন এটার খুব দরকার ছিলো।বলেই শরবতের গ্লাসটা মাহির হাত থেকে নিলো।”

রুদ্রের রুম থেকে বের হয়ে। বুকে এক হাত রেখে ঘনঘন নিঃশ্বাস নিলো মাহি।ঠোঁটের কোনে থেকে হাসি যেনো সরছেই না।রুদ্র তার বানানো শরবত খেয়েছে,প্রশংসা করেছে,খুশি হয়েছে।এটা ভেবেই শান্তি লাগছে মাহির।

———

সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটা ঝাকানাকা খুশির খবর পেলো নূর। পাশের বাসার রাবেয়া আন্টির ছেলে তামিম মেয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে ভদ্রমহিলার জন্য একটু খারাপ ও লাগলো। একটা মাত্র ছেলে।

আজ আর রুদ্রের সাথে বের হয়নি নূর। রুদ্র বের হওয়ার আগেই নূর বেরিয়ে পরেছে।

কলেজের সামনে আসতেই ইরিনের সাথে দেখা।দুই জন হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের সামনে আসতেই ফায়াজ স্যারের সাথে দেখা।
ইরিনঃ আসসালামু আলাইকুম স্যার…
ফায়াজঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।কেমন আছো তোমরা?
ইরিনঃ জ্বি স্যার আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?

নূরঃ ভালো না স্যার..
ফায়াজঃ আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।তারপর নূরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো।কেনো তোমার কি হয়েছে?
নূরঃ আর বলবেন না স্যার। চোখে কম দেখা,কানে কম শুনার রোগ হয়েছে। কেউ রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ড্যাপ ড্যাপ করে বারান্দায় তাকিয়ে থাকলে চিনতে পারছি না।

ফায়াজ আচমকা নূরের এই কথা শুনে খুক খুক করে কেশে উঠলো।তারপর বললো কি বলো এটা তো সাংঘাতিক রোগ।তারাতাড়ি চোখের ডাক্তার দেখাও।(এই মেয়ে নিশ্চয়ই কাল কে আমাকে দেখেছে মাহির বারান্দার দিকে তাকিয়ে থাকতে।ইইসস কি লজ্জা স্যার হয়ে ছাত্রীর বাসার সামনে বোনের বারান্দায় ঢিল ছুঁড়তেই প্রথম দিন ধরা পড়ে গেলাম)

নূরঃ জ্বি স্যার ভাবছি। আজকেই যাবো।কার এতো বড় সাহস আমাদের বাসার বারান্দায় উঁকিঝুঁকি মারে ধরতে হবে না!!
ইরিন মিটমিট করে হাসছে।আহারে বেচারা স্যার ঢিল ছুঁড়বার আগেই ধরা পড়ে গেলো।
ফায়াজ মনে মনে ভাবছে, ” এমন ডেঞ্জারাস শালিকা থাকলে বিয়ের আগে আর শান্তিতে প্রেম করা হবে না। ”

ফায়াজ কথা ঘোরানোর জন্য বললো,” তোমাদের পড়াশোনা কেমন চলছে?”

নূরঃ জ্বি স্যার অনেক ভালো।
ফায়াজ অবাক হওয়ার ভান করে বললো,” অনেক ভালো!! তাহলে তিন বিষয় ফেল করলে কিভাবে!!?

সাথে সাথেই নূরের মুখটা তেতো হয়ে গেলো। বেটা খাটাশ ভালো কথা বলতেছি ভালো কথা বল!! পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করছোস ভালা কথা, ফেল টানোস কা?

নূরের আর বেশি কিছু বলার ইচ্ছে হলো না। স্যার ক্লাসের সময় হয়ে গেছে বলে ইরিনকে নিয়ে চলে গেলো।

ফায়াজ অবাক হয়ে হাত ঘড়ির দিকে তাকালো। ক্লাস শুরু হওয়ার আরো ২০মিনিট বাকি আছে!!।

——

কলেজ শেষে যে যার মতো নিজেদের রাস্তায় চলে গেলো।

নূর হাঁটছে এমন সময় শুভ ভাই এসে দাঁড়ালো সামনে।

নূরঃ আসসালামু আলাইকুম মামা।

শুভ এমনিতেই রেগে আছে। নূরের মুখে মামা ডাক শুনে আরো রেগে পকেট থেকে পিস্তল বের করে ধরলো নূরের কপালে!!

——

ইরিন হাঁটছে বাসার উদ্দেশ্যে তখনি কালকের মতো পিছন থেকে ডেকে উঠলো,

“এই হরিণ”

ইরিন বিরক্ত হলো খুবই বিরক্ত। এই ছেলেকি কাল কের মতো আবার ওর গায়ে তেলাপোকা ছেড়ে দেবে।দিতেও পারে উনাকে নিয়ে বিশ্বাস নেই।ইরিন তারাতাড়ি পা চালালো যেনো নীল ওকে ধরতে না পারে।কিন্তু এর আগেই নীল দৌড়ে ওর সামনে এসে দাঁড়ালো।
নীলঃ এই হরিণ তোমার সমস্যা কি? এতো বার ডাকলাম এক বার ও ফিরে তাকালে না।
ইরিনঃ কেনো ডেকেছেন?
নীলঃ এভাবে বলছো কেনো। দরকার থাকতে পারে না!!
ইরিনঃ আমি তো আর নিষেধ করিনি যে দরকার থাকতে পারে না। এবার বলেন কি দরকার?
নীলঃ কেমন আছো?
ইরিনঃ এটা জানার জন্য। এভাবে দৌড়ে এসেছেন? আর আমি তো ভেবে ছিলাম। বলে থেকে গেলো।
নীলঃ তুমি কি ভেবে ছিলে? এই হরিণ তুমি কি আবার আমাকে জড়িয়ে ধরার কথা ভেবে রেখেছো নাকি।এটা কিন্তু ঠিক না তুমি প্রতি দিন রাস্তায় এতো এতো মানুষের সামনে আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করতে পারো না।
ইরিনঃ আজব তো আমি কেনো আপনাকে জড়িয়ে ধরতে যাবো!!
নীলঃ কাল কে তো ধরে ছিলে!
ইরিনঃ কাল তো ভয় পেয়ে ছিলাম তাই ধরেছি।
নীলঃ তার মানে তুমি ভয় পেলেই সবাইকে জড়িয়ে ধরো!!?
ইরিনঃ আজব তো সবাইকে কেনো ধরবো।এই সব ফালতু কথা না বলে। কি বলবেন বলেন?
নীলঃ তোমার বিয়ে কবে?
ইরিনঃ তা যেনে আপনি কি করবেন?
নীলঃ দাওয়াত খাবো।
ইরিনঃ কেনো আপনাদের বাসায় খাবার নেই। রেগে বললো।
নীল দাত বের করে হেঁসে বললো,” বাসায় তো খাবার আছে। কিন্তু আমার একটা বিয়ে খেতে খুব ইচ্ছে করছে। আর শুনলাম তোমায় নাকি দেখতে এসেছে। তাই আর কি!
ইরিনের ইচ্ছে করছে এই বেয়াদব ছেলেটার পিঠে ধুম করে কিল বসাতে।ওকে নাকি দেখতে আসছে কত বড় মিথ্যা কথা।ওকে দেখতে আসছে আর ও নিজেই জানেনা!!
ইরিন দাঁতে দাঁত চেপে বললো, ” হুম খুব জলদি আমি বিয়ে করছি। আপনি ডাক্তার হয়ে একটা হসপিটাল খোলেন আর আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে আপনার হসপিটালে ডেলিভারি করাতে যাবো!!।”

চলবে……

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here