এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব -০৪+৫

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_৪
#নিশাত_জাহান_নিশি

“বয়ফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও অপরিচিত একটা ছেলের সাথে রেস্টুরেন্টে যাওয়াটা ইট’স নট ফেয়ার মিস অয়ন্তী! আপনার বয়ফ্রেন্ড যদি ব্যাপারটা জানতে পারে তখন কী হবে বলুন তো?”

সিঁড়ির মাঝামাঝিতে এসেই হুট করে হাঁটা থামিয়ে দিলো অয়ন্তী। নির্বাক মূর্তির ন্যায় ঠায় দাঁড়িয়ে রইল একই জায়গায়। পরের সিঁড়িতে কদম বাড়ানোর সাহসটুকুও হলোনা তার! নিশ্চল তার মুখভঙ্গি। চক্ষুজোড়া চড়কগাছ করে একধ্যানে তাকিয়ে রইল রাফায়াতের দিকে! গলা থেকে যেন শব্দই বের হচ্ছিল না তার। শরীরটাও কেমন ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। বিড়বিড় করে বলল,,

“ইয়া আল্লাহ্! এই মা’স্তা’নটা এসব কী বলছে? জানলো কীভাবে সে আমি আরিফের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম? ওহ্ মাড গুডনেস! এ মানুষ নাকি সিসি ক্যামেরা?”

অয়ন্তীর নির্বিকার এবং ভয়মিশ্রিত মুখশ্রী দেখে অট্ট হাসল রাফায়াত। হেলানরত অবস্থা থেকে সরে এসে নিচের সিঁড়িতে দাঁড়ালো। অয়ন্তী তার থেকে আরও তিন সিঁড়ি উপরে প্রায়। যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই রাফায়াত বুকের উপর দু’হাত গুজে ট্যারা দৃষ্টিতে অয়ন্তীর দিকে তাকালো। ঘাড়টা কিঞ্চিৎ বাঁ দিকে বাঁকিয়ে ক্রুদ্ধ স্বরে বলল,,

“প্রুভ আছে কিন্তু আমার কাছে! রেস্টুরেন্টে বসে হাত ধরাধরি! মিষ্টি স্বরে কথা বলাবলি। এছাড়াও আরও কত কী! সবকিছুর প্রুভ কিন্তু আমার কাছে আছে ওকে? ঐ সময় যেন কার ভয় দেখিয়েছিলে আমাকে? ওহ্ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। অনিক, অনিক ভাইয়ার ভয় দেখিয়েছিলে না? তো পিকচার গুলো সেন্ড করব নাকি তোমার ঐ অনিক ভাইয়ার কাছে? পারবে তো তখন ঠ্যালা সামলাতে?”

দ্রুত বেগে সিঁড়ি টপকে রাফায়াতের মুখোমুখি দাঁড়ালো অয়ন্তী! অস্থির চাহনিতে রাফায়াতের আগ্রাসী চাহনিতে দৃষ্টি ফেলল। আগপাছ না ভেবে-ই আলুথালু গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কী চান আপনি আমার থেকে হ্যাঁ? কী চান?”

বেশ ভাবসাব নিয়ে রাফায়াত গলা ঝাঁকালো! উঁচিয়ে রাখা শার্টের কলারটা নামিয়ে অয়ন্তীর দিকে ঈষৎ ঝুঁকলো। খামখেয়ালি স্বরে বলল,,

“বেশি কিছুনা। আমি তোমার সাথে তোমার শহরটা একটু ঘুরে দেখতে চাই। দেট’স ইট!”

বিরক্তি প্রকাশ করল অয়ন্তী। হাত-টা ঝাঁকিয়ে তুলল। নাক-মুখ সিটকে বলল,,

“কিন্তু আমার সাথেই কেন হ্যাঁ? বাড়িতে তো আলিজা আছে, অর্ণি আছে, ভাইয়া আছে, ভাবি আছে। ঘুরতে হলে তাদের সাথে ঘুরতে যান। আমার সাথেই কেন?”

“উঁহু। আমি শুধু তোমার সাথেই ঘুরতে যেতে চাই মিস অয়ন্তী! আই হোপ সো তুমি আমার কথা রাখবে। আদারওয়াউজ….

বিদঘুটে হাসল রাফায়াত। ট্যারা দৃষ্টিতে তাকালো অয়ন্তীর দিকে। পুনরায় তার ফোনটা অয়ন্তীর দৃষ্টির সম্মুখে চরকির মত ঘুরাতে লাগল। খাপছাড়া গলায় বলল,,

“জানোই তো। কী কী করতে পারি আমি!”

“আমি আপনার এসব সিনেমেটিক কথা বিশ্বাস করছিনা ওকে? প্রুভ দেখতে চাই আমি প্রুভ। হুট করেই যা তা বলে দিলেন আর আমি বিশ্বাস করে নিব তা হয় নাকি?”

“ওকে ফাইন। নিজের চোখেই দেখে নাও তোমার সব কুকীর্তি!”

গভীর মনোযোগ নিয়ে রাফায়াত গ্যালারী ঘেঁটে ছবিগুলো খুঁজে বের করল। এরমধ্যে যে ছবিটায় আরিফ জোর করে অয়ন্তীর হাত চেপে ধরেছিল সেই ছবিটিই রাফায়াত অয়ন্তীর চোখের সামনে ধরল। একগালে হেসে উচ্ছৃঙ্খল স্বরে বলল,,

“কী? পেলেন তো প্রুভ? আর কোনো প্রুভ লাগবে আপনার? হোপ সো, লাগবেনা!”

অবিলম্বেই মুখে হাত চলে গেল অয়ন্তীর। চোখের কোণে জল চিকচিক করে উঠল। আতঙ্কে হাত-পা কাঁপতে লাগল। হাত বাড়িয়ে ফোনটা যেইনা ধরতে যাবে অমনি রাফায়াত ঝড়ের গতিতে ফোনটি তার পেছনে লুকিয়ে ফেলল! একরোঁখা গলায় বলল,,

“আমার শর্তে রাজি কিনা বলুন?”

“এই? আপনি আমাকে ব্ল্যা’ক’মে’ই’ল করছেন?”

“কেন? বুঝতে পারছেন না? মুখে বলে বুঝাতে হবে?”

“আমি আপনার কী ক্ষতি করেছি হ্যাঁ? কী ক্ষতি করেছি? কেন আপনি আমাকে এভাবে ব্ল্যাক’মে’ই’ল করছেন?”

“ক্ষতি কিছু করোনি। তবে আমিও তোমার কোনো ক্ষতি করতে চাইনা। শুধু তোমার একটুখানি হেল্প চাইছি। করবে হেল্প? আমাকে একটু বাইরে বের করতে?”

“আপনার এই বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ জানেন না আপনি? আস্ত ক্রি’মি’না’ল একটা।”

“হ্যাঁ আমি ক্রি’মি’না’ল। বাড়ি থেকে বের হওয়া আমার জন্য নিষেধ। আর এসব আমি জানি বলেই আমার একটা মাধ্যম প্রয়োজন। আর সেই মাধ্যমটা হলে তুমি!”

রাফায়াতের হুমকি-ধমকিতে অয়ন্তী ভয়ে সিঁটিয়ে গেল। ছবিগুলো সত্যিই অনিকের কাছে পৌঁছে গেলে পুরো ঘটনা না জেনে/শুনেই অনিক অয়ন্তীর সাথে অশান্তি করবে। শুরু হবে দুজনের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ-কলহ! বিশ্বাস, অবিশ্বাস, ভুল বুঝাবুঝিরও সৃষ্টি হবে। যা অয়ন্তী সত্যিই চায়না! অনিকের সাথে ঝগড়া হোক অয়ন্তী চায়না। নিরুপায় হয়ে অয়ন্তী রাফায়াতের শর্ত মেনে নিলো! অয়ন্তীও শর্ত রাখল ছবিগুলো যেন কোনোভাবেই অনিকের কাছে না পৌঁছায়। রাফায়াতও অয়ন্তীর শর্ত মেনে নিলো। অয়ন্তীকে জব্দ করার খুশিতে সে পৈশাচিক হাসল। বহুদিন পর যেন জিতে যাওয়ার তৃপ্তি পেল সে। আলিজার কাছে আবারও ফিরে গেল অয়ন্তী। বাড়ির সবাইকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আলিজাকে সাথে নিয়ে রাফায়াত এবং অয়ন্তী বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল! বলল তারা একটু ঘুরতে যেতে চায়। ঘণ্টাখানিকের মধ্যেই আবার বাড়ি ফিরে আসবে। ব্ল্যা’ক’মে’ইলিং এর ব্যাপারগুলো অয়ন্তী এখনও আলিজাকে বলতে পারেনি। রাফায়াতের নিষেধ আছে এতে!

৬.
পার্কের ভেতরে একপাশে থাকা ইয়া বড়ো মুদি দোকানটায় দাঁড়িয়ে রাফায়াত উচ্ছ্বলিত মনে সিগারেট টানছে। মুখের মাস্কটা সবে মাত্রই খুলেছে সে। তাও আবার সিগারেট খাওয়ার সুবিধার্থে! খাওয়া শেষ হলে মাস্কটা আবার লাগিয়ে নিতে হবে। কখন কোন দিক থেকে তার চেনা-জানা-বন্ধু বা শত্রুদের সাথে দেখা হয়ে যায় বলা যায়না। এদের মধ্যে তাকে খুঁজতে থাকা পুলিশরা অন্যতম! অয়ন্তীর সাথে সময় কাটানোর জন্যই মূলত এত বড়ো ঝুঁকি নিয়ে তার বাড়ি থেকে বের হওয়া। যেনো তেনো প্রকারেই হোক অয়ন্তীকে তার হাতের মুঠোয় আনতেই হবে। অয়ন্তী-ই হবে তার চালের মোক্ষম গুঁটি! যাকে হাতে আনতে পারলেই খেলা সমানে সমানে হবে! এসব পরিকল্পনা করতে করতেই রাফায়াত প্রায় দুই থেকে তিনটি সিগারেট শেষ করে দিলো। ইতোমধ্যেই প্যান্টের পকেট থেকে তার সেলফোনটি বেজে উঠল। মাথার উপর থেকে হুডির টুপিটি সরিয়ে রাফায়াত পকেট থেকে তার ফোনটি বের করল। চঞ্চলের নাম্বারটি তখন স্ক্রীনে ভেসে উঠল। চঞ্চল হলো রাফায়াতের আরও একজন বেস্টফ্রেন্ড। সকালে যার সাথে ফোনে কথা হয়েছিল সে। তাড়াহুড়ো করে রাফায়াত ফোনটি তুলল। দ্রুত গলায় শুধালো,,

“হ্যাঁ চঞ্চল বল? ওখানে সব ঠিকঠাক আছে তো?”

ঐপাশ থেকে চঞ্চল অধৈর্য্যে গলায় বলল,,

“প্রিয়া সু’ই’সা’ই’ড করতে চেয়েছিল রাফায়াত!”

ফট করে মাথাটা গরম হয়ে গেল রাফায়াতের! স্বাভাবিক মুখশ্রী বিবর্ণ রূপ ধারণ করল। সামনের চুলগুলো টেনে ধরে চোয়াল উঁচিয়ে বলল,,

“এই ফা’ল’তু খবরটা জানানোর জন্যই কী তুই আমাকে কল করেছিস?”

“এটা ফা’ল’তু খবর না রাফায়াত। প্রিয়া সত্যিই ভালো নেই। সে তার কাজের জন্য ভীষণ অনুতপ্ত। প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।”

“নাটক করছে এসব বুঝেছিস? নাটক করছে। আমার সেমপ্যাথি পাওয়ার জন্য। আমি তোকে ওয়ার্ণ করছি চঞ্চল, নেক্সট টাইম প্রিয়া রিলেটেড কোনো ব্যাপারে আমাকে অযথা কল করে ডিস্টার্ব করবিনা। না হয় আমিও ভুলে যাব চঞ্চল বলে আমার কোনো বেস্টফ্রেন্ড ছিল!”

“ইশশশ। আবার রেগে যাচ্ছিস কেন? তুই যা বলবি তাই হবে। প্রিয়া সম্পর্কে আমি আর কখনও কোনো প্রসঙ্গই তুলব না।”

প্রিয়ার কাছ থেকে সরে দাঁড়ালো চঞ্চল! একটু খানি দূরে এসে দাঁড়ালো। ফোনে ফিসফিসিয়ে বলল,,

“আচ্ছা অয়ন্তীর কী খবর? তাকে ভাগে আনা যাবে তো?”

“আই উইল ট্রাই মাই বেস্ট। হুমকি-ধমকি দিয়ে চেষ্টা করছি আমাদের প্ল্যানিং সাকসেস করার।”

“হুমকি-ধমকি দিয়ে কিছু হবেনা। তোকে নরমাল হতে হবে। এসব গু’ণ্ডা ম’স্তা’নি করে আর যাই হোক মেয়েদের পটানো যায়না। নিজেকে এমন ভাবে প্রেজেন্ট করতে হবে যেমনটা প্রত্যেকটা মেয়ে চায়! মানে তুই একটা সময় যেভাবে প্রিয়াকে ইমপ্রেস করেছিলি ঠিক সেভাবে!”

ঝট করে ফোনটা কেটে দিলো রাফায়াত! ঐদিকে প্রিয়া কাঁদতে কাঁদতে দৌঁড়ে এলো চঞ্চলের মুখোমুখি। অধীর গলায় চঞ্চলের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“কী বলল রাফায়াত?”

দীর্ঘশ্বাস ফেলল চঞ্চল। নিরাশ গলায় বলল,,

“ভুলে যাও রাফায়াতকে প্রিয়া! সে আর কখনো তোমার কাছে ফিরবেনা! মন থেকে তুমি তাকে ভেঙে দিয়েছ। ভালো কিছুর আশা রেখো না তার থেকে আর। এতে তোমারই কষ্ট বাড়বে। নতুনভাবে নতুন কাউকে নিয়ে সবকিছু শুরু করো। রাফায়াতকে ভুলে যায়!”

অঝরে কেঁদে দিলো প্রিয়া। মুখে ওড়নার আঁচল চেপে ধরে দৌঁড়ে চঞ্চলের রুম থেকে প্রস্থান নিলো। প্রিয়ার যাওয়ার পথে ব্যথিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল চঞ্চল। পুনরায় দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,,

“হারিয়ে গেলেই কেন আমরা সেই মানুষটার গুরুত্ব বুঝি?”

৭.
একের পর এক রুদ্ধশ্বাস ফেলতে লাগল রাফায়াত। আরও একটি সিগারেট ধরিয়ে সমানে টানতে লাগল সিগারেটটি। নাক থেকে তুমুলে ধোঁয়া নির্গত করে বড়ো বড়ো শ্বাস ফেলে বলল,,

“শুধু প্রিয়া প্রিয়া আর প্রিয়া! আই জাস্ট হেইট হার। আই রিয়েলি হেইট হার। কেউ বুঝতে চাইছেনা আমি তাকে সহ্য করতে পারছিনা।”

হুট করেই রাফায়াতের অবিন্যস্ত দৃষ্টি যুগল পড়ল নদীর পাড়ে। অয়ন্তী এবং আলিজা চুপটি করে বসে আছে সেখানে। শিথিল দৃষ্টিতে নদীর ঢেউ দেখছে তারা। মৃদুমন্দ শীতল বাতাসে অয়ন্তীর লাল রঙের সিল্কের ওড়নাটি কেমন উড়ছে! খোঁপায় বেঁধে রাখা চুলগুলোও বেসামালভাবে এদিক থেকে ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। দেখতে ভীষণ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তাকে। মনে কেমন যেন বিষাদের মেঘ জমেছে অয়ন্তীর! দূর থেকে দেখেই তা বুঝা যাচ্ছে। রাগটা কেমন যেন তরতর করে নেমে এলো রাফায়াতের! না চাইতেও সিগারেটটি ছুড়ে ফেলে দিলো সে। চঞ্চলের দেওয়া ট্রিকটা কাজে লাগাল! নরমাল ভাবেই অয়ন্তীকে হ্যান্ডেল করতে চাইল। দোকানদারকে ডেকে বলল দুইটি চকলেট ফ্লেভারের কোণ আইসক্রীম দিতে! আইসক্রীম দুটো হাতে নিয়ে রাফায়াত দ্রুত পায়ে হেঁটে চলল নদীর পাড়ে। অয়ন্তী এবং আলিজার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আইসক্রীম দুটি দুজনের মুখের সামনে ধরল। গম্ভীর গলায় বলল,,

“টেইক ইট তোমাদের জন্য।”

আলিজা জোরপূর্বক হেসে রাফায়াতের হাত থেকে তার ভাগের আইসক্রীমটি নিলেও অয়ন্তী নিতে চাইলনা! মুখ ঘুরিয়ে ক্ষিপ্ত গলায় বলল,,

“কোনো গু’ন্ডা, মা’স্তা’নে’র হাতের আইসক্রীম আমি খাইনা!”

মেজাজ প্রচণ্ড চটে গেলেও রাফায়াত শান্ত থাকার চেষ্টা করল। দাঁতে দাঁত চেপে জেদ সংবরণ করল। স্বাভাবিক স্বরে-ই বলল,,

“আমার গাঁয়ে কোথায় লিখা আছে আমি গু’ন্ডা, মা’স্তা’ন?”

“ভেষ ভূষা দেখলেই বুঝা যায় কে কেমন!”

অপ্রত্যাশিতভাবেই অয়ন্তীর পাশে পায়ের উপর পা তুলে বসে পড়ল রাফায়াত! শুকনো হেসে ফিচেল স্বরে বলল,,

“ওকে ফাইন খেয়ো না। তবে আমি শুনেছিলাম চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীম নাকি তোমার খুব পছন্দের?”
#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_৫
#নিশাত_জাহান_নিশি

“ওকে ফাইন খেয়ো না। তবে আমি শুনেছিলাম চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীম নাকি তোমার খুব পছন্দের?”

থমকালো অয়ন্তী। সন্দেহজনক দৃষ্টি ফেলল রাফায়াতের ভাবশূন্য মুখমণ্ডলে। এক রাশ কৌতূহল নিয়ে একটুখানি ঘুরে বসল রাফায়াতের দিকে। মাথাটা রাফায়াতের দিকে খানিক ঝুঁঁকিয়ে সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“এই আপনি কী আমার পিছনে গোয়ান্দাগিরি করছেন হ্যাঁ? এত শত খবর আপনি আমার সম্পর্কে রাখেন কীভাবে হ্যাঁ? কে আপনি বলুন?”

ক্রুর হাসল রাফায়াত! অয়ন্তীর ক্ষোভ জড়ানো দৃষ্টিতে রহস্যময় দৃষ্টি ফেলল। নাক টেনে বাঁ দিকের ভ্রু টা কেমন উঁচালো। হেয়ালী গলায় বলল,,

“এখনি আমাকে চেনাটা কী খুব বেশি জরুরি ম্যাম? এত ইন্টারেস্ট কেন আমাকে নিয়ে হ্যাঁ? গোপনে কিছু ভাবছেন নাকি আমার বিষয়ে? এমনিতেও হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলে মেয়েদের মাথা ঠিক থাকেনা! কথাটা আমি না। আমার ফ্রেন্ডরা বলে।”

চটে বসল অয়ন্তী। রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করল রাফায়াতের দুষ্টুমি ভরা মুখমণ্ডলে। ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ল অয়ন্তী। জবাবে কিছু বলার পূর্বেই আলিজা পাশ থেকে অয়ন্তীর ডান হাতটা জোর করে টেনে ধরল। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে অয়ন্তীর কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,

“এই? কী করছিস কী তুই হ্যাঁ? হিংস্র বাঘটাকে এভাবে রাগাচ্ছিস কেন? তাছাড়া তোদের দুজনকে দেখে মনে হচ্ছে তোরা আগে থেকেই পরিচিত! এর আগে কথা হয়েছিল নাকি তোদের মধ্যে?”

অত্যধিক রাগের বশবর্তী হয়ে অয়ন্তী গড়গড় করে সব বলে দিচ্ছিল! রাগ হলে তখন মাথা ঠিক থাকে নাকি? ভুলভাল তো অহরহ হয়েই যায়। শর্ত ভুলে অয়ন্তী এক নিমিষেই বলে দিলো,,

“তুই জানিস? কাল রাত থেকে এই ছেলেটা আমার পিছনে পড়ে আছে! গলাও চেপে ধরে…

তৎক্ষনাৎ রাফায়াত উচ্চশব্দে গলা খাঁকালো! মাঝপথে অয়ন্তীকে থামিয়ে দিলো। দাঁতে দাঁত চেপে অয়ন্তীর কর্ণতলে গুনগুনিয়ে বলল,,

“পিকচারগুলো সেন্ড করব নাকি অনিককে হুম? তুমি হয়ত এটাই চাচ্ছ তাইনা?”

দমে গেল অয়ন্তী। সঙ্গে সঙ্গেই মুখ সামলে নিলো। ভীতিকর দৃষ্টি ফেলল রাফায়াতের আগ্রাসী দৃষ্টিতে। মুখে আঙুল চেঁপে অসহায় ভাব ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালো। ইশারায় বলল,,

“প্লিজ কিছু করবেন না। এই যে মুখ বন্ধ করে নিলাম আমি।”

ব্যগ্র হাসল রাফায়াত। আইসক্রীমটা অয়ন্তীর দিকে এগিয়ে দিলো। শুকনো ঢোঁক গিলে অয়ন্তী সঙ্গে সঙ্গেই আইসক্রীমটা হাতে তুলে নিলো। ইতোমধ্যে আইসক্রীমটায় কামড়ও বসিয়ে দিলো। পাশ থেকে আলিজা নির্বোধ স্বরে অয়ন্তীকে শুধালো,,

“এই অয়ন্তী? কী হলো ব্যাপারটা হুম? তুই হঠাৎ থেমে গেলি কেন? কী যেন বলছিলি ঐসময়?”

তড়িঘড়ি করে আইসক্রীমটায় দ্বিতীয় কামড় বসালো অয়ন্তী। জোরপূর্বক হেসে মুখে থাকা আইসক্রীমটা গপাগপ গিলে বলল,,

“কই কিছুনা তো! কী বলছিলাম?”

এরমধ্যেই হঠাৎ একটা বখাটে ছেলে এসে অয়ন্তীর মুখোমুখি দাঁড়ালো। মুহূর্তের মধ্যেই ছোঁ মেরে অয়ন্তীর হাত থেকে আইসক্রীমটা কেড়ে নিলো! সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরিত হয়ে অয়ন্তী এবং আলিজা বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো। সেদিনের সেই আরিফ ছেলেটিই অয়ন্তীর হাত থেকে আইসক্রীমটি কেড়ে নিয়েছিল। আইসক্রীমটিতে কামড়ও বসালো। ঠোঁটের কোণে কুৎসিত হাসি ফুটিয়ে তুলল সে। কদাকার গলায় বলল,,

“কী জান? কী খবর তোমার? ফ্রেন্ডের হয়ে তো আর কিছু বুঝাতে এলেনা আমাকে!”

কথাটা বলে কিঞ্চিৎ দমও নিতে পারলনা আরিফ! আলিজার হাতের গরম চড় পড়ল আরিফের নরম গালে! তৎক্ষনাৎ পরিস্থিতি গরম হয়ে উঠল। আলিজার আক্রমনাত্নক ভাব দেখে মুখ হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল রাফায়াত! নির্বোধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল আলিজার দিকে। বিড়বিড়িয়ে বলল,,

“ওত্তেরি! এ কী দেখলাম আমি? সিরিয়াসলি? আলিজা ঐ ছেলেটার গালে চড় মেরেছে?”

অয়ন্তীর দৃষ্টিও অবাকের চরম শীর্ষে। রসগোল্লার মত চোখ করে সে তাকিয়ে রইল আলিজার দিকে। এই প্রথম আলিজাকে সে এতটা রণরঙ্গিনী রূপে দেখছে। আরিফ প্রখর ক্ষুব্ধ হয়ে আলিজার দিকে তেড়ে আসার পূর্বেই আলিজা হিংস্র বাঘের ন্যায় গর্জন করে উঠল! গালে হাত দিয়ে হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরিফকে সে আঙুল উঠিয়ে কড়া গলায় বলল,,

“এই? তুই আমাদের পেয়েছিসটা কী হ্যাঁ? পেয়েছিসটা কী? তোর মত লম্পট একটা ছেলেকে ভালোবেসে ভুল করেছিলাম আমি বুঝেছিস? সেই ভুলের মাসুল কী এখন আমার ফ্রেন্ডের জীবন দিয়ে শোধ করতে হবে? যেখানে সেখানে তুই আমার ফ্রেন্ডকে ডিস্টার্ব করতে চলে আসিস? তাকে হিউমিলেইট করার চেষ্টা করিস? শুধু তাই নয়, আমাকে যেখানে সেখানে থ্রেড দিতে চলে আসিস। তোর প্রবলেমটা কী হ্যাঁ? প্রবলেমটা কী?”

আশেপাশের লোকজন এসে জড় হয়ে গেল ঘটনাচক্রে৷ আরিফের ভয়ে তারাও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারলনা এই জায়গায়। ক্ষিপ্ত আরিফকে দেখে সবাই লেজ গুটিয়ে পালালো। অপমানে, লজ্জায়, ঘৃণায় আরিফ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল। হাত উঠিয়ে যেইনা আলিজার গালে চড় বসাতে গেল অমনি রাফায়াত এসে খপ করে আরিফের হাতটা চেপে ধরল! এতটাই শক্তভাবে চেপে ধরল যে আরিফের সর্বশক্তি তার শক্তির কাছে হার মেনে গেল। মনে হলো যেন আরিফের হাতটা ভেঙে দেওয়া তার বাঁ হাতের খেলা! আরিফের আর্ত মুখমণ্ডল দেখে ফিক করে হেসে দিলো রাফায়াত। আরিফের গোলন্দাজ দৃষ্টিতে দৃষ্টি ফেলে বলল,,

“লাইক সিরিয়াসলি ব্রো? তুই আমার সামনে আমার বোনকে এবং তার ফ্রেন্ডকে হুমকি দিবি, তাদের মারতে যাবি, ধরতে যাবি আর আমি পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখব? ইজ দিস পসিবল ম্যান?”

পাশ থেকে অয়ন্তী এবং আলিজা ভ্যাবলার মত তাকিয়ে রইল রাফায়াতের দিকে। চক্ষু তাদের চড়কগাছ। মুখটাও কেমন হা প্রায়। তাদের ভোলাভালা মুখখানি দেখে মনে হচ্ছে যেন সপ্ত আসমান থেকে এইমাত্রই টপকে পড়েছে তারা! রাফায়াতের এই তীব্র প্রতিবাদ একদমই আশা করেনি তারা। সঙ্গে সঙ্গেই হুংকার দিয়ে উঠল আরিফ। নাক ফুলিয়ে ক্ষিপ্ত গলায় বলল,,

“এই কে তুই হ্যাঁ? কে তুই? আমার এলাকায় এসে আমার সাথেই মা’স্তা’নি করছিস? সাহস তো কম না তোর!”

হু হা শব্দে হেসে উঠল রাফায়াত। ব্যঙ্গ করে বলল,,

“যেখানে তোর এলাকার মেয়েরাই তোর গালে ধুপধাপ চড় বসিয়ে দেয় সেখানে তুই আমার থেকে এরচেয়ে ভালো কী এক্সপেক্ট করিস হ্যাঁ? তোর তো ভাগ্য ভালো রে ভাই রাফায়াতের পাগলা মাথা এখনও হিট হয়নি৷ একবার যদি রাফায়াতের মাথা গরম হয়ে যায়না? তখন রাফায়াত তার বাপের কথাও শুনেনা!”

আরিফ মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে নিলো রাফায়াতের গাঁয়ে হাত তোলার। পরিবেশ এখন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। অয়ন্তী এবং আলিজা ভয়ে সিঁটিয়ে রইল। একে অপরের হাত ধরে কাঁপাকাঁপি করছে প্রায়! রাফায়াতের কঠোর মুখভঙ্গি, তার এটিটিউড, কথাবার্তার ধরণ দেখে আরিফ কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছে রাফায়াত তার বাপেরও বাপ হবে! কোনো সাধারণ মানুষ সে নিশ্চয়ই হবেনা। আপাতত রাফায়াতের সাথে পাঙা নেওয়া মানেই হলো পাকভর্তি লোকজনদের তার সামনে মান-সম্মান খুঁইয়ে বসা! এমনিতেও সে সিঙ্গেলে এসেছে। আগেপাছে কেউ নেই। একা রাফায়াতকে সামলানো তার সম্ভব হবেনা। পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে চাইল আরিফ। রাফায়াত যেন তার হিংস্র চক্ষু দ্বারা আরিফকে খাবলে খুবলে খেয়ে নিচ্ছে! ঝট করে রাফায়াতের হাত থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিলো আরিফ। বেশ ভাবসাব নিয়ে নেতিয়ে যাওয়া শার্টের কলারটা সোজা করল সে। আঙুল উঁচিয়ে ক্ষুব্ধ গলায় রাফায়াতকে বলল,,

“তোকে আমি দেখে নিব!”

দৃষ্টি ঘুরিয়ে আরিফ এবার পাশে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অয়ন্তী এবং আলিজার দিকে গরম দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। আঙুল নাচিয়ে তাদের দুজনকেও শাসিয়ে বলল,,

“তোদের দুজনকেও দেখে নিব। পাখা খুব গজিয়েছে না তোদের? সেই পাখা আমি ভেঙে দিব!”

উগ্র হয়ে উঠল রাফায়াত। রূঢ় গলায় আরিফকে বলল,,

“আরেহ্ ভাই। দেখিস পরে। ভাঙিসও পরে! আগে যে আইসক্রীমটা তুই নষ্ট করেছিস সেই আইসক্রীমটা এখন কিনে দিয়ে যাহ্! আমার টাকার দাম আছে বুঝেছিস? তাছাড়া জেনেবুঝে কারো ক্ষতি করলে সেই ক্ষতিটা পুষিয়ে দিতে হয়। যা ভাই কিনে নিয়ে আয়। আমরা ওয়েট করছি। ওকে? আমি আবার বেশিক্ষণ ওয়েট করতে পারিনা। ইউ নো, খিচকিচ হয়।”

আরিফকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে রাফায়াত দোকানের দিকে নিয়ে এলো! হাতিয়ে টাতিয়ে তার পকেট থেকে টাকা বের করল। অয়ন্তীর পছন্দের চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীমটা নিলো। আরিফ শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখছিল। বুনো সাপের মত ফোঁস ফোঁস করছিল। ফণা তোলার মত অবস্থা তার প্রায়! নিজের এলাকায় অন্য একটা ছেলের রাজ সে সহ্য করতে পারছেনা। দোকানদারও কেমন বেকুব হয়ে তাকিয়ে রয়েছে আরিফের দিকে। বাঘকে যেন মাথায় নুইয়ে গুহায় ঢুকতে দেখছে উনি! আজ আরিফ একা বলে বিপরীতে কিছু করতে পারছেনা সে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্যাবলাকান্তের মত সব শুধু সহ্য করতে হচ্ছে। আইসক্রীমটা হাতে নিয়ে রাফায়াত ক্রুর হেসে ঘুরে দাঁড়ালো আরিফের দিকে। শক্ত হাত রাখল আরিফের কাঁধে। ঠাণ্ডা মাথায় শান্ত স্বরে বুঝিয়ে শুনিয়ে বলল,,

“দেখ ভাই। তোর সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই। না আমি তোকে চিনি, না তুই আমাকে চিনিস। কিন্তু অপরিচিত হয়েও তোর সাথে আজ আমার রুড বিহেভ করতে হচ্ছে। কারণটা খুব সিম্পল। তুই আমার বোনের গাঁয়ে হাত তুলতে চেয়েছিস। ভাই হয়ে কীভাবে মেনে নিই বল?”

দাঁতে দাঁত চাপল আরিফ। নাকের ডগা লাল করে চোঁয়াল উঁচিয়ে বলল,,

“কাঁধ থেকে হাতটা সরা।”

কাঁধ থেকে হাতটা সরিয়ে নিলো রাফায়াত। হাতটা ঝেড়ে স্বাভাবিক স্বরেই বলল,,

“ওকে সরিয়ে নিলাম। এবার তুই যেতে পারিস ভাই। তবে তোকে একটা থ্যাংকস দেওয়ার বাকি আছে! কারণটা এখনি বলবনা! পরের বার দেখা হলে নিশ্চয়ই বলব!”

কদাচিৎ হেসে রাফায়াত শার্টের কলার ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে আরিফের সম্মুখ থেকে প্রস্থান নিলো। তৎক্ষনাৎ আরিফ তার মাথার চুল টেনে ধরল। বিধ্বস্ত অবস্থায় সে জায়গা পরিত্যাগ করল। সিদ্ধান্ত নিলো এক্ষণি সে ছেলেফেলে নিয়ে এসে রাফায়াতের মাথা ফাটাবে! হিরোদের মত বেশ ভাবসাব নিয়ে রাফায়াত এগিয়ে এলো থম মেরে দাঁড়িয়ে থাকা অয়ন্তী এবং আলিজার দিকে। তাদের মুখ থেকে যেন কোনো কথাই বের হচ্ছে না। রাফায়াতের এই নতুন রূপ তাদের দুজনকে যতটা না অবাক করেছে এরচেয়ে বেশী তাদের ইমপ্রেস করেছে। বিশেষ করে অয়ন্তীকে! ঐসময় অয়ন্তী একদমই ভাবতে পারেনি রাফায়াত এভাবে তাদের হয়ে রুখে দাঁড়াবে। তাদের প্রটেক্ট করবে। আলিজা ঘাবড়ে ওঠে এই প্রথমবারের মত রাফায়াতের বাঁ হাতটা টেনে ধরল। ভরসা করতে লাগল রাফায়াতকে। ভয়ার্ত গলায় বলল,,

“ভাইয়া এটা তুমি কী করলে হ্যাঁ? ঐ আরিফের পেছনে কেন লাগতে গেলে? তুমি জানো আরিফ কে?”

রাফায়াত গাঁ ছাড়া ভাব নিলো। অয়ন্তীর দিকে আইসক্রীমটা এগিয়ে দিলো। শান্ত দৃষ্টিতে আলিজার ভয়ার্ত মুখের দিকে তাকালো। আলিজাকে সাহস যুগিয়ে বলল,,

“কুল আলিজা। বি কুল। এত ভয় পাচ্ছ কেন হুম? তুসি জানো? তুমি কতটা সাহসী মেয়ে? বিলিভ মি, আমার খুব প্রাউড হচ্ছে তোমাকে নিয়ে। কতটা সাহসী হলে একটা মেয়ে একটা ছেলের গাঁয়ে হাত তুলতে পারে বলো? তাছাড়া আরিফ বাঘ না ভাল্লুক? যে আমি তাকে ভয় পাব? তোমাদেরও ভয় পাওয়ার কিছু নেই ওকে? আমি যতক্ষণ তোমাদের পাশে আছি তোমাদের ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।”

আইসক্রীমটা হাতে তুলে নিলো অয়ন্তী। কাঠ কাঠ গলায় রাফায়াতকে বলল,,

“ভয় পাওয়ার আছে মিস্টার রাফায়াত। অনেক কিছু আছে ভয় পাওয়ার। আপনি জানেন না আরিফ আলিজার সাথে কী করতে চেয়েছিল! কত বড়ো ক্ষতি করতে চেয়েছিল তার! প্লিজ আপনি চলুন এখান থেকে। আ’ম ড্যাম শিওর আরিফ এখন তার চ্যালাফ্যালা নিয়ে আসবে আমাদের অ্যাটাক করতে!”

অয়ন্তী এবং আলিজার তোপের মুখে পড়ে পুরোপুরি কথা না শুনেই রাফায়াত বাধ্য হলো পার্ক থেকে বের হতে। আলিজা এবং অয়ন্তীকে নিয়ে সে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এসবের মাঝে রাফায়াত একটা জিনিস লক্ষ্য করল, অয়ন্তী কিছুটা হলেও তার সাথে স্বাভাবিক হচ্ছে! রাফায়াতকে নিয়ে বেশ কনসার্ন মনে হচ্ছে!

#চলবে…?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here