এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব -১৭

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_১৭
#নিশাত_জাহান_নিশি

“যা মনে হচ্ছে অয়ন্তীকে এই বাড়িতে রাখাটা সেইফ নয়! হতে পারে প্রিয়ার সাথে অনিকও আসতে পারে। অনিক কিন্তু আমাকে পাগলের মত খুঁজছে!”

উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল চঞ্চল। জিভ দ্বারা ঠোঁট ভিজিয়ে উত্তেজিত গলায় বলল,,

“যা করার ইমেডিয়েটলি কর ভাই। হাতে একদম সময় নেই।”

“গেস্ট হাউজের চাবিটা দে তো। অয়ন্তীকে আমি ঐ গেস্ট হাউজে রেখে আসছি। যেকোনো ক্রমেই হোক অয়ন্তীকে সেইফ রাখাটা আমার জন্য এসেন্সিয়াল।”

তাড়াহুড়ো করে চঞ্চল তার পকেট থেকে চাবিটি বের করে রাফায়াতের হাতে তুলে দিলো। চাবিটি হাতে পাওয়া মাত্রই রাফায়াত হম্বিতম্বি হয়ে প্রথমে তার রুমে প্রবেশ করল। সামনে যে প্যান্ট-শার্ট গুলো খুঁজে পেল তা নিয়েই বাথরুমে ঢুকে পড়ল। শাওয়ার নিতে খুব বেশী একটা সময় ব্যয় হলোনা তার। ভেতরে ঢুকল আর বের হলো ঠিক এমনটাই মনে হলো। তার উদ্দেশ্যই যেন ছিল বিনা সময় অপচয়ে অয়ন্তীকে নিয়ে এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়া। অয়ন্তীর জন্য নিরাপদ একটা জায়গার ব্যবস্থা করে আসা। প্রিয়া এবং অনিককে তার আশোপাশে থেকে দূরে রাখা৷

ভেজা শরীরে-ই রাফায়াত শার্টের বোতম লাগাতে লাগাতে পুনরায় দৌঁড়ে তার রুম থেকে বের হলো। চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে তার। ভিজে যাচ্ছে শার্ট এবং দেহের প্রতিটি আনাচকানাচ। সেদিকে বিন্দুমাত্র ধ্যান নেই তার৷ জুতো ছাড়াই যে সে রুম থেকে বের হয়ে গেছে সেদিকেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তার। উদাসীন এক অবস্থা তার। কেমন যেন দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে অয়ন্তীর দুঃশ্চিন্তায়। এইদিকে আবার খাবার টেবিলে খাবার বেড়ে অপেক্ষা করছেন রাফায়াতের মা এবং ভাবি। সবাইকে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতে ডাকতে তারা ব্যস হয়রান হয়ে যাচ্ছেন। অবশেষে উদ্ভ্রান্ত রাফায়াতকে অয়ন্তীর রুমের দরজায় দেখতে পেয়ে রাফায়াতের মা ড্রয়িংরুম থেকে রাফায়াতের নাম ধরে ডেকে উঠলেন। উঁচু গলায় শুধালেন,,

“কী রে রাফু? খাবিনা? সেই কখন থেকে খাবার বেরে বসে আছি। অথচ তোরা কেউ আসছিসই না।”

অয়ন্তীর রুমের দরজা ধাক্কাতে গিয়েও থেমে গেল রাফায়াত। তার মাকে উদ্দেশ্য করে বিরামহীন গলায় বলল,,

“সরি মা। তোমাদের সাথে বসে এখন খাবার খাওয়ার সময় নেই আমার। তুমি বরং এক কাজ করো আমার এবং অয়ন্তীর খাবারটা প্যাক করে দাও। আমরা পরে খেয়ে নিব।”

মিসেস শায়লা মির্জা বিচলিত হয়ে উঠতেই চঞ্চল এসে ঠাণ্ডা মাথায় সব বুঝিয়ে বললেন মিসেস শায়লা মির্জাকে। প্রিয়া আসবে বলে যে রাফায়াত অয়ন্তীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়ছে কথাটা পুরোপুরি ভেঙে না বললেও অনিককে মিন করে চঞ্চল ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে যা বলার বলেছে। মুহূর্তের মধ্যেই শায়লা মির্জা মুখটা কালো করে ফেললেন। বিষণ্ন মনে দুঃখী দুঃখী গলায় বললেন,,

“এতদিন পর ছেলেটা বাসায় এলো। কিন্তু ভাগ্য দেখো? একসাথে বসে খাবার খাওয়ার তৌফিকটাও হলোনা তার।”

সুমাকে নিয়ে মিসেস শায়লা মির্জা খাবার প্যাক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ঠেসেঠুসে খাবার বাড়তে লাগলেন বক্সে বক্সে। পারছেন না তিনি যা যা রান্না করেছেন সেসব বক্সে বক্সে ভরে দিতে! উনার এই কীর্তিকলাপ দেখে সুমা হাসতে লাগল। মায়েরা বোধ হয় এরকমই হয়৷ সন্তানদের ক্ষেত্রে তাদের কোনো কৃপণতা নেই। হাজার খাওয়ালেও তাদের যেন কোনো সন্তুষ্টি নেই! মুখে সেই একই কথা লেগে থাকে তাদের,,

“ইশশ আরেকটু দিতে হয়ত ভালো হত। কী না কী দিয়েছি। হবে তো আমার ছেলেটার?”

অয়ন্তীর রুমের দরজায় একবার কড়া নাড়তেই অয়ন্তী দৌঁড়ে এসে রুমের দরজাটা খুলে দিলো৷ ক্ষুধার্ত বাঘিনীর ন্যায় সে রাফায়াতের দু’হাতের দিকে তাকালো। হাঁপানো গলায় বলল,,

“কই? খাবার এনেছেন?”

প্রতিউত্তর করলনা রাফায়াত। তবে বুঝতে পারল অয়ন্তীর বেশ জোরে সোরেই ক্ষুধা পেয়েছে! এদিকে খুব একটা মনোযোগ না দিয়ে রাফায়াত অয়ন্তীর হাতটা ঝট করে চেপে ধরল। টানতে টানতে অয়ন্তীকে নিয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে চলে এলো। চঞ্চল আর এই মুহূর্তে রাফায়াতের সামনে এলোনা। কারণ অয়ন্তীর তাকে চিনে ফেলতে বেশী সময় লাগবেনা! রান্নাঘর থেকে সুমা দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে খাবারের বক্সগুলো রাফায়াতের হাতে ধরিয়ে দিলো। মিহি কণ্ঠে বলল,,

“নাও। খাবারগুলো তোমরা পরে খেয়ে নিও।”

অয়ন্তী বেশ বিরক্ত হয়ে উঠল৷ নাক-মুখ কুঁচকে সুমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“আমরা কোথায় যাচ্ছি আপু? খাবার কেন দিচ্ছ আমাদের?”

“গেলেই বুঝতে পারবে। এখন যাও তোমরা।”

ঘ্যান ঘ্যান করে অয়ন্তী সেই একই প্রশ্ন রাফায়াতের দিকে ছুড়তেই রাফায়াত চটে গেল! এমনিতেই তার মেজাজ বিগড়ে আছে। তার উপর অয়ন্তীর অযাচিত সব প্রশ্ন। তাই উঁচু গলায় সে অয়ন্তীকে শাসিয়ে বলল,,

“কানের কাছে একদম ঘ্যান ঘ্যান করবে না। আমি যা করছি তোমার ভালোর জন্যই করছি। চুপচাপ মুখটা বন্ধ রেখে এখন আমার সাথে চলো। কিছুক্ষণ পরে-ই তুমি তোমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।”

অয়ন্তী খামোশ খেয়ে গেল৷ কেবল অবিন্যস্ত দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত রাফায়াতকে দেখতে লাগল। একহাতে খাবারের বক্স এবং অন্যহাতে অয়ন্তীকে নিয়ে রাফায়াত দৌঁড়ে বাড়ি ত্যাগ করল। বের হওয়ার সময় বাইরে থাকা একজোড়া স্যান্ডেল পড়ে নিলো! বাইকে ওঠে সে অয়ন্তীকে নিয়ে তার ঠিক করে রাখা গেস্ট হাউজের দিকে গতিপথ নির্ধারণ করল। তবে এর আগে সে অয়ন্তীর আপাদমস্তক ওড়না দ্বারা ভালো করে ঢেকে দিলো! তাকে চিনতে পারার কোনো ব্যবস্থাই রাখল না। অয়ন্তী চুপচাপ বাইকের পেছনে বসে রইল। রাফায়াতের কাঁধে তার শক্ত হাত। নিজেকে খুব বিচিত্র প্রাণী মনে হতে লাগল তার! যে যেভাবে পারছে তাকে নিয়ে টানা হেঁছড়া করছে। বিপরীতে মুখে রা কাটারও সুযোগ নেই তার। মুখ বুজে সব সহ্য করা ছাড়া। প্রতিবাদ করার জায়গাটুকুনিও অবশিষ্ট নেই তার। ব্যক্তি স্বাধীনতা জলাঞ্জলি দিয়েছে প্রায়!

রাস্তার মাঝখানে হুট করেই একটা অটো রিকশা চোখে পড়ল অয়ন্তীর। ওড়নার উপর থেকেই সেই তিক্ত একটি মুখ তার দু’চোখে স্পষ্ট হলো। বুকের বাঁ পাশে জমা ক্ষতটাও কেমন যেন তাজা হয়ে উঠল! এক সময় এই মানুষটির জন্যই তার হৃদয় ভেঙেছিল! অতি সূক্ষ্মভাবে তার হৃদয় ভেঙেছিল। সেই হৃদয় ভাঙ্গনকারী মানুষটিকে চিনতে বুঝি ভুল হবে তার? তবুও এই হৃদয়হীনা মানুষটিকে দেখে যেন তার মনে আশার আলো জ্বলে উঠল! রাদিফের খবর জানতে উদাসী হৃদয় যেন ব্যাকুল হয়ে উঠল। মৃদু আওয়াজে সে মানুষটিকে ডেকে উঠল,,

“প্রিয়াআআআ?”

রাফায়াতের বাইকের স্পিড যেন আরও দ্বিগুণ বেড়ে গেল! বুঝতে বেশী বেগ পেতে হলোনা অয়ন্তী প্রিয়াকে দেখে নিয়েছে। বিরাট এক বিপদ বাঁধতে পারে এখন। শো শো বেগে সে বাইক চালিয়ে অটোরিকশাটি থেকে প্রায় অনেকখানি দূরে চলে এলো। যেখানে প্রিয়ার ছায়াটিও নেই। রিকশা থেকে মুখ বের করল প্রিয়া! পেছনের রাস্তায় উদগ্রীব দৃষ্টি ফেলল। কাউকে কোথাও দেখতে না পেরে সে মুখটা আবার ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো। ঠোঁট উল্টে বলল,,

“স্ট্রেঞ্জ। কে আবার আমার নাম ধরে ডাকল?”

,
,

বিছানার উপর মুখ ফুলিয়ে বসে আছে অয়ন্তী। রাগে কেমন রি রি ও করছে। চোখ মুখ পাকাচ্ছে বারবার। ভাগে পেলে এখনি সে রাফায়াতের গলার টুটি চেপে ধরবে সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। একটা মানুষ এত নি”কৃষ্ট কীভাবে হতে পারে? জা’লি’ম, পা’ষ’ণ্ড, অ’ত্যা’চারী। অয়ন্তীর দিকে তেমন কোনো মনোযোগ নেই রাফায়াতের। ভেজা শার্টটা গাঁ থেকে খুলে সে চেয়ারের উপর শার্টটা মাত্র ছড়িয়ে দিলো। পিছু ঘুরে অয়ন্তীর দিকে কেমন যেন আক্রোশিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। চোঁয়াল উঁচিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল,,

“হোয়াট’স ইউর প্রবলেম হুম? রাস্তাঘাটে নাম ধরে ডাকাডাকি করছিলে কেন? মিনিমাম কমনসেন্সটুকুও নেই তোমার?”

ঝগড়া করার মত এমন সুবর্ণ সুযোগ খুঁজে পেতেই অয়ন্তী সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইল না! বিছানার উপর সে হাঁটু গেড়ে দাঁড়ালো। কোমড়ে হাত গুজে নাক ফুলিয়ে পাল্টা বলল,,

“প্রবলেম তো আমার না ম্যান। প্রবলেম তো আপনার। দেখেছেন একজন পরিচিত মানুষকে দেখে আমি তার নাম ধরে ডেকেছি তাও আপনি বাইকটা কয়েক সেকেন্ডের জন্য থামাতে পারলেন না? এখন উল্টে এসে আমাকে ঝাড়ি দিচ্ছেন হুম? কমনসেন্স তো আপনার নেই।”

“আরেহ্! আজব পাবলিক তো। তোমাকে কি’ড’ন্যা’প করে এনেছি আমি। তো কী করে ভাবলা তুমি? তোমরা পরিচিত মানুষজনদের সাথে আমি তোমার কথা বলার সুযোগ করিয়ে দিব? মাথায় কী বুদ্ধি সুদ্ধি নেই নাকি? মাথামোটা তুমি? একটুর জন্যই কেইস খাওয়াতে নিচ্ছিলে আমাকে।”

“শুনুন? আমি জানি আমাকে আপনি অ”পহর”ণ করেছেন। আমি আপনার কাছে কি’ড’ন্যাপড। সব কথার বড়ো কথা হলো আমি যাকে নাম ধরে ডেকেছিলাম না? তার সাথে আমার দেখা হয়ে গেলেও কিংবা তার সাথে কথা হলেও সে ইচ্ছে করেই আমার কোনো হেল্প করতনা! উল্টো সে চাইত আমাকে জিম্মি করে আপনি মে’রে ফেলুন! আমার জাস্ট তার থেকে একটা খবর নেওয়ার ছিল। খবরটা পেয়ে গেলেই হয়ে যেত।”

সোজা হেঁটে অয়ন্তীর দিকে খানিক এগিয়ে এলো রাফায়াত। ডান চোখের ভ্রুটা ঈষৎ উঁচিয়ে সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কী খবর?”

“সেটা আপনাকে কেন বলব?”

“বলবে। কারণ, আমি শুনতে চাইছি।”

মাথা নুইয়ে নিলো অয়ন্তী। মুখশ্রীতে মন খারাপের রেশ টেনে বিষণ্ন গলায় বলল,,

“রাদিফ ভাইয়া কেমন আছে জানতে!”

রাফায়াত জানত তার প্রশ্নের উত্তরটা ঠিক কী হবে! অয়ন্তী যে রাদিফের ব্যাপারে জানার জন্যই প্রিয়াকে ডেকেছিল সেই বিষয়ে থাকা সন্দেহের অবকাশটুকুনিও আর অবশিষ্ট রইল না তার। বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যথার অনুভূতি হতে লাগল রাফায়াতের। সর্বাঙ্গ জুড়ে কেমন যেন বিদ্রোহের ঝড় বইতে লাগল। রাগী চোখ দুটো নিমিষের মধ্যেই তার বিবশ হয়ে উঠল। অয়ন্তী যে এখনো তার হারিয়ে যাওয়া রাদিফকে খুঁজে বেড়ায় ঘটনাচক্রে অয়ন্তীর কাছাকাছি না গেলে সে জানতেই পারত না! মাঝখানে হাজার বারণ থাকা সত্ত্বেও রাফায়াত তার উচাটন মনকে সামলে রাখতে পারলনা। বিগলিত হয়ে সে দ্রুত পা ফেলে বিছানায় অয়ন্তীর মুখোমুখি এসে বসল! কান্নার আগে বেদনায় রঙিন চোখ দুটো যেমন ঘোলাটে এবং লাল বর্ণের হয়ে থাকে? বর্তমানে অয়ন্তীর চোখ দুটোও ঠিক তেমনই রক্তিম এবং ঝাপসা হয়ে আছে! এক্ষণি বুঝি শ্রাবণের বারিধারা অবিশ্রান্ত ভাবে ঝড়তে শুরু করবে। আর বুঝি দমিয়ে রাখা যাবেনা মনে বইতে থাকা এই বৈরী আবহাওয়াকে। নির্লিপ্ত, নির্বিকার ভঙ্গিতে রাফায়াত ঈষৎ ঝুঁকে অয়ন্তীর বিমূঢ় মুখপানে চেয়ে রইল। কেন জানিনা অয়ন্তীকে কিছু বলতে ইচ্ছে করছেনা তার। শুধু নিষ্পলক চেয়ে চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। কান্না করলে মেয়েটার গালদুটো অসম্ভব রকম লাল হয়ে যায়। দেখতে দারুন লাগে তখন। এই ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপে তাকে দেখার এই সুযোগটা রাফায়াতের দুই বছর পর হয়েছে। এই সুযোগটা সে হাতছাড়া করবে কীভাবে?

ইতোমধ্যেই চোখ উঠিয়ে অয়ন্তী হঠাৎ রাফায়াতের দিকে তাকালো। ফুঁপিয়ে কাঁদার মতো অবস্থা তার। নাক ফুলিয়ে সে রাফায়াতের দিকে বিভৎস দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। আর্ত গলায় বলল,,

“আপনার বাড়ি তো এই চট্টগ্রামেই রাফায়াত ভাই। রাদিফ ভাইয়ার খোঁজটা আপনি আমাকে দিতে পারবেন?”

ক্ষণিকের মধ্যেই অয়ন্তীর থেকে বিমুগ্ধ দৃষ্টি জোড়া সরিয়ে নিলো রাফায়াত। মাথা ঝাঁকিয়ে রূঢ় গলায় বলল,,

“পারব না। আমি চিনিনা ঐ রাদিফ টাদিফ কে।”

“চিনেন। মিথ্যে বলছেন আপনি। রাদিফকে যদি আপনি না-ই চিনতেন তবে ঐদিন নিশ্চয়ই রাদিফ ভাইয়ার কথা আপনি তুলতেন না! সত্যি করে বলুন কে আপনি? রাদিফ ভাইয়ার বন্ধু টন্ধু নন তো?”

উগ্র মেজাজ নিয়ে বিছানা থেকে ওঠে দাঁড়ালো রাফায়াত। অয়ন্তীর প্রশ্নবিদ্ধ চোখে অসহিষ্ণু দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। অয়ন্তীকে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করতে যেন ওঠে পড়ে লাগল। ঝাঁজালো গলায় বলল,,

“এই তুমি কান খুলে শুনে রাখো। অনিকের থেকে রিভেঞ্জ নিতেই কিন্তু আমি তোমাকে কি’ড’ন্যা’প করেছি! অনিককে নাকে দঁড়ি দিয়ে ঘুরানোর পরই কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়ব। ঐ রাদিফ টাদিফের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই বুঝতে পেরেছ? আমি যেহেতু তোমার ক্ষতি করতে-ই এসেছি তো আগে থেকেই তোমার সম্পর্কে অল ডিটেইলস আমার জানা ছিল। আর তখনই কোনোভাবে জানতে পেরেছিলাম রাদিফ নামের কোনো একটা ছেলের সাথে তোমার ওয়ান সাউডেড লাভ ছিল!”

হিংস্র বাঘিনীর ন্যায় অয়ন্তী বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নামল। অপ্রত্যাশিতভাবেই রাফায়াতের বুকের পাঁজর বরাবর জোরে এক ঘু’ষি মারল! ক্ষোভে চিৎকার করে বলল,,

“কে বলেছে ওয়ান সাউডেড লাভ ছিল হ্যাঁ? কে বলেছে? রাদিফ ভাইয়াও আমাকে ভালোবাসত! আমি তার চোখে-মুখে আমার জন্য সেই অসম্ভব ভালোবাসা দেখেছিলাম। মাঝখান থেকে প্রিয়া এসে সব ঘেঁটে দিয়েছিল! জানিনা কেন রাদিফ ভাইয়া আমাকে ছেড়ে তখন প্রিয়ার কাছে চলে গিয়েছিল।”

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here