এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব -৪৪

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_৪৪
#নিশাত_জাহান_নিশি

“আমি কিন্তু ফার্স্টে কিছু করতে চাইনি। তুমিই বাধ্য করেছিলে!”

ঘামে সিক্ত হয়ে উঠল অয়ন্তী। পর পর কয়েক দফা শুকনো ঢোঁক গিলল সে। চিন্তাভাবনা ক্রমশ তার খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল! সে যা ভাবছে তাই নয় তো? মানে জ্বরের ঘোরে রাতে আবার তাদের মধ্যে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যায়নি তো? যা তার ইজ্জতহানীর কারণ হতে পারে! ভাবতেই কলিজা মো’চ’ড় দিয়ে উঠল অয়ন্তীর। ভীরু গলায় সে রাফায়াতকে শুধালো,,

“কী বলছেনটা কী আপনি? ক্লিয়ারলি বলুন?”

জায়গা থেকে খানিক নড়েচড়ে বসল রাফায়াত। চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে বুকের উপর হাত দুটি গুটিয়ে বসল। পায়ের উপর পা তুলে বেশ ভাবসাব নিলো। ক্রুর হেসে হেয়ালী গলায় বলল,,

“ওয়েট ওয়েট আগে কিছু খেয়ে নিই। খালি পেটে আমার মুখ থেকে আবার রোমান্টিক কথাবার্তা আসেনা! এনার্জিরও তো প্রয়োজন হয় না-কী?”

“রোমান্টিক কথাবার্তা মানে? কী বলতে চাইছেনটা কী আপনি?”

“তুমি যা বুঝতে চাইছ আমিও ঠিক তাই বলতে চাইছি! সিম্পল।”

মুহূর্তেই যেন কৌতূহল এবং উদগ্রীবতা পূর্বের তুলনায় অধিক বেড়ে গেল অয়ন্তীর! খারাপ কিছুর আশঙ্কাও ক্রমশ বাড়তে লাগল তার। রাফায়াতের দিকে কিঞ্চিৎ ঝুঁকে এসে সে শুষ্ক গলায় বলল,,

“মানে বিয়ের আগেই সব হয়ে গেছে?”

“ছিঃ অয়ন্তী! আই হেইট ইউর মাইন্ড!”

বলেই নাক সিটকালো রাফায়াত! রাতারাতি পল্টি খেয়ে গেল! থমথমে হয়ে গেল অয়ন্তী। টেনশনের চোটে কীসব বেফাঁস কথা বলে ফেলল সে! তার মানে কী এতক্ষণ সে যা যা সন্দেহ করছিল তার সবকটি সম্পূর্ণ ভুল ছিল? যদি ভুলই হতো তবে রাফায়াত হঠাৎ এমন দুষ্টু ভাব কেন নিলো? কেন বার বার কথার আকার ইঙ্গিতে বুঝাতে চাইল রাতে তাদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে? কেন রোমান্টিক শব্দটা উচ্চারণ করল সে? বস্তুত রাফায়াত-ই তো তাকে বাধ্য করল নেগেটিভ দিকটা ভাবার জন্য।

অয়ন্তীর চুপসে যাওয়া মুখখানি চুপিসারে আঁড়চোখে দেখছে রাফায়াত। ভেতরে ভেতরে সে হেসে হেসে বেহুশ! কিন্তু উপরে খুবই কঠোর! সম্পূর্ণ গম্ভীর একজন মানুষ। সত্যিই যেন অয়ন্তীর প্রতি বেশ বিরক্ত সে। অয়ন্তীর চিন্তা ভাবনাকেও রীতিমত ঘৃণা করছে। ইতোমধ্যেই তাদের খাবার চলে এলো। বার্গারে বা’ই’ট বসিয়ে রাফায়াত ভাবুক অয়ন্তীর দিকে সরু দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ভাবশূণ্য গলায় বলল,,

“আরেহ্ আগে খেয়ে নাও। পরে ঐসব বিষয় নিয়ে নিরিবিলি ভাবা যাবে। তুমি চাইলে রাতে যা যা হয়েছে এর সব আমি আবারও রিপিট কবর! তোমার জন্য আমি সব করতে পারি পরাণ। ইউ নো না? আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি?”

আমাশয় রোগীদের মত পেট মো’চ’ড় দিয়ে উঠল অয়ন্তীর! কীসব বা’রো’ভা’তা’রি কথাবার্তা বলে চলছে রাফায়াত? এক মুখে দুই কথা! কী বুঝাতে চাইছেটা কী সে? এই আশ্চর্য লোকটা এখনি তার মাথা আউট করে দিবে। ভুজুংভাজুং বলে। তবুও কথা বাড়ালোনা অয়ন্তী। আবার মুখ ফসকে কোন বেফাঁস কথা বলে ফেলে সেই ভয়ে! চুপচাপ স্যান্ডুইচে বাইট বসালো অয়ন্তী। মনে মনে গভীর চিন্তায় ডুব দিলো। ভাবতে লাগল,,

“রাতে যদি কিছু না-ই হয়ে থাকে তাহলে এই অ’স’ভ্য লোকটা আবার কেন বলল রাতে যা যা হয়েছে তার সব আবার রিপিট করবে? কী বুঝাতে চাইছে কী লোকটা? মাথার সিটটা আবার খারাপ হয়ে গেল না-কী?”

দুজনই খাওয়াদাওয়া শেষ করে উঠতে যাবে ঠিক তখনি তৃতীয় ব্যক্তির আগমন ঘটল তাদের মধ্যে! ইতিকে দেখা মাত্রই মাথা গরম হয়ে গেল অয়ন্তীর! তার তো ক্লাস চলছিল। হঠাৎ ক্লাস থেকে বের হয়ে এলো কেন? কী চাইছেটা কী সে? রাফায়াতও বিরক্তবোধ করল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলল ইতির দিকে। মিটিমিটি হেসে ইতি রাফায়াতের দিকে বিমুগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল! প্রফুল্লিত গলায় বলল,,

“ক্লাসরুম থেকেই আপনাকে দেখছিলাম। স্যার ক্লাসে ছিল বিধায় বের হতে পারিনি। ইউ আর লুকিং সো কুল রাফায়াত! কথাটা না বলে থাকতে পারছিলাম না। এনি ওয়ে, বসুন না। বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিই আমরা।”

ইতিকে ভাও দেওয়ার কোনো মানে খুঁজে পেলনা রাফায়াত। বরং ইনসাল্ট করার ইচ্ছে হলো! ইতির থেকে শাণিত দৃষ্টি ফিরিয়ে রাফায়াত অয়ন্তীর দিকে তেজী দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ইতির দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রাখা অয়ন্তীর দিকে সে খরতর গলায় প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তোমাদের এলাকার সব মেয়েরাই কী এমন বেহায়া প্রকৃতির হয় অয়ন্তী? ছেলে দেখলেই গাঁয়ে পড়তে আসার স্বভাব তাদের?”

কথাটা যদিও ইতির মাইন্ডে লেগেছে তবুও সে সব অপমান হজম করে নিলো! রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়ালো। মাথা ঠাণ্ডা রেখে ইতি শান্ত গলায় জবাবে রাফায়াতকে বলল,,

“না। সব ছেলেদের গাঁয়ে পড়িনা আমি। এই প্রথম কারো গাঁয়ে পড়লাম! অনেস্টলি রাফায়াত, আমি আমার লাইফে আপনার মত সুদর্শন পুরুষ একটা ও দেখিনি!”

রাগটা যেন এবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠল অয়ন্তীর! ক্ষোভ ঝড়তে লাগল তার দু’চোখে। কান থেকে যেন গরম ধোঁয়া বের হতে লাগল তার। আর সহ্য করা যাচ্ছেনা ইতির এসব অতিরিক্ত বেহায়াপনা। বাধ্য হয়ে অয়ন্তী ইতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে উঁচু গলায় বলল,,

“আপু তোমার মাথা ঠিক আছে তো? তুমি কাকে কী বলছ তোমার কোনো ধারণা আছে?”

“কাকে কী বলছি? যাকে যা বলার তাকে তাই বলছি!”

“আপু রাদিফ আমার উডবি। এনগেজমেন্টও হয়ে গেছে আমাদের। কিছুদিন পরই আমাদের বিয়ে। হুট করে তুমি আমাদের মাঝখানে এসে এভাবে আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট করতে পারো না।”

“বিয়েটা কিন্তু এখনও হয়ে যায়নি অয়ন্তী! একটা এনগেজমেন্ট রিং, কখনো একটা মানুষকে আজীবনের জন্য আটকে রাখতে পারেনা!”

অয়ন্তীকে আর কথা বাড়াতে দিলোনা রাফায়াত। কথায় কথা বাড়বে। এতে করে অয়ন্তীর মনোবল আরও ভেঙে যাবে। মনমানসিকতা সংকুচিত হতে থাকবে। ভ’য় বাড়তে শুরু করবে। তৎক্ষণাৎ অয়ন্তীর হাতটা খপ করে চেপে ধরে রাফায়াত ইতিকে উপেক্ষা করে জায়গা থেকে প্রস্থান নিলো। ক্ষোভে জর্জরিত হয়ে ঝাঁজালো গলায় ইতিকে লক্ষ্য করে বলল,,

“একটা থার্ড পার্সন কখনো সত্যিকারের ভালোবাসাকে বিনাশ করতে পারেনা! বরং সে ভুল মানুষটাই মাঝখান থেকে তখন বিনাশ হয়ে যায়। সো বি কেয়ারফুল। অন্যের ক্ষতি চাইতে এসে নিজের ক্ষতি করতে আসবেন না।”

হনহনিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেল রাফায়াত এবং অয়ন্তী। রিকশা ধরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো তারা। কাঁদো কাঁদো মুখে অয়ন্তী মাথা নুইয়ে রেখেছে। এখনি বুঝি চোখের কোণ বেয়ে মুশলধারে বৃষ্টি নামবে! অয়ন্তীর এহেন বিমর্ষতার কারণ যদিও রাফায়াত বুঝতে পারছে তবুও সে আপাতত চুপ রইল। রাফায়াত নিজেও নির্বাক ইতির আচার-আচরণে। একটা মেয়ে কীভাবে এতটা বেহায়া হতে পারে? এতটা নিচে নামতে পারে? লাজ লজ্জা ভুলে আত্মসম্মান বিসর্জন দিতে পারে? এমন নির্লজ্জ মেয়ে মানুষ তো রাফায়াত তার জীবদ্দশায় কখনও দেখেনি!

বাড়ি ফিরে অয়ন্তী তার রুমে ঢুকে পড়ল। মন খারাপ নিয়ে একটু ঘুমুনোর চেষ্টা করল। শরীরটাও তার কেমন যেন কাল রাতের মত খারাপ হয়ে উঠছিল! মনে হচ্ছিল আবারও জ্বর বাঁধবে তার। কাঁথা টেনে নিরিবিলি ঘুমানোর চেষ্টা করল অয়ন্তী। মিনিট পাঁচেক বাদে সত্যিই তার চোখে ঘুমেরা ধরা দিলো। এদিকে অস্বস্তি নিয়ে রাফায়াত সারা ঘরময় পায়চারি করছিল। যত দ্রুত সম্ভব ইতির টপিকটা তার ক্লোজ করা উচিৎ। এই বিষয় নিয়ে অয়ন্তীর বাবার সাথে তার সরাসরি কথা বলতে হবে। যেহেতু রাফায়াত এই এলাকায় নতুন, তাই সে সরাসরি গিয়ে ইতির পরিবারের সাথে কথা বলতে পারেনা। তারা সম্পূর্ণ অপরিচিত তার কাছে। এদিকে আবার ইতিকেও স্বাভাবিক বা ফান হিসেবে নিতে পারছেনা রাফায়াত। তার চোখেমুখে রাফায়াত অস্বাভাবিক কিছুর আভাস পেয়েছে সে। যা তার এবং অয়ন্তীর ভবিষ্যতের জন্য অমঙ্গলকর!

ইতোমধ্যেই অপ্রত্যাশিতভাবে অয়ন্তীর বাবার ফোন এলো রাফায়াতের নাম্বারে। মেঘ না চাইতেও যেন বৃষ্টি নেমে এলো! ইমার্জেন্সি ছাড়া নিশ্চয়ই অয়ন্তীর বাবা তাকে ফোন করবেন না। তাই আর দেরি না করে চট জলদি রাফায়াত কলটি তুলে নিলো। নম্র স্বরে সালাম জানাতেই ঐপাশ থেকে অয়ন্তীর বাবা সালামের জবাব নিয়ে বেশ ব্যস্ত স্বরে বললেন,,

“শোনো রাফায়াত তুমি কোথায়?”

“জি আঙ্কেল আমি তো বাসায়।”

“রেডি হয়ে আধঘণ্টার মধ্যে আমার অফিসে চলে এসো। সাথে তোমার বায়োডাটা এবং এডুকেশনাল যত সার্টিফিকেট আছে সব নিয়ে এসো।”

“কেন আঙ্কেল? কোনো দরকার?”

“আই থিংক তোমার চাকুরীটা এবার হয়ে যাবে রাফায়াত! সো টাইম ওয়েস্ট না করে তাড়াতাড়ি চলে এসো।”

খোশ মেজাজে কলটি কেটে দিলেন অয়ন্তীর বাবা। মুহূর্তেই অশান্ত মন শান্ত হয়ে উঠল রাফায়াতের। সত্যিই এই মুহূর্তে চাকুরীটা তার ভীষণ দরকার ছিল। নিজের জন্যও আবার ফ্যামিলির জন্যও। বিশেষ করে অয়ন্তীকে পুরোপুরি তার ঘরে তুলে আনার জন্য! সত্যিই অয়ন্তীকে ছাড়া তার আর এক মুহূর্তও চলছেনা। স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে অয়ন্তীকে কাছে পেতে চাইছে। কাগজে-কলমে, লিখিতভাবে। এমনিতেও শুভ কাজে বেশী দেরি করতে নেই। যত দেরি হবে ততই ঝড় ঝাপটা বাড়তে থাকবে। সম্পর্কে ফাটল ধরবে!

খবরটি প্রথমে রাফায়াত তার বাবা- মা, ভাই এবং ভাবিকে জানালো। সবাই তো বেশ খুশি। বিশেষ করে রাফায়াতের মা। বখে যাওয়া ছেলে উনার নতুনভাবে সব শুরু করছে। সুস্থ, স্বাভাবিক এবং সুন্দর একটি জীবনের আশায় কর্মসংস্থানও বেছে নিচ্ছে। এরচেয়ে খুশির খবর আর কী হতে পারে? তিনিও এবার থেকে গর্ব করে সবাইকে বলতে পারবেন বড়ো ছেলের মত উনার ছোটো ছেলেও চাকুরী করে! মোটামুটি দুই ছেলেকেই তিনি মানুষ করতে পেরেছেন। কেউ আর উনাকে গু’ন্ডা মা’স্তা’নের মা বলতে পারবেনা!

কালো প্যান্টের সাথে ইন করা সাদা শার্ট পড়ে প্রস্তুত রাফায়াত। এই প্রথমবার রাফায়াত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ঠিক করছে! মুখে সামান্য ক্রিমও মেখেছে! নিজেকে কতটা পরিপাটি দেখাচ্ছে তাও বারংবার আয়নায় চেক করে নিচ্ছে। ফরমাল লুকে রাফায়াত লাইফে আজ ফার্স্ট টাইম সেজেছে। তাই নিজের কাছেও তাকে আজ অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছে! কনফিডেন্স লেবেল বেড়ে যাচ্ছে! সর্বোপরি ঠিকঠাক ভাবে রেডি হয়ে রাফায়াত তার মা-বাবা এবং ভাবির থেকে দোয়া নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। অয়ন্তীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। খবরটা এখনও অবধি অয়ন্তীকে জানানো হয়নি। দেখা করে সামনাসামনি বলবে সেই ভেবে। অয়ন্তীদের বাড়িতে ঢুকার পর অয়ন্তীর মা সর্বপ্রথম এই খুশির খবরটি জানেন। রাফায়াতকে মিষ্টি মুখ করাতে চলে গেছেন সোজা রান্না ঘরে।

অয়ন্তী এখনো বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। রুমের দরোজা খুলে রাফায়াত দ্রুত পা ফেলে অয়ন্তীর রুমে প্রবেশ করতেই দরোজার তীব্র খটখটানির শব্দে ঘুম ভেঙে লাফিয়ে উঠল অয়ন্তী! অমনি ঘুমে আচ্ছন্ন দৃষ্টিতে সে ভিন্ন গেটআপে রাফায়াতকে দেখে অনেকখানিই অবাক হলো! ঘুম যেন তার চোখ থেকে উধাও হয়ে গেল। কী অমায়িক দেখাচ্ছে রাফায়াতকে! শুভ্র সুন্দর, স্নিগ্ধ এবং পরিপাটি। চোখ জোড়া ধাঁধিয়ে আসছে তার। এত সুদর্শন কেন এই লোকটা? এজন্যই তো মেয়েরা তার পেছনে লাগে। তৎক্ষনাৎ চোখ দুটো কচলে অয়ন্তী ব্যগ্র হাসা রাফায়াতের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“আপনি? হঠাৎ ফরমাল লুকে?”

“ভাবলাম তোমাকে আরও একবার ইমপ্রেস করা যাক!”

বলেই রাফায়াত ঝড়ের বেগে ছুটে এসে অয়ন্তীর বাঁ গালে টাইট করে এক চু’মু খেয়ে দিলো! গালে হাত রেখে অয়ন্তী তাজ্জব দৃষ্টিতে রাফায়াতের দিকে তাকাতেই রাফায়াত ঠোঁট কামড়ে রসালো গলায় বলল,,

“কী? করব নাকি রিপিট রাতে যা যা হয়েছিল?”

ভড়কে উঠল অয়ন্তী। আবারও নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা তার মাথায় ঘুরতে লাগল। ফুলে থাকা উপরের ঠোঁটটিতে সে হাত রেখে দেখল এখনও ফুলে আছে ঠোঁটটি! আচমকাই শুকনো ঢোঁক গিলে সে ডানপিটে রাফায়াতকে বলল,,

“সত্যি করে বলুন রাতে কী কী হয়েছিল?”

“মুখে বলতে পারছিনা! তবে করে দেখাতে পারি!”

রাফায়াতের এহেন ঠোঁট কাটা কথা শুনে প্রচণ্ড ক্ষেপে গেল অয়ন্তী। ভীতসন্ত্রস্ততা ভুলে সে রাগে বিবর্ণ হয়ে উঠল। এত হেয়ালি ভালো লাগছেনা তার। চট জলদি বিছানা ছেড়ে ওঠে অয়ন্তী বোকা বনে থাকা রাফায়াতের শার্টের কলার চেপে ধরল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,,

“বলুন? রাতে কী কী হয়েছিল?”

অয়ন্তীর এহেন রাগী হাবভাব দেখে ভয় পাওয়ার বদলে হু হা করে হেসে উঠল রাফায়াত! রাগী লুকে অয়ন্তীকে দেখতে তার ভালোই লাগে। টকটকে লাল মরিচ হয়ে যায় তখন। অদ্ভুত প্রশান্তি মিলে চোখে। অয়ন্তীর মাথায় গাড্ডা মে’রে রাফায়াত ফিচেল স্বরে অয়ন্তীকে বলল,,

“হায়রে পাগলী এটাও বুঝলে না? জ্বর থেকে জ্বর ঠোঁসা ফুটেছে তোমার ঠোঁটে! আদারওয়াইজ আর কিছু হয়নি আমাদের মধ্যে। এত বোকা কেন তুমি হ্যাঁ?”

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here