#এ_শহরে_তুমি_নেমে_এসো 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ২৯
দখিনা হাওয়া বইছে উত্তরে। আমি ও পায়েল নিরবচ্ছিন্নভাবে হেঁটে চলেছি শহরের উদ্দেশ্য। বন জঙ্গল পেরিয়ে এসেছি। পায়েল আপু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে হাঁটছে। উদ্দেশ্য বন জঙ্গল পেরিয়ে যাওয়া। চিপা গলি পেরিয়ে এক সময়ে বড়ো রাস্তা ধরলাম। ব্যস্ত রাস্তা অতিক্রম করার সময় একটু দৌড় দিলাম। মুখ থুবড়ে পড়লাম রাস্তার মাঝে। পায়েল আপু টেনে তুলতে তুলতে বললেন, “এত ব্যস্ত হচ্ছো কেন আরু? আমাদের নাগাল আর ওরা খুঁজে পাবে না। নিশ্চিতে থাকো। আর আস্তে হাঁটো।”
আমি সায় দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। হাঁটুতে টান পড়ল। বোরখা হারিয়েছি। পরনে থ্রি পিস। যার সালোয়ার ছিঁ/ড়ে রক্ত বেরিয়েছে। পায়েল আপুর হাত ধরে উঠে দাঁড়ালাম। হাতে কোনো কানাকড়িও নেই যে, ফার্মেসীতে ঢুকবো। তাই ওড়নাটার এক কোণা খন্ডিত করে হাঁটুতে পেঁচিয়ে বললাম, “পায়েল আপু, তুমি কি জানো এখান থেকে ঢাকার দূরত্ব বেশি না-কি সুন্দর নগরের? আমার কাছে কোনো টাকা নেই। বাড়িতে ফিরব কীভাবে?”
“তোমার কি মনে হয় আরু, ফাঁকা হাতে আমি বেরিয়েছি? ওস্তাদের থেকে পাঁচ হাজার টাকা সাটিয়েছি। তোমাকে তোমার বাড়ির লোকের হাতের তুলে দিয়ে আমি হাসপাতালে ভর্তি হবো। অ্যা/বশ/ন করব। তারপরে বাড়িতে ফিরে যাবো।”
চমকে উঠলাম আমি। আপু সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিন থেকে চার মাসে অ্যাবশন করলেই গর্ভবতী নারীর জীবনে ডেকে আনে মৃ/ত্যু। সেখানে সাত মাসে নিশ্চিত মৃ/মৃ/ত্যু। কিছুটা রেগে বললাম, “তুমি কি তোমার সন্তানকে শেষ করে দিতে পারবে আপু? কোনো মা এমন পারে না।”
পায়েল আপু বিদ্রুপ করলেন। কিছুটা ব্যঙ্গ করে বললেন, “মা! হাসালে আমায়। ও বেঁচে থাকলে আমি এই পৃথিবীতে শ্বাস নিতে পারব না। ও নিজেও বেঁচে থাকতে পারবে না। সবাই বলবে, অবৈধ সন্তান। ওর তো বাবা নেই, বাবার পরিচয় চাইলে কাকে দেখাবো আরু।
বাড়িতে ফিরলে সবাই আমাকে রাস্তায় ফেলে দিবে। আমি নিরুপায়। আমি পা/ষা/ন। আমি স্বা/র্থপ/র।”
আমি নিষ্পলক দৃষ্টিতে পায়েল আপুর দিকে তাকিয়ে আছি। তিনি আমাকে নিয়ে একটা ফার্মেসীতে গেলেন। ডাক্তার পাশে একজনের চিকিৎসা করছেন। আমরা অপেক্ষা করছি। অপেক্ষার এক পর্যায়ে রোগীর দিকে তাকাতেই চমকে উঠলাম। অপূর্ব ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি চোখ পরিষ্কার করে পুনরায় তাকালাম। আমার দৃষ্টিভ্রম নয়। অপূর্ব ভাইয়ের হাত ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন ডাক্তার। পরনে লুঙ্গি আর ফতুয়া। তাকে প্রথমবার এই বেশে দেখছি। হৃৎপিণ্ডে স্পন্দন ফিরে পেলাম। ডাক্তার সাহেব তুলোতে স্যাবলন মিশিয়ে হাঁটু স্পর্শ করতেই মৃদু আর্তনাদ করলাম। ডান চোখ সুখের সন্ধানে অশ্রু ভাসিয়েছে। বাম চোখে হাসি। অপূর্ব ভাই মৃদু স্বরে বললেন, “আমি ডায়ে বায়ে যেদিকে তাকাই, তোকে কেন দেখি আরু। দু’দিন ধরে পা/গ/লের মতো খুঁজে চলেছি। কোথায় আছিস তুই? কীভাবে তোকে ফিরে পাবো।”
আমি উঠে দাঁড়ালাম। দুকদম এগিয়ে গিয়ে অপূর্ব ভাইয়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। অকস্মাৎ ঘটা ঘটনায় অপূর্ব ভাই চমকে উঠলেন। বললেন, “কে আরু?”
“হ্যাঁ, অপূর্ব ভাই। আমি আরু। আপনি ঠিক আছেন?”
দু’হাতে আগলে ধরে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলেন। গালে হাত দিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে বলেন, “হ্যাঁ, আরুপাখি আমি ঠিক আছে। তুই ঠিক আছিস?”
“আপনি এতো স্বা/র্থপ/র কেন অপূর্ব ভাই? কেন আমাকে একা লঞ্চে রেখে কা/পুরুষের মতো পালিয়ে এসেছেন।” বলেই কেঁদে উঠলাম। আমার বুদ্ধির সঠিক ব্যবহার করতে না পারলে আমি আজ স/তী/ত্ব হীন নারীতে পরিনত হতাম। কারো কাছে মুখ দেখানোর সম্মান টুকু থাকতো না। অপূর্ব ভাই হাতটা দেখিয়ে বললেন, “তোর মনে হয়, আমি তোকে রেখে পালিয়ে যাবো? ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে নদীতে পড়েছিলাম। ভাবতে পারছিস, লঞ্চের নিচে বড়ো বড়ো পাখাগুলো আমার কী অবস্থা করতে পারতো। আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
আমার হাতের আ/ঘা/ত টা এখনো তাজা। চারদিন ক্ষতটা নিয়ে তোকে রাস্তায় রাস্তায় খুঁজেছি, পাই নি। থা/না/য় মা/ম/লা দায়ের করেছি, তা-ও লাভ হয়নি। ব্য/থার য/ন্ত্র/না সহ্য করতে না পেরে এসেছি ফার্মেসীতে।”
“আলহামদুলিল্লাহ।” মনে মনে উচ্চারণ করলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা উভয়ে সুস্থ আছি। মুচকি হেসে অপূর্ব ভাইয়ের হাতটা জড়িয়ে ধরলাম। পায়ের ব্যথা বিলীন হয়েছে। আমাদের মিলন পর্বে ব্যাঘাত ঘটালো পায়েল আপু। দু’বার কাশি দিয়ে বলে, “আরু, এই বুঝি তোমার অপূর্ব ভাই? যার কথা তুমি আমাকে বলেছিলে?”
“জি আপু।” অতঃপর ডা/কা/তদের ডে/রায় ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা অপূর্ব ভাইয়ের কাছে ব্যাখ্যা দিলাম। অপূর্ব ভাই আমার বুদ্ধি শুনে প্রশংসা করলেন।
অচেনা গ্রাম থেকে বাসে চড়ে আমরা এগোলাম ব্যস্ত নগরী ঢাকার উদ্দেশ্যে। রাত তখন দশটা বাজে। বাস থেকে নেমে আমরা তিনজনে এক পাশে দাঁড়ালাম। অপূর্ব ভাই এদিক ওদিক তাকিয়ে গেলেন সিএনজি আনতে। এমন সময়ে সেখানে দলবল নিয়ে হাজির হলো মিহির ভাই। আমার হাতটা খপ করে ধরে বলেন, “চল।”
“কোথায়?” চমকে বললাম।
“বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় আসার সাহস হয় কী করে তোর? একবার বাড়িতে চল। পা ভে/ঙ্গে হু/ই/লচেয়ারে বসিয়ে রাখব। ঠিক তোর মায়ের মতো।” বলে মিহির ভাই চললেন। হাতে টান লাগার দরুন আমিও বাধ্য হলাম অগ্ৰসর হতে। সিএনজি নিয়ে ততক্ষণে হাজির হয়েছেন অপূর্ব ভাই। শান্ত অথচ বাজখাঁই গলায় বলেন, “মিহির আরুর হাতটা ছাড়ো।”
“আগেও বলেছি, এখনো বলছি। আরু আমাদের বাড়ির মেয়ে। তার উপর তোমার কোনো অধিকার নেই।”
“আমি অধিকার তৈরি করে নিতে জানি মিহির। আমাকে বাধ্য করো না, তেমন কিছু করতে। চুপচাপ হাতটা ছাড়ো।” মিহির হাতটা ছাড়ে না। ছেলেদের ইশারা করে। সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে অপূর্ব ভাইকে আটকে রাখে তারা। অপূর্ব ভাই ফিচেল হাসে। মনোচিকিৎসক হিসেবে ঢাকাতে তার নাম ডাক রয়েছে। অনেকেই তাকে চিনে। অপূর্ব ভাই শান্ত গলায় ডাকে সবাইকে, “দেখুন না ভাইয়েরা, এই ছেলেটা আমাদের বিরক্ত করছে।”
সবাই একত্রিত হয়ে জড়ো হলো। সুযোগ বুঝে অপূর্ব ভাই আমাকে ও পায়েল আপুকে একসাথে নিয়ে সিএনজিতে উঠলেন। ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আমরা এখন চত্বরে যাবো না। এখান থেকে সবচেয়ে কাছে যেই ‘কাজী অফিস’ আছে, সেটায় চলুন।”
আমি হতবাক হয়ে অপূর্ব ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। গাড়ি চলতে শুরু হয়েছে। যতটা পথ পেরিয়ে চলেছি, ততটা কৌতুহল আমার মনে দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
[চলবে.. ইন শা আল্লাহ]
রেসপন্স করার অনুরোধ রইল।#এ_শহরে_তুমি_নেমে_এসো 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ৩০
‘কাজী অফিস’ দোতলায় বড়ো করে ‘টুলেট’ টানানো। সিএনজি গাড়িটা তার পাশ ঘেঁষে থামল। অপূর্ব ভাই গাড়ি থেকে নামলেন। রাস্তার পাশে আরও দুইজন পুরুষ ও একজন নারী দাঁড়িয়ে আছি। অপূর্ব ভাইকে দেখে তারা তিনজনে এগিয়ে এলেন। একজনের নাম জাহাঙ্গীর, যিনি এসিস্ট্যান্ট। আরেক অপূর্ব ভাইয়ের বন্ধু, নিলয়। আরেকজন নার্স পাপড়ি। সালাম বিনিময় করে পাপড়ি বলে, “স্যার আপনার কথা মতো আমরা সব ব্যবস্থা করে রেখেছি। কাজী ঠিক করা আছে। আপনি গেলেই বিয়ে পড়ানো শুরু হবে।”
অপূর্ব ভাই মাথা নাড়লেন। বোঝা গেল, তিনি নিজেই ফোন করে তাদের আসতে বলেছেন। অপূর্ব ভাই আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “তোকে কি এখন দাওয়াত দিয়ে গাড়ি থেকে নামতে বলতে হবে? নেমে আয়।”
‘নেমে আয়’ শব্দ টা ধমকের সুরে উচ্চারণ করলেন। কেঁপে উঠলাম আমি। ইতস্তত নিয়ে গাড়ি থেকে নামলাম। পায়েল আপুও নামলেন সাথে।
“এসেছিস, আমি তো ভেবেছি আমন্ত্রণ দিয়ে আনতে হবে।” অপূর্ব ভাইয়ের কথায় চোখ মুখ কুঁচকে এলো। সকলের সামনে আমাকে ব্যঙ্গ করছে। মনে আমার বিয়ে পড়ানোর কথাটা ঘুরছে। সন্দিহান গলায় বললাম, “অপূর্ব ভাই আমরা কার বিয়েতে এসেছি?”
“আমাদের। তোর আর আমার। এই মুহূর্তে, এই কাজী অফিসে বিয়ে করব আমরা। আর বাকিরা সাক্ষী থাকবে।”
“না..!” বলে চিৎকার করে উঠলাম আমি। অপূর্ব ভাই সহ বাকিরা ভ্রু কুঁচকে ফেলল। ভ্রু কুঁচকে বললেন, “না কি?”
“আমি আপনাকে বিয়ে করব না।”
“কেন?”
“আমি কোনো বুড়াকে বিয়ে করতে পারব না।”
“আমি বুড়া?” (কৌতুহলী কণ্ঠ অপূর্ব ভাইয়ের)
“না-তো কী? আমার বয়স ১৬ পেরিয়ে পড়ে ১৭ তে পড়েছে। আর আপনার বয়স ৩৫ বছর। প্রায় আমার চেয়ে দ্বিগুণ। আমি গিয়ে করব বাইশ বছর বয়সী তরুণদের। বুড়া বিয়ে করতে পারব না।” আমার জবাবে সবাই মিটমিট করে হাসছে। অপূর্ব ভাইয়ের বি/ষ দৃষ্টিতে সবাই চুপসে গেল। অপূর্ব ভাই রাগান্বিত গলায় বললেন, “ঠিক আছে আমাকে বিয়ে করতে হবে না। কু/কু/রের পেটে ঘিঁ সহ্য হয় না। তোরও ডাক্তার সহ্য হবে না। (জাহাঙ্গীর সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলেন) দেখেন তো রাস্তায় কোনো রিকশা ওয়ালা পান কি-না? ওকে তো ভালো কেউ বিয়ে করবে না। ওর জন্য রিকশা ওয়ালা যথেষ্ট।”
তিনটা লাফ দিয়ে পেছনে চলে গেলাম। তেজ দেখিয়ে বললাম, “আইছে রিকশা ওয়ালা। রিকশা ওয়ালা তো দূরের কথা। আমি বিয়েই করব না।”
“ঢাকাতে থাকতে হলে তোকে বিয়ে করতেই হবে।”
“না।”
“হম। নাহলে মিহির তোকে নিয়ে যাবে। তুই ভেবে দেখ কী করবি। আর কখনো মামা বাড়ির সাথে তোর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। এখন থেকে নিয়েই সোজা বিয়ে দিয়ে দিবে।” অপূর্ব ভাইয়ের কথাতে ভীত হলাম আমি। নতজানু হয়ে বিয়েতে সায় দিলাম। ভেতরে প্রবেশ করলাম। কাজী সাহেব বসেই ছিলেন। একশো এক টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে সম্পন্ন হলো। ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণ করতেই আধ ঘণ্টা লেগেছে। আমার পক্ষের সাক্ষী হিসেবে ছিল, নিলয় ও পায়েল আপু। অপূর্ব ভাইয়ের সাক্ষী হিসেবে ছিল জাহাঙ্গীর ও পাপড়ি।
বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে আমরা দুজনে অপূর্ব ভাইয়ের ফ্লাটের উদ্দেশ্য গেলাম। পায়েল আপু পাপড়ির সাথে তার বাড়িতে গেলেন।
__
চৌদ্দ তলার সেই এপার্টমেন্টে আধ ঘণ্টা আগে পৌঁছেছি আমরা। ফ্লাটের রঙ উজ্জ্বল। পোড়া ঘরে নতুন রঙ করেছে। পরণের জীর্ণ পোশাক বদলে অপূর্ব ভাইয়ের ট্রাউজার আর টি শার্ট জড়িয়েছি। আমি বের হতেই অপূর্ব ভাই গিয়েছেন ওয়াশরুমে। ‘ওয়াটার প্রুফ’ ফোন হওয়াতে তেমন ক্ষ/তি হয়নি তার মুঠোফোনের। দিব্যি চলছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে লাজুক হাসি দিচ্ছি আমি। নাকের ডগা রক্তিম হয়ে আছে। নিজের দিকে তাকাতেই লজ্জা মাখা। বউ বউ লাগছে আমাকে। অপূর্ব ভাইয়ের বউ। থুক্কু। অপূর্ব আহসানের বউ। অপূর্ব ভাইয়ের ফোন বেজে উঠল। পরপর দুইবার বাজতেই ফোনের কাছে গেলাম। ‘প্রয়াস’ নামটা দেখেই ভ্রু কুঁচকে এলো। ইতস্তত করে রিসিভ করলাম। স্ক্রিনে ভেসে উঠল তুরের ছবি। চমকে উঠলাম আমি।
ওপাশ থেকে তুর বলছে, “আরু, এই গরু। কথা না বলে হা করে আছিস কেন?”
“এই তোকে ফোনে কীভাবে দেখা যাচ্ছে রে?”
“এটা হচ্ছে ভিডিও কল। তোরে যেমন আমি দেখতে পারব, তুইও পারবি।”
“ওহ্। (চুপ থেকে বললাম)
এটা কার ফোন তুর?”
“তোর দুলাভাইয়ের।”
“প্রয়াস ভাইয়ের সাথে তোর বিয়ে হয়ে গেছে তুর?”
“হম। কতবার ভাইয়াকে ফোন দিলাম। রিসিভ করল না।”
“তোর ভাইয়া ওয়াশরুমে আছে। এখন আমার সাথে কথা বল। বিয়ের পর তোদের সংসার কেমন চলছে? প্রয়াস ভাই যত্ন টত্ন নিচ্ছে?”
“তা আর বলতে? ভেবেছিলাম, টিপা শ/য়/তা/ন। কিন্তু না, ভালোই আছে। তোকে একটা সিগরেট বলি? প্রয়াস আমাকে চুমু দিয়েছে। আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরেছে। বউ বলে ডাকে। আমি তো লজ্জায় ম/রেই যাই। কী দুষ্টু দুষ্টু কথা বলে।” বলেই তুর লজ্জা পাওয়ার মতো অভিনয় করল। দরজা খোলার শব্দ পেলাম। আড়চোখে ওয়াশরুমের দিকে তাকালাম আমি। অপূর্ব ভাই বেরিয়ে এসেছেন। বিয়ে হয়েছে দুই ঘণ্টা হয়েছে প্রায়, কই আমার সাথে তো দুষ্টু দুষ্টু কথা বলেনা তিনি। দু’গালে হাত রেখে বললাম, “কী কী করেছে বল না?”
“আমার লজ্জা করে।”
“ঢং জামাইয়ের কাছে করিস। আমি তোর বোন লাগি।”
“বিয়েতে ভারী লাল টুকটুকে একটা শাড়ি দিয়েছে। ২০ জন লোক গিয়ে আমাকে নিয়ে এসেছে। বাসর ঘরে আমি মুখ ফুলিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করেছি। পুষ্প দিয়ে সজ্জিত ছিল ঘরটা। সে এসে নিজের পাঞ্জাবিটা খুলে। একদিকে আমি তখন ভয়ে কাঁপছিলাম, অন্যদিকে লজ্জায় নতজানু হয়ে ছিলাম। আমার পাশে বসে সে। তারপরে আমার মাথার ঘোমটা সরিয়ে বিনীত সুরে সালাম দেয়। কাঁপা কাঁপা গলায় সালাম নিয়ে তার ন/গ্ন বুকের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। দুধের গ্লাসটা এগিয়ে দিলেন। তারপরে…
বাকি কথা বলার পূর্বেই অপূর্ব ভাই ফোনটা ছিনিয়ে নিলেন। লাইন বিচ্ছিন্ন করে ফোনটা মুঠোয় নিয়ে নিলেন। তিনিও আজ টি শার্ট পারেননি। বুকের লোমগুলোতে পানির বিন্দু জমে আছে। আমারও লজ্জা করছে। অপূর্ব ভাই আয়না থেকে আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, “লজ্জাবতী লতার মতো লতিয়ে আছিস কেন? লজ্জা করছে না?”
“না!”
[চলবে.. ইন শা আল্লাহ]
রেসপন্স করার অনুরোধ রইল