কল্পনায় হলেও শুধু আমারি থেকো💖 পর্ব ১৭

#কল্পনায়_হলেও_শুধু_আমারি_থেকো💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
#পর্ব_১৭( রহস্য সমাধান -০২ )

–আচ্ছা আমার উনি চলে আসছে আমি যাই ।(মেঘ)
— আচ্ছা বাই , (মেহেজাবিন)
মেঘ মেহেজাবিন কে বিদায় দিয়ে চলে আসে ,
–কেমন কাটলো তোমার দিন ।
মেঘ সিট বেল্ট দিতে দিতে আমান কে প্রশ্ন করে ,
কিন্তু আমান মেঘকে কোন উত্তর দেয় না ,
আমান কে উত্তর না দিতে দেখে মেঘ বেশ অবাক হয় ।
— কিছু হয়েছে কি ?
— না ( গোমড়া মুখে )
মেঘ চুপ হয়ে যায় ।
বাসায় পৌঁছে যায় তারা কিছু সময়ের মধ্যে,
আমান এই পুরোটা রাস্তা মেঘের সাথে কোন প্রকার কথা বলে নি।
মেঘে কেমন কষ্ট হচ্ছে আমান কে এভাবে মেনে নিতে
কি হয়েছে তার মেঘ সত্যি বুঝতে পারছে না,
বাসায় পৌঁছে আমান গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে যায়,
কখনো এমন হয়নি আমান নিজে বেরিয়ে গেছে মেঘের পাশের দরজা আনলক করে মেঘকে বেরিয়ে নিয়ে এক সাঘেই ঘরে গেছে,
মেঘের সব কিছুই কেমন অদ্ভুত লাগছে,
ভেতরে গিয়ে দেখে আমান নিজের মতো নিজের কাজ করে চলেছে,

কোন কথাই বলছে না,
এভাবে কেটে যায় ১৫ দিন,
আমান মেঘের সাথে ঠিক করে কথা বলে না,
শুধু প্রয়োজনে একটু আধটু,
সত্যি মেঘের কষ্ট হচ্ছে আমানের এমন ব্যবহারে,
মেঘ প্রতিবার প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যায়।
আজ সকাল থেকে মেঘের শরীর টা ভালো না,
মাথা ঝিম ঝিম করছে আরো সমস্যা হচ্ছে,
দুই বার বমি হয়েছে,
সত্যি কষ্ট হচ্ছে এই কয় দিনে মেঘ মাহিমা বেগমের চলে যাবার কথা জেনে গেছে,
রিমি বাবার সাথে একা থাকে এখন,
রিমি কে নিজের কষ্টের কথা বলতে চাইছে না এমনি মেয়েটা কষ্টে আছে,
নিজের ভেতর কষ্ট চাপিয়ে রেখেছে,
মেঘ আজ ভার্সিটিতে যায় নি।
আমান একটা বার প্রশ্ন করেনি কেন জাবা না কিছু হয়েছে কি,
সব কিছু কেমন অতিরিক্ত কষ্ট বহন করে আনছে,
মেঘ ভার্সিটিতে যায় নি বলে মেহেজাবিন মেঘকে কল করে,
–হ্যালো মেঘ।
–হ্যা বল,
–তুই আসলি না কেন?
–আমার না শরীর টা ভালো না রে,
–কি হয়েছে?
মেঘ সব খুলে বলে,
–আল্লাহ তুই এক কাজ কর প্রেগন্যান্সি টেস্ট কর।
–কিন্তু কি করে,
–আমি কিট পাঠাচ্ছি ওটা নিয়ে টেস্ট কর,
–ওকে,
মেহেজাবিন কিছু সময়ের মধ্যেই পাঠিয়ে দেয় কিট,
কিটে ২ দাগ স্পষ্ট,
মেঘের চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে,
ভেতরের অনুভব টা বোঝানোর মতো না।
–আমান এবার তুমি যদি রাগ হয়ে থাকে তাও রাগ হয়ে থাকতে পারবে না।
মেঘ ভিশন খুশি।
আজ আমান তার সাথে কথা বলবে,
আমানের আসার জন্য সে সব ব্যাবস্থা করে রাখে,
রাতে,
আমান বাসায় এসে সোজা নিজের রুমে চলে যায়,
আমান কে রুমে যেতে দেখে,
মেঘ আমানের কাছে এগিয়ে যায়,
–কি করছো দেও আমি হেল্প করে দি।
–প্রয়োজন নেই,
–আছে প্রয়োজন আমি না তোমার বউ।
–মেঘ আমার কাছ থেকে সরে দাঁড়াও আমার ভালো লাগছে না।
–কিন্তু কি হয়েছে? এটাই ত প্রশ্ন করছি বলো না কি হয়েছে?
এভাবে ব্যাবহার করছো কেন?
–মেঘ তুমি সরবা (চিল্লিয়ে আমান)
এই প্রথম আমান তার উপর চিল্লিয়ে কথা বলল
এবার মেঘও কিছুটা চিল্লিয়ে বলল
–তুমি এমন ব্যাবহার করছো কেন আমি কি করেছি আমার দোষ টা কি।
–তুমি উল্টে চিল্লাও কি জন্য (আমান আবার চিল্লিয়ে)
মেঘ এবার সহ্য করতে পারলো না আমানের মতো চিৎকার করে বলল,
–আমান আমি চিল্লাছি না বলার চেষ্টা করছি আমি প্রেগ..
পুরো কথা শেষ হবার আগেই মেঘের গালে আমানের ৫ আঙুল বসে যায়।
মেঘ তাল সামলে না পেরে মাটিয়ে পরে যায়,
মেঘের চোখ দু’টো ভরে আসলো,
ভরে আসলো না মেঘ কাদছে,
আমান নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে,
মেঘ উঠতে গিয়ে পরে যায় দুর্বলতার কারনে,
আমান ধরতে আসলে আমানের হাত ছাড়িয়ে দেয়,
মেঘ সেখান থেকে বেরিয়ে আসে,
আমান মেঘের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,
–কি করলাম আমি ওকে মারলাম এ কি করে করতে পারলাম আমি।
ওকে কেন মারলাম আমি,
মেঘ অন্য একটা রুমে চলে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়,
–আমিও আর তোমার কাছে যাবো না তুমি থাকো তোমায় নিয়ে।
আমরা দু’জন আছি এবার আমি একা নই।
কতো দিন ভালো থাকো আমিও দেখবো তোমার সামনেও জাবো না।
মেঘ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরে,
আমান খুজতে খুঁজতে মেঘকে যে রুমে পায় সেটা ভেতর থেকে বন্ধ।
আমান আর নক করে না,
সেখানে দরজার কাছে বসে রয়,
–আম সরি মেঘ আমার কাছে কোন উপায় নেই।
আমি যে সত্যি নিরুপায়,
তোমার মা যদি জানতে পারে আমাদের মধ্যে সব ঠিক আছে তুমি শুখে আছো ও ত তোমায় মেরে দিবে মেঘ,
আমি যে আমার বাড়িতে আমার আশেপাশে তোমায় রেখেও ঠিক রাখতে পারবো না।
তোমার জন্য আমি অসহায় মেঘ,
আমান মেঘের দরজার পাশেই রাত কাঁটায়,
আর মেঘ কাঁদতে কাঁদতে,
সকালে,
মেঘের ওঠার আগে আমান রুমে চলে যায়,
সেখানে গিয়ে টেবিলে কিছু একটা অদ্ভুত দেখে সেটার দিকে এগিয়ে যায়,
টিসুতে পেচানো কিছু,
মেঘ কিটা ফেলার জন্য টিসুতে পেচিয়ে সেটাকে রেখে দেয় কোন কারনে ভুলে গেছে,
আমান টিসু খুলে একটা কিট দেখতে পায়,
আমান বেশ বুঝতে পারছে মেঘ মা হতপ চলেছে,
আর মেয়েটা এই জন্য এতো খুশি ছিল
–আমি এটা কি করে দিলাম
আল্লাহ ও কি আমায় ক্ষমা করবে।
আমি কি আদও ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য।
,
মেঘ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেছিল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে,
ফ্রেস হয়ে রুমে এসে বসে,
কাল রাতে না খাওয়ার জন্য মাথাটা ঝিম ঝিম করছে,
এই অবস্থায় স্ট্রেস নেওয়া উচিত না।
কিন্তু মেঘের অবস্থা এখন ভিশন খারাপ।
মেঘ মেহেজাবিন কে কল করে,
–হ্যালো দোস্ত,
-মেহেজাবিন আমার একটা হেল্প করবি,
–হ্যাঁ অবশ্যই।
–আমায় একটু হসপিটাল নিয়ে যাবি ডক্টর এর কাছে,
আমার বাবুর জন্য একটা চেকাপ করাতে হবে আমায়।
–হুম তুই থাক আমি তোর বাসার সামনে আসছি,
–আমান বেরিয়ে যাক তার পর বের হবো।
–আচ্ছা।
আমান রেডি হয়ে মেঘকে বার বার খুঁজে কিন্তু কোথাও পায় না।
আমানের চোখ দুটো তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির মতো মেঘকে খুঁজে চলেছে কিন্তু মেঘ নেই।
আমান বেশ বুঝতে পেরেছে মেঘ ওর সমনে আসবে না।
অফিসের লেট হবার কারনে আমান চলে যায় অফিসে।
আমান চলে যেতে মেঘ বেরিয়ে আসে,
হসপিটালে,
ডক্টর চেকাপ করে মেহেজাবিন কে ডাক দেয়,
–He is always under stress.
It’s not good for her at all. In this situation she has to try to stay free all the time. Must be worry free. You have to eat properly.
But she probably didn’t eat.
Be aware that she may have a problem .
take care of her.
thank you.
— ok doctor.
মেহেজাবিন বেরিয়ে আসে,
মেঘকে বাসায় নিয়ে আসে,
–তুই কিসের জন্য এমন করছিস বলবি।
খেয়ে নে মেঘ তোর জন্য না হয় তোর বাবুর জন্য,
প্লিজ নিজেদের ঝামেলার জন্য তুই বাবুটাকে কষ্ট দিস না।
–আমি কষ্ট দিচ্ছি তোর তাই মনে হচ্ছে,
–দেখ মেঘ বাবুটার ত কোন দোষ নেই তুই যা খাবি ও ত তাই খাবে।
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here