কাশফুলের ভালোবাসা পর্ব -২০+২১+২২

#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ২০
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি

হসপিটালে চিন্তিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে মেহেক আর তার বোনের শশুড় বাড়ির লোক।আসলে মেহেক রান্নাঘরে গিয়ে দেখে তার বোন অজ্ঞান হয়ে মাটি পড়ে আছে।এটা দেখে মেহেক ঘাবড়ে যায় আর চিৎকার দেয়।মেহেকের চিৎকার শুনে রিফা আর তার মা নেমে আছে।সৃষ্টিকে এ অবস্থায় দেখে তারাও ঘাবড়ে যায়।ভাগ্যবসত তখন সৃষ্টির হাসবেন্ড স্বচ্ছ অফিস থেকে বাড়ি ফিরেছিল।সে আর তাদের ড্রাইভার মিলে সৃষ্টিতে গাড়িতে তোলে আর সোজা হসপিটালে নিয়ে আসে।অন্য গাড়িতে করে মেহেক,রিফা আর রিফার মা আসে।বড় ভাবী অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে শুনে সৌন্দর্য আর স্পর্শও তাদের কাজ ফেলে চলে আসে।সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে ডাক্তার বের হওয়ার।অবশেষে সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ডাক্তার কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে।স্বচ্ছ তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যায়।

” ডক্টর সৃষ্টি কেমন আছে?”

” আপনি ওনার কি হন?”

” আমি ওনার হাসবেন্ড।শাহরিয়ার স্বচ্ছ।”

” কংগ্রটেস মিস্টার স্বচ্ছ।সি ইজ প্রেগনেন্ট।আপনি বাবা হতে চলেছেন।”

ডাক্তারের কথা শুনে স্বচ্ছের গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।সে নিজের কানে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে বাবা হতে চলেছে।

” এটা সত্যি ডক্টর?”

” জ্বি।”

” আমি কি ওর সাথে দেখা করতে পারি?” কাঁপা কাঁপা গলায় বলে স্বচ্ছ।

” অবশ্যই।আপনার কথা হয়ে গেলে আপনি আমার সাথে একটু দেখা করে যাবেন।”

” ওকে ডক্টর।”

স্বচ্ছ ভেতরে চলে যায় আর অনেকটা সময় পর বাইরে আসে।এরপর একেক করে সবাই সৃষ্টিকে দেখে আসে।সবার শেষে যায় মেহেক।মেহেক ঢুকে আস্তে করে দরজা বন্ধ করে দেয় তারপর দেয় এক চিৎকার।

” আপুনি……।” শক্ত করে সৃষ্টিকে জরিয়ে ধরে মেহেক।

” আস্তে আস্তে।”

” নো আস্তে।আপুনি…আমি খালামণি হতে চলেছি।ওয়াও….তুমি বুঝতে পারছো কতো সুন্দর ব্যপারটা।একটা কিউট বেবি হবে তোমার।আমাকে খালামণি বলে ডাকবে।আ…..আপুনি কবে আসবে কিউট বেবি?” বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে বরে মেহেক।

” মৃদু মাত্র দু’মাস হয়েছে আর আজই তো খবর জানলে পারলি।এতো তাড়াতাড়ি কি করে বেবি আসবে?কমসে কম আরে ৮/৯ মাস লাগবে।”

” এইযে কিউট বেবি তাড়াতাড়ি আমার আপুনির পেট থেকে বেরিয়ে আসো তো।আর হ্যাঁ আমার আপুনিকে কিন্তু একটুও কষ্ট দিওনা তাহলে কিন্তু আমি তোমার সাথে রাগ করবো।” সৃষ্টির পেটে হাত দিয়ে বলে মেহেক।

বোনের এরকম পাগলামি দেখে হেসে দেয় সৃষ্টি।
___________________________________________

আধাঘন্টা ধরে পার্কে বসে আদিবের জন্য অপেক্ষা করছে লিজা কিন্তু আদিবের কোন খবর নেই।এই কড়া রোদে বসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে গিয়েছে লিজা।সে যখন চলে যেতে হবে তখন দেখে গেট দিয়ে আস্তে ধীরে আসছে আদিব।

আদিব এসে লিজার সামনে দাঁড়ায়।লিজা অগ্নি দৃষ্টিতে আদিবের দিকে তাকাই।

” হ্যালো বেবি।”

লিজা কোন উওর না দিয়ে চলে যেতে নিলে আদিব তার হাত ধরে ফেলে।

” আরে বেবি চলে যাচ্ছো কেন?”

” এতো তাড়াতাড়ি কেন এসেছো?আরো একটু দেরি করে আসতে।”

” তাড়াতাড়ি এসেছি?আচ্ছা ঠিক আছে পরের বার আরো দেরি করে আসবো।”

লিজা নিজের হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে নিলে আদিব আবারো তার হাত ধরে ফেলে।

” আরে বেবি রেগে যাচ্ছো কেন?আচ্ছা এর পরের বার থেকে আসে তাড়াতাড়ি আসবো।”

তাও লিজা কিছু বলেনা।মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে তাকে।আদিব পকেট থেকে একটা গোলাপ ফুল বের করে।

” আমি একটা গোলাপ ফুল এনেছিলাম।কিন্তু যার জন্য এনেছিলাম মনে হয় তাকে দেওয়া আর হবেনা।মনে হচ্ছে ফুলটা এখন অন্যকাউকে দিয়ে দিতে হবে।”

আদিবের কথা শেষ হওয়ার আগেই লিজা আদিবের হাত থেকে ফুলটা ছিনিয়ে নেয়।

” আমার জন্য আনা জিনিস অন্যকাউকে দিলেনা খুন করে ফেলবো।”

” এবার রাগ কমেছে।”

” হুম।চলো কোথাও গিয়ে বসি।” হাসি মুখে বলে লিজা।

আদিবা মুচকি হেসে লিজার সাথে পাশের একটা বেঞ্চে বসে।আদিব জানে লিজা গোলাপ ফুল পছন্দ করে,তাইতো সে এই ফুলটা নিয়ে এসেছে।

লিজা নিজের মতো কথা বলছে হঠাৎ সে খেয়াল করে আদিবের কথায় মন নেই।সে শুধু হুম হুম করছে আর অন্য মেয়েদের দেখছে।এটা দেখে লিজার রাগ তো আকাশ ছুঁয়ে যায়।

” আদিব তুমি শুনছো আমার কথা?”

” হুম।”

” আমাদের রাজধানী ঢাকা।”

” হুম।”

” পানির রঙ লাল।”

” হুম।”

” তাজমল আমেরিকায় অবস্থিত।”

” হুম।”

লিজা আর নিজের রাগ কনট্রোল করতে পারছেনা।সে উঠে খপ করে আদিবের চুল ধরে ফেলে আচমকিক এরকম কিছু হওয়ায় আদিব ঘাবড়ে যায়।

” আরে বেবি কি করছো?ছাড়ো আমার চুল।আ….লাগছে তো।”

” তোর চুলতো আমি আজ ছিঁড়েই ছাড়বো।আজ যদি তোরে আমি টাকলা না বানিয়েছি তো আমার নাম ও লিজা না।”

” কি হয়েছে বেবি?”

” কি হয়েছে।পানির রং লাল না?তাজমল আমেরিকায় অবস্থিত না?”

” আরে বেবি না না।পানি তো নীল হয় আর তাজমল তো আগ্রায় অবস্হিত।”

” তো আমি যখন বলেছি তখন হুম হুম করছিলি কেন?তোর সাহস তো কম না আমার সাথে বসে তুই অন্য মেয়েরে দেখোস।”

” আহ্…..বেবি লাগছে প্লিজ ছাড়ো।তোমার কোথাও ভুল হয়েছে।আমি কেন অন্য মেয়েদের দেখবো?তুমি জানোনা আমি ভালো নম্র ভদ্র একটা ছেলে।”

” হুম জানি তুই কতটা ভদ্র।আজ তোর চুল ছেড়ে দিলাম কিন্তু আজকের পর থেকে তুই যদি আর আমার সাথে কথা বলতে আসিস না তো তোর চুল আর থাকবেনা।মনে রাখিস।”

কথাটা বলেই লিজা রেখে গটগট করে চলে যায় আর আদিব এখনো সেখানে বসে নিজের চুলে হাত বুলাচ্ছে।
_________________________________________

মাত্রই কলেজে এসেছে অথৈ।হঠাৎ পাশে থেকে তাকে অদ্ভুত নামে কেউ ডাকে।

” এই ব্ল্যাকপিংক।”

অদ্ভুত এই নাম শুনে অথৈ আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়।বাম পাশে তার চোখ পড়তেই সে দেখে এটা তো সেই রেগিং করা ছেলেটা।অথৈ সেদিক পাত্তা না দিয়ে চলে যেতে নিলে ছেলেটা মানে রুদ্র দৌড়ে অথৈয়ের সামনে এসে দাঁড়ায়।

” কি হলো ব্ল্যাকপিংক?কথা না বলে চলে যাচ্ছো কেন?”

” কি চাই?”

” যদি বলি তোমাকে?”

” সোজাসুজি বলবেন না আমি যাবো।”

” সত্যি বলছি।জানো তোমাকে দেখে না আমার মনের ঘরের ঘন্টাটা না ঢংঢং করে বাজে।”

” আর কিছু?” বিরক্ত নিয়ে বলে অথৈ।

” আর আমার হার্টবিটটা ব্যাঙের মতো লাফাতে থাকে।”

” এটা হার্ট নাকি ব্যাঙের মতো ঘড়ি।” অন্যদিকে তাকিয়ে বলে অথৈ।

” সে যাই বলো সব তো তোমার জন্যই।”

” হয়েছে আর এতো ফ্ল্যার্ট করতে হবেনা।আমি তোমার নেচার সম্পর্কে অলরেডি জানি।তো আমার সামনে এসব চলবেনা।”

” বাহ্ তার মানে তুমি আমার খবর রাখো,রাইট?”

” ও হ্যালো আমার কি আর কোন কাজ নেই নাকি যে আমি তোমার খবর রাখতে যাবো।আর তোমার কীর্তিকলাপ না ভার্সিটির সবাই জানে।” অথৈ চলে যেতে নিলে রুদ্র আবার তাকে আটকিয়ে দেয়।

” আরে দাঁড়াও না,একটু কথা বলি।”

” কেন কথা বলবো?তুমি কি আমার ফ্রেন্ড বা পরিচিত কেউ?”

অথৈয়ের কথা রুদ্রের গায়ে লাগে তাও সে সেটা ইগনোর করে।

” আচ্ছা তুমি বলেছিলে না তুমি রেগিং করা শেখাবে।শেখাবি নাকি তুমি।”

” নাউ আই এম নট ইন্টারেস্ট।এখন সরো হয়তো তোমার ক্লাস না থাকতে পারে তবে আমার ক্লাস আছে।আর হ্যাঁ আর আমার পথ আটানোর চেষ্টা করবেনা।নয়তো এমন হাল করবোনা যে হাঁটারো জোর থাকবেনা।”

” ওকে ওকে।”

রুদ্র একপাশে সরে দাঁড়ায় আর অথৈ বিরক্তি নিয়ে নিজের ক্লাসে যায়।এদিকে দূর থেকে আজো শান্ত তাদের দুজনের উপর নজর রেখেছি।হাত মুঠো করে দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে আছে শান্ত।তাকে দেখে মনে হচ্ছে পারলে এখনই সে রুদ্র মেরে হসপিটালে পাঠিয়ে দিতো।
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ২১
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি

হাতে একটা নীল রঙের ডাইরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেহেক।এই ডাইরিটা সৌন্দর্যের।আসলে মেহেক এসেছিল সৌন্দর্যের বুক শেল্ফ থেকে তার(সৌন্দর্য) একটা বই নিতে আর বই নেওয়ার সময় মেহেক দেখতে পাই এই নীল রঙের ডাইরিটা।ডাইরিটা পড়তে মেহেকের অনেক হেজিটেশন হচ্ছে তবে কিউরিওসিটিও হচ্ছে।নিষিদ্ধ জিনিসে বরাবরি আমাদের কিউরিওসিটি বেশি থাকে ঠিক তেমনি মেহেকের ক্ষেত্রেও।অনেক ভেবেচিন্তে মেহেক ডাইরিটা খুলে।

ডাইরির প্রথম পেইজে একটা কাশফুলের ছবি আঁকা এবং সুন্দর করে ‘কাশফুল’ লেখা।মেহেক পরের পেইজ উল্টোয় আর মনে মনে পড়তে থাকে।

প্রিয় কাশফুল,

‘কাশফুল’ নামটা খুবই অদ্ভুত তাইনা?তবে আমার কাছে এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নাম।জানো যেদিন জানতে পারলাম তোমার কাশফুল পছন্দ সেইদিন থেকেই আমি তোমার নাম দিয়েছি কাশফুল।কেমন আছো তুমি?আমি আশা করি তুমি ভালোই আছো।কিন্তু তুমি কি জানো তোমাকে ছাড়া আমি মোটেও ভালো নেই।তুমিহীনা আমার প্রত্যেকটা মূহুর্ত কাটানো যে এখন খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।কেন তুমি এতো দূরে কাশফুল?কেন এতো দূরত্ব আমাদের মধ্যে?তুমি কি আমার কাছে থাকতে পারতে না?পারতেনা আমার চোখের সামনে থাকতে?জানিনা কখনো আমি তোমাকে বলতে পারবো কিনা যে আমি তোমাকে ভালোবাসি কাশফুল।ভালোবাসি তোমায়।তুমিই আমার প্রথম আর তুমিই আমার শেষ ভালোবাসা হয়ে থাকবে।তবে তুমি চিন্তা করোনা আমি কখনোই নিজের ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার কাছে আসবোনা।আমি চাই তুমি যাকে নিয়ে আছো তাকে নিয়েই যেন সুখী থাকো।ভালো থেকে কাশফুল।হয়তো আবারো কোনদিন আমাদের দেখা হবে আবার হয়তো আর কোনদিন দেখাই হলোনা।

ইতি
নামটা নাহয় নাই লিখলাম।

মেহেক আর পরের পেইজগুলো পড়েনা।সে ডাইরিটা বন্ধ করে আবারো আগের জায়গায় রেখে নিজের রুমে চলে আসে।রুমে এসে মেহেক দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।আয়নায় কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চিৎকার করে কান্না শুরু করে মেহেক।সে ধপ করে নিচে বসে পড়ে।না সৌন্দর্যের ডাইরি পড়ে কাশফুলের প্রতি তার ভালোবাসা দেখে মেহেক কান্না করছেনা,মেহেক কান্না করছে এই কারণে কারণ তার মুগ্ধের কথা মনে পড়েছে।মুগ্ধের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মূহুর্ত তার আবারো মনে পড়েছে।মেহেক নিজেই নিজেকে বলে—-

” আচ্ছা,ভালোবাসা কি সত্যিই এতো কষ্ট দেয়?ভালোবাসলে কি সত্যিই এতো যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়?কেন আমি যাকে ভালোবাসি,যাকে আমি চাই সেই কেন আমার থেকে দূরে চলে যায়?কেন আমি একা হয়ে যায় সবসময়?”
___________________________________________

টিউশন থেকে ফিরছে মেহেক।রাস্তায় একা একা হাঁটছে সে।শরীর তার চলছেই না।ইদানিং কেমন যে সবকিছু তার বিরক্ত লাগলে শুরু করেছে।মেহেকের আজ ভয় ভয় লাগছে কারণ আজ সে যে রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছে সে রাস্তা দিয়ে সচরাচর সে কখনো চলাফেরা করেনা কারণ রাস্তাটা খুব একটা ভালোনা।মেহেক এদিকে আসতো না তবে সে যে রাস্তা দিয়ে আসাযাওয়া করে সেখানে কিছু কাজ চলছে যার কারণে রাস্তাটা কিছুদিন ধরে বন্ধ।যেদিন থেকে রাস্তাটা বন্ধ হয়েছে সেদিন থেকে মেহেক তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে যেতো তবে কাল স্টুডেন্টের পরীক্ষা তাই আজ তার ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে।ব্যাগটা শক্ত করে ধরে মেহেক নিঃশব্দে হাঁটছে তবে কথায় আছেনা যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়।মেহেকের বেলাও ঠিক তাই হয়েছে।

সামনে একটা ছোট দোকানে কয়েকটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছেলেগুলো ভালোনা।মেহেক একবার আশেপাশে তাকিয়ে নেয় না কেউ নেই আর থাকবেই বা কিভাবে খারাপ কিছু হওয়ার ভয়ে সবাই অন্ধকার হওয়ার আগেই কাজ শেষ করে নিজের ঘরে ফিরে যায়।ছেলেগুলোকে দেখে মেহেক দাঁড়িয়ে পড়ে।মেহেক অনেক সাহস সঞ্চয় করে সামনে আগাতে থাকে।সে চুপচাপ দোকানটার সামনে দিয়ে চলে যায়।মেহেক ভেবেছে ছেলেগুলো থাকে দেখতে পাইনি কিন্তু না ছেলেগুলো ঠিকই মেহেককে খেয়াল করেছে।

” কিগো সুন্দরী এতো রাতে একা একা কোথাই যাও?”

” আমরা পৌঁছে দেবো নাকি?”

কথা বলে কুৎসিত একটা হাসি দেয় সবাই।তাদের হাসি শুনে মেহেক গা কেঁপে উঠে।মেহেক কোন কথা বলে চলে আসতে নিলে ছেলেগুলো তাকে ঘিরে ধরে।

” কিগো সুন্দরী বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছো বুঝি?চলো আমাদের সাথে চলো আমরা তোমাকে পৌঁছে দেবো।”

” ভাই মনে হচ্ছে মেয়ের কাছে অনেক কিছু আছে।”

আরেকটা ছেলে পকেট থেকে একটা ছোট ছুড়ি বের করে বলে, ” শোন যা যা আছে চুপচাপ সব আমাদের দিয়ে দে।নয়তো এতো সুন্দর জীবনটা খোয়াতে হবে তোর।”

” আমার কাছে কিছু নেই।” কাঁপা কাঁপা গলায় বলে মেহেক।

” দেখ মটকা গরম করিস না যা আছে চুপচাপ তা দিয়ে দে।”

” বললাম তো কিছু নেই।” কিছুটা চিৎকার করে বলে মেহেক।

” আরে তোরা ওকে রাগিয়ে দিচ্ছিস কেন?বিরক্ত করিস না তো মামুণিকে।আচ্ছা আমাদের টাকা পয়সা লাগবে শুধু কয়েকঘন্টার জন্য তোমার এই নরম শরীরটাকে আমাদের কাছে দিয়ে দাও।তাহলেই হবে।”

” হুম নিজে থেকেই দিয়ে দাও।তাহলে তুমিও মজা পাবে আর আমরাও।”

এগুলো বলে তারা হাসতে থাকে।এতো বাজে কথা শুনে মেহেকের চোখে পানি জমে যায়।মন থেকে সে প্রচুর কষ্ট পেলেও সে সেটা বাইরে প্রকাশ করেনা।

” আমাকে যেতে দিন।”

” আরে সোনা দেবো তো আগে একটু মসতি তো করেনি।” বলে ছেলেটা মেহেকের গায়ে হাত দিতে গেলে মেহেক সড়ে যায়।

” আপনাদের ঘরে কি মা-বোন নেই নাকি?আপনাদের মা-বোনের সাথে যদি কেউ এরকম করতো তখন?”

” আরে আবার সেই কমন ডায়লগ।শোনো সুন্দরী আমাদের ঘরে মা-বোন থাক না থাক তা আমাদের ব্যপার।আর আমরা এখানে মাশতি করবো এখানে মা-বোন এতো কিছু চিন্তা করার কি সময় আছে?আর থাকলেও তো তুমি আমাদের কেউ না তাই আমাদের কিছু যাই আসেনা।”

” এখন এতো কথা না বলে চুপচাপ আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে যে।তাহলে তোরও কষ্ট কম হবে।”

ছেলেগুলো মেহেকের দিকে আগাতে গেলে মেহেক তাদের চোখে কিছু একটা স্প্রে করে দিয়ে দৌড়াতে থাকে।এদিকে ছেলেগুলো চোখ ধরে চিৎকার করতে থাকে।

” আহ্…..আমার চোখ।জ্বলে গেলো আমার চোখ।”

আসলে মেহেক তাদের চোখে পেপার স্প্রে করে দিয়েছে।সেফটির জন্য সবসময় মেহেক তার ব্যাগে একটা পেপার স্প্রে রাখে,যা মরিচের গুঁড়া,জিরা গুঁড়া,পেঁয়াজের রস এরকম আরো অনেক কিছু দিয়ে সে বানিয়েছে।প্রথমে পেপার স্প্রের কথা তার মনে ছিলনা হঠাৎ করেই তার স্প্রের কথা মনে পড়ে।তাই সুযোগ বুঝে সে সেটার ব্যবহার করে।

মেহেক দৌড়াতে থাকে।দৌড়াতে দৌড়াতে সে পেছন ফিরে তাকাই না এখনো পর্যন্ত কেউ তার পেছনে আসছেনা।মেহেক পুরো দমে আবারো দৌড়াতে থাকে।হঠাৎ করেই মেহেক থেমে যায়।সামনে থেকে একটা ট্রাক আসছে।এটা দেখে ভয়ে মেহেকের জান যায় যায় অবস্থা।সে সরতেও পড়ছেনা কারণ দৌঁড়ানোর কারণে সে পায়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করছে আর মেহেকের একটা বাজে স্বভাব আছে ভয় পেলে সে একজায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে।ট্রাকটা মেহেকের খুব কাছে চলে এসে।মেহেক চোখ বন্ধ করে আল্লাহর নাম নিতে থাকে।হঠাৎ মেহেক অনুভব করে কেউ তাকে টেনে সরিয়ে নিয়েছে।মেহেক ফট করে চোখ খুলে তাকাই।দেখে সৌন্দর্য তার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে।

” ইউ ইডিয়ট মেয়ে,দেখছো যে ট্রাক আসছে তাও একজায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলে কেন?এটা কি সিনেমা পেয়েছো?আজ যদি আমি না আসতাম তাহলে এতোক্ষণে তো মরে ভুত হয়ে যেতে।”

মেহেক কিছু বলেনা চুপচাপ সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে।সে এতোটাই অবাক হয়ে গিয়েছে যে সে কি বলবে সেটাই বুঝতে পারছেনা।হঠাৎ কারো চিৎকার চেচামেচিতে মেহেকের ধ্যান ভাঙে।মেহেক চট করে পাশে ফিরে তাকাই।আরে সেই ছেলেগুলো তো এদিকেই আসছে।ছেলেগুলোকে দেখে মেহেক ঢোক গিলে।

” মিস্টার সৌন্দর্য তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলুন।ছেলেগুলো ভালোনা,প্লিজ তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলুন নয়তো কোন অঘটন ঘটে যাবে।”

সৌন্দর্য মেহেকের কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছেনা তবে তার মাথায় এতটুকু এসেছে যে এখন তাদের এখানে থাকা সেভ না,তাদের পালাতে হবে।আশেপাশটা একবার পর্যবেক্ষণ করে নেয় সৌন্দর্য।তার এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে তার পেছনেই একটা ছোট জঙ্গল আছে।আর কোন কিছু না ভেবে মেহেকের হাত ধরে জঙ্গলের ভিতরে ছুটতে শুরু করে সৌন্দর্য।
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ২২
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি

অন্ধকারে মধ্যে ছুটে চলেছে মেহেক আর সৌন্দর্য।তারা কোথায় যাচ্ছে তারা নিজেরাও জানেনা।তাদের দুজনের মাথায় এখন একটা কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আর সেটা হচ্ছে পালাতে হবে,পালাতে হবে তাদের।

দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ মেহেক দাঁড়িয়ে পড়ে।মেহেক দাঁড়িয়ে পড়াতে সৌন্দর্যও দাঁড়িয়ে পড়ে।

” কি হলো দাঁড়িয়ে পড়লে কেন?চলো।” তাড়া দিয়ে বলে সৌন্দর্য।

” আমার চশমা।”

” চশমা কি হয়েছে?”

” চশমা পড়ে গিয়েছে।”

” কি?” অবাক গলায় বলে সৌন্দর্য। ” কি বলছো তুমি?এতো সিরিয়াস মোমেন্টে তুমি চশমা হারিয়ে ফেলছে!ও শেট,এখন দাঁড়িয়ে না থেকে তাড়াতাড়ি খোঁজা শুরু করো।”

মেহেক আর সৌন্দর্য দুজনেই চশমা খুঁজতে থাকে কিন্তু অন্ধকার হওয়ার কারণে তারা চশমাটা খুঁজে পাইনা।

” পেয়েছো?”

” না।”

সৌন্দর্য কিছু বলেনা।সে চুপ করে থেকে কিছু একটা চিন্তা করে তারপর মেহেকের হাত ধরে একটা ঝোঁপে পেছনে লুকিয়ে পড়ে।

কিছুক্ষণ পর হঠাৎ সৌন্দর্যের মাথায় আসে মেহেকের কেমন যেন চুপচাপ,নিস্তেজ হয়ে আছে।সৌন্দর্য মেহেক দিকে তাকাই।হঠাৎ তার নজর পড়ে তার হাতের দিকে,মেহেক শক্ত করে তার শার্ট চেপে ধরে আছে।সৌন্দর্য তাড়াতাড়ি ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে মেহেকের দিকে নেয়।মেহেকে দেখে তো সৌন্দর্য অবাক হয়েছে যায়।কারণ মেহেক চোখমুখ খিচে বন্ধ করে আছে,চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে তার।

” মেহেক এই মেহেক।কি হয়েছে তোমার?এভাবে বসে আছো কেন?ঠিক আছো তো তুমি?”

” আম…রা…. এখা…ন থে..কে.. ক..খন.. বের.. হ..বো..?” কাঁপা কাঁপা গলায় বলে মেহেক।

সৌন্দর্য মেহেকের প্রশ্নের কোন উওর না দিয়ে ফোনে কিছু করে তারপর উঠে দাঁড়ায়।

” উঠো।”

এটাই শোনার অপেক্ষায় ছিল মেহেক।সে চট জলদি উঠে দাঁড়ায়।সৌন্দর্য আবারো মেহেক হাত ধরে হাঁটতে থাকে।সৌন্দর্য খুবই তাড়াতাড়ি হাঁটছে।মেহেক না পারতে বলে উঠে—-

” আস্তে হাঁটুন।চশমা ছাড়া আমি কিছুই দেখতে পারিনা।”

মেহেকের কথা শুনে সৌন্দর্য একবার তার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে সাবধানে মেহেককে জঙ্গল থেকে বাইরে নিয়ে আসে।

চশমা না থাকার কারণে মেহেক কোন কিছুই স্পষ্ট দেখতে পারছেনা।সে ঝাপসা ঝাপসা এতটুকু দেখতে পেয়েছে যে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় অপজিটে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।সৌন্দর্য মেহেককে নিয়ে গাড়িটার কাছেই এসে দাঁড়ায়।গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে সৌন্দর্য মেহেককে উঠেতে বলে।

” আমরা কোথায় যাচ্ছি?”

” বাড়িতে।” গম্ভীর মুখে বলে সৌন্দর্য।

মেহেকও আর কোন কথা না বলে উঠে নেয় কিন্তু ঠিক মতো দেখতে না পাওয়ার কারণে সে ঢুকার সময় মাথায় ভারী খাই।ব্যথায় হালকা চিৎকার করে ওঠে মেহেক।

” ইডিয়টে।” বিরবির করে বলে সৌন্দর্য।

এরপর সৌন্দর্য মেহেকে সাবধানে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও বসে পড়ে।গাড়ি চলতে শুরু করে।সৌন্দর্য আর যে গাড়ি চালাচ্ছে তার কথায় মেহেক বুঝতে পারে গাড়িতে সে আর সৌন্দর্য ছাড়াও স্পর্শও আছে।মেহেক আর এতোকিছু না ভেবে সিটে হেলাম দিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে।মেহেকের মাথায় এখনো ছেলেগুলো বলা কথাগুলো ঘুরছে।কথাগুলো তার বুকে তীরের মতো বিঁধেছে।আচমকা মেহেকের চোখের কার্নিশ বেয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।

” মেহেক নামো আমরা চলে এসেছি।” সৌন্দর্য বলে।

কিন্তু মেহেকের কোন সাড়া নেই।সে এখনো চুপচাপ সিটে হেলাম দিয়ে আছে।

” মেহেক।আমরা বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছি নামো।”

কিন্তু এবারো মেহেক কিছু বলেনা।সৌন্দর্য মেহেকে হালকা করে ধাক্কা দেয় আর মেহেক হেলে পড়ে সৌন্দর্যের বুকে।এটা দেখে সৌন্দর্য ঘাবড়ে যায়।

” মেহেক,এই মেহেক।” মেহেক গালে হালকা থাপ্পড় মেরে বলে সৌন্দর্য।

” স্পর্শ,স্পর্শ।” স্পর্শ এতোক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে মেহেক আর সৌন্দর্যের অপেক্ষা করছিল।সৌন্দর্য চিৎকার শুনে সে দৌড়ে গাড়ির কাছে আসে।

” কি হয়েছে ভাইয়া?” তাড়াহুড়ো করে জিজ্ঞেস করো স্পর্শ।

” অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে ও।” দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে সৌন্দর্য।

” এটাই আশা করেছিলাম।তুমি ওকে কোলে করে নিয়ে এসো আমি ভাবীকে খবরটা দিয়ে আসছি।”

” ঠিক আছে যা।”

স্পর্শ তাড়াতাড়ি ভেতরে চলে যায়।সৌন্দর্য মেহেককে সাবধানে কোলে তুলে নেয় আর বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসে।

বোনকে এই অবস্থায় দেখে ঘাবড়ে যায় সৃষ্টি।

” সৌ,আদু মৃদুর কি হয়েছে?”

” ভাবী ওসব পড়ে বলছি আগে ওকে রুমে নিয়ে যেতে হবে।” সৌন্দর্য বলে।

” হ্যাঁ ঠিক বলেছো।তুমি ওকে রুমে নিয়ে শুয়ে দাও,আমি আসছি।”

সৌন্দর্য মেহেককে রুমে নিয়ে শুইয়ে দেয়,পেছন পেছন স্পর্শও আসে।কয়েক সেকেন্ড পর তাড়াহুড়ো করে সৃষ্টিও আসে।সে একপলক মেহেকের দিকে তাকিয়ে সৌন্দর্যকে প্রশ্ন করে কি হয়েছে।সৌন্দর্য যতটুকু আন্দাজ করতে পেরেছে সে ততটুকুই সৃষ্টিকে বলে।সৌন্দর্যের কথা শুনে সৃষ্টি বুঝতে পেরে যায় আজ তার বোন অনেক বড় বিপদের মুখ থেকে ফিরে এসেছে।মেহেক যে এরকম কিছুর সম্মুখীন হয়েছে এটা জেনে সৃষ্টির চোখ ভিজে যায়।

.
.
.

—- কি সোনা যাবে নাকি?

—- চলো একটু মসতি করে আসি।

” প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন,আমাকে ছেড়ে দিন আমি যাবোনা আপনাদের সাথে।একটু দয়া করুন আমার উপর।না কাছে আসবেন না,আসবেন না কাছে।না….না….না…..।”

” মৃদু,মৃদু কি হয়েছে?মৃদু?”

ঘুমের মধ্যে চিৎকার করছে মেহেক।সৃষ্টি তাকে ঘুম থেকে জাগানোর চেষ্টা করছে।আচমকাই মেহেক চোখ খুলে উঠে বসে।হাঁপাছে সে,মেহেক পাশে ফিরে সৃষ্টিকে দেখে জলদি তাকে জরিয়ে ধরে আর কান্না করতে শুরু করে।

” আপু,আমাকে বাঁচা।ওরা….ওরা আমাকে নিয়ে যাবে আপু।আমাকে বাঁচা।”

” শান্ত হ মৃদু,শান্ত হ।দেখ এখানে কেউ নেই,কেউ নেবে না তোকে।শান্ত হ।” মেহেক মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে সৃষ্টি।

” আপু…..ওরা….আমার….সাথে……” কান্নার কারণে আর কিছু বলতে পারেনা মেহেক।সৃষ্টিও কিছু না বলে মেহেকের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

বিকেলবেলা,

চুপচাপ আকাশের দিকে স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেহেক।কাল রাতের ঘটনা সে এখনো বুলতে পারিনি,ছেলেগুলোর প্রতিটা কথা তার কানে বাজছে এখনো।

” একা একা ছাদে কি করছো?”

কারো কথা শুনে মেহেক পেছন ফিরে তাকাই।দেখে সৌন্দর্য আর স্পর্শ এসেছে।মেহেক কিছু না বলে মুচকি হেসে আবারো আকাশ দেখতে থাকে।সৌন্দর্য তার কথার জবাব না পেয়ে মেহেকের সামনে এসে দাঁড়ায়,স্পর্শ অন্যদিকে চলে যায়।

” শরীর কেমন আছে তোমার?”

” আছে বেশ।” ছন্নছাড়া হয়ে জবাব দেয় মেহেক।

মেহেকের কথার জবাব শুনে সৌন্দর্য বুঝতে পেরে যায় মেহেক এখনো কাল রাতের কথাটা ভাবছে।সৌন্দর্য আর কিছু না বলে চলে যেতে নিলে মেহেকের কথা শুনে থেমে যায়।

” কাল আপনি ওই সময় ওখানে কি করছিলেন?”

মেহেকের কথা শুনে সৌন্দর্য থমকে যায়।সে কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলে—

” আসলে আমি কিছু কাজের জন্য ওই রাস্তা দিয়ে ফিরছিলাম।তখন দেখলাম রাস্তায় তুমি ছুটছো।”

সৌন্দর্যের কথা মেহেকের বিশ্বাস হলেনা বটে তবেও সে বললো—

” ধন্যবাদ আমাকে হেল্প করার জন্য।” তারপর একবার স্পর্শের দিকে তাকিয়ে বলে ” মিস্টার স্পর্শকেও আমার তরফ থেকে ধন্যবাদ দিয়ে দেবেন।” কথাটা বলে মেহেক নিচে নেমে যায়।

মেহেক চলে গেলে স্পর্শ একবার শান্তদৃষ্টিতে সৌন্দর্যের দিকে তাকাই।স্পর্শ এতোক্ষণ তাদের কথায় শুনছিল।স্পর্শের তাকানো দেখে সৌন্দর্য অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে নেয়।
__________________________________________

” না আপুনি আজ ভার্সিটিতে যেতেই হবে।এমনিতেই অনেকদিন ধরে যায়নি।”

” আর কিছুদিন রেস্ট নিলে হয়না।আচ্ছা কাল থেকে যায় আজ অন্তত বাসায় থাকায়।”

” না আপুনি সামনে পরীক্ষা।”

” আজ তোর সাথে বিশেষ কেউ দেখা করতে আসবে।”

” কে আসবে?আর আসলেও ওনাদের কিছুক্ষণ বসতে বলবি।”

” আচ্ছা ঠিক আছে যা তবে টিউশনে যাস না।ভার্সিটি থেকে সোজা বাড়িতে চলে আসবি।আজ তোর সাথে স্পেশাল কেউ দেখা করতে আসবে।”

” যেভাবে বলসিস কেন আমাকে কেউ দেখতে আসবে।”

” সেরকমই কিছু মনে কর।”

” কি?”

” আরে মজা করছি।আচ্ছা সেসব ছাড় তোকে যেটা বলেছি সেটা মনে রাখবি।”

” আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।এখন বাই,নয়তো দেরি হয়ে যাবে।”
.
.
রিফার সাথে কথা বলতে বলতে ক্যান্টিনের দিকে আসছে মেহেক কিন্তু তখনই ঘটে যায় এক অঘটন।আপুর কথা না শুনে ভার্সিটিতে এসে যে এমন ফল ভোগ করতে হবে সেটা মেহেক কখনই ভাবতে পারেনি।যদি আগে থেকে জানতো তবে সে আজ কোনমতেই ভার্সিটিতে আসতোনা।

চলবে……..
চলবে…….
চলবে…….

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here