ঘাস ফড়িং (৮ম পর্ব)
—————–
মোবাইল হাতে নিয়ে নীলাভ বারান্দায় যায়। কল দেয় মিনুকে। ওপাশে রিং হয়ে কেটে আসে। আরেকটা কল দিতে যেয়ে পারে না সে। মুখ ঢাকা নীরব কান্নার শব্দ থেকে থেকে আসছে। সেই কান্না জুড়ে আছে মায়া। কি এক বন্ধনের হেঁচকা টানে যেন সে বারান্দা থেকে রুমে তাকায়। দুই হাতে মুখ ঢাকা। পিঠময় ছড়ানো ঘন কালো চুল। শরীরটা বারংবার কেঁপে উঠছে কান্নায়। কান্নাটা বড় ছোঁয়াচে রোগ। নীলাভেরও বেদনায় মনটা হু-হু করে কেঁদে উঠে। বাইরে প্রকাশ পায় না। কেবল চোখ ঝাপসা। ধীরে ধীরে আবার রুমের দিকে যায়। হাঁটু ভেঙে মেঝেতে বসে। খাটে বসা শ্রেয়া। নীলাভ হাত বাড়িয়ে বুকে টানে। শ্রেয়ার কান্না নিমিষেই আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। নীলাভেরও চোখ বেয়ে জল পড়ছে। সে অস্ফুটে বলল, —‘কেন সবকিছু আগে বললে না শ্রেয়া। আমাকে শেষ করে দিলে। এখন আমি কি করব। মিনুকে যে আমি অনেক ভালবাসি।’
শ্রেয়া চোখ মুছতে মুছতে বলল,-‘আমি আছি নীলাভ। কিছুই শেষ হয়নি। আমি ঠিক করে দেব।’
নীলাভ মুচকি হাসল। বড় আত্মবিশ্বাসী হাসি সেটা। জীবনটা সিনেমা নয়। কারণ সে জানে এখন চাইলেই সব ঠিক হবে না। শ্রেয়ার প্রতি তার মায়া পড়ে গেছে। মায়া হচ্ছে কচু পাতায় থাকা বৃষ্টির পানির মতোন।
বড্ড পড়ে যাবার জিনিস সে। কারো না কারো উপর পড়েই যায়।
সেই মায়া শ্রেয়ার উপর স্থির থেকে হয়ে গেছে গাছের মতোন, গাছটায় এতোদিনে শিকড় গজিয়েছে। নীলাভ আস্তে করে বলল,- ‘বাসায় ফিরে যাই চলো। এখানে আর ভালো লাগছে না।’
শ্রেয়া কোনো কথা বলে না। মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। আবার দু’জন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ফিরতে ফিরতে রাত ন’টা হয়। খাদিজা বেগম ভীষণ অবাক। কম হলেও দু-তিন দিন শ্রীমঙ্গল থাকবার কথা। কিছুটা উত্তর তিনি পেয়ে যান শ্রেয়া আর নীলাভের মুখ দেখে। কিছু একটা হয়েছে। বুদ্ধিমতী খাদিজা বেগম কারণ জানতে ব্যস্ত হন না। খাবার টেবিলে ডাকেন। তিনজন চুপচাপ খায়। নীলাভের গলা দিয়ে খাবার যায় না।
টুকরো টুকরো স্মৃতি আবার উঁকি মারে। মিনু, বোরকা পরা সহজ-সরল একটা মেয়ে, ঘাস ফড়িং, ভোলাগঞ্জ পা পিছলে পড়ে যাওয়া, বাসে জড়িয়ে ধরে ঘুমানো, নদীর পাড়ে চড়ুই পাখি, আর পারে না সে। আর পারে না। খাবার টেবিল থেকে উঠে যায়। এতোদিন পরে মিনু তার নাম্বার চায় কেন? কেমন আছে সে? কোনো কথা না বলে টেবিল থেকে রুমে আসে। সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে ছাদে যায়। খানিক পর শ্রেয়াও চলে আসে ছাদে। পুরোপুরি স্বাভাবিক সে। যেন বিয়ের আগের শ্রেয়া। ছাদের কার্ণিশ ঘেষে দাঁড়ায়।
— ‘এতো চাপ নেওয়ার কি আছে নীলাভ। মিনুর নাম্বারে যোগাযোগ করে কালই দেখা করো।’
নীলাভ কোনো কথা বলে না। ঘনঘন সিগারেট টানে। শ্রেয়া নীলাভের হাত ধরে বলে,- ‘কালই মিনুর সঙ্গে দেখা করবে। এখন ঘুমোবে চলো। মা’কে কিছু বুঝতে দেয়া যাবে না।’
নীলাভ শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে হাঁটে। দু’জন জানে না তাদের সব কথা চিলেকোঠায় দাঁড়িয়ে কেউ একজন শুনেছে। তাদেরকে আসতে দেখে আবছায়াটা দ্রুত চিলেকোঠা থেকে সরে গেল।
মাথার উপরে ইলেকট্রনিক ফ্যান ঘুরছে। শ্রেয়া চারপাশে মশারী গুঁজে দেয়। নীলাভ চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছে। শ্রেয়া পাশের বালিশটায় যায়। মাথায় হাত রাখে। নীলাভের কেমন যেন অস্বস্তি। সে পাশ ফিরে। শ্রেয়ার হাতটা মাথা থেকে খসে পড়ে বিছানায়। মুখটা মলিন হয়ে গেল। শ্রেয়া ঘুরতে থাকা ফ্যানের দিকে চেয়ে থাকে। খানিকক্ষণ দু’জন চুপচাপ।
নীরবতা ভাঙে শ্রেয়া। গাল বেয়ে পড়া জলকে আলগোছে মুছে বলল,- ‘নীলাভ তুমি তো জান আমি তোমাকে কেমন ভালবাসি। আমি থাকতে তুমি এতো দুশ্চিন্তা কেন করছো? আমি তো চাই তুমি সুখে থাকো। এক সময় ভাবতাম বিয়ে হয়ে গেলে মিনুকে ভুলে যাবে তুমি। ভুলতে পারো নি। তা আমি ক্ষণে ক্ষণে টের পাই। আমার কথা শুনছো তো নীলাভ?
নীলাভ শুয়ে থেকেই বলল,-‘হুম।’
শ্রেয়া আবার বলতে শুরু করল,-‘মিনু ফিরতে চায় সেটা বেশ কিছুদিন থেকেই আমি বুঝতে পারছি৷ আমার ভরসা ছিলে তুমি। যদি ভুলে যাও মিনুকে তাহলে তুমি আমার একান্ত পুরুষ। ভুলতে পারো নি। কষ্ট পেতাম ভেতরে ভেতরে। কিন্তু সেদিন হঠাৎ আমার মনে হলো আসলে আমার মতো সুভাগিনী সবাই হয় না। এই সংসারে কয়টা মেয়ে ভালবাসার মানুষকে কাছে পায়? স্বামী হিসেবে পায়? আমি তো তোমাকে পেলাম। মিনু হারিয়ে না গেলে তো এই সুযোগই পাওয়ার ছিল না। আমি খুশি যে মিনু হারিয়ে যাওয়ার দুঃসময়ে তোমার পাশে থাকতে পেরেছি৷ এখন মিনু ফিরতে চায়। মিনুকে নিয়ে তুমি ভালো থাকবে। তাই ফিরে যাও ওর কাছে।’
নীলাভ খানিকটা যেন রেগে গেল। রাগের সুরে বলল,- ‘জীবনটাকে সিনেমা মনে হয় তোমার? তুমি এখনও বাচ্চা রয়ে গেছ শ্রেয়া। তোমার আর আমার বিয়ে হয়ে গেছে। চাইলেই আমি মিনুর কাছে ফিরতে পারি না।’
নীলাভকে অবাক করে শ্রেয়া খিলখিল করে হেঁসে উঠে। সেই হাসিটা নীলাভের কাছে বড় অচেনা রহস্যময় লাগে।
–‘আমি আর ছোট্ট শ্রেয়া নই নীলাভ। অনেক বড় হয়ে গেছি। অনেক বড়। আমিও আর কেন তোমাকে চাইব? যে আমার পাশে শুয়ে অন্য মেয়ের জন্য ছটফট করবে। নীলাভ তুমি সত্যি করে বলো মিনুকে ফিরে পেতে চাও কি-না।’
— ‘চাইলেই সব হয় না শ্রেয়া। বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়।’
শ্রেয়া চোখের জল গোপন করে। তাহলে নীলাভ চায় মিনুকে। সে বন্ধনে বাঁধা পড়ে গেছে। মুক্ত হতে চায়। শ্রেয়া একটু পরেই যা বলল। সেটা কোনো স্ত্রী বলতে পারে না। এতো বড় ত্যাগ স্বীকার যেন আত্মহত্যার সামিল। সে নীলাভকে টেনে নিজের দিকে পাশ ফিরিয়ে আনে।
গালে এক হাত রেখে বলে,
—‘বিয়ে নিয়ে কী এতো চিন্তা করছো তুমি? মিনুকে নিয়ে তুমি সুখে থাকলেই আমি সুখী। মিনুর সাথে আগের মতো প্রেম চালিয়ে যাও। যতদিন পর্যন্ত তুমি কোনো ভালো চাকুরী পাচ্ছ না আমরা এভাবেই থাকি। চাকুরী পেয়ে গেলে আমি আম্মু আর মামাকে বুঝিয়ে ডিভোর্স নেব আর তুমি মিনুকে বিয়ে করে ফেলবে। আমি তোমার কাছে আজ থেকে স্বামীর অধিকারও চাইব না। এবার নিশ্চিন্তে ঘুমাও।’
নীলাভ বিস্মিত হয়ে শ্রেয়ার দিকে তাকায়। এই মেয়েটি এসব কী বলছে! কোনো স্ত্রী এভাবে বলতে পারে? ভালবেসে কী এমন ত্যাগও স্বীকার করা যায়? এমন ভালোবাসা এমন ত্যাগী স্ত্রীকে ফেলে সে কী পারবে স্বার্থপরের মতো মিনুর কাছে ফিরে যেতে। শ্রেয়াকে স্বামীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কাল থেকে কী পারবে মিনুর সঙ্গে আগের মতো প্রেম চালিয়ে যেতে? তার যে এই মূহুূর্তে শ্রদ্ধায় ইচ্ছে করছে শ্রেয়ার পায়ে চুমু খেতে। ইচ্ছে করছে বুকে জড়িয়ে ধরে খানিক কাঁদতে। ইচ্ছে করছে সারাজীবন এমন লক্ষী বউকে বুকে জড়িয়ে ধরে জীবনটা কাটিয়ে দিতে।
কিন্তু মিনুকে ছাড়াও তো সে থাকতে পারবে না? বড্ড ভালবাসে মিনুকে। তার প্রথম ভালবাসা। এ কেমন দ্বিধা। কি করবে সে! এখন তার কী করা উচিৎ?
নীলাভ হঠাৎ লক্ষ্য করে শ্রেয়া অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে আছে। ওর শরীর বারংবার কেঁপে উঠছে। গোপন কান্নায় কেঁপে উঠছে। এভাবেই কী পুরো জীবনভর গোপনে কাঁদতে হবে শ্রেয়ার?
নীলাভ আস্তে করে বলল,-‘তুমি পারবে না শ্রেয়া। মুখের কথার মতো তোমার জীবন তখন এতো সহজ থাকবে না।’
শ্রেয়া খুবই আত্মবিশ্বাসী গলায় বলল,-‘কিন্তু আমি এই বিয়ে রাখতে চাই না। তোমাকে স্বামী হিসেবে চাই না। এই মুহূর্তে ডিভোর্স নিতে চাই। তোমার একটা উপকারের জন্য না হয় পরে ডিভোর্স নেব। সুতরাং কাল তুমি মিনুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছ। এক্ষুনি কল দিচ্ছি মিনুকে।’
নীলাভ কোনো কথা বলল না। দ্বিধান্বিত সে। গলায় প্রতিটি কথা আঁটকে যাচ্ছে। তার সত্যিই যে ইচ্ছে করে মিনুর সঙ্গে কথা বলতে। ওপাশে রিং শোনা যাচ্ছে। নীলাভের বুক ধুকপুক করে। ফোনটা কেউ রিসিভ করল।
— ‘হ্যালো শ্রেয়া।’
— ‘মিনু আপু কেমন আছো?’
— ‘ভালো।’ তারপর খানিক আমতা আমতা করে আবার বলে, -‘নীলাভের নাম্বার দিলে না যে শ্রেয়া, কোনো সমস্যা?’
শ্রেয়া মুখ টিপে হেঁসে বলে, -‘সইছে না বুঝি আর?’
ওপাশ থেকে কেবল একটা দীর্ঘশ্বাস আসে। তারপর শ্রেয়াই আবার বলল, —‘নীলাভ ভাই আজ দুপুরেই তোমাকে কল দিয়েছিল রিসিভ করোনি।’
মিনু কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
—‘এই নাম্বার নীলাভের ছিল? আমি আসলে এখন অপরিচিত কোনো নাম্বার রিসিভ করি না।’
— ‘ও আচ্ছা৷ তুমি কি এখন নীলাভ ভাইয়ের সাথে কথা বলতে চাও? না-কি ওই নাম্বারে নিজেই যোগাযোগ করবে?’
–‘আমিই যোগাযোগ করবো।’
— ‘আপু আমার মনে হয় আজ সকালেই তুমি একটা জায়গার ঠিকানা তাঁকে জানিয়ে দাও। সেখানে দেখা করো। আর দেরি করো না ম্যাডাম। শেষে আবার অন্য কেউ ছিনিয়ে নিবে আপনার নীলাভকে।’
ওপাশ থেকে একটা হাসি ভেসে আসে। শ্রেয়া ফোনটা রেখে দেয়। নীলাভের পুরো শরীর ঘেমে গেছে। কতদিন পর মিনুর কন্ঠ শুনতে পেল। কাল সে সত্যি দেখা করতে যাবে। আনন্দ লাগে মনে। কেমন একটা শীতল বাতাস লাগে ভেতর জুড়ে। পরক্ষণেই আবার কোনো এক বন্ধনের পিছুটান। আচমকা যেন তার জীবনটা হয়ে গেছে একটা নদীর মতোন। যার দু’টা কূল আছে। এই কূলে থাকলে ঐ কূল টানছে, আর ঐ কূলে গেলে এই কূল টানে।
খাদিজা বেগমের চোখে ঘুম নেই। বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ রাত কাটাচ্ছেন। একমাত্র মেয়েটির জীবন নিজ হাতেই কি শেষ করে দিলেন? নীলাভের ডায়েরি পড়ে অনেক আগেই তিনি মিনুর সম্পর্কে সব জেনেছেন। মিনুকে নীলাভ পাগলের মতো ভালবাসে। সেই মেয়ে ফিরতে চাইলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আজ ছাদে সর্বনাশের কথাবার্তাই শুনলেন। মিনু যোগাযোগ করতে চায়। নীলাভ কাল দেখা করতে যাবে? একটা বিবাহিত সুখের সংসারে ধীরে ধীরে আগুন লেগে যাচ্ছে। মিনুর ঠিকানা জানা দরকার।
সকালেই নীলাভের হোয়াটসঅ্যাপে মিনুর নাম্বার থেকে মেসেজ আসে,
–“নীলাভ আমি মিনু। শ্রেয়ার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আজই তোমার সাথে দেখা করতে চাই। তুমি নিজ থেকে কল দিয়েছিলে শুনে সাহস পেলাম। কারণ প্রথম থেকেই শ্রেয়ার কাছ থেকে তোমার খোঁজখবর নিয়ে বুঝতে পেরেছি তুমি খুবই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছো। হয়তো আমি যোগাযোগ না করায় তুমি কিছুটা খুশি। যার বাপ এমন কান্ড করে তার সাথে কে সম্পর্ক রাখবে? স্বামীও বউকে রাখবে কি-না সন্দেহ আর তুমি তো প্রেমিক। কিন্তু বিশ্বাস করো নীলাভ। নিজের আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ছেড়ে এসেছি কষ্ট হয়নি। কিন্তু প্রতিটি মুহূর্তে তোমার জন্য কষ্ট হয়। সারাটা রাত এপাশ-ওপাশ করি। শ্রেয়ার কাছে তোমার ছবি চাইতাম, কিন্তু কখনও দেয়নি। চোখের জলে আমার কত যে নির্ঘুম রাত কেটেছে। বৃষ্টির সঙ্গেও যোগাযোগ করি না। লজ্জা লাগে পরিচিত কারও মুখোমুখি হতে। আম্মু প্রথম প্রথম আত্মহত্যা করতে চাইত। কত কষ্টে সব সামলে চলি আল্লাহ শুধু জানে। কয়েক মাস আগে আম্মুকে কাঁদতে কাঁদতে তোমার কথা সব বলে দিলাম। আম্মু অনেক বকা দিলেন আমার বোকামির জন্য। তোমার সাথে একবার যোগাযোগ করতে বললেন। জানি না আমার বাবার কান্ড শোনার পর তুমি আর সম্পর্ক রাখতে চাও কি-না৷ তোমার সামনে মুখ দেখাতে লজ্জা করে নীলাভ। তবুও মায়ের কথায় আমি দেখা করতে চাই। নীলাভ আমার বাবার জন্য আশাকরি তুমি আমাকে প্রত্যাখ্যান করবে না। প্রতিটি মানুষ আলাদা। আমার বাবার দোষের জন্য তুমি আমাকে কেন প্রত্যাখ্যান করবে নীলাভ? প্লিজ তুমি আজ দেখা করো। আমি সিলেটেই আছি। একটা কলোনিতে থাকি আমরা। দুপুরে আইরিন ম্যাডামের চেম্বারে যাব। চৌহাট্টা এসে কল দিও। আমি অপেক্ষা করবো। কিন্তু একটা অনুরোধ৷ আমার বাবার সম্পর্কে আমাকে কিচ্ছু জিজ্ঞেস করো না। আমি লজ্জায় মরে যাব নীলাভ।’
মেসেজটি পড়ে নীলাভের মেজাজটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। মিনু তাকে এরকম ছেলে মনে করে? ওর বাবার কুকর্মের জন্য তার সঙ্গে সে সম্পর্ক রাখবে না? মিনুর এই সামান্য ধারণার জন্য এদিকে কত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একদিন কি ফোন করে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারলো না? তাড়াতাড়ি নীলাভ মেসেজ পাঠায়,
—‘আমি আসবো।’
সকালের নাস্তা শেষ করেই নীলাভ বের হয়ে যায়। হবিগঞ্জ থেকে সিলেটের বাসে উঠে৷ খানিক পরেই নীলাভের অগোচরে বোরখা নেকাব পরিহিত এক মহিলা বাসের ঠিক পিছনের সীটে গিয়ে বসলেন। নীলাভ কিছুই টের পেল না। অথচ নেকাব পরিহিত মহিলা সর্বদাই নীলাভকে চোখে চোখে রাখছে।
—–চলবে—
লেখা: MD Jobrul Islam