#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে (পর্ব ০২)
#Humayra_Khan
.
.
.
আহানঃ ওয়াট। তোমার মুখের ভাত আমি খাবো।
মাঁথা ঠিক আছে তোমার??
এই ভাত এখন তুমি খাবে। তাড়াতাড়ি খেয়ে বের হও আমার চোখের সামনে থেকে( চিল্লান দিয়ে)।
চারু আহানের থমক শুনে অত্যন্ত ভয় পেয়ে যায়।
তাই কথা না বাড়িয়ে বাধ্য মেয়ের মতো খাওয়া শুরু করে
আর আহান চারু দিকে অপলক দৃশটিতে চেয়ে থাকে।
চারু ভাত এর শেষের লোকমা টা ওর মুখে নিবে ঠিক সে সময় পিছন থেকে মিসেস সাবিনা চারুর চুলের মুঠি ধরে
কিরে হারামজাদি আমার ছেলের জন্য ভাত এনে এখন দেখি তা নিজেই গিলছো।
আহানঃ উফফ মা ওর চুল ছাড়ো। তরকারি অনেক ঝাল ছিলো তাই আমার ছুটো ভাত ওকে খেতে দেই।
মিসেস সাবিনা বেশ অবাক হয় তার ছেলের কথা শুনে
চারুর চুল ছেরে। আহানের সামনে গিয়ে
আহানের মাথায় হাত রেখে
বাবা তোর তো ঝাল অনেক প্রিয়। তাই তো এই চারুকে দিয়ে বেশি ঝাল করে তরকারি রান্না করাই।
আহানঃ মা।মানুষ সময়ের সাথে বদলায়। সাথে মানুষ এর পছন্দ ও।আগে আমার ঝাল পছন্দ ছিলো
কিন্তু এখন না। আচ্ছা এই গুলা বাদ দাও।
এই চারু যা তো আমার জন্য কড়া করে একটা কফি বানিয়ে আন।
চারু আহানের কথা শুনে প্লেট হাতে নিয়ে যেতে নিবে
দূর্ভাগ্যক্রমে চারুর ওড়না বেঝে টেবিলে রাখা কাঁচের গ্লাস মাটিতে পরে ভেঙে যায়।
সাবিনা ঃ হায় হায়।আমার ডিনার সেট এর গ্লাস ভেঙে দিলো। এই অলোক্ষিনী কোনো কাজ কি ভালো মত করতে পারিসনা।এই গ্লাসের টাকা কি তোর বাপে কবর থেকে উঠে আমার হাতে দিবে।
মৃত বাবার ব্যাপারে এমন কথা বলায় চারু নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না।
চারু ঃ দেখুন কাকিমা আমাকে যা বলার বলুন আমার মৃত বাবার সম্পর্কে কিছু বলবেন না।
সাবিনা ঃ চোরের মায়ের দেখি বড় গঁলা। কথাটি
বলে মিসেস সাবিনা চারুকে থাপ্পড় মারতে নেয়
সাথে সাথে আহান তার মায়ের হাত ধরে ফেলে।
আহানঃ উফ আম্মু তুমি ওকে থাপ্পড় মেরে তোমার এনার্জি নষ্ট করছো কেনো অযথা।আর তাছাড়া তোমার হাতে থাপ্পড় খেয়ে ওই ততোটা ব্যাথা ও পাবেনা
তুমি বরং আমার জন্য কফি নিয়ে আসো তোমার তরফ থেকে থাপ্পড় টা না হয় আমিই মেরে দিবো।
সাবিনা ঃ সত্যি বলছিস বাবা
আহানঃ হ্যা মা। (মুখে হাসি রেখা টেনে)।
তুমি এখন যাও আমার জন্য কফি নিয়ে আসো।
চারুকে তার ছেলে নিজ হাতে মারবে শুনে খুশি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় মিসেস সাবিনা।
মিসেস সাবিনা রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে
আহান সজোরে একটা থাপ্পড় মেরে বসে।
কিন্তু থাপ্পড় সে চারুর গালে নয় বরং নিজের গালে মারে।
আর মিসেস সাবিনা রুমে বাইরে দাঁড়িয়ে থাপ্পড় এর আওয়াজ শুনে হাঁসতে হাসতে চলে যায় রান্না ঘরের দিক এ।
আহান নিজের গালে থাপ্পড় মারায় চারু হা করে তাকিয়ে থাকে আহানের দিক এ…
আহানঃ এইভাবে হা করে থাকলে মশা ঠুকে যাবে(অন্য দিকে মুখ করে)
চারু আহানের কথা লজ্জা পেয়ে নিজের মুখ বন্ধ করে নিলো।
চারু ঃআপনি আপনার গালে থাপ্পড় মারলেন কেন তা আবার এতো জোড়ে সোড়ে।???
আহানঃ তোমার গালে মা থাপ্পড় মারলে আমি যে তার চেয়ে দশ গুন ব্যথা পেতাম।
তাছাড়া ভালোবাসার মানুষকে নিজ হাতে কিভাবে থাপ্পড় দেই বলো।তোমাকে থাপ্পড় দেওয়া তো দূরের কথা ফুলের টোকাও কোনো দিন দিবোনা আর না অন্য কাউকেও দিতে দিবো। তাই থাপ্পড়টা নিজ গালেই মারলাম।
আমি জানি মা থাপ্পড় এর আওয়াজ না শুনা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিলো দরজার সামনে। মনে মনে
আহানঃ আমার গাল আমি থাপ্পড় মেরেছি তার কৌফত আমি তোমাকে কেন দিতে যাবো।
মা আসার আগে আই মিন তাড়াতাড়ি বের হও আমার রুম থেকে। আমি এক থাকতে চাই।গো নাউ।(চিৎকার দিয়ে)
চারু আহানের৷ চিৎকার শুনে দৌড় দিয়ে ওর রুম থেকে বের হয়ে গেল
চারুর এভাবে যাওয়া দেখে বেশ হাসি পায় আহানের
আহানঃ মেয়েটা আসলেই পাগল।আই মিন পাগলি
বাট আই লাইক হার
কথাটি বলে হো হো করে হেসে উঠলো আহান।
কিছুক্ষন পর আহানের মা ওর জন্য কফি আনলে
আহান বাবা তুই কই
আহানঃ মা আমি ওয়াসরুমে।
সাবিনা ঃআমি যে তোর জন্য কফি বানিয়ে আনলাম
আহানঃ মা এখন আমার খেতে ইচ্ছে করছেনা ।তুমিই খেয়ে নিয়ো
আহানের কথা শুনে মিসেস সাবিনা অবাক হয়ে চলে যায় রুম থেকে।
সন্ধাবেলা…..
মা আমি একটু মাকের্ট যাচ্ছি। এই চারু চল আমার সাথে।
সাবিনা ঃওমা. ওই কেনো সাথে যাবে তোর?? আর আহান তোর গালটা টমেটোর মতো লাল হয়ে আছে কেন??
আহানঃ ইস মশার কথা কি বলবো তোমায়।
কামড় দিয়ে দিয়ে আমার শরীরের অর্ধেক রক্ত তো খেয়েছে সাথে আমার গালটাকে লাল করে দিয়েছে।
আচ্ছা মা বাদ দাও তো এ সব কথা। এই চারু শুনতে পাচ্ছিস না কানে চল আমার সাথে।
সাবিনা ঃ হাতের কাজ রেখে দে ওই টা আমি করে নিবো।তুই যা আহানের সাথে।
চারু সাবিনার কথা শুনে কাজ রেখে আহানের সাথে চলে যায়।
আহানঃ আজ রিকশা করে ঘুরবো। রাতে রিকশা করে ঘুরার মজাই আলাদা। যেটা গাড়িতে পাবোনা।
ঘুরার কথা শুনে চারু আহানের দিক এ প্রশ্নসূচক ভাবে চেয়ে থাকলে
আহানঃ আরে মানে মার্কেট যাবো।(শুকনো হাসি হেসে)
আহান একটা রিকশা ভাড়া করে উঠে পরে।চারু রিকশায় না উঠে দাঁড়িয়ে থাকলে
আহানঃ কি হলো।উঠো।
চারু আহানের কথা শুনে হুরহুর করে রিকশায় উঠে পরলো।
রিকশা উঠে আহানের পাশে বসে বেশ অসস্তিবোধ করছিলো চারু। বিষয়টি আহান বুঝতে পারলে
আহানঃ মামা রিকশা থামান।
চারু অবাক হয়ে পরে আহানের কথা শুনে
রিকশাওয়ালা আহানের কথামতো মাঝপথেই রিকশা থামিয়ে দেয়।
আহানঃ নামো চারু আমরা পায়ে হেটে মার্কেট যাবো।
চারু আহানের কথা শুনে রিকশা থেকে নেমে পরে।
রিকশায়ালাকে টাকা দিয়ে দু জনে হাটতে শুরু করে।
চারু ঃআপনি রিকশা থেকে নেমে গেলেন কেন?
আহান চারুর কথা শুনে থেমে যায়।
আহানঃ কারন আমি বুঝতে পেরেছি।আমি তোমার পাশে বসায় অনেকটা আনইসি ফিল করছিলে।
আর আমি চাইনা আমার কারনে তুমি অসস্তিবোধ করো।(মনে মনে)
আহানঃ আসলে…………