জলপদ্ম পর্ব -১৯

#জলপদ্ম
#কুরআতুল_আয়েন

|১৯|
বাসার বড়রা তনায়া আপুর বিয়ের তোরজোড় করতে ব্যস্ত।দু’দিন পরেই তনায়া আপুর গায়ে হলুদ।ছাঁদের দিকটায় সবকিছু আয়োজন করা হচ্ছে।ওইদিনের পর থেকে আরো তিনদিন কেটে গেলো আমি রক্তিম ভাইয়ের সাথে কথা বলি না।রক্তিম ভাই হাজার চেষ্টা করলেও আমি পাত্তা না দিয়েই চলে এসেছি।তবে,একটা ব্যপারে আমার খুব খটকা লাগছে,বারংবার মনে হচ্ছে ওই ম্যাসেজের বিপরীতে তারিন আপু আছেন।তা মনে হওয়ার একমাত্র কারণ,তিন দিন আগে হয়ে যাওয়া অনাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনা টা।যেই ঘটনার উপর ভিত্তি করে আমি ছাঁদ থেকে দৌড়ে রুমে চলে এসেছিলাম।ঠিক তার মিনিট বিশেক পর একই নাম্বার দিয়ে আমার কাছে আগের ন্যায় একটা ম্যাসেজ এসেছিলো।যেখানে স্পষ্ট লিখা ছিলো,তোমাকে কষ্ট পেতে দেখে আমি ভীষণ খুশি রিমঝিম।কারণ,আমি তো এটাই চেয়েছিলাম।দেখবে,আস্তে আস্তে রক্তিমকে আমি তোমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসবো।সম্পূর্ণ ম্যাসেজ টায় চোখ বুলিয়ে মাথায় শুধু এটাই এসেছিলো,এইসবের পিছনে একমাত্র তারিন আপুই আছেন।আর,এটাও বুঝেছিলাম রক্তিম ভাইকে হয়তো ইমোশনাল কথাবার্তা বলে নরম করে দিয়েছিলেন।যার ফলে,রক্তিম ভাই বন্ধু হিসেবে উনাকে আগলে নিয়েছিলেন।তার পরের দিনই আমি তারিন আপুর ঠোঁটে বিশ্বজয়ের হাসি দেখলাম।আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না আমি যা যা আন্দাজ করেছিলাম তাই ঠিক।তবে,আমিও মনে মনে নিজেকে শক্ত করে নিয়েছিলাম,রক্তিম ভাইকে এতো সহজে আমি ক্ষমা করবো না।নিজের স্বামীর বুকে অন্য একজনকে দেখলে কেমন অনুভব হয় তা হারে হারে বুঝিয়ে দিবো।এমনকি আমি,আমার কথাতেই সীমাবদ্ধ আছি।এই তিনদিন ধরে,রক্তিম ভাইয়ের আশেপাশেও ঘেঁষছি না।দেখলেই একপ্রকার ইগনোর করে চলে আসি।যেমন এখন সেইম কাজ টাই করেছি।খাবার টেবিলে আমার পাশের চেয়ার টা ফাঁকা ছিলো,কোথা থেকে এসে রক্তিম ভাই চেয়ার টা দখল করে নিয়েছেন।আমি বুঝেও একপলকের জন্যও তাকায় নি।নিজের মতো করে,আলু ভাজা দিয়ে সুন্দর করে পরোটা টা শেষ করে নিচ্ছি।এরি মধ্যে রক্তিম ভাই আমার পা’য়ে নিজের পা দিয়ে টোকা দিয়েছেন বেশ কয়েকবার।আমি তাও কোনো রেসপন্স করছি না।বরং,পা দুটোকে গুটিয়ে চেয়ারে তোলে নিয়েছি।দু গ্লাস পানি খেয়ে লম্বা একটা ঢেকুর তোলে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসে পড়লাম।রক্তিম ভাই যে আমার দিকে দাঁত কটমট করে তাকিয়ে আছেন তা বুঝতে আর বাকি রইলো না।আমিও কম কিসে!ভয় পাই না রক্তিম ভাইয়ের এরূপ চাহনি।যা ইচ্ছা করুক গিয়ে,আমি রিমঝিম এখন শক্তই থাকবো।সিঁড়ি বেয়ে তারিন আপু নেমে আসছেন।মুখে হাসি,যা দেখে আমার খুব রাগ হলো।জোর গলায় বলতে ইচ্ছা করছে,তারিন আপু আপনি একজন ভয়ংকর মহিলা।কীভাবে সাধু সেজে ঘুরছেন।অথচ,ফোনে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে কপোকাত করে দিচ্ছেন।তারিন আপুকে আমার দিকে ক্ষিপ্ত চোখে তাকাতে দেখেই আমি মুচকি হাসলাম।চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে বাংলা একটা সিনেমার গান সামনে পড়লো,ইচ্ছা করেই টিভির ভলিউম টা বাড়িয়ে দিয়েছি।গানের আওয়াজে সারা লিভিং রুমের মানুষজন মনে হয় আমার দিকে একরাশ বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে আছে।আমি তাদের দিকে তাকানোর একদন্ডও প্রয়োজন মনে করছি নি।ডাইনিং টেবিলে বসা রিমি আমাকে জোর গলায় বলতে লাগলো,
‘রিমঝিম!এইসব কি গান শুনছিস বল তো।হিন্দি গান প্লে কর।’

আমি টিভির দিকে তাকিয়েই উত্তরে বললাম,

‘উঁহুহু!আমার বাংলা গান শুনতে ইচ্ছা করছে।তাই,আমি এখন বাংলা গানেই শুনবো।তোদের সমস্যা হলে চলে যেতে পারিস।আর,বাংলা গান শুনতে এতো দ্বিধা কাজ করে কেনো?আমাদের মাতৃভাষাই তো বাংলা।’

রঞ্জন ভাইয়া আমার পাশে এসে বসলেন।সেই সাথে সুস্মিতা আপুও।সুস্মিতা আপু আমার কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বললেন,

‘আর কতো রাগ করবে রিমঝিম?রক্তিমের মুখটা দেখেছো।এই কয়েকদিনে বেচারা কতটাই না হাঁসফাঁস করছে শুধুমাত্র তোমার সাথে কথা বলার জন্য।আমাকে তো জ্বালিয়ে মেরেছে,শুধুমাত্র তোমার সাথে একটু কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য।আমিও একদম স্ট্রং ছিলাম।ও যা করেছে তাতে রাগ করে থাকাটাই ব্যাটার।আর,তারিন তো একটা গায়ে পড়া।রক্তিম কে দেখলেই হলো।’

‘আপনার বন্ধুও কম না সুস্মিতা আপু।এখন বুঝুক বউ কথা না বললে কেমন ফিল হয়।ব্যাটা উল্লুক।’

সুস্মিতা মুখ চেপে হেসে উঠলেন।রঞ্জন ভাইয়া আড়চোখে সুস্মিতা আপুর দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘কি ব্যাপার বলো তো!কি এমন কথা হলো যার জন্য এইরকম হাসছো।’

সুস্মিতা আপু মুখ বেঁকিয়ে বললেন,

‘সেসব তোমার না জানলেও চলবে।আমাদের পারসোনাল ব্যাপার গুলোতে তোমাদের ছেলেদের এন্ট্রি না মারলেই খুশি হবো।’

আবির ভাই চেঁচিয়ে বললেন,

‘আমি বুঝতে পেরেছি কি ব্যাপারে কথা হচ্ছিলো তোমাদের মধ্যে।কিন্তু তা আমিও কোনমতে বলবো না।’

শিলা আপু একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললেন,

‘তাহলে চুপ থাকুন।আপনার কাছ থেকে কেউ শুনতেও চায় নি।’

একদফা হাসির রোল পড়ে গেলো।আমিও শব্দ করে হেসে উঠলাম।আবির ভাই আর শিলা আপু ওরা যেনো একজন আরেক জনের শত্রু।আমার হাসির আওয়াজ পেতেই রক্তিম ভাই আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন।আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘রিমঝিম রুমে আয় তো।তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।’

আমি আমার মতো অন্যদের সাথে কথা বলেই যাচ্ছি।রক্তিম ভাইকে দেখেও যেনো দেখি নি এইরকম ভাব।রক্তিম ভাই আমার খাপছাড়া ভাব দেখে টি-টেবিলের পাশে থাকা সুন্দর কাঁচের শোপিস টা হাতে তোলে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারলেন।মুহূর্তেই সুন্দর শোপিস টা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।আমি চমকে উঠলাম।ভয় নিয়ে তাকালাম রক্তিম ভাইয়ের দিকে।রাগে চোখ,মুখ লাল হয়ে আছে।কপালের পাশের রগ গুলো ফুলে উঠায় তাদের অবস্থান দেখা যাচ্ছে।রক্তিম ভাইকে এইরূপে দেখে আমার খুব ভয় হলো।মনে মনে ভাবতে লাগলাম,বেশি করে ফেলি নি তো।রক্তিম ভাই আমার দিকে তাকিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে চলে গেলেন।সেই সাথে,তারিন আপুও ছুটলেন রক্তিম ভাইয়ের পিছনে।তনায়া আপু এসে রাগান্বিত কণ্ঠে বলে উঠলো,
‘তুই একটু বেশিই করে ফেলেছিস রিমঝিম।রক্তিম ভাইয়ের সাথে তোর কথা বলা উচিত ছিলো।রক্তিম ভাইয়ের মুখ থেকে সব কিছু শুনলে তুই আর এইরকম রাগ করে থাকতে পারতিস না।’

তনায়া আপুর কথার পিঠে কড়া গলায় বললাম,
‘করুক তাতে আমার কিছুই যায় আসে না।একজনকে বিয়ে করে আরেকজনের সাথে ঢলাঢলি করবে।শুধু তাই নয় তাকে বুকে জড়িয়েও নিবে।’

‘তুই সবটা কথা শোন তো রিমঝিম।রক্তিম ভাই এক্সপ্ল্যান করলেই তুই ব্যাপার টা বুঝতে পারবি।’

‘ বুঝাবুঝির কোনো দরকার নেই।যতোই ফোঁস ফোঁস করুক না কেনো আমি দেখেও না দেখে থাকবো।’

তনায়া আপুর মুখের উপর কথাটা বলে সেখান থেকে বাহিরে চলে আসলাম।বাগানের পরিচর্যা করা উচিত।ফুল গাছগুলোতে অনেক আগাছা জন্মে আছে।শখের গাছগুলোকে অনেকদিন হলো যত্ন নেয় নি।আজকে,ফ্রী আছি!একটু যত্ন নেওয়া দরকার।বাগানের কাছে যেতেই দেখা হলো বড়মা’র সাথে।বড়মা আমার কাছে এগিয়ে এসে বললো,
‘কিরে!তোকে এইরকম থমথমে লাগছে কেনো।কারোর উপর রেগে আছিস নাকি?’

বড়মা’র কথার পাল্টা জবাবে বললাম,

‘তোমার ছেলের জন্য সব হয়েছে।আমি তোমার ছেলের উপরেই রেগে আছি।বিশ্ব শয়তান তোমার ছেলে।একজনকে দিয়ে তার হয় না।’

বড়’মার ভ্রুকুটি কুঁচকে গেলো।এমতাবস্থায় বললো,

‘কি করেছে রক্তিম।তোর কথার মানে বুঝলাম না আমি।’

কথাটা বলার পর,আমার হুশ এলো রাগের মাথায় কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলেছি।আমতাআমতা করে বললাম,

‘কিছু হয় নি বড়মা।আমি এখন গেলাম।’

কোনোমতে,বড়মা’কে পাশ কাটিয়ে সামনে হাঁটা ধরলাম।কিছুটা আগাতেই শুনতে পেলাম,বড়মা জোর গলায় বলছে,

‘কিরে রক্তিম!কি এমন করেছিস তুই?যার জন্য,রিমঝিম এতো রেগে আছে।আর,রিমঝিম এইটা কেনো বললো,তোর একজনকে দিয়ে হয় না।’

বড়মা’র কথা কানে আসতেই চট করে দু’তলায় চোখ নিক্ষেপ করলাম।রক্তিম ভাই বারান্দার গ্রিলে হাত দুটো ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।চোয়াল শক্ত করে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন।তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে বাগান থেকে দৌড়ে চলে আসলাম।আসার আগে মা’র সাথে খেলাম এক ধাক্কা।মা আমার গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
‘সমস্যা কি তোর।এইভাবে দৌড়াচ্ছিস কেনো।বড় হয়েছিস তা কি ভুলে গেছিস রিমঝিম।’

‘মা!তোমার মেয়ে শুধু বড় না বিয়েও করে নিয়েছে।’

‘কি বললি তুই রিমঝিম।আবার বল বলছি?’

‘ধুর!কি বলতে গিয়ে কি বলে দিয়েছি মা।তুমি আমার কথা একদম বিশ্বাস করো না।তবে,তোমার কথাই সত্যি আমি বড় হয়েছি।’

‘কি যা তা বলছিস পাগলের মতো।সামনে থেকে সর।’

মা’র থেকে ছাড়া পেয়ে আমি আর একদন্ডও দাঁড়ায় নি।এক দৌড়েই সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে এসে দরজা বন্ধ করে বিছানায় ঘাপটি মেরে শুয়ে রইলাম।রক্তিম ভাইয়ের থেকে বাঁচার এই একটা মাত্রই উপায়।
—-
মাগরিবের আজানের ধ্বনি কানে আসতেই একপ্রকার ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলাম।রুমটা অন্ধকার হয়ে আছে।থাইগ্লাস টা খোলে দিয়ে পর্দা গুলো মেলে দিয়ে রুমের লাইট টা অন করে দিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় সাত টা বাজতে চলেছে।ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম বাহিরের পরিবেশ অনেক জমজমাট।তনু আপু এসেছে।সাথে,ফুপি ফুফাও।করিডোরের সামনে যেতেই দেখা হলো তারিন আপুর সাথে।তারিন আপু রক্তিম ভাইয়ের রুম থেকে বেরিয়ে আসলেন।হাতে খাবারের প্লেট।যা দেখে রাগে আমার মাথা ফেটে যাওয়ার উপক্রম।তারিন আপু রক্তিম ভাইকে খাইয়ে এসেছেন!!আর,রক্তিম ভাইও খেয়ে নিয়েছেন!!উফফ!রক্তিম ভাই আসলেই একটা অসভ্য।উনার একজনকে দিয়ে হয় না।তারিন আপু আমার দিকে তাকিয়ে কিছুটা ঠেস মেরে বললেন,
‘নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে এসেছি।রক্তিম টা এখনো বাচ্চাই আছে।খাবে না খাবে না করছিলো যখন তার মুখের সামনে খাবার ধরেছি ঠিকই ভালো ছেলের মতো আমার হাতে খেয়ে নিয়েছে।আর,কি দুষ্টুমি করছিলো জানো!একটু পর পর কাঁমড়ে দিচ্ছিলো।’

আমিও মুচকি হেসে বললাম,

‘একদম ভালো করেছেন তারিন আপু।একটা কাজ করুন আপনার বাচ্চা রক্তিমকে আপনি ডায়াপার পড়িয়ে দিয়ে কোলে নিয়ে বসে থাকুন।যত্তসব!!’

তারিন আপুর হাসিখুশি মুখটা হাওয়া হয়ে গিয়েছে।চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি সেদিকে পরোক্ষ না করে লিভিং রুমে চলে আসলাম।সবার হাসির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।
—-
ফুটপাতের ফুচকা স্টলে গোল হয়ে বসে আছি।এই রাত-বিরেতে তনু,তনায়া আপু সহ বাকিরা সবাই প্ল্যান করেছে ফুচকা খাবে।তনায়া আপুর এক কথা,বিয়ে হওয়ার আগে এইরকম সুযোগ মনে হয় আর পাবে না।আমার ঠিক সামনের চেয়ার টায় রক্তিম ভাই বসে আছেন।পাঞ্জাবির হাতা টা গুটিয়ে রেখেছেন।মুখটা একদম নিকষ কালো করে রেখেছেন।যে কেউ দেখলেই বুঝে নিবেন ছেলেটার মনে অনেক কষ্ট।
ফুচকা স্টলের পাশেই একটা বড়সড় মাঠ পড়ে।মাঠটার চারপাশ সবসময় বিভিন্ন আলোয় সজ্জিত হয়ে থাকে।আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়।বাহারী রকমের আলোয় সজ্জিত হয়ে আছে।রঞ্জন ভাইয়া আর সুস্মিতা আপু হাত ধরে সেদিকটায় এগিয়ে গেলেন।সেখানে আরো অনেক কপোত-কপোতী রয়েছে।ফুচকা খাওয়া শেষে আমিও মাঠের এককোনায় গিয়ে দাঁড়ালাম।দক্ষিণ দিক থেকে মৃদু বাতাস বয়ে আসছে।গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এই বাতাস টাই যথেষ্ট।কিছুক্ষণ পর পাশে একটা জনমানবের ছাঁয়া দেখে বুঝতে আর বাকি রইলো না এইটা কে!!সেখান থেকে চলে আসতে নিলেই রক্তিম ভাই আমার হাত টাকে আঁকড়ে ধরে নিলেন।মনে মনে অভিমান কাজ করলেও মুখে ফুটিয়ে তুললাম একরাশ বিরক্তি।হাত টা কে ছাড়িয়ে নিয়ে কিছুটা বিরক্তির সুর টেনে বললাম,
‘রক্তিম ভাই ছাঁড়ুন তো।এইটা রাস্তা।’

রক্তিম ভাই যেনো শুনতেই পান নি আমার কথা।আগের থেকে হাত টাকে আর একটু শক্ত করে ধরে বললেন,

‘আমার বউয়ের হাত ধরার জন্য কোনো প্লেস দেখতে হবে না আমাকে।আমার ব্যক্তিগত জিনিস নিয়ে আমি কি করবো সেটা আমার নিজস্ব ব্যাপার।সেখানে আমি কারোর কথা শুনবো না।’

‘তবে,আমার সমস্যা হচ্ছে রক্তিম ভাই।আপনি আমাকে ছাঁড়ুন।’

‘রিমঝিম তুই এমন করছিস কেনো?আমার কথাটা তো শুনবি।’

‘আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাই না রক্তিম ভাই।আপনি গিয়ে বসে থাকুন আপনার তারিনের কাছে।’

‘রিমঝিম তুই আমাকে ভুল ভাবছিস।’

‘আমি ভুল না ঠিক সেটা নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না।আপনি একটা দূষিত,খারাপ পুরুষ।যার,এক নারীতে মন ভরে না।’

মুহুর্তেই রক্তিম ভাই মুখ শক্ত করে নিলেন।দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
‘আজকে তোর খবর আছে রিমঝিম।অনেক উল্টা পাল্টা বকেছিস।একবার শুধু বাসায় চল।’

রক্তিম ভাইয়ের কথা শুনে কয়েক কদম পিছিয়ে গেলাম।একটানে হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়ির কাছে ধপাধপ পায়ে চলে আসলাম।তবে,রক্তিম ভাইয়ের মতিগতিই বলে দিচ্ছে আজকে আমাকে আর আস্ত রাখবেন না।

চলবে..

[রেসপন্স কমে গিয়েছে🙂।গল্প লিখার আগ্রহ এখন আর পাই না।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here