ঝরাপাতা পর্ব ২৭+২৮

#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_২৯

অর্ণা সুমাইয়ার রুমে চলে আসে হঠাৎ করে বিনা কারণে। অর্ণাকে হঠাৎ নিজের রুমে এভাবে আসতে দেখে একটু চমকে ওঠে।
অর্ণা তা দেখে সুমু কে বলে,”আরে এভাবে চমকে উঠছিস কেনো?এভাবে কারা চমকে ওঠে জানিস?”

সুমু তোলাতে তোতলে বলে,”কারা?”

অর্ণা একগাল হেসে বলে,”যাদের মনে চোর থাকে তারা!”

সুমু ভ্রু কুঁচকে অর্ণাকে বলে,”তুই এখানে কি বোঝাতে চাইছিস? ”

অর্ণা বলে,”তোকে সময় বোঝাবে আমি বোঝানোর কেউ না?”.

সুমু বলে,”তাহলে এভাবে অযথা তর্ক করছিস কেনো?”

অর্ণা বলে,”আচ্ছা আমি মরে গেছি আর আমার মৃত্যু্র জন্য আমার স্বামী দায়ী এটা কে প্রচার করেছে বলতে পারিশ? ”

সুমু অন্যদিকে ফিরে বলে,”আমি এসব কিছুই জানি না।অযথা আমাকে কোনো কিছু বলতে আসবি না।”

তখন অর্ণা অরিনের নাম ধরে ডাক দিতেই অরিন সুমুর রুমে প্রবেশ করে।

অর্ণা অরিন কে উদ্দেশ্য করে বলে,”অরিন তোমার ছোট ভাবী কিন্তু আমার মৃত্যুর বেপারের কিছুই জানে না।তাহলে তোমাকে কথার তাল কে খাওয়াই ছিলো গো?”

অরিন বলে,”এই যে ছোট ভাবী আপনার সমস্যা কী?সেদিন তো আমার ভাইয়ের নামে কতো কথা বলছিলেন।আমার ভাই অর্ণার সাথে এইটা করছে ঐ টা করছে,এখন চুপ কেনো আপনি?তার মানে আপনি আসল শয়তান তাই না?সেদিন দুই ভাই বোনের সম্পর্কের মাঝে উইপোকা লাগিয়ে দিতে পেরেছিলেন তাহলে আজ তো সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে এক সেকেন্ড সময় নিবেন না।আপনার মতো মহিলার জন্য আজ আমাদের সমাজের এই অবস্থা আমরা সহজে কাউকে বিশ্বাস করতেই পারি না।”

সুমু আমতা আমতা করে বলে,”সব কথা তোমার ভাবী বলেছিল আমি কিছুই বলি নাই।সে না বললে আমি জানবো কি করে বলো?”

অরিন বলে,”ভাবী যে আপনার কাছে তার স্বামীর নিন্দা করছিল তার কোনো স্বাক্ষী আছে না কোনে প্রমাণ! অযথা মিথ্যা বলা বন্ধ করো।”

সুমু এখন কি বলবে বুঝতে পারছে না।আসলে কি কথা বলে সে এই কথার জাল থেকে মুক্ত হবে সে পথ খুঁজে পাচ্ছে না।

অর্ণা বলে,”এবার তাহলে বুঝতে পারলে তো অরিন তোমার ভাইয়ের কোনো দোষ নেই!তাহলে এখন এটা বুঝে নাও সুমাইয়ার মিথ্যা কথার জন্য এতো সমস্যার সৃষ্টি। ”

এরপর অর্ণা অরিন কে সাথে করে বাহির বাহিরে বাগানে নিয়ে আসে।সেখানে রোহান অপেক্ষা করছিল। রোহান অরিন কে দেখার পর বলে,”তাহলে প্রমাণ পেয়েছ তোমার ভাবী মিথ্যা অপবাদ রচনা করে সবার মাঝে সরবরাহ করে নাই।”

অরিন বলে,”হ্যা,বুঝলাম! আমার ভাইয়ের নামে সুমু ভাবী মিথ্যা বলেছে।কিন্তু একটা প্রশ্ন মাথার মধ্য ভনভন করছে তা হলো অর্ণা মারা গেছে এটা কেনো প্রচার করা হলো।আর অর্ণা তারিফা হয়ে কেনো আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে।আর অর্ণা ভাবী যদি এতোই সাধু হবে তাহলে সে কেনো তখন প্রতিবাদ করে নাই যে সে জীবিত আমার ভাইয়ের দোষ নেই?”

রোহান বলে,”এটা অর্ণা কেনো চুপচাপ মেনে নিয়েছে তা সে ভালো বলতে পারবে হয়তো কোনো কারণ ছিলো।তারমানে এটা নয় সে তোমাকে আগ বাড়িয়ে ভাইয়ের সাথে মনোমালিন্য করতে এগিয়ে দিয়েছে।”

অরিন রোহান কে বলে,”হ্যা অর্ণা সব সময় আমাকে ঝগড়া, রাগারাগি করতে নিষেধ করেছে।তার মানে এটা নয় যে সমস্যা হবে না।”

রোহান বলে,”আমি জানতাম তুমি সব সময় এমন রিয়াক্ট করবে তাই মাঝে মাঝে কিছু পরিস্থিতি তে তোমার সাথে তর্ক করি না।কারণ মানুষ যখন রেগে থাকে তখন তার সাথে তর্কে জড়ানো বোকামি ছাড়া কিছুই না।”

অরিন রোহানের কথা বাদ দিয়ে অর্ণার সামনে গিয়ে বলে,”আপনি তো জীবিত!তাহলে এতো মরার নাটকের কি ছিলো?আপনার প্রতি আয়াশ ভাই অন্যায় করেছে বলে আমি তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করতে চেয়েছি।তখন তো একবার বলতে পারতে তুমিই অর্ণা? ”

অর্ণা এবার অরিনের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলে,'”আমি যে আসলে অর্ণা সে কথা সবাই হজম করতে পারতে?উঁহু তখন এই অর্ণাকে অর্ণা হবার হাজারো প্রমাণ দিতে হতো।কিন্তু যেই না সুমু বলছে আমি অর্ণা, তখন তার কথা বিশ্বাস করতে দুই মিনিট ও কেউ সময় নাও নি চিন্তা ভাবনা করার।”

অরিন বলে,”হ্যা তা ঠিক।”

অর্ণা বলে,”জানো সমাজের মানুষের সমস্যা কী?তারা পরের কথায় বিশ্বাস বেশি করে।সে নির্দোষ তাকে হাজারো প্রমাণ দিতে হয়।চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে যেমন সবাই চিলের পিছনে ছুটে ঠিক তেমন করে সবাই আসল বিষয়ের বাজ বিচার না করে আমার বেপারটা কে ও জলঘোলাটে করেছিল। এখন এখানে দোষ কোনদিক দিয়ে আমার জানতে পারি?”

এবার রোহান বলে,”অরিন যার জন্য ন্যায়বিচার খুঁজছো তাকে সামনে পেয়ে এমন ব্যবহার করছো।এটা কেমন নিয়ম?”

অরিন মাথা নিচু করে থাকে সত্যি তো সে রাগের বসে অনেক বড় ভুল কাজ করেছে।তার সবটা জানা উচিৎ ছিলো। সঠিক তথ্যের বাচ বিচার না করে কেনো আমরা আরেকজনের দিকে আঙ্গুল তুলবো?রাগের সময় নেওয়া সিদ্ধান্ত কখনো সঠিক হয় না।তাই রাগের সময় নিজেকে যথা সম্ভব সংযোত রাখতে চেষ্টা করা উচিৎ। রাগের সময়টা তো শয়তান ঘাড়েচেপে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।রাগ মানুষের মূল্যবোধ নষ্ট করে দেয়!”

অরিন রোহান আর অর্ণার সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে দুঃখিত বলে মাথা নিচু করে থাকে।রোহান অরিন কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,”আরে আমার রাগের খনি বউটা!একটুতেই রাগে যায়,আবার একটু বোঝায় দিলে ভুল ঠিক বুঝতে সময় লাগে না।”

অর্ণা বলে,”তোমারা রোমান্স করো আমি বরং বাড়ির ভেতরে যাচ্ছি। ”

রোহান বলে,”একদম না!আমি এখুনি চলে যাবো।
শুধু ননদ ভাবীর মাঝের সমস্যা দূর করতে এখানে এসেছিলাম।আমি অর্ণা কে বলি যাও ছোট ভাবীর কে প্রশ্ন করো সাথে অরিন কে নিয়ে যেতে ভুলবে না।এরপরে অর্ণা অরিন কে জোর করে সুমুর কাছে নিয়ে যায়।”

অর্ণা বলে,”আসলে আমরা সমস্যার কাছে হেঁটে হেঁটে যায় না।সমস্যা আমাদের কাছে হেঁটে হেঁটে চলে আসে।কিন্তু সমাধান আমাদের খুঁজতে হয় অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। ”

এরপর অরিন অর্ণার কাছে এগিয়ে এসো ক্ষমা চেয়ে নেয়।আর রোহান কে বিদায় দিয়ে চুপচাপ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।বাড়ির ভেতর প্রবেশ করতেই দেখে আয়াশ পানি পান করছিল। তখন অরিন আয়াশের সামনে গিয়ে বলে,”ভাইয়া আমি চলে যাবার পর বাড়িটা বড্ড বেশি ফাঁকাফাঁকা লাগবে তাই তুমি তাড়াতাড়ি বাচ্চা নেওয়ার ব্যবস্থা করো।”

আয়াশ এমন কথা শুনে ওর মুখের সব পানি সামনে বাহিরে করে ফেলে দেয়।আয়াশের মুখের সব পানি সুমাইয়ার মুখের উপরে গিয়ে পড়ে।

সুমাইয়া এ্যাখ বলে ফ্রেশ হতে নিজের রুমে চলে যায়।

আয়াশ বাচ্চার কথা শুনে অবাক হলো না অরিনের ভালো ব্যবহার দেখে এটা নিয়ে বেচারা আয়াশ নিজেই কনফিউজড হয়ে যায়।

দুই ভাইবোনের এমন কাহিনী দেখে দূরে দাঁড়িয়ে অর্ণা হাসতে থাকে।

আয়াশ মনে মনে বলে,”সব সময় আমার যেমনটা ভাবি তেমন হয় না।পরিস্থিতি কখনো নদীর বিপরীত স্রোতের মতো প্রবাহিত হতে থাকে।”

(গঠনমূলক মন্তব্য আশা করবো সবার কাছে)

‘#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Nishi_khatun
#পর্ব_৩০

অরিনের বিদায়ের অনুষ্ঠানে আয়াশের মামা,মামী,মামাত ভাই আর বোন ও আসে।
এবার তাদের সাথে নতুন সদস্য আসে তার নানিমা।

নানিমা আয়াশদের বাড়িতে আসতেই অর্ণা কে দেখে ওর হাত ধরে দাঁড় করিয়ে বলে,”এই মেয়ে তোমাকে আমার খুব চেনা চেনা লাগছে কোথায় যেনো দেখেছি মনে হচ্ছে?”

অর্ণা বলে,”আজ প্রথম আপনার সাথে আমার দেখা হলো।এর আগে কখনো দেখা হয়েছে বলে তো আমার মনে হচ্ছে না।”

তখন মরিয়ম খান এসে বলে,”রাস্তার মেয়ে এটা!হয়তো কখনো কোনো রাস্তার পাশে তাকে দেখেছে আপনি।”

আয়াশেন নানি বলে,”মাশাআল্লাহ এতো সুন্দর মিষ্টিকে রাস্তার পাশে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না বেয়াইন সাহেবা।”

তখন আয়াশের মামাত ভাই এসে বলে,”আরে দাদীমা তুমি ভাবীর ছবি আমাদের মোবাইলে দেখেছ তাই তোমার এতো চেনা চেনা মনে হচ্ছিল।”

নানি মা বলে,”আরে হ্যা তাই তো!আমি তো ভুলেই গেছি।এই মেয়েটা তো আমার আয়াশ ভাইয়ের বউ।”

অর্ণা একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে দাদীমা কে উদ্দেশ্য করে বলে,”আচ্ছা দাদীমা হঠাৎ করে আমার প্রতি আপনার ভালোবাসা গুলো গরলে পরিণত হবার কারণ কি জানতে পারি?”

দাদী মা বলে,”যে মেয়ের বাবা মা নেই!এতিম তাদের জন্য এই খান বাড়ি নয়।রাস্তার মানুষদের জন্য রাজপথ। ”

অর্ণা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে,”আচ্ছা এতিমেরা কি মানুষ নয়?তারা কী জীবজন্তু? পৃথীবিতে তারাও তো আল্লাহ সৃষ্টি শুধু বাবা মা ছাড়া হলেই এতিমর খেতাব অর্জন করে তারা।”

সুমু এসে বলে,”দাদী মা অযথা এই এতিম-মেয়ের সাথে কথা বলে তর্কে জড়িও না।এতিমের প্রতি দয়া দেখানো যায় তাদের ভালো বাসা যায় না।”

আয়াজ পেছন থেকে বলে ওঠে,”সুমু তুমি একদম ঠিক কথা বলেছো। তোমার কথার সাথে আজকে সহমত প্রকাশ করছি।”

সুমু এটা ভেবে খুশিতে গদগদ হয়ে যায় যে আয়াজ তার সার্পোটে কথা বলছে।

আয়াজ সুমুর খুশিতে গদগদ চেহারা উপর কথার অপমান লেপে দিয়ে বলে, “আমিও তো এতিম! আমারো বাবা মা কেউ নেই!তাহলে দাদীমা আমিও তো এতিম রাস্তার ছেলে।আর সুমু তুমি বোধহয় আমাকে দয়া দেখাতে বিয়ে করেছো?”

সুমু আয়াজের কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর হাত ধরে বলে,”তোমাকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি।তুমি এতিম নও তোমার পরিবার আছে।তোমার চাচা চাচি, কাজিনেরা সবাই তো আছে।”

আয়াজ বলে,”শুনেছি ভাবীর ও এমন পরিবার আছে।সে তার মামার বাড়িতে বড় হয়েছে। তাহলে সে কেনো রাস্তার মেয়ের খেতাব পাবে?সে কেনো এতিমের সিলমোহর পাবে?আমার আর তার মাঝে তো পার্থক্য নেই।”

দাদীমা বলে,”আয়াজ দাদুভাই তুমি ঐ মেয়ের জন্য সুমুর সাথে এভাবে তর্ক করছো কেনো?”

আয়াজ দাদীকে কিছু না বলে সোজা সুমুকে উদ্দেশ্য করে বলে,”অর্ণার মৃত্যুর কাহিনীর পিছনে যদি তোমার কোনো অবদান থেকে থাকে তাহলে এখনো সময় আছে সবার সামনে সত্যি বলে মাফ চেয়ে নাও।নয়তো সত্যি যেদিন একাই বাহিরে আসবে সেদিন তোমার আমার সম্পর্কের সমাপ্তি হবে।”

সুমু দাদীর কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”দেখো না দাদী মা তোমার নাতী আমার সাথে এই মেয়ের জন্য অশান্তি সৃষ্টি করছে।”

তখন আয়াশের নানি মা বলে,”এতো সময় তোমাদের কথা শুনে কিছু না বুঝলেও এটা ঠিকি বুঝতে পেরেছি তোমার কপালে দুঃখ আছে মেয়ে।যে মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে অপমান করতে পিছপা হয় না। সে ও একদিন কলার খোঁসায় পাঁ পিছলে গবরের মধ্যে পড়ে।আর তুমি সংসার গড়া বাদ দিয়ে দেখছি সংসার ভাঙ্গার খেলায় মেতে উঠেছো।”

অরিন এসে বলে,”বাহ নানি তুমি তো একদম ফাটিয়ে দিয়েছো। এমন করে সুমু ভাবীর মুখে গবর লেপে দিলে এখন দাদী মা কি করে বেয়াইনের কথার হাত থেকে আদুরে নাতিবৌ কে বাঁচাবে?”

মরিয়ম খান বলে,”আমার অযথা কারো সাথে তর্ক করার ইচ্ছা নেই।তারা দাওয়াত খেতে এসেছে।দুদিন পর ঠিকি চলে যাবে মেহমানের মতো।আমারা আমরাই তো থাকবো!অযথা ঐ মেয়ের জন্য ঝগড়াঝাঁটি করার কোনো মানে হয় না।”

অর্ণা চলে যায় নিজের কাজ করতে অযথা এনাদের সাথে তর্ক করার কোনো মানে হয় না।

অর্ণা অরিন কে সাথে করে রান্নাঘরে নিয়ে আসে সংসারের খুঁটিনাটি কাজ শেখাতে।প্রথমে তো অর্ণা অরিন কে সবজি পেয়াজ মরিচ এসব কাটা শেখাতে থাকে। তারপর রান্নাতে কতোটা মশলা দেওয়ার দরকার তার পরিমাণ শেখাতে থাকে।অরিন খুব মনোযোগ সহকারে কাজ শিখতে থাকে।তখন অরিনের মা মমতা শাঁকচুন্নি এসে হাজির হয়।”

মমতা খান এসে বলে,”এই আয়াশের বউ!আমার মেয়ে তোমার মতো গরীব ঘরের না বুঝলে।যে তাকে সংসারে এতো কাজ কর্ম শিখতে হবে।”

অরিন বলে,”মা এখানে ভাবীর দিকে আঙ্গুল তোলার আগে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখো।তুমিও কিন্তু রান্না করো আমাদের সবার জন্য এর মানে কী তুমিও…

মমতা খান জোড়ে চিৎকার করে অরিন কে ধমক দিয়ে ওঠে।

অর্ণা পরিবেশ ঠাণ্ডা করতে বলে,”কাজ সবাইকে করতে হয় এখানে গরীব বড়লোক বলে কথা নেই।প্রতিটা মেয়ে তার সংসার কে ভালোবাসে বলে কাজ করে।উচ্চ শিক্ষিত মেয়েটা কেও নিজের স্বামী সন্তানের জন্য রান্না করতে হয়।তাই অযথা এই বিষয়ে বেশি কথা না বলাই উওম।”

এদিকে সব কিছু সুন্দর ভাবে চলছিল তবে অর্ণা আয়াশের মনে নিজের স্থান আগের মতো তৈরি করে নিতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিল।
একদিকে অর্ণা আয়াশের সম্পর্ক অন্য দিকে সুমু আয়াজের সম্পর্ক। সব সত্যি সামনে আসলে যদি সম্পর্ক গুলো নষ্ট হয়ে যায় সেই ভয়ে অর্ণা চুপচাপ ছিলো।অর্ণা ভেবেছিল এভাবে চেষ্টা করতে থাকলে একসময় সে আয়াশের সাথে সম্পর্কটা সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে পারবে।
কিন্তু কথায় আছে না!অভাগী যেদিকে যায় সাগরের জল সেদিকে শুকিয়ে যায়।
অর্ণা অনেক চিন্তা ভাবনার পর সিদ্ধান্ত নেয় সে সবটা ক্লিয়ার করবে সবার কাছে।এরপর যা হবার তাই হবে।কেনো সে দোষ না করে ঝরা পাতার মতো ঝরে অবহেলা সহ্য করবে?

অরিনের বিদায়ের দু দিন আগে হঠাৎ করে অর্ণা বাড়ির সবাইকে একত্রিত করে।সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,”আপনাদের সবাইকে আজ আমি আমার জীবনে গল্প শোনাবো। ইচ্ছা না থাকলেও শুনতে হবে আপনাদের। আপনার আমাকে ভুল বুঝবেন তা হতে পারে না।আর আমি অপমান সহ্য করতে পারি তবে অবহেলা নাহ।এই অবহেলা সহ্য করার আর ক্ষমতা নেই আমার।আমি আজ বলবো সবাই চুপচাপ শুনবেন। ”

অর্ণা কথা গুলো শুনে সুমু খুব ভয় পেতে শুরু করে।ভয়ে সুমুর মাথা থেকে ঘাম ঝরেত শুরু করে দেয়।
আয়াজ সুমুর দিকে তাকিয়ে বলে,”অর্ণা এখনো কিছুই বলে নাই তাতে তোমার এই অবস্থা! যখন সবটা বলবে তখন তোমার সাথে কী হবে তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না সুমাইয়া!বান্ধবী হয়ে আরেকজনের জীবনের গল্পটা বদলে তুমি দিয়েছ তাই না?এবার রেড়ি থেকে পাপের শাস্তি ভোগের জন্য।”

সুমু আয়াজের দিকে ছলছল নয়নে তাকিয়ে ভাবতে থাকে যার জন্য করলাম চুরি আজ সেই চোর অপবাদ দিচ্ছে আমাকে।হায়রে দুনিয়া।

এদিকে অর্ণা বলতে শুরু করে….

(ইচ্ছা হলে মন্তব্য করবেন সবাই!আর বলবো না মন্তব্য করার কথা)



চলবে…..

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here