#তারে_আমি_চোখে_দেখিনি
#পর্বঃ০৯
#Mst_Liza
সোহাগের ডাকে মাহির গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়।
মাহিরঃ মামা এসো! ভেতরে এসো!
সোহাগঃ নাহ থাক মায়া এখন কেমন আছে? হাঁটতে পারছে তো এখন?
মাহিরঃ দৌড়ে বেড়াচ্ছে।
কথাটা শুনে সোহাগ নিশ্চিন্ত হয়।
সোহাগঃ যাক তাহলে সুস্থ হয়েছে মেয়েটা।
সোহাগ ঘুরে চলে যাবে।।এমন সময়ে মায়া গোমরা মুখে গাল ডলতে ডলতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়।। সোহাগকে দেখেই ছুটে আসে।।তারপর সোহাগকে জড়িয়ে ধরে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে শুরু করে।।
সোহাগঃ আরে আরে কাঁদছিস কেন কি হয়েছে তোর?
মায়া কোনো কথা বলে না শুধুই কেঁদে যায়।
সোহাগঃ মাহির কি কিছু বলেছে তোকে?
মায়া গাল থেকে হাতটা সরিয়ে গালটা সোহাগকে দেখিয়ে বলে।
মায়াঃ এখানে চর মেরেছে।শুধু শুধু! কিছুই করি নি আমি!
সোহাগ মাহিরের দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকায়।
মাহিরঃ মামা আসলে ও,,,,
মাহির আর কিছু বলার আগেই সোহাগ মাহিরকে কষিয়ে একটা চর বসিয়ে দেয়।
মাহির গালে হাত দিয়ে নিশ্চুপ হয়ে যায়।
সোহাগঃ তোর সাহস কি করে হয় আমার মায়ের গায়ে হাত তোলার?
মাহিরঃ মামা ও সকালে..
সোহাগঃ চুপ! একদম চুপ!
রাগি দৃস্টিতে তাকায় মাহিরের দিকে।
মাহিরঃ আমার কথাটা তো শোনো মামা?
সোহাগঃ কি শুনবো তোর কথা? ভেবেছিলাম সুধরে গিয়েছিস কিন্তু না কাল এতোটা অন্যায় করার পরও তোকে আমার ক্ষমা করে দেয়া উচিৎ হয় নি।সেই একই ভুল করলি আজ!
সোহাগ চিৎকার করে কথাটা বলে।বাড়ির সকল সদস্যরা সোহাগের চিৎকার শুনে ছুটে আসে মাহিরের রুমে।
।
।
রাইশাঃ কি হলো ভাইয়া আজ আবার কি হয়েছে?
সোহাগঃ জিজ্ঞাসা কর তোর গুনোধর ছেলের কাছে!
রাইশা মাহিরের দিকে তাকায়।
রাইশাঃ কি করেছিস তুই মাহির? ভাইয়া এতো রেগে আছে কেন?
মাহিরঃ মা মামাতো আমার কথা শুনতেই চাইছে না।
মায়াঃ আপনি বললেই তো বানিয়ে মিথ্যা বলবেন এজন্যই শুনতে চাইছে না তাই না আংকেল?
মায়ার কথায় সোহাগ মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বলে।
মাহিরঃ সব তোমার জন্যই হচ্ছে।একটা বদমাইস, ফাজিল মেয়ে কোথাকার! তোমাকে তো আমি…
মাহির এগিয়ে গিয়ে মায়াকে একটা থাপ্পড় দিতে গেলে,, সোহাগ মাহিরের হাতটা ধরে বসে।
সোহাগঃ নাহ তোকে অনেক সুযোগ দেয়া হয়ে গেছে আর নাহ!
সোহাগ রুমের ভেতরে ঢুকে আলমারি থেকে মাহিরের সব কাপড় চোপর বের করে সুটকেসে ভরতে থাকে।মিরা, রাইশা আর রুসা অনেক বোঝায় তবুও সোহাগ আজ কারও কথা বুঝতে চায় না।সুটকেসটা মাহিরের হাতে ধরিয়ে দিয়ে মাহিরকে ধাক্কা দিতে দিতে সিঁড়ি থেকে নিচে নামায়।মাহির অনেকবার বলার চেস্টা করে কিন্তু মাহিরের কোনো কথাই সোহাগ শোনে না।বাড়ির মেন গেট থেকে ধাক্কা দিয়ে মাহিরকে বের করে দেয়।
মাহিরঃ মামা প্লিজ!
সোহাগঃ আর একটা কথাও না বলে তুই আমার সামনে থেকে দূর হয়ে যা!
মাহিরঃ মিরা মা বোঝাও না মামাকে!
মিরাকে ডেকে বলে মাহির।
মিরা এগিয়ে আসে সোহাগের কাছে।
মিরাঃ এভাবে ছেলেটাকে তারিয়ে দিচ্ছো কোথায় যাবে ও?
সোহাগঃ যেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে যাবে।স্বাবলম্বী হয়েছে কোথাও একটা থাকার ব্যবস্থা করে নিতে পারবে।
মিরাঃ ওহহ তাই? তোমার কি ভালো লাগবে মাহির এভাবে চলে গেলে?
সোহাগঃ প্লিজ মিরা! তুমি এখন একটু চুপ থাকো।ওর এই অপরাধের একটা শাস্তি হওয়া দরকার।
কথাটা বলেই দরজাটা মাহিরের মুখের সামনে বন্ধ করে দেয় সোহাগ।
রাইশা আর রুসা থ হয়ে পিছনে দাড়িয়ে আছে।
সোহাগঃ আমার অনুমতি ছাড়া কেউ মাহিরের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ রাখার চেস্টা করবে না।
কথাটা বলে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায় সোহাগ।
এদিকে মায়ার ভেতরে ভেতরে খুশিতে নাচানাচি চলছে আর উপর থেকে একদম ফ্যাকাশে মুখটা শুকনো করে আছে।
মিরা মায়ার দিকে একবার বাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রুসা আর রাইশার কাছে যায়।
মিরাঃ তোরা চিন্তা করিস না। উনার রাগতো জানিসই। একটু সময় অবশ্য লাগবে। তারপর দেখবি নিজেই মাহিরকে ফিরিয়ে আনবে।
মিরা কথাটা বলতেই রাইশা আর রুসা মিরাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। সেটা দেখে মায়াও জোড়ে জোড়ে চোখটা বন্ধ করে কান্না জুড়ে দেয়।কিছুক্ষণ পর মায়া চোখ খুলে দেখে মিরা, রাইশা আর রুসা ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মায়াঃ খুব কস্ট হচ্ছে আমারও। যতোই পাষাণ হৃদয়ের হোক ওই লোকটা স্বামীতো আমার!
কথাটা বলে নাক মুখ মুছতে মুছতে ঘুরে উপরে চলে আসে।রুমের মধ্যে ঢুকে দরজায় ছিটকানি লাগিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নাচতে থাকে।একটা সময় পর নাচতে নাচতে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় বসে পরে,
মায়াঃ যাক ছেঁচড়া আপদটা বিদায় হয়েছে! এটাই অনেক বড় শান্তির।
,
,
,
চলবে,,,,,