তুমিময় প্রেম পর্ব ১৪

#তুমিময়_প্রেম🥀♥
#PART_14
#FABIYAH_MOMO🍁

🍁
মুখের উপর শপিংব্যাগ ছুড়ে মারলো মুগ্ধ। ব্যাগটা আমার মুখে আলতো ধাক্কা খেয়ে ফ্লোরে যেয়ে পড়লো। মুগ্ধ উঠে দাড়িয়ে ড্রয়িংরুমের সোফায় পা তুলে বসলো। পকেট থেকে ফোনটা বের করতেই আমাকে ঝাঝালো সুরে আরেকদফা বলে উঠলো,

–আমি যে সোফায় বসেছি না?? ঠিক দশমিনিট বসবো! যদি তোমার দশমিনিটের চেয়ে এক্সট্রা টাইম লাগে! খবর আছে !!

আমি মুগ্ধের শাসানো বানী শুনে তাড়াহুড়ো করে ব্যাগ নিয়ে রুমে চলে যাই। দরজা আটকিয়ে শপিংব্যাগ বিছানায় ছুড়ে কোমরে একহাত রেখে পায়চারী করছি। আরেকহাত মুখে ঢুকিয়ে অলরেডি নখ কামড়ানো শুরু। আমি পায়চারী করতে থাকলে উচ্চস্বরে মুগ্ধ বলে উঠে,

–দশমিনিটের একমিনিটও যদি বেশি লাগে ! এই দরজা আস্তো রাখবো না ! খবরদার !

মনটা চাচ্ছে নিজেকেই নিজে কষিয়ে দুটো চড় লাগাই! কি দরকার ছিলো দরজা খুলার? ওকে বাইরেই দাড় করিয়ে রাখতাম!! ধ্যাৎ ধ্যাৎ ধ্যাৎ ! নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম! এখন ওর কথা না শুনলে কোন দাবাংখেলা দেখায় আল্লাহ্ জানে !! অবশেষে না পারতে বিছানা থেকে ব্যাগ নিয়ে খুলে দেখি একটা হালকা কমলা রঙের শাড়ি। শাড়ির পাড় লাল, আচলটাও লাল। লাল-কমলার এতো সুন্দর শাড়ি আদৌ আমার চোখে পড়েনি। সত্যি!! শাড়িটা এককথায় চমৎকার!! আমি রীতিমতো বলতে বাধ্য, শাড়িটা যে পছন্দ করেছে তার পছন্দসই খুবই শৌখিন এবং মোহপূর্ন। শাড়িটা দেখে মুখে অজান্তেই এক চিলতে হাসি ফুটে আসলো। কেনো আসলো জানা নেই!! আমি শাড়িটা নিয়ে পড়া শুরু করলাম। ঠিক আটমিনিটের মাথায় আমার শাড়ি পড়া শেষ। ওদিকে আমার হাতে আছে মাত্র দুই মিনিট!! ইতিমধ্যে মুগ্ধ হুশিয়ারী দিয়ে বলেছে, ‘মম সময় কিন্তু দুইমিনিট বাকি! যা করার জলদি করো দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে যদি দেখি তুমি হাফ রেডি তাহলে তোমার মান সম্মানের কি হবে বুঝে নিও !!’ আমি শাড়ি ঠিকঠাক করে পড়ে আয়নায় নিজেকে হালকা সাজে সজ্জিত করার প্রয়োগে আছি। চোখে চিকন করে আই লাইনার, চোখের ওয়াটার লাইনে কালো কাজল, ঠোটে মেরুন রঙের লিপ আর্ট করে হালকা লালের লিপস্টিক দিয়ে লিপের সাজ কমপ্লিট করি।।মুখে হালকা পাউডার দিয়ে ঠিকঠাক মতো ব্লেন্ড করি। চুলে চটপট হাতে চিড়ুনি করতেই ওদিকে দরজা ধাক্কানো শুরু! আমি খুব তাড়াতাড়ি করে চুলের জট ছাড়িয়ে মাঝে সিথি গাথলাম। কাধের দুপাশ থেকে দু খন্ড চুল সামনে আনতেই দরজার দিকে পা চালালাম। আমি দরজা খুলে দাড়াতেই মুগ্ধ ধাক্কা দেওয়ার জন্য প্রস্তত হাতটা শূন্যে থামিয়ে দিলো। দরজায় আর ধাক্কা দেওয়া হলো না। হাতটা আর আগের জায়গায় রাখা হলো না। সে স্ট্যাচু হয়ে দাড়িয়ে আছে হা করে। মুগ্ধের চাহনি আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে। আমি ভেতরে প্রচুর কাচুমাচু করছি। ও এখনো ফ্রিজ্ড অবস্থায় থমকে আছে। চোখের গোলক আমার দিকে স্থির হয়ে আছে।। পলক ঝাপটাচ্ছে একদমই।। আমি ওর চোখের সামনে তুড়ি বাজাতে বাজাতে বলে উঠি,

–ইয়েস আই নো আমাকে আজ সুন্দর লাগছে! সো তোমার গান্দি নজর নিচে নামাও ! আমার রাস্তা থেকে সরে দাড়াও ! আমি জুতা পড়ব !

মুগ্ধ থতমত খেয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে দরজার সামনে থেকে সরে গেল। ও সরতেই আমি রুমের বাইরে বেরিয়ে যেয়ে দরজার কাছে গিয়ে জুতা পড়তে থাকি। মুগ্ধ আমার পিছু দাড়িয়ে বললো,

–বাংলা ভাষায় গালিগালাজ + তুইতোকারি করো সেগুলো অন্য ফ্যাক্ট! বাট প্লিজ ! হিন্দি ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ করবা না ! আমার হিন্দি ভাষা আর হিন্দি কালচার পছন্দ না! সো স্ট্রেট রিকুয়েস্ট। প্লিজ খেয়াল রাখবা। চলো…

‘চলো’ বলে আমার সাইড ঘেষিয়ে বাইরে পা বারালো মুগ্ধ। জুতা পড়া থামিয়ে এক পলক বাইরে তাকাই…পান্জাবীর হাতাটা আলতো করে কনুইয়ে ফোল্ড করতে করতে সিড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে মুগ্ধ। গায়ের খয়েরী রঙের পান্জাবীটা চোখসই করে দিচ্ছে বারবার। হাতের ব্রাউন ঘড়িটাও হাতের সৌন্দর্য্য বর্ধন করছে প্রতিটা ক্ষনে ক্ষনে। সে কি আজ মনকাড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে?? হয়তোবা! হয়তোবা মুগ্ধ কারোর জন্য নিজেকে অন্য বেশে সাজিয়েছে।। হয়তোবা একটুখানি ভালোলাগা জাগানোর জন্য সুন্দরভাবে এসেছে!! যেখানে ক্যাম্পাসে শতশত ক্রাশ খাওয়া মেয়ে আছে, সেখানে আমার মতো একজনের কাছে ও মূল্য পেতে আসে।। কি আফসোস।।। কিন্তু আমার যে সে বোধশক্তি নেই! আমি কারো জন্য প্রেমময় নই! আমার জীবনে প্রেম গাথার সময় নেই। সময়টা আছে শুধু উচ্চলক্ষে পৌছাবার এবং পরিবার নামক বিশেষ মানুষগুলোকে একটু বিলাসিতা দেওয়ার।। হয়তো একটুকুই আমার চাওয়া…

আজ মুগ্ধের আচরনটা অন্যরকম ঠেকিয়ে দিচ্ছে। সে সবসময় চুপ করে আমার সাথে ঘটা তামাশাগুলো দেখতো। আজ সে নিজেই আমার বাসায় এসে অধিকার খাটিয়ে পটাপট হুকুম দিচ্ছে।। মানুষটা খুব ইউনিক!

শাড়ি ধরে ধরে আমি সিড়ি দিয়ে নিচে নামি। মেইন গেইট থেকে কিছুটা দূরে গাড়ি থামিয়েছে মুগ্ধ। গাড়িতে ঠেস দিয়ে পকেটে এক হাত ঢুকিয়ে ফোন দেখছে সে। আমি গাড়ির কাছাকাছি পৌছাতেই মুগ্ধ ফোন আমাকে একবার দেখে নিয়ে ফোনটা পকেটে পুড়লো। এরপর ও কি করলো বুঝলাম না।। গাড়ির দরজা খুলতে যেয়েও কি মনে করে খুললো না.. বন্ধ করে দিলো। আমি ওর সামনে এসে দাড়ালে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,

–জাস্ট পাচঁটা মিনিট ওয়েট করা যাবে???জাস্ট পাচঁ মিনিট? আমি এই যাচ্ছি এই আসছি!!

আমাকে বলার সুযোগ না দিয়েই ও রাস্তা ধরে সামনে হাটতে লাগলো। আমি অবুকের মতো রাস্তায় দাড়িয়ে রইলাম। রাস্তার আশেপাশের মানুষগুলো কেমন করে তাকাচ্ছে!! মন চাচ্ছে শাড়ি ধরে বাসায় চলে যাই! আমার বড্ড বেশি অস্বস্তিকর লাগছে এই দুপুরবেলায় একা একা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে! বাংলাদেশের কালচারে একটা বিরাট সমস্যা হলো কেউ একটু সাজগোজ করে সুন্দর করে আসলে চর্তুদিক থেকে ঘুরঘুর করে নজর দিতে থাকে।। কমবয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে চাওয়াচাওয়ির প্রবনতাটা একটু বেশি। অতিরিক্ত মাত্রায় তাকিয়ে থাকে, বিশেষ করে পুরুষ লোকরা। রাস্তায় কমবেশি টুকটাক রিকশা চললেও কোনো গাড়িটারি ছিলো না। হঠাৎ একটা সিএনজি এসে আমার পায়ের কাছে থামলো। আরেকটু হলে আমার পায়ের উপর উঠিয়ে দিতো! আমি মনেমনে ঠিক করছি ড্রাইভারকে কড়াকড়ি গলায় কথা শুনাবো ওমনেই দেখি সিএনজির জালিওয়ালা দরজা খুলে উকি দিলো মুগ্ধ। আমাকে নম্রভাবে বলে উঠলো,
–জলদি ওঠো! হারি আপ!
আমি মুখ কুচকে শক্ত হয়ে আছি! আমি সিএনজিতে উঠলে মুগ্ধের সাথে যাবো না! আমি মুগ্ধের পাশে বসবো না! আমি হাতভাজ করে মুগ্ধের দিকে হাসি ছুড়ে বলে উঠি,

–তুমি না খুব ভালো?? আমার সব কথা শোনো!! এখন ভালো বাচ্চার মতো নামো তো মুগ্ধ!! তুমি না খুব কিউট করে কথা শুনতে পারো?? প্লিজ সিএনজি থেকে নেমে পড়ো!! আমি সিএনজিতে একা যাবো বুঝছো।। তুমি তোমার গাড়িটা চালিয়ে পিছুপিছু আসো ওকে??

মুগ্ধ ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে রইলো। সিএনজি ড্রাইভারটাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মুগ্ধের কোনো হুহা হুশ হলো না। সে ঘাপটি মেরে আমার মতো হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
–গাড়িটা সিঙ্গেল থাকতে পারে। আমি না থুক্কু মানুষ না।। মানে মানুষ একা একা দুনিয়ায় থাকতে পারেনা। একটা সঙ্গী সরি! সাঙ্গু লাগে। এখন উঠো!

কথাগুলো বিরাট প্যাঁচ লাগিয়ে দিলো মাথায়। সঙ্গী সাঙ্গু হেনতেন কি বললো কিছুই বুঝলাম না। আমি অবুঝের মতো মুখভঙ্গি করলে মুগ্ধ সিটে বসা অবস্থায় হঠাৎ আমার হাত টান দিয়ে সিএনজিতে বসিয়ে ছাড়লো! হাতের কনুই ও পায়ের গোড়ালিতে একটুআধটু ব্যথা পেয়ে সিএনজিতে বসতেই সামনের সিট থেকে ড্রাইভার মামা হাত বারিয়ে জালি দরজা লাগিয়ে দিলো। মুগ্ধের কাছ থেকে এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে আমি সিটের কোণায় চেপে বসি। মুগ্ধ আমার হাত ছেড়ে ওর চুলগুলো সামনে পেছনে করছে। সিএনজি হুরহুর করে চলছে। বাতাসের বেগ দুইসাইড থেকে আসছে প্রচুর। বাতাসের বেগের কারনে চোখ মেলে ঠিক করে তাকানো যাচ্ছেনা। চুলগুলো বারবার মুখ থেবড়ে পড়ছে। মুগ্ধের দিকে তাকালাম ওরও একই অবস্থা। সামনের চুলগুলো এলোপাথাড়ি কপাল ছুয়ে চলছে। হঠাৎ মুগ্ধ আড়চোখে আমাকে পরোখ করলো কিনা জানিনা ও তাচ্ছিল্যের সুরে সামনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

–আচ্ছা তুমি আমার দিকে তাকাতে হিমশিম খাচ্ছো কেন? কি ব্যাপার? আমায় কি পান্জাবীতে বর বর লাগছে??

আমি মুখটা বিরক্তিতে চুবিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে ঝাঝালো গলায় বলে উঠি,

–বুড়া বুড়া লাগছে বর না! চুপ ! একটা কথাও না! গাড়িতে বসেছি এটাই শোকর করো! বেশি করলে কান টেনে ছিড়ে নিয়ে আসবো! একদম চুপ !

মুগ্ধ হালকা হেসে ঠোটের মুখের ‘Zip up’ ভঙ্গি দেখালো মানে তালা লাগিয়ে বোঝালো। সিএনজি মামা সুযোগটা খুজছেন কিভাবে পেছন থেকে আমার কান্ডকারখানা দেখতে পারেন। কেননা এই গাড়িতে কোনো মিরর নেই। আচ্ছা মুগ্ধ আমায় সিএনজি করে কেন নিয়ে যাচ্ছে? কোনো বিশেষ কারন আছে? কোনো স্পেশাল মোটিভ? থ্রিলার মুভির মতো?? জিজ্ঞেস করা উচিত!

–এই শুনো!
মুগ্ধ হালকা কেশে গলা ঝেড়ে বলল,
–আমার বাবা-মা আকিকা দিয়ে ভালো নাম রেখেছে। আই হোপ তুমি ডিসেন্ট নামটা জানো!
–জানাজানির দিন শেষ!! আমার উপর কিসের জোর খাটাচ্ছো তুমি! কিসের !
–আচ্ছা মিস ফোর ইয়ার জুনিয়র, একটা জিনিস লজিক্যালি ভাবো তো। আমি যে তোমার বাসায় ঢুকে মেজর স্টেপে তামাশা করলাম তুমি কি পারতে না চিল্লাচিল্লি করে আশপাশের মানুষ ডাকতে? তুমি কি ডেকেছো? তাছাড়া তুমি নিজেও কোনো দিক দিয়ে কম না। পারলে আমার মতো চারটা কে মাটিতে শুইয়ে মাথা ফাটিয়ে দিতে পারো। কিন্তু জাস্ট থিংক, এসব খেয়াল তোমার মাথায় কি একফোঁটাও এসেছে? নো ! তুমি আমাকে মারা তো দূর আমার প্রতিটা কথা সভ্য মেয়ের মতো শুনেছো। যা বলেছি যেভাবে বলেছি সব করেছো। তাও বলছো আমি জোর খাটিয়েছি? হাসালে পাকনি।তুমি চাইলে আমাকে বাজেভাবে ইনসাল্ট করে তাড়িয়ে দিতে পারতে! জোর খাটালে তুমি চিল্লাহুল্লা করতে মাস্ট ! বাট দেখো তুমি কিছুই করোনি দশমিনিট বলেছি দশমিনিটেই রেডি হয়েছো। আরো বলবে জোর খাটিয়েছি? তাহলে বলো যাও। আমার তাতে যায় আসে না…যার যা চিন্তা ওটা নিয়েই পড়ে থাকুক, আই ডোন্ট কেয়ার।

মুগ্ধ ডোন্ট কেয়ার ভঙ্গিতে হালকা নিশ্বাস ছাড়লো। আসলেই তো! আমি নিয়ম করে সব কথাই দেখি শুনেছি! কেন শুনেছি? মাথা কি আউট হয়ে গেছে? মুগ্ধকে ধরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছি আমি! সেই মেয়ে আজ ওর কাছে নুয়ে মুড়ে সব কথা শুনলো? কি বেক্কল আমি ! মাথা তো দেখি টোটালি গেছে ! আমি চিন্তাভাবনার দেয়াল বানিয়ে ওকে আবার শক্ত গলায় বলে উঠি,

–শোনো এখন! কান পরিস্কার করে শোনো, আচ্ছা আমার বাসায় কোন রাইটে এসেছো ? কি তোমার অধিকার ! কোন দাসত্বের দাপট দেখিয়ে নিজের মনমর্জিমতো আমায় রেডি করালে? তাও হুট করে সিএনজি! মতলব কি তোমার ? কি মতলব !

মুগ্ধ ম্যাজিশিয়ানদের মতো রহস্যজনক হাসি দিলো। খুবই রহস্যজনক হাসি। এই হাসিটা তখন ইউজ হয় যখন কেউ সামনের মানুষকে বোকা বানিয়ে দেয় এবং মারাত্মক কঠিন কিছু লুকিয়ে বেড়ায়! এমন কিছু লুকোয় যেটা শুনলে হয়তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাবে! আমি ওই রহস্যজনক হাসিটার মানে বুঝতে পারছিলাম না। একদম না। কি আছে সামনে? মুগ্ধ কি খারাপ কিছু পরিকল্পনা করেছে? প্রতিশোধের আগুন তবে আজ নিভিয়ে ছাড়বে ?? আমি যা খারাপ বিহেব করতাম তার প্রতিশোধ নয়তো….

-চলবে❤

-Fabiyah_Momo

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here