#তুমি_আছো_তুমি_রবে ( উপন্যাস)
#পর্বঃ১৭ #রেহানা_পুতুল
হাহাকার জাগানিয়া একটা দীর্ঘস্বাস ছাড়লো আরশাদ । ঝিনুকের চোখে চোখ রাখলো।
কাতর কন্ঠে বলল ,
ঝিনুক আমি যদি বলি, আমি তোমার আগে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। বিশ্বাস করবে?
মুহুর্তেই ঝিনুকের সমস্ত পৃথিবী দুলে উঠলো। মন জমিনের সমস্তটা তছনছ হয়ে যাচ্ছে । জাপটে পড়লো আরশাদের বুকে ছোট্ট শিশুটির মতো। গলা জড়িয়ে ধরলো আষ্ঠেপৃষ্ঠে পেঁচানো স্বর্ণলতিকার ন্যায়। হুহু করে কেঁদে ফেললো।
ঝিনুকের দুআঁখির প্রবল অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়ছে আরশাদের কাঁধের উপর বানের পানির মতো। চোখ নাক লাল হয়ে গেল তার ।
এক পাহাড় অনুরাগ নিয়ে অসহায়ের মতো আকুতি ভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
আপনি কেন এটা বললেন? কেন?
আরশাদ জমে গেল বরফের মতো।ঝিনুকের পাগলপারা প্রেম দেখে সেও অনিয়ন্ত্রিত প্রেমের অথই দরিয়ায় হাবুডুবু খেতে লাগলো। ঝিনুককে কাঁধ থেকে ছাড়িয়ে মুখোমুখি বসালো। টিস্যু নিয়ে সারামুখ মুছে দিলো।
ঝিনুকের দুচোখে, তার আরক্ত দুটি চোখ রাখল। ধরা গলায় বলল, নিজেকে জেলখানার আসামি ছাড়া বর্তমানে আর কিছুই মনে হয়না ঝিনুক। যতটুকু ভুল বা অন্যায় করেছি তোমার সাথে। তার চেয়ে কঠিনতম শাস্তি আমি পাচ্ছি।
তুমি আমার নিবন্ধিত নারী। অথচ তোমাকে কোনভাবেই পাইনা একমুহূর্ত। আমি বাসায় যতসময় থাকি তুমি নানান ছুতোয় আমার থেকে দূরে থাকো। শুধু তোমার স্টাডি করার সময়টুকু বাদে। তো আমার মনে হলো এই অসহনীয় কষ্টের চেয়ে মরে যাওয়া ঢের ভালো। ছন্নছাড়া হয়ে যাব। এভাবে অনিয়মিত জীবনযাপনে একদিন নিঃশেষ হয়ে যাব। এছাড়া এ দহনের শেষ নেই। আমি মরে গেলে তবে তুমিও মুক্ত। অন্য কারো সাথে ঘর বেঁধো। সবাই কি আমার মতো হবে নাকি। তোমার মতোও তো হতে পারে। তখন বুকের ভিতর জমানো সব প্রেম, ভালোবাসা,উষ্ণতা তাকেই দিও।
ঝিনুক আরশাদের শুকনো দুঠোঁট নিজের হাতের তালু দিয়ে চেপে ধরল। প্লিজ। অমন অলুক্ষণে কথাগুলো আর কোনদিন বলবেন না। প্রমিজ করেন আমায় ছুঁয়ে।
আরশাদ ঝিনুকের হাতের অনামিকায় আংটিটি আবার পরিয়ে দিলো। বলল বেহায়া না হলে নাকি ভালোবাসা পাওয়া যায়না। আরেকবার না হয় বেহায়া হলাম তোমার জন্য।
ওকথা বলবনা যদি তুমি আমার হও। বলেই ঝিনুকের আঙ্গুলের পিঠে উষ্ণ চুমু খেলো। ঝিনুক স্মিত লাজুক হাসি হেসে দিলো।
আরশাদের সারা মুখে এখনো বিষাদের গাঢ় প্রলেপ । কষ্টগুলো দলা পেকে আটকে আছে গলার মাঝে। চিৎ হয়ে পা টান টান করে শুয়ে পড়ল। মোবাইলে তার প্রিয় একটি গান ছেড়ে দিল লো ভলিউমে কুমার সানুর গাওয়া।
“ আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে সুখ তারা…
তোমার প্রেমের আবেশে আজ হৃদয় দিশেহারা।
এই জীবনে কখন কবে তুমি দেবে সাড়া?
এই জীবনে কখন কবে তুমি দেবে সাড়া?
আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে সুখ তারা…
ওগো তোমার ছবি আমার মনে যেদিন হলো আঁকা…
সেদিন থেকেই আমার আমি নেই যেন আর একা।
তোমার মাঝেই হারিয়ে গেছে এ জীবন ধারা…
আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে সুখ তারা।
জানি চলার পথেই আমার
সাথে তোমার হবেএএ দেখা…
দুটি মনের মিলন যদি হয় কপালের লেখা..।
তা না হলে ব্যর্থ জীবন তোমাকে ছাড়া
তা না হলে ব্যর্থ জীবন তোমাকে ছাড়া।
আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে সুখ তারা…
তোমার প্রেমের আবেশে আজ জীবন দিশেহারা।
হুহু..হু..হু..লা..লা .. লা.. লা..”
ঝিনুক আলাদা ঘুমাতে গেলনা আজ আর। আরশাদের পাশেই হাঁটু ভাঁজ করে শুয়ে পড়লো। গানটা শোনার পর বুকের ভিতর কেমন যেন তোলপাড় করছে। যা করা উচিত তার তা করতে ভীষণ লজ্জা লাগছে। তবে আজ আর বাধা দিবেনা। কারণ এটা আরশাদের অধিকার। কারো অধিকারের সম্পদ সে প্রাণ উজাড় করেই দখল করতে পারে।
স্কুলে থাকতে যে মানুষটাকে মাঝে মাঝে দূর থেকে দেখলেই বিরক্ত লাগতো। কিছুটা ভয় ও পেতো। আবার তাদের স্টাফের মেয়েও সে। তাই আজ কেমন করে নিজের সবটুকু উজাড় করে দিবে তাকে। ভাবতেই তার অনুভূতি শিরশির করে উঠছে।
এদিকে আরশাদ ও চায় ঝিনুক নিজেই তার সুখ দরিয়ায় তাকে একটু ডুবিয়ে দিক। কিন্তু ঝিনুক চোখ বন্ধ করে আছে। আরশাদ আর পারছেনা নিজেকে সামলাতে।
সংকোচের সূতো ছিঁড়ে ফেলে ঝিনুক.. বলে ডাক দিল ।
ঝিনুক উমম বলে বলল,
আমিও খুব স্যরি কোন ভুল করে থাকলে। ক্ষমা করে দিবেন।
তোমার কোলে একটু মাথা রাখি? অনুনয় করে বলল আরশাদ।
ঝিনুকের মৌনতায় আরশাদ প্রশ্রয় পেয়ে যায়। ঝিনুক বালিশে হেলান দিয়ে বসে। আরশাদ হাত পা ছড়িয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে ঝিনুকের কোলে। যেন বহুকাল ধরে কোন তপ্ত মরু প্রান্তর পাড়ি দিয়ে আসা এক ক্লান্ত পথিক।
তার চুলের ভিতর পাঁচ আঙ্গুলের অনুপ্রবেশ ঘটায় ঝিনুক। নাড়াচাড়া করতে থাকে। আরশাদ চোখ বুঁজে থাকে। ঝিনুক আরশাদের দুচোখের পাতায় নরম চুমু খায়। আরশাদ বেসামাল হয়ে উঠে। একটু পরেই নিজেকে সংযত করে নেয়। ঠিক করে, আগে ঝিনুকের সব আড়ষ্টতা, লজ্জা দূর হোক।
তারপরেই না হয় ঝিনুক নামের পুষ্পকলির সব নির্যাস শুষে নিব। করবো অমৃত মধুপান। অবসাদগ্রস্ত দেহমন নিয়ে আরশাদ ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যায়। ঝিনুক হেলানে থেকেই ঘুমিয়ে পড়ে।
ভোরে আরশাদ বের হওয়ার আগে ঝিনুককে বলে,
বিয়ের পর থেকে তোমাকে নিয়ে বের হওয়া হয়নি। বিকেলে ঘুরতে যাব দুজন। রেডি হয়ে থেকো। আমি আজ তাড়াতাড়ি ফিরবো।
ঝিনুক ঠোঁট কামড়ে মুচকি হেসে ফেলে। আরশাদ ঝিনুকের রক্তিম ঠোঁটের এপাশ থেকে ওপাশে আঙ্গুল বুলিয়ে চলে যায়।
ঝিনুক ও ঝটপট নাস্তা খেয়ে কলেজে চলে গেলো। তার ফাইনাল পরিক্ষা সন্নিকটে। হেলেদুলে ক্লাসে ঢুকলো।
জুলি তাকে দেখেই, কিরে আজ তোকে বেশ ঝরঝরে দেখাচ্ছে নারকেলের চিড়ার মতো?
পাশ থেকে রিমা বলল, জুলির তুলনাগুলো শুনলেই বিরক্ত লাগে। উদ্ভট বিশেষণে বিশেষায়িত করতে সিদ্ধহস্ত।
জুলি ভ্রু নাচিয়ে রিমাকে বলল,
তুই কি তাও পারিস পপকর্ণ?
এত পারার দরকার কি। আমি কি কারো মতো হুদাই প্রেম করে বেড়াই পড়াশোনা বাদ দিয়ে। হুহু!
প্রেম করা নাকি হুদাই কিছু। বুয়া বচন এটা। বলল হাসিব।
হ্যালো গাইস। দেখ উপমা কারে কয়। লুক এট মি বলেই হাসিব ঝিনুকের সামনে এসে হাত ধরলো,
‘” তোমাকে আজ লাগছে অধিক তাজা।
যেন সদ্য তুলে আনা কাঁচা শাকপাতা।
তুমি ছিলে এতদিন রোদে নুয়ে পড়া ঝিমানো শাক।
আজ দেখি তুমি হলে গজিয়ে উঠা দূর্বাঘাস। ”
সো ফানি বলে ঝিনুকসহ ক্লাসের অন্য বন্ধুরা হোহো করে হেসে উঠলো।
রিমা বলল,
কি বিরক্তিকর আর বাজে উপমা। তোর এই রম্য কাব্য শুনলে বড় কবিরা সব সুইসাইড করবে।
হাসিব বলল ফুটানি মার্কা কথা ছাড়। আমিতো কিছু একটা পারি। আর তুই?
এই তোরা থামবি। ওই দেখ ম্যাডাম আসছে। সবাই চুপ হয়ে গেল।
ক্লাসে একমাত্র মেরিড গার্ল ঝিনুক। তাই বন্ধুরা মাঝে মাঝেই নানান কথাচ্ছলে দুষ্টমি করতে ছাড়েনা তাকে। মাঝে মাঝে ঝিনুক থেকে চটপটি ফুসকা ও আদায় করে নেয় তারা। ঝিনুক ও খুশী মনে বন্ধুদের খাওয়ায়।
কলেজ থেকে ঝিনুক দ্রুত বাসায় চলে এলো আজ। দেখে সালেহাকে ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
সালেহা রেগে আছে। বলছে,
আমি আইজ দশ বছর ধরে আপনাদের বাসায় আছি। এই বাসাটারে আমার নিজের বাসা মনে হয়। এই বাসার সকল জিনিসপত্রে আমার মায়া লাইগা আছে। আর দুইদিনের ওই ছুটা বেডি আমার মুখের উপরে কথা কয়। আইজ আবার চ্যালেঞ্জ করে,
আমারে নাকি বিদায় কইরাই ছাড়বো। আপনাদের নজরে নাকি আমারে কালার করবো। তাই মানে মানে নিজ থেকেই কাইটা পড়ি ইজ্জতের সহিত।
জোবেদা বেগম বললেন, তুমি কোথাও যাবেনা সালেহা। ও কাল আসুক। একটা বিহিত হবেই।
ঝিনুক এগিয়ে গেল সালেহার কাছে। সালেহা আপা আমার কাছে আপনি এ পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ । আপনার হাতের নরম গরম আটার রুটি আর সবজি ভাজি আমার খুবই মজা লাগে।
সুতরাং আপনি আছেন আপনি থাকবেন এ বাসার একজন হয়ে। এত ঠুনকো বিষয় নিয়ে অভিমান করা ঠিক নয়। আমরাতো কেউ কিছু বলছিনা।
সালেহার হৃদয় জুড়িয়ে গেলো ঝিনুকের মধুর কথায়। মাথা নেড়ে বললো আচ্ছা ভাবিজান।
জামান খান ও এখন বাসায় এলেন। বললেন কিছু হয়েছে মনে হয় বাসায়?
আরিশা সালেহার বিষয় সব জানালো।
ও আচ্ছা বলে জামান খান ঝিনুককে ডাক দিলেন।
জ্বি বাবা বলেন।
জামান খান ঝিনুকের মাথায় হাত রেখে বললেন,
সেদিন তুমি বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে। আবার ডিভোর্স এর কথা তুললে। এসব যেন আমি আর কখনোই না শুনি মা। আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি তখন।
তোমাকে আমি পুত্রবধূ করে এনেছি সারাটি জনমের জন্য। এ সংসারে জামান খানের একমাত্র পুত্রবধু হয়ে তুমি আছো তুমিই রবে। তোমার আগে যদি আমার ছেলেসহ আমরা মরেও যাই। তবুও তুমি এ সংসার ছেড়ে যাবেনা কোথাও।
এক স্থানে বাস করতে গেলে কাছের মানুষদের সাথে অনেক কিছুই হতে পারে। মা মেয়ের মাঝেও ভুল বোঝাবুঝি হয়। আবার মা তার সন্তানকে বুকে টেনে নেয়।
ক্রোধের মুহুর্তে মানুষের ভিতর শয়তান প্রবেশ করে। তাদের মুখ দিয়ে অন্যায় কথা বলায়। এটা পরে স্বাভাবিক হলে ঠিক হয়ে যায়। আমি বাবা হয়ে বলছিনা। তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে বলছি। আরশাদ মানুষ হিসেবে যথেষ্ট ভালো।
আচ্ছা বাবা মনে থাকবে। ছলছল আঁখি নিয়ে ঝিনুক নিজের রুমে চলে গেলো। শশুরের বলা প্রতিটি কথা তার হৃদয়টাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলো। শ্রদ্ধায়, অনুরক্তে, ভালোবাসায় মাথা নুইয়ে এলো। এতো পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষগুলোকে ছেড়ে কোনদিন যাবনা আমি। জনমভর তাদের ছায়ায় মিশে রবো।
আঁটসাঁট কলেজের ড্রেসে অস্বস্তি লাগছে। টেবিলে কলেজের ব্যাগ রেখেই ওয়াশরুমে ঢুকলো। যেহেতু বের হবে তাই একবারে শাওয়ার ও নিয়ে নিলো। কিন্তু তাড়াহুড়োয় জামাকাপড় নিতে বেমালুম ভুলে গেল। ওয়াশরুমে থাকা বড় তাওয়েল বুকের উপর থেকে উরু পর্যন্ত পেঁচিয়ে নিলো। দরজা খুলে রুমে পা রাখতেই দেখে আরশাদ।
আঃ করে চিৎকার দিয়েই আবার ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিল। আরশাদ এক পলক তাকালো। অর্ধনগ্ন স্ত্রীকে দেখে সুখ নিলো গোপনে।
ওয়াশরুমের দরজার সামনে গিয়ে জোরে শুনিয়ে বলল,
ঝিনুক আমি রুমের বাইরে চলে যাচ্ছি। তুমি ড্রেস নিতে পারো এবার।
ঝিনুক চোরের মতো দরজা ফাঁক করে উঁকি দিয়ে দেখে আরশাদ নেই। বের হয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো। কাঠের আলমারি খুলে একবারেই নতুন একটা ড্রেস পরে নিলো। আরশাদ বারান্দার সাথে রুম লাগোয়া জানালার পর্দা ফাঁক করে ঝিনুকের সব দেখে নিলো।
ঝিনুক চুল ঝেড়ে বারান্দায় রোদে তাওয়েল দিতে গেলো। আরশাদকে দেখেই হকচকিয়ে গেলো। কপাল ভাঁজ করে আরশাদের দিকে চাইলো। মনে মনে উচ্চারণ করলো, গুন্ডা। নিলজ্জ পুরুষ কোথাকার।
আরশাদ অন্যদিকে চেয়ে চাপা হাসি হেসে দিলো।
পড়ন্ত বিকেলে দুজন ঘুরতে বেরিয়ে গেলো। ঝিনুক আবদার করলো নৌকায় করে ঘুরবে। যানবাহনের মধ্যে নৌকা,রিকশা, ট্রেন তার প্রিয়।
আরশাদ বলল,তাহলে নদীর ওপাড়ে যেতে হবে। তাই গাড়ি না নিয়ে একটা রিকসা নিলো। রিকসা গিয়ে থামলো বুড়িগঙ্গা নদীর একটি ঘাটে। এক ঘন্টার জন্য রিজার্ভ নিলো। দুজন উঠে বসলো।
মাঝি জিজ্ঞেস করলো,
মামা নৌকা কোন ঘাটে ভিড়ামু?
তোমার যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যাও। উচ্ছ্বাস ভরা কন্ঠে বলল আরশাদ।
মাঝি তার পান খাওয়া দাঁত বের করে হেসে উঠলো।
ঝিনুক বলল, এ কেমন ঘোরা? লক্ষ্য ঠিক হয়ে গেলে মানুষ লক্ষ্যহীন ভাবে ঘোরে?
আরশাদ চঞ্চল চোখে জবাব দিল,
এটা ত ঘোরা নয় দেবী। এটা মাতাল হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত। সুরা খেয়ে বেহুঁশ হয়ে যাব দুজনে।
শুনে ঝিনুক বাধভাঙা হাসিতে আছড়ে পড়ে। নৌকার দুলুনিতে দুজনের শরীর এক হয়। আরশাদ শিহরিত হয় গোপনে। আবেগের মাত্রা বেড়ে যায়।
ঝিনুককে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে গভীর চুমুতে ভরিয়ে দেবার কামনা থেকে নিজেকে মুক্ত করলেও অনুভুতির রেশ মিলিয়ে যায়না। গভীরতায় ঝিনুকের সবটুকু নির্যাস শুষে নিলো।
ঝিনুক টের পেয়ে, নিজের দুহাত দিয়ে আরশাদের একটি হাতকে চেপে ধরলো শক্ত করে। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছেনা।
চলবেঃ ১৭