#তুমি_আছো_মনের_গহীনে 💞
#পর্ব- ৬
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
চোখ খুলে, নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করে,মেহেভীন। হাতে কোন পরিচিত পুরুষের স্পর্শ পেতেই, মেহেভীন লাফিয়ে উঠে দেখে তার সুখ-দুঃখের একমাত্র সাথী তার প্রানপ্রিয় বন্ধুর আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আরিয়ানকে দেখে মেহেভীন নিজেকে আর নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা। কেঁদে উঠে তার বন্ধু আরিয়ানকে ঝাপটে ধরে। বোনের সমতুল্য প্রানপ্রিয় বেস্টফ্রেন্ডকে এইভাবে কাঁদতে দেখে,আরিয়ানের বুকেও ভিষন কষ্ট শুরু হয়। তার নিজের কোন বোন নেই। মেহেভীনকেই সেই জায়গায়টুকু সে দিয়েছিলো, সবসময় মেহেভীনের মুখশ্রিতে অদ্ভুদ এক হাঁসি ঝুলে থাকতো।আজ সেই মুখশ্রীতে কান্নার আভাস। যা সহজে মেনে নিতে পারছে না আরিয়ান। আরিয়ানের সাথে মেহেভীনের পরিচয় হয় চট্টগ্রামে। মেহেভীন দুবছরের জন্যে চট্টগ্রামে শিফট হয়ে গিয়েছিলো। চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য কলেজে সে চাঞ্চ পেয়েছিলো। খালাকে ছাড়াই একা সেখানে একটি হোস্টেলে থাকতে তার কিছুটা প্রব্লেম হয়েছিলো। কলেজের প্রথম দিনে সে খুব তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে যেতে নিলে, কারো গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে তার হাতে থাকা সব বই পড়ে যায়।
মেহেভীনের সাথে ধাক্কা লেগে যাওয়া গাড়িটির মালিক গাড়ি থেকে বেড়িয়ে মেহেভীন কোনরকম সরি বলে । মেহেভীন পায়ে তেমন ব্যাথা না পেলেও,হাতে বেশ চট পেয়েছে। মেহেভীন তার সামনে থাকা লোকটার দিকে তাঁকিয়ে দেখে, একজন লম্বাটে ছেলে। দেখতে বেশ সুদর্শন।উজ্জ্বল শ্যামবর্নের ছেলেটির গাঁয়ে ডক্টরের এপ্রোন ছিলো।
গলায় ঝুলছিলো, একটি মেডিকেল কলেজের আইডি কার্ড। দেখেই মনে হচ্ছিলো, মেডিকেলের স্টুডেন্ট। মেহেভীন কিছু বলবে, তার আগেই ছেলেটি তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
‘হ্যালো আমি আরিয়ান হাসান তালুকদার। আপনি আমাকে বকাবকি দেওয়া শুরু করবেন, তার আগে আমার ইন্ট্রো টা দিয়ে নেই।
আমি আমাদের কলেজের ক্রাশ বয়। জানেন মেয়েরা ঘন ঘন ক্রাশ খায়। আমি আবার বকা খেতে অভ্যস্ত নই।তাই আমাকে বকা দিবেন না। ভূল মানুষ মাত্র ই হয়। আফটার অল আমিও মানুষ। বুঝেছেন নাকি ব্যাপারটা? আচ্ছা যাই হোক আপনি উঠুন।’
আরিয়ান মেহেভীনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো।মেহেভীন থম মেরে রইলো। ছেলেটাকে তাকে কিছু বলার সুযোগ ই দিলো না। তার আগেই নিজের রেডিও শুরু করে দিলো। মেহেভীন আরিয়ানের হাত ঝাটি মেরে সরিয়ে দিয়ে, নিজে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
‘নো থ্যাংকস। ‘
মেহেভীন ব্যাগটা নিয়ে উল্টো পথে হাটা ধরলে, পিছন থেকে আরিয়ান মেহেভীনের কাছে এসে বলে,
‘এইযে ম্যাডাম রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। ডোন্ট বি প্যানিকড। ‘
‘দেখুন এমনিতেও আপনার জন্যে আজকে আমার বড্ড লেট হয়ে গেছে। তার মধ্যে আপনি আমাকে আরো লেট করিয়ে দিচ্ছেন। সরুন বলছি। ‘
‘লিটেল সিস ডোন্ট বি হাইপার। আপনাকে দেখেই মনে হচ্ছে আপনি নতুন এসেছেন চট্টগ্রামে। কাউকে তেমন একটা চিনেন ও না। আচ্ছা নো প্রব্লেম আপনি আমার গাড়িতে উঠুন আমি আপনাকে পৌঁছে দিবো।’
মেহেভীন নরম সুরে বলে,
‘আমি অপরিচিত কারো গাড়িতে উঠি না। ‘
আরিয়ান হেঁসে বলে,
‘লিটেল সিস জন্মের পর থেকে আমাদের আশে-পাশে মানুষগুলোও কিন্তু আমাদের কাছে কিছুটা অপরিচিত ছিলো। তারপর আস্তে ধীরে তারা আমাদের আপনজন হয়ে উঠে।আমরা কেউ আগে থেকে পরিচিত থাকি না। অপরিচত মানুষেরাই একসময় পরম পরিচিত হয়ে উঠে। আমার না কোন বোন নেই। অন্তত পক্ষে বড় ভাই হিসেবে আপনি আমার গাড়িটা উঠতে পারেন। আমি কিন্তু অতোটা খারাপ নই সিস। ‘
আরিয়ানের বলা কথাটি কেন যেন মেহেভীনের বেশ ভালো লাগলো। না চাইতেও, সে আরিয়ানের গাড়িতে উঠেছিলো। সারা রাস্তা জুড়ে আরিয়ান একপ্রকার গল্প জুড়েই দিয়েছিলো মেহেভীনের সাথে। যেন একমাত্র এই মেয়েটাকেই সে সব বলতে পারে।
মেহেভীন ও সব শুনে যাচ্ছিলো। ছেলেটা বেশ মিশুকে। অল্প সময়েই সবাইকে আপন করে নিতে পারে। আরিয়ানের পরিবার বর্গ ঢাকায় থাকে। আরিয়ানের বাবাও একজন স্বনামধন্য ডক্টর। আরিয়ান শুধুমাত্র ডাক্তারি পড়তে চট্টগ্রামে এসেছে।
এইভাবে দিনের পর দিন মেহেভীন এবং আরিয়ান আরো ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলো। বলতে গেলে বেস্ট ফ্রেন্ড। আরিয়ান মেহেভীন একপ্রকার তার বোনের মতো আগলে রাখতো। মেহেভীনের কলেজে পড়া শেষে, ঢাকার ভার্সিটি পড়তে চলে গেলে আরিয়ানের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ আবারোও প্রায় ১বছর পর আরিয়ানের সাথে তার দেখা। আজকে মেহেভীন একপ্রকার ভাগ্যবশত দেখা হয়ে যায় আরিয়ানের সাথে। মেহেভীনের দিকে এগিয়ে আসা গাড়িটি ছিলো আরিয়ানের। গাড়িটা এতো কাছে আসায়, খানিক্টা ভয়েই মেহেভীন অজ্ঞান হয়ে যায়। গাড়ি থেকে আরিয়ান নেমে এসে মেহেভীনকে দেখে,চমকে উঠে। সে আর কিছু না ভেবে মেহেভীনকে তার হসপিটালে নিয়ে আসে। যেখানে তার চেম্বার রয়েছে।
আরিয়ান এইবার মেহেভীনকে কোনরকম সামলিয়ে, বলে উঠে,
‘মেহু তোর হঠাৎ এইরকম অবস্হা কেন? প্রায় একবছর ধরে তোর সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই। তোর ফেসবুক আইডিটাও ডিয়েক্টিভ হয়ে রয়েছে। এইভাবে রাস্তায় কি করছিলি তুই? ‘
‘এই অনেক বছর অনেক কিছুই হয়ে গেছে রে আরিয়ান।’
‘কি হয়েছে?
‘আরিয়ান আমি প্রেগনেন্ট। ‘
নির্পিপ্ত কন্ঠে মেহেভীন বলে উঠে।
আরিয়ান উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
‘ওয়াট?’
____________
এদিকে,
অভ্র বাসররাতে এসে দেখে, মায়রা ঘরে নেই। হয়তো ওয়াশরুমে গিয়েছে। অভ্র আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
নিজের গাঁয়ে পাঞ্জাবিটা খুলতে শুরু করে দেয়। আজ সে মায়রাকে পেয়েছে, ঠিকই কিন্তু বুকে অদ্ভুদ এক শূন্যতা কাজ করছে অভ্রের। সেই শুন্যের উৎস কি মেহেভীন নিজেই? অভ্রের মাথাটা ব্যাথা করছে প্রচন্ড। মেহেভীন কোথায় গেলো? এই ঢাকা শহরে মেয়েটার তো কেউ নেই৷ যদি মেহেভীনের কোন বিপদ হয়।নানা বাজে চিন্তা অভ্রের মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে। অভ্রের ভাবনার মাঝেই, তোয়ালে দিয়ে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে মায়রা নামক রমনী রুমে প্রবেশ করে। যাকে দেখে কিছুক্ষন এর জন্যে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে যুবক। রমনীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত অভ্র চোখ বোলায়। ছোট্ট একটা মিনি স্কাট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে মায়রা। অভ্র ঘোর লাগা চাহনীতে মায়রার দিকে এগিয়ে আসে। এই মূহুর্তে মায়রার রুপের মোহে পড়ে, সে মেহেভীন নামক চ্যাপ্টারটাকে বন্ধ করে রাখে।
অভ্র মায়রার ঠোটে আলতো করে ছুঁয়ে বলে,
‘কিছু দেখতে পারছো ডার্লিং?’
মায়রা অভ্রের কাঁধে হাত রেখে ঠোট টিপি হেঁসে বলে,
‘হু দেখতে পারছি তো। প্রখর নেশা। ‘
‘তোমাকে ঘিরে রয়েছে সেই নেশা। তোমাকে কাছে পাওয়ার। ‘
ফিসফিস করে কথাটি বলেই, অভ্র মায়রাকে কোলে করে এগিয়ে নিয়ে যায় বিছানার দিকে৷ মায়রা অভ্রকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। সকল আলো আস্তে আস্তে নিভে যায়।
__________
মেহেভীন সবকিছুই খুলে বলেছে কী করে সে ভালোবাসার নামে প্রতারিত হয়েছে। কীভাবে মায়ের মতো খালাকে হুট করে পলকের মধ্যে বদলে যেতে দেখেছে। যদিও মেহেভীন তার প্রাক্তন স্বামীর নাম একবারও উচ্চারণ করেনি। মেহেভীন ইচ্ছে করেই, অভ্রের নামটি প্রকাশ করেনি আরিয়ানের কাছে। সে চায় না তার প্রাক্তন স্বামীকে কেউ চিনুক। অভ্রকে আর কিছুতেই তার জীবনে জড়াতে চায় না সে।
মেহেভীন শক্ত গলায় বললো,
‘পৃথিবীতে সব থেকে ভয়ংকর কিছু যদি হয়। তা হলো হুট করে খুব কাছের আপন মানুষগুলোর বদলে যাওয়া রুপ। বিশ্বাস করবি না তুই আরিয়ান আমি ঠিক কোন পরিস্হিতিতে দাঁড়িয়ে আছি। মায়ের মতো খালার এমন স্বার্থপরতা আমার মধ্যে থাকা সকল আত্ববিশ্বাসকে নিমিষেই শেষ করে দিয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি ওই বাড়িতে আমার সন্তান কিছুতেই সেফ না। ‘
আরিয়ান চুপচাপ শুনতে লাগলো, মেহেভীন এর কথাগুলো। অতঃপর বললো,
‘ভূল মানুষকে বার বার বিশ্বাস করাটাও আমাদের নিজেদের একটা দোষ। তুই ভালোবাসার ক্ষেত্রে ভূল মানুষকে বেঁছে ছিলি। এমনকি সাহায্য পাওয়ার আশায়ও ভূল মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছিলি। আচ্ছা সেসব বাদ দেই, চল এইবার তুই আমার সাথে।’
‘কোথায়?’
‘কোথায় আবার আমার বাসায়। আমি এখন আবারো ঢাকায় শিফট করে গিয়েছি। তুই এখন আমার বাসায় যাবি।’
‘দেখ আরিয়ান আমি তোর বাসায় গিয়ে, তোর ঝামালা বাড়াতে চাইনা। আমি ঠিক কোথাও চলে যাবো।তুই চিন্তা করিস না। ‘
কথাটি বলে মেহেভীন উঠতে নিলে, আরিয়ান ক্ষিপ্ত গলায় বললো,
‘একটা থাপ্পড় খাবি তুই। নিজের অবস্হা দেখেছিস?
তোর প্রেশার একেবারেই লো। আমি জানি ঢাকায় তোর তেমন কেউ নেই। তার মধ্যে তুই এখন একা নস। তোর গর্ভেও একজন সন্তান বেড়ে উঠছে তারও খেয়াল রাখতে হবে। একজন ডক্টর হিসেবে আমি কিছুতেই তা হতে দিবো না।’
‘কিন্তু…….
‘কোন কিন্তু নয়। দেখ মিহু আমি তোকে সবসময় আমার নিজের বোনের জায়গাটুকু দিয়েছি। আমাকে একটু বিশ্বাস করে দেখ। আমি অনন্ত তোকে ঠকাবো না।’
_______
একটি যুবক বিশাল ঘরের এক কোনে বসে আছে। তার মাথায় নানা চিন্তা ঘুড়ছে। হুট করেই
ছেলেটি একটি পেন্সিল ও আর্ট পেপার নিয়ে বসে পড়লো। অতঃপর ছেলেটি খুব নিঁখুত ভাবে তার প্রেয়সীর ছবিটা আর্ট করে ফেলল। তারপর গিটারটা হাতে নিয়ে ছবিটির দিকে তাঁকিয়ে গাইতে লাগলো,
ছন্নছাড়া মনে, এসেছ গোপনে
মুখে বলেছি যে, নিয়ো না তো টেনে
অজানাকে ভুলে সাজা খেটে চলি
জানি শোধরানো হবে না কখনো
তবু গভীরে, সে থাকে গভীরে
যার আঁকা ছবি রে, সে ছিল গভীরে
গভীরে গভীরে, সে থাকে গভীরে
যার আঁকা ছবি রে, সে ছিল গভীরে
সে পাশে নাই, কী জানি নাই
সে পাশে নাই, কী জানি নাই
ছেলেটির গানের মধ্যে অদ্ভুদ ভালোবাসা ছিলো তার প্রেয়সীর জন্যে। হ্যা তার ভালোবাসাটা অদ্ভুটই বটে। হঠাৎ গানটি থামিয়ে দিয়ে, নিজের আঁকা ছবিটাতে হাত বুলিয়ে বললো,
‘হাজারো জনের ভীরেও তোমাকে আমি ঠিক খুঁজে বের করবো। তোমাকে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত খুঁজে বেড়াবো। তোমাকে যে অনেককিছু বলার আছে প্রেয়সী। ভালোবাসি। ‘
ছেলেটির কথার মাঝেই, তার ফোনে টুংটাং শব্দ শুরু হলো। ছেলেটি ফোনটা হাতে নিয়ে, এমন কিছু দেখলো, যা দেখেই ছেলেটির মুখে অজান্তেই হাঁসি ফুটে উঠলো।
_________
বিশাল বড় দুতালা বিশিষ্ট ডুব্লেক্স বাড়ির সামনে আরিয়ান তার গাড়িটি রাখে। গাড়ি থেকে প্রথমে আরিয়ান, তারপর মেহেভীন নামে। বাড়িটা দেখে বেশ বিলাসবহুল মনে হচ্ছে। বাড়ির সামনেই বড় বড় করে লেখা, ‘তালুকদার বাড়ি। ‘ আরিয়ানের জেদের সাথে একপ্রকার না পেরেই মেহেভীন আসতে বাধ্য হয়েছে। যদিও মেহেভীন ঠিক করেছে, সকাল হলেই সে চলে যাবে।
বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই, আরিয়ানদের বাড়ির পুরনো কাজের মহিলা রাহেলা হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করে বলে,
‘আরিয়ান ভাইজান আইছেন? এহানে তো মেলা কান্ড ঘটছে। আম্মাজান আবারো ওই ডাইনি রিনারে লইয়া ওইদিকের মাঝারের পীরের কাছে গেছে, পানি পড়া আনতে। বড় ভাইজানরে নাকি অইসব পানি পড়া দিয়া দেশে ফিরাইয়া আনবো।’
আরিয়ানের মাথায় হাত। তার মায়ের এইসব নিত্য-নতুন কাহিনী সে আর নিতে পারছে না। মেহেভীনের মাথার উপর দিয়ে সব যাচ্ছে। যা ভালো করেই টের পাচ্ছে আরিয়ান। তাই সে বললো,
‘আসলে আমার মা বড্ড কুসংস্কার জাতীয় জিনিসে বিশ্বাস করে। মায়ের বিশ্বাস অইসব মাঝারে থাকা পীরদের কিসব পানি পড়াতে নাকি ভাইয়া দেশে ফিরে আসবে আর রিনাকে বিয়ে করবে। আসলে আমার ভাইয়া এখন কিছুতেই বিয়ে করতে চায় না। কিন্তু মা তো এক জিদ্দি। আচ্ছা তুই থাক। আমি দেখি মা কোথায়।’
আরিয়ান আবারো দরজা দিয়ে, বেড়িয়ে যায় তার মায়ের উদ্দেশ্যে। মেহেভীনের কাছে অল্প অল্প স্পষ্ট হলেও, কিছু কিছু বিষয় তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। থাক আরিয়ান ফিরলে না হয় জেনে নিবে।
মেহেভীন ড্রইং রুমে প্রবেশ করতেই, তার চোখ পড়ে যায়। ছবির বিশাল ফ্রেমে থাকা এক যুবকের দিকে।
ফরমাল ড্রেসে, দাঁড়িয়ে আছে ঠোটে হাঁসি ঝুলিয়ে। যাকে বলে আলতো হাঁসি।
আরিয়ানের মতোই বেশ লম্বাটে ছেলে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে,ছেলেটি তার ফিটনেস নিয়ে যথেষ্ট সতেচন।
হলুদ ফর্সা গড়নের মুখে হাল্কা চাপ দাড়ি বিরাজমান। প্রখর দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে আনমনে কারো দিকে। সেই দৃষ্টিতে ছিলো, অত্যন্ত মুগ্ধকর। কারো চাহনীতে বুঝি এতোটা মুগ্ধতা থাকে? জানেনা মেহেভীন।
কিন্তু যুবকটি কার দিকে এতো মুগ্ধ চাহনীতে তাঁকিয়ে আছে? মনে এক প্রশ্ন জাগলো মেহেভীন।
মেহেভীনকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে, রাহেলা বেগম এসে বললেন,
‘আফা আপনে এতো কি দেখতাছেন?’
‘ছবিতে থাকা ছেলেটি কে?’
‘ওহ। উনি হইলো আমাগো বড় ভাইজান। যারে লইয়া এতো কান্ড। এই বাড়ির বড় ছেলে আরহাম হাসান তালুকদার। ‘
মেহেভীন আনমনে বললো,
‘আরহাম হাসান তালুকদার। ‘
চলবে…..কী?
[কেমন লাগলো? ঝটকা লাগলো একটু?😋। আইচ্ছা অনেক বড় করে দিছি কিন্তু।]