তুমি থেকে যাও আমি রেখে দিব পর্ব -২১+২২

#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_২১
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

পরের দিন সকাল বেলা,সবাই উঠে,যে যার মতো কাজে লেগে পড়লো।রাত পোহালে-ই তিতলির এঙ্গেজমেন্ট।তিতলি এখনো কিছু-ই জানে না।সে বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবে-ই নিয়েছে।এর আগে’ও এমন হয়েছে।নতুন কিছু না।কোনো এক অজানা কারনে তিতলি’র বিয়ে বারবার ভেঙে যায়।কেউ বিয়ে ভাঙার কারন বুঝতে পারে না।তিতলি ঘুৃম থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে,আসতে-ই চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেলো।সত্যি কি তার বিয়ে হয়ে, যাবে না-কি।এটা হতে পারে না।সে,তো অন্য কাউকে ভালোবাসে।একজন-কে ভালোবেসে অন্য কারো সাথে সংসার করা কিছু-ই তিতলি’র পক্ষে সম্ভব না।তিতলি দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।নিজের ফোন নিয়ে এসে ড্রয়িং রুমে বসলো।অধরা ঘুৃম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসছিলো।তখনি বীর চৌধুরী বাড়িতে প্রবেশ করে।বীরকে দেখে তিতলির মুখে হাসি ফুটে উঠলো।অধরা কে দেখে বীরের চোখ গোল গোল হয়ে গেলো।কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে।কোথায় জানি দেখেছে বীর অধরা-কে।কিন্তু মনে করতে পারছে না।তিতলি বীরকে টেনে নিয়ে বাসার পেছনে চলে গেলো।ঘটনা এত দ্রুত ঘটায় বীর চুপ করে রইলো।

–তুমি জানো বীর আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।

–তো আমি কি করবো ম্যাডাম।

–তুমি কি করবে মানে,আমি তোমাকে ভালোবাসি বীর।তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।

–দেখুন ম্যাডাম আপনি আমাকে ভালোবাসেন।আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না।সমস্যা টা আপনার আমার না।

–বীর।

–সরি ম্যাডাম।

–বিশ্বাস করো আমি তোমাকে ছাড়া কারো কথা ভাবতে পারি না।আমার বুকের মাঝখানে ব্যাথা করে বীর।

–আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি ম্যাডাম।

–কি বললে,কে সে,তাকে আমি শেষ করে দিব।একটা কথা মনে রেখো।আমি যদি তোমাকে না পাই।তাহলে কেউ তোমাকে পাবে না।

–আপনার হলে কি সবাই পাবে।

–বীর তুমি ভুলে যাচ্ছো।তুমি কার সাথে কথা বলছো।

–সরি ম্যাডাম।

–বিয়ে কিন্তু তোমার আমাকে-ই করতে হবে।

–এ জীবন থাকতে না।

–তোমাকে আমি শেষ করে দিব।

–হাহা হাঁসালেন ম্যাডাম।মৃত্যু হাতে নিয়ে সবমসময় আমি বীর ঘুরি।আর আমাকেই আপনি মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছেন।দিন শেষ করে,আপনা’কে কেউ ধরে রাখে নাই।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে-ই বলল বীর।

–বীর তুমি একটু বোঝার চেষ্টা করো।পাঁচ বছর ধরে তোমাকে ভালোবেসে আসছি।তোমাকে নিয়ে কত স্বপ্ন,শখ,ইচ্ছে আমার মনের মধ্যে তৈরি হয়েছে।তুমি যদি যানতে,তাহলে আমাকে বুকে জড়িয়ে নিতে।

–আগে অন্যের স্বপ্ন ভাঙা বন্ধ করুন ম্যাডাম।কি মনে করেছেন আমি কিছু জানি না।আমি সবই জানি।শুধু মুখ বুঁজে সব সয্য করছি তাই।সাইকো কুইন যেদিন আপনাকে ধরবে।সেদিন আপনি প্রাণ হাতে নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবেন না।বলে-ই বীর চলে গেলো।

–আমি এতটা-ই খারাপ বীর।আমাকে কি একটু ভালোবাসা যায় না।তোমার ভালোবাসা দিয়ে আমাকে তোমার মনের মতো করে নাও না বীর।একা একা কথা গুলো বলছিলো তিতলি।

অধরা খেয়ে-ই বাহিরের দিকে আসছিলো।তখনি বীরের সাথে দেখে।অধরা’র চোখে চোখ পড়তেই চিনতে আর বাকি রইলো না এটা কে।কেনো তার এত চেনা চেনা লাগছিলো।

–তুমি,না মানে আপনি।

–সেই কৈফিয়ত আপনা’কে দিতে হবে।আপনাকে নিশ্চয় ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিয়ে আসা হয় নাই।যে,কাজে আসছেন।গিয়ে নিজের কাজ করুন।বীর এক মুহূর্ত দাড়ালো না।গিয়ে নিজের কাজ শুরু করে দিলো।

–কি রাগী মেয়ে রে বাবা।একটা কথা বলা যায় না।ছ্যাঁত করে উঠে।ও মেয়ের সাথে আর কখনো কথা বলতে যাব না।আমাকে চিনে।আমি বীর চাইলে-ই,

–আমার নাম অধরা।চৌধুরী বাড়ির ছোট বউ।চাইলে-ই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারি।রাগি দৃষ্টিতে বীরের দিকে তাকিয়ে আছে অধরা।

–সরি ম্যাডাম আমি আর একটা কথাও বলবো না।কিন্তু আপনি বিয়ে করেছেন।

–কেনো,না করার কথা ছিলো।

–সরি মাফ করবেন।আমাকে কাজ থেকে তাড়িয়ে দিবেন না।

উপরে থেকে সবকিছু-ই দেখছিলো আহান।অন্য ছেলের সাথে অধরাকে কথা বলতে দেখে ভেতরে ভেতরে খারাপ লাগা কাজ করছে।যা,আগে কখনো করে নাই।আচ্ছা মনের মধ্যে এমন হচ্ছে কেনো।আহান নিচে নেমে এসে,অধরা’র হাত ধরে সাইডে টেনে নিয়ে আসলো।

–এই আপনার সমস্যা টা কি বলুন তো।কোথায় কোথায় হাত ধরে টানাটানি করেন কেনো।

–তুমি ঐ ছেলের সাথে কি কথা বলছিলে।

–তাতে আপনার সমস্যা কি।সব কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে।

–আমার সমস্যা কি মানে।আমি তোমার স্বামী।সব কৈফিয়ত দিতে হবে আমাকে।

–কয়দিনের স্বামী।কয়দিন পরে তো ডিভোর্স দিয়েই দিব।

–অধরা।

–চিৎকার করছেন কেনো,আমার কানে কোনো সমস্যা নেই।আস্তে করে বললে-ই শুনতে পাই।এত জোরে বলার দরকার নেই।

–ডিভোর্সের কথা আর কোনোদিন মুখে’ও আনবে না।

–হাজার বার বলবো।

–তোমার মুখ আমি ভেঙে দিব।

–আপনি বলবেন সমস্যা নেই।আমি বললেই আমার মুখ ভেঙে দিবেন।

–সরি।

–সরি কেনো।

–আজ আমার বন্ধুর বিয়ে হয়েছে।আমাকে সাতদিন ধরে বলছে।যদি না যাই,মান সন্মান আর কিছু থাকবে না।যা-ও গিয়ে রেডি হয়ে না-ও।

–কিন্তু কালকে আপুর..

–আমি জানি।বেয়াদবে’র মতো মুখে মুখে কথা বলো না।যাও রেডি হয়ে আসো।

–কোথায় কোথায় একদম আমাকে বেয়াদব বলবেন না।বলে-ই অধরা চলে গেলো।আহান হালকা হাসলো।অধরা যদি সত্যি সত্যি তাকে ছেড়ে দিয়ে ঐ ছেলেকে বিয়ে করে।যতক্ষণ এই ছেলে বাসায় আছে,অধরা-কে বাসায়-ই নিয়ে আসবো না।দরকার পড়লে কাল সকালে আসবো।বলতে বলতে-ই অধরা নিচে নেমে আসলো।

–তোমার কি আর কোনো জামাকাপড় নেই।ফকিন্নির মতো সারাক্ষণ এই এক জিন্স আর কালো টপ টা পড়ো।

–এটা আমার খুব পছন্দের তাই পড়ি।আপনার যদি সমস্যা হয়।তাহলে আপনি একা-ই চলে যান।আমি যাব না।

–সবাই বলবে।আহান তার বউকে জামাকাপড় কিনে দেয় না।তাই একজামা প্রতিদিন পড়ে।আমার কোনো সমস্যা নেই।বললে তোমাকে-ই সবাই বলবে ফকিন্নি।

–হয় আমি ফকিন্নি।এখন চলেন।

–মোটেও না।তুমি হলে আমার রাজরানি।আমার রাজ্যের রানী তুমি।

–ভূতে ধরলো নাকি আপনাকে।

–না একটা কিউট পেতনী ধরেছে।

–আমি যাব না।আপনি কিউট পেতনীর সাথে-ই যান।

–এই তো যাচ্ছি।বলেই অধরা হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো।

সারাদিন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বিকেলের দিকে আহান তার বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গেলো।বিয়ে বাড়িতে গিয়ে অধরা অবাক হয়ে গেলো।বউয়ের কাছে গিয়ে বলল।

–আরে প্রিয়া তুই।বাবা বিয়ে করেছিস।আমাদের একটা বার জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না।

ইমন আহান’কে দেখে জড়িয়ে ধরলো।

–ভাবি নাকি ভাই।বলল ইমন।

–হ্যাঁ তোর ভাবি।

–মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর দেখতে ভাবি।

–শালা নিজের বউয়ে’র,দিকে নজর দে।অন্যের বউয়ের এত প্রশংসা করতে হবে না।

–বাবা আহান তুই রেগে যাচ্ছিস।আমি তো মজা করছি।

–আমি তোর বউ নিয়ে মজা করতে গেছি।

–একদম আমার বউ টানবি না শালা।

–তাহলে তুই আমার বউ টানলি কেনো।

–আচ্ছা বাবা সরি।এখনো দু’জন ঝগড়া করবো।কতদিন পরে দেখা হলো।এখনো আগের মতো আছিস।

–তোর বিয়ে আজ হলো সন্ধ্যা বেলা বউ নিয়ে বাহিরে বসে আছিস কেনো।

–তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।আমার বিয়ে কাল হয়ে গেছে।আজকে বউভাতের অনুষ্ঠান করছি।প্রিয়া আমার চাচাতো বোন।পাশাপাশি আমাদের বাসা।তাই আর ওদের বাসায় যেতে হয় নাই।আমি যেতে দেই নাই।বলতে পারিস।

–অধরা তুই এখানে,আমি তো ভাবতেই পারছি না।কবে আসলি শহরে।আমার সাথে দেখা করিস নাই কেনো।

–তুই খোঁজ নিয়েছিলি।এখন তো আমরা পর হয়ে গেছি।তা কাকে বিয়ে করা হলো।তোর ইমন ভাইয়াকেই নাকি।

–হ্যাঁ,আমি এক কথার মেয়ে।আমি ইমন ভাইয়াকেই বিয়ে করছি।প্রিয় মানুষকে নিজের করে পাওয়ার মতো আনন্দ মনে হয় পৃথিবীতে নেই।জানিস অধরা আমি খুব খুশি।আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে গেছি।আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করি।তোরা তো জানতি ইমন ভাইয়ার জন্য আমি কতটা পাগল ছিলাম।বাবা মা ইমন ভাইয়ার থেকে আলাদা করার জন্য গ্রামে পাঠিয়ে দিলো।দেখ আমি ইমন ভাইয়াকে ঠিক পেয়ে গেলাম।

–ধৈর্য হারাতে হয় না রে বোন।ধৈর্য ধরলে সব হয়।আমি’ও খুব খুশি হয়েছি।

–অধরা তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে।আজ তোকে কিছুতেই যেতে দিব না।যদি আজ চলে যাস।তাহলে কোনোদিন তোর সাথে কথা বলবো না।তুই কার সাথে এসেছিস।

–তুমি ভাবির সাথে এত কি কথা বলছো।বলল ইমন।

–আরে ভাইয়া এটা অধরা।তোমাকে আমি অধরার কথা বলেছিলাম না।

–বলো কি এই সেই অধরা ভাবি।জানো ভাবি আমার বউ তুমি বলতে পাগল।ওর গল্প মানেই তুমি।তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো।তোমাকে দেখা হয়ে গেলো।

–ভাইয়া তুমি ওকে ভাবি বলছো কেনো।

–আগে তুমি আমাকে ভাইয়া ডাকা ছাড়ো।সবাই জানলে হাসাহাসি করবে।অধরা ভাবি হচ্ছে আহানের বউ।তাই ওকে ভাবি ডাকছি।বলল ইমন।

–অধরা তুই বিয়ে করেছিস।শহরে থাকিস ভালো হয়েছে।এবার দু’জন দেখা করতে পারবো।

–আহান আজকে কিছুতে-ই তোদের যেতে দিব না।বলল ইমন।

রাতে সবাই’কে খেতে দাওয়া হয়েছে।আহান অধরা’ও খেয়ে নিলো।রাতে ঘুমোনোর সময় বাঁধল ঝামেলা।পুরো বাসায় আত্নীয়-স্বজন দিয়ে ভরা।একটা রুম’ও ফাঁকা নেই।কম বেশি সবগুলো রুমে-ই মানুষ।আহান আর অধরা থাকবে কোথায়।ইমন বেশ লজ্জায় পরে গেলো।শেষে না পেরে বলল তোরা আমার রুমে থাকবি।এই শুনে কোথায় আহান নারাজ।

–চিলেকোঠার ঘর ছাড়া কোনো রুম ফাঁকা নেই।ছাঁদে আমার কাজিনরা আড্ডা দিচ্ছে।

–সমস্যা নেই।তুই চিলেকোঠার ঘরটা একটু পরিষ্কার করিয়ে দে।আমরা আজকের রাতটা ওখানেই থাকবো।বলল আহান।

–আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।চলুন বাসায় যাব।অন্য কোনোদিন এসে থেকে যাব।শুধু শুধু ভাইয়াকে বিরক্ত করছেন।

–ভাবি রাগ করবেন না প্লিজ।একটা রাতে-ই তো ব্যাপার।ইমনের অনুরোধ দেখে অধরা আর না করলো না।চিলেকোঠার ঘর পরিষ্কার করে দিলে আহান আর অধরা রুমে গেলো।ছোট একটা খাট আর একটা বালিশ।এতটুকু সময়ের মধ্যে বেশ ভালোই পরিষ্কার করে দিয়েছে রুম টা।ইমন আসলো এসে লজ্জিত হয়ে বলল।

–আমার জন্য তোদের কোথায় ঘুমোতে হচ্ছে।

–ধুর শালা তুই আর আমি আলাদা নাকি।সমস্যা নেই মানিয়ে নিতে পারবো।তুই এখন তোর বউয়ের কাছে যা।

ইমন হাসতে হাসতে চলে গেলো।

–সমস্যা কি আপনার।এই ছ্যাঁচরার মতো এখানে থেকে গেলেন কেনো।দেখলেন তো রুম নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।

–তোমার সমস্যা কি।বন্ধুর বাসায় এভাবে থাকা যায়।আমরা কিছু মনে করি না।তুমি এত বাসায় যাওয়ার জন্য পাগল হয়েছো কেনো।(আমি বুঝি না মনে করেছো।তুমি ঐ ছেলের সাথে কথা বলার জন্য,বাসায় যাবে।আমি থাকতে কারো ছায়া তোমার ওপরে পড়তে দিব না।তুমি শুধু আমার)

–বেশি কিছু না।বাসায় আমার দশ-বারোটা বাচ্চা আছে।তাদের জন্য চিন্তা হচ্ছে আর কি।

–কিন্তু আমি এখনো কিছু করলাম-ই না।দশ-বারোটা বাচ্চা আসলো কোথায় থেকে।

অধরা চোখ বড় বড় করে আহানের দিকে তাকালো।

–দিন দিন আপনি এত নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছেন কেনো।মুখে দেখি কিছু-ই আটকায় না।

–তুমি আমাকে বানাচ্ছো।তাই হচ্ছি।

–আপনার সাথে কথা বলাই বৃথা।বলে-ই খাটের উপরে গিয়ে বসে পড়ল।এতটুকু খাটে দু’জন ঘুমানো যায়।বালিশ তা-ও আবার একটা।আমরা গরীব হতে পারি কিন্তু আমাদের আলমারিতে তিন-চারটা বালিশ তোলা থাকতো।ধুর আমি এসব কি ভাবছি।এটা তো বিয়ে বাড়ি এমনটা হবারই কথা।অধরা শুইয়ে যাবে।তখনি আহান এসে বালিশটা নিয়ে শুয়ে পড়ে।

–এটা কি করলেন।এখন আমি কোথায় ঘুমাবো।

–কেনো আমার বুকে।আমার বুকটা কি তোমার চোখে পড়ছে না।

–আপনার সমস্যা কি বলেন তো।আপনার হাবভাব একদম ভালো লাগছে না।দরকার পড়লে আমি সারারাত জেগে পার করে দিব।তবুও এমন গাঘেষাঁঘেষি করে ঘুমাবো না।

–তোমার ইচ্ছে,আমি ঘুমালাম।বলে-ই আহান চোখ বন্ধ করলো।

–আচ্ছা স্বার্থপর মানুষ তো আপনি।এখন আমি ঘুমাবো কি করে।সারারাত জেগে বসে থাকতে পারবো না।বলে-ই চোখ বন্ধ করে আহানের বুকে শুইয়ে পড়ল।একটা পা আহানের গায়ের উপরে তুলে দিলো।খাট একটু বেশি ছোটা।দু’জন ঘুমানো খুব-ই কষ্টকর।অধরার কান্ড দেখে আহান হেঁসে ফেলছে।একটু পরে-ই অধরা আহান-কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো।আহান’ও অধরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ঘুমিয়ে গেলো।

সকাল বেলা অধরার ঘুম ভাঙতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।সে,আহানকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।অধরা লাফ দিয়ে উঠতে যাবে।আহান আরো শক্ত জড়িয়ে ধরলো অধরাকে।

–ছাড়ুন আমাকে।সকাল হয়ে গেছে।বাসায় যাবেন না।আজ তিতলি আপুর এঙ্গেজমেন্ট মনে আছে আপনার।

–আমার সব-ই মনে আছে।সারারাত আমাকে যা,জ্বালিয়েছো।আমিও বলে ছিলাম আমাকে ছেড়ে দাও।তুমি আমাকে ছাড়ো নাই।এখন আমি’ও তোমাকে ছাড়বো না।

–ফাজলামির একটা সিমা থাকে।কাল থেকে অনেক সয্য করছি।

আহান কোনো কথা না বলে অধরা’কে বালিশে শুইয়ে দিলো।একটা পা অধরার শরীরের উপরে রেখে।অধরার কাছে গিয়ে বলল।

–বলো কি হয়েছে।কি করবে তুমি আমার।

আহান’কে নিজের এত কাছে দেখে।অধরা চোখ বন্ধ করে নিলো।পুরো শরীর কেমন জানি অবশ হয়ে আসছে অধরার।কথা বলার শক্তিটুকু নেই।ভেতর কেমন জানি ভয় কাজ করছে।এমন ভয়ার্ত চেহারা দেখে আহানের বেশ ভালো লাগছে।কোনো কথা না বলে-ই অধরার গলায় মুখ গুঁজে দিলো।
#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_২২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

সকাল বেলা খেয়ে,অধরা আর আহান বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।যাওয়ার আগে,ইমন আর প্রিয়াকে দাওয়াত দিয়ে গেলো আহান।আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছে আহান।আঁড়চোখে অধরা-কে একটু পর পর দেখছে।অধরা মাথা নিচু করে বসে।একবার’ও আহানে’র দিকে তাকাচ্ছে না।কেমন জানি লজ্জা লাগছে অধরা’র।তার যদি উপায় থাকতো। তাহলে,দৌড়ে পালিয়ে যেতো।আচ্ছা ভালোবাসার মানুষ গুলো এমন হয় কেনো।একটু ভালোবাসে দিলে,রাগ,অভিমান,অভিযোগ সবকিছু নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।চাইলে’ও রাগ করে থাকা যায় না।কি এক অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি।ভেতরে ভেতরে কেমন ভালো লাগা কাজ করছে।মাথা নিচু করে-ই অধরা হেঁসে উঠলো।কিন্তু হাসির ব্যাখা দিতে পারলো না।

–পাগল হয়ে গেলে নাকি।একা একা হাসছো কেনো।

–না,আপনি পাগল করে দিয়েছেন।বলে’ই জিভে কামড় দিলো অধরা।

–কি বললে”!

অধরা আর কোনো উওর দিলো না।আহান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে অধরা’র দিকে।কিন্তু কোনো উওর আসলো না।বাসায় এসে অধরা দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলো।

–বাসায় কাজ রেখে তোরা বন্ধুর বিয়েতে কোন বিবেকে যাস।বল তো আহান।রেগে বলল তিতর।

–ছোট বেলার ফ্রেন্ড তো আপু রাগ করতো তাই জন্য।

–ছোট বেলার ফ্রেন্ড হয়েছে।তো কি হয়েছে।গেছিস ভালো কথা,সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আয়।তা-না করে রাতটা কোন বিবেকে থেকে গেলি।

–আপু আমি বারবার উনাকে বলছিলাম।কিন্তু উনি আমার কথা শুনে নাই।উল্টা ছ্যাঁরার মতো থেকে গেছে।বলল অধরা।

আহান রাগী দৃষ্টিতে অধরার দিকে তাকালো।অধরা আহান’কে জিভ দেখালো।আহান কোনো কথা না বলে হনহন করে নিজের রুমে চলে গেলো।অধরা আশার কাছে চলে গেলো।

–ভাবি কি করছেন।

–এই শশায় নকশা তৈরি করছি।

–এত নকশা করার কি আছে।খেলে-ই পেটের মধ্যে চলে যাবে।বলল অধরা।

–তা তো জানি,এটা একটা সুন্দর্য।দেখতে ভালো লাগে।

–তা ঠিক বলেছেন।আমাকে শিখিয়ে দিন।আমি’ও আপনাকে সাহায্য করছি।বলে-ই কাটা চামচ আর ছুড়ি নিয়ে বসলো।

–অধরা একটা কাজ করতে বলবো রাগ করবে বোন।

–এটা কেমন কথা বললেন ভাবি।বলুন কি করতে হবে।

–এই পানি গুলো একটু ফেলে দিয়ে আসবে।বেশি হয়ে গেছে।সমস্যা হচ্ছে খুব।

–আচ্ছা আমি ফেলে দিয়ে আসছি।বলে-ই অধরা বাগানে গেলো পানি ফেলতে।গিয়ে যা দেখলো,শরীরে আগুন জ্বলে উঠলো।নিমিষেই চোখ গুলো লাল হয়ে গেলো।অধরা কোনো রকম ভেতরে আসলো।তারপরে আশার কাছে বালতি দিয়ে চলে আসতে যাবে।তখনি আশা বলল।

–পানি গুলো তো ভালো ছিলো।ব্রেসিং-এ ফেললেই পারতে।বাহিরে যাওয়ার দরকার ছিলো না।

–ভাবি আমি একটু আসছি।বলে-ই বাগানের দিকে চলে গেলো।বাগানে গিয়ে কোনো কথা না বলে-ই আকাশে’র গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।বাগানের গাছে থেকে ডাল ভেঙে মারতে শুরু করলো অধরা।মারতে মারতে আকাশ’কে মাটিতে শুইয়ে ফেললো।

–আপাই আমাকে আর মারিস না।আমি আর সয্য করতে পারছি না।আমি মরে যাব আপাই।আমাকে আর মারিস না।

নিজের রুমের বেলকনি থেকে সবকিছু দেখছিলো আহান।এ কোন অধরাকে দেখছে।চোখে মুখে হিংস্রতার ছাপ।এই অধরা’র সাথে তো সে পরিচিত নই।এখনি না গেলে ছেলেটা’কে আর বাঁচানো-ই যাবে না।আহান দৌড়ে নিচে আসলো।বাগানে গিয়ে অধরার হাতে থেকে ডালটা কেঁড়ে নিয়ে,ফেলে দিলো।

–তুমি পাগল হয়ে গেছো।এভাবে মারছো কেনো।মরে যাবে তো।ভুল করলে বুঝিয়ে বলবে।

–ওকে আমি মেরে ফেলি নাই।এটাই ওর ভাগ্য ভালো।আপনি সরুন,আমাকে বুঝতে দিন।

–কি করেছে ও।

–দেখুন কি করেছে।অধরার হাতের দিকে চোখ পড়তেই আহানের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।

–দেখি ওর হাত ছাড়ুন।ওর আজ সারাদিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ।তারপরে দেখবো ওর এত জেদ কোথায় থেকে আসে।বলে-ই আকাশ-কে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেলো।

সন্ধ্যা বেলা ছেলের বাসার সবাই চলে আসছে।তাদের আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত সবাই।আশেপাশের আত্নীয়-স্বজনরা’ও এসেছে।ছেলে এখনো আসে নাই।ছেলে তার বোনের সাথে আসছে।রাস্তায় জ্যাম থাকার জন্য আসতে দেরি হচ্ছে।ছেলে আসলে আহান তাঁদের এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য বাহিরে গেলো।ছেলের পাশে রুহিকে দেখে-ই মাথায় আগুন ধরে গেলো।মুহূর্তে-ই চোখ রক্তিম বর্ন ধারণ করলো।তার থেকে বেশি অবাক হলো সকালে যে,ছেলের সাথে অধরা-কে কথা বলতে দেখেছিলো।সেই ছেলের সাথেই তার বোনের বিয়ে।

–এটা আপনার কে হয় ভাইয়া।বলল আহান।

–এটা আমার ছোট বোন।খুব আদরের,একদম তোমার বোনদের মতো।

–একদম যার তার সাথে,আমার বোনের তুলনা করবেন না।এই বিয়ে কিছুতে-ই হতে দিব না আমি।যার বোন এমন,তার ভাই না জানি কেমন হবে।

–কিছু বললে তুমি আহান।

–তুমি কি এঁদের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রেখে কথা বলবে।নাকি ভেতরে নিয়ে যাবে।বললেন আশরাফুল চৌধুরী।

–তোমার সাথে আমার কথা আছে বাবা।

–এখন কোনো কথা নেই।ওদের ভিতরে নিয়ে যাও আহান।কিছুটা রেগে বললেন।আহান উপায় না পেয়ে,ওদের ভেতরে নিয়ে গেলো।বীর-কে দেখে তিতলির মুখে হাসি ফুটে উঠলো।নিমিষে-ই মন খারাপ হওয়া হয়ে গেলো।চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,হয়তো কান্না করেছে।কিন্তু নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পাওয়ার মতো আনন্দ মনে হয় পৃথিবীতে নেই।ভিষণ খারাপ মানুষ টাও।দিন শেষে কাউকে না কাউকে মন প্রাণ উজার করে ভালোবাসে।

–হ্যাঁ কাকা বলো।হঠাৎ কি মনে করে আমাকে ফোন দিলে।

–আমার তোর সাথে জরুরি কথা আছে।মোতালেব সাহেব আছে না।উনি তোর সাথে কথা বলতে চায়।

–উনি তো জমির দলিল বন্ধক রাখেন তাই না চাচা।আমার জানা মতে আমাদের কোনো জমির দলিল,ওনার কাছে বন্ধক রাখা হয় নাই।তাহলে উনি আমার সাথে কথা বলতে চাইছেন কেনো।

–আমি জানি না।তুই মোতালেব সাহেবের সাথে কথা বল।বলে-ই ফোনটি এগিয়ে গেলো।

–হ্যালো অধরা আমি তোর মোতালেব চাচা বলছিলাম।তোর মা তোদের বাড়ির দলিল আমাকে দিয়ে,চার লক্ষ টাকা নিয়েছিলো।তোর বাবার অপারেশনের জন্য।আর আমাকে বলেছিলো,সাতদিনের মধ্যে টাকা দিয়ে দিবে।শুনলাম তোর নাকি চাকরি হয়েছে।আমি’ও সেই ভেবে টাকা দিলাম।কিন্তু পনেরো দিন হয়ে গেলো।তোরা শহরে চলে গেলি।তোদের আসার নামে কোনো খোঁজ নেই।তোরা যদি আমাকে আমার টাকা না দিস।তাহলে তোদের জমি আমি দখল করে নিব বলে দিলাম।আমি এখন ভালো করে বললাম।তুই যদি ভালোই ভালোই টাকা দিস।তাহলে সবটা ভালোই ভালোই মিটে যাবে।

–আপনি এসব কি বলছেন।মা আমাদের বাড়ির জমি বন্ধকে রেখে বাবার অপারেশন করিয়েছে।কই আমি তো কিছু জানি না।আমাকে কেউ কিছু বলে নাই।

–সেসব আমি জানি নে বাপু।তোর মা আমার থেকে টাকা নিয়েছে।আমার টাকা পেলে-ই হয়েছে।

–আচ্ছা চাচা আমার বাবার অপারেশন টা কি হয়েছিলো।অস্থির হয়ে বলল অধরা।

–শুনে ছিলাম হয়েছিলো।কথা বলতে পারছিলো নাকি।

–কি বলছো চাচা।বাবার অপারেশন হয়েছিলো।বাবা সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। আর এই কথাটা আমাকে কেউ জানালো না।কোন হসপিটালের বাবার অপারেশন হয়েছিল চাচা।

–দেখ অধরা আমি এতকিছু জানি না।আমি মেয়ে’র বিয়ে দিব।আমার টাকার দরকার।খুব অভাবের মধ্যে চলছি।আমাকে টাকা না দিলে তোদের জমি আমি অন্য জায়গায় দিয়ে দিব।

–না চাচা তুৃমি এমন কাজ করো না।আমি কালকে-ই আসছি।আমাদের বাসার একটা ইটেও তুমি হাত দিবে না।

–তুই না বলা পর্যন্ত কিছু করবো না।বলে-ই ফোনটি কেটে দিলো।সাথে সাথে কেউ মোতালেব সাহেবের মাথায় বাড়ি মারলো।তারপরে মুখে রুমাল চেপে ধরলো।সাথে সাথে তিনি সেন্সলেস হয়ে গেলন।

অধরার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।এতদিন পরে কি শুনলো সে,তার বাবা সুস্থ হয়ে গিয়েছিল।আর সে,কথা কেউ তাকে জানালো না।রাগে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।এখন কে তাকে সাহায্য করবে।হ্যাঁ আকাশ,এখন তাকে একমাত্র আকাশ-ই তাকে সাহায্য করতে পারে।অধরা দৌড়ে উপরের রুমে চলে গেলো।দরজা খুলে দৌড়ে নিজের ভাই-কে বুকে জড়িয়ে নিলো।কতো আদরের ভাই তার।ছোট বেলা থেকে একটা ফুলের টোকা দেয় নাই অধরা।আজ সেই ভাইকে মেরে রক্তাক্ত করে ফেলছে।ভাবতে-ই কলিজা কেঁপে উঠলো।আকাশ ভয়ে ভয়ে তার আপাই কে জড়িয়ে ধরলো।হাত পা কাঁপছে আকাশের।কাঁপা কাঁপা গলায় বলল।

–আপাই আমাকে আর মারিস না।আমি আর কখনো এমন করবো না।আমার পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে আছে।সারাদিন কিছু খাই নাই।আমার খুব ক্ষুদা লাগছে।আমাকে কিছু খেতে দে না আপাই।অধরা আকাশ-কে কোনো প্রশ্ন করলো না।তার ভাইয়ের যে,খালি ক্ষুদা লাগে।অধরা এটা কি করে ভুলে গেলো।এতটা পাষাণ কি করে হলো।আকাশকে ফ্রেশ করিয়ে দিয়ে ভালো জামাকাপড় পড়িয়ে দিলো।তারপরে নিচে নিয়ে এসে।প্লেটে খাবার বেড়ে নিজে হাতে আকাশ-কে খাইয়ে দিলো।মেরে বকাঝকা করে কোনো কাজ নেই।ভালোবাসা দিয়ে বলতে হবে।তাহলে আকাশ ঠিক সবটা গটগট করে বলে দিবে।

–আহারে আমার বোন দেখছি,আমার থেকে-ও বেশি চালাক হয়ে গেছে।আমার কাছে থেকে আমার সাথে-ই গেম খেলছিস আপা।তোর জন্য ভালো থাকতে পারি না।ভাবছিলাম ভালো হয়ে যাব।কিন্তু তুই আমাকে ভালো হতে দিবি না।তোর মেয়ে সুখে সংসার করছে।এটা তোর সয্য হলো না তাই না।আচ্ছা নে,তোর মেয়ের সংসারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমি নিলাম।বলে-ই তুলির থেকে ফোনটা কেড়ে দিলো।

–তোকে আমি খুন করে ফেলবো।তোর মতো মেয়ের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।

–আগে নিচে বেঁচে দেখা,তারপরে না হয় আমাকে মারবি।আহারে মেয়ে-কে এতগুলো মেসেজ করছিস।তোর মেয়ে তো তোকে পাত্তায় দেয় না।

–আমার মেয়ের হাতে তুই যে,দিন পড়বি সেদিন তুই শেষ হয় যাবি।

–তার আগে-ই তোর মেয়ে-কে আমি শেষ করে দিব।

–পারলে আমার মেয়ের শরীরে একটা ফুলের টোকা দিয়ে দেখিস।আমার মেয়ে তোকে খুঁজে পেলে আদৌ’ও বেঁচে থাকবি কি না সন্দেহ।

–খুব দেখছি তেজ হয়েছে।কে দিলো তোকে এত সাহস।

–মানুষের ধৈর্যের একটা সিমা থাকে।তুই আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছিস।

–কে কোথায় আছিস।আপার বড্ড তেজ হয়েছে।পারলে একটু কমিয়ে দে।আমি ক’টাদিন আসতে পারবো না।আমার কিছু জুরুরি কাজ আছে।এই কয়টা দিন আপা যেনো শরীর নিয়ে উঠতে না পারে।বলে-ই মেয়ে-টি চলে গেলো।

খুব ভালো ভাবে-ই তিতলির এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেলো।রাতে সবাই যে,যার মতো ঘুমিয়ে গেলো।আহান ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে।অধরা আকাশ-কে বাগানে নিয়ে আসলো।

–এখন তোকে আমি যা যা বলবো।তুই আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবি।

–আপাই কাল দিলে হয় না।আমার ঘুৃম পেয়েছে এত রাতে কথা বলতে ভালো লাগছে না।

–আকাশ তুই এমন হয়ে গেলি কেনো রে।তুই কি আমাকে আর ভালোবাসিস না।তুই দেখি বড় হলে আমার দিকে ফিরেও তাকাবি না।

–এমন কথা বলিস না আপাই।তুই আমার সবকিছু।তোকে কখনো আমি কষ্ট দিব না।

–তাহলে এখন আমি যা যা বলবো সবকিছুর উত্তর দিবি।

–আচ্ছা আপাই বল।

–বাবার নাকি অপারেশন হয়েছিলো।বাবা নাকি সুস্থ হয়ে গিয়েছিল।কথা’ও নাকি বলছিলো।

আকাশের কথা শুনে অধরা একদম বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।না চাইতে’ও চোখ দিয়ে নোনাপানি গড়িয়ে পড়লো।

চলবে…..
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here