তুমি নামক প্রশান্তি পর্ব -২২

#তুমি_নামক_প্রশান্তি
#লেখনীতে_জেনিফা_চৌধুরী
#পর্ব_বাইশ

“যেই বাড়িতে বউ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো, সেই বাড়িতেই বউ হয়ে গেলি। তাও আবার ভালোবাসার মানুষটার বড় ভাইয়ের বউ। কি জঘন্য, নিষ্ঠুর যন্ত্রণা! সহ্য করছিস কি করে দোস্ত? ”
বেলীর প্রশ্নে তানিশা বোধহয় একটু হাসলো। হয়তো তাচ্ছিল্যের হাসি। বেলী ঠিক বুঝতে পারলোনা। তানিশা শান্ত স্বরে বললো,
“আমি অনেক ধৈর্য্যবান মাইয়া। সব সহ্য করার ক্ষমতা আল্লাহ আমারে দিছে। তুই এইসব লইয়া আর ভাবিস না তো।”
বেলী সাথে সাথে উত্তর দিলো,
“মেয়েরা অনেক কষ্ট বুকে চে*পে দাঁত বের করে হাসতে পারে। হাসতে হাসতে চোখের পানি লুকিয়ে ফেলতে পারে। হাজার ঝড়েও লোহার মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। কষ্টের শেষ সীমানায় গিয়েও মাটি আঁকড়ে, বাঁচতে পারে। তবুও সবার গল্পে মেয়েরা স্বা’র্থপ’র, লো-ভী, ঠ-কবা’জ। কেনো বলতো?”
তানিশা এবার ধমকের স্বরে বললো,
“এই তুই কী দুঃখবিলাস করতে ফোন দিছোস আমারে? আমি ভালো আছি, বিশ্বাস কর। অতীত নিয়ে ভাবতে গিয়া বর্তমান আর ভবিষ্যত নষ্ট করতে পারুম না। আমি বিশ্বাস করি যা হয় ভালোর জন্য।”
তানিশার কথায় বেলী, দাঁ’তে দাঁ’ত চে*পে বললো,
“তাইলে তোর কোন ভালোডা হইলো। আমারে বুঝা।”
তানিশা এবার থতমত খেলো। কী উত্তর দিবে, ভাবলো। বললো,
“শোন, আমি এখন রাখছি। আমাকে একটু ডাকছে।”
বলে বেলীকে কোনো শব্দ করতে না দিয়ে কে’টে দিলো। বেলী ঠিক বুঝতে পারলো, তানিশা নিজের কষ্টটা আড়াল করতে চাইছে। বেলীর নিজেকে অপরাধী লাগছে। কেনো পুরো একদিন কাউকে কিছু না বলেও চুপ করে ছিলো। রাকিবকে জানালে হয়তো, কিছু করা যেতো। কথাগুলো ভেবে বেলী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে ওর। এই মুহূর্তে একটা ঘুমের প্রয়োজন।


তানিশা ফোনটা কান থেকে নামিয়ে, নিশ্চুপে চোখ জোড়া বন্ধ করলো। তখনি দুই চোখ বেয়ে ঝরে পড়লো জলরাশি। তবুও কাঁদলো না। দুইহাতে মুছে নিলো চোখের জলটুকু। বলে উঠলো,
“আমি নিজের ভাগ্য মাইনা নিছি। তাই আর চোখের পানি ফেলুম না। যা হইবো তা মাইনা নিমু। মুখ বুইজা সহ্য কইরা নিমু। আমার বাপ-মায়রে দেখাইয়া দিমু, আমি সুখে আছি। তারা তো আমার সুখ দেখার লাইগা বিয়া দিছে। সুখেই দেখামু।”
এর মধ্যে শাকিল ভেতরে প্রবেশ করলো। শাকিলকে দেখেই তানিশা তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়ালো। তা দেখে শাকিল বললো,
“এমনে বইসা আছো কেন? বাইরে যাও। আম্মা ডাকে তোমারে।”
তানিশা ছোট্ট করে ‘হ্যাঁ’ বলে বেরিয়ে গেলো। আর শাকিল একটা সিগারেট ধরিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো। বেলকনিতে গিয়ে ফোনে প্রেমালাপে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। জীবন যেখানে যেমন…।

সময় সময়ের গতীতে বয়ে চলে। কারোর জন্য থেমে থাকেনা। এক সপ্তাহ কে’টে গেছে। এই এক সপ্তাহ সবার জীবন আপন গতিতে চলেছে। রাকিবকে এই সাতদিনে বহুবার ফোন দিয়েছে বেলী। কিন্তু, রিসিভ হয়নি। হঠাৎ সবকিছু কেমন পরিবর্তন হয়ে গেলো। তানিশার সাথে নিয়ম করে বেলীর কথা হয়। তানিশা সত্যিই মানিয়ে নিয়েছে বা চেষ্টা করছে মানিয়ে নেওয়ার। প্রথমে রাফিনের জে’লে যাওয়া, তানিশার বিয়ে, রাকিবের ভে’ঙে পড়া, বন্ধুত্বের ফা”টল। সব মিলিয়ে বেলী একটা ট্রোমার মধ্যে চলে গেছিলো। পুরো এক সপ্তাহ নীলাভ্র, ইশু, মেরিনা সবাই মিলে বুঝিয়ে ‘ওকে’ ঠিক করেছে। আজ পুরো এক সপ্তাহ পর বেলী বাসার বাইরে পা রেখেছে। গেটের বাইরে পা রাখতেই চোখ গেলো সামনের দিকে। নীলাভ্র গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পড়নের মেরুন কালার শার্টটা বেশ মানিয়েছে ‘ওর’ গায়ে। চোখ ফেরানো মুশকিল। বেলীকে দেখেই নীলাভ্র এগিয়ে আসলো ‘ওর’ দিকে। বেলীর পড়নে লাল সাদার কম্বিনেশনের একটা জামদানি শাড়ি। চুলগুলো খোলা। নীলাভ্র কিছুক্ষণ ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো বেলীর দিকে। যখনি চুলের দিকে নজর গেলো তখনি থেমে গেলো। চোখ গরম করে বেলীর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,
“চুল কে’টেছিস কেন?”
বেলী বেশ শান্ত স্বরে উত্তর দিলো,
“চুলের আগা নষ্ট গেছিলো। তাই বেশিনা মাত্র চার ইঞ্চি কে’টেছি।”
কথা শুনেই নীলাভ্রর মাথা গরম হয়ে গেলো। রাগে শরীর কেঁপে উঠলো। নীলাভ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে বেলী চুপসে গেলো। খানিকটা অবাক হলো। নীলাভ্র তো সবসময় ‘ওর’ চুল নিয়ে বিরক্ত ছিলো! তাহলে, আজ এমন ভাবে রিয়েক্ট করছে কেনো? নীলাভ্র বেলীকে কড়া স্বরে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। কোনো কিছু না বলে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসলো। গাড়ির স্ট্যায়ারিং কয়েকবার ঘু*ষি মে*রে উঠলো। জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো। তবুও রাগটা কমছে না। বেলীর জায়গায় অন্য কেউ হলে এতক্ষণে তার গালে কয়েকটা থা*প্পড় পড়ে যেতো। কিন্তু, যতই রাগ হোক বেলীর গায়ে হাত দিতে পারবে না ‘ও’। নীলাভ্রর কর্মকাণ্ডে বেলী অবাকের শেষ সীমানায়। কিছু বুঝতে না পেরে নীলাভ্রর পাশের সিটে উঠে বসলো বেলী। নীলাভ্রকে কিছু বলতে বুল কাঁপছে ‘ওর’। হঠাৎ কি হলো ছেলেটার? এত রেগে গেলো কেন? বেলী গাড়িতে উঠে বসতেই নীলাভ্র মুখ ঘুরিয়ে নিলো। তবুও বেলী সাহস সঞ্চয় করে নীলাভ্রর কাঁধে হাত রাখলো, শান্ত স্বরে বললো,
“কি হয়েছে নীলাভ্র ভাই?”
নীলাভ্র উত্তর দিলোনা। চুপচাপ বেলীর হাতটা কাঁধ থেকে সরিয়ে দিলো। বেলী যেন এবার আকাশ থেকে পড়লো। এই ছেলে এমন করছে কেন? নীলাভ্র গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে প্রশ্ন করলো,
“ভার্সিটি যাবি তো?”
নীলাভ্রর এমন আচরণে বেলীর একটু মনঃক্ষুণ্ণ হলো। তবুও প্রকাশ করলো না। নিঃশব্দে মুখটা জানালার দিকে ঘুরিয়ে নিলো। সারা রাস্তা দুজনেই অভিমানে চুপ ছিলো। নীলাভ্র একবার বেলীর অভিমানী মুখের দিকে তাকিয়ে, মনে মনে বলতে লাগলো,
“তোর চুলগুলো আমার ভালোবাসার একাংশ রে বেলীপ্রিয়া। তোর কাছে হয়তো চার ইঞ্চি কিছু না। কিন্তু, আমার কাছে অনেক কিছু। তুই যে আমার কেশকন্যা। আর আমার সেই ভালোবাসার গায়ে তুই আঁচড় দিয়েছিস। এর জন্য তোকে পস্তাতে হবে। শাস্তি পেতে হবে। কঠিন শাস্তি।”
ভার্সিটির গেটের সামনে এসে গাড়ি থামতেই, বেলী নেমে পড়লো। জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে বললো,
“শেষবার জিজ্ঞেস করছি, কি হয়েছে আপনার? রেগে আছেন কেন?”
নীলাভ্র মুখ গোমড়া করে উত্তর দিলো,
” চুল আগে যেমন ছিলো, তেমন করে আমার সামনে আসবে। এর আগে আমার সামনে আসবি না।”
বলে চলে গেলো। আর বেলী হাবু’লের মতো চেয়ে রইলো। তার মানে এতক্ষণ এই চুলের জন্য সে অভিমান করে ছিলো। বেলী নিজের কপালে চা’পড়াতে চা’পড়াতে বললো,
“হায় আল্লাহ! এ কি কি বিপদে পড়লাম! এখন আমি চুল বড় করবো কিভাবে? যদি বড় না হয় তাহলে তো তার সামনে গেলে, আমাকে কাঁচা গি-লে খাবে। এখন আমি কি করবো?”
বেলীর মুখটা এই মুহুর্তে অসহায় লাগছে। কিন্তু পরক্ষণেই আবার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটলো। নিজে নিজেই বললো,
“আমার চুল আপনার এত পছন্দ নীলাভ্র ভাই! আগে তো কখনো প্রকাশ করেননি। যদি প্রকাশ করতেন তাহলে, আমার এই অযত্নে বেড়ে উঠা চুলগুলো খুব যত্নে থাকতো।”
কিছুক্ষণ আপন মনে এইসব আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে গেলো। ক্লাসরুমে ঢুকতেই বেলী চমকে গেলো। রাকিব বসে আছে। তাও আবার ওদের তিনজনের খুব পছন্দের বেঞ্চটায়। ওরা তিনজন এই বেঞ্চটা এক প্রকার নিজের করে নিয়েছে। অন্য কেউ এই বেঞ্চে বসলে বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করে তাকে উঠিয়ে দিতো। ওদের তিনজনের ভয়ে কেউ এই বেঞ্চে বসার সাহস পেতো না। রাকিবকে দেখে আজ প্রাণোচ্ছল মনে হচ্ছে। তাহলে কি ছেলেটা একটু হলেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছে? বেলী আর তানিশার উপর কি অভিমান কমেছে? নাকি মনের গভীরে এখনো জমে আছে অভিমানের পাহাড়। বেলী ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো রাকিবের দিকে। নিঃশব্দে এসে দাঁড়ালো রাকিবের পাশে। রাকিব মোবাইলে এতই মগ্ন ছিলো যে, বেলীকে খেয়াল করেনি। বেলী হালকা কাশি দিয়ে গলা পরিস্কার করে নিলো। জিজ্ঞেস করলো,
“কেমন আছিস দোস্ত?”
বেলীর মনে হলো ওর চোখে অশ্রু জমা হলো। যেই রাকিব ওদের সাথে একদিন কথা না বলে, থাকতে পারতোনা। সে গত সাতদিন বেলীকে সম্পূর্ণরূপে ইগ্নোর করে চলেছে। বেলীর প্রশ্নে রাকিব মাথা তুলে তাকালো। বেলীকে দেখে রাকিবের প্রাণোচ্ছল মুখটা, গুমোট অন্ধকারে ঢেকে গেলো। বেলী প্রশ্নের আশায় চেয়ে রইলো রাকিবের দিকে। রাকিব মাথা নিঁচু করে রইলো কিছুক্ষণ। উত্তর দিলোনা। বেলীও কোনো শব্দ না করে দাঁড়িয়ে রইলো। কিছুসময়ের ব্যবধানে রাকিব হুট করে বেলীর হাত জোড়া আকঁড়ে ধরলো। অপরাধী ভঙ্গিতে বললো,
“দোস্ত, আমাকে ক্ষমা করে দে প্লিজ। সেদিন তোকে যা নয় তাই বলেই অপমান করেছিলাম। কিসব বলেছি নিজেও জানিনা। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে।”
রাকিবের কথায় বেলীর মুখে হাসি ফুটলো। ছেলেটা অবশেষে একটু স্বাভাবিক হতে পারলো। শক্ত করে রাকিবের হাত দুটো জড়িয়ে ধরে বললো,
“আমি একটুও রাগ করিনি দোস্ত, বিশ্বাস কর। তুই যে আমার সাথে কথা বলছিস, এটা ভেবেই আমার খুশিতে কান্না চলে আসছে। প্লিজ এভাবে ক্ষমা চেয়ে আমাকে অপরাধী করে দিস না।”
বেলীর কথায় রাকিবের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো। বন্ধুত্ব শব্দটা অনেক গাঢ়। সত্যিকারের বন্ধুত্ব কখনো এত সহজে ভে’ঙে যায় না। যে বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে জানে, সে সব পরিস্থিতেই বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে। বেস্টফ্রেন্ড হওয়া কি এতই সোজা! বন্ধু তো হওয়া উচিত রাকিব, বেলী, তানিশার মতো। যারা সব পরিস্থিতিতে বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে। রাকিব চোখের কোনে জমে থাকা জলটুকু মুছে নিয়ে হাসলো। বললো,
“আমরা তো প্রেমিক-প্রেমিকা হওয়ার আগে বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম। এখন ভালোবাসার মানুষটাকে না পেয়ে বন্ধুত্ব ভে’ঙে দিব। এতটা স্বার্থপর হতে পারব না রে। ভালোবাসার মানুষটাকে আমি পাইনি বলে, তাকে ঘৃণা করব, অ’পমান করব এতটাও খারাপ আমি না রে। আমরা বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম, আছি আর থাকব। সারাজীবন একসাথে থাকব আমরা। প্রমিস, কখনো তোদের ছাড়ব না দোস্ত।”
রাকিবের কথায় বেলীর বুকের পা*থরটা সরে গেলো। রাকিবকে হালকা করে জড়িয়ে ধরলো। তারপর বললো,
“আমিও তোদের কখনো ছাড়ব না। তানিশা আমাদের বেস্টফ্রেন্ড ছিলো, আছে আর থাকবে।”
এত সহজে সবটা ঠিক হয়ে যাবে, বেলী ভাবতেও পারেনি। খুশিতে তানিশাকে ভিডিও কল করলো। ওপাশ থেকে তানিশা রিসিভ করতেই রাকিব আর বেলীকে একসাথে দেখে ‘ওর’ মুখটা চুপসে গেলো। রাকিবকে দেখেই হাসি মুখটা অন্ধকার হয়ে গেলো। তা দেখে রাকিব হেসে বলে উঠলো,
“কিরে শা’কচু*ন্নি, এমনে চাইয়া রইছোস কেন? জামাই কে’লাইছে নাকি?”
রাকিবের মুখ থেকে এমন স্বাভাবিক কথা শুনে তানিশা চোখ বড় বড় তাকিয়ে রইলো। অবাক স্বরে বললো,
“তুই ঠিক আছোস? তোর শরীর ঠিক আছে? বেলী রাকিব্বার মাথা কি ন’ষ্ট হইয়া গেছে?”
বেলী কিছু বলার আগেই রাকিব ফোড়ন কে’টে বললো,
“কী কইলি তুই? আমার মাথা ন’ষ্ট। থা’ব’ড়া”নি দিয়ে কান গ’রম কইরা দিমু।”
বেলী কি বলবে খুঁজে পাচ্ছেনা। সত্যিই কি ওরা দুজন স্বাভাবিক হতে পেরেছে? নাকি এইসব নিজেদের কষ্ট আড়াল করার চেষ্টা। বেলী মুখ গোমড়া করে এইসব ভাবছিলো, তখন রাকিব বেলীকে ধাক্কা দিয়ে বলে উঠলো,
“কিরে তুই কোন রাজ্যে ডুব দিলি? জামাইর কথা ভাবতাছোস? ভাবিস না নীলাভ্র ভাইতো তোর কাছেই আছে। এত ভাইবা কিয়ারবি?”
রাকিবের কথায় বেলীর ধ্যান ফিরে এলো। হকচকিয়ে উঠলো। তারপর বেশ শান্ত স্বরে বললো,
“তোদের একটা প্রশ্ন করব?”
তানিশা আর রাকিব দুজনেই একসাথে বলে উঠলো,
“করে ফেল।”
বেলী কিছুক্ষন থেমে, দ্বিধা নিয়ে প্রশ্ন করলো,
“তোরা কি সত্যিই ভালো আছিস? নাকি এইসব শুধু ভালো থাকার নাটক?”
বেলীর প্রশ্নটা শুনে তানিশা সাথে সাথে বললো,
“দেখ, বেলী তোরে আগেই কইয়া দিছিলাম ‘এইসব লইয়া এত ভাবিস না’। আমি সত্যিই ভালো আছি। বিশ্বাস কর, শাকিল্লারে যত খারাপ ভাবছিলাম, ‘ওই’ হা’লায় অত খারাপ না রে। মানুষ কি আর সারাজীবন খারাপ থাকে, বল? এই সাতদিনে একবারও আমার লগে খারাপ ব্যবহার করেনাই। তার বাড়ির কেউ আমারে খারাপ বুঝেনা। তোরা নিজের চোখে আইয়া দেইখা যাইস।”
তানিশার কথা শেষ হতেই রাকিব বললো,
“তুই বেশি চিন্তা করিস না বেলুরুটি। আমি সত্যিই ভালো আছি। নিয়তি কী চেঞ্জ করতে পারুম। তাই মেনে নিছি। মানিয়ে নিছি। চিন্তা করিস না।”
বেলী কেনো যেন স্বস্তি পেলো? তারমানে ওরা দুজন সত্যিই মানিয়ে নিয়েছে। যাক অবশেষে সব ঠিক হলো। মনে মনে প্রার্থনা করলো,
“সবাইকে ভালো রেখো আল্লাহ। সবার দুঃখ গুলো সুখে পরিনত করে দিও।”

#চলবে

[ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। একটা মন্তব্য করে যাবেন দয়া করে।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here