তোমাতেই পূর্নতা পর্ব -১১

#তোমাতেই_পূর্নতা
#পর্বঃ১১
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা

তিন্নি রিকশাওয়ালাকে রিকশা ভাড়া দিচ্ছে বর্ষা কলেজের ভিতরে চলে গেছে । রিকশা ভাড়া মিটিয়ে কলেজের গেইটের ভিতরে পা দেওয়ার সময় চোখে পড়ল এক অতি চেনা মুখশ্রী । শুভ বাইক চালিয়ে আসছে ‌। তিন্নি কোনো দিকে না তাকিয়ে মাঝ রাস্তায় দুই হাত মেলে দাঁড়িয়ে পড়ল । হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ায় শুভ দ্রুত বাইক থামিয়ে দিল । বাইকে বসে তিন্নিকে বলল ,

” পাগল তুমি ? এভাবে কেউ মাঝ রাস্তায় দাঁড়ায় ?

” আমি দাঁড়াই !

” আমাকে যেতে হবে সরে দাঁড়াও !

” একটু পরে যান ।

” তোমাকে সরে দাঁড়াতে বলছি ।

” দেখো আশেপাশে সবাই তাকিয়ে আছে ! কি ভাবছে সবাই ?

শুভর কথায় তিন্নি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো সত্যি সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে । তিন্নি তাড়াতাড়ি করে হাত নামিয়ে এক সাইডে গিয়ে দাঁড়াল । তিন্নি সরে দাঁড়াতে শুভ বাইক স্টার্ট দিতে তখন তিন্নি বলল ,

” শুনুন ?

শুভ তিন্নির দিকে তাকিয়ে বলল ,

” হুম বল !

” ভালোবাসি !

শুভ বাইক স্টার্ট দিল আর মুখে ফুটে উঠল এক চিলতে হাসি । যা তিন্নির চোখে পড়ল না ।

” বর্ষামনি !

রাতুলের ডাকে পিছন ফিরে তাকাল বর্ষা । মুখে লেগে আছে মিষ্টি হাসি‌ । বর্ষার কাছে এসে বলল ,

” চল ওই বেঞ্চে গিয়ে বসি !

তিন্নির আসতে দেরি হচ্ছে দেখে বর্ষা একবার গেইটের দিকে তাকিয়ে বলল ,

” আচ্ছা চলুন !

বর্ষা আর রাতুল একটা বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে । রাতুল আগে বলল ,

” আমার সেই রাজকন্যাটা বড্ড অবুঝ ।

” কেমন ?

” আমি তার কাছেই তাকে নিয়ে গল্প করি তাও সে বুঝতে পারে না ।

” তাহলে তাকে ভালোবাসার কথা বলে দিন !

” বলব ?

” অবশ্যই ! সে যদি বুঝতে না পারে তাহলে বলে দিন ।

” আমি বলার পর যদি আমার সাথে কথা না বলে তখন তো সহ্য করতে পারবো না ।

” সে ও তো মনে মনে আপনাকে ভালোবাসতে পারে ।

” তার মনে যদি অন্য কারো ছবি আঁকা থাকে ?

” তাকে বলে তো দেখুন ।

” ভয় হয় !

” ভয়কে জয় করতে না পারলে তাকে জয় করতে পারবেন না ।

রাতুল মুচকি হেসে বলল ,

” তাহলে বলছ তাকে জয় করে নিয়ে আসতে ?

” হুম !

রাতুল তৃপ্তির হাসি হেসে বলল ,

” তাকে তো আমার হতেই হবে । এই রাতুল যে তাকে ছাড়া নিঃস্ব হয়ে যাবে ।

” ভাবী , আপনি এখানে কি করছেন ?

তিন্নির মুখে ভাবী ডাক শুনে রাতুলের আত্মা বেরিয়ে আসার উপক্রম । বর্ষা তিন্নির দিকে তাকিয়ে রাগী কন্ঠে বলল ,

” তোকে বলেছি না আমাকে ভাবী বলে ডাকবি না !

তিন্নি উওর দেওয়ার আগে রাতুল ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল ,

” বর্ষা তোমার ভাবী হয় কীভাবে ?

বর্ষাকে চোখ রাঙাতে দেখে তিন্নি বলল ,

” আসলে ভাইয়া আমার একটা বড় ভাই আছে তাই ভাবছি বর্ষাকে আমার ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে আমার ভাবী বানিয়ে নিব । তাই আগে থেকেই ভাবী বলে প্রেকটিস করছি ।

রাতুল যেন তার প্রান ফিরে পেল । তিন্নির দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বলল ,

” আগে ভাবী হোক তারপরই না হয় ভাবী ডেকো ।

তিন্নি আয়েশী ভঙ্গিতে বলল ,

” ওকে ।
————————-

রিয়ান ভ্রু কুঁচকে ল্যাপটবের দিকে তাকিয়ে আছে । বর্ষা রিয়ানকে পর্যবেক্ষণ করে রিয়ানের পাশে বসল । রিয়ান একবার বর্ষার দিকে তাকিয়ে ল্যাপটবের স্ক্রিনে মুখ ডুবিয়ে বলল ,

” কি চাই ?

” সব সময় কিসের এতো কাজ করেন ?

” কাজ তো করতেই হবে !

বর্ষা অভিমানী কন্ঠে বলল ,

” আমাকে একটুও ভালোবাসেন না !

রিয়ান দায়সারা ভাবে উওর দিলো ,

” ওহ আচ্ছা ।

” আপনি মজা করছেন আমার সাথে !

” কই না তো ।

” আপনি ল্যাপটব অফ করুন ।

” আরে কাজ করছি তো !

” আপনি ল্যাপটব অফ করবেন কি না ?

” কাজ শেষ করে অফ করছি ।

” এক্ষুনি অফ করুন ।

রিয়ান শেষমেশ হার মেনে ল্যাপটব অফ করে পাশে রাখল । তারপর বর্ষাকে টান দিয়ে কোলে বসিয়ে দুহাতে বর্ষার কোমর জড়িয়ে ধরে বর্ষার কাঁধে থুতনি রেখে বলল ,

” তোমাকে ভালোবাসিনা আমি ?

” একটু ও না ।

রিয়ান বর্ষার কোমর আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানের লতিতে কামড় দিল । রিয়ানের স্পর্শে বর্ষা বেসামাল হয়ে যাচ্ছে । রিয়ান এবার ও বলল ,

” ভালোবাসি না তোমাকে ?

” নাহ ?

রিয়ান বর্ষাকে রিয়ানের দিকে ফিরাতেই বর্ষা দ্রুত গতিতে বলে উঠলো ,

” বাসেন , বাসেন , অনেক ভালোবাসেন ।

রিয়ান মুচকি হাসতেই বর্ষা রিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে কোল থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল ,

” আপনাকে কাজ করতে দেওয়াই ভালো । করুন আপনি কাজ ।

বলেই বর্ষা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। রিয়ান স্মিথ হেসে ল্যাপটব অন করে নিজের কাজ করতে লাগলো ।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here