#তোমার_জন্য_ফিরে_আসা
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১১
“এসব কি শুনলাম ইভার সাথে জ্বীন-ভূত কিছু একটা আছে, তাকে অভিশপ্ত থেকে মুক্ত করতে ওকে লাগবে? ”
“ভাইয়া তুই বাসায় কাউকে কিছু বলিস না প্লিজ ”
“না না না সবাইকে জানাতে হবে নয়তো তোর ক্ষতি হয়ে গেলে আমার নিজেকে দোষী মনে হবে”
“আমার কোনো ক্ষতি হবে না ”
তান্ত্রিকসাধু রিয়াদকে বললো,
” তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখো, তোমার বোনের ক্ষতি হবে না। আমি যুগ যুগ ধরে ওদের নিয়ে কাজ করি তাই কে ভালো আর কে খারাপ তা বুঝি ”
“তাই বলে ও মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে এটা কেমন কথা”?
” ওর অভিশপ্ত থেকে বেড়িয়ে গেলো তোমার বোনের মায়া না থাকতে পারে ”
“আচ্ছা আপনি যা বলবেন সব মেনে নিবো কিন্তু আমার বোন বা পরিবারের কারো ক্ষতি হয় না যেনো ”
“হুম তুমি নিশ্চিত থাকো ”
ইভা চুপ করে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছে। তান্ত্রিকসাধুর কথা রিয়াদ অমান্য করতে পারবে না। ওরা দুজনে তান্ত্রিকসাধুর থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলো। ইভার মনে ভয় কাজ করছে যদি রিয়াদ কোনো ভাবে কাউকে কিছু বলে তাহলে আলিবের সাথে দেখা হবে না?চুপচাপ রিয়াদের পিছু হাঁটছে। রিয়াদ একগাল হেঁসে বললো,
-কি রে পাগলী কোনো কথা বলছিস না যে?
-নাহ্ কি আর বলবো?
-তুই ভয় পাচ্ছিস আমি যদি কাউকে কিছু বলে দেই তাই না?
– (ইভা চুপ)
-আমি কাউকে কিছু বলবো না তোকে কথা দিলাম। এবার একটু হাসি দে।
-হুম, ওকে ডেকে আনি।
ইভা আলিবকে ডাকে। আলিব এসে রিয়াদের দিকে গোলাপ ফুল ধরে।
-সে কি এসেছে?
-হুম আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তোর সামনে গোলাপ ফুল ধরার কারন যাতে বুঝতে পারিস সে এসেছে তাই।
-সে আমার কথা শুনতে পাচ্ছে তো,? তাকে বলছি আমার বোনটিকে ভালো রাখে যেনো কোনো ক্ষতি না করে আর তাতে অভিশপ্ত থেকে মুক্ত করতে আমার কিছু করা লাগলে করবো।
আলিব ইভাকে বললো,
” তোমার ভাইকে আমার হয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে দিও সে আমার জন্য ভেবেছে এটাই যথেষ্ট ”
“আচ্ছা কিন্তু আপনি আর কতো দিন থাকবেন ”
“আমার চলে যাওয়ার সময় এসে গেছে, তুমি গিয়ে ওই যে তান্ত্রিকসাধু নামে যাকে চিনো তার থেকে জাদুমণি কালো গোলাপ নিয়ে আসো ”
“কেনো কি করবেন?”
“পূর্নিমারর রাতে দরকার হবে ”
“আচ্ছা নিয়ে আসবো তাহলে আপনি চলে যান ”
“হুম ”
রিয়াদের হবু বউ একটু পর পর কল দিতে থাকে তাই ওদের কথার মাঝে থাকতে পারে নি৷ রিয়াদকে কথা বলতে দেখে ইভা আবার তান্ত্রিকসাধুর বাড়িতে গিয়ে জাদুমণি গোলাপ নিয়ে এসে বাড়ি খুব সাবধানে সাতরং পাথর টা এবং জাদুমণি গোলাপ নিজের ব্যাগে রাখলো।
সারাদিন সবার সাথে আড্ডা, মজার খাওয়া দাওয়া কাটলো। রাতে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে,
আলিব এসে ইভাকে ছাঁদে নিয়ে যায়।
“ছাঁদে আসার কি দরকার ছিলো, কেউ বুঝতে পারে আমি ছাঁদে এসেছি “?
” ধুর তুমি এতো বোকা কেনো? আমি আছি তো, কেউ বুঝতে পারবে না। ”
“তাড়াতাড়ি বলুন তো আপনার কি বলার আছে? ”
“তুমি রেগে রেগে কথা বলছো কেনো কি হয়েছে? ”
“কয়েকদিন পরে তো চলে যাবে এখন শুধু শুধু মায়া বাড়ায় যত্তসব ঢং, আমার কষ্ট হবে সেটা বুঝে না ” (ইভা মনে মনে বলছে)
“কি গো মহারানী কি হয়েছে তোমার? ”
“কিছু না ”
“আচ্ছা চোখ বন্ধ করো ”
“কেনো?”
“আরে করো তো ”
ইভা চোখ বন্ধ করে। আলিব ইভার হাতে এক ডালা কাঁচের চুড়ি, লাল শাড়ি, কানের ঝুমকা, গলার হার। ইভা চোখ মেলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে আলিবে জড়িয়ে ধরে।
“এই যে মহারানী আপনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যেকেউ কে জড়িয়ে ধরবেন না এটা শুধু আআআমার”
ইভা আলিবকে ছেড়ে দিলো।
“আপনি এতো সুন্দর জিনিস গিফ্ট করেন তাতে আমার যে কতো খুশি লাগে বলে বোঝাতে পারবো না ”
“হুম জানি আমার মহারানী অল্পতেই খুশি হয়”
“অসংখ্য ধন্যবাদ, এতো সুন্দর জিনিস আমাকে দেওয়া জন্য”
“রিয়াদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এই শাড়িটা পড়ো ”
“হুম পড়বো”
“আচ্ছা শুনো, আমি তোমার সাথে একশো দিন থাকতে পারবো তারপর তোমার সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। আমাকে অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্ত করতে তোমার মতো কোনো মেয়ে দরকার ছিলো। জাদুমন্ত্রী বলেছিলো,একশো বছরের মধ্যে তার বাড়ির কাছের কোনো সুন্দরী মেয়ে হয়, সেই মেয়ে যদি আমাকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে যা যা করতে হয় সেগুলো করে দেয় তারপর আমি অভিশপ্ত মুক্ত হবে ”
“কি করে আপনার অভিশাপ মুক্ত হবে সেগুলো কি আপনি জানেন? ”
“সব জানতাম না কিন্তু জাদুমন্ত্রীর একটা বড় বক্সের মধ্যে সব তথ্য লেখা ছিলো, আমি একদিন সেটা চুপিসারে দেখে জেনে নিয়েছি ”
“ওই যে একদিন মিষ্টি খাইয়ে ছিলেন সেটার স্বাদ তিতা ছিলো তারপর মিষ্টি হলো কিভাবে? ”
“তথ্যে লেখা ছিলো ওই মিষ্টি যদি বাগান বাড়ির পদ্ম ফুলের ভিতরে রেখে দেয় তাহলে ওটার স্বাদ পরিবর্তন হয়ে খুব সুস্বাদু মিষ্টি হবে ”
“জাদুকরী কি ধ্বংস হবে না?”
“সেটা তো ঠিক বলতে পারি না ”
“আর কোনো দিন কি ফিরে আসবেন না?”
“হ্যাঁ আসবো ”
“কবে আসবেন?
” যদি তোমার মনে আমার জন্য জায়গায় হয় তাহলে আসবো”
“ওহ্”
“আচ্ছা আমি এখন যাই ”
পরের দিন রিয়াদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে আলিবের দেওয়া জিনিস পড়ে ইভা সেজেছে। ইভাকে দেখে মনে হচ্ছে ওর গায়ে হলুদ। রাতের ঝলমলে আলোয় ইভাকে খুব বেশি সুন্দরী লাগছে। ইভার পাশের চেয়ারে একটা ছেলে বসে বললো,
-উহুম ম্যাডাম আপনার পরিচয় জানতে পারি?
-না পারেন না
-কেনো?
-আমার ইচ্ছে তাই
-ওক্কে ম্যাডাম।
ইভাকে লিমা ডাকতে আসে নানু প্রেশারের ওষুধ খায় নি তাই প্রেশার লো হয়ে গেছে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ইভা লিমার সাথে নানুর রুমে যাবে তখন ছেলেটা ইভার চুলের খোঁপায় লাল গোলাপ কেঁথে দেয়।
[