#তোমার_জন্য_ফিরে_আসা
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৮
“আজ তোমাকে আমার অতীতের কথা বলবো, তুমি আমাকে কতো বড় উপকার করলে তুমি নিজেও জানো না। তুমি সব কাজ ঠিক মতো করতে পেরেছো তার জন্য আমি তোমার কাছে চিরকৃতজ্ঞ ”
“আপনি তো আমাকে মহারানী বলেন তাহলে আপনার মহারানী আপনার জন্য এতোটুকু কাজ করতে পারবে না? ”
“হ্যাঁ মহারানী বলাটা আমার স্বার্থক হলো ”
“আচ্ছা এবার বলুন তো আপনার অতীতের কথা ”
“আমার বাবা অনেক জাদু জানতো। তার অনেক নামডাক আছে, বাড়ির অর্থিক অবস্থা ভালো। একদিন বাগান বাড়ির জাদুমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে আসে। সবাই উনাকে জাদুমন্ত্রী নামে চিনে। বাবার থেকে উনি নতুন নতুন অনেক জাদু শিখতে শুরু করে। বাবার সাথে সব সময় একটা হীরার আংটি থাকতো। উনি একদিন বাবার কাছে তার হীরার আংটি চায়, বাবা দিতে রাজি হলো না বাবা বুঝতে পারে জাদুমন্ত্রী কালো জাদু নিয়ে চর্চা শুরু করে। ধীরে ধীরে নিজের শক্তি লাভ করার জন্য মানুষ খুন করে।মানুষের রক্ত, শরীরে হাড় নিয়ে অনেক শক্তিশালী হতে সক্ষম হয়। তারপরও সব রকমের শক্তি অর্জন করার জন্য তার লাগলে কোনো জাদুকরীর প্রিয় জিনিস। আর জাদুকারী হিসেবে আমার বাবাকে বেছে নেয়। বাবার সেই প্রিয় জিনিসটা হচ্ছে তার হীরার আংটিটা।”
আলিব এটকু দম নিয়ে আবার বলতে শুরু করে
“জাদুমন্ত্রী ছলে কৌশলে আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার বাবাকে খুন করে তার আংটি নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময় আমি দেখে চিৎকার করে মাকে ডেকে আনতে জাদুমন্ত্রী তার কালো জাদু দিয়ে আমাকে আর আমার মাকে অভিশাপ দেয়”
“আপনি একদিন অভিশাপ মুক্ত হবেন। আপনার যা যা সাহায্য লাগবে আমি করবো কিন্তু আপনাকে কি অভিশাপ দিয়েছিলো সেটা তো বললেন না? ”
আলিব জানালা খুলে বাইরের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আমার হাতে সময় নেই এখন চলে যেতে হবে তবে সামনে আমার আরো অনেক পরীক্ষা আছে আশা করবো তুমি আমার সাথে থাকবে ”
“হুম থাকবো ”
“আমার মহারানী যে এতো ভালো ”
“রাজামশাইয় আপনি যে কি বলেন, আমি ভালো না হলে আপনাকে কে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে? ”
“সেটাই তো, নতুন মহারানী খুঁজলে বিপদ থেকে উদ্ধার হতে সময় লাগবে ”
“নতুন মহারানী লাগবে কেনো হুম, আমি আছি তো ”
“হাহাহাহাহ্, আসি এখন ”
আলিব চলে গেলো। ইভার বাকি রাত ঘুম হলো না। সকাল হতে ইভা এক কাপ চা বানিয়ে নিয়ে ছাঁদে গেলো। চায়ের কাপে চুমুক দিতে মনে পড়লো আলিবের কথা মানে ও বলেছি “যে কোনো জায়গায় ঘুরতে যেতে চাইলে নিয়ে যাবে ” ইভা সাথে সাথে আলিবকে ডাকে।
“এতো সকাল সকাল মহারানী আমাকে ডাকলো যে নতুন কোনো ইচ্ছে আছে নাকি? ”
“কেনো আমি শুধু আপনাকে প্রয়োজনে ডাকি, এমনি কি ডাকি না ? ”
“তা না তবুও আজকে অন্য রকম ”
“হুহ ”
ইভা একটা মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে ছাঁদের কোণে চলে গেলো। আলিব ওর সামনে একগুচ্ছ কদম ফুল ধরে,
“বর্ষার একগুচ্ছ কদম ফুল আমার মহারানীর জন্য ”
ইভা কদম ফুল গুলো হাতে নিয়ে মুচকি হেসে বলে,
“ধন্যবাদ ”
“কিসের জন্য ডেকেছো সেটা তো বললে না? ”
“ইয়ে মানে আমি একটু সুন্দরবন যেতে চাই ”
“আচ্ছা বেশ নিয়ে যাবো ”
ইভা খুশিতে আত্মহারা হয়ে আলিব জড়িয়ে ধরে । এই সময়ে ইভার মা ছাঁদে এসে দেখে ইভা হাত দুটো সামনে একটু বাঁকা করে রেখেছে (কাউকে জড়িয়ে ধরলে হাত যেমন থাকে) এরকম অবস্থা দেখে ওর মা বললো,
-তুই এটা কিরকম ব্যায়াম করছিস।?
ইভা ওর মায়ের কথা শুনে সাথে সাথে আলিবে ছেড়ে দিলো।ইভা আলিবের দিকে তাকাতে খুব লজ্জা পেলো, আলিব মুচকি হেসে উঠলো। ইভার মা বললো,
-কি কথা বলছিস না কেনো?
-আচ্ছা মা তুমি তাড়াতাড়ি করে নাস্তা রেডি করো কলেজে যেতে হবে।
-হুম তুই নিচে আয়।
ইভা রুমে গিয়ে একটু সাজলো। তারপর নাস্তা করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো । বাগান বাড়ির সামনে সাদা জবা ফুলের গাছ আছে সেখান থেকে দুটো জবা ফুল নিয়ে আলিবের হাতে দিলো। ইভা চোখে একপলকে সুন্দরবন চলে এলো। ইভা খুব খুশি হলো। সুন্দরবনের ভেতরে হাটতে আছে বেশ কিছুক্ষণ পরে ইভা লক্ষ্য করলো আলিব সাথে নেই তাহলে কোথায় গেছে? নির্জন বনে আশেপাশে কেউ নেই ইভার ভয় করছে ঠিক সেই সময় পুরুষ কন্ঠে একজন বললো!