দখিনের জানলা পর্ব -১৮

#দখিনের_জানলা (পর্ব-১৮)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

৩৬.
-‘উফ! এটা কি গান বাজাচ্ছিস তোরা? আর এত আওয়াজ কেন দিয়েছিস? মাথা ফেটে যাচ্ছে আমার!’

চমচমের খালামণি জোরে চিৎকার করে এই কথাগুলো বলতে বলতে রুমে প্রবেশ করলেন। তারিন আর পারিজাত তাড়াতাড়ি করে সাউন্ডবক্সটা বন্ধ করে দিল। চমচমের খালামণি খুব মেজাজি মানুষ। তারিন মাকে বাঘের মতো ভ’য় পায়। এতক্ষণ সাউন্ডবক্সটা অফ করল না আবার অন করতে দেরি হবে সেই ভেবে। আর অথচ এখন খালামণির আগমনেই তারা টুপ করে বক্সটা অফ করে দিল। দুজনেরই খুব রা’গ হচ্ছে। কিন্তু চুপ করে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। খালামণির কথা শুনে চমচমও একপ্রকার লাফিয় উঠে জানলা থেকে সরে দাঁড়ালো। সে এতক্ষণ কি করছিল নিজেই ভেবে অবাক হচ্ছে। ভ্যাবলার মতো দিন দুনিয়া ভুলে আব্রাহামকেই তাকিয়ে দেখছিল! খালামণি চমচমকে বললেন,

-‘কীরে! তুই না বললি বের হবি? এখনও যাসনি যে!’

-‘এই তো চা খেয়েই বের হবো ভেবেছিলাম।’

-‘চা খাওয়া শেষ?’

চমচম কাপের দিকে তাকিয়ে দেখল চা এখনও কাপেই রয়ে গেছে। সে দুই চুমুক দিয়েছিল কেবল! তড়িগড়ি কাপটা হাতে তুলে নিলো চমচম। তারপর বিছানায় বসে আরাম করে চা খেতে খেতে বলল,

-‘এই তো শেষ হয়ে যাবে এখনই।’

বলেই টুপ করে ঠান্ডা চা সবটা এক নিঃশ্বাসে গি’লে নিলো। খালামণি কাপ নিয়ে বের হতেই তারিন বলল,

-‘এই আপু? অফিসে যাবে!’

-‘না! শপিং এ যাব। আমি কিছুই কেনাকাটা করিনি। আপা কালকে এর জন্য বকাবকি করেছে।’

-‘ওমা! কিনো নি কেন? আমরা দুই সপ্তাহ আগে থেকেই সব কিনে রেখেছিলাম। এই! তারমানে কি তুমি আজ আমাদের মতো ম্যাচিং শারারা পরবে না?’

চমচম মৃদু হেসে বলল,
-‘না।’

-‘কেন?’ পারিজাত ব্যাকুল হয়ে প্রশ্ন করল।

-‘আমি এই বয়সে ওইসব পরতে পারব না। তাছাড়া শেলাতে দেই নি।’

-‘অদ্ভত! নিজের বোনের বিয়েতে তুমি এমন ম্যাড়ম্যাড়ে ভাব নিয়ে ঘুরবে? একটু সাজবে গুজবেও না?’

-‘সাজব না কেন? সাজব তো। আগে কেনাকাটা করে আসি।’

তারিন ফট করে আবদার করে বসল,

-‘আমাকে সাথে নিবে? আমার না লিপস্টিক কেনা হয় নি।’

-‘আচ্ছা আমাকে বল কোন কালারের আমি এনে দিব।’

-‘না না। কালার ফালার ফ্যাক্ট না। আমার পছন্দ হওয়া নিয়ে কথা। আমাকে সাথে নাও না! তাছাড়া তুমি বললে মা আমাকে যেতে দিবে। কালকে কয়েকবার বলেছি দেয়নি যেতে।’

পারিজাতও বলল,
-‘ওকে নিলে আমাকেও নিতে হবে আপু।’

চমচম কি বলবে বুঝতে পারছিল না। এদের সাথে নিয়ে গেলে প্যারায় পড়তে হয়। চমচম বাছাবাছি কম করে। টুপ করে এটা সেটা উঠিয়ে নেয়। কিন্তু এদের দশ দোকান না ঘুরলে শান্তি লাগে না। এদিকে ছোট বোন গুলোর আবদারও ফেলতে পারে না চমচম। তাই বলল,

-‘দশ মিনিট দিলাম তৈরি হ। এক মিনিট দেরি করলেও নিব না সাথে।’

-‘আচ্ছা।’

দুজনে হাসিখুশি মুখ করে বের হয়ে পড়ল। চমচমের হুট করেই আব্রাহামের কথা মনে পড়ল। এখনও কি মানুষটা সেখানে দাঁড়িয়ে আছে? সে উঁকি মা’র’তেই দেখল আব্রাহামের বারান্দাটা খালি। আব্রাহামের কোনো অস্তিত্বই নেই সেখানে। চমচমের নিজের অজান্তেই মনটা খা’রা’প হয়ে গেল। কেন হলো? সে জানে না। বুঝতেও পারছে না। তবে এই খা’রা’প লাগার অনুভূতি তৈরি হওয়া উচিত হয়নি এটা ঠিকই বুঝল।

শপিংমলে চমচম বাবার গাড়ি নিয়েই আসে। রহমত উদ্দিন তাদেরকে পৌঁছে দেওয়ার পর সে তার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলে,

-‘চাচা, বাড়ি চলে যান। আজকে অনেক কাজ আছে। গাড়ির দরকার পড়বে। আমরা বের হওয়ার আগে কল করব। তখন চলে আসবেন না হয়।’

-‘আচ্ছা আম্মা।’

রহমত উদ্দিন চলে যেতেই চমচম তারিন আর পারিজাতকে নিয়ে প্রথমেই তাদের দরকারি জিনিস গুলো কিনতে যায়। আর সবসময়ের মতো তারা এটা সেটা ঘাটাঘাটি করতে করতে সময় লাগিয়ে দিলো প্রচুর।

৩৭.
আব্রাহাম তখন চমচম সরে যাওয়ার পরই হেসে নিজের অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। কতটা সময় দুজন একে অপরকে দেখছিল ভাবতেই তার অদ্ভুত শি’হ’র’ণ জাগছে মনের মাঝে।

আব্রাহাম অফিসে যাওয়ার এক ঘন্টা পরই তার মা কল দিলেন। আব্রাহাম রিসিভ করতেই বললেন,

-‘বাবু?’

-‘হ্যাঁ মা বলো।’

-‘চিনির বিয়েতে তোর পরার জন্য তো কিছুই কিনলাম না। হলুদের জন্যে পাঞ্জাবি যেটা এনেছিলাম সেটাও তো তোর ফিট হয়নি। এখন তুই বল কি সাইজের লাগবে তোর। আমি নাহয় গিয়ে কিনে আনছি।’

-‘তুমি কেন যাবে? আমিই কিনে আনতে পারব।’

-‘তুই যাবি? তোর অফিস!’

-‘অফিস শেষ করেই যাব।’

-‘অফিস শেষ হতে হতে বিকাল হবে। আর তাছাড়া চিনির বিয়েতে একটু দায় দায়িত্ব আছে তো তোর। আমাদের পরম আপন তারা। আগে ভাগে এসে কাজ না করিস অন্তত পাশে থাকলেও তো ব্যাপারটা ভালো হয়।’

-‘জানি মা।’

-‘তুই এক কাজ কর। তুই বসুন্ধরাতে চলে যা। শুনেছি চমচমও গেছে শপিং করতে। ওর নিজেরও কেনাকাটা আছে। তুইও যা। দেখা টেখা হলে ভালো হয়।’

মায়ের ইঙ্গিত বুঝতে পেরে আব্রাহাম হাসল। মাকে বলল,

-‘চমচম ওর মতো সময় বের করে শপিং করছে আমিও আমার মতো সময় বের করে শপিং করব।’

-‘ওহ। আচ্ছা। বেশ! তোর যখন সময় হবে তখনই যাবি নাহয়।’

-‘হুম।’

আব্রাহাম কলটা কে’টে দিয়েই চট কর বসা থেকে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগল,

-‘আমার তো সময় এখনই হয়েছে। চমচম যখন যেখানে থাকবে আমিও তখন সেখানেই থাকব।’

পারিজাত আর তারিন অল্প কিছু জিনিস কিনেছে। কিন্তু তার জন্যেই এই মাথা ওই মাথা ঘুরেছে। তাদের সাথে চমচমকেও ঘুরতে হয়েছে। তবে ওদেরকে চমচম নিজের টাকা দিয়েই যা কেনার কিনে দিয়েছে।

চমচম এখন শাড়িই পরে বেশি। অফিস সহ সবজায়গাতেই শাড়িটাই পরা হয় সর্বক্ষণ। তাই চিনির বিয়ে,,হলুদ, রিসিপশন সবকিছুতেই শাড়ি পরবে বলে ঠিক করল। শাড়ির দোকানে এসে সে শাড়ি বাছতে লাগল। তখনই তার ফোনে কল আসে। আয়মান কল দিয়েছে। চমচম রিসিভ করে বলল,

-‘বলো ভাইয়া।’

-‘চমচি তুই কই রে?’

-‘মার্কেটে এসেছি।’

-‘কোনটায়?’

-‘বসুন্ধরায়।’

-‘কোন ফ্লোরে আছিস?’

চমচম ভ্রু কুঁচকে বলল,

-‘কেন? হঠাৎ এতসব জানতে চাইছ কেন? তুমি কি আশেপাশে আছো?’

-‘না নেই। তবে তুই বল। একটা দরকারি কাজ আছে।’

চমচম সবটা বলতেই আয়মান বলল,

-‘বের হবি না ওখান থেকে। বসে থাক পাঁচ মিনিটের মতো।’

চমচমের অবশ্য শাড়ি কেনাও হয়নি তখনও। তাই বের হওয়ারও প্রশ্নই আসে না। সে কিছু বলার আগেই আয়মান কল কে’টে দিল। চমচমের অবাক লাগছিল আয়মানের কাজ কারবার। কিন্তু তেমন ভাবল না। আবার শাড়ি দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

পাঁচ মিনিট পর চমচমের পাশের সোফায় কেউ একজন বসতেই সে এক পলক পাশ ফিরে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নেয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক আবারও সেদিকেই তাকায়। আব্রাহামকে দেখেই তার ভ্রু কুঁচকে গেল আপনাআপনি। দোকানদারও তখনই চমচমকে বলল,

-‘আপা? এইটাই দিব তাহলে?’

চমচম দোকানদারের দিকে তাকালো। শাড়িটা একবার দেখে বলল,

-‘হ্যাঁ। এটাই দিন।’

পারিজাত বলল,
-‘ধুর! হলুদে এটা পরবে? এটা একটুও মানান সই না। নিও না এটা।’

চমচম আব্রাহামের উপস্থিতিতে পুরো ঘেটে গেছে। কি বলবে কি করবে বুঝতেও পারছে না। আব্রাহামকে তারিন খেয়াল করল। বলল,

-‘আব্রাহাম ভাইয়া না?’

আব্রাহাম হেসে মাথা ঝাকায়। বলে,
-‘হ্যাঁ।’

-‘আপনাকে তো এতক্ষণ দেখি নি ভাইয়া। কখন এসেছেন?’

-‘এই তো মাত্রই।’

পারিজাত বলল,
-‘ভাইয়া দেখেন তো এই হলুদে এই শাড়িটা পরলে আপুকে কি মানাবে?’

আব্রাহাম এক পলক তাকিয়ে দেখল। তারপর বলল,

-‘তোমার আপুকে সব শাড়িতেই মানাবে।’

চমচম চট করে আব্রাহামের দিকে ফিরল। আব্রাহামও তার মুখের দিকেই তাকিয়ে রইল। তারিন বলল,

-‘তারপরেও এটা ভালো লাগছে না। আমরা সব পরব গোল্ডেন, ইয়েলো আপু পরবে কফি কালার?’

আব্রাহাম শাড়ি গুলো দেখতে লাগল। তারপর একটা হলুদ আর সোনালী পারের সিল্কের শাড়ি দেখিয়ে বলল,

-‘এটা কেমন?’

তারিন আর পারিজাত শাড়িটা নেড়ে চেড়ে বলল,

-‘বাহ! এই তো এটাই তো কত সুন্দর। আপু তুমি এটা নাও প্লিজ!’

চমচম দ্বি’ধা’দ্ব’ন্দ নিয়ে একবার শাড়িটায় চোখ বুলায়। না খা’রা’প নয়। কিন্ত আব্রাহাম চুজ করেছে। তাই সে বলল,

-‘উহু। এটা নিব না।’

আব্রাহাম কথাটা শুনে চমচমের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। পারিজাত বলল,

-‘না। এটাই নিবে তুমি। আমাদের বেশ পছন্দ হয়েছে। প্লিজ!’

চমচম দুই ঠোঁটে চে’পে ধরে রাখল কিছুক্ষণ। তারপর আমতা আমতা করে বলল,

-‘তোদের পছন্দ হয়েছে বলেই নিচ্ছি। অন্য কারো পছন্দে নিচ্ছি না।’

দুজনে কথাটা শুনে খুশি হয়ে গেল। আব্রাহামও মাথা নিচু করে মুঁচকি হাসল। দোকানদার শাড়িটা প্যাক করতে করতেই বললেন,

-‘ভাইজানের চয়েজ অনেক ভালো বলতে হয়। বউ যেমন সুন্দর চয়েজ করছে, বউয়ের জন্য শাড়িও তেমন সুন্দর দেখে নেয়।’

চমচম হা করে তাকিয়ে রইল দোকানদারের দিকে। কি বলবে বুঝতেই পারছিল না। দোকানদার কি তাকে আব্রাহামের বউ ভেবে নিয়েছে নাকি? সে আব্রাহামের দিকে তাকায় আবার। দেখতে পায় আব্রাহামের চোখে মুখে প্রশান্তি খেলা করছে। সে মিটিমিটি হাসছে। আব্রাহামের এই মিটিমিটি হাসি চমচমের সবচেয়ে অপছন্দ। দেখলেই মনে হয় কিছু তো দু’ষ্টু বুদ্ধি আটছে। সে থম মে’রে বসে রইল। বিয়ের আর রিসিপশনের শাড়িটাও নিতে হবে।

এরপর বিয়েতে পরার, রিসিপশনে পরার শাড়িও আব্রাহামই পছন্দ করে দিল। চমচমের পছন্দকে পারিজাত আর তারিন খুব পঁ’চা’লো। একবার একটা হাতে নিলেই,

-‘ছিঃ কি ব্যাড চয়েজ আপু তোমার! তোমার জামাইটাও দেখছি আব্রাহাম ভাইকে চুজ করে দিতে হবে। নাহলে কি না কি জুটিয়ে বসে থাকবে? বলা তো যায় না।’

ছোট বোনদের অ’প’মা’ন গুলো দাঁতে দাঁত চেপে হজম করল চমচম। বিল পে করার সময় চমচম যখন ক্রেডিট কার্ড দেয় ক্যাশিয়ারের হাতে তখন পেছন থেকে আব্রাহাম চোখ দিয়ে ইশারা করে। লোকটাও ইঙ্গিত বুঝতে পারে। বুঝতে পেরে সেও ঢং করে কয়েকবার কার্ডটা মিছিমিছি মেশিং এর সামনে নিয়ে বলল,

-‘আপু! কার্ড তো কাজ করছে না।’

কথাটা শুনে চমচমের মাথায় যেন আকাশ ভে’ঙে পড়ল। সে বলল,

-‘কি বলছেন? কাজ করবে না কেন? কালকেও আমি ইউজ করলাম।’

-‘জানি না আপু। তবে এখন কাজ করছে না।’

চমচম এখন কি করবে? শাড়ি নেওয়া শেষ। অনেক বিল উঠেছে। ক্যাশও নেই তার কাছে। শাড়ি রেখেও তো চলে যাওয়া যায় না। তাই বলল,

-‘আচ্ছা। আমি দেখছি।’

চিনিকে কল করতে নিলেই পারিজাত বলে,

-‘কি করছ?’

-‘আপাকে কল করি। দেখি কিছু ব্যবস্থা করা যায় কিনা!’

আব্রাহাম বলল,

-‘বিলটা আমি পে করছি।’

চমচম তেঁ’তে উঠে বলল,

-একদমই না!’

তারিন বলল,

-‘আমার আর ভালো লাগছে না। বাসায় যাব। এখন চিনি আপুকে কল করে কি বলবে? তাকে আসতে বলবে? আসলেও তো কত দেরি। তাছাড়া ভাইয়া যখন বলছে তখন ভাইয়ার থেকেই নাও আপাতত। পরে তো দিয়েই দিবে।’

পারিজাতও তাল মেলায়,

-‘হ্যাঁ। ভাইয়াকে পরে শোধ করে দিও।’

চমচম কটমট দৃষ্টিতে আব্রাহামের দিকে তাকালো। আব্রাহাম ক্রেডিট কার্ডটা বের করে দিলো। বিল পে করে সবাই যখন দোকান থেকে বের হয় তখন আব্রাহামকে পারিজাত বলল,

-‘ভাইয়া আপনি তো কিছুই নিলেন না!’

-‘নিব। আমি জেন্টস্ শপে ঢুকব।’

-‘তবে এখানে এলেন যে?’

-‘তোমাদের দেখতে পেয়েই এসেছিলাম।’

-‘ওহ। তাহলে চলেন। আপনি কি কিনবেন আমরাও সাথে গিয়ে দেখি। দরকার পড়লে চয়েজ করে দিব।’

তারিনের কথা শুনে চমচম বলল,

-‘মাত্র না বললি তোর খা’রা’প লাগছে বাসায় ফিরবি?’

-‘ভাইয়া আমাদের হেল্প করেছে কত। এখন তাকে সঙ্গ না দিলে ব্যাপারটা বা’জে দেখায় না?’

অগত্যা আব্রাহামের কেনাকাটার পুরোটা সময় চমচমকে সাথে থাকতে হয়েছে। দুই তিনজন তাকে আব্রাহামের সাথে দেখে ভাবি বলেও ডেকেছে। প্রতিবার চমচম বিনয়ের সাথে বলেছে সে আব্রাহামের পরিচিত। এর বাহিরে আর কোনো সম্পর্ক নেই। আব্রাহাম চমচমের এমন সহজ স্বীকারোক্তি স’হ্য করতে পারছিল না। কিন্তু কিছু বললও না। আসলেই তো। চমচম তো আর তার বউ না!

ফেরার পথে রহমত উদ্দিনকে কল করলে তিনি জানান তাকে পুরান ঢাকা কাজে যেতে হয়েছে। চমচমের বাবা সাথে আছে। ফিরতে দেরি হবে। আব্রাহাম বলল সেও বাড়ি যাচ্ছে। তার সাথেই যেতে সবাইকে। শুনেএএ চমচম উবার ডাকতে নেয় কিন্তু পারিজাত আর তারিন এবারেও তার পরিকল্পনায় বাম হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলে,

-‘ভাইয়াও তো বাসায় ফিরছে। ভাইয়ার সাথেই যাব।’

চমচমের ইচ্ছা করছিল বলতে,

-‘এত ভাইয়া ভাইয়া করে ঢলে পড়ছিস কেন? দুলাভাই লাগে তোদের!’

কিন্তু এটা বললেও স’ম’স্যা হবে। চমচম জানে ওদের জবাব কি হতে পারে। ওরা বলবে,

-‘হলে বেশ হবে।’

তাই চমচম আর কিছু বলল না।

তারিন বলল,
-‘কি হবে ভাইয়ার সাথে গেলে? তুমি এমন কেন করো? চলো না। প্লিজ। আমার সত্যিই ভালো লাগছে না।’

না চাইতেও আব্রাহামের গাড়িতেই বসতে হলো। ওই দুজন আগে ভাগে পেছনে বসে বলল,

-‘আপু তুমি সামনে বসো। ভাইয়া তো আর ড্রাইভার না!’

চমচম দাঁত কিড়মিড় করে সামনে গিয়ে বসল। চমচমের না’স্তা’না’বু’দ চেহারা দেখে আব্রাহাম হাসে। চমচমের ইচ্ছে করছিল আব্রাহামকে ঠা’স করে একটা চ’ড় মে’রে বলতে,

-‘নে এবার একটু কাঁদ। খুব তো হাসলি!’

#চলবে।

(আপনারা ১৬ পর্বে এত ভালো রেসপন্স করেছিলেন। অথচ ১৭ তে খোঁজ নেই তেমন। আমি খুব আশা নিয়ে বসেছিলাম আপনাদের মন্তব্যের। আগের দিন মন্তব্যে যেখানে শতক পার করেছে সেখানে পরের পর্বে টেনে টুনে অর্ধশতক। মানা যায়? আপনারাই বলুন! নিয়মিত লেখা দিয়েছি। তারপরেও রেসপন্সের এই দশা কেন?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here