দুষ্টু_মিষ্টি_প্রেমকথণ পর্ব ৫

#দুষ্টু_মিষ্টি_প্রেমকথণ 💖💖
#পর্বঃ০৫
#লেখিকাঃতাবাসসুম_তোহা

হা হা হা হা!!! তোতাপাখি ওরফে মিসেস:শাহরিয়ার আজ তুমি শেষ।

আমি ঢোক গিলে এক পা পিছিয়ে গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে গেলাম।

মাথা চুলকাতে চুলকাতে রোদ্দুর ভাবনায় ডুব দিয়ে বললো

কি যেনো বলেছিলে আমাকে তুমি?? খা..খম্বা… হ্যা মনে পড়েছে,,,মনে পড়েছে খাম্বা,,, হুম তুমি আমায় খাম্বা বলেছিলো। তাই না?? বাকা হেসে বললেন,,,,,এখন দেখো খাম্বা শরীরের উপর পড়লে কেমন লাগে,,। রোদ্দুর বিজয়ের হাসি হেসে ইয়া লম্বা একটা খাম্বা নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন,,,,,আমার চোখ ইয়া বড়ো বড়ো হয়ে গেলো তার এমন কান্ডে। রোদ্দুর একদম কাছে এসে পড়েছে,,,,একদম কাছে,,, কি করি?? কি করি,,,আমি!! এই মুহুর্তে কিছু না করলে তো আজ এই খাম্বার তলে পরে আমার ভবো লীলা সাঙ্গ হয়ে যাবে। এই মুহুর্তে কিছু না ভেবেই দিলাম সামনের দিকে স্বজোড়ে এক লাথি। কারো চিৎকার শুনে ধরফরিয়ে উঠে বসলাম,,,,উঠেই আগে নিজের শরীর ভালোভাবে হাতিয়ে নিলাম,। যাক, এইটা স্বপ্ন ছিলো, আমি বেচে গেছি। ভেবেই বুকে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে এক লম্বা শ্বাস ছেড়ে সামনের দিকে তাকালাম।

হি হি,,,হু হু,,হা 😅!! আপনি ঐভাবে মেঝেতে বসে আছেন কেনো??? বেক্কেল মার্কা হাসি হেসে বললাম,,,
রোদ্দুর আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মনে মনে ভাবছি″ কেন আল্লাহ্?? কেন?? তুমি আমার সাথেই এমনটা করো?? এই বাড়িতে আসার পর থেকে এমন একটা দিনও তুমি বাদ রাখো নাই,,, যেদিন আমি এই রাগী বনমানুষ টার সাথে কোনো সংঘর্ষে লিপ্ত হয় নাই🤦‍♀️″

Are you crazy?? or have you some mentally issues?? (তুমি কি পাগল?? নাকি তোমার মানসিক কোনো সমস্যা আছে??)
রোদ্দুরের ঝাঝালো কন্ঠ শুনে নিজের হুসে ফিরে তাকালাম সামনের দিকে,,,এতোক্ষনে সে মেঝে থেকে উঠে বসেছে। আমার বুঝতে আর বাকি রইলো না,, স্বপ্নে যাকে লাথি মেরেছি আসলে স্বপ্নে না বাস্তবেই তাকে লাথি মেরে ফেলেছি। আমি কি করবো?? এতে আমার দোষ কই???🤷‍♀️সব দোষ তো উনারই,,,কাল আমার সাথে যা করলো তারপর থেকে তো কাল সারারাত ইনি আমার মাথার মধ্যে নিউজ ফিড এর মতো ঘুরাঘুরি করেছেন। এখন এমন একটা স্বপ্নও দেখলাম তাও আবার উনাকে নিয়েই।

Damn it!!! চুপ করে আছো কেনো?? আমাকে এইভাবে লাথি মারার কারন কি??? চেচিয়ে বললো রোদ্দুর,,,

আমি ভাবছি কি বলবো,,,,হঠাৎ আমার পঞ্চ ইন্দ্রিয় আমার মাথার নিউরনে একটা ভাবনার সঞ্চার করালো,,,উনিতো আমার সাথে খাটে ঘুমান না। খাটের ডান পাশের সোফাটায় ঘুমান। তাহলে আমার পা কি পেত্নির পা হয়ে গেলো নাকি?? যে এখান থেকে আমি উনাকে লাথি মেরে ফেলে দিছি??😳😳 ভাবা মাত্রই কথা মুখ ফুটে বলে ফেললাম,,,

আচ্ছা,, আচ্ছা এক মিনিট মি:শাহরিয়ার। আপনি ই বলুনতো আপনি যদি ঐ সোফায় ঘুমিয়ে থাকেন আর আমি যদি এই বিছানায় থাকি,,,তাহলে?? কিভাবে আমি আপনাকে এখান থেকে লাথি মেরে ফেলে দিলাম,,সন্দেহের চাহুনি দিয়ে🤨

রোদ্দুরতো এইবার ঘাবড়ে গেলো,,,। আসলে তখন কায়নাতকে ঐভাবে বেঘোরে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে রোদ্দুর নিজেকে আর সামলাতে পারেনি,,, তার তোতাপাখিকে আরো কাছ থেকে দেখার বাসনা জাগে মনে,,,, তাই তো সে নিজের লোভ সামলাতে না পেরে,,, কায়নাতের কাছে যাচ্ছিলো আর তখনি কায়নাত ওমন একটা কান্ড ঘটিয়ে বসে যার জন্য এখন রোদ্দুরের খুবই বিরক্ত লাগছে,,,

কি হলো মি: শাহরিয়া,,, তুড়ি বাজিয়ে বললো কায়নাত!!

রোদ্দুরের ধ্যান ভাঙলো,,, আর সে বিরক্তি নিয়ে বললো,,,,তখন তুমি ঘুমের মাঝে কেমন যেনো করছিলে তাই আমি তোমাকে দেখার জন্য গিয়েছিলাম

আমাকে দেখার জন্য?😳

মানে তোমার কি হয়েছে তা দেখার জন্য গিয়েছিলাম,,,বলেই রোদ্দুর হন হন করে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায়,,,আরেকটু হলেই ধরা পড়ে যাচ্ছিলো সে।

এইদিকে কায়নাত বাম হাত দিয়ে কোমড় ধরে ভাবছে। আমি আবার ঘুমের মাঝে কেমন করছিলাম??

________________________________________________________________________________

ফ্রেশ হয়ে নিচে যাচ্ছি। রোদ্দুর আগেই ফ্রেশ হয়ে একদম রেডি হয়ে নিচে চলে গেছে,, হয়তো খেয়েই অফিসে চলে যাবে। এইবাড়িতে তো আবার সবকিছু টাইম টু টাইম হয়। ভাবতে ভাবতেই নিচে খাবার টেবিলের সামনে চলে আসলাম। খাবার টেবিলের সামনের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা দেয়াল ঘড়ি টায় দেখলাম এখন ৮টা বেজে ০৫ মিনিট, তার মানে আরো ১০ মিনিট সময় আছে। যাক ঠিক সময় মতো আসতে পেরেছি।

এখনো বাড়ির সবাই আসেনি। শুধু রিফার আম্মু মানে মিসেস:শাহরিয়ার বাদে প্রায় সবাই এসে বসে আছে টেবিলে। দিদুন আমাকে দেখেই হাসি মুখে বললেন,,,

আরে কায়নাত ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?? আসো আসো এখানে এসে বসো। আমিও হাসি মুখে গেলাম। রোদ্দুরের পাশের আসনটায় আমাকে বসতে বললো,,,অনেক ইতস্তবোধ করে বসে পড়লাম সেখানে। একটু পর মিসেস: শাহরিয়ার ও এসে পড়লেন। আর সবাই নিশ্চুপে খাওয়া শুরু করলো।

________________________________________

খাবার শেষে রোদ্দুর তার কাজে চলে গেছে। রিফা ও কলেজে চলে গেলো,,,এখন আমি ই শুধু একা বসে আছি। এই বাড়িতে তো কেও কথাই বলে না। সবার মুখ বাংলার পাঁচের মতো করে রাখে সবসময়। হঠাৎ ই আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো কতোদিন ধরে আমার ভার্সিটিতে যাওয়া হয় না। আমি কি আদেও আর পড়ালেখা করতে পারবো?? একবার রোদ্দুর কে বলে দেখি,,, যদি অনুমতি দিয়ে দেয়।
*
*
ঘরের বেলকনিতে এসে দাড়ালাম। এখন বৃষ্টির মৌসুম আর এখন হলো বিকাল। আর এই বৃষ্টির দিনে বিকাল বিলাস এর মজাই আলাদা। সুর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে পড়ছে,, আকাশে হাল্কা লাল আভা,, পাখিরা সব তাদের বাসার দিকে পাড়ি জমাচ্ছে,,,চারিদিকে সব কিছু ধীরে ধীরে নিস্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টির দিনে বিকেল বেলায় জানালা দিয়ে বাইরের প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য দেখা আমার নিতান্তই একটা পছন্দের কাজ। আর সাথে চা থাকলে তো কথাই নেই,,,,চায়ের কাপে এক চুমুক দিয়ে একঝলক এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য,, মনকে ভালো করতে আর কি চাই!!(লেখিকা তার একটি পছন্দ এখানে তুলে ধরলো🥰) হঠাৎ আমার চোখ নিচে বাগানের দিকে গেলো। মুহুর্তেই আমার মুখে একটা হাসি ফুটে উঠলো। উফ্ এতো বড়ো একটা ফুলের বাগানে এই সন্ধ্যা বিকেলে হাটার ইচ্ছা আমার অনেক আগে থেকেই ছিলো। তাই আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না। ছুট দিলাম বাগানের উদ্দেশ্যে।

বাইরে বাগানে পৌছে আমার চোখ গেলো বাগানের একটা গাছের ডালে বসে থাকা আহত পাখির দিকে। মনেহয় বৃষ্টির সময় ই কোনোভাবে আঘাত পেয়েছে এই ছোট্ট পাখিটা। আমি আর কোনোদিকে খেয়াল না করে বাগানের দিকে যেতে নিলাম। আমার মাথাই ছিলো না যে, এই বৃষ্টির দিনে বাগানে কাদা হয়ে থাকবে,,, যে ভয়টা ছিলো সেইটাই হলো বাগানের মাটিতে পা রাখতেই স্লিপ কেটে পড়ে গেলাম কিন্তু শুধু আমি না সাথে আরেকজনকে নিয়ে পড়লাম।
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে

(আজকের পার্টটা ছোটো করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত হাতে ব্যাথার কারনে বড়ো করে লিখতে পারিনি আর আজকে একটু কমেডি লেখার চেষ্টা করেছি,,,অবশ্য আমি নতুন লেখিকা তাই লেখাকে এতো ভালোমতো ফুটিয়ে তুলতে পারি না,,,তবে যা পারি আলহামদুলিল্লাহ 🥰 আপনারাও গঠনমুলক মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করবেন আসা করি এবং আমার ভুল ত্রুটিগুলো আমায় ধরিয়ে দিবেন😊)

#_Farju_💜

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here