নুর পর্ব ৩৪+৩৫

#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-34-35
#34
“মহানবী হযরত রাসূল সাঃ বলেছেন,

“যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমআ থেকে এ জুমআ পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে”

{আত তারগীব ওয়া তারহীবঃ ১/২৯৮}

মেহেরাব বসে আছে নিজের সিটে। এখন রাত।এই সিজন লন্ডনের তুষার বৃষ্টির সিজন। আবহাওয়ার গতিবিধি বোঝা মুশকিল। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কেউ বের হয়না বাহিরে ঠান্ডায় জমে যেতে। রাস্তাঘাট সাদা সাদা বরফের চাদরে ভরে থাকে।পরিবেশটা এমন যে, হঠাৎ দেখে মনে হবে এ যেন পৃথিবীর কোন দৃশ্য নয়। ভয়ংকর অতিপ্রাকৃত, অলৌকিক পরিবেশ। এমন ভয়ংকর রাতের দৃশ্য বরাবর মেহেরাব ফ্রেন্ডেসদের সাথে উপভোগ করে।লং ড্রাইভ, ডিস্কো,পার্টিতে সারা রাত মেতে থাকতো একটা সময়।আজকের দিনগুলো ভিন্ন। সে আর আগের সে নেই। তার জীবনের আসল উদ্দেশ্য আর লক্ষ্য সে অনুধাবন করেছে। পরিষ্কার বুঝতে পাচ্ছে তার কাছে পুরো পৃথিবীর ঐশ্বর্যের সুখ থেকে প্রাণপ্রিয় স্ত্রী মোম আর সৃষ্টিকর্তার উপস্থিত লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি গুন দামী৷ রাতের ফ্লাইটে সে অচেনা একটি দেশে যাবে। যে দেশের নামও ভালো করে শুনেনি, দেশ সম্পর্কে, দেশের মানুষ সম্পর্কে মিনিমাম আইডিয়া নেই। সংস্কৃতি, ভাষা, মানুষ সবকিছুই তার কাছ থেকে আলাদা। সে যে পরিবেশে বড় হয়েছে তার থেকে কতটা আলাদা সেটা সে চিন্তাতেও আনতে পাচ্ছে না। বাংলাদেশের কোন জায়গায় সে যাবে সেটাও জানেনা। শুধু জানে প্রাণপ্রিয় স্ত্রী মোমের কাছে যাবে। মহান আল্লাহর রাস্তায় চলবে।
নিজ দেশের মায়া কাটিয়ে মেহেরাব অবশেষে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হঠাৎ করেই। মোম ছাড়া সে এক সেকেন্ডও টিকতে পাচ্ছিল না। সবকিছু অন্ধকার লাগছিল। মোম চলে যাওয়ার সাথে সাথে মেহেরাবের বেঁচে থাকার আলোটাও চলে গেছে। প্রিয় মানুষের অভাব পৃথিবীর কেউ পূরণ করতে পারেনা। তার জায়গাও কেউ নিতে পারেনা।
.
.
মোম বারান্দায় বসে আছে। মোমের বাবা মসজিদ থেকে ফিরছিল।
দোতলার বারান্দায় মেয়েকে দেখে একটা নারিকেল গাছের নিচে দাড়িয়ে পড়লেন। মেয়েটার মধ্যে একটা কিছু পরিবর্তন তিনি লক্ষ্য করেছেন। আর কেউ না করলেও তিনি করেছেন। কি পরিবর্তন হয়েছে সেটা তিনি ধরতে পাচ্ছেন না।
মোম প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ বারান্দায় বসে ছিল। মোমের বাবাও দুই ঘন্টা যাবৎ নারিকেল গাছের নিচে দাড়িয়ে ছিলেন।
তিনি চাঁদের আলোয় মেয়েকে দেখছিলেন। মেয়ের ডাকে উনার জ্ঞান হলো উনি কোথায় দাড়িয়ে আছেন। পেছনে উনার লোকজনের দিকে তাকিয়ে একটু লজ্জা পেলেন তিনি।
সবাই মাটির দিকে তাকিয়ে থাকলেও তিনি বুঝতে পেরেছেন সবাই তাকে নিয়ে কি ভাবছে। নিজের মেয়েকে কেউ এতোক্ষণ লুকিয়ে লুকিয়ে কেন দেখে এটা কারও মাথায় আসছেনা।
-বাবা কি করছো?
নারিকেল গাছের নিচে দাড়িয়ে আছো কেন?
মেয়ের কথায় তিনি একটু লজ্জা পেলেন।।
কোনরকম মাথা নাড়ালেন।
-বাবা এক্ষুনি উপরে চলে এসো।
আবহাওয়া ভালো না। শরীর খারাপ করবে।
মেয়ের তার প্রতি কেয়ার দেখে একটু খুশি হলেন তিনি।

মোম আকাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আকাশ ভর্তি তাঁরার মেলা। বিশাল চাঁদের উজ্জ্বল আলোয় ভরে উঠেছে পৃথিবী। মোমের মনে হচ্ছে অন্যদিনের চেয়ে আজকের আকাশটা একটু বেশি রহস্যময় লাগছে। রাতের কালো ধবধবে আকাশটা তাকে কিছু অনুভূতি দিয়ে যাচ্ছে । কারও উপস্থিতি জানান দিতে চাচ্ছে । মোমের চোখ থেকে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। মেহেরাবের কথা খুব মনে পড়ছে। মানুষটা যখন পাশে ছিল তখন তার কদর বুঝেনি। এখন যখন নেই তখন অনুভব করছে তাকে। মোম নিজেও জানেনা মেহেরাব ধীরেধীরে কখন ঠিক কতটা জায়গা তৈরি করেছে নিজের জন্য মোমের ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে। মেহেরাবের থেকে সে এখন অনেক দূরে। মেহেরাব চাইলেও তার কাছে আসতে পারবে না। তাকে বুকে আগলে রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে পারবে না। মেহেরাবের ছেলেমানুষী দুষ্টুমি গুলো কে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে খুব। মোম যাকে কাছে টানতে চায় তাকেই সে হারিয়ে ফেলে।
.
রাতের খাবার খেতে বসেছে মোম। পাশে বাবা আর ছোট মা। ছোট মা বাবা এবং মেয়েকে একসাথে খেতে বসিয়েছে। অন্দরমহলের দাসিরা সব আয়োজন নিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে মোমের বাবা মিজানুর খন্দকার আসার আগেই। মোমের ছোট মা আসিয়া বানু পরিবেশনে ব্যাস্ত। দিনের বেলা বাড়িটা যতটা না সমাগম ছিলো আত্মীয় স্বজনের এখন তারচেয়ে বেশি মনে হচ্ছে।চারদিক থেকে লোকজনের হৈচৈ শোনা যাচ্ছে। মোমদের বাড়িটা মোমের কাছে সব সময় অদ্ভুত মনে হয়েছে ছোট বেলা থেকেই। মোমদের কাছের আত্মীয় স্বজন তেমন নেই। তবুও সব সময় বাড়িতে লোকের সমাগম একটু বেশি থাকে সারা বছর। সব সময় আনন্দ আনন্দ ভাব থাকে পুরো বাড়িটা তে।
-তুমি তো কিছুই খাচ্ছো না।
মোমের ছোট মা আস্তে করে কথাটা বলল মোমের কানে।
-তোমার বাবাকে দেখ তিনিও কিছুই খাচ্ছে না তোমার জন্য। তোমার পছন্দের বিরিয়ানি রান্না করা হয়েছে ময়মনসিংহের সেরা বাবুর্চি দিয়ে।রান্না যতক্ষণ ধরে চলছিল তোমার বাবাও ততক্ষণ ধরে দাড়িয়ে তদারকি করছিলেন। তুমি তোমার বাবার পাগলামো তো জানই।
মোম একটু লজ্জা পেলো। সে জানে সে না খেলে বাবাও খাবে না। মুখে একটা দানাও তুলবে না। মোমের মোটেও খেতে ইচ্ছে করছে না।
খাবার মুখে তুলতেই গলায় আঁটকে যাচ্ছে।
তার মনে কতটা ঝড় বয়ে চলেছে সেটা কেউ জানেনা। বাবার আদরের মেয়ের কষ্টের ঝড় দেখতে বা অনুভব করতে পাচ্ছে না বাবা।
প্রকৃতির ঝড় সবাই দেখতে পায় কিন্তু মনের ঝড় কেউ দেখতে পায়না।
যদি দেখতে পেতো তাহলে প্রকৃতির ঝড় থামানোর জন্য যে চেষ্টা করা হয়, মনের ঝড় থামানোর চেষ্টা করা হতো।
মোম মনের বিরুদ্ধে বিরিয়ানি মুখে দিলো।
-কেমন টেস্ট? মশলা ঠিক হয়েছে? না আরও দরকার ছিলো।
মোম বাবার দিকে তাকিয়ে আছে।
মিজানুর খন্দকার চিন্তিত স্বরে বললেন – জানতাম মশলা-লবন কিছুই হয়নি। নিরামিষ হয়েছে। আরে বাঙালিরা তো একটু বেশি ঝাল খাবার পছন্দ করে। তবে না মুখে রুচবে স্বাদ। বাবুর্চি কে একাই এক মণ চালের বিরিয়ানি খাওয়াব। কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
মোম এক প্লেট বিরিয়ানি শেষ করে আরেক প্লেট নিলো।
-বাবা অনেক দিন পর আসল বিরিয়ানির টেস্ট পেলাম। তোমার প্লেট এখনো ভর্তি।
তুমি কি খাবে না? তাহলে আমি তোমার প্লেটে নিয়ে নিই?
মোম বাবার প্লেটের বিরিয়ানি নিয়ে খাচ্ছে ।
মেয়ের তৃপ্তি সহকারে খাওয়া দেখে মিজানুর খন্দকারের চোখে পানি এসে গেলো। আনন্দের পানি। তিনি মা মেয়ের কাছ থেকে চোখের পানি গোপন করলেন।
দোতলার কর্ণার নিকষ ভূতূড়ে অন্ধকার । মনে হয় বাড়িতে একটিও লোক নেই। নিরব পরিবেশ।
কামরায় টোকা দিলো মোম।
-ভেতরে আয়।
-কিভাবে আসব? চোখে কিছুই দেখছি না।
-তোর চোখের পাওয়ার কম। ভিটামিনের ঘাটতি।
মোম বড় ভাই মিনহাজের স্পর্শ পেলো।
-ভাইয়া তুমি এরকম নির্জনে কিভাবে থাক? দরজা -জানালা সব বন্ধ । লাইট পর্যন্ত অফ। চারদিকে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার ।
মিনহাজ মোমবাতি জ্বালালো।
-লাইট ফিউজ?
কাউকে বলে আসব?
-চুপ করে বসে থাক। কাউকে বলতে হবে না।
আমি আমার মতো থাকছি। বেশ আছি। আমি অন্ধকারের মানুষ । অন্ধকারে থাকব।
-তুমি রাতে কিছু খেলে না যে?
আমরা অপেক্ষা করেছি তোমার জন্য ।
-আমরা নয় বল আমি। শুধু তুই।
-তুমি কি এখনো কিছু ভুলতে পাচ্ছো না?
তোমার আর বাবার মধ্যে ঠান্ডা ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে সেটা আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝি। তোমরা আপোষ করছো না কেন?
মিনহাজ জানালা খুলে দিলো। বাইরের ঠান্ডা হাওয়ায় নিমিষেই ঘরভর্তি হয়ে গেলো।
-তুই এসব বুঝবি না। বিষয়টি আমার আর বাবার।
-ভাইয়া আমার ভয় করছে। তোমাদের যুদ্ধ কবে শেষ হবে?
-আমি মাঝে মাঝে ভয়ংকর ডিসিশন নিয়ে ফেলি। মনে হয়, মনে হয় সবকিছু ধ্বংস করে ফেলি।
আদরের বোনের মুখে ভয়ের ছাপ দেখে মিনহাজ হেসে ফেললো। মোম কে সহজ করার জন্য বলল- তুই কিন্তু একদিনেই মোটা হয়ে যাচ্ছিস। এভাবে চলতে থাকলে গিনেস বুকে তোর নাম উঠে যাবে।
মোম হেসে ফেললো।
চলো তুমি খাবে আমার সামনে। আমি তো এসেছি, এবার সব ঠিক করে দেব।
– ক্ষিদে নেই তাছাড়া দুপুরে এতো খেয়েছি যে তিন দিন না খেলেও চলবে। মোম হেসে ফেললো।
জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ঘরটা তে।
আজ দুই ভাই বোন একসাথে হয়েছে । মিনহাজ মজার মজার জোক্স বলে চলেছে আর মোম হেসে চলেছে।

.
মেহেরাব এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের সবকিছু তার কাছে ভিন্ন। ধনী দেশে তার জন্ম। মধ্যবিত্ত দেশ সম্পর্কে নো আইডিয়া।
চারপাশে কত লোকজন। সবাই তাদের পরিজন, প্রিয়জনের জন্য দাঁড়িয়ে আছে রিসিভ করতে। শুধু মেহেরাবের কেউ নেই যে তাকে রিসিভ করবে। অনেকটা সময় ধরে দাড়িয়ে আছে সে একা।
কোন দিকে যাবে ঠিক করতে পাচ্ছে না। চারদিকে মোমের উপস্থিতি অনুভব করছে মেহেরাব। মেহেরাব কে লক্ষ্য করে এক টেক্সি ড্রাইভার কাছে এলো।
-এনি প্রবলেম স্যার?
-নো। থ্যাংকস ।
লোকটা চলে গেলো না। বরং মেহেরাব কে অবজার্ভ করছে।
-চলুন আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসি স্যার।
(ইংরেজি)
-ঠিকানা জানিনা (ইংরেজি)
-অসুবিধা নেই। যেতে যেতে ঠিকানা খুঁজে নেবেন।বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় আমার পরিচিত। হাতের তালুর মুঠোয়। চলুন স্যার।
মেহেরাবকে এক প্রকার জোর করে নিজের টেক্সিতে তুলে নিলো।
-স্যারের নাম?
-মেহেরাব ইসলাম খান।
-স্যার দেখছি মুসলিম। আমিও মুসলিম। মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই হা হা হা!
– হ্যাঁ ভাই ভাই।
-স্যারের বাড়ি কোথায়?
– লন্ডনে।
-আমার বাড়ি স্যার নোয়াখালী ।
স্যারের দেশে কি কোন আত্মীয় আছে? নাকি মেয়ে ফ্যাক্ট।
মেহেরাব বুঝতে পাচ্ছে না লোকটা কে সব খুলে বলবে নাকি।
সে এই দেশে কাউকে চেনে না। এই প্রথম একটা লোকের সাথে তার পরিচয় হলো। লোকটা মোমের দেশের লোক। অবশ্যই লোকটা কে বিশ্বাস করতে হবে। নয়ত মোম আর মোমের দেশের অপমান।
একজন কাউকে বলা দরকার নয়ত সে একা অচেনা দেশে মোম কে খুঁজতে পারবে না। কেউ ওর ইংরেজি বোঝে না আর সেও কারও বাংলা বোঝে না।
-তুমি ইংরেজি ভালো জানো।
কোথা থেকে শিখলে?
-স্যার আমি লন্ডনে টেক্সি ড্রাইভার ছিলাম। সেখানকার সাহেবদের কাছ থেকে শেখা। মাশাআল্লাহ আল্লাহর দয়ায় বেশ ভালো ইংরেজি বলতে পারি। আমি হলাম স্যার একজন গ্রেজুয়েট ।
আমার নাম আলামিন। যার অর্থ হলো সত্যবাদী ।
-লিসেন আলামিন আমি তোমাকে কিছু কথা বলব। আমার সাহায্য দরকার। তুমি সেই লোক যে আমাকে সাহায্য করতে পারবে। টাকাপয়সার কথা চিন্তা করো না। যা লাগবে তার দশগুন দেব।
সব শোনার পর আলামিন গম্ভীর হয়ে বলল-কাজটা কঠিন তবে আমি পারব। আপনাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাব।
আমার চেনাজানা লোকজন আছে তারা আমাদের সাহায্য করবে। টাকাপয়সার কথা বলে আমাকে অপমান করবেন না। একটু পর বুঝবেন আমাদের দেশের লোকজন কিভাবে ভীনদেশীদের আপ্যায়ন জানায়।
দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভ শেষে আলামিন মেহেরাব কে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে গেলো। আশেপাশে কোন লোকজনের হদিস নেই। একেবারে ফাঁকা ।
-এই যে স্যার আরেকটু কষ্ট হবে।
-জায়গা টা নির্জন ।
মেহেরাব চারদিকে চোখ বুলাচ্ছে। পুরনো কোন গ্যারেজ মনে হচ্ছে ।
হঠাৎ করেই কিছু লোক বের হয়ে আসলো। ২০-২৫ জন।
আলামিন তাদের কি যেন বলল বাংলায়। সবাই হাসলো।
মেহেরাব কিছুই বুঝতে পারলো না তার আগেই সবাই ঝাপিয়ে পড়লো তার উপর । মেহেরাব প্রতিবাদ করছে না। চোখের সামনে কয়েকজন তার সর্বস্ব নিয়ে নিচ্ছে। হঠাৎ মেহেরাবের মাথায় তীব্র যন্ত্রণা হলো। কেউ মনে হয় মাথার পেছনে লোহার আঘাত দিয়েছে। মেহেরাবের চোখ অন্ধকারে ছেয়ে গেলো। সে ইচ্ছে করেই কাউকে আঘাত করলো না। মোমের দেশের লোক। তাছাড়া মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই। মেহেরাব অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। মোমের মুখখানা ভেসে উঠেছে। মেমের চোখে পানি। মেহেরাবের বলতে ইচ্ছে করছে। সুইটহার্ট । মাই বিউটিফুল প্রিন্সেস ডোন্ট ক্রাই। দেখো আমার কিছুই হয়নি। আই এম ফিট।
.
❤আল কুরআনের ৮১টি উপদেশবাণীর ১টি বাণীঃ
৩৪। পরিবারের উপর কর্তৃত্ব চালাবে পুরুষ। [সূরা নিসা ৪:৩৪]
.
চলবে……💔💔💔
.
.
#নূর💔
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-35
পা থেকে রক্ত পড়ছে টুপ টুপ করে। জায়গা টুকু খানিকটা রক্তে ভিজেছে। মোম একটু আগেই দিঘির সিঁড়িতে পা পিছলে পড়েছে। পা কেটেছে বেশ খানিকটা।
-উফফ , কতখানি কেটেছে। রক্ত বন্ধ করতে হবে।
কিভাবে কাটলো? দেখে শুনে হাঁটতে পারিস না?
মিনহাজ মোমের পায়ে ব্যান্ডেজ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।
মোমের সেদিকে খেয়াল নেই। মোমের হাতে পায়ের রক্ত লেগে আছে। মোম রক্তে ভেজা হাতখানার দিকে তাকিয়ে আছে।
-হঠাৎ পা পিছলে পড়ে গেলাম।
জানিনা কিভাবে পড়লাম।
-বাবা দেখলে কি কান্ড ঘটবে সেটা তো জানিস। বাবা তার আদরের মেয়ের গায়ে একটা ফুলের টোকাও সহ্য করতে পারে না।
তোর এই সিচুয়েশন দেখলে নির্ঘাত ফিড হয়ে যাবেন।
মেহেরাব কে সবাই আড় চোখে দেখছে। সাদা ধবধবে এক ফরেনারের গায়ে ছেঁড়া পোশাক। এমন ফরেনার সচক্ষে কেউ দেখেনি।
মেহেরাব কে নিয়ে বেশ খানিকটা জটলার মতো হয়েছে । লোকজন ফিসফিস করে কথা বলছে।
মেহেরাবের সারা গায়ে কাটাছেঁড়া দাগ। যখন জ্ঞান ফিরলো সে নিজেকে একটা নির্জন ডাস্টবিনে আবিষ্কার করলো।
মেহেরাব কয়েক মুহুর্ত পর বুঝতে পারলো সে কোথায়। তার সাথে কি হয়েছে ।
মেহেরাব নিজেকে সামলে নিলো। সে বাংলাদেশের ভাঁওতাবাজি লোকদের পাল্লায় পড়েছিল। দুঃখজনক । মেহেরাব মুচকি হাসলো। মোমের দেশের লোকেরা তাকে ভালো শুভেচ্ছা জানিয়েছে। একটা বেশ মনে রাখার মতো এডভেঞ্চার হলো।
মেহেরাব একা একা হাটতে হাটতে বাজারের মধ্যে চলে এলো। সর্বপ্রথম তাকে একটা থানায় যেতে হবে। সেখান থেকেই তাকে পাসপোর্ট উদ্ধার করতে হবে।
ব্যাগপত্র, চ্যাক বই,ডলার গুলো নিয়ে মেহেরাবের মাথা ব্যথা নেই। মোম নেই তো কিছুই নেই। কি হবে ডলার দিয়ে যেখানে ভালোবাসা নেই। লাগেজে একটা মুল্যবান খাম ছিল। মোমকে লেখা কিছু চিরকুট।
মোমের হোস্টেল রুম থেকে মেহেরাব এগুলো উদ্ধার করেছে।
মোমের সৃতি বলতে শুধু খাম ভর্তি চিরকুট গুলো।
মেহেরাব কে অনেকেই এটা সেটা জিজ্ঞেস করছে। মেহেরাব কিছুই বুঝতে পাচ্ছে না। এখানে আসার আগে বাংলা কিছুটা শেখা উচিৎ ছিলো। মেহেরাব জানতো না ভাষা না বোঝার জন্য তাকে এতো বড় বিপদে পড়তে হবে।
মেহেরাবের মাথা ঘুরছে। গলা তৃষ্ণায় ফেটে যাচ্ছে । ক্ষিদে পেয়েছে বেশ। মোম চলে আসার পর থেকে কিছুই মুখে দিতে পাচ্ছে না সে।
এখন অবশ্য বেশ জোরালো ক্ষিদে অনুভব হচ্ছে ।
মেহেরাব ফাঁকা ময়দানে বসে পড়লো। তাকে ঘিরে ভীড় তৈরি হলো। বিদেশি সাহেব কে সবাই অভজার্ভ করছে।
আলামিন সবাই কে ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়েছে। সবার ভাগ বেশ বড়সড় হয়েছে । আলামিন নিজের ভাগ বুঝে নিলো।
যেহেতু সে লোকটা কে এনেছে সেহেতু সে একটু বেশি ভাগ পেলো। মেহেরাবের লাগেজ টা তার ভাগের বেশি পরিমাণ ।
সাদা মোটা খাম খুলে সে হতাশ হলো। ভেবেছিল এখানে বেশ কিছু ডলার পাওয়া যাবে।
চিরকুট গুলো সে এক এক করে ডাসবিনে ফেলে দিতে থাকলো।
.
ভিড় ঠেলে কেউ একজন মেহেরাবের দিকে এগিয়ে এলো।
মেহেরাব তাকে চিনতে পারলো।
মোম হাসপাতালে এসেছে। নিজের জন্য নয়। বাবার জন্য । মিজানুর সাহেব মেয়ের পায়ের ক্ষত দেখে হতভম্ব হয়ে গেলেন।তড়িঘড়ি করে মেয়ের কাছে যাওয়ার সময় পা পিছলে মাথায় আঘাত পেয়ে নিজেই ফিড হয়ে গেলেন। মিনহাজ আর মোম দুই ভাইবোন বাবার কান্ড দেখে হতভম্ব ।
মোম হাসপাতালের করিডোরে দাড়িয়ে আছে। পায়চারি করছে করিডোরে ।
মিনহাজ বাবার সাথে আছেন। মেহেরাব কে ডক্টর দেখানো হলো। ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে কিছু ঔষধের প্রেসক্রিপশনও তাকে দেওয়া হলো।
আলামিন প্রেসক্রিপশন হাতে ঔষধ আনতে গেলো মেহেরাব কে হাসপাতালের করিডরে বসিয়ে। মেহেরাব কে ইনজেকশন দেওয়া হয়ে। সে ক্লান্তির ভাবে চোখ বন্ধ কটে ঝিমাচ্ছে । মোম বারংবার মেহেরাবের পিছন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে । ভাগ্য দু’জনকে আবারও এক জায়গায় এনে ফেলেছে। দু-জনের মনেই অস্থিরতা । মেহেরাব চোখ বন্ধ করে মোম কে অনুভব করে যাচ্ছে । মোম পাশে থাকলে যেমন অস্থিরতা অনুভ হয় এখনও সেরকম অস্থির অস্থির লাগছে।
মোম একদিন ওদিক চোখ বুলাচ্ছে। তার চোখে মুখে স্পষ্ট অস্থিরতার ছাপ।
ভাগ্য তাদের নিয়ে খেলা করে যাচ্ছে ।
আলামিন ঔষধ নিয়ে মেহেরাবের কাছে এলো।
-দুলাভাই ঠিক আছেন? এখন কেমন ফিল করছেন?
মেহেরাব হাসলো চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায়।
-আপনি আমাদের দেশের এক বোন কে বিয়ে করেছেন। হিসেবে আপনি আমাদের দুলাভাই। আমি আপনার শ্যালক। শ্যালক হয়ে দুলাভাইয়ের সাথে একটু মশকরা করলাম। কিছু মনে নেবেন না দুলাভাই। চলুন বাড়ি চলুন।
রেস্ট নেবেন। আমাদের বোন কে অবশ্যই খুঁজে বের করে আপনার হাতে তুলে দেব আল্লাহর নাম নিয়ে বললাম। যতক্ষণ পর্যন্ত খুঁজে বের না করব বোন কে ততক্ষণ পর্যন্ত স্বস্তি নেই আমার। (ইংরেজি)
এদিকে মিনহাজ মোমের সাথে মিজানুর সাহেবের কন্ডিশন নিয়ে কথা বলছে। দুজন ওয়ার্ড বয় উনাকে ধরে ধরে নিয়ে আসছে। ডক্টর বলেছে ভয়ের কোন কারণ নেই। এখন বাড়ি নিয়ে বিশ্রামে রাখতে হবে। রোগীর মধ্যে যে উত্তেজিত ভাব থাকে তা কমাতে হবে। তা না হলে যেকোনো সময় আল্লাহ তায়ালার কাছে চলে যেতে পারে।
মিজানুর সাহেব ছেলেমেয়েদের সামনে এসে একটা বিস্তৃত হাসি দিলেন বাচ্চাদের মতো।
একপাশ দিয়ে আলামিন মেহেরাব কে নিয়ে যাচ্ছে । অন্য পাশ দিয়ে মিনহাজ আর মোম তাদের বাবা কে নিয়ে যাচ্ছে ।
ময়মনসিংহ মেডিক্যালের গেইট থেকে বের হয়ে দুজন দু’দিকে চলে গেলো। মেহেরাব টেক্সিতে উঠার সময় চারদিকে চোখ বুলালো।
আলামিন মেহেরাবের কাঁধে হাত রাখলো।
-এনি থিং রং?
-নাথিং। লেস গো।
মোম গাড়িতে উঠে মেডিক্যাল গেইটের দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলো। ড্রাইভার যতক্ষণ না স্টার্ট দিচ্ছিল ততক্ষণ ধরে সে তাকিয়ে রইল। তার চোখ জোড়া নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে লাগলো।
মোম বাবা কে স্যুপ খাইয়ে দিলো। ঔষধ খাইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার সময় তার চোখ ভিজে উঠলো। সে বুঝতে পারলো দুনিয়াতে তাকে দুটি মানুষ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। একজন বাবা। আরেকজন…. । ভাবতেই মোমের মুখখানা লাল হয়ে উঠলো।
মিজানুর সাহেব ঘুমের ভাব ধরে আছে। তার নাক ডাকার অভ্যাস আছে বলে নাক ডাকারও একটা অভিনয় করে যাচ্ছেন।
মেয়ের হাত বুলানো তে তিনি প্রচন্ড সুখ অনুভব করছেন। জেগে থাকলে মেয়েটা লজ্জায় হাত বুলিয়ে দেবে না।
মেহেরাবের বাবা কিং লায়ার সাহেব লন্ডন থেকে বিভিন্ন ভাবে একমাত্র ছেলের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশে তার কিছু ব্যাবসায়ীদের মাধ্যমে ।
-এট এনি কস্ট আমি আমার ছেলের খোঁজ চাই। নয়ত তোমাদের বিজনেসের দফারফা করে ফেলব।
এদিকে মেহেরাবের মা ছেলের চলে যাওয়ার খবর শুনে একের পর এক চিঠি পাঠিয়ে যাচ্ছে লায়ার সাহেব কে।
সবগুলো চিঠিতেই আছে ভয়াবহ হুমকি। তিনি লায়ার সাহেবের নামে থানায় একটি জিডিও করেছেন আমেরিকা থেকে।।ছেলের বাবা ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসম্যান হলে তিনিও ছেলের মা হিসেবে মার্কিন জনপ্রিয় গায়িকা।সমস্ত মিডিয়া তার পক্ষে ।
ছেলের চলে যাওয়ার পেছনে তিনি লায়ার সাহেব কে দায়ী করেছেন। ছেলের পছন্দ করা বউ কে মেনে নিলে একমাত্র সন্তান এভাবে লাপাত্তা হতো না। তাই সমস্ত দোষ লায়ার নন্দ ঘোষ।
.
মেহেরাব কে আলামিন ময়মনসিংহে নিজের ছোট ফ্ল্যাটে এনেছে। আলামিনের বাবার বাড়ি নোয়াখালী । মায়ের বাড়ি বরিশাল। সে বড় হয়েছে দূরসম্পর্কের মামার সাথে ময়মনসিংহে।
মেহেরাব রেস্ট করছিল। ক্লান্তি ভাবটা দূর হয়েছে । বেশ কয়েক দিনও কেটে গেলো। আলামিনের সাথে মেহেরাবের জানি বন্ধুক্তও হয়ে গেলো।

মেহেরাবের পাসপোর্ট আর চিরকুট গুলো আলামিন ফেরত দিলেও ডলার গুলো ফেরত দিতে পারেনি। ভাগ বাটোয়ারা হয়ে সেগুলো বিলি হয়ে গিয়েছে। মেহেরাব এটা নিয়ে সম্পূর্ণ নির্বিকার। আলামিন মহা চিন্তায় আছে।সে আজীবন টেক্সি চালালেও এতো পরিমাণ ডলার ইনকাম করতে পারবে না। তাকে যে করে হোক ফেরত দিতে হবে। সেজন্য মূল্যবান কিছু বিক্রি করতে হবে। এই মুহুর্তে তার কাছে মূল্যবান একমাত্র জিনিস হলো নিজের দুটো কিডনি । সে ডলার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকা মেহেরাব কে ফেরত দিতে চায় নিজের কিডনি বিক্রি করে হলেও। কিডনি বিক্রি করতে হবে গোপনে। মেহেরাবের আড়ালে।
মেহেরাব কে মোটামুটি বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা থিওরী প্রদান করেছে আলামিন। বাংলাদেশের মানুষ , এদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য,খাদ্যাভ্যাস, বাঙালির মন মানসিকতা,বাংলা ভাষা, বাংলাদের ইতিহাস ইত্যাদি ইত্যাদি ।
ফজরের নামাজ পড়ে টেক্সি নিয়ে বের হয় দুজন। আলামিনের পাশে ড্রাইভার সিটে বসে থাকে মেহেরাব। পেছনে থাকে প্যাসেঞ্জার। মোম কে খোঁজার সাথে সাথে কিছু ইনকামও তুলে নেয় তারা টেক্সি দিয়ে। ময়মনসিংহের রাস্তাঘাট, গলি গুলো তে খুঁজে বেড়ায় মোম কে। মোম বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মেয়ে এটাই একমাত্র মোমের ঠিকানা মেহেরাবের কাছে। নামাজের সময় হলে ভাগ্য সহায় থাকলে আশেপাশে মসজিদ পেলে সেখানেই নামাজ সেরে নেয় দুজন। মসজিদ না পেলে নির্জন কোন জায়গায় নামাজ আদায় করে নেয়।
পরিচ্ছেদঃ ৮/৩১. যেখানেই হোক (সালাতে) কিবলামুখী হওয়া।

৪০০. হযরত জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ “নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন- সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যে দিকেই মুখ করত না কেন। কিন্তু যখন ফরজ সালাত আদায়ের ইচ্ছা করতেন, তখন নেমে পড়তেন এবং ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হতেন।”
(১০৯৪, ১০৯৯, ৪১৪০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯১)

بَاب التَّوَجُّهِ نَحْوَ الْقِبْلَةِ حَيْثُ كَانَ

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ أَبِي عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ فَإِذَا أَرَادَ الْفَرِيضَةَ نَزَلَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ.

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
Book: সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
Chapter: ৮/ সালাত (كتاب الصلاة)
সহীহ বুখারী হাদীস নম্বর: ৪০০/400/٤٠٠
Sahih Bukhari Hadith no: 400

-> Narrated Jabir:

Allah’s Messenger (ﷺ) used to pray (optional, non-obligatory prayer) while riding on his mount (Rahila) wherever it turned, and whenever he wanted to pray the compulsory prayer he dismounted and prayed facing the Qibla.
[ Sahih Bukhari: 400 ]

সকালে তারা রাস্তার পাশে অতি নগন্য হোটেলে নাশতা সেরে নেয় পরোটা গোশত দিয়ে। দুপুরে মিডিয়াম হোটেলে কোনদিন পোলাও, কোর্মা, রেজালা দিয়ে আবার কোন সময় বিরিয়ানি, তেহারি, নেহারি দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারে। রাতে ছোট ফ্ল্যাটে দুজন মিলে রান্না করে সাধারণ খাবার ভাত, ডাল, ভাজি, ভর্তা ইত্যাদি । মেহেরাবের প্রথমে বাঙালি খাবার খেতে অসুবিধা হয়েছিল।ঝাল মসলা তৈলাক্ত খাবারে সে অভস্ত্যত নয় এখন তার মনে হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ট খাবারের তালিকায় বাঙালি খাবার গুলো এক নম্বরে দেওয়া উচিৎ । মেহেরাবের বর্তমানে বাঙালি প্রিয় খাবার পোলাও, সাদা ভাত, গোশত, পরোটা এবং বিরিয়ানি, তেহারি। মেহেরাবের ওজন কয়েকদিনে বেড়েছে বেশ। প্রতি সপ্তাহে ওজন পাঁচ কেজি করে বাড়ছে। মেহেরাবের নিত্যদিনের কাজ হচ্ছে হরেক রকমের বাঙালি টেস্টি খাবার খাওয়া। মেহেরাব যেন মোম খুঁজতে বাংলাদেশে আসেনি, সে এসেছে বাঙালি খাবার খেতে।

দিনের বেলা মোমকে খোঁজার সময় মনে হয় মেহেরাবের বুকের উপর একটা ভারি কিছু বসে আছে। রাতের বেলা সেটা আরও প্রকট হয়। মোম কে খোঁজে না পাওয়া পর্যন্ত বুক থেকে ভারি বস্তুটি নামবে না কো ক্রমেই। এদিকে আসলামের চিন্তাও আছে। সে তো মোমের ঠিকানা জানে।
মোম রাতে বাগানে হাঁটছে একা একা৷ বাড়ি ভর্তি এতো লোকজনের হৈচৈ যে মাথা ধরেছে মোমের। চাঁদের আলোয় বাগান আলোকিত হয়ে চিকচিক করছে। মোমের মনে হলো কেউ তাকে অনুসরণ করছে। তার পিছনে হাঁটছে । মোম হাঁটা বন্ধ করে থমকে দাঁড়ালো ।
তার বুক ধকধক করছে পিছন ফিরে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দেখার জন্য ।

.
❤আল কুরআনের ৮২টি উপদেশবাণীর ১টি বাণীঃ

৩৫। অন্যদের জন্য সদাচারী হও। [সূরা নিসা ৪:৩৬]
.
চলবে…..💔💔💔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here