নেশা ২ পর্ব ৬

নেশা💞
Season 2
Ayusha Akter Usha
“”6″”
কুয়াশা ডাইনিং টেবিল গোছাচ্ছে আর মুন্নির (সার্ভেন্ট) সাথে গল্প করছে।টেবিল গোছানো শেষ হলেও তাঁদের গল্প শেষ হচ্ছে না।গল্পের মূল বিষয় মুন্নির গ্রামের বাড়ির কাহীনি।সেগুলো শুনে কুয়াশা হাসতে হাসতে শেষ।এমন সময় হঠাৎ করেই সম্রাট কোথা থেকে এসে কুয়াশা কে ধুম করে কোলে নিয়ে রুমের দিকে হাঁটা দিল।কুয়াশা অবাক চোখে সম্রাটের দিকে তাকিয়ে আছে।আবার লজ্জা ও পাচ্ছে।এইভাবে মুন্নির সামনেই কোলে নেওয়ায়।শুধু যে মুন্নি তা তো নয় বাড়িতে কতগুলো গার্ডস ও আছে।কিন্তু সেদিকে সম্রাটের কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই।সে নিজের মতো হেঁটেই চলেছে।সম্রাট রুমে এসে দরজা লক করে কুয়াশাকে নামিয়ে দরজার সাথে চেপে ধরল।
-আরে কি করছেন।আমাকে এই ভাবে নিয়ে এলেন কেন।
-কি করছিলে ওখানে।
-কি আর করব গল্প করছিলাম।মুন্নির সাথে।
-ওহহ তুমি এখন গল্পে লেগে আছো এইদিকে আমি যে অফিসে যাবো তার কোনো খেয়াল আছে তোমার।
-আপনি অফিসে যাবেন তো আমি কি করব।
সম্রাট কুয়াশার সামনে টাই তুলে ধরল।
-কে পরিয়ে দেবে।
-কেন আপনি পরতে পারেন না
-সম্রাট পারে না এমন কোনো কাজ নেই।
-তাহলে।।।
-কিন্তু বউয়ের হাতে পরিয়ে নেওয়ার অনুভুতি টাই আলাদা।
সম্রাটের কথা শুনে কুয়াশা মুচকি হেসে টাই টা নিয়ে তাঁকে পরাতে লাগল।সম্রাট কুয়াশার কোমর জড়িয়ে ধরে তাঁকে দেখতে লাগল।কুয়াশা সম্রাটের এই নেশা ভরা চাহনি দেখে লজ্জায় আটখানা হচ্ছে।টাই পরা শেষ হলে কুয়াশা সম্রাট ছাড়াতে চাইলে সম্রাট তাঁকে আরো কাছে টেনে নেয়।এবার কুয়াশার বুকের ঢিপঢিপ শব্দ টা বারতে লাগল।সম্রাট কুয়াশার দিকে এগোতে লাগল।কুয়াশা চোখ বন্ধ করে সম্রাটের ছোঁয়ার অপেক্ষা করতে লাগল।এমন একটা সময় কেউ দরজায় নক করল।।।কুয়াশা চট করে চোখ খুলল।সম্রাটের দিকে তাকাতেই দেখে সে চরম বিরক্তির উপর পর্যায়ে চলে গেছে।সম্রাটের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।আর সময় পেল নক করার।দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগ কোন্ট্রোলে এনে বলল
-হোয়াট কি চাই।।।
বাইরে থেকে আওয়াজ এলো
-স্যার বড় সাহেব আপনাকে ডাকছেন।
-ডেড কে গিয়ে বলো আমি আসছি।
-ওকে স্যার।
সম্রাটের অবস্থা দেখে কুয়াশা ঠোঁট চেপে হাসি বন্ধ করার চেষ্টা করছে।এটা সম্রাট বুঝতে পেরে ভ্রু কুচকে বলল
-হোয়াট হেপেন্ড।হাঁসছো কেন।
এবার আর কুয়াশা নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না।শব্দ করে হাসিতে ফেটে পরল।কুয়াশার হাসি দেখে সম্রাটের রাগ হলো।
-আমাকে ব্যাঙ্গ করা হচ্ছে ওয়েট।
বলেই কুয়াশা দুই হাত দরজায় চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিল।কুয়াশার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।

-আমাদের খুব শিঘ্রই নিউইয়র্ক যেতে হবে।খুব বড় একটা ওফার এসেছে।
-আমি যেতে পারবো না ইউ ক্যান গো।
-হোয়াট।যেতে পারবে না মানে।তুমি খুব ভালো করেই জানো ক্লাইন্ডস আমাদের খুব বিশ্বস্ত।
-বিশ্বস্ত হোক আর যাই হোক না কেন আমি এই মূহুর্তে নিউইয়র্ক যাচ্ছি না।আমি এখন কুয়াশা কে একা ছাড়তে পারি না।
-মানে।
-মানে খূব সিম্পল ডেড আমার প্রতিদ্বন্দ্বী রা সবাই ওত পেতে রয়েছে।একটা সুযোগ পেলে সবাই আমাদের ছিড়ে খাবে।আমার ওপর প্রতিশোধ নিতে তারা কুয়াশা কেও নিজের টার্গেট বানাতে পারে।আমি এই রিস্ক নিতে পারবো না।কুয়াশাকে একা ছাড়তে পারবো না।
-তাহলে কুয়াশা কে সাথে নিয়ে চল।
-অসম্ভব ডেড।তুমি জানো নিউইয়র্ক আমাদের জন্য কত বড় বিপদ জনক।আমি কুয়াশা কে ওখানে নিয়ে যেতে পারবো না।
-কিন্তু এর আগে তো কখনো এতোটা ভয় পাওনি।আগে তো সবসময় তুমি নিজে যেতে ডিল ফাইনাল করতে।
-কারন আগে আমার জীবনে কুয়াশা ছিল।এখন আছে।আমি ওকে নিয়ে কোনো রকম রিস্ক নিতে পারবো না।আমি ওকে হারাতে পারবো না।
-আর যখন কুয়াশা তোমার সত্যিটা জেনে যাবে তখন কি করবে।
-আই ডোন্ট নো।আমি জানি না কি করব।বাট আমি কুয়াশা কে ছাড়া বাঁচব না।ও আমার অস্তিস্ত।ওকে আমি কখনো নিজের থেকে দূরে যেতে দেব না।দেটস ইট।
বলেই সম্রাট রুম থেকে বেরিয়ে গেল।রায়হানের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠেছে।এই প্রথম বার নিজের ছেলের মুখে কাউকে হারানোর ভয় দেখলো সে।সম্রাট খান যাকে আন্ডারওয়াল্ডের বড় বড় ডন রা পর্যন্ত ভয় পায় আজ সে একটা মেয়েকে নিয়ে ভয় পাচ্ছে।এই ভয়টা একসময় রায়হানের ও ছিল।কিন্তু সে বুঝতে বড্ড দেরী করে ফেলেছিল।তার আগেই তার সহধর্মিনী কে তাঁকে হারাতে হয়।যেন কালো বিজনেসের জন্য সে তার স্ত্রী কে হারিয়েছে রায়হান চেয়েছিল সেই কাজ থেকে সে বিরত থাকবে।কিন্তু তার আগেই সম্রাট এই বিজনেসে ভয়ংকর ভাবে লিপ্ত হয়ে যায়।মায়ের মৃত্যুর পর সে আরো হিংস্র হয়ে ওঠে।মানুষ খুন করা তার নেশা হয়ে যায়।দিনে দিনে সম্রাটের ক্ষোভ পুরো আন্ডারওয়াল্ডে ছড়িয়ে পরে।হাজার বলার পর ও যখন সে এই বিজনেস থেকে নিজের নাম সরাতে সম্রাট নারাজ তখন রায়হান ডিসিশন নেয় সম্রাটের বিয়ে দেওয়া।কিন্তু তাতেও তিনি সফল হচ্ছিলেন না।তবে এখন তিনি সফল।সম্রাটের মনে কুয়াশা জন্য এই ভয় টাই পারবে তাঁকে এসব কাজ থেকে দূরে সরাতে।শুধু সঠিক সময়ে তাঁকে তার ভয় টার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।কুয়াশাই পারবে সম্রাটের হিংস্র জীবনে রঙিন ফুল ফোটাতে।

রাত দশটা।কুয়াশা সম্রাটের কোলে।কুয়াশা বুঝতে পারছে না সম্রাট তাঁকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।কুয়াশাকে জোর করে সাজিয়েছে।কেন সাজিয়েছে সেটাও বলে নি।লাল টকটকে শাড়ি আঁচল ছেড়ে পরেছে।মুখে হালকা মেকাপ।চোখে কাজল।কপালে স্টোনের টিপ।কানে স্টোনের ঝুমকো আর হাত ভর্তি লাল চুরি।চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে।অবাক করার কথা হলো এই সাজটা কুয়াশা এর আগেও একবার সেজে ছিল।হ্যাপি নিউ ইয়ারে।আবার এই ভাবেই আজ তাঁকে সম্রাট সাজিয়েছে তাতে খূব অবাক হচ্ছে কুয়াশা।সম্রাট কুয়াশাকে একটা বেনুতে এনে নামিয়ে দিল।কুয়াশা অবাক হয়ে চারিদিক দেখছে।এটা সেই সে লেকের ধারটা।আজ শুধু এখানে বেনু সাজানো হয়েছে।তার মাধ্যে সুন্দর করে ডিনার টেবিল।চারিদিকে লাইটিংয়ের আলোয় ঝলমল করছে।কুয়াশা মুগ্ধ হয়ে চারিদিক দেখছে।এমন সময় লাইট অফ হয়ে গেল।চারিদিকঃ অন্ধকারে ছেয়ে গেল।কুয়াশা ভয় পেয়ে সম্রাট কে খুঁজতে লাগল।কিন্তু এ কি সম্রাট কোথায়।কুয়াশা এদিক ওদিক গিয়ে সম্রাটকে খুঁজছে কিন্তু কোথাও নেই সম্রাট।এমন সময় লেকের পারে তাকিয়ে কুয়াশা অবাক হয়ে গেল।চোখ বড় বড় করে সেদিকে তাকিয়ে রইলো।
to be continue….
দয়া করে গঠন মূলক কিছু কমেন্ট করুন💝💝

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here