প্রণয় পর্ব -৩১

#প্রণয়
#পর্বঃ৩১
#তানিশা সুলতানা

তানহার দিন কাটে বিষন্নতায়। প্রিয় মানুষটির অবহেলা সয্য হচ্ছে না ওর। একটা বারের জন্যও সূচক কথা বলে না ওর সাথে। আজকে দুই মাস হয়ে গেলো সূচককে দেখেই না ও। বাড়ি কি ফিরে না লোকটা?
সেই যে দুই মাস আগে একবার দেখেছিলো। তারপর পর থেকে একদম দেখে না। বড়মার থেকে জেনেছে গভীর রাতে বাড়ি ফেরে। তানহা অপেক্ষা করে না ওর জন্য ভয়ে। যদি সত্যি সত্যিই বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু এতো অবহেলার কারণ কি?

আজকে ইমনের ভাগনী ইরিনের মুখে ভাত আজকে। মুখে ভাত অবশ্য পাঁচ মাসেই দিয়েছে। আজকে আবার সাত মাসে দেবে। তানহা তোহার দাওয়াত রয়েছে সেখানে।
তানহা বড়বাবার থেকে হাজার টাকা নিয়েছে ভালো একটা গিফট কিনবে বাবুর জন্য। তোহার একদম যাওয়ার ইচ্ছে নেই। তবুও তানহা খুঁচিয়ে যাচ্ছে। ইমনের প্রতি তানহার খুব শ্রদ্ধা ভালোবাসা। কতো ভালোবাসে তানহাকে। একদম আপন বোনের মতো।

তাজ সকাল সকাল রেডি হয়ে বসে আছে তানহাদের সাথে যাবে। কিন্তু তানহা তোহা কেউ ওকে নেবে না। প্রচন্ড দুরন্ত ছেলেটা। এখান থেকে ওখানে ছোটাছুটি করবে। ওরা কেউ ওকে সামলাতে পারবে না।
এই নিয়ে একচোট কান্না করেছে তাজ। শেষ মেষ সাদিয়া বেগম তাজকে নিয়ে দোকানে গেছে। আর ওদের বলে গেছে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়তে।

কখনো শাড়ি পড়া হয় নি কারোরই। গত ঈদে বড়বাবা দুজনকেই নীল শাড়ি কিনে দিয়েছে। আজকে ভেবে রেখেছে নীল শাড়ি পড়বে। শাড়ির কথা শুনে তোহার যাওয়ার ইচ্ছে প্রবল হয়। শাড়ি পড়তে ওর দারুণ লাগে। কিন্তু কখনো পড়ার ভাগ্য হয় নি।

তানহা টুকটাক শাড়ি পড়তে জানে। খুব ছোট বেলা দাদিমার শাড়ি নিয়ে পেঁচিয়ে পড়ার চেষ্টা করতো। সেই থেকেই শাড়ি পড়া শেখা।

তোহাকে প্রথমে শাড়ি পড়িয়ে দিচ্ছে তানহা। তোহা আয়নায় শুধু নিজেকে দেখছে তানহাকে একটুও সাহায্য করছে না। ভীষণ বিরক্ত তানহা। মনে মনে নিজেকেই গালি দিচ্ছে। কেনো যে শাড়ি পড়তে চেয়েছিলো?

কুচি করল তোহাকে ধরতে বলে তানহা।

“একটু ধর আমি নিচের কুচি গুলো ঠিক করি।

তোহা বেশ খানিকটা সময় নিয়ে আয়না থেকে চোখ সরিয়ে ধরে কুঁচি। তানহা ঠিক করে দেয়।
এবার তানহা নিজে শাড়ি পড়ছে। আর তোহা একটু ধরতে বলছে। কিন্তু অলস তোহা আয়না নিয়েই ব্যস্ত ফিরেও তাকাচ্ছে না তানহার দিকে।
তানহার এবার কান্না পাচ্ছে। ভাইকে নিয়ে বড়মা যখন তখন চলে আসবে। এখন তাড়াতাড়ি বেরনো প্রয়োজন। কিন্তু এই বেয়াদবটার আয়না দেখাই হচ্ছে না।
রাগে দুঃখে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে তানহার চোখ দিয়ে।

চিল্লিয়ে মা কে ডাকে। তমা বেগম রান্না করছিলো। মেয়ের ডাকে গ্যাস বন্ধ করে দৌড়ে আসে।

” মা কুঁচি গুলো একটু ঠিক করে দাও।

তমা বেগম মেয়েকে সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দেয়।
এবার তানহা নিজের মতো সাজতে থাকে। এতোদিন ইউটিউব দেখে ভালোই সাজতে শিখে গেছে।

কাজল পড়ে লিপস্টিক পড়ে রেডি হয়ে নেয় তানহা। তোমাকে কাজল দিয়ে দেয়। তোহা আয়না থেকে সরছেই না।
নিজের চুল খোপা করে তাতে গারা দিয়ে তোহার চুলও খোপা করে দেয়।
হ্যান্ড ব্যাগটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ওরা। তোহাকে এক প্রকার টেনেই নিয়ে যায় তানহা।

রাস্তায় বের হয়ে রিক্সায় উঠে তোহা ফোনের স্কিনে নিজের চেহারা দেখে চোখ বড়বড় করে তাকায়। কারণ সে লিপস্টিক পড়ে নি

“এই তানহা আমি তো লিপস্টিকই পড়ি নি।

তোহা কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে। তানহা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে অন্য দিকে তাকায়। তোহা হাতের আঙুলে তানহার ঠোঁট থেকে খানিকটা লিপস্টিক নিয়ে নিজের ঠোঁটে পড়ে। তানহার চোখ পাকিয়ে তাকাতেই মিষ্টি করে হাসে।

বড় একটা টেডিবিয়ার কিনে বাবু জন্য। তারপর যায় ইমনদের বাসায়।
দারোয়ান আজকে কোনো কথা ছাড়াই সালাম দিয়ে গেইট খুলে দেয়। তানহা ভেংচি কাটে দারোয়ানকে।

খুব বেশি মানুষ ইনভাইট করে নি। আর যদি করেও থাকে এখন তেমন মানুষ নেই। ইরিনের শশুড় বাড়ির কয়েকজন লোক।
পিচ্চি তুলতুল ফ্লোরে বসে আছে। সোফায় ইমাম বসে গেমস খেলছে। ইরিন ইরিনের মা রান্না করছে।
আর বাকি মহিলা গুলো গল্প করছে।

তানহা আর তোকে দেখে ইমন ফোন থেকে দৃষ্টি সরায়।

” আরে তোমরা এসেছো?
এসো এসো

ফোন পকেটে ভরে তুলতুলকে কোলে নিয়ে বলে ইমন। তানহা এক গাল হাসে। তোহা মুখ ভেংচি কাটে।

ইমনের পেছন পেছন ওরা ইমনের রুমে চলে যায়। এমনিতেও বেশি মানুষজন পছন্দ করে না তানহা তোহা।
তানহা কোলে নেয় তুলতুলকে। কিন্তু পাজি মেয়ে কোলে থাকবেই না। নেমে যায় কোল থেকে। তোহা বসে পড়ে ইমনের কাটে। ইমন বসে তোহার পাশে একদৃ গা ঘেসে। তোহা একটু সরে বসে।

তানহা সোফায় বসে। নজর তুলতুলের দিকে।

“তানহা মাশাআল্লাহ
দারুণ লাগছে তোমার।

ইমন হেলে বলে। তানহাও প্রতিউওরে একটু হাসে।

” তো এই জঙ্গি ইঁদুরটাকে কোথায় পেলে তুমি?

তোহার দিকে নাক মুখ কুঁচকে বলে ইমন। তোহা রেগে উঠে দাঁড়ায়।

“এখানে থেকে এক পা নরলে মনে করবো তুমি সত্যিই ইঁদুর।

ইমনের কথায় আবার বসে পড়ে তোহা।

” ভাইয়া আপনার বন্ধুকে দেখছি না যে?

তানহা মাথা নিচু করে রিনরিনিয়ে বলে।

“ও তো ভার্সিটিতে গেছে। আজকেই মাস্টার্সে ভর্তির লাস্ট ডেইট। তাই ভর্তি হাতে গেছে।

ইমনের কথা শুনে তানহা তোহা দুজনই অবাক। ওদের রেজাল্ট দিলো কবে?

” ভাইয়া আমাদের বললো না?

তোহা অবাক হয়ে বলে।

“বললে কি করতা?

ইমন তোহার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে। তোহা জিভ দেখিয়ে অন্য দিকে তাকায়। আস্ত বদের হাড্ডি এই লোকটা।
তানহার মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়। একদম পুরো পরিবারকেই বাদ দিলে দিলো সূচক? কি চাইছে?
বিয়েটাকেও কি ভেঙে দেবে?
বুকটা কেঁপে ওঠে তানহার। চোখ দুটো জ্বলে ওঠে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নেয়।

তুলতুলের ডায়াপার নষ্ট হয়ে গেছে। পটি করে দিয়েছে। এখন বাচ্চাটা খুন খুন করছে।

” তোহা যাও সোনাকে কোলে নাও

ইমন আদেশের সুরে বলে।

“ওর মাকে ডাকেন। বোঝাই যাচ্ছে ডায়াপার নষ্ট করেছে।

” ধরে নাও ওর মা তুমি। এখন ডায়াপার পাল্টে দাও।

ইমনের কথা শুনে তানহার শত মন খারাপের মধ্যেও হেসে ফেলে।
তোহা কটমট চোখে তাকায়। তুলতুল কেঁদে ফেলে। ইমন টিস্যু ডাস্টবিন আর নতুন ডায়াপার এনে দেয় এক দৌড়ে।
তোহা কি করবে বুঝতে পারছে না।

“যদি ডায়াপার না পাল্টে দাও তাহলে ভাববো তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি। দেন এখনই কাজি ডাকবো।

তোহার শাড়ির আঁচলে গিট্টু দিতে দিতে বলে ইমন।

তোহা ঝাড়া দিয়ে ইমনের থেকে আঁচল ছাড়িয়ে তুলতুলের সামনে ফ্লোরে গোল হয়ে বসে পড়ে।

টানটান উত্তেজনা। ইমন ফোন বের করে ক্যামেরা চালু করেছে ভিডিও করবে। তানহা হাত পা গুটিয়ে গালে হাত দিয়ে বসেছে।

তুলতুল তোহাকে দেখে কোলে ওঠার জন্য হাত বারিয়ে দেয় ঠোঁট উল্টে। তোহা দুই হাত ধরে দাঁড় করিয়ে নাক মুখ কুঁচকে ডায়াপার পাল্টাতে থাকে।
ইমনের ঠোঁটের কোনে বিশ্বজয়ের হাসি।
তানহারও বেশ মজা লাগছে। যাককক এখন শান্তি লাগছে। শাড়ি পড়াতে গিয়ে দারুণ জ্বালিয়েছে।

ডায়াপার চেঞ্জ করে করে তুলতুলকে কোলে নিয়ে মুখ বাঁকিয়ে চলে যায় তোহা। ইমন ডাস্টবিন হাতে নিয়ে চলে যায় তোহার পিছু পিছু। রয়ে যায় তানহা। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে।

আর তখনই কেউ রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়
চমকে চোখ খুলে তানহা। সামনে সূচক দাঁড়িয়ে আছে। তানহা পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে সূচকের দিকে। কতোদিন পর দেখলো লোকটাকে। কেমন এলোমেলো হয়ে গেছে লোকটা। চোখের নিচে কালি জমেছে চুলগুলো উসকো খুশকো। দাঁড়ি গুলো বেশ বড় হয়েছে। হয়ত সেলুনে যায় না অনেক দিন। গোলাপি ঠোঁট জোড়া শুকনো চামড়া ধরে গেছে।
রোগাও হয়েছে অনেকটা। ফর্সা মানুষটা কিছুটা কালো হয়ে গেছে।

” তোকে শাড়ি পড়ার পারমিশন কে দিয়েছে?

সূচক কর্কশ গলায় বলে। তানহা ফোঁস করে শ্বাস টানে। এখন কপালে দুঃখ নাচছে বেশ বুঝতে পারছে তানহা। দুই একটা পরবে মনে হচ্ছে পিঠের ওপর।
ভালো টালো তো বাসতে জানে না। জানলে তো এতো দিন পর দেখা হয়েছে একটু জড়িয়ে ধরতো। দুই একটা চুমু খেতো।
তাই না?
তানহা মুখ বাঁকিয়ে সোফার উঠে দাঁড়ায় কোমরে হাত দিয়ে।
#প্রণয়
#বোনাস পর্ব
#তানিশা সুলতানা

“শাড়ি কেনো পড়েছিস?

সূচক পূনরায় চোখ পাকিয়ে বলে।

” আপনাকে কেনো বলবো?

তানহাও চোখ পাকিয়ে বলে।

“কথা শিখেছিস?

” ভুলে গেছিলাম কবে?

মুখে মুখে তর্ক করতে দেখে বেশ ঘাবড়ে যায় সূচক। থতমত খেয়ে তাকায় তানহার দিকে।

“থাপ্পড়ে গাল লাল করে দেবো।

সূচক হাত উঁচু করে বলে।

” পারবেনই শুধু তাই। ভালো টালো তো আর বাসতে পারেন না।

তানহা গোল হয়ে সোফায় বসে বলে। সূচকও তানহার পাশে বসে তবে বেশ খানিকটা দুরুত্ব বজায় রেখে।

“আর কখনো শাড়ি পড়বি না বুঝলি?

সূচক মাথা নিচু করে দুই হাতে চুল গুলো খামচে ধরে বলে।

” কেনো সূচক ভাই? কেনো পড়বো না? আপনার কথা কেনো শুনবো? কে আমি? কে আপনি? সম্পর্ক কি আমাদের? আদোও কি চিনেন আপনি আমায়? কখনো কি আমার কোনো কথা শুনেছেন আপনি? আমাকে একটুও কি গুরুত্ব দেন আপনি?

বলতে বলতে তানহার চোখে পানি চলে আসে। শব্দ করে কেঁদে ফেলে।

সূচক তানহাকে নিজের দিকে ঘুরায়। আলতো হাতে চোখের পানি মুছিয়ে দেন।

“হুশশশশ কাঁদে না।

ফিসফিস করল বলে সূচক।
তানহা নাক টেনে সূচকের হাত সরিয়ে দেয়।

” একদম ছোঁবেন না আমায়। একটুও না। কথাই নাই আপনার সাথে। কি পেয়েছেন আমায়? বদ লোক একটা। মানুষ মনে হয় না আমায়? পুতুল আম

বাকি টুকু আর বলতে পারে না তানহা। তার আগেই সূচক নিজের ওষ্ঠদ্বয় দ্বারা তানহার ওষ্ঠদ্বয় আঁকড়ে ধরেছে। একহাতে তানহার কোমর ধরেছে অন্য হাতটা তানহার চুলের ভাজে।
এতো দ্রুত এমন হয়ে গেলো যে তানহা কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। যখন বুঝতে পারলো তখন চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে নেয়। দুই হাতে সূচকের চুল গুলো মুঠো করে ধরে।

কতোখন তানহার নাক দিয়ে শ্বাস টেনেছে তার হিসেব নেই। সূচক এখন তানহার মাথার সাথে নিজের মাথাটা ঠেকিয়েছে। দুজনই জোরে জোরে শ্বাস টানছে। কান্না থেমে গেছে তানহার।

“আই মিস ইউ তানহা। তোকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হয়।

সূচক জোরে শ্বাস টানতে টানতে বলে। কথাগুলো কেমন জড়িয়ে যায়। তানহার বুকটা এখনো ধপধপ করছে। হাত পা আর ঠোঁটও কাঁপছে।
সূচক মাথা তুলে তাকায় তানহার মুখের দিকে। দুই গালে দুই ফোঁটা পানি চিকচিক করছে। সূচক তানহার চোখের পাতায় চুমু দেয়। তারপর গাল থেকে পানি টুকু শুষে নেয়।
তানহার গাল দুটো লাল হয়ে যায়। ভীষণ অপ্রস্তুত ও। অন্যরকম অনুভূতী মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। এই অনুভূতির সাথে তানহা পরিচিত নয়।
এক টানে তানহাকে কোলে বসায়। তানহার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে।
তানহা সূচকের শার্ট খাঁমচে ধরে।

” খুব ব্যস্ত আমি। লাইফ সেটেল্ড করা এতো কঠিন কেনো রে? আমার না মাঝেমধ্যে দম আটকে আসে। কিন্তু থেমে যায় না আমি। কোনো কিছুর জন্য আমি তোকে হারাতে চাই না। সারাজীবন এভাবে আগলে রাখতে চাই। আর তার জন্য আমি সব করতে পারি। সব

তানহার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে সূচক। তানহা এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। কি বলছে সূচক কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
লোকটা ঠিক আছে তো?
তানহা মাথাটা উঁচু করার চেষ্টা করে।

“একটু স্থির থাকো না জান। অনুভব করো আমায়। এভাবে নরো না।

মাথাটা শক্ত করল চেপে ধরে বলে সূচক। তানহা ভরকে যায়। একেতে তুমি তারওপর আবার জান। নির্ঘাত লোকটা ঠিক নেই। নাহলে এসব বলতো? কখনোই না। সূচক চোখ বন্ধ করে আছে।

বেশ অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। কেউ কোনো কথা বলছে না। দুজন দুজনের নিশ্বাসের শব্দ গুনছে।

” তানহা

সূচক ছোট্ট করে ডাকে। তানহা এতখন ঘ্রাণ নিচ্ছিলো সূচকের পারফিউমের। সূচকের ডাকে চমকে ওঠে।

“হুমম

তানহা আরও ছোট করে বলে।

“একবার ভালোবাসি বলবি।

আহা কি নিষ্পাপ আবদার। তানহা মুখ টিপে হাসে। ইচ্ছে করছে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতে ” হ্যাঁ ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে আমি”
কিন্তু বলবে না ও। মনে মনে বুদ্ধি এঁটে নেয়। কেনো বলবে? এতোদিন কি কষ্টটাই না দিলো ওকে। আর এখন এসেছে ভালোবাসি শুনতে। মামা বাড়ির আবদার। হুহহহ
সব কষ্ট সুধে আসলে ফেরত দিয়েই ভালোবাসি বলবে। তার আগে নয়।

“একদম ভালোবাসি না। যে আমাকে কষ্ট দেয় তাকে কেনো ভালোবাসাবো।

তানহা জোর করে সূচকের কোল থেকে নেমে গিয়ে গাল ফুলিয়ে বলে। সূচক নিঃশব্দে হাসে।

” ওকে ভালোবাসতে হবে না। আপাতত ঘুমাবো আমি। তারপর জন্য তোর হাত দুটো দরকার।

আড়মোড়া ভেঙে হাই তুলে বলে সূচক।
তানহা মুখ বাঁ কায়। সূচক উঠে দাঁড়িয়ে এক টানে তানহাকে পাঁজা করে কোলে তুলে নেয়। তানহা ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে সূচকের শার্ট আঁকড়ে ধরে।

খাটের ওপর বসিয়ে দেয় তানহাকে। তানহা হা করে তাকিয়ে আছে। কি করতে চাইছে বুঝতে পারছে না।

“করতে চাইছেন টা কি?

তানহা কপালে তিনটে ভাজ ফেলে বলে।
সূচক আরেকটা হাই তুলে তানহার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। তানহা হা করে কিছু বলার জন্য সূচক দুই আগুল দিয়ে তানহার ঠোঁট দুটো এক করিয়ে চেপে ধরে।

” কোনো কথা শুনবো না। জাস্ট আমার কথা শুনবি।
আজকে তোর সাথে শেয়ার করতে চাইছি। আমার ফিউচার প্লান। বর্তমানে কি করছি। কেনো তোকে ইগনোর করি।
শুনবি?

আঙুল সরিয়ে বলে সূচক। তানহা তার ছোট কোমল হাত দুটো সূচকের চুলের ভাজে রেখে মাথা নারায়। মানে সে শুনতে চায়।
সূচক মুচকি হাসে। তানহার নরম তুলতুলের গালটা টেনে দেয়।

“এতো নরম কেনল তুই? ইচ্ছে করে খেয়ে ফেলি।

নাক টেনে দিয়ে বলে সূচক।

🥀
তোহা খোলাখুলি কথা বলতে চাইছে ইমনের সাথে। এরকম ফ্লার্ট একদম ভালো লাগছে না ওর।
ইরিনের কোলে তুলতুলকে দিয়ে ইমন ছাঁদের দিকে চলে যায়।
তোহাও পেছন পেছন যায়।

” এরকম করছেন কেনো আমার সাথে? ফ্লার্ট করার মানে কি?

ইমন ছাঁদে পা রাখতেই পেছন থেকে তোহা বলে। ইমন পেছন ঘুরে তাকায় তোহার দিকে।

“কেনো ফ্লার্ট করছি শুনলে তুমি এখান থেকে পড়ে যাবে সেন্স লেস হয়ে তাই বলতে চাইছি না।
সময় হলেই বলবো।

চলবে
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here