প্রতিশোধ পর্ব ৩

# প্রতিশোধ
# তৃতীয়_পর্ব
# sagor_islam_raj
–স্যার ঐ বাড়িতে মেয়ে খুন হয়েছিলো।কিন্তু কিভাবে কে খুন করেছিলো কেউ জানেনা।বড় সাহেব টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছে।
–কি বলো।আমি তো এসবের কিছু জানতামনা।
–এটা সবাই জানেনা।শুধু সাহেবের কাছের কয়েকজন লোক ছাড়া।
–আর কিছু জানো কি তুমি?
কিছুখন টিপু ভাবলো তারপর আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
–ঐবাড়িটা সাহেব যাকে দেয় তার কপাল খুলে যায়।তয় কিছু নেয় সাহেব।
–কিছু নেয় মানে বুঝলামনা।খুলে বলো।
–স্যার এ ব্যাপরে আমি তেমন কিছু জানিনা।আপনাকে রুপা ম্যাডাম সাহায্য করতে পারে।
বলেই টিপু হনহন করতে করতে চলে গেলো।রুপা সাহায্য করতে পারে মানে?রুপা কি এমন জানে যেটা টিপু জানেনা।
আমি আমার কেবিনে ফিরে আসি।ভাবতে থাকি।বাড়িতে একটা মেয়ের খুন হয়েছিলো।কিন্তু স্যার আমাকে এই কথা বলেনি কেন?আর ঐ বাড়িটা যাকে দেয় তার কপাল খুলে যায় বদলে কিছু নেয় এটার মানে কি?আমাকে সবকিছুর সমাধান করতে হবে।
আমি এসব কথা ভাবছি ঠিক তখন রুপা আমার কেবিনে হাজির।
–কি খবর রুপা আপনার?হঠাৎ আমার কেবিনে।
–আমি আজ থেকে আপনার এসিস্টেন্ট স্যার।
–আপনি আমার এসিস্টেন্ট হতে যাবেন কেন?আমার এসিস্টেন্ট আছে।
–আপনার এসিস্টেন্ট এখন আমার বসের সাথে থাকবে আমি আপনার সাথে।
–আমার আপনাকে দরকার নাই।আগে যে ছিলো সে থাকলেই হবে।
–আচ্ছা ঠিক আছে আমি এমডি স্যারকে ডাকছি।তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
হঠাৎ আমার এসিস্টেন্টের পরিবর্তন।কিছু বুঝলাম না কি হচ্ছে এসব?ঠিক তখন এমডি স্যার হাজির।
–সাগর সামনে সপ্তাহে ফ্যামিলি পার্টি আছে।সেখানে অনেক কাজ থাকবে তাই রুপাকে তোমার এসিস্টেন্ট বানিয়েছি।
–ঠিক আছে স্যার কোনো সমস্যা নেই।
এমডি স্যার চলে যায়।রুপা চেয়ারে বসে আছে।আমি আমার কাজের দিকে মনোযোগ দিলাম।আমি কাজ করছি আর রুপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
–আচ্ছা স্যার আপনার মনে আনন্দ ফুর্তি নেই?
আমি রুপার দিকে ভ্রু কুচকে তাকাই।এমন প্রশ্ন করছে যেটা আমি আশা করিনি।
–কেন থাকবেনা?কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন?
–না সেদিন রাতে আমি আপনার কাছে নিজে সপে দিলাম কিন্তু আপনি আমার দিকে ঘুরেও তাকালেননা।
–এসব আনন্দ ফুর্তি করার জন্য আমার ঘরে বউ আছে।আপনার থেকে অনেক বেশি সুন্দরী।
রুপা চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো মনে হলো।আমি নিচের দিকে তাকিয়ে এক মনে কাজ করে যাচ্ছি।হঠাৎ রুপা বলে উঠে
–আমার থেকে সুন্দরী কেউ নেই এদিকে দেখেন।
আমি রুপার দিকে তাকাই।অফিসের মধ্যে এমন কিছু দেখবো কখনো আশা করিনি।রুপা তার শরীর আচঁল ফেলে দিয়েছে।ভাগ্যেস কাপড়ের নিচে রুপা কিছু পড়েছিলো।নয়তো কি যে হতো।
তার বুক পেট থেকে শাড়ির আচঁল নিচে পড়ে আছে।আমি রুপাকে ধমক দেই।
–কি হচ্ছে এসব?আমি আপনাকে এসব করতে বলছি।
–আপনি আমার সৌন্দর্য নিয়ে টানাটানি করবেন কেন?
–আমি আপনার সৌন্দর্য নিয়ে টানাটানি করিনি আমি শুধু আমার মতামত প্রকাশ করেছি সেদিন রাতে কেন আপনাকে ছেড়ে দিয়েছি।
রুপা রাগে গদগদ করতে করতে কাপড়ের আচঁল ঠিক করে বাইরে চলে যায়।কিন্তু আমি বুঝতে পারছিনা রুপা আমার পেছনে পড়েছে কেন?
ঠিক তখন করিম চাচা কফি নিয়ে আসে।বয়স হয়েছে ভালোই কিন্তু নজর এখনো কম বয়সী পুরুষের মতো।কফিটা টেবিলে রেখে বলে উঠলো
–স্যার এমন খাসা মালকে হাতের কাছে পেয়ে কেউ ছেড়ে দেয়?
করিম চাচার কথায় আমি চমকে উঠি।করিম চাচার নজর খারাপ জানতাম কিন্তু তার মনটাও খারাপ আজ জানলাম।
–আপনি কি বলতে চাচ্ছেন করিম চাচা?
–এহ মনে হয় কচি খোকা কিছু বুঝেনা।
–সত্যি বুঝতে পারিনি কি বলছেন আপনি।
–রুপা ম্যাডামের মতো মেয়েকে কাছে পেয়েও ছেড়ে দিচ্ছেন।আমার কাছে যদি আসতো জীবনে ছাড়তাম না।
আমি করিম চাচার কথা শুনে মুচকি হাসি।বয়স হয়েছে তার কিন্তু তার যৌবনের বয়স এখনো কম।
–আচ্ছা আপনি এসব কি করে জানলেন?
–কফি নিয়ে বড় সাহেবের রুমে গেছিলাম।সেখান থেকে আসার সময় শুনলাম।সাহেব রুপা ম্যাডামকে বলছে তুমি একটা অপদার্থ সাগরকে এখনো পটাতে পারছোনা।তার সাথে একবার বিছানাতে যেতে পারছোনা।রুপা ম্যাডাম তখন স্যার কে বলে আমি তো অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু সে রাজি হচ্ছেনা।আমার বুক পেট দেখিয়েছি তাও তার ভেতর কোনো পরিবর্তন নেই।
–এসব কথা স্যারের রুমে রুপা আর স্যার বলছিলো?
–হো স্যার এসব কথা বলছিলো।
–আচ্ছা তুমি এখন যাও।
এমডি স্যার আমার সাথে রুপার শারীরিক সম্পর্ক করার ব্যাপারে এত আগ্রহ কেন?এর পিছনে কোনো উদ্যেশ্য কোনো কাহিনী আছে কি?আমার মাথায় কিছু ঢুকছেনা।অফিসের কাজের চাপ তার ওপর এসব ভাবনা।মাথাটা অনেক ব্যাথা করতে শুরু করে।আমি অফিস শেষ হবার আগেই স্যারেকে বলে চলে আসি।
বাসায় আসার পথে একটা ছোট বাচ্চা কালো গোলাপের তোড়া নিয়ে আমার কাছে আসে।
–ভাইয়া এই গোলাপের তোড়াটা কিনে নেন।ভাবিকে দিয়েন অনেক খুশি হবে।
আমি বাচ্চাটার কথায় একটু হাসলাম।তারপর তার থেকে কালো গোলাপের তোড়াটা কিনে ফেললাম।আজকে প্রথম মারিয়ার জন্য কালো গোলাপ নিয়ে যাচ্ছি।এর আগে কখনো তার জন্য কালো গোলাপ কিনিনি।তারপর একটা নুপুর কিনি।মারিয়ার এখন মন খারাপ যাচ্ছে তাকে যতটা খুশি রাখা যায় তা আমি চেষ্টা করছি।একটা ক্যাটবেরি চকলেটের প্যাকেট নেই।
বাসায় এসে কলিং বেল দিতেই মনি দরজা খুলে দিলো।মনি আমার ছোট বোন।
–কিরে তুই কখন এলি?বাবা মা এসেছে?
–না ভাইয়া বাবা মা তাদের পৈতৃক ভিটা নিয়েই পড়ে আছে।আর আমি দুপুরে এসেছি।
–খুব ভালো করেছিস তোর ভাবি কোথায়?
–ভাবি আমার জন্য বিরিয়ানী রান্না করছে।
–আমার জন্য বছরে বিরিয়ানী রান্না করেকি তার ঠিক নাই।ননদ এসেছে অমনি রান্না করতে হবে?
–দেখতে হবে তো ভাবিটা কার।
আমি রুমের ভেতর চলে আসি।কাপড় চেন্জ করে ফ্রেশ হই।তখনি মারিয়া রুমে হাজির।
–কি ব্যাপার কখন অফিস থেকে আসলে?আর এত তাড়াতাড়ি?
–ঐ মাথাটা একটু ব্যাথা করছিলো তাই চলে এসেছি।
–কই দেখি জ্বর এসেছে কি?
বলেই মারিয়া আমার মাথায় হাত দেয়।ছোট বেলায় একটু শুয়ে থাকলে মা মাথায় দিয়ে দেখতো জ্বর এসেছি এখন বউ।
–আমার কিছু হয়নি আমি ঠিক আছি।
–ঠিক আছে একটা নাপা খেয়ে নাও ঠিক হয়ে যাবে।আমি রান্না ঘরে গেলাম।মনির সাথে দেখা হয়েছে।
–হ্যা হয়েছে তুমি যাও।
মারিয়া রুম থেকে চলে যায়।মারিয়ার জন্য আনা গিফটটা আর তাকে দেয় হয়নি ভুলেই গেছি।
রাতে খাবার টেবিলে আমি কালো গোলাপের তোড়া আর চকলেট আর নুপুর নিয়ে যাই।
মনি তো এসব দেখেই আমার চুল ছিড়তে শুরু করেছে।
–আমি যখন বলতাম তখন তো জীবনেও আনতিনা।বলতি ভুলে গেছি।এখন বউয়ের জন্য ঠিকি এনেছিস।
মনির কথা শুনে আমি হাসতে লাগি।কিন্তু মারিয়া হাসছেনা।তার চোখ কালো গোলাপের তোড়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে গোলাপের তোড়ার দিকে।
–মারিয়া তুমি চুপচাপ কেন?কি হয়েছে।
–আমাকে ফুলের তোড়াটা দিবে?আমার খুব পছন্দ।
আমি মারিয়ার কথা শুনে বেশ অবাক হই।এমনভাবে বলছে যেন তাকে আমি তোড়াটি দেবনা।সে আমার কাছ থেকে খুব মিনতি করে নিবে।
–এভাবে বলার কি আছে এই নাও।তোমার জন্যই তো এনেছি।
মারিয়া গোলাপের তোড়াটি হাতে নিয়ে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে।নাকের কাছে নিয়েগিয়ে শুকতে থাকে।মনে হচ্ছে সে আজ প্রথম গোলাপের সুবাশ পাচ্ছে।
মনির আমার হাত থেকে ছো মেরে নুপুরটা নিয়ে নেয়।
–নুপুরটা আমার।
–আচ্ছা তুই রাখ।
মনি হাসতে লাগে।
–ভাবি গোলাপের তোড়াটি আমাকে কিছুখনের জন্য দিবে?আমি পরে পিক তুলবো অনেক সুন্দর তোড়া।
–না না গোলাপের তোড়া দেয়া যাবেনা।এটা শুধু আমার।
–দাও ভাবি প্লিজ প্লিজ।
মনি জোর করতে লাগে।মারিয়া তখন মনিকে একটা থাপ্পর মারে
–বললামনা তোড়াটা শুধু আমার কাওকে দেয়া যাবেনা।
মারিয়ার কথার আওয়াজ শুনে আমি অনেক অবাক হয়ে যাই।মারিয়া মনিকে অনেক ভালোবাসে।মারিয়া মনিকে থাপ্পর দিলো আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা।মনি কান্না করতে করতে রুমে চলে যায়।মারিয়াও রুমে চলে যায়।আমি শুধু খাবার টেবিলে বসে আছি।
আমিও না খেয়ে রুমে চলে এলাম।দেখি মারিয়া গোলাপের তোড়াটি হাতে নিয়ে বিছানে হেলান দিয়ে বসে আছে।একবার বুকের সাথে ধরছে একবার মুখের কাছে নিয়ে যাচ্ছে আর গন্ধ শুকছে।আর হাসছে।মনে হচ্ছে কালো গোলাপ তার খুব পছন্দ।আগে কখনো মারিয়াকে এমন করতে দেখিনি।
হঠাৎ মনি চিৎকার করতে করতে আমার রুমে চলে আসে।আমি মনিকে বিছানাতে বসাই।মনি অনেক হাপাচ্ছে। আমি এক গ্লাস পানি দেই মনিকে।মনি ঢকঢক করে সব পানি খেয়েফেলে।কিন্তু মারিয়ার এতে কোনো প্রতিফলন নেই।সে আগের মতোই গোলাপের তোড়া নিয়ে ব্যস্ত।
–কি হয়েছে মনি এমন চিৎকার করলি কেন?
মনি অনেক হাপাচ্ছে।কথা বলতে তার কষ্ট হচ্ছে।আমি মনিকে শান্ত হতে বলি।মনি কিছুখন পরে শান্ত হয় তারপর বলে
–আমি বাথরুমে গিয়েছিলাম হাত মুখ ধুতে।হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসি আর তখন দেখি একটা বয়স্ক লোক আর একটা কম বয়সী মেয়ে নগ্ন অবস্থায় শুয়ে আছে।আমাকে দেখে তারা দুজন উঠে বেরিয়ে আসে আমি তাদের পিছনে পিছনে আসি তারা গেট দিয়ে বাইরে চলে যায়।কিন্তু গেট তখন আটকানো।তারা দরজার মাঝখান দিয়ে বেরিয়ে যায়।
বলেই মনি কান্না করতে লাগে।আমি মনিকে কান্না থামাতে বলি।এসব হয়তো তার মনের ভুল।তারপর মনি বলে
–ঠিক তখন মনে হলো আমার ওপর তরল কিছু পড়ছে।।ওপরে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ের পা ওপরে ঝুলছে আর মুখ নিচে গলার নিচে ফুটো আর সেখান থেকে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে।কিন্তু যার লাশ ঝুলছে সেই মেয়েটা আমার রুমে নগ্ন হয়ে শুয়ে ছিলো।ভাইয়া লাশটা হেটে যাচ্ছে।
একথা বলে মনি তার হাত দরজার দিকে ইশারা করে।মনি জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে।আমি দরজার বাহিরে যাই।কিন্তু সেখানে কিছু নেই।সবকিছু ঠিক আছে।
আমার বোনটা কতদিন পরে বেড়াতে আসলো।আর তার সাথেই এমন ঘটনা ঘটা লাগবে।কিন্তু এমন ঘটনা কেন ঘটছে।মনির কথার মতো আমি স্বপ্নন দেখেছিলাম।মারিয়া বলেছিলো রুমে দুটো নারী পুরুষ শারীরিক সম্পর্ক করছিলো তাকে দেখে তারা চলে যায়।কিন্তু মারিয়া এটাকে বাস্তব ভেবেছিলো।কি হচ্ছে এসব।
আমি মনিকে বিছানায় শুয়ে আসে।আমি মারিয়ার কাধে হাত দিয়ে ঝাকি দেই।মনে হলো মারিয়া এতখন কোনো ভ্রমের মধ্যে ছিলো।এখন সেখান থেকে ফিরে আসলো।
–কি ব্যাপার সাগর আমি এখানে কেন আমি তো খাবার টেবিলে ছিলাম।আর মনি এখানে শুয়েছে কেন?
আমি আর মারিয়াকে এসব কথা বলে ভয় দেখাতে চাচ্ছিনা।মারিয়ার সাথে এমনিতেই যা ঘটছে খারাপ ঘটছে।মারিয়াকে এসব কথা বললে সে কান্না শুরু করে দেবে।তাই তাকে আর কিছু বললাম না।
–মনি আজ আমাদের সাথেই থাকবে।একা একা থাকতে ভয় পাচ্ছিলো তাই এখানে শুয়ে পড়েছে।
–ঠিক আছে কোনো ব্যপার না।আমার ননদ আমার কাছে থাকতেই পারে।তুমি সোফায় শুয়ে পড়।
আমি মারিয়ার কথায় মুচকি হাসি।একটু আগে মারিয়া মনিকে মেরেছে এটা বললে সে হয়তো বিশ্বাসী করবেনা।মারিয়া মনিকে অনেক ভালোবাসে।মারিয়া মনির মাথায় হাত দিয়ে চমকে উঠে।
–মনির গায়ে তো অনেক জ্বর।
–কি বলছো?জ্বর কখন আসলো।
আমি মনির মাথায় হাত দিয়ে দেখি হ্যা তার শরীরে অনেক জ্বর এসেছে।আমি বাথরুমে গিয়ে বালতিতে করে পানি নিয়ে আসি মনির মাথায় পানি দিতে।
কিছুখন মাথায় পানি দেবার পর মনির জ্ঞ্যান ফিরে আর তখন সে বারবার একটা কথাই বলছে লাশ লাশ লাশ।
মারিয়া আমার দিকে তাকায়।আমি মারিয়াকে ইশায়ার শান্ত হতে বলি।তাকে বুঝাই মনি হয়তো স্বপ্ন দেখছে।মারিয়া মনির মাথায় পানি দিতে থাকে।কিছুখন পর মনির শরীর থেকে জ্বরের মাত্রা কমে যায়।মারিয়া জ্বরের টেবলেট বের করে মনিকে খাইয়ে দেয়।মারিয়া মনির পাশেই বসে ছিলো।মনির জ্বর কমলে মারিয়াও শুয়ে পড়ে।তারো অনেক ধকল গেছে।
আমি সোফাতে শুয়ে পড়ি।অন্যরুমে জয়তো শুতে পারতাম।কিন্তু মারিয়াকে একা রেখে অন্য রুসে শোয়া ঠিক হবেনি।অন্যদিনের মতো রাতে যদি রুম থেকে বেরিয়ে গোসল করতে লাগে আর মনি তা দেখে ফেলে কখন কি করবো?তাই রুমের ভেতরেই সোফাতে শুয়ে পড়ি।আমার চোখে ঘুম আসছিলনা।আমার মাথায় নানা রকম প্রশ্স বারবার ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
অফিসে বসের কথার কারন খুজে পাচ্ছিনা।আবার বাড়িতে এমন সমস্যা।কোনটা নিয়ে আগে ভাববো কিছু বুঝতে পারছিনা।মাথাটা তখন আবার ঝিম ধরে যায়।তাই আর বেশি না ভেবে ঘুমানোর চেষ্টা করি।কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি।ঘুম ভাঙে কিছুর গোঙ্গানোর শব্দ শুনে।
চোখ খুলতেই দেখি ঘরের মাঝে কোনো আলো নেই।পুরো ঘর অন্ধকার।অথচ আমি ঘরের আলো জ্বালিয়ে রেখে ঘুমিয়েছিলাম।ঘরের জানালা খোলা।জানালা দিয়ে চাঁদ দেখা যাচ্ছে।পুর্ণিমা হচ্ছে।পুরো চাঁদ দেখা যাচ্ছে।তবে আশ্চর্যের বিষয় চাঁদের চারি ধারে মেঘ মাঝখানে চাঁদ।জানালার পর্দা উড়তেছে বাতাসে বারবার।
হঠাৎ গোঙ্গানির শব্দ বেড়ে যায়।আমি উঠে ঘরের আলো জ্বেলে দেই।যা দেখলাম তা আমি কখনো আশা করিনি।মারিয়া মনি দুজনেই উলঙ্গ হয়ে আছে।আর মারিয়া মনির ওপরে বসে আছে।মনির গলার মাঝে মারিয়া একটা ছুরি চালিয়ে দিয়েছে।গলার নিচ দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে থাকে।ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হবার কারনে মারিয়ার মুখ মাখিয়ে গেছে রক্তে।
মারিয়া মনির রক্ত তার পুরা শরীরে মাখাতে থাকে।আমি তখন কি করবো বুঝতে পারছিনা।নিজের বোনের এমন অবস্থা দেখে কোনো ভাই ঠিক ঠিক থাকতে পারবেনা।আমারর হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ মারিয়া আমার দিকে তাকায়
–লাল রক্তে আমাকে কেমন লাগছে জান?
মারিয়ার কথার মাঝে কামনা বিরাজ করছিলো।
–তুমি আমার বোনকে মেরে দিলে?
–ঠিক করেছি।আমি কত করে বললাম আমার সাথে সহবাস কর।কিন্তু শুনলনা।তাই তাকে ভোগ করে মেরে দিয়েছি।
–তুমি কি বলছো এসব তোমার মাথা ঠিক আছে?
মারিয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসে।তারপর হঠাৎ সে আমার কাছে চলে আসে।আর তারপর কোথা থেকে একটা দড়ি নিয়ে আমার গলায় পরিয়ে দেয়।আমি নিজেকে অনেক ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা।আমার হাত নাড়াতে পারছিনা।আমার গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেয়।আমার তখন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।
মারিয়া আমার দিকে তাকিয়ে পিশাচীয় হাসি দেয়।তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।আমার দম যখন প্রায় শেষ ঠিক তখন দড়িটা ফ্যান থেকে খোসে পড়ে যায়।আমি নিচে পড়ে যাই।অনেক কাশি হতে থাকে।আর একটু হলে মরেই যেতাম।হঠাৎ গুনগুন গানের আওয়াজ হতে থাকে।আর শাওয়ারের পানি পড়ার শব্দ হতে থাকে।আমি উঠতে পারছিনা।চোখটা বন্ধ হয়ে আসছে।তখন দেখলাম মারিয়া গোসল করে বের হচ্ছে।আমার সামনে এসে দাড়ায় তখন আমি জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলি।
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here