প্রমত্ত অঙ্গনা পর্ব ৩৭

#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৩৭)

অনেক্ষণ যাবত আঁখির জন্য অপেক্ষা করে বিরক্ত হলো আদৃত,মেসেজ করলেও জবাব পাচ্ছে না,কল করলেও ধরছে না আঁখি,এবার মনে বেশ অভিমান জমিয়ে চলে আসলো আঁখির খোঁজে।আঁখি শায়েলা মির্জার কক্ষে আসলো।নিজেকে যথাসাধ্য স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে উনার সাথে কথা বলতে শুরু করল।

″মামুনি।″

″আরে আঁখি মা তুই?কক্ষে আয়,কিছু দরকার?কোনো অসুবিধে হচ্ছে তোর এখানে?″

″না মামুনি, তুমি যেখানে সেখানে অসুবিধে কবু হতে পারে আমার?আসলে মামুনি আমায় এখন চলে যেতে হবে।″

″কি বলিস রে এসব,চলে যাবি মানে!″

″আসলে হঠাৎ বাড়িতে একটা জরুরি কাজ পরেছে যেতেই হবে।″

″কি কাজ এমন?″

″আর্জেন্ট কাজ মামুনি,না গেলে না হবে।বলতে পারব না এখন।″

″কি এমন কাজ তোমার আঁখি যে এখনই চলে যেতে হবে।″

″দেখ না আদৃত কেমন যাই যাই করছে,তুই একটু বোঝা তো ওকে।″

″বুঝতে পারছেন না আপনারা,প্লিজ মন খারাপ করবেন না, আমি কিন্তু থাকতে পারব না,আমার যাওয়াটা জরুরি।″

কথাটা বলে আঁখি আর এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে ছুটন্ত পায়ে বাহিরের দিকে হাঁটা ধরল।আদৃতও পিছু এলো,সাথে শায়েলা মির্জাও আসলেন,আঁখি বাড়ি থেকে গাড়ি আনিয়ে নিয়েছে এতক্ষণে,ছুটে গিয়েই গাড়িতে চড়ে বসল।

″আঁখি কথাটা শুনো আমার?″

আঁখি আদৃতের ডাক শুনেও না শোনার ভান করল,আদৃত গাড়ির পাশে যাবার আগেই গাড়ি ছেড়ে দিল ড্রাইবার,শায়েলা মির্জা আর আদৃত দু’জনই হতভম্ব হলেন আঁখির উক্ত ব্যবহারে।
_____________

আদিল বাইরে,এদিকে সে রিহানকে খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়েছে,মাও ঘুমিয়ে গেছেন এতসময়ে।আঁখির হঠাৎ বাড়িতে চলে আসায় আশ্চর্য হলো শুভ্রতা।ড্রয়িংরুমে বসে সে আদিলের অপেক্ষা করছিল।আঁখিকে দেখে অবাকত্ব নিয়ে জিজ্ঞেস করল তাকে।

″কি হয়েছে আঁখি এভাবে ফিরে আসলে যে?তাও এতো রাতে!তুমি না আজকে মির্জা হাউজে থাকতে গেছিলে?″

কাছের সেই মমতার আশ্রয়কে দেখে আঁখি আর তার আবেগ ধরে রাখতে পারল না,ছুটে গিয়েই তাকে ঝাপটে ধরে কাঁদতে শুরু করল।

″কী হয়েছে বোন আমার?এভাবে কাঁদছ কেন?হয়েছে কী বলো?″

″আমার কেউ নেই আপু,আমি কারো যোগ্য না,কারো যোগ্য না।″

″কী হয়েছে আঁখি বলবে তো?বলো না, মনটা আমার পেরেশানিতে ভরে উঠেছে,বলো কি হয়েছে?″

আঁখি শুভ্রতার সাথে নিজের সকল কথাই ভাগ করে থাকে,বর্তমানে শুভ্রতাই তার বিশস্ত সঙ্গ,তাকে মনের ভার ভাগ না করে যেন শান্তি পায় না আঁখি।তাছাড়া মনটাও যে আজ ভরে উঠেছে হালকা করার মাধ্যমটা বেশ জরুরি,তাই সবকিছুই আঁখি বলে গেল শুভ্রতাপ্রথম থেকেই।
সবটা শোনার পর শুভ্রতা কি প্রতিক্রিয়া করবে ভেবে পাচ্ছে না।কিছু সময় বাকরুদ্ধ থাকার পর এবার বলল।

″আদ্রিশ এতো কিছু করে গেল আর তুমি আমাদের বললেও না,চুপচাপ সহ্য করে গেলে!আর আজও তাই করবে বলো?আমাদের না হয় কিছু বলো নি ডা.আদৃতের বাবাকে তো বলতে পারতে।আমার মনে হয় ডিভোর্স নিয়ে উনার সমস্যা তেমন হতো না কিন্তু উনার সমস্যা হয়ত বাচ্চা নিয়েই বেশি।তবে তুমি সত্যতা বলে দিতে পারতে যে তুমি সন্তান জন্মদানে সক্ষম। বাকিটা ডা.আদৃতকে বললে উনি নিজের বাবাকে বুঝিয়ে নিতেন,এমনটা তো এখন নতুন না, যে ডিভোর্সি নারীদের বিয়ে অবিবাহিত দের সাথে হচ্ছে না।তোমার এভাবে চলে আসা ঠিক হয় নি,তোমার ডা.আদৃতের সাথে কথা বলা উচিত ছিল।″

″না আপু,আমার জায়গায় হয়ত অন্য কোনো মেয়ে হলে এমনটাই করত যেমনটা তুমি বলছ,কিন্তু আমি কখনও এমনটা করার কথা ভাবতেও পারি না।আমি মেয়ে হয়ে জন্মেছি তাই বলে এ নয় আমি পায়ের ধুলো,বাবা আমায় মাথায় তুলে রাখত,আমি কেন কারো নিচে পরে থাকব,নির্দ্বিধায় আমি বলতে পারতাম আমি সন্তান জন্মদানে সক্ষম, ডা.আদৃতের সাথে কথা বলে আংকেলকে আমাদের পক্ষে আনতেও হয়ত সক্ষম হতাম।কিন্তু আমার সম্মানটা কোথায় পরে থাকত আপু ভাবতে পারছ?আমি কারো ভালোবাসা ভিক্ষেতে চাই না,সারাজীবন কারো করুণা বা আঁড়চোখের বাণী সহ্য করে যেতে আমি পারতাম না,আংকেল মেনে গেলেও এ নিয়ে আফসোস উনার মনে থাকত ঠিকই।মনে মনে হয়ত দিতেন বদদোয়া,আর নারীদের জীবন সম্পর্কে জানোই তো আপু,বাচ্চা গর্ভে ধারনকৃত সময় অনেক দূঘটনার ফলস্বরূপ জন্মদানের সক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে,তখন যদি আমার সাথেও এমন ঘটে তখন কে নিবে আমার জীবনের নিশ্চয়তা?কে নিশ্চিত করবে কথাটা যে আংকেল তখন ডা.আদৃতকে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বলবেন না।হয়ত ডা.আদৃত তাতে মানবেন না কিন্তু আংকেল তো কষ্ট পাবেন মনে,বংশধর না পাওয়ার দোষী সারাজীবন মনে মনে আমাকেই করে যাবেন।যা আমি কখনোই মেনে নিব না আপু,জীবনে অনেক ভুল করেছি আর না,আত্মসম্মানহীন জীবন আমি মেনে নিতে পারব না।এমনটা করার থাকলে তো আদ্রিশের সাথে সংসার করতাম,ওকে ছেড়ে দিতাম না।কিন্তু না,আমার কাছে ভালোবাসার চেয়েও আমার আত্মসম্মান বড়।আত্মসম্মানের বিসর্জন দিয়ে আমি কোনো কিছুই জয় করতে চাই না।

অতঃপর চোখ মুছে নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে নিজ কক্ষে চলে গেল আঁখি।
_______________

রাতভর আঁখিকে কল মেসেজ করল আদৃত কিন্তু না,কোনো কিছুরই জবাব পেল না সে।ঘুম উধাও হয়ে গেছে তার চোখ থেকে,ভিতরে শান্তি নামক জিনিসটাও কোথায় রয়ে গেল।সকালে রেডি হয়ে নাস্তা না করেই হাসপাতালের দিকে পথ ধরল আদৃত।

″বাবা কথা হয়েছে আঁখির সাথে?″

″না মা,কলই তো ধরছে না,না মেসেজ সিন করছে।″

″কি হলো আমার মেয়েটার!ওর বাড়ি যাব?″

″না মা,দেখি হাসপাতাল আসে কি না,না হলে বাড়ি যাব।″

আদৃত চলে আসলো হাসপাতাল,এসে দেখল আঁখি আজ সময়ের আগেই এসেছে,বসে টুকটাক কিছু কাজ করছে।আদৃত তার কাজের ফাঁকেই তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করল।

″আঁখি,খুব বিজি?একটু কথা বলবে?″

″আসলে ডা.আদৃত প্রচুর কাজ,ফ্রি হয়ে কথা বলব।″

আদৃত নিরাশ হলো আঁখির এমন আচরনে,এমনি যতই কাজ থাকুক না কেন আঁখি আদৃতের সাথে হেঁসে কথা বলে নেয় অল্প করে হলেও,কিন্তু আজ আদৃতের মনে হলো আঁখির তেমন কোনো কাজ নেই,তাও তার সাথে কথা বলতে চাইল না,এমনকি আজ তার মুখে সেই হাসিটাও নেই।

আদৃতের সময় পার হচ্ছে না,কোনো কাজে মন বসছে না,মন টা শুধু আঁখির জন্য আনচান করছে তার।কিন্তু আঁখির সাথে যখনই কথা বলতে যাচ্ছে আঁখি তখনই তাকে এটা ওটা বলে এড়িয়ে যাচ্ছে। বড্ড বিরক্ত লাগছে আদৃতের সবকিছু।আজ বেশ কয়েকবার বেহায়ার মতোই আদৃত আঁখির পাশে গেছে কথা বলবে বলে কিন্তু আঁখি কথা বলল না,বরাবরের মতো এড়িয়ে গেল।এবার আবারও আসল আঁখির কাছে,কিন্তু এসে দেখল আঁখির কেবিনে ডা.আনিশা বসে আছেন,আঁখি তার সাথে বেশ হেসে খেলেই কথা বলছে আর আদৃতকে দিল ভারী কাজের চাপের বাহানা,মুহুর্তেই গা জ্বলে উঠল আদৃতের,ছেলে হোক বা মেয়ে তার আঁখির জীবনে নিজের সময়ের ভাগটা সে কাউকে দিবে না।তাই এবার সোজা ভাবেই আনিশাকে বলল আদৃত।

″ডা.আনিশা,আমার ডা.আঁখির সাথে কিছু কথা ছিল,যদি আপনি একটু সুযোগ দিতেন।″

″হ্যাঁ, কেন নয়।″

অতঃপর ডা.আনিশা উঠে চলে গেলে আদৃত আঁখির পাশে আসলো।

″কি হয়েছে?তুমি আমাকে ইগনোর করছে কেন?″

″আমি আপনাকে কোথায় ইগনোর করছি,কাজ আছে প্রচুর তাই কথা বলতে পারছি না।″

″হুম,তবে এখন যে ডা.আনিশার সাথে গল্প করছিলে?এখন কোনো কাজের চাপ নেই তোমার?হাসপাতালে তো আমি ছাড়া কারো সাথে তেমন আড্ডা দিতে দেখি না কখনও,আর আজ আমাকেই অদেখা করছ?ফোন ধরছ না মেসেজ সিন করছ না।কি হয়েছে বলো?″

″কিছু হয় নি,আপনি ভুল ভাবছেন এমন কিছুই না,আমাকে একজন রোগী দেখতে হবে এখন যেতে দিন?″

কথাটা বলে আঁখি আদৃতকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে তাকে এক টানে বুকে সাথে এনে মিশিয়ে নিল আদৃত।

″কি অসভ্যতা করছেন আপনি!″

″অসভ্যতা না এটাকে অধিকারত্ব বলে।″

″কিসের অধিকার?আমি আপনাকে কোনো অধিকার দেই নি?″

″তুমি না দিলেও আমি নিয়ে নিব।″

″আপনাকে সেই সুযোগ আমি কখনও দিব না,আমি আপনাকে ভালোবাসি না ডা.আদৃত।আপনাকে বিয়ে করতে পারব না,আমার আপনার প্রতি আগের সেই অনুভুতি রয়ে যায় নি,চাইলেও আমি আর তা ফিরিয়ে আনতে পারব না,চেষ্টা করে দেখে নিয়েছে আমি,ব্যর্থ হয়েছি প্রতিবার,তাই আমি আপনাকে বিয়েও করতে পারব না।আপনি বরং আমার পিছন না পরে থাকলেই খুশি হবো।″

″বললাম না পরকালেও পিছু ছাড়ব না,তুমি শুধু আমার আঁখি,তোমাকে আমাকে ভালোবাসতেই হবে।″

″আমি বাধ্য নই।″

অতঃপর আদৃতকে অল্প ধাক্কাতে নিজের থেকে ছাড়িয়ে চলে গেল সেখান থেকে আঁখি,আদৃত তার পিছু আসতে নিলে হঠাৎ একজন নার্স আসলো সেখানে।

″স্যাঁর জলদি চলুন,একটা এমারজেন্সি এসেছে আপনাকে দেখতে হবে।″

″আমি ছাড়া আর ডাক্তার নেই?আমি এখন পারব না,অন্যজনকে দেখো।″

″স্যার খুব ক্রিটিক্যাল মেটার, ডা.আঁখি একটু আগে একটা সার্জারি করে বলেছেন আজকে আর কোনো কাজে থাকবেন না উনি,উনার গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে চলে যাবেন,ডা.মোনায়েম নেই আজকে,বাকিরাও কাজে আছেন একমাত্র আপনি ফ্রি,প্লিজ জলদি চলুন স্যার।″

আদৃত দায়িত্ব থেকে কখনও পিছপা হয় না,তাই চলে গেল নার্সের সাথে।

″আঁখি হাসপাতাল ছাড়ার সকল ব্যবস্থা করে নিয়েছে,উক্ত কাগজপত্র এবার আশরাফ রায়হান খানের কাছে নিয়ে গেল।সেখানে সে নিজের সাথে করে আহিলকেও ডেকে এনেছে জরুরি কাজ বলে,এবার কাগজপত্র বাবার হাতে তুলে দিয়ে বলল।

″আজ স্যার বলে আপনাদের সাথে ফরমালিটি করতে পারব না,এমনিতেই আর ডাকতে আসব না,এখানে জব নেওয়ার প্রথম আর প্রধান কারণ ছিল তোমাদের পাশে থাকা,তোমাদের প্রতিদিন চোখ ভরে দেখে নেওয়া,ভেবেছিলাম হয়ত তোমাদের মনে আবারও জায়গা করে নিতে পারব।কিন্তু ভুল ছিলাম আমি,ভুলে গেছিলাম আয়না একবার ভেঙে গেলে তা হাজার জোরা দাও তবুও ফাঁটা দাগ থাকে।সম্পর্ক আর বিশ্বাস তো তেমনই হয়।যেখানে আমার কোনো অধিকারই রয়ে যায় নি সেখানে জেদ নিয়ে দম্য দেখাতে চাইলাম,আসলেই পা*গ*ল আমি,কিন্তু আর পা*গ*লা*মি করব না,দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছি আমি ব্যর্থ,জীবনে এমন ভুল করেছি যে তার প্রায়শ্চিত্তে জীবন শেষ করে দিলেও কম হবে।আজ বুঝতে পেরেছি আমি সব হারিয়ে গেছি,আমি কাঙাল,আমার কেউ নেই।দিনশেষে আমি একা,আমি এতটাই বাজে আর মানুষরুপে মিছে অস্তিত্বের অধিকারী একজন যাকে কেউ চায় না আর,যে কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না।তাই ভাবলাম নাই বা পেলাম কারো ভালোবাসা,আত্মসম্মান আর জীবনের তিক্ততা নিয়ে যতদিন পারি বেঁচে থাকব,আর দূর থেকে চাইব তোমরা খুশি থাকো,কখনও জ্বালাতে আসব না আর।
আমি হাসপাতাল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হুট করে নেওয়ায় আপনাদের আগে জানাতে পারি নি,তাই দুঃখীত,কিন্তু এই হাসপাতালে আমি আর থাকতে পারব না।
পারলে আমার ক্ষমা করে দিও বাবা,ভাইয়া,আমি যে ভুল করেছি তার ক্ষমা হয়ত আমি কখনও পাবো না,তবুও খুব করে চাইব ,সব শেষে বলব অনেক ভালোবাসি তোমাদের, দূরে চলে গেলেও এমন একদিন যায় নি যেদিন ভাবি নি তোমাদের নিয়ে,চলি।মাম্মাম,মাইশা আর দাদু দিদুকে বলো আমি উনাদের কথা জিজ্ঞেস করেছি।কখনও সামনে পরব না।হাসপাতাল ছাড়ার বিষয়ে আমার উপর থেকে সব ফরমালিটি শেষে করে দিলে আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ হবো।চলি তাহলে।

অতঃপর কথাগুলো বলে আঁখি বেড়িয়ে এলো।এতক্ষণ পাথরের মতো দাঁড়িয়ে অনুভুতিহীনের মতো কথাগুলো বলে গেলেও এবার আর নিজেকে আটকে রাখতে পারল না আঁখি,গাড়িতে উঠেই এবার মুখ চেঁপে কান্না করতে শুরু করে দিলো।হাসপাতালের দিকে তাকিয়ে মৃদু স্বরে বলল।

″আমাকে ক্ষমা করে দিবেন ডা.আদৃত,কিন্তু আমার কাছে ভালোবাসার উপর আমার আত্মসম্মানের স্থান,নিজের জীবন গুছিয়ে নিন দোয়া করব।চলে যাব আপনাদের সবার থেকে অনেক দূরে,অল্প কাজ বাকি,তবে আর আসব না আপনাদের কাউকে কষ্ট দিতে,আসব না কারো জীবনে অভিশাপরূপে,জন্মস্থান থেকে পাওয়া তিরস্কার, তাচ্ছিল্য আমি কখনও ভুলব না,আর কখনও পা রাখব না এই দেশের মাটিতে,নির্দিষ্ট কিছু কাজের সমাপ্তি এ দেশে ও তার মানুষের মায়ায় ত্যাগ করতে বাধ্য করবে আমায়।″

রাতে আদ্রিশ অন্য একটা রুমে ঘুমিয়ে যায়,সকালে রিদিকা ঘুম থেকে উঠার আগেই কোথাও যেন বেড়িয়ে গেল,সারাদিন অনেক ফোন মেসেজ করেও তাকে পায় না রিদিকা।আদ্রিশকে হারানোর ভয়ে রূপ ধরে রাখতে আজকের পুরোটা দিন বিভিন্ন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় রিদিকা, কিন্তু কোনো ফলাফল পায় না,সবারই একই কথা উনারা কিছুই করতে পারবেন না,ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি তার শরীরে ছড়িয়ে গেছে,কোনো পথ্য বা ওষুধ কিছুই পায় নি সে কারো কাছ থেকে,নিরাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে।ফেসবুক,গুগল কোথাও কোনো উত্তর পেল না,ভাইরাসের আতঙ্ক থেকে নিজেকে বাঁচানোর পেল না কোনো রাস্তা।এদিকে সময়ের সাথে রিদিকার শরীরের বেহাল দশা ধরতে শুরু হয়েছে,চামড়া অনেকটা সংকুচিত হয়ে গেছে পুরো শরীরের,চেহারার দিকটায় বেশি,আজকে ডান হাতের তিনটে নখ উঠে গেছে,চোখের পাপড়িগুলোও ইতিমধ্যে পরে গেছে।নিজেকে দেখতে নিজের কাছেই কেমন জানি ভয়াবহ লাগছে।

চলবে…

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here