প্রিয়কাহন পর্ব -০৬+৭

#প্রিয়কাহন❤️
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব |৬|

প্রিয়তা ধীরে ধীরে চোখ খোলার চেষ্টা করলো। নিজের উপস্থিতি টের পেলো বিছানায়। মাথার ওপর সিলিঙ ফ্যানটা ধীরে ধীরে ঘুরছে। জানালা খোলা থাকায় দক্ষিণা হাওয়া সেই সাথে ঘরে ঢুকছে সমানতালে। প্রিয়তা আরও একবার মনে করার প্রয়াস চালালো হয়েছিলো কি। মনে পড়া মাত্রই সে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো। সে তো ছিলো অভীর সাথে, তারপর এমন কি হলো যে সে ক্যাম্পাস থেকে ডিরেক্ট নিজের রুমে এসে পড়লো?

মাথাটা প্রিয়তার বোলতার মতো ভনভন করছে। কপাল ব্যান্ডেজ করা। হয়তো রক্তে একাকার হয়ে গিয়েছিলো। প্রিয়তা নিজেকেই মনে মনে অপমান করলো। ওমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্ঞান না হারালে কি হতো না? বিধাতা বারবার কেন এমন অবমাননা করছে তার ওপর?

খপ করে খুলে গেলো দরজা। প্রবেশ করলো সায়েরা বানু। মুখ থমথমে আকার ধারন করেছে তার। চোখে – কপালে অল্পবিস্তর ভাঁজ। প্রিয়তা ঢোক গিললো। মায়ের মতিগতি মোটেও সুবিধার না। সায়েরা বানু এগিয়ে দিলো শরবতের গ্লাস। বললো,

‘ এক চুমুকে শেষ করবি।’

প্রিয়তা নাকোচ করার সাহস পেলো না। ভয়ে ভয়ে গ্লাস নিয়ে সত্যি সত্যিই সবটুকু শরবত খেয়ে ফেললো। সায়রা বানু কথা বললেন না আর। চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই প্রিয়তা ডাক দিয়ে বললো,

‘ আম্মু!’

মহিলা পেছনে ঘুরলো। প্রিয়তা আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলো,

‘ আমি…আমি কিভাবে এসেছি এখানে?’

‘ কিভাবে আর আসবি? তুই তো আর ডানা কাটা পরী না যে উড়ে উড়ে আসবি?……অভী নিয়ে এসেছে।’

অপমানে কালো হয়ে গেলো প্রিয়তার মুখ। মা যে ইচ্ছে করেই কথাটা খোচা মেরে বলেছে সেটা বুঝতে আর বাকি রইলো না। অল্পসময়ের মধ্যেই রুমে এসে পড়লো অরিন তুশি আর রুশি। অরিনের কোলে তুশি আর রুশি ওর হাত পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাচ্চা দুটো মেয়ের পুরো মুখই চকলেট দিয়ে মেখেসেখে একাকার। অরিন বলে উঠলো,

‘ কি রে আপা তোমার তাইলে জ্ঞান ফিরেছে? আজ তো ভেবেছিলাম এমনিতেই খাটে চিৎপটাং হয়ে থাকবে।’

প্রিয়তা কথা বললো না। অরিন খাটে বসলো। তুশি রুশি কোলে চড়ে বসলো প্রিয়তার। চকলেটে মাখা মুখ দিয়ে প্রিয়তার সারামুখে চু’মু দিয়ে বললো,

‘ ভালো লাগছে আপু?’

‘ হুম ভালো লাগছে।’

আনমনে ব্যার্থ যোদ্ধা মতো কথাটি আওড়ালো প্রিয়তা। সায়রা বানু আচমকা বসে পড়লো প্রিয়তার কাছে। চোখে মুখের ক্ষোভ স্পষ্ট জানান দিচ্ছে আজ প্রিয়তার একটা হেস্তনেস্ত সে করেই ছাড়বে। বললো,

‘ তুই কি জীবনেও বড় হবি না প্রিয়তা?’

প্রিয়তা হতবুদ্ধিকর পরিস্থিতিতে পড়লো। প্রশ্নটা যে কেন করেছে সেটা তার অজানা না। সায়রা বানু এই মেয়েটাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার চরম শিখরে আছে।মেয়ের বোকা সোকা কর্মের জন্য প্রতি রাতেই তার রক্তচাপ ভয়াবহ ভাবে বেড়ে যায়। হতাশায় হাসফাস করে সে বললো,

‘ তোরে নিয়ে যে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না রে। অভী তোকে এমন কি বলেছিলো যে রাস্তায় পড়ে মাথা ফাটিয়ে ফেললি? তোরে কি তোর বাপ-চাচা দুধ ডিম কম খাওয়ায়? ছেলেটা আজ সারা দুপুর তোর জন্য সব কাজ ফেলে ঘুরেছে। বাপ-মার জন্য তোর বিন্দুমাত্র মায়া নেই, তা তো জানি- তাই বলে ওই ছেলেটার ওপর তো একটু রহম কর! আজীবন শুনি মেয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে বর-শ্বাশুড়ির চাপে আধমরা হয়ে যায়। এখন তো দেখা যাবে তোরে বিয়ে করলে অভীরই সর্বনাশ হয়ে যাবে।’

মায়ের এই অপমানে আরও একবার মুখ কালো হয়ে গেলো। অরিন হাসছে মিটমিটিয়ে। প্রিয়তা ওর এমন হাসি দেখে ভ্রু কুচকে ফেললো। দশম শ্রেণিতে পড়া ছোট বোনের সামনে মায়ের এভাবে ভয়াবহ অপমানে রি রি করে উঠলো মন। সায়রা বানু উঠে পড়লো। বললো,

‘ রুমে থাক এখন। আমি রান্নাঘর থেকে আসছি। ওই বাড়ি থেকে লোক এসেছে।’

কুঁচকানো ভ্রু স্ফীত হয়ে গেলো মায়ের এমন সংলাপ শুনে। চট করে কথাটি যেন স্নায়ু গ্রহন করতে পারলো না। হতবুদ্ধিকর অবস্থায় প্রশ্ন ছুড়লো,

‘ কোন বাড়ি থেকে লোক এসেছে?

সায়রা বানু হতাশার চরম পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হলো। তার এমন কটকটে চাহিনীতে ছোট হয়ে গেলো প্রিয়তা। আর কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পেলো না৷ অরিন আগ বাড়িয়ে বললো,

‘ আরে তুমি কি আসলেই বুঝোনা কিছু আপু? ওই বাড়ি বলতে তোমার হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এসেছে। তোমার দেবর, তোমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি সব।’

‘ তারা কেন আসবে?’

প্রিয়তার এ কথায় সায়রা বানু দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,

‘ সাখাওয়াত ভিলাতে একটা গাধি মেয়ে রাস্তায়- রাস্তায় জ্ঞান হারাবে, তাহলে তারা দেখতে আসবে না? তোর জন্য আজ বেচারা অভী কি বকাটাই না খেলো ওর বাবার কাছে। নুরুল ভাই বললেন যে ছেলেটা নাকি তোর খেয়াল রাখতে পারিনি। অথচ আমরাই জানি তুই কত বড় বিচ্ছু মেয়ে হতে পারিস, তবুও ছেলেটা তোর বিরুদ্ধে কোনো টু শব্দও করেনি। ‘

অভীর এত প্রশংসা শুনে মনে মনে বড্ড বেশি হিংসা অনুভব করলো প্রিয়তা। চোখের দৃষ্টি অন্যত্র নিয়ে ওড়না মুচড়ে ধরলো। সায়রা বানু কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন নিচে। রুদ্রিক অদ্রি এতক্ষণ উঁকি ঝুঁকি মারছিলো ঘরে। ছোটআম্মুর যে অবস্থা ওদের ঘরে আসার সাহস হচ্ছিলো না। সায়রা বানুর সাথে চোখাচোখি হওয়া মাত্রই মিহিয়ে গেলো দুজনে। সে এগিয়ে এলো। থমথমে গলায় বললো,

‘ প্রিয়তার থেকে তোদের দুটাকে বেশি ভয় পাই আমি। খবরদার ওরে কান পড়া দিবি না। যদি শুনি যে অভীর সাথে প্রিয়তার বনিবনা হচ্ছেনা আর এতে তোদের মতো দুই বিচ্ছুর হাত আছে তবে ভুলে যাবো যে তোরা আমার ভাসুরের ছেলেমেয়ে। এত বড় ধেড়ি ছেলেমেয়ে হয়ে তোরা নিশ্চয়ই চাইবি না যে অরিন বা তুশি রুশির সামনে তোরা এমন অবস্থায় পড়্ , তাই না?

শুকনো ঢোক গিললো রুদ্রিক আর অদ্রি। মনে বহাল রইলো ভয়ার্ত অনুভূতি। ছোটআম্মুকে অগোচারে ওরা ‘ খুন্তি আম্মু’ বলে সম্বোধন করে। খুন্তির মতোই উত্যপ্ত সর্বদা তার হৃদয়। অদ্রি মেকি হেসে জড়িয়ে ধরলো সায়রা বানুর ঘর্মাক্ত শরীর। আহ্লাদে বললো,

‘ আহা চিল ছোট আম্মু, তুমি টেনশন নিও না। প্রিয়তা ওই খাটাস (জিভ কেটে) আই মিন অভী ভাইয়াকেই বিয়ে করবে। প্রিয়তা না করলে ওর বাপ বিয়ে করবে, ওর বাপ বিয়ে না করলে চোদ্দগুষ্টি সব ওই অভীকে বিয়ে করবে। তারপর যদি কেউ না করে, তবে আমি তো আছিই। তাই না?’

সায়রা বানু অদ্রির কান চেপে ধরতেই অদ্রি উহ আহ করে গোঙাতে লাগলো। সায়রা বানু বললো,

‘ তবে রে! এত যদি মনে তোর বিয়ের শখ জাগে বাপরে গিয়ে বল!’

‘ মজা করছিলাম ছোট আম্মু, প্রমিস আর করবোনা। আমি অভী ভাইয়ার দিকে ভুলেও তাকাবো না। তার বংশের পূর্বপুরুষ এমনকি ছোট ছোট আন্ডাবাচ্চাদের দিকেও তাকাবো না। ‘

সায়রা বানু অদ্রিকে এবার ছেড়ে দিতেই অদ্রি যেন হাফ ছাড়লো। এদের সবার কর্মকান্ড যেন শূন্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলো প্রিয়তাকে। রুদ্রিকে বলে উঠলো,

‘ কি দেখছিস?’

‘ এই বাড়িতে আরও বেশিদিন থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো রে!’

রুদ্রিক হাসলো। বললো,

‘ তুই আর কথা বলিস না। একটু আগে তো সিনেমা হয়ে গিয়েছিলো, তোর শ্বশুরআব্বা, শ্বাশুড়ি, তোর দেবর ‘বউমণি’ ‘বউমণি’ বলে কান ফাটিয়ে ফেলেছিলো৷ তোর ওই সেভেনে পড়া বিচ্ছু দেবর আমার সামনে এমন পার্ট নেয় যেন দুনিয়াতে তারই একটা ব্রিলিয়ান্ট ভাই অভী আছে। আর আমরা তো বাতাসে বাতাসে ভার্সিটির সেমিস্টার পার করে আসছি। শালারে জুতাইতে…’

অদ্রি চিমটি মারতেই রুদ্র থামলো। অদ্রি দ্বিগুণ তেজে বললো,

‘ মুখে তো একটু ক্লুপ আটকা ভাই? অরিনরে এই বয়সেই তোর মতো পাকিয়ে ফেলার ইচ্ছে না থাকলে মুখ থামা।’

অগত্যাই সে চুপ করে রইলো। মিনমিনিয়ে প্রিয়তাকে বললো,

‘ আপাতত তোর ভদ্র শালীন দেবর, আর হবু শ্বশুর শ্বাশুড়ি এই বাড়ি থেকে চলিয়া গিয়াছে। তোর খাটাশ হবু বর আই মিন অভী ভাইয়া বড় বারান্দায় বসে আছে৷ এখন তোর আব্বাজান তোকে বলিয়াছে তার সহিত দেখা করিয়া আসতে। দয়া করিয়া সেখানে যান।’

বলেই চলে গেলো রুদ্র। যাওয়ার আগে অদ্রিকে দেখে নিলো কটাক্ষ চোখে। প্রিয়তা সিটিয়ে গেলো। অভী তাহলে এখানেই আছে? এখনও যায়নি?

দুরুদুরু বুক নিয়ে রুম থেকে বেরোলো প্রিয়তা৷ পড়ন্ত বিকেলের অন্তিম সময়। সন্ধ্যা নেমে আসছে। সেই সাথে চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়ছে অস্থিরতা। প্রিয়তা ওড়না ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে বড় বারান্দার সন্নিকটে এগোলো। দেখামাত্রই হৃদকম্পন বেড়ে গেলো। অভী নির্বিকারে বসে আছে বারান্দার চেয়ারে। সামনে প্রিয়তার বড় চাচা। প্রিয়তা আসামাত্রই চাচা তাকালো তার দিকে। ভরাট কন্ঠে বললো,

‘ শরীর কেমন তোর এখন? ‘

‘ ভালো।’

‘ মাথা ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। কোনো সমস্যা হলে আমায় বলবি। খবরদার ওই রুদ্র গাধাটাকে কিছু বলবি না। ওর মতো অপদার্থ ছেলের কাছে কোনো কাজ আশা করাই বেকার।’

প্রিয়তা মনে মনে অসন্তুষ্ট হলো। একজন বাইরের ছেলের কাছে নিজের ভাইয়ের এমন অপমান ওর নিজেরও ভালোলাগলো না। তবুও মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো সে। চাচা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। অভীকে দেখিয়ে বললেন,

‘ তোর জন্যই ছেলেটা বসে ছিলো এতক্ষণ। কথা বল। আমি ওযু করবো।’

বড় আব্বু চলে যাওয়া মাত্রই অস্বস্তি প্রিয়তাকে জেঁকে ধরলো। কেননা অভী তাকে দেখে চলছে। সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে বহুক্ষণ ধরে। চোখে অল্পবিস্তর ভাঁজ। পুরু ঠোঁটে অদ্ভুত এক ধরনের টান। অভী জিজ্ঞেস করলো,

‘ মাথা ব্যাথা করছে না?’

‘ একটু করছে।

‘ করাটাই স্বাভাবিক। যেইভাবে মাথা ফাটিয়েছো আমি তো ভেবেছিলাম বিয়ের আগেই আমায় বিধবা বানিয়ে ফেলবে?’

‘ ছেলেরা বিধবা হয় নাকি?’

‘ সরি প্রিয়তা, বিধবার মেইল ভার্সন আমি জানিনা৷ তবে আমার ধারনা বিধবার মেইল ভার্সন বাংলা অভিধানে নেই। এই যে বিধবা হলে বিধব নেই কেন, রূপসী হলে রূপস নেই কেন? বাংলায় এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলোর মেইল ভার্সন থাকা উচিত কিন্তু নেই। ‘

প্রিয়তা মুখ ফুলিয়ে বললো,

‘ আপনার কাছে বাংলা ক্লাস করতে আসিনি মিস্টার!

অভী হাসলো। ডানপিটে গড়নের শরীরে রম্যাত্নক সেই হাসি। রেলিংয়ে হেলান দিয়ে প্রিয়তার দিকে তাকালো সে। বলে উঠলো,

‘ আমার কাছে কি তাহলে প্রেম করতে এসেছো?’

প্রিয়তা চমকালো। তটস্থ চোখে তাকালো অভীর দিকে। ওড়না আতঙ্কে চেপে ধরে হাসফাস করতে লাগলো।

‘ আমায় বিয়েও করতে চাও না, আবার প্রেমও করতে চাও, ইন্টারেস্টিং!’

‘ মোটেও এমন কিছু চাই না আমি।”

‘ তো কি চাও তুমি?’

প্রিয়তা নিভে গেলো। এতদিনের সাজানো গোছানো কথা চট করে বলে ফেলতে ইচ্ছে হলো। অভী এবার সিরিয়াস কন্ঠে বললো,

‘ তিনরাত সময় দিবে তোমায়। ভাবো, খুব ভালোমতো ভাবো। তুমি যদি সত্যি সত্যিই আমায় বিয়ে না করতে চাও আজ থেকে ঠিক তিনদিন পর এসময় প্রীতিলতা হলের সামনে দাঁড়াবে। তবে এই তিনদিন নরমাল থাকবে। কোনো ঝামেলা করবে না৷ তুমি যদি তোমার সিদ্ধান্তে অটল থাকো তাহলে আমি নিজে বাবাকে না বলবো। ‘

অবাক করে উঠলো প্রিয়তার চোখমুখ। অভীর দৃষ্টিতে তা এড়ালো না। বাকা হেসে তাই বললো,

‘ কি মুড সুইং হচ্ছে? আমায় বিয়ে করার ইচ্ছে আছে নাকি এখন?’

‘ মোটেও না।’

চট করে বলে উঠলো প্রিয়তা। অভী কিছু বললো না আর। উদ্যত হলো এবাড়ি প্রস্থান করার জন্য। বলে উঠলো,

‘ দেখা যাক!’

প্রিয়তা খুশিমনে অভীর পিছুপিছু যেতে নিবে ওমনেই পা থামালো অভী। প্রিয়তা অভীর পিঠ বরাবর ধাক্কা খেলো। অভীর হঠাৎ প্রিয়তার চোখ মুখ দেখে অদ্ভুত একটা হাসি দিলো। অন্যরকম সে হাসি। প্রিয়তা সচকিত হলো। বলে উঠলো,

‘ কি হয়েছে আপনার?’

অভী নিঃশ্বাস ফেললো। পাঞ্জাবির পকেট থেকে টিস্যু বের করে বিনা অনুমতিতেই মুছে দিলো প্রিয়তার চকলেটে মাখা মুখ। প্রিয়তা ভীমড়ি খেলো। ভুলে গিয়েছিলো যে তুশি রুশি ওর মুখ চকলেটে মাখামাখি করে ফেলেছিলো। এভাবেই সে এতক্ষণ ছিলো?

এমন চাহিনী দেখে অভীর বুঝতে বাকি রইলো না প্রিয়তার অনুভূতি। বিনা দ্বিধায় অকপটে তাই বলে ফেললো,

‘ সরি প্রিয়তা। তোমার চকলেটে মাখা মুখ দেখে একটা ভয়াবহ অনুভূতি অন্তরে জেগে উঠেছিলো। রুদ্র অদ্রির প্রবৃত্তির মতো ভয়াবহ ধরনের সেই অনুভূতি৷ আমি চাই না সেটা প্রশ্রয় পাক। এত বছরে যত্নে গড়া আমার বেপোয়রা বৈশিষ্ট্যটা তোমার জন্য নড়বড়ে হয়ে উঠুক তা চাইনা আমি৷ তাই সেটা মুছে দিলাম।’

বলেই চলে গেলো অভী। মেঝেতে অল্পবিস্তর কাঁপুনি ধরলো। প্রিয়তা দাঁড়িয়ে রইলো থমথমে অবস্থায়। অভীকে প্রেম মানব মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে তাকে ডায়রীর পাতায় থাকা সুন্দর কিছু অনুভূতির মতো!
.
.
.#প্রিয়কাহন❤️
#লেখিকা ‘কায়ানাত আফরিন’
#পর্ব |৭|
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহূর্তগুলো ছিলো প্রিয়তার সবচেয়ে সুন্দর জীবন। তবে সেই সুন্দর জীবনে অভীর অনুমতিবিহীন আগমনে জীবনে হাতছানি দিলো তুমুল তোলপাড়। প্রিয়তাদের সেমিস্টার শেষ। জীবন অতিবাহিত হচ্ছিলো বসন্তের দিনগুলোর মতো।সেই বসন্তের দিনগুলো পাড়ি দিয়ে নতুনভাবে ক্যাম্পাসে আসা মাত্রই হতভম্ব হলো সে। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে অদ্ভুত দৃষ্টিতে। হলের পুলু মামা থেকে শুরু করে মোড়ের দোকানের রমিজ কাকা, ক্যাম্পাসের দারোয়ান মিয়া দাদা এমনকি সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পদার্পন করা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীগুলোও। কেউ কেউ তো তুমুল আগ্রহে এগিয়ে এসে সালাম জানালো । প্রিয়তা তাদের প্রতিউত্তর দিলো যন্ত্রমানবীর মতো।
রুদ্রিক অদ্রিও হতভম্ব। প্রিয়তার মতো মেয়েকে সবাই এত গুরুত্ব দিচ্ছে সেটা যেন ওদের বিশ্বাসের বাইরে। প্রিয়তা অসামাজিক ধরনের মেয়ে। কথা কম বলে, বললেও গুছিয়ে বলতে পারে না। এই শিক্ষাজীবনে খুব কম মানুষই আছে যারা ‘তাহমিনা প্রিয়তা’ কে এক নামে চিনবে। তবে এখন সবাই মুখে আপু আপু বলে যেভাবে ফ্যানা তুলছে সেটা দেখে দুজনের মাথা রীতিমতো চক্কর দিয়ে উঠলো। রুদ্রির এগোলো প্রিয়তার কাছে। তুমুল উৎসাহে বললো,
‘ তুই কি ডিপার্টমেন্টে ধর্মের ভাই পাতিয়েছিস প্রিয়তা?’
প্রিয়তা বাক্যহীন। কথা হয়ে গিয়েছে অগোছালো। সে নিজেও বুঝতে পারলো না এর কারন কি। তুমুল বিরহে সে প্রতিউত্তর দিলো,
‘ আমি ধর্মের ভাই পাতাতে যাবো কে বল্ তো?’
হাজার খুঁজেও এর উত্তর পেলো না রুদ্রিক। অদ্রি আচার খাচ্ছিলো। ভাইয়ের থামামাত্রই সে বলে উঠলো,
‘ কাহিনী আস্তে আস্তে বের হয়ে যাবে বস্। ওয়েট কর্। আপাতত ঠান্ডা মাথায় ক্লাস করে আসি। তারপর কোনো একটা জুনিয়র চেংলা পেংলা কে ধরলেই সব খবর বের হয়ে যাবে।’
অদ্রির কথায় মনে মনে একটু হলেও শান্তনা পেলো প্রিয়তা। তারপর তিনজন চলে গেলো ক্লাসের দিকে। তবে অন্তরের ছিমছাম চিন্তা ভাবনা হিমবাহের ঝড়ের মতো উড়ে গেলো যখন দেখলো তাদেরই ব্যাচমেট প্রিয়তাকে তোষামোদ করে চলছে। তাদের ব্যাচের একটা ছেলে আছে।নাম রাকিব। ইউনিভার্সিটির চরম রকমের প্লেবয়। এমন কোনো মেয়ে নেই যার পিছে সে ঘুরে নেই। অদ্রির সাথেও রিলেশন ছিলো। সেটা টিকেছে ঘন্টাখানেক মতো। অদ্রির মতো বাচ্চাহাতির খরচ বইতে বইতে রাকিব জর্জরিত কন্ঠে বললো,
‘ মাফ করো বইন, তুমি আজথেকে আমার বাতাসে উড়ে আসা বইন। কোনো প্রেমিকা ট্রেমিকা না। আমি এমনিতেও বাপের টাকায় খাই দাই ঘুমাই, তোমার মতো বাচ্চা হাতিরে পাললে জীবন বরবাদ হয়ে যাইবো।’
অদ্রি ভয়ংকরভাবে রেগে গিয়েছিলো সেবার। তারপর থেকেই সব সম্পর্ক শেষ। মাঝপথে সে প্রিয়তাকে লাইন মারার চেষ্টা করে । আর আজ সেই ছেলে যখন প্রিয়তাকে তুমুল শ্রদ্ধার সহিত আপা আপা বলে মুখের ফ্যানা তুলে ফেললো বিচলিত হলো প্রিয়তার মন। বললো,
‘ তুমি আমায় আপা বলছো কেন রাকিব?’
‘ তো বলবো না? আমি কি জানতাম যে তুমি অভী ভাইয়ের ফিওন্সে? জানলে আমি কেন, কেউই তোমার পিছে ঘুরতো না।’
স্নায়ু অকেজো হয়ে গেলো প্রিয়তার। দৃষ্টি বিভ্রম হলো। অবাক প্রসন্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘ তুমি কিভাবে জানলে?’
‘ শুধু আমি না। সবাই জানে এ ব্যাপারে। নবীন বরণের সেই ঘটনার পর অন্তু ভাইয়াই সবাইকে বলে বেড়িয়েছে এ কথা। রমিজ কাকা তো ব্রেকিং নিউজ বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের চবি স্টুডেন্টদের যে সোশ্যাল গ্রুপ আছে সেখানেও তোমায় আর অভী ভাইকে নিয়ে মাতামাতি। তোমাদের মধ্যে যে প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা ভাবতেও পারিনি আমি।’
সবার চোখে মুখে একই অভিব্যাক্তি। সবার এক মতামত, নুরুল স্যারের বড় ছেলে হওয়ায় অভীর সাথে প্রিয়তার প্রেমের সূত্রপাত হয় আর তারপরই সেই সূত্রে আসে বিয়ে। এটা সত্য যে অভী প্রিয়তা পূর্বপরিচিত কিন্তু তাদের মধ্যে প্রেম তো দূরের কথা, ভালোমতো দুদন্ডও কথাও হয়নি। অভীর গম্ভীর চুপচাপ বৈশিষ্ট্য কিশোরী বয়সেই কাপিয়ে দিয়েছিলো প্রিয়তাকে।
ক্লাস শেষ করলো কোনোমতে। যেই স্যার ক্লাস করিয়েছিলো সেই স্যারের সাথে ব্যাক্তিগত কোনো পরিচয় ছিলোনা প্রিয়তার। কিন্তু ক্লাস শেষে সে যখন প্রশ্ন করলো,
‘ এখন কেমন আছো প্রিয়তা? ব্যাথা কমেছে?’
প্রিয়তার মুখ বোয়াল মাছের মতো হা হয়ে গেলো। আজ হয়তো অবাক হওওয়ার দিন। একের পর এক এমন ঘটনা উপনীত হয়েছে যে প্রকৃতি চাইছে তাকে অবাকমিশ্রিত রমনী বানাতে। ঢোক গিললো প্রিয়তা। এই স্যার মহাশয় তাকে চিনলেও হয়তো নাম এত ভালোভাবে জানতো না। অথচ আজ উনি সহ সকলের কাছে প্রিয়তার নাম, ডিপার্টমেন্টসহ একাডেমিক সিরিয়াল যেন নখদর্পনে। প্রিয়তা আবেশি হয়ে বললো,
‘ জ….জ্বি স্যার কমেছে।’
‘ এত দুর্বল হলে চলে প্রিয়তা? বেশি করে দুধ ডিম এসব খাবে। কাল যেভাবে পড়ে মাথা ফাটালে আমি তো শুনেই আৎকে উঠেছিলাম। ভাগ্যিস অভী সামলে নিয়েছিলো ব্যাপারটা। কেয়ারিং বন্ধু পেয়েছো বলতে হবে।’
প্রিয়তা ভাব পাল্টালো না। সিনিয়র ভাইকে ‘কেয়ারিং বন্ধু’ বলে সম্বোধন করে স্যার যে কি বোঝাতে চেয়েছে তা স্পষ্টই বুঝতে পেলো প্রিয়তা। কয়েকজন মানবমানবী ওকে দেখে মিটমিটিয়ে হাসছে। কেউ ফট করে বহিঃপ্রকাশ করে বলছে,
‘ প্রিয়তা দেখি ছুপা রুস্তম বের হলো মাইরি, এমন অন্যাবেলা ডলের মতোমুখ করে থাকা মেয়েটা ভেতরে ভেতরে ঠিকই অভী ভাইকে পটিয়ে নিলো। ভাবা যায়?’
রেগেমেগে ক্লাস থেকে বের হলো প্রিয়তা। অদ্রি বললো,
‘ কি হলো তোর?’
‘ কি হলোনা এটা বল? দেখছিস সবাই কিসব বলছে?’
‘ চিল ইয়ার! ভুলসব বলছে নাকি ওরা। ওই হাংকি পাংকি স্যার আই মিন হাকিম স্যারের কানে পর্যন্ত যখন গেছে তার মানে তুই আমাদের ডিপার্টমেন্ট ভাইরাল করে ফেলেছিস। এখন কদিন অভী ভাইয়ার পাওয়ার নিয়ে ঘুরে বেড়া বইন। যেই কুত্তিগুলা আমাদের র ্যাগিং করতো তারাও পর্যন্ত তোকে সালাম করবে।’
‘ চল আমার সাথে।’
‘ কোথায়?’
‘ বরকত হলের দিকে যাবো?’
‘ ওদিক কি কাজ?’
‘ অভী ভাইয়া ওই সাইডেই আছে আমি সিউর। কথা বলবো উনার সাথে।’
‘ চল তাহলে।’
কড়া রোদে ফেটে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। আশেপাশে হাজারো নর নারীর ভীড়। রিক্সা টুংটাং আওয়াজ চালাচ্ছে। বাতাসে দুলে ওঠা পাতার ফাঁক ফোকরে পড়ছে জালের মতো রোদ। প্রিয়তা ঘামে তেতে উঠলো। জামা লেপ্টে রইলো গায়ে। রুদ্রিক এখানে নেই। সে বঙ্গবন্ধু ঊদ্যানের প্রান্তে গিয়েছে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে। অদ্রি এতক্ষণ এখানেই ছিলো। বরফ গোলা খাবে বলে কই যে গেলো আর খবরবার্তা নেই। প্রিয়তা হলের দিকে গেলো। এখানে সিনিয়র স্টুডেন্টদের ভীড়ে অস্বস্তি হলো বেশ। অভীকে খুঁজার আপ্রাণ চেষ্টা করলো। হঠাৎ সাদা গেন্জি পড়া এক চটপটে ছেলে হাজির হলো প্রিয়তার কাছে। আঙুল উচিতে বললো,
‘ তুমি কি সি ইউনিটের তাহমিনা প্রিয়তা?’
তরুনটি কিভাবে প্রিয়তার নাম জানলো তা বুঝতে বেগ পেতে হলো বেশ। তবুও মেকি হাসি দিয়ে বললো,
‘ জ্বী।’
‘ তাহলে তুমি তো আমাদের ভাবি। অভী ফার্স্ট ফ্লোরেই আছে। হাতের বামদিকে সিড়ির কোণেই ওদের আড্ডাখানা। গেলেই পেয়ে যাবে।’
প্রিয়তা কথা বাড়ালো না আর। চুপচাপ ভবনের ভেতরে গেলো। বেশ কিছুক্ষণ চিরুনি অভিযান চালানোর পর পেয়েও গেলো অভীকে। দেখে শরীরের চটচটে ঘাম নিমিষেই যেন শীতলে রূপ নিলো। অভী বসে আছে মোটা রেলিংয়ে। হাতে একটা বিশালাকার বই। কলম কামড়াচ্ছে আনমনে। তার বন্ধুমহল আশপাশে তাকেই ঘিরে ধরেছে। কথায় কথায় সে আলতোভাবে হেসে উঠছে বারবার। হঠাৎ অন্তুর সাথে চোখাচোখি হলো প্রিয়তার। খেয়াল করলো অন্তু অভীকে ইশারায় বললো সেদিকে দেখতে। প্রিয়তা নড়বড়ে হয়ে উঠলো। চোখাচোখি হলো অভীর সাথে। অভীর পাশাপাশি বাকি বন্ধুরাও সেদিকে দৃষ্টিপাত করলো।
এবার সে পড়লো মহাফ্যাসাদে। অস্বস্তি শিরায় শিরায় যেন বয়ে বেড়াচ্ছে। অভী বই বন্ধ করলো। পা চালালো তার দিকে। প্রিয়তা পাথর হয়ে দাঁড়ালো। অপেক্ষায় রইলো কখন অভী বরাবর দাঁড়াবে। তবে অবাক করে দিয়ে অভী একবারও তাকালোনা প্রিয়তার দিকে। নিঃশব্দে এড়িয়ে চলে গেলো অন্যদিকে।
অপমানে রি রি করে উঠলো প্রিয়তার শরীর। গাল হয়ে উঠলো লাল। রাগে ক্ষোভে ব্যাগের একাংশ চেপে ধরলো। মানতে পারলোনা এই এড়ানোটা। বিড়বিড়িয়ে বললো,
‘ আপনি খারাপ অভী। বুদ্ধদেবের বাবলির মতোই আপনি ভীষণ খারাপ, অহংকারি আর একগুঁয়ে একটি লোক।’
প্রিয়তা নিঃশব্দে হল থেকে বেরোলো। দাঁড়ালো লনের সামনে। প্রিয়তা ছায়াতলে বরফ গোলা খাচ্ছে। দেখামাত্রই সে প্রশ্ন ছুড়লো,
‘ কথা হয়েছে?’
‘ না।’
‘ দেখা পাসনি।’
‘ পেয়েছি।’
‘ তাহলে কি হলো?’
অদ্রির সাথে কথা বলার প্রিয়তার বিন্দুমাত্র মনমানসিকতা নেই। অভী আসলেই দাপুটে মানুষ। এতটা দাপট কি প্রিয়তার সামনে না দেখালে হতো না? তখনই হ্যাংলা পাতলা গড়নের এক ছেলের ডাক পড়লো,
‘ আপা…..ও আপা শুনুন।’
প্রিয়তা চমকালো। তাকালো ছেলেটার দিকে। ঋজু কন্ঠে ছেলেটা বললো,
‘ আপনাকে অভী ভাইয়া ডাকছে আপা।’
আগুন জ্বললো প্রিয়তার চোখে। ভরাট কন্ঠে বললো,
‘ তাকে বলে দাও আমি যাবো না।’
‘ কেনো আপা?’
‘ আমি যাবো কেনো সেটা বলো?’
হ্যাংলা পাতলা ছেলেটি উত্তর খুঁজে পেলো না। অগত্যাই চলে গেলো সে। ঠিক পাঁচমিনিট পর অভী একটা মেসেজ দিয়ে বললো,
‘ বোর্ডরুমে আসো প্রিয়তা।’
প্রিয়তা সিন করলো। কিন্তু রিপ্লাই দিলো না। চুপচাপ ফুটপাতের আখের রস গোগ্রাসে হরণ করলো। অতঃপর আবার টেক্সট এলো,
‘ তুমি কি চাও আমি এমন কোনো কান্ড করি যাতে তুমি আবার জ্ঞান হারাও?’
স্পষ্ট হুমকি। প্রিয়তা এড়িয়ে পারলো না। অদ্রিকে বললো,
‘ তুই এখানে থাক অদি। আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।’
বোর্ড রুম ডিপার্টমেন্টের শেষ মাথায়। এটাকে পরিত্যাক্ত বোর্ড রুম বলা চলে। পেছনের লনে বনলতাদের জংলী আবাস। সন্ধ্যায় মশাদের ভয়ংকর আড্ডাখানা চলে। প্রিয়তা দুতিনেক রুম পেরিয়ে শেষ মাথায় গেলো। আশপাশের গাছের আড়ালে যাদের দেখা যাচ্ছে প্রণয়ী নর নারী। উঁকি মারা অভদ্রতা তাই সেদিকে এগোলো না। বাঁয়ে পা চালিয়ে ঢুকে গেলো রুমে। সেখানে পরিত্যাক্ত টানাপাখা ঝুলছে। টেবিল, গুটিকতক চেয়ার, আর পুরোনো বইয়ে ঠাসা শেলফ। মানবের অস্তিত্ব নেই। প্রিয়তা ডাক দিলো। বারি খেলো তারই আওয়াজ। আচমকা দরজার খিল লাগানোর শব্দে তটস্থ হলো সে। পেছনে ফিরে আবিষ্কার করলো অভীকে।
প্রিয়তা অপ্রতিভ হলো। ধরতে পারলো না অভীর কার্যকলাপ। জেগে উঠলো ভয়। কোণঠাসা কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ আমায় ডেকেছেন কেন অভী?’
অভী কিছুবললো না। শুধু নিঃশব্দে হেসে দরজা বন্ধ করে দিলো।
.
.
.
.
.
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here