#প্রিয়_তুমি❤
#মেঘা_আফরোজ
#পর্ব-৬
.
🍁
.
আকাশ আজো তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরেছে। আজ এনিয়ে আকাশের মা কিছুই বলেনি গত এক সপ্তাহে আকাশ রাত ৯:৩০ এর আগেই বাড়িতে ফিরেছে। ছেলের এমন পরিবর্তন দেখে আনিলা আহমেদ মনে মনে খুব খুশি হয়েছেন।
প্রিয়ন্তী বাড়িতে এতোদিন শাড়ি পড়েছে,শাড়ি পড়ে চলতে অসুবিধা হয় তাই আকাশের মা ওকে ড্রেস পড়তে বলেছে। প্রিয়ন্তী খুবই নরমাল ভাবে থাকতে পছন্দ করে তাই সেলোয়ার কামিজ চুড়িদার এসব পড়তেই কমফোর্টেবল ফিল করে।
প্রিয়ন্তী আজ নীল রঙের সেলোয়ার কামিজ পড়েছে। রুমের লাইট অফ করে জানালার ধারে দাড়িয়ে দূর আকাশের দিয়ে তাকিয়ে আছে প্রিয়ন্তী। আকাশের মা বোনের সাথে সারাদিন থেকে ভালো সময় কাটলেও এই রাতটা যেনো কাটতে চায় না। আকাশের বলা প্রথম কথাগুলো মনে পড়লে ওর বুকে তিরের মতো আঘাত করে। কিন্তু প্রিয়ন্তী আকাশকে এখনো বুঝতে পারছে না আকাশ ঠিক কি চাইছে।
রুমে লাইটের আলো না থাকলেও বাইরের আবছা আলোতে প্রিয়ন্তীর মুখটা খুব মায়াবী লাগছে। ওর পড়নে থাকা নীল ড্রেসটা যেনো ওকে এই অন্ধকারে সৌন্দর্যটা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আকাশ রুমে ঢুকে অন্ধকার দেখে প্রিয়ন্তীকে ডাকলো। কোনো সাড়া না পেয়ে আকাশ আর একটু সামনে এগিয়ে আবছা আলোতে দেখতে পেলো প্রিয়ন্তী জানালার ধারে দাড়িয়ে আছে। আকাশ কোনো কথা না বলে প্রিয়ন্তীর পেছনে গিয়ে দাড়ালো। তারপর নরম স্বরে প্রিয়ন্তীর নাম ধরে ডাকলো কিন্তু তাতেও ওর কোনো সাড়া পেলো না প্রিয়ন্তী সেই একই ভাবে সামনে দৃষ্টি রেখে দাড়িয়ে আছে।
আকাশ প্রিয়ন্তীর কাধে হাত দিতে গিয়েও নামিয়ে নিলো। একটুপর আবারো আস্তে আস্তে হাত উঠিয়ে আলতো করে প্রিয়ন্তীর কাধে হাত রেখে বললো
__প্রিয়ন্তী কি হয়েছে? কিছু বলছো না কেনো?
প্রিয়ন্তী কেঁপে উঠলো আকাশের হাতের ছোয়ার,আকাশ দ্রুত হাত সরিয়ে বললো
__সরি আসলে আমি ডাকছিলাম তুমি সাড়া দিচ্ছিলে না তাই তোমার কাধে…
__ইট,স ওকে। আমি কিছু মনে করিনি। আপনি কখন এসেছেন?
প্রিয়ন্তীর গলাটা কাঁপছিলো কথা বলার সময়। ও এখনো আকাশের থেকে উল্টো দিকে ঘুরে দাড়িয়ে আছে। আকাশ প্রিয়ন্তীর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে রুমের লাইট জ্বালিয়ে দিলো। প্রিয়ন্তীর সামনে গিয়ে বললো
__প্রিয়ন্তী মাথা তোলো তাকাও আমার দিকে।
……….
__কি হলো তাকাও বলছি।
প্রিয়ন্তী আকাশের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো,আকাশ আচমকা প্রিয়ন্তীর গালে নিজের হাত রেখে বললো
__কি হয়েছে তোমার চোখে পানি কেনো?
প্রিয়ন্তী কিছু বলবে কি ও তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। আকাশ ওর গালে এভাবে হাত রেখেছে সেটা হয়তো মানতেই পারছে না।
আকাশ রেগে বললো
__কি হলো আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি শোনো নি তুমি? কি হয়েছে কাদছো কেনো?
প্রিয়ন্তী খানিকটা কেপে উঠে অভিমানি কন্ঠে বললো
__কিছু হয়নি। আর আমার চোখের পানিও কাউকে দেখতে হবে না।
প্রিয়ন্তী সোফায় গিয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়লো। আকাশ ও আর কিছু বললো না একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
প্রিয়ন্তী রাতে খাবে না বলেছে তাই আকাশ ওর মাকে বলেছে খাবার রুমে পাঠিয়ে দিতে। আকাশ প্রিয়ন্তীকে অনেকবার বলেও খাওয়াতে পারেনি। আকাশ ও না খেয়ে রেখে দিলো। প্রিয়ন্তী সোফায় শুয়েছে আকাশ বেডে শুতে বলেছে প্রিয়ন্তী সেটাও শোনে নি এমনকি আকাশের সাথে কোনো কথাও বলছে না। আকাশ আর কিছু না বলে রেগে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
.
🍁
.
রোজকার মতো আজ সকালেও প্রিয়ন্তীর কোরআন পড়ার শব্দ শুনে আকাশের ঘুম ভেঙে গেলো। এটা যেনো ওর অভ্যেসে পরিনত হয়েছে,রোজ সকালে প্রিয়ন্তীর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শোনা।
সবাই মিলে একসাথে ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে। আকাশের বাবা প্রিয়ন্তীকে বললো
__বউমা এক সপ্তাহের বেশি হলো তুমি এ বাড়িতে বউ হয়ে এসেছো। তোমার মামা কাল অফিসে বলছিলো তোমাকে আর আকাশকে ওই বাড়িতে গিয়ে ঘুরে আসতে। আজ তো তোমার ভার্সিটি অফ যাও ঘুরে এসো।
প্রিয়ন্তী মাথা নিচু করে রইলো কিছুই বললো না। কি বা বলবে আকাশ হয়তো যেতে চাইবে না ওর সাথে।একা যাওয়াটা তো ভালো দেখায় না। আর যদি একা যায় তাহলে মামি কথা শোনাবে।
আকাশের মা প্রিয়ন্তীর দিকে তাকিয়ে বললো
__প্রিয়ন্তী কিছু বলছিস না কেনো? মন খারাপ তোর আকাশ কিছু বলেছে?
আকাশ এতক্ষণ চুপ করে খাচ্ছিলো ওর মায়ের কথা শুনে প্রিয়ন্তীর দিকে তাকালো।
__না মা উনি কিছু বলেনি। আসলে আমি যেতে চাইছি না ও বাড়িতে, একা গেলে মামি আমাকে কথা শোনাকে সাথে মামাকেও। আমি চাইনা মামা আমার জন্য আর ছোট হোক।
__তুই কেনো একথা বলছিস আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু তুই একা কেনো যাবি আকাশ ও যাবে তোর সঙ্গে। কিরে আকাশ প্রিয়ন্তীকে নিয়ে ওর মামা বাড়িতে যেতে কোনো প্রবলেম আছে তোর?
আকাশ মৃদু হেসে বললো
__নাহ আমার কোনো প্রবলেম নেই। আমি তো ফ্রী আছি আজ।
প্রিয়ন্তী আশ্চর্য হয়ে তাকালো আকাশের দিকে। আকাশ ওর সঙ্গে যেতে রাজি হবে এটা কল্পনাও করেনি। আকাশ বলে উঠলো
__আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? নাকি আমাকে তোমার সঙ্গে তোমার মামা বাড়িতে নিতে চাইছো না?
__আকাশ কি বলছিস তুই প্রিয়ন্তী তোকে নিতে চাইবে না কেনো?
__মা আমি এমনি এমনি বলছি না দেখো প্রিয়ন্তী কিভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
.
🍁
.
প্রিয়ন্তী আর আকাশ একটু আগেই মামা বাড়িতে এসেছে। প্রিয়ন্তীর মামা তো খুব খুশি হয়েছেন ওদেরকে দেখে। প্রিয়ন্তীর মামিও হাসিমুখে কথা বলছে কিন্তু প্রিয়ন্তী ঠিকি বুঝতে পারছে আকাশকে দেখেই সে কিছু বলছে না তবে মনে মনে ঠিকি রাগে ফুসছে।
দুপুরের খাবার খেয়ে আকাশ প্রিয়ন্তীর রুমে গিয়ে শুয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর দরজা ঠেলে কেউ রুমে ঢুকার শব্দ পেয়ে আকাশ সেদিকে তাকালো।
পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে আকাশের সামনে এসে কোমড়ে হাত রেখে চোখ দুটো ছোট ছোট করে বললো
__তুমি আমার আপুনিকে কেনো নিয়ে গিয়েছো?
আকাশ উঠে মেয়েটির সামনে হাটু গেড়ে বসে মেয়েটির গালে একহাত রেখে আদুরে গলায় বললো
__তোমার নাম কি? আর কে তোমার আপুনি?
মেয়েটি আকাশের হাত গাল থেকে সরিয়ে বললো
__আমার মুখে হাত দিবে না,তুমি আপুনিকে নিয়ে গিয়েছো। তুমি খুব পচা লোক। আপুনি আমাকে রোজ চকলেট এনে দিতো কত্তো আদর করতো এখন আমাকে কেউ চকলেট দেয় না আদর ও করে না।
রাইনামনি এখানে,সে কি আমার ওপর অভিমান করেছে? আমি তো তার জন্য অনেকগুলো চকলেট এনেছি আর ভাবছি এত্তো গুলা আদর দিবো তাকে।
দরজায় দাড়িয়ে প্রিয়ন্তী হাসি মুখে কথাগুলো বলে এগিয়ে এলো। মেয়েটির মুখে হাসি ফুটে উঠলো প্রিয়ন্তীর সামনে গিয়ে ইশারায় বললো নিচু হতে। প্রিয়ন্তী নিচু হতেই মেয়েটি ওর গলা জড়িয়ে দুইগালে চুমু দিয়ে বললো
__আপুনি আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি। তুমি কেনো চলে গিয়েছিলে? তোমাকে এই পচা লোকটা নিয়ে গিয়েছিলো তাইনা?
__আমি জানি তো আমার বোনটা আমাকে অনেক মিস করেছে তাই তো দেখা করতে চলে এসেছি। আর উনাকে পচা লোক বলছো কেনো উনি খুব ভালো। উনি তোমার ভাইয়া হন। ভাইয়াকে সালাম দিয়েছো?
__না দেইনি, রিয়ান ভাইয়া বলেছে উনি নাকি তোমাকে নিয়ে গিয়েছিলো তাই আমি রাগ করেছি এই ভাইয়াটার ওপরে।
__ওও তাই,কিন্তু আমি তো চলে এসেছে। তোমাকে না বলেছি সবাইকে সালাম দিতে হয় যাও ভাইয়াকে সালাম দাও।
রাইনা আকাশের দিকে ঘুরে বললো
__আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।
আকাশ ওদের কথা শুনে বুঝতে পারছে এটা প্রিয়ন্তীর বোন হয়। প্রিয়ন্তী যে ওকে খুব ভালোবাসে তা ওদের কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে। আকাশ মুচকি হেসে বললো
__ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি এখন বুঝতে পারছি তুমি কেনো রেগে আছো আমার ওপর। এটাই তোমার আপুনি তাইতো। কিন্তু তোমার আপুনি তো চলে এসেছে এখনো রেগে আছো আমার ওপরে?
__না আমি আর রেগে নেই আপুনি তো বললো তুমি খুব ভালো,জানোতো আপুনি বলেছে যারা ভালো তাদের ওপর রাগ করতে নেই।
__ওও আচ্ছা তাই! তোমার নামটা কি বললে নাতো?
__আমার নাম রাইনা।
আকাশ রাইনাকে তুলে বেডে বসিয়ে বললো
__আমার ছোট্ট শালিকা তো অনেক কিউট।নামটাও খুব সুন্দর। চকলেট পছন্দ করো খুব?
__হুমম খুবববব।
__আচ্ছা এখন থেকে তোমার আপুনি নয় আমি তোমাকে চকলেট এনে দিবো কেমন।
প্রিয়ন্তী অনেকগুলো চকলেট এনে রাইনাকে দিয়ে বললো
__আমার বোন আমি কেনো চকলেট দিবো না। আপনাকে তো কেউ দিতে বলেনি।
__আমার শালিকা আমি দিবো, কারো কথা শুনে দিতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।
__আমাকে বউ বলে মানেন আপনি যে ওকে শালিকা বলছেন?
প্রিয়ন্তী নিরব দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,আকাশ কি বলবে বুঝতে পারছে না। প্রিয়ন্তীও আকাশকে আর কিছু বললো না। আকাশের উত্তরের অপেক্ষা না করে প্রিয়ন্তী রাইনার দিকে তাকিয়ে বললো
__রাইনা,রিয়ান কোথায় ও বাড়িতে নেই?
__আছে তো ভাইয়া গেম খেলছে। জানো আপুনি তুমি চলে যাওয়ার পরে ভাইয়া আমাকে আর গেম খেলতে দেয় না।
__আচ্ছা আমি ওকে বকে দিবো চলো আমরা কার্টুন দেখবো এখন।
প্রিয়ন্তী রাইনাকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আকাশ ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো
__আমার মায়াপরীটার অনেক অভিমান হয়েছে। আর দেরি করা যাবে না ওর মনের সব সংসয় দূর করে অভিমান ভাঙাতেই হবে।
.
🍁
.
আকাশ প্রিয়ন্তী আজ মামা বাড়িতেই থাকবে। যদিও আকাশ বলেছিলো আজই চলে যাবে কিন্তু মামা বারবার থেকে যেতে বলেছে তাই থাকতে হচ্ছে। তাছাড়া প্রিয়ন্তী এ বাড়িতে এসে মামাতো ভাই রিয়ান আর বোন রাইনাকে পেয়ে যেনো প্রান ফিরে পেয়েছে। মন খুলে হাসছে প্রিয়ন্তী যে হাসির একটু ঝিলিক আকাশের মনকে আরো দমিয়ে দিচ্ছে। আকাশের মন যে এই হাসিতেই বাধা পড়ে গেছে।তাই আকাশ চাইছে না প্রিয়ন্তীর এমন মনকাড়া হাসিটা কেড়ে নিতে।
রাইনা আকাশের সাথে একদম মিশে গিয়েছে আকাশ ও হাসি দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছে রাইনার সাথে। প্রিয়ন্তী আকাশকে আগে এভাবে হাসতে দেখেনি ওকে এভাবে হাসতে দেখে মনে মনে বলতে লাগলো
__উনি হাসতেও পরে! কই এ কদিনে তো এভাবে কখনো হাসতে দেখিনি উনাকে। কতো সুন্দর উনার হাসি মন চাইছে এখনি বলি,আকাশ আপনি সব সময় এভাবে হাসবেন হাসলে আপনাকে দেখতে খুব ভালোলাগে। ধেত কি ভাবছি আমি,আমার তো উনার ওপর বিন্দু মাত্র অধিকার দেখানোর ক্ষমতা নেই উনি সে পথ তো নিজেই বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় বুঝতে পারছি না উনি কেনো এতো কেয়ার করে আমার আর আজ নিজে থেকেই আমার সাথে আসতে রাজি হয়ে গেলো কেনো? হয়তো সবটাই তার বাবা মায়ের মন রাখারা জন্য করছেন।
রাত ১১ টার দিকে আকাশ রুমে এসে বেডে হেলান দিয়ে বসে উপরের দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছে। একটুপর প্রিয়ন্তী রুমে এলো আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো
__আপনার নিশ্চই এসি ছাড়া প্রবলেম হচ্ছে তাইনা? আবার এইরুমে ওয়াশরুম ও নেই প্রবলেম হওয়ারি কথা। আপনি মামার কথা রাখতে না থাকলেও পারতেন। আমিও তো ফিরে যেতে চেয়েছিলাম।
__প্রিয়ন্তী তুমি কি জানো তুমি বড্ড বেশি কথা বলে ফেলছো? আমি কি একবারও বলেছি আমার এখানে কোনো কিছুতে প্রবলেম হচ্ছে?
__বলতে হবে কেনো আমি তো বুঝতে পারি। এতো বড় ঘরের ছেলে এমন একটা বাড়িতে মানিয়ে নেওয়াটা খুবই কষ্টকর। যেমন দেখুন আমি এই পরিবেশে বড় হয়েছি তাই আমার আপনাদের বাড়িতে মানিয়ে নিতে প্রবলেম হচ্ছিলো এসির হাওয়াটাও আমার সহ্য হয় না। এই ফ্যানের বাতাসটাই ভালো লাগে আমার।
আকাশ আর কিছু বললো না শুধু তাকিয়ে রইলো। প্রিয়ন্তী বেড থেকে বালিশ নিতে গেলে আকাশ বললো
__বালিশ নিয়ে কোথায় যাচ্ছো? রুমে তো সোফা নেই বেডেই শুয়ে পড়ো।
__সোফা নেই তো কি হয়েছে মেঝে তো আছে মেঝেতেই শুয়ে পড়বো।
__প্রিয়ন্তী কথা বাড়িয়ো না চুপচাপ বেডে শুয়ে পড়ো আমার কোনো প্রবলেম হবে না। আর যদি আমার কথা না শোনো আমি রুম থেকে বেড়িয়ে যাবো তখন তোমার মামিকে কি বলবে তুমি?
__না না বের হতে হবে না আমি বেডেই শুয়ে পড়ছি।
আকাশ বাকা হেসে শুয়ে পড়লো। প্রিয়ন্তী মাঝে একটা কোলবালিশ রেখে মনে মনে আকাশকে বকতে বকতে বেডের এককোনায় শুয়ে পরলো।
__এতো কর্ণারে শুয়েছো কেনো পড়ে যাবে তো।
__পড়লে পড়বো তাতে আপনার কি আপনি ঘুমান।
__আমার অনেক কিছু।
প্রিয়ন্তী ঘুরে তাকিয়ে বললো
__অনেক কিছু মানে?
__কিছুনা,তুমি এদিকে চেপে শোও মাঝে তো বর্ডার দিয়েই দিয়েছো। আমি ওদিকে যাবো না ভয় নেই। আর শোনো মনে মনে না বকে জোরে বকবে এর পর থেকে আমি কিছু মনে করবো না।
প্রিয়ন্তী অবাক হয়ে ভাবছে,আমি মনে মনে উনাকে বকছি কি করে বুঝলো! জিরো সাহেবটা মন পড়তেও জানে নাকি?
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর আকাশ বলে উঠলো
__ঘুমিয়ে পড়েছো?
__না কেনো?
__কিছু কথা বলার ছিলো।
__হুম বলুন?
__প্রিয়ন্তী আমাকে ক্ষমা করা যায়না? আমি জানি আমি ভুল করেছি তোমাকে ছোট করে আমার সেদিন তোমাকে ওসব বলা উচিত হয়নি। আমি তোমাকে বউ বলে মেনে নিয়েছি তুমি সব কথা ভুলে যাও প্লিজ।
প্রিয়ন্তীর চোখে পানি জমে গিয়েছে আকাশ ওকে বউ বলে মেনে নিয়েছে শুনে বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে। মনে মনে খুশি হলেও অভিমানে সেই খুশিটা চাপা পড়ে গেলো। নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো
__মিস্টার আকাশ আহমেদ আপনি কেনো ক্ষমা চেয়ে নিজেকে ছোট করছেন আমার মতো একটা মেয়ের কাছে। আপনি হয়তো জানেন না চাইলেই সব কিছু ভুলে যাওয়া যায় না। আজ আমার জায়গায় যদি আপনি থাকতেন কি করতেন আপনি?
………….
__কি হলো চুপ করে আছেন কেনো,কি বলবেন খুজে পাচ্ছেন না?থাক আর কিছু বলতে হবে না ঘুমিয়ে পড়ুন।
.
🍁
.
#চলবে…….