প্রেমময়নেশা 💙 পর্ব ৪৩+৪৪+৪৫

#প্রেমময়নেশা( The story of a psycho lover)
#পর্ব-৪৩
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
রিমি আয়ুশকে নিজের দিকে টেনে নেয়। এতে আয়ুশ রিমির দিকে অনেকটাই ঝুকে পড়ে। রিমি ও আয়ুশ একে অপরের নিশ্বাসের শব্দও গুনতে পারছে। আমি উনার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বলে উঠলাম– কি হলো করবি না আদর???
আয়ুশও যেনো এক ঘরের মধ্যে আছে। রিমির মায়াবী চোখে আয়ুশ হারিয়ে যাচ্ছে।
রিমির গোলাপি ঠোট বড্ড টানছে আয়ুশকে।
খুব ইচ্ছে করছে সেই ঠোটে ডুব দিতে।

আয়ুশের পক্ষে কন্ট্রোল রাখা বড্ড দায় হয়ে পড়েছে।
আর কিছু না ভেবে আয়ুশ সেই ঠোট ঠোট ডুবিয়ে দেয়।
।।
।।
।।

ইশান গাড়ি পার্ক করে বাড়িতে ঢুকলো।।

বাড়িতেই ঢুকেই দেখে
নিদ্র ও মল্লিকা চিন্তায় রয়েছে।

মল্লিকা ইশানকে দেখে বলে উঠে–

ইশান এসেছিস???

নিদ্রঃ উনাকে অন্তত পাওয়া গেলো।

ইশানঃ তোমাদের এমন দেখাচ্ছে কেন???

মল্লিকাঃ আরে আয়ুশকে পাচ্ছিনা।
এন্গেজমেন্ট শেষে কোথায় যেনো চলে গেলো।

ইশানঃ ভাইয়া আবার এন্গেজমেন্ট এর পার্ট ছেড়ে গেলো কেন???

নিদ্রঃ ওহ তোমার মনে আছে???
আজ তোমার ভাইয়ের এন্গেজমেনট ওয়াও!!
নাহলে তোমাকে ফোন করা সত্ত্বেও তুমি ফোন করার প্রয়োজন মনে করলে নাহ???

মল্লিকাঃ আচ্ছা এইরকম করছো কেন??
হয়তো কোনো কাজ ছিলো।

নিদ্রঃ কি এমন কাজ ছিলো?? শুনি
সারাদিন শুধু টাকা উড়ানোর ধান্ধা।।

ইশান রেগে বলে উঠে–
এইজন্য ই আমার কোনো ব্যাপারে থাকতে ইচ্ছে করেনা।
বাপি সবসময় আমাকে কথা শুনায়।

মল্লিকাঃ আচ্ছা বাবা তুই শান্ত হো..।।
যাহ তুই ঘরে গিয়ে রেস্ট কর।

ইশান কিছু না বলে ঘরের দিকে যায়।

নিদ্রঃ তুমি ওকে সবসময় আস্কারা দাও!!

মল্লিকাঃ এইসব বিষয় পড়েও ভাবা যাবে আগে দেখো আয়ুশ কোথায়।

।।।।।
আমান বাকি সব স্টুডেন্টস দের থেকে ফোন করে জেনেছে রিমি হোটেলেও যাইনি।।
তাহলে কোথায় যেতে পারে রিমি।

আমান ঃ আমার রিমিপাখির জন্য বড্ড টেনশন হচ্ছে।।
কোথায় যেতে পারে রিমিপাখি???
আচ্ছা অই ইশা রিমিপাখির কোনো ক্ষতি করেনি তো।
ওহ মাই গড।
নাহ আমাকে কিছু একটা করতেই হবে।

কিন্তু কী করবো কিছুই মাথায় ঢুকছেনা।

আমান গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে রিমিকে খুঁজতে।

।।।।।
মিসেস কলি অনেক্ষন যাবত রিমির ফোনে কল করে যাচ্ছে কিন্তু রিমি রিসিভ করছেনা। রিমি তো এমন করেনা।

বড্ড চিন্তা হচ্ছে মেয়েটার জন্য।

মিসেস কলি ফোন বের করে আমান কে কল করে।

আমান গাড়ি ড্রাইভ করছিলো।
মিসেস কলির কল পেয়ে
তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করে বলে উঠে–

আসসালামু আলাইকুম আন্টি!!( শান্ত গলায়)

মিসেস কলিঃ ওয়াইকুমুসসালাম বাবা!!
বাবা রিমি কোথায়?? বলতে পারো??
ওকে কখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি ফোনেই পাচ্ছিনা।

আমানঃ কলি আন্টিকে যদি এখন বলি রিমিপাখিকে পাচ্ছিনা। তাহলে টেনশন করবে।
এম্নিতেই আন্টির শরীর ভালো নাহ।

আমান নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত করে বলে উঠে–
আসলে আমার মনে হয় রিমিপাখি নিজের রুমে ঘুমিয়ে গেছে তাই বোধহয় ধরতে পারছেনা।।

মিসেস কলিঃ ওহ আচ্চছা তাহলে কালকে সকালে
আমি ফোন করবো।
ভালো থেকো বাবা।

আমানঃ ঠিক আছে আন্টি!!

মিসেস কলি ফোন রেখে দেয়।

আমানঃ আন্টিকে তো কোনেরকম মেনেজ করলাম।
কিন্তু রিমিপাখি আমায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুঁজতে হবে।

।।


প্রায় অনেক্ষন পর আয়ুশ রিমিকে ছেড়ে দিলো।

দুজনেই হাপাচ্ছে।

আমি বেডে ধাপুশ করে শুয়ে পড়ি!!

আমিঃ ইয়াহু আমার সাইকো আমাকে আদর করেছে।

আয়ুশ এখন বুঝতে পারলো সে কাজ টি ঠিক করেনি।
রিমি এখন স্বাভাবিক নেই!! ড্রাংক তাই এইসব ভুল বকে যাচ্ছে।

কিন্তু আয়ুশ তো ড্রাংক নাহ সে কীভাবে এই কাজটি করতে পারলো??

আয়ুশ সোফায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে।

রিমিও আয়ুশের পাশে বসে পড়ে।

রিমিঃ এই সাইকো এই??

আয়ুশঃ কি হয়েছে কি??

রিমিঃ তুই আমাকে ছেড়ে আর যাবি না তোহ???
বল তুই ইশাকে বলে দিবি তুই আমাকে ভালোবাসিস

আয়ুশ চুপ হয়ে যায়।

রিমি আয়ুশের শার্ট ঝাকাতে ঝাকাতে উত্তর দেয়।

কি হয়েছে বল নাহ???

আয়ুশ বলে উঠে—
তুমি এখন যাও!!

রিমিঃ নাহ আমি যাবো নাহ!!
আগে তুই বল আমায় উত্তর দে।

কিরে সাইকো বলনাহ!!

এমনিতেই আয়ুশের মন ভালো ছিলো মেজাজ টা প্রচুর খারাপ তাই সে রেগে দিয়ে বলে উঠে–

বেশ করবো যাবো।
হয়েছে শান্তি??
এক কথা বার বার জিজ্ঞেসা করছে।

যত্তসব!!

আমি খানিক্টা কান্নার সুরে বলে উঠলাম–
কেন যাবি???

আয়ুশঃ এই তোমার ন্যাকা কান্না থামাবে??
( ধমক দিয়ে)

আমি বলে উঠলাম–
আসবো নাহ আমি তোর কাছে
এই বলে আমি কাদতে শুরু করে দিলাম।।

আয়ুশের রিমির কান্না সহ্য হচ্ছেনা।

তাই সে বেলকলোনিতে চলে গেলো।

আয়ুশ সিগারেট বের করে স্মোক করা শুরু করলো।

আসলে আয়ুশ যদি রিমিকে না বকতো তাহলে রিমি আরো আয়ুশের কাছে আসতো।
যাহ আয়ুশ এখন মোটেও চাচ্ছেনা।

আয়ুশ ঃ আরেকটু হলেই আমি কন্ট্রোল লেস হয়ে পড়তাম!!
যার পরিনতি খুব খারাপ হতো।

এখন রিমি ড্রাংক কিন্তু পরে রিমি ঠিকই
আফসোস করতো।
আমি চাইনা আজ এমন কিছু হোক যার জন্য পরে রিমি আফসোস করুক!!

আয়ুশ ভিতরে কোনো শব্দ না পেয়ে রুমের প্রবেশ করলো।

কান্না করতে করতে রিমি বেডে কখন ঘুমিয়ে গেছে ঠিক নেই।

কান্নার করার ফলে মুখ একেবারে লাল হয়ে গেছে।

আয়ুশঃ ইসস মেয়েটার এম্নিই এতো কস্ট। কিন্তু আয়ুশ বা কী করবে।

রিমি তার কাছে আসলেই আয়ুশ কন্ট্রোলেস হয়ে পড়ে।

আয়ুশ বেডে বসে গালে হাত দিয়ে
রিমিকে দেখে যাচ্ছে।
মেয়েটা বড্ড মায়াবতী!!

এই মায়াবতীকে দেখে বছরের পর বছর পার করে দিতে পারে।

আয়ুশ রিমির চুল গুলো সযত্নে সরিয়ে দিলো।

আয়ুশ রিমির কপালে শব্দ করে চুমু খায়।

রিমি কে দেখতে দেখতে কখন যে আয়ুশ ঘুমিয়ে পড়ে তা নিজেও জানেনা।

সকালে,,,

এখন প্রায় ভোর বললেই চলে
চারদিকে,,,
নিরবতা!!

আমান গাড়ির সিটে মাথা হেলিয়ে দিলো।

মাথা টা প্রচন্ড ধরেছে।

সারারাত ধরে রিমিকে খুঁজে গেছে।

কিন্তু পাইনি।।

আমানের চেহারা এক রাতের মধ্যেই একেবারে উষ্ককুষ্ক হয়ে গেছে।।

আমানঃ কোথায় রিমিপাখি এক্টিবার ফিরে আসো।
তোমার কিছু হলে যে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো নাহ। আমি কেন তোমার খেয়াল রাখলাম নাহ। প্লিয এক্টিবার ফিরে আসো।

বড্ড ভালোবাসি আমার রিমিপাখি।

বলতে বলতেই আমানের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো।

সুর্যের আলো আমার মুখে পরতেই আমার চোখ খুলে যায়।

নিজেকে একটি অপরিচিত রুমে আবিষ্কার করি!!

আমি এখানে কী করে এলাম??

কিছুই বুঝতে পারছিনা।

কোনোরকম উঠে বসলাম।

মাথা টা ঝিম ধরে গেছে।

কি হয়েছিলো কাল আমার সাথে??

কিছুই মনে করতে পারছিনা উফফ!!

পাশে উনাকে দেখে আমি চমকে যাই।
উনি এখানে কি করছে???
আমার পাশে শুয়ে আছে।

কি হচ্ছে কি এইসব।

হ্যা উনি ইশাকে রিং পড়াতে যাবে তার আগেই আমি বেড়িয়ে আসি।

তারপর একটি বারে গিয়ে আমি প্রচুর ড্রিংক করি।

তারপর আমার আর কিছুই মনে নেই।।

কিন্তু উনি এখানে কি করে??

পরক্ষনেই আমি কিছু একটা ভেবে মুচকি হাঁসি দিলাম।

হঠাৎ আমি চোখ আটকে যায়।

উনার ঘুমন্ত চেহারার দিকে।

কি কিউট লাগছে উনাকে।

ছেলেদের ঘুমন্ত অবস্হায় এতোটা কিউট লাগে উনাকে না দেখলে বুঝতাম নাহ!!

কে বলবে এই সাইকো টার জন্য আমার পরাণ টা বড্ড জ্বলে।

এই সাইকো টা যে আমাকে বড্ড কস্ট দেয়।

কাছেই যদি আসবে তাহলে কেন দূরে সরিয়ে রাখো আমায়?? হুহ

উনি কি বুঝেন না উনার অবহেলা আমাকে বড্ড পোরায়।

।#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-৪৪
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
উনাকে ঘুমন্ত অবস্হায় এইভাবে দেখতে পাবো ভাবিনি। আমি উনার দিকে ঝুকে আরো ভালো করে পর্যবেক্ষন করতে লাগলাম। কতদিন পরে উনাকে এইভাবে দেখলে পেলাম। আপনা আপনি চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো। হঠাৎ উনাকে দেখতে দেখতে খেয়াল করলাম উনার কাধেঁ কিসের একটা দাগ যেনো। অনেক পুরোনো ক্ষত মনে হচ্ছে ঠিক ২-১ বছর আগের। যেহুতু আমি একজন মেডিকেলের স্টুডেন্ট এই বিষয় কিছুটা হলেও আমি জানি।

আমি আরেকটু ঝুকে উনার কাঁধ থেকে শার্ট টা সামান্য সরিয়ে দেখতে লাগলাম। দাগটা কোনো একটা বড় ওটির!!
উনার কি কোনো অপারেশন হয়ে ছিলো???

হুহ!! অনেক বড় রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি।।

তখনি আয়ুশের ঘুম বেজ্ঞে গেলো।।

রিমিকে এতো কাছে দেখে সে ভরকে গেলো।

রিমির নিঃশ্বাসে তার কাধে পড়ছে।।

আয়ুশঃ আরে তুমি এখানে??

আমি কিছু একটা ভাবছিলাম উনার ডাকে ভাবনা থেকে ফিরে আসি।।

আমি খানিক্টা নিজেকে শান্ত করে বলে উঠলাম–
আপনি ঘুম থেকে উঠেছেন???

আয়ুশঃ আগে প্লিয আপনি আমার থেকে উঠুন!!

রিমিঃ ওহ সরি সরি।

আমি তাড়াতাড়ি উনার থেকে উঠে বসলাম।।

উনি উঠে বসে কিছুটা ভাব নিয়ে বলে উঠলেন-+
জানি আমি হ্যান্ডসাম তাই বলে ঘুমন্ত অবস্হায় সুযোগ নিবে।

আমি চোখ পাকিয়ে বলে উঠলাম–।

আমার এতো শখ ও নেই!!

আচ্ছা আমি এই রুমে আপনার সাথে কেন??
এই টা কোন জায়গা?? তাও আপনার এন্গেজমেন্ট রেখে!!
আচ্ছা আপনি এখানে ইশা তা জানে??

আয়ুশঃ কালকে ড্রিংক করে কি অবস্হা নিজের করেছিলেন।

আমিই তোমাকে এই রুমে নিয়ে এসেছিলাম যাতে কেউ না জানে নাহলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।

আর ড্রিংক করে কিসব বকে গেলে তুমি নাকি দেবদাস হয়ে গেছো।

হা হা হা।।

ইসস প্রচন্ড লজ্জা লাগছে কাল মাতাল হয়ে কি কি করেছি আল্লাহ ই জানে।

আয়ুশ বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো–
আর কি বলেছে জানো??
তোমার নাকি আদর লাগবে।

এইবার তো আমার লজজায় মাটিতে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে।।

আমি এইসব কি করেছি।

কিন্তু আমি তো শাড়ি পড়ে ছিলাম আমার গাঁয়ে গাউন কেন??

আমি প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম।

আয়ুশ শয়তানী হাঁসি দিয়ে বলে উঠলো-+
একটি রুমে একজন অবিবাহিত ছেলে ও একজন অবিবাহিত মেয়ে

তার মধ্যে মেয়েটি ড্রাংক।
তাহলে তুমি বুঝে নাও আমাদের মধ্যে কি হতে পারে

আয়ুশ রিমিকে জাস্ট ভয় দেখাতে চেয়েছিলো।

কিন্তু আয়ুশকে অবাক করে দিয়ে রিমি বলে উঠলো–

আমার ড্রেস কোনো হোটেলের মেয়ে সাটফ পাল্টে দিয়েছে।

কেননা আমার ভালোবাসার প্রতি আমি দৃঢ় বিশ্বাস আছে সে এমন কাজ করবে নাহ যাতে তার রিমিপরীর অসম্মান হোক!!

আয়ুশ অবাক হয়ে তাঁকিয়ে রইলো রিমির দিকে রিমির জায়গায় অন্য কেউ হলে কেঁদে কেটে একশেষ হয়ে যেতো।

আয়ুশ আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

এদিকে
আমিঃ কি হলো মিঃ আয়ুশ খান ওরফে অয়ন চুপ হয়ে গেলেন যে আপনার প্রতিটা স্টেপ আমাকে বুঝিয়ে দেয় আপনিই অয়ন।

এখন আর কিছু কাজ শুধু বাকি।
তাহলেই প্রমান হয়ে যাবে আপনিই আমার অয়ন।
তখন দেখবো আপনি কি করে অস্বীকার করেন।।

তখনি আয়ুশ ওয়াশরুম থেকে বের হলো।

আমি বলে উঠলাম–

আমাকে হোটেলে ফোন করতে হবে!!

আয়ুশ
রিমির দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠলো–আগে
ফ্রেশ হয়ে আসো!!

আমি কিছু না বলে চলে গেলাম!!

আয়ুশ ফোন টা হাতে নিয়ে রিমির হোটলের নাম্বারে ডায়াল করলো।

আমি বের হতে হতে বললাম–

দিন আমাকে ফোনটা

আয়ুশঃ আমি ডায়েল করছি!!

আমি বলে উঠলাম–

আমাদের হোটেলের নাম্বার কোথায় পেলেন??
(ভ্রু কুচকে)

আয়ুশ হয়তো এইরকম প্রশ্ন আশা করিনি।

আয়ুশ বলে উঠলো–

সিম্পাল!!
এইসব নাম্বার আমার কাছে থাকেই!

আমি সন্দেহের চোখে বলে উঠলাম–

তাই???

আয়ুশঃ হ্যা!!

আমি বলে উঠলাম–
আমাকে ফোনটা টা দিন আমি আমান স্যার কে ফোন করবো।
আসলে আমার মনে হয় আমান স্যার অনেক টেনশন করছে আমার জন্য।

আমানের নাম শুনে আয়ুশের মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে গেলো।।

রিমি কেন?? অই আমানের নাম নিবে কেন?
আর অই আমানের বা কেন??
রিমিকে নিয়ে এতো টেনশন কেন??

আয়ুশ মনের কথায় মনেই রেখে

রিমির দিকে ফোন এগিয়ে দিলো।

আমি তাড়াতাড়ি স্যার এর নাম্বারে কল দিলাম।

আমান মাথা নিচু করে ড্রাবিং সেট এ বসে ছিলো।

ফোন এর শব্দে সে তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করে।

যদি রিমিপাখির কোনো খবর পাওয়া যায়।

আমানঃ হ্যালো।

রিমিঃ আমান স্যার!

রিমির কন্ঠ শুনে আমানের যেনো জান ফিরে এলো।

আমানঃ রিমিপাখি তুমি ঠিক আছেতো??

কোথায় ছিলে তুমি??
কত্ত টেনশন হচ্ছিলো আমার!!

আমি বলে উঠলাম–

শান্ত হোন আমার স্যার!!

আমানঃ কীভাবে শান্ত হবো রিমিপাখি??
তুমি জানো
আমি কতটা চিন্তায় ছিলাম
সারারাত তোমায় খুৃজেছি!!
ফোনটাও অফ ছিলো তোমার

(শেষের কথাটা আমান খানিক্টা রেগে বলে)

আমি বলে উঠলাম–
আমান স্যার আপনি চিন্তা করবেন নাহ!!
আমি আপনাকে একটা এড্রেস পাঠিয়ে দিচ্ছি!!

আপনি আসুন আপনাকে সব বলছি।।

এদিকে,,

আয়ুশঃ কত দরদ ( মনে মনে)

আয়শের চোখ একেবারে লাল হয়ে গেছে।

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

আমান হন্তদন্ত হয়ে হোটেলে আসে।

আমানঃ আরে রিমিপাখি এই হোটেলেই ছিলো আর আমি শুধু শুধু বাইরে খুঁজলাম!!

আমি সোফায় বসে ছিলাম।

আমান স্যার কে দেখতে পেয়ে আমি বলে উঠলাম–

আমান স্যার!!

আমান তাড়াতাড়ি রিমির কাছে গেলো।

রিমিকে দেখে আমান বোধহয় জান ফিরে পেলো।

আমানঃ রিমিপাখি তুমি ঠিক আছো তো??
কিছু হয়নি তো তোমার!!
আমাকে জানাবে না? এতোটা কেয়ারলেস এর মতো কেউ এমন করে???

আমার বুঝি টেনশন হয়না??

আয়ুশ পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।

আয়ুশঃ রিমিপাখি??বাহ!!
(মনে মনে)

আমি বলে উঠলাম–
আসলে আমি কিছুটা অসুস্হ হয়ে পড়েছিলাম(আমান কে এখন বলতে চাইনা কালকের কথা)

আমান কিছু বলবে তার আগেই আয়ুশ বলে উঠে–

কিন্তু আমি ঠিক সময় উনার কেয়ার নিয়েছি
এখন উনি সুস্হ ( দাঁতে দাঁত চেপে)

আমান এতোক্ষন আয়ুশকে খেয়াল করেনি।

আমান বলে উঠে–
আপনি এখানে??

আয়ুশ ঃ কেন আমার থাকার কথা ছিলো নাহ বুঝি

আমান ঃ আসলে

আমি বলে উঠলাম–
তার জন্য আপনাকে অনেক থ্যাংকস!!

আমান স্যার আমি এখন অনেক টায়ার্ড।

চলুন আমরা হোটেলে ফিরে যাই!!

আমানঃ তুমি কি যেতে পারবে নাকি আমি ধরবো।

এই কথা শুনে আয়ুশ নিজের হাত মুষ্ঠিবদ্ব করে নেয়।

আমি বলে উঠলাম–

নাহ আমি পারবো।

এই বলে আমি গাড়ির দিকে যেতে নিলাম।

আমানঃ আপনাকে আবার ও থ্যাংকস

আমান ও চলে গেলো।

আয়ুশ তাদের যাওয়ার পানে তাঁকিয়ে বাঁকা হাঁসলো।

তারপর শিষ বাঁজাতে বাঁজাতে

নিজের গাড়ির দিকে চলে গেলো।

এদিকে,,
টকোপিকে নিয়ে হসপিটালের করিডোরে বসে আছি আমি!!

তখনি আমান বের হলো।

আমান রিমির কাছে এসে বলে উঠলো–

একটা ইনফোরমেশন পেয়েছি

খান বাড়ির প্রায় সবাই লন্ডন
হসপিটালেই নিজেদের ট্রিটমেন্ট করায় বেশিরভাহ!!

রিমিঃ তাহলে চলুন সেই হসপিটালে

আমান বলে উঠলো–

সিটি হসপিটালে গিয়ে কী হবে রিমিপাখি??

আমি বলে উঠলাম–

অনেক ইনফোরমেশন আমরা পেতে পারি।

আমার মনে হচ্ছে উনার অনেক বড় একটা অপারেশন হয়েছিলো।

আমানঃ কিন্তু তুমি কি করে জানলে??

(অবাক হয়ে)

আমি বলে উঠলাম–
উনার কাঁধে আমি দাগ দেখেছি খানিক্টা বড় অপারেশন হলে যে দাগ হয় সেইরকম..!!
সেই দাগ যে খুব পুরনো কিংবা খুব নতুন তা নয়।

দুই বছর আগের দাগ!!

আমানঃ তার মানে ২ বছর আগে আয়ুশের অনেক বড় অপারেশন হয়েছিলো??
কিন্তু কেন?

রিমিঃ সেইটাই তো আমাদের বের করতে হবে।



।#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-৪৫
#Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)
কে এই আয়ুশ? আয়ুশ যদি অয়ন হয়ে থাকে তাহলে দুইবছর আগে বিয়ের দিন ঠিক কি হয়েছিলো?
উনার দুইবছর আগে কিসের এক্সিডেন্ট হয়েছিলো?
সবকিছুর উত্তর কিছুটা হলেও অই হসপিটালে গেলে পেতেই পারি —আমি বললাম।
রিমির কথা মনোযোগ সহকারে শুনছিলো আমান। আমান বলে উঠে– কিন্তু আয়ুশের যে অই হসপিটালেই অপারেশন করা হয়েছিলো এইটা কীভাবে সিউর তুমি?? অন্য হসপিটালে ও তো হতে পারে।

আমি বলে উঠলাম–
হুম তাই আমাদের অই হসপিটালে যেতে হবে
তাহলেই অনেক উত্তর পাবো।

আমান বলে উঠলো–
হুম চলো!!

টকোপিকে নিয়ে আমিও চললাম।

।।।

আয়ুশ শিষ বাজাতে বাজাতে বাড়ি ঢুকলো ।
নিদ্র ও মল্লিকা বসে ছিলো

আয়ুশকে দেখে নিদ্র উঠে গেলো।

মল্লিকাঃ আয়ুশ বেটা তুমি এসেছো??

নিদ্রঃ আয়ুশ কোথায় ছিলে তুমি?

মল্লিকাঃ এন্গেজমেন্ট শেষে তুমি কোথায় চলে গিয়েছিলে??
জানো আমরা কত টেনশনে ছিলাম।

ইশা কত টেনশনে ছিলো।

আয়ুশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে উঠে–

আমার একটা ইম্পোর্টেন্ট কাজ ছিলো।

তাই যেতে হয়েছে।

মল্লিকাঃ অন্তত কল টা রিসিভ করতে।

নিদ্র ধমকের সুরে বলে উঠে–এন্গেজমেন্ট এর দিন কি এমন ইম্পোর্টেনট কাজ থাকতে পারে??

আয়ুশ বলে উঠে–

আমারও একটা পার্সোনাল লাইফ আছে।সব কিছু তো আর আমি কৈফিয়ত দিতে পারবো নাহ,,
কই ইশান কে তো তোমরা এতো কুয়েশ্চেন করো নাহ!!
সো প্লিয আমাকেও করো নাহ।

ইশাকে বিয়ে করতে বলেছো করবো এনাফ!

আর আমাকে কিছু করতে বলো নাহ!!

এই বলে আয়ুশ উপরের দিকে চলে যায়।

নিদ্রঃ দুইটা ছেলেই একেবারে এক হচ্ছে।

মল্লিকাঃ নিদ্র একটু শান্ত হোও প্লিয!!

নিদ্র আর কিছু বলেনা।

আমরা লন্ডন হসপিটালে চলে এসেছি!!

আমান বলে উঠে–
চলো ভিতরে!!

রিমিঃ হুম চলুন!!

আম্রা ভিতরে যেতে লাগলাম।

আমান স্যার রিসিপশনে গিয়ে বলে উঠলো-+

আচ্ছা ডক্টর স্পিস আছেন??

—ইয়েস??ইউরস সেল্ফ?

আমান একটা কার্ড বের করে উনার হাতে দিয়ে বলে উঠে–

–মাই সেল্ফ ডক্টর আমান শিকদার!!
ডক্টর স্পিস এর সাথে দেখা করতে চাই!!

–ওক স্যার আপনি একটু ওয়েট করুন
আমি স্যার ওর কাছে আস্ক করছি তিনি এখন দেখা করতে পারবে কিনা!!

আমানঃ সিউর!!

আমান স্যার আমার কাছে এসে বলে উঠে–

রিমিপাখি আমাদের একটু ওয়েট করতে হবে।

রিমিঃ ওকে!!

তখনি একজন এসে বলে উঠলো–
স্যার আপনাদের তার কেবিনে যেতে বলেছেন!!

আমানঃ ওকে!!

আমরা ডক্টর স্পিস এর কেবিনের সামনে গেলাম।

আমানঃ মেই আই কামিং ডক্টর!!

স্পিসঃ ইয়েস ডক্টর আমান প্লিয কাম!!

আমরা উনার কেবিনে প্রবেশ করলাম!!

স্পিসঃ আপনি ডক্টর আমানের স্টুডেন্ট?? ( রিমিকে উদ্দেশ্য করে)

রিমিঃ জ্বী ডক্টর!

স্পিসঃ ডক্টর আমান আমরা আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি আপ্নার সাথে দেখা করার অনেক ইচ্ছে ছিলো।।
তা কোনো দরকার ছিলো কী?

আমানঃ আসলে আমাদের কিছু ইনফোরমেশন চাই

স্পিসঃ হুম বলুন!!
দেখি কি সাহায্য করতে পারি।

আমি বলে উঠলাম–

আচ্ছা ২ বছর আগে ফ্রেব্রুয়ারীর ৭ তারিখে এই হসপিটালে কোনো বড় ওটি হয়েছিলো??

স্পিসঃ অনেক দিন আগে হয়েছিলো
কিন্ত আমার ঠিক মনে নেই রেকোর্ড চেক করতে হবে।

আমামঃ হ্যা প্লিয ডক্টর করুন!!

স্পিসঃ ওকে আমি স্টাফ দের পাঠাচ্ছি!!

ডক্টর স্পিস কিছু ফাইল পাঠানোর জন্য স্টাফ দের কল করে।

স্পিসঃ কিন্তু আপ্নারা কি করবেন?? জেনে?

আমি বলে উঠলাম–
ডক্টর স্পিস আমাদের জানা টা অনেক জরুরী।

তখনি একজন নার্স কিছু ফাইল নিয়ে আসে।

স্পিস ফাইল গুলো চেক করতে থাকে!!

…..।।।

এদিকে,,,,
একজন নার্স তাড়াতাড়ি কাউকে কল করে-+

হ্যালো স্যার!!

—+++++

ডক্টর আমান আর রিমি ম্যাম এসেছেন!!
কিসের জন্য ইনফরমেশন এর জন্য

—++++

নার্স— আমার মনে হয় ওরা গোয়ান্দা গিরি করছে।
এখন তো সব জেনে যাবে তখন তো আমার চাকরি থাকবেনা!!

—অইপাশ থেকে কেউ ধমক দেয়।

নার্স— হ্যা স্যার আমি আপনাকে টাইম টু টাইম খবর দিতে থাকবো!!

——–

নার্সঃ স্যার আপনার ভরসায় এতো রিস্কি কাজ করছি।।

—-+++

নার্সঃ দেখবেন আমার চাকরিটা যেনো থাকে।

।।।

স্পিসঃ হুম ২ বছর আগে ফ্রেব্রুয়ারীর ৭ তারিখে কোনো ওটি হয়নি!!

আমরা অবাক!!

আমানঃ কোনো ওটি হয়নি??

স্পিসঃ নাহ!!

আমি বলে উঠলাম–
আয়ুশ খান নামে কেউ এডমিটেড হয়নি??

স্পিসঃ আয়ুশ খান???
ইউ মিন মিঃ নিদ্র এর বড় ছেলে আয়ুশ খান??

আমানঃ হ্যা!!!

স্পিসঃ হুম বাট আয়ুশের ৮ তারিখে একটা ওটি হয়েছিলো??

আমি বলে উঠলাম– ৮ তারিখে???
কিসের ওটি??

স্পিসঃ দেখুন আমরা একজনের কথা আরেকজন কে বলতে পারিনা!!

আমানঃ ডক্টর স্পিস আমাদের জন্য জানাটা খুব দরকার প্লিয আমাদের বলুন!!

স্পিসঃ আম সরি বাট আমাদের হসপিটালে এই রুলস নেই!!

স্পিস ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে–
এখন আমার একটা ইম্পোর্টেন্ট কাজ আছে সো বাই!!

আমান কিছু বলবে তার আগেই স্পিস চলে যায়।

আমি বলে উঠলাম–
এখন কী হবে!!

আমান স্যার বলে উঠে– এখন চলো!!

।।।।।

সুমু মনোযোগ দিয়ে কিছু বই পড়ে যাচ্ছে
কাল-পরশু একটা ইন্টারভিউ আছে।
যে করেই হোক চাকরিটা পেতেই হবে।

ফারহান তার অফিসে বেশ উচ্চপদে
চাকরি করে
তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছে।

কিন্ত সুমু নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কিছু করতে চায়।

তার শ্বশুড়- শ্বাশুড়িও তাকে সাপোর্ট করে।

তার ছেলেটাও বেশ লক্ষি।

মাকে একটুও জ্বলাতন করেনা।

ফারহান আজ একটু লেট করে আসবে।
কিছু মিটিং হ্যান্ডেল করতে হবে।

সুমু আবারও পড়ায় মনোযোগ দেয়।

।।।।

আমি হতাশ হয়ে বেড়িয়ে এলাম!!

আমিঃ এখন কী হবে? একটা ক্লু পেতে চলেছিলাম সেটাও হাত ছাড়া হয়ে গেলো।।

(কান্নামাখা কন্ঠে)

আমান রিমির কাঁধে হাত রেখে বলে উঠে–

রিমিপাখি শান্ত হোও!!

আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।
একটা না এক্ট্ব উপায় আমাদের ঠিক দিয়ে দিবেন!!

আমি বলে উঠলাম–
আল্লাহর উপর ভরসা করেই তো বেঁচে আছি!!

(লেখিকা ঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

আমানঃ এখন চলো!!
হোটেলে ফিরে যাও যাক!!

রিমিঃ হুম!!

আমরা গাড়ির দিকে যেতে নিলাম!!

তখনি কেউ পিছন থেকে বলে উঠে–
আমি বলতে পারবো

আমরা পিছনে ঘুড়ে তাঁকিয়ে দেখি একজন বয়স্ক নার্স!!

আমানঃ আপনি বলতে পারবেন মানে?

নার্সঃ আয়ুশ খানের ওটি তে আমি ছিলাম!!

আমি কিছুটা হলেও জানি!!

আমি বলে উঠলাম–তাহলে প্লিয আমাদের সব খুলে বলুন!!

নার্সঃ এখানে অনেক রিস্ক আছে।
খবর চলে যাবে।
আমরা কোথাও বসে কথা বলি!!

আমান বলে উঠে–
অবশ্যই চলুন!!

নার্স টা আমাদের সাথে চলল।

আমরা একটা রেস্টুরেন্টে এ বসলাম!!

আমানঃ এখন বলুন!!

নার্স টা এদিক ওদিক তাঁকাচ্ছে বার বার।

আমানঃ এনি প্রব্লেম আপনি বলতে পারেন আমাদের।

রিমিঃ হুম!!

নার্সঃ আসলে আমি অনেকটা রিস্ক নিয়ে এসেছি।

কখন কি হয়ে যায় আমার ঠিক নেই!!

কিন্তু তার আগে আমি আপনাদের সবকিছু বলতে চাই।

আমানঃ রিস্ক আছে মানে?

আমি বলে উঠলাম–
কেউ কি আপনার ক্ষতি করতে পারে।

নার্সঃ হুম





আয়ুশের তীক্ন নজর হাতের ধারালো ছুড়ির দিকে।

আয়ুশ বেশ যত্ন নিয়ে তাতে ধার বসাচ্ছে।

আয়ুশের পাশে রেগে বসে আছে আদি।

আদিঃ এই পর্যন্ত তুই ৫ টা মার্ডার করেছিস।।

জনিকে এমনভাবে মেরেছিস যে ওর চেহারা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যাবে।

এতোটা হিংস্রভাবে কেই মারতে পারে??
জানিস পুরো ভার্সিটির আয়ুশের মৃত্যুর খবর শুনে শকড!!

আয়ুশ এমন একটা ভাব নিলো যে
কিছুই হয়নি।

আয়ুশঃ তোহ??
আমিই যে মেরেছি তার প্রুফ তো নেই।

আদিঃ এইসব কি বলছিস আয়ুশ? তুই কি আমাদের সেই আয়ুশ?? এই আয়ুশকে আমি চিনি না!!
তুই তো এমন ছিলি নাহ।

আয়ুশ ঠোটের হাঁসি টা বাঁকা করে বলে উঠে–

ক্রিমিনাল কে ধরতে হলে ক্রিমিনাল হতে হয়।





।#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here