ফিলোফোবিয়া
ঊর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনির )
২৬.
( কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ )
খাটিয়ায় শুয়ে রেখেছে আয়শা বেগমকে। সুশ্রী মুখখানা কালো হয়ে চেহারা ন*ষ্ট হয়ে গেছে। শরীর থেকে পঁচা গন্ধ ছড়াচ্ছে। মারা যাওয়ার দুইদিন পর আশেপাশের লোকজন জেনেছে। দরজা ভেঙ্গে ভিতর ডুকে শোয়ার ঘরে আয়শা বেগমের ঝুলন্ত লা*শ দেখেছে। তারপর সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় ফোন করে জানিয়েছেন।
খালার লা*শের সামনে পাথর হয়ে বসে আছে প্রিয়। বিষন্ন চোখমুখ। উষ্কখুষ্ক এলোমেলো চুল।চোখ থেকে পানি ঝরছে অনবরত। বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে খুব। যেন মাকে হারিয়েছে। খালার কড়াকড়ি শাসনের জন্য ছোট থেকে খালা প্রতি একটু রাগ ছিল। কিন্তু এখানে আসার পর নতুন করে খালাকে জেনেছে। প্রিয়’র কাছে খালা একজন সংগ্রামী নায়িকা। জ*লন্ত অ*গ্নিশিখা। যার ছায়াতলে থাকা প্রতিটি মানুষ বাস্তব শিক্ষায় আলোকিত হয়। প্রিয়’র আদর্শ ছিলো খালা।
খাটিয়া তুলতে লোকজন আসতেই চিৎকার করে উঠল প্রিয়। ঝাপিয়ে পড়লো লা*শের উপর। দুহাতে জড়িয়ে কান্না করতে করতে বলল,
‘ আমার খালা কোথাও যাবেনা! কেউ ছোঁবেন না আমার খালাকে। কেউ না।’
খালার লা*শ জড়িয়ে কাঁদছে প্রিয়। হাউমাউ করে কাঁদছে।
দূর থেকে মেয়ের দিক তাকিয়ে আছেন জাফর সাহেব। তারা যতই বলুক প্রিয় তাদের সন্তান। কিন্তু মুছে ফেলতে পারবে কি নাড়ির টান! প্রিয় বড় আপার মেয়ে। মস্তিষ্ক না জানলেও। নাড়ের টানে ঠিকই প্রিয় মন কাঁদবে। মা মেয়ের সম্পর্ক যে।
আমেনা বেগম, প্রভা আটকালো প্রিয়’কে। দুদিনে লা*শ। শরীর গলে গেছে। আশেপাশে গন্ধ ছড়াচ্ছে। তাড়াতাড়ি দা*ফন করতে হবে। আশেপাশের লোকজন কাঁধে খাটিয়া তুলে নিয়ে যাচ্ছে। প্রিয় বুক ফাটা চিৎকারে হাউমাউ করে কাঁদছে। যেন তার একটা অংশ ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে। বুক ফাটা এক চিৎকারে জ্ঞান হারালো প্রিয়।
জ্ঞান ফিরল দাফনের পর। জানাযা শেষে বাড়ি ফিরছে সবাই। আচমকা চোখ পড়ল শোয়েব হকে উপর। মাথা বিগড়ে গেল প্রিয়’র হন্তদন্ত হয়ে উঠে তার সামনে যেয়ে দাঁড়াল। কলার চেপে বলল,
‘ খু*নি। আমার খালাকে খু*ন করেছেন আপনি। আপনি একজন কাপুরষ। টাকা সম্পত্তির লোভে নিজের স্ত্রীকে ছেড়েছেন ছি! কাপুরষ!’
আশেপাশে অনেক লোকজন জমে। অভিলাষা বেগম ছুটে আসে। প্রিয়কে বুঝিয়ে শোয়েব হককে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে। চেঁচিয়ে উঠে প্রিয়। চিৎকার করে বলল,
‘ আমাকে ছোঁবেন না আপনি। আপনারা সবাই মুখোশধারী, খু*নি। সবাই মিলে আমার খালাকে খু*ন করেছেন। এটা আত্মহ*ত্যা না। এটা খু*ন। আমার খালা আত্মবিশ্বাসী, আত্মসম্মানী নারী ছিলেন। আপনারা সবাই তা কেড়ে নিয়ে খু*ন করেছেন তাকে। আপনাদের বানানো এই সমাজের প্রত্যেকটা লোক মুখোশধারী। উপরে উপরে সবাই ভালো। ভিতরে জ*ঘন্য শয়*তান। ঘৃ*ণা করি এই সমাজকে। এই সমাজের নিয়মকে। যেখানে একজন নারীকে বাঁচতে দেয়না। সবসময় সব দোষ কেন একজন নারীরই হয়? আমার খালা নির্দোষ ছিল। এই চরিত্রহীন লোকটা সেইরাতে আমাদের বাড়িতে ঢুকেছিল। এখানে আমার খালার কি দোষ ছিল? শাস্তি কেন তাকে পেতে হলো?’
কাঁদতে কাঁদতে বলল প্রিয়। বাড়ির বারান্দা থেকে সবটা দেখছিল ছবি। প্রিয় শোয়েবকে ঘিরে ধরেছে। তা দেখে ছুটে এসেছে। স্বামীকে নিয়ে সামান্য চিন্তা নেই তার। আগামী নির্বাচনে দাঁড়াবে। সবার সামনে শোয়েব এভাবে হে*নস্তা হলে তার রেপুটেশনেও প্রভাব পড়বে। পলিটিকাল ক্যারিয়ার ব*রবাদ হবে। তেড়ে এলেন তিনি। টেনে হিঁচড়ে শোয়েব হক থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন প্রিয়কে। দাম্ভিক কন্ঠে বললেন,
‘ বাজে মেয়ে। রাস্তাঘাটে এসব শুরু করেছিস। নিজেদের দোষ চাপাতে আমার স্বামীর ঘাড়ে দোষ ঢালছিস। তুইও একটা ব্যা*’ বলেই প্রিয়’র দিক পা বাড়াবে। অমনি সামনে এসে শতাব্দ দাঁড়ালো। আয়েশা বেগমকে কবর দিয়ে মাত্রই বাড়ি ফিরছিল। বাড়ির সামনে এলো লোকজন দেখে ভিড়ে ঠেলে ভিতরে ঢুকে হতভম্ব। প্রিয়’র দিক ছবি বেগম তেড়ে আসছে। গভীর হুংকার দিয়ে শতাব্দ বলল,
‘ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। ওদেরকে কিছু বলার আগে নিজের অতীতে তাকান। ব্যা* কে বুঝে যাবেন। ওর দিকে ভুলেও পা বাড়াবেন না।’
শতাব্দকে দেখে প্রিয়’র আরো রাগ বাড়লো। সেদিনের ফিরিয়ে দেওয়া সেই দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। সেদিন ফিরিয়ে দিয়ে আজ সবার সামনে কি জাহির করতে চাইছে! প্রিয়কে ভালোবাসে? উহু, এমন ভালোবাসা চাইনা। যদি নিজের কাছে রাখতে না পারে তাকে প্রিয়’র চাইনা।
শতাব্দের বুকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিলো প্রিয়। চোখে মুখে গভীর ঘৃ*ণা। শতাব্দের বুকে আঘা*ত করে বলল,
‘ আপনার দয়া আমার চাইনা। আমার লড়াই আমি একাই লড়তে পাড়বো। আপনিও আপনার মামার মত মুখোশধারী! আপনারা সবাই এক। সেদিন আপনি আমার বাবার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আজ আমি সবার সামনে আপনাকে প্রত্যাখ্যান করলাম। সম্পর্ক ভাঙ্গলাম। চাইনা আমার আপনাকে। হিসাব বরাবর।’
বলেই কঠিন শক্ত চোখে ছবি আর শোয়েবের দিক তাকালো। রাগী গর্জনে হুশিয়ারি দিয়ে বলল,
‘ আপনাদের আমি ছাড়বো না। জ্বা*লিয়ে দিবো। আপনার অহংকার, দম্ভ সবকিছু মাটিতে মিলিয়ে দিবো।’
প্রিয়’র দিক এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অভিলাষা বেগম। বাচ্চা মেয়েটা আজ যেন এক জ*লন্ত অ*গ্নিশিখা। হুবহু আয়শার প্রতিচ্ছবি। অনেক বছর আগের সেই ঘটনার পুর্নাবৃত্তি হচ্ছে আবার।
বাড়ি জুড়ে পিনপতন নিরবতা। দিন ফুরিয়ে রাত নেমেছে অনেক আগে। ছেলের ঘরে ঢুকে আঁতকে উঠল অভিলাষা বেগম। অন্ধকার এলোমেলো ঘরটায় বসে আছে শতাব্দ। বাহিরের ল্যাম্পপোস্টর আলোতে আবছা আলোকিত ঘর। জানাযা থেকে ফিরে সেই একই কাপড়ে বসে আছে সে। উষ্কখুষ্ক চুল। চূর্ণবিচূর্ণ জিনিসপত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘর। তার পরিপাটি গুছানো ছেলেটার এই কি হাল! চোখে ভরে এলো অভিলাষার। ছেলের কাছে গিয়ে আলতো স্বরে ডাকলো,
‘ শতাব্দ, বাবা আমার দিক একবার তাকা।’
কোনরূপ সাড়াশব্দ করলো না শতাব্দ। চোখমুখ কঠিন তার। অভিলাষা বেগম আবার ডাকলো। এবারো কোন সাড়া দিলো না শতাব্দ। ছেলেকে নিশ্চুপ কঠিন দেখে তিনি কেঁদে ফেললেন। ডুকরে কাঁদছেন। সেইদিকে শতাব্দের ভ্রুক্ষেপ নেই কোন রূপ। সে আগের মতই অটল।
বোনের কান্নার আওয়াজ শুনে শোয়েব ছুটে এলেন। শতাব্দের ঘরে পা রাখতেই হুংকার দিয়ে উঠল শতাব্দ। পাশে পড়ে থাকা কাঁচের ফুলদানিটা তুলে শোয়েব হকের দিক ছুড়ে মারল। শোয়েব হক সরে যেতেই ফুলদানিটা দরজার সাথে লেগে ছিটকে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মাটিতে পড়ে। আভিলাষা বেগম অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে ছেলের দিক তাকিয়ে। ছেলের এমন আ*ক্রোশ আ*ক্রমণ রূপ দেখেনি আগে। এই কোন শতাব্দকে দেখছে সে? আভিলাষা বেগম কিছু বলবে তার পূর্বেই গর্জিয়ে উঠল শতাব্দ। চিৎকার করে বলল,
‘ এই লোকটার জন্য শেষ হয়ে গেছে সব। সব শেষ। নিজের স্ত্রী সন্তানকে পরিচয় দিতে না পারা হেরে যাওয়া কাপুরষ। তোমার ভাইকে কোথাও গিয়ে ম*রে যেতে বলো। নয়তো আমার হাতে খু*ন হবে! এখান থেকে চলে যেতে বলো।’
অভিলাষা বেগম স্তব্ধ। ছেলের রাগের ভ*য়ঙ্কর তোপ কি করে সামলাবে এখন!
খালা মা*রা গেছে আজ তিন মাস। পরিস্থিতী থেকে বেরিয়ে আসার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে প্রিয়। এতদিন ঢাকায় থাকলেও পরিক্ষা দিতে ইমান্দিপুরে এসেছে এখন। প্রভা আমেনা বেগম সাথে এসেছে। জাফর সাহেব হাসপাতাল নিয়ে ব্যস্ত। সময় পেলে মাঝেসাঝে এসে স্ত্রী সন্তানদের দেখে যাচ্ছেন। পরিক্ষা চার তারিখ শেষ হবার কথা হলেও সারাদেশে রাজনৈতিক অবস্থার জন্য পিছিয়ে গেছে।
শেষ পরিক্ষা আজ। পরিক্ষা কেন্দ্র ইমান্দিপুরে থেকে আরো ভিতরে। গাড়ি দিয়ে প্রায় দেড়ঘন্টার পথ। মায়ের সাথে এসেছে এতদিন। আগামীকাল ঢাকায় শিফট হয়ে যাবে সবাই। বাড়িতে অনেক কাজ। তাই আজ সাথে বাবা এসেছে। প্রাকটিক্যাল পরিক্ষা শেষ করে গেট থেকে বেরিয়ে বাবাকে খুঁজছিল প্রিয়। গেটের সামনে শতাব্দের মুখোমুখি হলো। কেন এসেছেন উনি? জুবাইদার জন্য! হয়তো। বেশ স্বাভাবিক ভাবে অচেনার মত পাশ কাটিয়ে চলে এলো। রাস্তায় অনেক জ্যামজট। শতশত লোক। আচমকা ভারী শব্দ হলো। পিছনে তাকিয়ে দেখলো দুই স্কুলের ছেলেদের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। দৌড়াদৌড়ি করে মানুষ ছুটে পালাচ্ছে। তড়িঘড়ি করে দোকানিরা দোকান বন্ধ করছে। রিকশা অটো সব ছুটাছুটি করছে। রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছে। প্রচন্ড ভয় করছে তার। ভিড়ের মধ্যে প্রিয় বাবাকে খুঁজছে। হ্ঠাৎ দা’ চা*পাতি নিয়ে তিনজন মধ্যবয়সী লোককে এদিকে ছুটে আসতে দেখলো। যেন প্রিয়’ই তাদের টার্গেট। ঘাবড়ে গেল প্রিয়। উল্টো ঘুরে পেছনের দিক ছুটতে লাগলো। লোক গুলো ভিড় ঠেলে তার দিকেই আসছে। অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে তাড়া করছে। আশেপাশের মানুষ থেকে সাহায্য চাইল প্রিয়। কেউ শুনলো না। আপাতত যারযার মত পালাতে ব্যস্ত। লোক গুলো বড় বড় ধাপের সাথে প্রিয়’র ছোট ছোট কদম হেরে গেল। কিছু সাথে বেঁধে সামনে পড়ে গেল। হাঁটুর কাপড় ছিড়ে বেরিয়ে এলো পা। কে*টে রক্ত বের হচ্ছে। লোক গুলোকে কাছাকাছি আসতে দেখে। ব্যথা নিয়েই তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়ালো। সামনের দিক ছুটে যেতেই লোকগুলো হা*মলে পড়লো। চা*পাতি তুলে মাথার দিক আঘা*ত করবে অমনি পেছন থেকে কেউ তার দিকে ঘুরিয়ে আষ্টেপৃষ্টে বুকে ঝাপটিয়ে ধরল। ভারী এক শব্দ হলো। প্রিয় অনুভব করল। কোন তরল পদার্থ তার কপাল বেয়ে চোখে পড়ছে। চোখ খুলে মুখে হাত দিতেই ঘাবড়ে গেল, কেঁপে উঠল। লাল টকটকে র*ক্ত। ভীত হতভম্ব প্রিয় কাঁপতে লাগল। মাথা তুলে তাকাতে দেখল শতাব্দ। কপাল ফেটে র*ক্ত ঝরছে টপটপ। বিমূঢ় প্রিয় কাঁপতে কাঁপতে দূরে সরে গেল। সামনে দাঁ চা*পাতি হাতে লোক গুলো শতাব্দকে দেখে ঘাবড়ে গেল। যেন পরিচীত। উল্টো পিছন দিক ছুটতে লাগলো। প্রিয় কিছু বলবে তার আগেই শতাব্দ হাত টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। এক দোকানের কাছে যেতেই জাফর সাহেবকে দেখলো। চূর্ণবিচূর্ণ গাড়ির পাশে আহ*ত দাঁড়িয়ে। ঘাবড়ে গেল প্রিয়। বাবার দিক ছুটে গেল। প্রিয় কিছু বলবে তার আগেই শতাব্দ নিজের গাড়ির চাবিটা জাফর সাহেবের দিক এগিয়ে বলল,
‘ কেসের কারণে ওরা কু*ত্তা পাগল হয়ে গেছে। আপনাকেও ছাড়বেনা। বিলাশ নগরের রাস্তা ধরে ঢাকায় চলে যান এক্ষুনি।’
‘ আমেনা প্রভা?’
‘উনাদের কিছু হবেনা। ওদের মেইন টার্গেট প্রিয়। ওকে নিয়ে যান।’
‘ তুমি?’
‘ ওরা আমার ক্ষ*তি করবেনা।’
জাফর সাহেব তড়িঘড়ি করে গাড়ি উঠলেন। অনুভূতিহীন নিমিষ তাকিয়ে আছে প্রিয়। কোন কিছু মাথায় ঢুকছেনা তার। বাবা শতাব্দ কি আগের থেকেই পরিচীত!
ভাবনায় ছেদ পড়লো। র*ক্তাক্ত শরীরে ঢলতে ঢলতে শতাব্দ প্রিয়’র সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। র*ক্ত ভেজা হাত জোড়া প্রিয় দু’গালে ছুঁয়ে দিলো। টলমলে অশ্রুভারাক্রান্ত চোখ। গভীর কন্ঠে বলল,
‘আমাদের দেখা না হওয়াটাই বোধহয় ভালো ছিল। আমার প্রেম তোমার কাল হয়ে দাঁড়ালো। কোনদিন এই গ্রামে, আমার কাছে ফিরে আসবেনা আর। কোনদিন না।’
গাড়িতে বসে তাড়া দিচ্ছেন জাফর সাহেব। শতাব্দ ছেড়ে দিলো। ঠোঁট নাড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
‘ যাও!’
প্রিয় যন্ত্রের মত গাড়িতে গিয়ে বসলো। দূর থেকে শতাব্দের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তার শরীর র*ক্তে ভিজে। দুর্বল চোখ। ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলল। কি বলল? ‘ আমার প্রিয়?’
সেই শেষ দেখেছিল শতাব্দকে। অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। তারপর আর কো্নো দিন দেখেনি তাকে। না তার নাম শুনেছে। সেই থেকে প্রেম ভালোবাসা বিয়ে এসব অনুভূতিতে বিতৃষ্ণা ঝেঁকে ধরেছে। কোন দিন এসবে জড়াবেনা সে। এতে লোকে যদি ফিলোফোবিক বলে। বলুক! তাতে কি? এর পেছনে ব্যাথাতুর গল্পটা শুধু সেই-ই জানে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, কেন গিয়েছিল ইমান্দিপুরে। কেন দেখা হলো তাদের! শতাব্দের সাথে দেখা না হওয়াতেই বোধহয় ভালো ছিল সবার।
(প্রথম খন্ডের সমাপ্তি)