________ #বউ_কিডন্যাপ ________
লেখক: ShoheL Rana
__________ #পর্বঃ০৩ ___________
যাক বাঁচা গেলো। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে ভাবতে পারবো কী করা যায়। বিজয়, সাদ্দাম, সুজন, কামাল আর আমিসহ মোট পাঁচবন্ধু বসে চিন্তা করতে লাগলাম এই উটকো ঝামেলাটা কীভাবে সামাল দেয়া যায়। কিন্তু ভেবে কিছুই পেলামনা। মাথা কাজ করতেছেনা, তখন পাশের রুম থেকে কাশেম কিডন্যাপার এলো, বেটার দেখি আবার জ্ঞান ফিরেছে। সে এসেই স্নেহার আম্মুর অচেতন দেহের দিকে দৌঁড় দিলো, তারপর উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করে বললো, ‘এইতো পেয়ে গেছি! হুররে! হুররে! এইতো আমার বউ।’
আমি বিজয়কে ইশারা করে বললাম, ‘বিজয় তৃতীয় ডোজটা ওকেও দিয়ে দে, যেন সারারাত জ্ঞান না ফিরে।’
আমার কথা শুনে উঠে দাঁড়ালো বিজয়, কাশেমকে নিজের দিকে ঘুরালো সে, তারপর তার কাঁধে হাত রেখে বিদ্রূপ হাসি হেসে বললো, ‘বাবা কাশেম, এটা তোর বউ নই বাবা।’
কাশেম হঠাৎ থমকে গিয়ে বললো, ‘এ্যা! কী বলছো তুমি? আমার বউ এর দুইটা হাত, দুইটা পা, দুইটা চোখ, দুইটা কান, একটা মাথা…. আর ওরও দুইটা হাত, দুইটা পা, দুইটা চোখ, দুইটা কান, একটা মাথা। এটাই আমার বউ। তুমি মিথ্যে বলছো।’
বিজয় কাশেমের কলার ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বললো, ‘দুইটা হাত, দুইটা পা থাকলেই তোর বউ হয়ে গেছে?’
কাশেম স্নেহার আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘হ্যা, আমার বউ শাড়ি পরতো, দেখো উনিও কতো সুন্দর শাড়ি পরেছে। সবকিছু মিল, আর তুমি বলছো এটা আমার বউ না?’ কাশেম যেন নাছোড়বান্দা, স্নেহার আম্মুকে সে আজ নিজের বউ বানিয়েই ছাড়বে।
-হ্যা বাবা কাশেম, এটাই তোর বউ। তুইও উনার মতো অজ্ঞান হয়ে যা।’ বলেই কাশেমের মাথায় বাড়ি মারলো বিজয়। তৃতীয় ডোজ পেয়ে ফ্লোরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলো কাশেম। আমি তখন বললাম, ‘এটা কী এমন স্প্রে রে বাবা, অচেতন করার পাশাপাশি মেন্টালি সিক করে তুলে।’
সুজন বললো, ‘ওসব বাদ দে, এখন কী করা যায় সেটা ভাব।’
কামাল বললো, ‘হুমমম… সুজন ঠিক বলেছে, নয়তো আবার ওদের হুশ ফিরে যখন তখন পাগলামি শুরু করতে পারে।’
.
.
আমরা আবার বসলাম আলোচনায়। আমাদের প্রথমে জানতে হবে স্নেহাকে কে কিডন্যাপ করেছে। তারপর ওকে উদ্ধার করে ওর আম্মুকে আমাদের দলে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু ব্যাপারটা কোনোমতে স্নেহার আব্বুর কানে যেতে পারবেনা। যদি একবার জানতে পারে এসবের মধ্যে আমরা আছি, তাহলে রফিক সাহেব আমাদের পুরো টিমের জীবন্ত শ্রাদ্ধ করে ছাড়বে।
সিদ্ধান্ত নিলাম, কাল এলাকার খবর নিতে পাঠাবো বিজয়, আর কামালকে। বাকিরা আমরা এখানে থাকবো।
.
.
বাংলোতে শুধু দুটি রুম। একটা রুমে আন্টিকে রেখে, অন্যরুমে আমরা থাকলাম রাতে। কাশেমের অচেতন বডিটা সবাই ধরাধরি করে এই রুমে নিয়ে আসলাম। খাওয়ার জন্য যে খাবারগুলো নিয়ে এসেছিলাম তা আমরা খেলাম, কিছু খাবার রেখে দিলাম অান্টি আর কাশেমের জন্য। আন্টিরগুলো উনার পাশেই রেখে এসেছি, রাতে হুশ ফেরার পর খাওয়ার ইচ্ছে হলে খাবে, নয়তো খাবেনা।
এরপর আমরা শুয়ে পড়ি যে যার মতো। কিন্তু ঘুমাতে পারলামনা। হঠাৎ কাশেমের নাকের ভেতর শুরু হয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পৃথিবীর সব দেশ মনে হয় অংশ নিছে ঐ যুদ্ধে, যেভাবে তর্জন/গর্জন শুরু হলো, এই বুঝি নাকের ভেতর সৃষ্টি হবে এক স্বাধীন রাষ্ট্র। তারপর সুরে সুরে বলবে, জয় কাশেমের নাক, নাকের জয়…….
শালার আর তো সহ্য করা গেলোনা, বেটা অজ্ঞান ছিলো, আবার হুশ ফিরলো কবে? শুয়া থেকে উঠে আমি একটা রশি খুঁজে বের করলাম। তারপর কাশেমের নাক বাঁধতে গেলাম। নাক বাঁধা থাকলে মুখ দিয়ে শ্বাস নেবে, তখন বিশ্বযুদ্ধ কিছুটা হলেও থামবে।
আমাকে কাশেমের নাক বাঁধতে দেখে সুজন বললো, ‘দাঁড়া, এসব করিসনা, শেষে দেখা যাবে বেচারা অজ্ঞান অবস্থায় মারা গেছে। তারচেয়ে বরং একটু কষ্ট করে ঘুমায়।’
সুজনের কথায় রাজি হলাম। হাতের দুইবাহু দিয়ে দুইকান চেপে ধরে কোনোমতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
মধ্যরাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে যায়। দেখি রুমের দরজা খোলা, আর কাশেম গায়েব। আমি সবাইকে ডেকে তুললাম। পাশের রুমে গিয়ে দেখি ঐ রুমে আন্টি গায়েব। কী হলো এটা? দুইজন পরস্পরকে স্বামী স্ত্রী ভেবে পালালো নাতো? সব রাগ গিয়ে পড়লো ঐ স্প্রের উপর।
.
.
(চলবে……)
.
.