বড্ড ভালোবাসি পর্ব ২+৩

গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ০২ এবং ০৩
লেখা :- Labiba Islam Roja
.
.
.
-: উনার কথা শুনে মাথায় যেন আগুন ধরে গেল তাই বললাম_
কিহহ!আপনার সাহস তো কম না আপনি আমার নাম নিয়ে যা নয় তাই বলছেন।আপনাকে আমি…..
আমাকে থামিয়ে দিয়ে উনি বলে উঠলেন এই রে পেত্নী খেপেঁছে চল সবাই পালাই না হলে ঘাড় মটকে দেবে বলেই একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে সানগ্লাস ঠিক করতে করতে চলে গেলেন।
এদিকে রাগে আমার সারা গা জ্বলে যাচ্ছে।আর মনে মনে ব্যাটা খাডাস কে যাচ্ছে তাই বলছি।
তিশা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল_অনেক তো ঝগড়া করলি এবার চল ক্লাসে যাই।
কি বললি আমি ঝগড়া করেছি আরে আমি কখন ঝগড়া করলাম এই রাক্ষস টাই তো ঝগড়া করলো।
এবার তিশা বলল-তুই ঝগড়া করিস নি হা হা।
ওই কুত্তী এভাবে হাসতেছিস কেন? সব দোষ তর।তকে যদি ওইসময় কল না দিতাম তাহলে আজকে এসব কিচ্ছু হতো না।
আচ্ছা এবার বল তোরা কি আগে থেকে দুজন দুজনকে চিনিস?
আর বলিস না কলেজে আসার সয়য় যা যা হয়েছে সবটা খুলে বললাম তিশাকে।
ওহহ!এই ব্যাপার তবে একটা কথা কি জানিস রিহান ভাইয়া মানুষ খুব ভালো।কেনো মেয়ের সাথে কথা তো দূরে থাক তাকায়ও না।আর সেই ছেলে কিনা তোর সাথে এত ঝগড়া করলো ভাবতেই অবাক লাগছে।
ওই এইবার থাম তো রিহানের চামচা। আর ওর চামচামি করতে হবে না আমি বুঝতে পারছি লোকটা কেমন।শালা একটা বজ্জাত হুহ।
কথা কথা বলতে বলতে ক্লাসে যাচ্ছিলাম তখন একটা ছেলে এসে বলল_
তিশা এদিকে একটু আসবে।তিশা বলল রোজ তুই যা আমি এক্ষুণি আসছি।
ওকে লেইট করিস না।
ঠিক আছে বলে ও চলে গেল।
কিচ্ছুক্ষণ পর ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে ও আমার কাছে এলো।
দেখি তোর হাতটা। আরে লাগবে না ঠিক হয়ে যাবে।আরে হাতটা দেখা বলছি।তারপর ও আমার হাতটা পরিষ্কার করে ঔষধ লাগিয়ে দিলো।
একটু পর ক্লাসে স্যার ঢুকলেন। আজকে কলেজের ফার্স্ট দিন তাই তেমন ক্লাস হলো না।স্যার আলাপ পরিচয় করে বেড়িয়ে গেলেন।
তিশা যেহেতু আগে থেকেই এই কলেজে ছিল তাই ও ওর কিছু বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।তারমধ্যে একটা ছেলে এসে বলল কি রে তিশা ও কে?
তিশাঃও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রোজা(আমরা রোজ বলেই ডাকি)
হ্যালো রোজ তোমার কথা তিশার মুখে অনেক শুনেছি আজ দেখার সৌভাগ্য হলো।একটা কথা না বলে পারছি না সত্যি তোমাকে দেখতে গোলাপের মতো লাগছে।
তারপর সবাই কিচ্ছুক্ষণ আড্ডা দিলাম।
তিনটা ক্লাস পরে ছুটি হয়ে গেলো।তাই বাড়ি যাওয়ার জন্য ক্লাস থেকে বেড়িয়েই দেখলাম খাডাশ টা দু হাত পকেটে ডুকিয়ে আমাদের ক্লাসের সামনে দাড়িয়ে আছে।(মনে মনে বললাম হারামজাদা যেই লুকেই থাকুক না সেই লুকেই ক্রাশ খাওয়ার মতো)
হুহ উনার দিকে তাকিয়ে একটা মুখ ভেংচি দিলাম।
তখনই উনি বলে উঠলেন বুঝলি আবির ওই মেয়েটার কথা ভাবলেই আমার কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।(আমার দিকে তাকিয়ে কালো মুখ করে)
কথাটা শুনেই দাড়িয়ে পড়লাম।
আবিরঃকেন রে দোস্ত কি হয়েছে
রিহানঃদেখ না মেয়েটা দেখতে মাশাল্লাহ কিন্তু মুখটা দেখ বাঁকা।এখন এই মেয়েকে নিয়ে ওর মা বাবা কি করবে।কেই বা এরকম বাঁকা মুখীকে বিয়ে করবে বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
আবিরঃআরে দোস্ত তুই তো খুব দয়ালু তুই থাকতে উনাদের আর চিন্তা কিসের।বলেই সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
এবার সামনে গিয়ে বললাম আমাকে নিয়ে আপনার এত চিন্তা না করলেও চলবে।এই হিরো আলম মার্কা চেহারা নিয়ে নিজের কপালে মেয়ে জুটে কি না দেখুন
হুহ।
আরে আরে তুমি কি নিজেকে বাঁকা মুখী মনে কর নাকি।এই যা আমি তো জানতামই না তোমার মুখটা বাঁকা।একে তো মুখ বাকা আবার পেত্নীও।ইসস এখন তোমার জন্যও মন খারাপ হচ্ছে।তোমার কি হবে।(প্রচন্ড মন খারাপ করে)
(মনে মনে ওরে হারামজাদারে আমাকে বলে আবার আমার কথার প্যাঁচে আমাকেই ফেলে দিলি)কথা ঘোরাচ্ছেন কেন?
তুমি পেত্নী জানতাম তবে বোকা সেটা জানতাম না।হা হা হা
কিহহ কি বললেন আমি বোকা।
হুম বোকাই তো নাহলে কেউ এই ধরণের কথা বলে।আরে বোকা মেয়ে কথার কি হাত পা আছে যে আমি কথা ঘোরাবো।
এবার মনে হচ্ছে ছেলেটাকে খুন করে ফেলতে কিন্তু তা পসিবল নয়।এদিকে মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে।তাই আর কথা না বাড়িয়ে মনে মনেই একগাদা গালি দিয়ে দিচ্ছি(শালা উল্লুক তোর জীবনে বিয়ে হবেনা,তোর বউ তোকে কখনও ভালোবাসবে না,পেত্নী এসে তোর ঘাড় মটকাবে দেখিস)।।যাক একটু ভালো লাগছে।
এবার খাডাশের কথায় হুশ ফিরলো।এই যে খুকি আমাকে গালি দেওয়া শেষ হলে এবার বাড়ি যাও।
(মনে মনে ব্যাটা রাক্ষস ম্যাজিশিয়ান নাকি মনের কথাও শুনতে পায়।)ককই কি না তো আমি আপনাকে গালি দিত যাব কেন?
ঠিক আছে খুকি থুক্কু পেত্নী বাই ভালো থেকো বলেই চলে গেলেন।


পর্ব :- ০৩
:
:
:
:
বাড়িতে গিয়েই একগাদা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো।

মাঃকিরে মা তোর কলেজ কেমন লাগলো।আর ওমা হাতে কি হয়েছে?

আর বলনা মা একটা বজ্জাত ছেলের জন্য এসব হয়েছে।রাস্তার পুরো ঘটনাটা মাকে খুলে বললাম।

তুই এতো বেখায়ালি কেন রে মা। একটু দেখে শুনে চলতে পারিস না।সব সময় বেখালির মতো চলিস।দেখ হাতটা কতখানি কেটে গেছে।

আরে মা কি বলছো।এতে তো আমার কোনো দোষ ছিল না।সব দোষ ওই বজ্জাত ছেলেটার।শালা টিকটিকি।আর তুমি আমার মা হয়ে ওই শয়তান ছেলেটার হয়ে কথা বলছো।জানো ওই ছেলেটা কি ডেঞ্জারাস

অতশত জানি না ।তবে এটা জানি তোর থেকে ডেঞ্জারাস হবে না।আর যদি হয় তাহলে ভালোই হয়।তকে শায়েস্তা করার জন্য এরকম একটা ছেলেই দরকার।আর তুই যদি একটু দেখে শুনে চলতি তাহলে তো এমন হতো না।

তখনই ভাইয়া এসে বলল _মা তুমি আমার পরী টাকে বকছো কেন?একদম বকবে না।ছেলেটার উচিৎ হয় নি পরীর সাথে এমন করা।এমন মিষ্টি একটা পুচকির সাথে কেউ এমন করতে পারে।খুব অন্যায় করেছে ও।দেখতো হাতটা কতটা কেটে গেছে।কষ্ট হচ্ছে তাই না রে

এই তোরা বাপ ছেলে মিলে মেয়েটার মাথা খেয়েছিস।কোন দোষ তোদের চোখে পড়ে না।

মায়ের কথা শুনে হো হো করে হেসে দিলাম।

জানিস পরী আজকে না তোর চকলেট আনতে ভুলে গেছি।
(দুষ্টুমি করে)

মুখ ফুলিয়ে ঠিক আছে লাগবে না।কেউ আমাকে ভালোবাসে না।

ভাইয়া মুচকি হেসে বলল এই নে,,,,,

চকলেট
….

হুমমমম।…..
হুমম আমার সুইটু ভাইয়া বলে জড়িয়ে ধরলাম।
যা এবার ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে।

ওকে।
.
.
.
.
.
পরেরদিন সকালে তিশার ডাকে ঘুম ভাঙলো।ওকে দেখে বললাম এত সকালে তুই

হুম কলেজ টাইম পেড়িয়ে যাচ্ছে।এখনও যদি সকাল মনে করে ঘুমিয়ে থাকিস তাহলে আর কলেজ যাওয়া হবে না।তাড়াতাড়ি উঠ

ওর কথা শুনে ঘড়িতে তাকাতেই দেখি ১০:০০ টা হতে আর বেশি সময় নেই ।কালকে খুব টায়ার্ড থাকার কারণে ঘুম থেকে উঠতে লেইট হয়ে গেলো।তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।

ভয়ে ভয়ে কলেজে পা দিলাম কারণ রাক্ষসটা দেখলে আবার কি না কি বলবে।চারিদিকে চোখ বুলিয়ে রাক্ষস টাকে কোথাও দেখতে পেলাম না।যাক বাবা বলে যেই স্বস্তির নিঃশ্বাসটা ফেলবো তখনই কারো কথায় আমার নিঃশ্বাস আটকে গেলো,,,,,,

কি আমাকে খোঁজা হচ্ছিল বুঝি।

ককই না তো আপনাকে খুজঁতে যাব কেন?

তুমি না বললেও আমি জানি তুমি চারিদিকে আমাকে খুজঁচ্ছিলে মিস পেত্নী।

(হহহ রে কুওা তরেই এতক্ষণ খুজঁচ্ছিলাম।তুই যেই বান্দর পোলা তাই ভয়েই তোর সামনে পড়বো না বলে খুজতাছিলাম।কিন্তু কথায় আছে_ যেখানেই বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয় আমারও একই দশা।)না মিঃআমি চারিদিকে তাকিয়ে পুরো কলেজটা দেখছিলাম।খুব সুন্দর কালকে একটা বদের হাড্ডি, পেত্নীর জামাইয়ের সাথে ঝগড়া লাগার কারণে দেখতে পারি নাই তাই আজকে দেখছিলাম।

এই না না আমি পেত্নীর জামাই হতে পারবো না।

আবিরঃকেন রে দোস্ত রাজি হয়ে যা না।যেখানে পেত্নী নিজে তোকে বলছে সেখানে না করিস না প্লিজ প্লিজ।

সবার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সবাই মুখ চেপে হাসছে ইভেন তিশাও।কি হলো ব্যাপার টা।

ঠিক আছে পেত্নী আমি আবার আবিরের কথা ফেলতে পারি না।আমার জানের দোস্ত কি না।ওর জন্য না হয় একটা পেত্নীকেই বিয়ে করলাম।যা ভাই এবার তুই খুশি।

এবার ব্যাপারটা বুঝলাম।ব্যাটা বজ্জাত হারামি আমার কথা বলছে তাই আবির ভাইয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে এই আপনি এসব কি বলছেন।যা নয় তাই বকেই যাচ্ছেন।আপনার মুখে মাছিও বসার টাইম পায় না।অনবরত এত কথা বলেন কেন হুম?

এহহ ছিঃকি বলো মাছি বসবে কেন?বসে ইয়ে করবে।আমি তোমার মতো পচাঁ না যে নিজের মুখে মাছিকে ইয়ে করতে দেবো।অবশ্য পেত্নীদের তো আর ঘেন্না বলে কিছু থাকে না সেটা আমার আগে ভাবা উচিৎ ছিলো।

(ও বাবা এ ছেলে এত কথা বলে।এর সাথে কথা পারা অসম্ভব ব্যাটা দাড়া তকে আমি হারে হারে বোঝাবো আমার পেছনে লাগার ফল হুহ।)আচ্ছা সকাল সকাল মেয়েদের সাথে ঝগড়া করা ছাড়া কি আপনার আর কোনো কাজ নেই।নিজের ক্লাসে যান না।কেন মেয়েদের ডিস্টার্ব করছেন।শুনুন(বেশ ধমক দিয়ে)সিনিয়র সিনিয়রের মতো থাকুন।সম্মান পাবেন নয়তো…….

নয়তো কি করবে(রাগী লুক নিয়ে আমার দিকে এগুতে এগুতে)
আর আমি কোনো মেয়েকে ডিস্টার্ব করি না ঠিকাচ্ছে। প্রথমবার বলছো তাই কিছু বললাম না।এরপর যদি আর কখনও এমন কথা শুনি তাহলে এর ফল ভালো হবে না।কথাটা মনে থাকে যেনো।

এমন সময় একটা মেয়ে বলে উঠলো…..
.
.
চলবে……
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here