গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ৪৭ এবং ৪৮
Writer :- Labiba Islam Roja
:
:
:
সকালেই তিশাদের ওখানে পৌছে গেছি আমরা।উনারা একটা হল বুক করেছেন।সেখানেই বরপক্ষ কনেপক্ষ সবাই থাকবে।আমাদের দেখেই তিশার মা আন্টি খুব খুশী হয়েছেন।আবির ভাইয়ার বাবা মাও খুব খুশী।সবচেয়ে বেশী খুশী এই কারণে হয়েছেন তাদের দু ছেলেই বিয়ে করছে।রিহানকে উনারা নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসেন।তিশার রুমের পাশেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।আমি এসেই বিছানায় থম মেরে বসে আছি।উনি বন্ধুদের সাথে কথা বলে একটু পর রুমে ঢুকলেন।আমাকে এভাবে বসে থাকতে দেখে আমার পাশে এসে বসলেন উনি।বসে জিজ্ঞেস করলেন….
.
কি হয়েছে রোজ!!এখানে আসার জন্য খুব এক্সাইটেড ছিলে তাহলে এখন ফ্রেশ না হয়ে এভাবে বসে আছো কেন?
.
আসলে আমি একটা ব্যাপার নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
.
কি নিয়ে আমাকে বলো আমি তোমার সব চিন্তা দূর করে দিচ্ছি।
.
উনার কথায় মুহূর্তেই হেসে উঠলাম আমি।সত্যি আপনি পারবেন?হুম পারলে আপনিই পারবেন নাহলে কেউ পারবেনা।
.
আচ্ছা এবার বলো কি হয়েছে?
.
আসলে আমি বান্দর কিভাবে আঁকে জানিনা।আপনি আমাকে বাদর আঁকা শিখাবেন প্লিজ।
.
হুম শিখাবো!!কিন্তু এতকিছু থাকতে তুমি বানর আঁকা শিখবে কেন?এই দুষ্টু মেয়ে কি চলছে তোমার মাথায়।
.
সত্যি শিখাবেন।ওয়াও এই নাহলে আমার বর বানরও আঁকতে জানে।আমার মাথায় কি আছে এখন বলা যাবেনা যখন দেখবেন তখন বুঝবেন।
.
সেটা ঠিক আছে।তবে তোমাকে আমি এক শর্তে বানর আঁকতে সাহায্য করতে পারি।
.
শর্ত!!কি শর্ত?
.
আমাকে আদর করতে হবে।বেশিকিছু বলবো না শুধু
.
আমি পারবোনা।
.
তাহলে তোমার বানর শেখা হলোনা।আচ্ছা ঠিক আছে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।উনি ওয়াশরুমে যেতেই বেরিয়ে গেলাম রুম থেকে আমি।কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু কেউ জানেনা।মুখভার করে রুমেই ফিরে আসতে হলো আমায়।একটু পর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলেন উনি।আমার জামা কাপড় নিয়ে উনার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে পালালাম আমি।যদিও আগে দু একবার কিস করেছি কিন্তু ঘুমের ঘোরে ছিলেন উনি কিন্তু এভাবে না।লজ্জায় ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই পারছিনা আমি।একটু পর বেরিয়ে আসতেই আমার দিকে এগিয়ে এলেন উনি।টাওয়াল নিয়েই আপন মনে চুল মুছাতে লাগলেন আমার।
.
এইটুকুতেই এত লজ্জা পাচ্ছ কেন বলো তো?তুমি তো আমাকে প্রথম কিস করলে না।এর আগেও করেছো তবে তখন তুমি জানতে আমি ঘুমিয়ে আছি কিন্তু কখনও ঘুমে থাকতাম না।তুমি লজ্জা পাবে বলে ঘুমের ভান ধরে পড়ে থাকতাম।আচ্ছা বাদ দাও চলো তোমাকে বাদর আঁকা শিখিয়ে দেই।
.
খুব সুন্দর করে বাদর আঁকলেন উনি।কিন্তু আমি ওতটাও পারছিলাম না তবুও যতটা সম্ভব শিখেছি এতেই হয়ে যাবে।
.
তিশাকে পার্লারের লোক এসে সাজিয়ে দিয়ে গেছে।কাঁচা হলুদ রঙের শাড়ি আর ফুলের অর্ণামেন্টসে মায়াবী লাগছে তিশাকে।সব মেয়েরা পরেছে অরেঞ্জ কালারের শাড়ি আর ছেলেরা পরেছে পাঞ্জাবী।আমাদের রুমে এসে গায়ে জরিয়ে নিলাম অরেঞ্জ কালারের শাড়ি সাথে হালকা মেকআপ।তিশার রুমে গিয়েই ওকে নিয়ে এগিয়ে গেলাম স্টেজেরর দিকে।তিশাকে দেখে হা হয়ে আছেন আবির ভাইয়া।আর আমাকে দেখে রিহান।তিশাকে একটা ধাক্কা দিয়ে বললাম দেখ তোর বান্দর কেমন করে তাকিয়ে আছে।তিশা একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।স্টেজে নিয়ে বসিয়ে দিলাম তিশাকে।
.
একটু পর হলুদ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো বড়রা হলুদ দেওয়ার পর রিহান আর আমার পালা এবার।দুজনকে হলুদ মাখিয়ে ভূত বানালাম আমি।সাথে সাথে হলুদ ভূত হয়ে গেলাম আমি।কিন্তু এমন একটা কাজ কে করলো পাশে তাকিয়ে দেখলাম এটা আর কেউ নয় আমারই বর।যেই উনাকে দিবো যাবো এমনি দৌড়ে পালালেন উনি।
.
হলুদ অনুষ্ঠান শেষ এবার মেহেদি দেওয়ার পালা।প্রথমে তিশাকে মেহেদি দেবে তারপর ভাইয়াকে।পার্লারের মেয়ে তিশার একহাতে মেহেদি পরাচ্ছে।কারণ আরেকহাতে আমি পরাবো।মেহেদি নিয়ে তিশার সামনে বসলাম আমি।
.
আচ্ছা তিশা তোর হাতে কি অক্ষর দিই বলতো “বি” নাকি “এ”।আমার কথায় মুখে তুলে তাকালো তিশা।
.
বি কেন দিবি?
.
বিকজ “বি” ফর বান্দর বলেই হাসতে লাগলাম আমি।বইন “এ” দে “বি” দিস না প্লিজ।
.
ওকে তাহলে চুপ করে বসে থাক আমার মেহেদি পরানো শেষ হলে তবেই তাকাবি।আর যদি এর আগে তাকাস তাহলে “বি” দেবো।
.
ওকে তাকাবো না।
.
নিজের মনের ইচ্ছা মতো মেহেদি পরালাম তিশাকে।পুরো হাতে বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন দিয়ে হাতের তালুতে খুব সুন্দর করে আবির ভাইয়াকে এঁকে দিলাম আমি।তোর মেহেদি দেওয়া কমপ্লিট দোস্ত এবার তাকা।হাতের দিকে তাকিয়েই তিশা চিৎকার দিয়ে উঠলো নাআআআআআআ।বলে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো।এত জোরে চিৎকার করার কারণে পুরো হলের মানুষ তিশার সামনে এসে একএিত হলো।তিশার কি হয়েছে সেটা জানতে ব্যস্ত আবির ভাইয়া।তিশা কথা বলার অবস্থাতেই নেই।এখন ওর মুখ দেখে অনেক হাসি পাচ্ছে আমার কিন্তু বহু কষ্টে হাসিকে আটকে রেখেছি আমি।রিহানকে দেখেও বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।ভীড় ঠেলে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন উনি।
.
তিশার সাথে কি করেছো রোজ।ও এভাবে চিৎকার করলো কেন।আমি জানি ওর চিৎকার করার পেছনে তুমি আছো।বলো কি করেছো
.
আমি কোথায় কি করলাম। আমি তো শুধু হাতে মেহেদি পরিয়েছি।আমি যখন বললাম মেহেদি পরানো কমপ্লিট তখনই হাতের দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো।
.
আমার কাছ থেকে সরে আবির ভাইয়াকে বললেন….
.
আবির ওর হাতটা খুল তো?
.
তিশা কিছুতেই হাত দেখাতে চাইছে না কিন্তু আবির ভাইয়ার জোরের সাথে পারছেও না।ভাইয়া জোর করেই ওর হাত খুলে সামনে ধরলো।সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে ওর হাতের দিকে।
.
বাদর!!
.
হুম ভাইয়া তিশাকে বলেছিলাম আপনার নামের অক্ষর দিবো কিনা তারপর ভেবে দেখালম অক্ষর দেওয়ার থেকে পুরো মানুষটাকেই ওর হাতে দিয়ে দেই।আফটারল বেস্টু বলে কথা।আমার কথায় হেসে উঠলো সবাই।
.
আবিরঃথ্যাংস রোজ এবার ঠিক হয়েছে।এখন একটা বান্দরের সাথে বিয়ে করছে কপালে কোনো ছেলে জোটেনি।তুমি চট করে আমার হাতে বান্দরনী এঁকে দাও তো প্লিজ।
.
যেই বলা সেই কাজ।ঝটপট একটা বান্দরনী এঁকে দিলাম ভাইয়ার হাতে।তিশা করুন চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।এদিকে এই কান্ড দেখে পুরো হলের লোকজনের কাছে ফেমাস আমি!!এ নিয়ে কত হাসাহাসি চলছে।কিন্তু আমার বর একদম খুশী নয়।কি রকম একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মেহেদি পরতে খুব ইচ্ছা করছিলো আমার কিন্তু উনার মুখের দিকে তাকিয়েই রুমে চলে গেলাম আমি।আমি রুমে আসতেই কোথা থেকে উড়ে আসলেন উনি।
.
এতক্ষণ লাগে রুমে আসতে।সেই কখন অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে আর এখন রুমে আসার সময় হলো তোমার।বান্ধবীর বিয়েতে এসে বরকে ভুলে গেছো।(বিছানায় বসে)
.
উনার রাগ যে এখন চরম পর্যায়ে সেটা বুঝতে পারছি আমি।এত রেগে থাকার কারণও ক্লিয়ার নয় আমার কাছে।এত রাগ করছেন কেন আপনি?আমি কিছু ভুল করেছি?আসলে তখন দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় এসেছিলো তাই ওসব করে ফেলেছি প্লিজ রাগ করবেন না।
.
আমি তার জন্য কিছু বলছি না।এটা তুমি করতেই পারো কিন্তু এতক্ষণ ধরে যে আমার মাথা ব্যাথা করছে সে খবর কি তুমি জানো।অবশ্য জানবেই কি করে আমার দিকে তোমার খেয়াল থাকলে তো।লাইট অফ করো আমি ঘুমাবো।
.
সটান হয়ে শুয়ে আছেন উনি আর হ্যাবলার মতো উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি।আস্তে আস্তে উনার পাশে বসলাম আমি।মাথায় হাত দিতেই আমার কোলে মাথা রেখে কোমড় জরিয়ে ধরলেন উনি।এই হাতটার পরশই চাইছিলাম আমি।উনার কথায় হাসলাম আমি।একদম বাচ্চাদের মতো শুয়ে আছেন উনি।কিছুক্ষণ মাথায় হাত বুলানোর পরই আমাকে জরিয়ে শুয়ে পরলেন উনি।কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পরলাম আমি।
.
মাঝরাতে হাতে ঠান্ডা কিছুর স্পর্শে ঘুম থেকে উঠলাম আমি।আমাকে উঠতে দেখে হাসিমাখা মুখে বলে উঠলেন কি ঘুম কুমারী ঘুম ভাঙ্গলো আপনার।
.
হুম বলেই মাথা নাড়ালাম আমি।খুব যত্ন করে আমার হাতে মেহেদি পরাচ্ছেন উনি।আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি উনি মেহেদি পরাতেও জানেন।কি সুন্দর করে মেহেদি পরাচ্ছেন আমার হাতে।নাও তোমায় মেহেদি পরানো শেষ তখনই পরাতাম কিন্তু প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ছিলো তাই পারিনি।মেহেদি পরানো শেষে ছোট্র করে হাতের তালুতে উনার নামের অক্ষর বসিয়ে দিলেন আমার হাতে।এবার ঠিক আছে বলো কেমন হয়েছে?
.
খুব খুব খুব ভালো হয়েছে।আপনি মেহেদি পরাতেও পারেন..?
.
হুম!!পাঁচটা মেহেদি নষ্ট করে মেহেদি পরানো শিখেছি আমি।শুধুমাএ তোমায় পরাবো বলে।Now i’am success…
.
সকালের মিষ্টি আলো চোখে লেগে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।উনি ল্যাবটপে কি করছেন।এই লোকটার আলসামো বলতে কিছু নেই, নেই কোনো ক্লান্তি।আমি ঘুম থেকে উঠে বসতেই উনি মিষ্টি হেসে বললেন ম্যাডামের ঘুম ভাঙ্গলো তাহলে গুড মর্নিং। আমিও হেসে বললাম হুম মর্নিং।সকাল থেকেই বিয়ের কাজে ব্যস্ত সবাই।তিশাকে সাজাতে পার্লারের লোক চলে এসেছে।
.
বধূর সাজে বসে আছে তিশা আমিও সেজেগোজে বসে আছি রুমে।রিহান বেরুতে দিচ্ছে না আমায়।সে রেডি হলে তবেই একসাথে বেরুবো আমরা। সেই কখন থেকে রেডি হচ্ছেন উনি।কিন্তু উনার রেডি হওয়া শেষই হচ্ছে না।আয়নায় উনাকে দেখছি উনার চোখে চোখ পরলেই সরিয়ে নিচ্ছি আমি। আমাকে এভাবে আটকাতে পেরে ব্যাপক খুশী উনি।উনার রেডি হওয়া শেষ হলে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন উনি।আমাকে টেনে আয়নার কাছে নিয়ে গেলেন উনি।আমার চুলগুলো হাত খোঁপা ছিলো সেগুলো খোলে দিলেন উনি।এবার ঠিক আছে চলো।আমি খোঁপা বেধে যাবো।
.
না ওভাবে গেলে পেত্নীর মতো দেখাবে।চলো এভাবেই যাবো বলে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন উনি।
.
স্টেজে তিশা বসে আছে।আবির ভাইয়াকেও নিয়ে হাজির রিহান।রিহান এদিক ওদিক ছুটে চলেছে।তিশাকে দেখে বরাবরের মতো আবির ভাইয়া ক্রাশড।।এরপর ভালোই ভালোই বিয়েটা সম্পন্ন হয়েই গেলো।
.
বাসর ঘরে বসে আছে তিশা।আচ্ছা তিশা শোন তোর মেইআপ গুলো উঠে যাচ্ছে দাঁড়া এগুলো ঠিক করে দেই।বাধ্য মেয়ের মতো বিছানায় বসে আছে তিশা।ওর মেকআপ গুলো ঠিক করে আমার রুমে গিয়ে হাসতে লাগলাম আমি।আজ বুঝবা দোস্ত বেস্টু কারে কয়।পেছন থেকে বলে উঠলেন উনি….
.
আবার কি করেছো তিশার সা….?কথাটা শেষ হওয়ার আগেই আবির ভাইয়ার চিৎকার কানে এলো আমাদের।রিহান আর এক মুহূর্ত দেরি না করেই ভাইয়ার রুমের দৌড় লাগালো আমিও পেছন পেছন গেলাম।এতক্ষণে সবাই এসে হাজির কিন্তু দরজা খুলছে না কেউ।অনেক ধাক্কানোর পর একটা কুচকুচে কালো বিভৎস মহিলা দরজা খুললো।কালো মুখ ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লেপ্টানো আর কপালে ইয়া বড় একটা লাল টিপ।মেয়েটাকে দেখেই সবার জ্ঞান হারাবার মতো অবস্থা।মেয়েটাকে ঠেলে রিহান ভিতরে ঢুকলো।আবির ভাইয়া বিছানায় “থ” মেরে বসে আছেন।উনি কন্টিয়াসলি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করছেন কি হয়েছে কিন্তু তিনি কিছুই বলছেন না। মুখে পানি ছিটালে হুশ ফিরে ভাইয়ার।
.
রিহানঃরোজ এসব কি?সবসময় বাচ্চামো কি করেছে এটা(চোখ গরম করে)।এমন কাজ কেউ করে ড্যামেড।
.
আমি তো শুধু…..একদম চুপ করে দাঁড়াবে এখানে।যখন যা ইচ্ছা তাই করবে।এরকরকম একটা বিষয় নিয়ে ফাজলামো।কোনো কথা নয় আগে রুমে যাই বলে আবারও ভাইয়ার কাছে চলে গেলেন উনি।
.
আবিরঃতিশা কোথায় রোজ?আর এই মেয়েটা কে?
.
ভাইয়ার কথায় হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেছে আমার।নিজের বউকেই আজ চিনতে পারছেন না।পেছন থেকে তিশা বলল…এই তো আমি আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না?
.
তুমি তিশা ইম্পসিবল!!কেমন বিভৎস চেহারা তোমার।আগে আয়নায় গিয়ে নিজেকে দেখ তারপর বলো।
.
উনার কথায় আয়নার দিকে এগিয়ে গেলো তিশা সেখানে নিজের প্রতিবিম্ব দেখেই চিৎকার দিয়ে উঠলো সে।রোজজজ তুই
.
হুম আমি!!কি ভাবছিলি শান্তিতে বাসর করবি আর আমি তোর বেস্টু হয়ে ছেড়ে দেবো।কখনো না দিয়েছি তোর বাসরের বারোটা বাজিয়ে।এবার এই কালি তুলতে তুলতেই রাত পার।বইন দিনের বেলায় বাসর করিস আমি যাই বলেই দৌড়ে চলে এলাম রুমে।
.
তিশা কাঁদো কাঁদো ফেইস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর ভাইয়া করুন চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে….!!
:
:
#Part :- 48
:
:
-: রুমে এসেই ঘুমের ভান ধরে শুয়ে আছি আমি।আজ আর রক্ষা নেই রিহান আমার বারোটা বাজিয়েই ছাড়বে।সেটা উনার চোখ দেখেই স্পষ্ট বুঝেছি আমি।তাই চুপ করে ঘুমিয়ে আছি আমি।দরজার খোলার শব্দ পেয়ে বুঝলাম আম্প্যান ঘরে ঢুকছে।আরো গুটিয়ে নিলাম নিজেকে।একেবারে নিঃশব্দে ঘুমিয়ে আছি আমি।
.
রোজ তোমার সাথে কিছু কথা আছে উঠে বসো।
.
তুই কি কানারে আমি যে ঘুমিয়ে আছি সেটা কি তোর চোখে লাগেনা।”রোজ উঠো তোমার সাথে কথা আছে”।পিছা মারি তোর কথায় আমি।এখন কথা বলবি পরে হাতও চালাবি আমি উঠবোনা।
.
যত বড় অভিনেত্রী হওনা কেন আমার কাছে অভিনয় করেও পার পাবেনা। আমি জানি তুমি এখনও ঘুমাও নি।সো দেরি না করে চট করে উঠে পরো।কি হলো কথা কানে যাচ্ছে না।উঠো বলছি(ধমক দিয়ে)
.
এবার আর না উঠে নিস্তার নেই।আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম আমি।আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছেন উনি।প্যান্টের বেল্ট খুলে হাতে নিতেই ভয়ে কেপেঁ উঠলাম আমি।এবার কি আমায় মারবেন নাকি।বেল্ট হাতে আমার দিকে এগুতে লাগলেন উনি।আআসলে আআমি বুঝতে পারিনি।
.
কোনটা বুঝতে পারো নি তুমি।তুমি কি এখনও বাচ্চা ভালো মন্দ কিছুই বুঝো না।তোমার মনে নেই আমাদের ওরা কত হেল্প করেছিলো আর তুমি কি করলে ওদের সাথে। আজকে একটা স্পেশাল রাত ছিলো রোজ আর তুমি পুরোটাই স্পয়েল করে দিলে।
.
বিশ্বাস করুন এতটা ডিপলি ভাবিনি আমি।আমি তো মজা করে তিশার সাথে এমন করেছি।ওই বেল্ট দিয়ে কি করবেন?
.
এটা জেনে তুৃমি কি করবে যখন এটা দিয়ে কিছু করবো তখন বুঝতে পারবে।জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন পরবে না।
.
উনার কথায় কান্না চলে এলো আমার।ঠোঁট চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা চালাচ্ছি আমি কিন্তু পারছিনা টুপ করে দুফোঁটা পানি গরিয়ে পরলো আমার চোখ থেকে।এই একটা ভুলের জন্য আপনি এতবড় শাস্তি দেবেন আমায়….?
.
আমার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালেন উনি।অন্যের লাইফ হেল করার জন্য একটা ভুলই যথেষ্ট।আস্তে বেল্ট হাতে আমার দিকে এগুচ্ছেন উনি।উনাকে কাছে আসতে দেখে চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিলাম আমি।একটু পর আবারও তাকালাম রিহান একদম আমার কাছে দাঁড়িয়ে নিজেকে বাঁচাতে উনাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম আমি।
.
এই তুমি আমাকে জরিয়ে ধরলে কেন?তোমার লজ্জা করছে না।ভয় পাচ্ছ না আমাকে?
.
না একটুও করছেনা।আমার বরকে আমি জরিয়ে ধরবো নাতো কি অন্য মেয়েরা ধরবে।এবার দেখি কে আমাকে মারে?
.
কেন আমিই মারবো তাও আবার এই বেল্ট দিয়ে।রোজ আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে কোনো লাভ নেই।নাহলে এভাবেই মারবো।
.
আমার বরের বুক থেকে সরিয়ে আমাকে মারবেন কখনও পসিবল নয়।আমি জানি পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নেই যে আমাকে আমার রিহানের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে মারতে পারে।আমাকে মারা তো দূর টাচও করতে পারবেনা।
.
এতো কনফিডেন্স বরের প্রতি?
.
হুম!!
.
পাগলি একটা!!(মাথায় হাত বুলিয়ে)কি ভেবেছিলে আমি সত্যি তোমাকে মারবো।ধুর বোকা মেয়ে এটা তো কিছুই না তুমি যদি কোনো জঘন্য কাজও করো তাও এই হাত তোমার গায়ে উঠবেনা।হুম রাগ হলে বকাঝকা করতেই পারি কিন্তু এই মায়াবিনীর গায়ে হাত তোলা অসম্ভব।
.
তাহলে এক্ষুণি যে বেল্ট নিয়ে এগুচ্ছিলেন?
.
বেল্ট তো আমি এমনি খুলেছিলাম কিন্তু তোমার মুখে ভয় দেখে একটু ভয় দেখালাম এই যা।
.
ফাজিল আমি কতটা ভয় পেয়েছিলাম জানেন আপনি বলে কিল ঘুষি মারতে লাগলাম উনাকে।
.
আচ্ছা এবার তো থামো।বরকে মারছো ছিঃছিঃ।শোন তুমি কি কাজটা ঠিক করলে রোজ।আমার দোস্তের কত স্বপ্ন ছিলো এই দিনটাকে ঘিরে আর তুমি নষ্ট করে দিলে।
.
সরি বুঝতে পারিনি।
.
ওকে ওরা তো বাসর করতে পারলো না চলো তাহলে আমরাই করি।বিয়ে করলো ওরা আর বাসর করবো আমরা ইন্টারেস্টিং না।
.
না একদম না।
.
আজকে তোমার কোনো কথা শুনছিনা আমি।চুপ থাকো বুঝেছো বলেই কোলে তুলে নিলেন আমায়।
.
.
তিশার বৌ ভাতের দিন রাতেই বাসায় ফিরে এসেছি আমরা।এই কদিনের ক্লান্তিতে বাসায় এসেই ঘুমিয়ে পরেছি আমি।সকাল এগারোটায় ঘুম ভাঙ্গলো আমার রিহান পাশে নেই নিশ্চয় অফিস চলে গেছেন উনি।উনার মতো ক্লান্তিহীন মানুষ আমি কম দেখেছি।ইসস!! আমিও যদি উনার মতো হতে পারতাম।আম্মুকে কিছুক্ষণ হেল্প করেই রুমে ফিরে এলাম আমি।বড্ড ক্লান্ত লাগছে তাই আবারও শুয়ে পরলাম।কালকে থেকে ভার্সিটি যাবো আমি।রিহানও এডমিট হবে এই ভার্সিটিতেই থাকছে।যাতে বউয়ের উপর নজর রাখা যায়।নিজে না থাকলেও আমি কখন কোথায় কি করছি টাইম টু টাইম খবর পেয়ে যাবেন।এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমাদের দিনগুলি।দেখতে দেখতে আটটা মাস অতিবাহিত হয়ে গেলো।ফার্স্ট সেমিস্টার কমপ্লিট আমাদের।এবার সেকেন্ড ইয়ারে আমরা।এখন রান্না প্রায় সবই শিখে গেছি আমি।যে মেয়ে আগে এককাপ কফি বানাতে পারতো না সে এখন সংসার সামলাতে শিখে গেছে।ভাবতেই অবাক হই আমি মেয়েদের জীবনটা বড় অদ্ভুত!!মেয়েরা পানির মতোই যখন যেই পাএে রাখবে ধীরে ধীরে তারই রূপ ধারণ করবে।ভাবির ডেলিভারির ডেইট সামনেই।এখন হাঁটা চলা করতেও সমস্যা হয়।আমার জেদের কারণেই একমাস ধরে এ বাড়িতে থাকেন ভাবি।আম্মু একা একা ঘর সামলে ভাবির যত্ন করতে অসুবিধা হবে ভেবে এখানে আমার কাছে রেখেছি।ভাইয়া এসে ভাবির সাথে দেখা করে যায়।আজকে রিহানের জন্মদিন।সে উপলক্ষে কাছের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে একটা গেট-টু গেদারের আয়োজন করা হয়েছে।সকাল থেকেই গেস্ট আসা শুরু হয়ে গেছে।সকালের হাতের কাজ শেষ করে রুমে গিয়ে শুয়ে আছি আমি।এখন সকালের খাবার খাইনি।আজকাল কিছুই ভালো লাগেনা আমার।একটু কাজ করলেই হাঁপিয়ে যাই আমি।খেতেও ভালো লাগেনা।এ নিয়ে রিহানের বকার অন্ত নেই।আমার খেতে ভালো লাগেনা এই কথাটা উনাকে কিছুতেই বুঝাতে পারিনা আমি।
.
.
রান্নাঘরে মায়ের সাথে হেল্প করছি আমি।রিহান কোথা থেকে গিয়ে দাঁড়ালো আমার সামনে।
.
কি হলো কিছু লাগবে আপনার?
.
হুম তোমাকে লাগবে এখন তাড়াতাড়ি রুমে এসো।উনার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালাম আমি কি অসভ্য ছেলে মায়ের সামনে কিসব বলে যাচ্ছে।উনার কথায় মিটিমিটি হাসছেন মা।আপনি যান আমি হাতের কাজ শেষ করেই আসছি।
.
আমার দিকে চোখ গরম করে তাকালেন উনি।আমি সেদিকে নজর না দিয়ে নিজের কাজ করে যাচ্ছি।এখন দাঁড়িয়ে আছেন উনি।তখনই মা বললেন…..
.
যাও তো মা আমার ছেলেটা কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছে।ওর সাথে যাও দেখ কি লাগে আমি এদিকটা দেখছি।মায়ের কথায় বাধ্য হয়েই রুমে গেলাম আমি।কি হয়েছে বলুন আমার তাড়া আছে।
.
আমার ব্ল্যাক স্যুট টা কোথায়?কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।
.
উনার স্যুট বের করে বিছানায় রেখে চলে যাচ্ছিলাম আমি তখন আবারও ডাক পরলো আমার পেছন ফিরে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি।
.
রোজ
.
হুম বলুন!!আর কিছু লাগবে আপনার?
.
সকালে খেয়েছো।কি হয়েছে তোমার মুখটা ফ্যাকাসে লাগছে।চলো তোমাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাই।
.
পাগল হয়েছেন আপনি!!বাড়ীতে অনুষ্ঠান রেখে এখন আমি ডক্টরের কাছে যাবো।আর আমার কি হয়ছে যে আমাকে ডক্টরের কাছে যেতে হবে।আমি ঠিক আছি আপনি আমাকে নিয়ে অহেতুক চিন্তা করছেন।
.
না রোজ আমি এমনি এমনি কিছু বলছিনা।তোমাকে একবার ডক্টর দেখানো উচিৎ।দিন দিন কেমন শুকিয়ে যাচ্ছ।চোখ মুখ শুকনো লাগছে এখনও খাওনি তাইনা।
.
উনার কথার কোনো উওর না দিয়েই আবারও রান্নাঘরে চলে গেলাম আমি।কি বলবো খাইনি তাহলে আবার শুরু হবে বকাঝকা।এখন বকা খেতে ইচ্ছা করছেনা আমার।
.
ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে আছি আমি।আব্বু আম্মু ভাইয়াও চলে এসেছেন এর মধ্যে।তিশা আর আবির ভাইয়াও চলে এসেছে।রিহান করুন মুখ করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।তিশার সাথে গল্প করছি আমি।কিন্তু কিছুতেই কিছু ভালো লাগছেনা আমার।মা এ নিয়ে অনেকবার বলেছেন খাওয়ার কথা কিন্তু খাইনি আমি।দুপুর হয়ে গেছে এখন গেস্টদের খাওয়ানো হবে।সবাই যখন উঠে খাবারের জায়গায় গেলো আমি তখনও সোফায় বসে আছি।তিশা যেতে চায়নি কিন্তু জোর করেই পাঠিয়ে দিয়েছি আমি।সবাই চলে যেতেই আমার পাশে এসে বললেন উনি।
.
আমি জানি সকাল থেকে কিছুই খাওনি তুমি। এখন কোনো কথা না বলে চুপচাপ খেতে বসবে।আর যদি তা না করো তাহলে আমিও খাবোনা।
.
আপনি খাবেন না কেন?আমার খিদে পেলে আমি খেয়ে নেব।যান আপনি খেয়ে নিন।
.
তুমি এখন খাবে কিনা।ঠিক আছে বলেই উঠতেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো আমার।আমাকে দাঁড়িয়ে পরতে দেখে ব্যস্ত হয়ে পরলেন উনি।কিছু না বলেই টেবিলের কাছে যেতেই মা খাওয়ার জন্য জোরাজুরি শুরু করলেন।কিন্তু এবারও খেতে ব্যর্থ আমি।কিছুক্ষণ পর রিহানের কাছে এসে উনাকেও খেতে পাঠালাম আমি।
.
দুপুরে খেয়ে রুমে এসে শুতেই ঘুমিয়ে পরলাম আমি।কতদিন যেন ঘুমাইনা।ঘুৃম থেকে উঠে দেখলাম অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে!! বিছানা থেকে নামছি আর ভাবছি রিহানকে কি বলবো এ ব্যাপারে।দিন দিন কেমন অসল হয়ে যাচ্ছি আমি। না থাক এমনি আমাকে নিয়ে টেনশনে আছেন আর টেনশনে ফেলতে চাইনা উনাকে।আজকে হয়তো একটু বেশিই উপরনিচ করেছি তাই এতটা ক্লান্ত লাগছে।বিছানা থেকে নেমে দাঁড়াতেই আবারও মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো আমার।ড্রয়িংরুমে পা রাখতেই চারিদিক কেমন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। তবুও সামনের দিকে এগুচ্ছি কিন্তু এবার আর নিজের শরীরের ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারলাম না।নিচে পরে যাচ্ছি তখন কেউ আমাকে ধরলো কিন্তু চোখ বন্ধ থাকার ফলে দেখতে পাচ্ছি না শুধু একটা কথাই কানে আসছে….রোজ কি হয়েছে?এই রোজ কথা বলছোনা কেন?
.
জ্ঞান ফিরে নিজেকে আমাদের রুমে স্যালাইন হাতে আবিষ্কার করলাম আমি।ডক্টর আঙ্কেল একটু হেসে কি মামনি ঘুম ভেঙ্গেছে তোমার।খাওয়া দাওয়া করোনা কেন হুম।রিহান শোন না খেয়ে খেয়ে দুর্বল হয়ে গেছে আর তাই মাথা ঘুরে পরে গেছে।এই টেস্ট গুলো করিয়ে নিস আমি আসছি।
.
মোটামুটি সবাই ভীড় জমিয়েছে।আব্বু আম্মু ভাইয়া ভাবি তিশা আবির ভাইয়া রিহানের বাবা মা সবাই আছেন।চোখ গেলো উনার দিকে আমার থেকে কিছুটা কর্নার সাইডে চিন্তিত মুখ নিয়ে আছেন উনি।ডক্টর আঙ্কেল যেতেই আমার পাশে এসে বসলেন উনি
.
এখন কানের নিচে দেই একটা।তোমাকে এত ভালোবাসি বলে মাথায় উঠে নাচছো।একটু অবহেলা করতাম তাহলে এমন হতোনা।কিছু বলিনা বলে যখন যা ইচ্ছা তাই করো।কতবার বলি তোমাকে খাওয়ার কথা।।কেন তুমি কি তিন বছরের বাচ্চা।তোমার পেছনে দৌড়ে দৌড়ে খাওয়াতে হবে।নিজের ভালো নিজে না বুঝলে কারো কিছু করার নাই।
.
আপনি এভাবে সবার সামনে বকছেন আমায়।তার উপর অসুস্থ।আমি তো খাওয়া দাওয়া করিই।
.
তো কি হয়েছে সবাই জানুক এখনও খাওয়া নিয়ে তোমার কত অবহেলা।দুদিন পর বাচ্চা সামলাবে আর উনি এখনও বাচ্চা আছেন।
.
আচ্ছা রিহান আর বকোনা।আম্মু চলো আমরা বাইরে যাই পরীর রেস্টের খুব প্রয়োজন আর পরী এখন থেকে নিজের খেয়াল রাখবি।এভাবে কিভাবে হবে বল।প্লিজ অনিয়ম করিস না।ভাইয়াকে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালাম আমি।সবাই রুম খালি করে চলে গেলো।এখনও আমার উপর রেগে আছেন উনি।কেন রাগ করছেন শুধু শুধু আমার উপর।
.
এটাকে তোমার শুধু শুধু মনে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে অনেক বড় মেটার।স্যালাইনও শেষ হয়ে গেছে উনি আস্তে করে স্যালাইন টা খুলে দিলেন আমার হাত থেকে।এক প্লেট খাবার এনে ধমকিয়ে খাইয়ে দিলেন আমায়।বাধ্য মেয়ের মতো খেয়ে নিলাম আমি।
.
.
সটান হয়ে শুয়ে আছেন উনি।এখনও রাগ কমেনি বুঝতে পারছি আমি।আচমকাই উনার বুকে মাথা রেখে জরিয়ে ধরলাম আমি।প্লিজ আর রাগ করে থাকবেন না।আমি কোনো অনিয়ম করবো না।কথা বলছেন না কেন?কথা বলুন প্লিজ!!আমার কথায় উনার কোনো সাড়া নেই।কেঁদে কেঁদে উনার টি-শার্ট ভিজাচ্ছি আমি।
.
হঠাৎ ঠান্ডা কিছুর স্পর্শে বুঝতে পারলাম রোজ কাঁদছে।ওকে জরিয়ে ধরে কাঁদছো কেন হুমম…?
.
আচ্ছা আমারর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনি কি করবেন?আমাকে ভুলে যাবেন তাইনা।আমি মারা যাওয়ার পর নতুন জীবন শুরু কর…..
কথাগুলো শেষ হওয়ার আগেই আমাকে উনার বুক থেকে তুলে বিছানায় বসালেন উনি।কিছু বুঝে উঠার আগেই সজোরে থাপ্পড় বসালেন আমার গালে।এতই জোরে ছিলে মনে হচ্ছে গাল ফেটে গেছে।
.
খালি আবোল তাবোল কথা।আচ্ছা (কিছুটা শান্ত হয়ে)আমি যদি মরে যাই তাহলে তুমি কি করবে…?
.
উনাকে শক্ত করে না কিছুতেই না।আপনার কিছু হতে পারেনা।আপনি ছাড়া আমি কিছুতেই বাঁচতে পারবোনা।আমি তো সবসময় দোয়া করি আপনার আগে যেন আমি মরতে পারি।আপনি বুঝেন না আপনাকে ছাড়া বেঁচে থাকার শক্তি আমার নেই।।আর কখনও এমন কথা বলবেন না আমি সহ্য করতে পারিনা খুব কষ্ট হয়।
.
তাহলে ভাবো তুমি যখন কথাগুলো বলছিলে আমার কেমন লাগছিলো(শক্ত করে চেপে ধরে)।কেন বুঝো না তোমাকে ছাড়া অচল আমি।আর কখনও এসব কথা বলবেনা ঠিক আছে।তখন রাগকে থামাতে পারিনি সরি।খুব লেগেছে তাইনা।(গালে চুমো দিয়ে)
.
না লাগেনি।
.
সরি প্লিজ!!(কান ধরে)এবার হাসো
.
কান ধরতে দেখে কিছুটা হাসলাম আমি।আচ্ছা এবার তোমাকে ঘুম পারিয়ে দেই।
.
না আপনি ঘুমান আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।ঠিকাছে বলেই আমার কোলে মাথা রেখে কোমড় জড়িয়ে শুয়ে আছেন উনি।কালকে তোমার টেস্টগুলো করিয়ে নেবো।আপুরও ডেইট এগিয়ে এসেছে। আমাদেরও একটা প্রিন্সেস হবে কিন্তু এখন না তুমি তো ছোট।তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাও তো।তোমার অনার্স কমপ্লিট হওয়ার পর একটু বড় হয়ে যাবে আশা করি।তখন আমাদের ঘর আলো করে একটা প্রিন্সেস আসবে।গুটিগুটি পায়ে হাঁটবে খিলখিল করে হাসবে।এই ছোট ছোট আঙ্গুল ধরে হাঁটবো আমি।উফফ কত খুশী আসবে আমাদের ঘরে।
.
কথাগুলো বলার সময় অদ্ভুদ এক খুশীর ঝিলিক ফুঁটে উঠেছে উনার মুখে।অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি উনার দিকে।একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে উনাকে।আনমনেই ঠোঁট চলে গেলো উনার কপালে।
.
তুমি আমায় আদর দিচ্ছি বুঝি।উনার কথায় মুচকি হাসলাম আমি।উনি উঠেই উনার কোলে শুইয়ে দিলেন আমায়।এবার তুমি ঘুমাও মাই ঘুম কুমারী।
.
.
চলবে…………
.