বালির সংসার পর্ব ১

ক্লিনিকের আউটডোরে বসে অর্থি যখন বাইরের দিকে তাকিয়ে রুপকের জন্য অপেক্ষা করছিলো তখন রুপক অফিসের চেম্বারে
বসে নিশিতার মাঝে ডুবে যাচ্ছিলো।
হালকা ব্যথায় যখন অর্থি দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরেছিলো তখন রুপক নিশিতার ঠোঁটে ঠোঁট নাড়তে ব্যস্ত।
হালকা ব্যথা যখন মারাত্নক হয়ে উঠলো হাত পা কাপছিলো অর্থির, তখন রুপক উত্তেজনা নিয়ে আরো কাছে টেনে নেওয়ায় ব্যস্ত নিশি কে।
নিশির নাকের ডগায় জমা হালকা ঘাম যেনো মুক্তোকণা ঠিক সে সময় অর্থির শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে।
.
যখন রুপক ভাবছে তার বেস্ট ফ্রেন্ড এত সুন্দরী হওয়া স্বত্বেও এতদিন কেনো অর্থির কাছে ছিলো?
তখন অর্থি ভাবছে হয়তো কাজ পড়ে গেছে না হলে রাস্তায় জ্যামে আটকে গেছে।
না হলে রুপক আসতে দেরী করার ছেলে না! তাও আবার আজকের দিনে?
রুপক যখন আবার নিশিতা কে কাছে টেনে দুই বছরের কন্ট্রাকে সিগনেচার করাচ্ছিলো, অর্থি তখন নিজের ডেলিভারি পেপারে নিজেই বন সই দিচ্ছিলো।
.
কি অদ্ভুত তাই না? একটা মেয়ে কতটা একা হলে, কতটা নিরুপায় হয়ে এই কাজ টা করে।
.
শুনেছি ২০ টা হাড় ভাংগার সমান হয় এই লেবার পেইন।
তারপরেও মেয়েটা বার বার রুপক কে কল দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।
শুধু একটা ইচ্ছে যদি একবার দেখতে পেতো!
ঠিক সতেরো মিনিট পর যখন অর্থি ছেলে জন্ম দিলো, রুপক আবিস্কার করলো এক নতুন নিশিতা কে।
মেদহীন পেটে যে এত মাদকতা আছে জানা ছিলো না। কিন্তু তখন তার স্ত্রীর পেট থেকে জন্ম নেওয়া সদ্য শিশুর নাভীর নাড় কাটা হচ্ছে।
নাড় জন্যেই তো নারী জন্মের আগেই সন্তানের সাথে আজন্ম বাধা পড়ে।
.
অর্থি সব শুনতে পারছিলো কিন্তু কিছু বলার শক্তি নেই। অবচেতন মনে শুধুই রুপ কে খুজতে লাগলো।
রুপ তো এমন করে না! আজকের দিনেই ব্যস্ততা? না কি কোন বিপদ হলো।
পুরোপুরি অজ্ঞান না হলেও নিজের উঠে গিয়ে কিছু করার শক্তি আর আজ অর্থির নেই।
কিন্তু আজ যে বড্ড প্রয়োজন তোমায় রুপ! কই তুমি?
.
.
ঠিক রাত তিনটের দিকে ঘুম ভাংলো রুপের।পাশে শুয়ে আছে নিশিতা।
এই মেয়ের মাঝে এত জাদু আছে জানা ছিলো না রুপের।
ফোন অন করতেই ম্যাসেজ এলো
You missed 419 calls from Mayaboti…
.
তারপর শুরু হলো ম্যাসেজের টুংটাং
.
– তুমি কি বিজি?
.
– আমার ভালো লাগছে না। অস্বস্তি হচ্ছে খুব
.
– কই তুমি? খুব ব্যস্ত?
.
– রুপ আমার ওয়াটার ব্রোক করছে! তুমি প্লিজ আসো।
.
– আমি আর খালা ক্লিনিকে যাচ্ছি।
.
.
আমরা এসেছি! ডক্টর, অপারেশন করতে চাচ্ছে। তুমি আসো না।
.
.
এই তুমি ঠিক আছো তো?
.
অটি তে ঢুকছি। জানি না আর দেখা হবে কি না। পারলে একবার এসো।
অভিমান না! আমি বুঝি কাজের চাপ তোমার ইদানীং বেশি। ভালো থেকো।
.
এর পর আর কোন ম্যাসেজ নেই।
বুকের ভিতর টা ধক করে উঠলো রুপের।
অর্থি! অর্থি ঠিক আছে তো?
রুপ যখন উঠতে যাবে তখন অনুভব করলো নিশিতা উঠে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে।
.
– রুপ! আমি তোর কাছে কোনদিন কিছু চাইনি। শুধু একটা রাত চেয়েছি। তুই আমার কাছে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আজ তুই কোথাও গেলে আমি সত্যি মরে যাবো।
.
নিশিতার ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে রুপ মন থেকে চলে যেতে চাইলেও শরীর সায় দিলো না।
পরম আবেশে যখন নিশি দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছে তখন মিটিমিটি চোখে তাকাচ্ছে অর্থি।
এখনো যে তার দুচোখ রুপকেই খুজছে।
.
.
(চলবে)
.
.
বালির সংসার(১)
.
.
Sabiya moon

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here