#বাসন্তী_প্রেম 🌼🌼
#লেখনীতে: ইনায়াত আহসান ( ছদ্মনাম)
#দ্বিতীয়_পর্ব
-” আপনার মতো মেয়েরা এসব বিষয় দেখেও না দেখার ভান করেন কি করে?”
ফাইয়াজের বলা শেষ কথাটি সিরাতের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। গুটি গুটি পায়ে নিশাতের হাত ধরে রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতেই খানিকটা কর্ণারে চন্দ্রিকার উপর চোখ পড়ে নিশাতের।
এদিকে বেশ খানিকটা দেরি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় চন্দ্রিকা। শেষে বসা ছেড়ে উঠে দাড়াতেই সামনে চোখ পড়ে সিরাত আর নিশাতের উপর।
– ” থ্যাঙ্ক গড! তোমরা এসেছো! আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু তোমাদের দুজনের এত দেরি হলো কেন? কোনো সমস্যা হয়েছিল?”
চন্দ্রিকার প্রশ্ন শুনে হালকা আমতা আমতা করে উঠে নিশাত। একটু আগের ঘটনা বলতে বেশ খানিকটা দ্বিধাবোধ কাজ করছে তার মধ্যে।
– ” কি হলো, নিশাত? কিছু বলছো না কেন? কিছু হয়েছিল?”
নিশাত ছোট একটা দম নিয়ে কয়েক মুহূর্ত আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা বলতে শুরু করে চন্দ্রিকার কাছে। সবটা কর্ণপাত হতেই চন্দ্রিকা বিস্মিত হলো।
– ” ও মাই গড!! এত কিছু হয়ে গেল কি করে! আসলেই তো ঐ ছেলেটা যদি আজ ঠিক টাইমে না পৌঁছাতো! তাহলে অনেক বড় এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারতো! যাক এটাই শোকর আদায় করো ঐ ছেলেটার উসিলায় তোমরা দুইজন বেঁচে গিয়েছো। আর ইউ ফাইন পূর্বী?”
সিরাত মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝাতেই চন্দ্রিকা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। ততক্ষণে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য একটা ট্রেন এসে উপস্থিত হয়েছে রেললাইনের ফিশপ্লেটে। ট্রেনের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে হুইসেল বাজাতেই চন্দ্রিকা তাড়া দিল নিশাত আর সিরাতকে।
লাগেজ হাতে নিশাত আর চন্দ্রিকার সহায়তায় ধীর পায়ে চ নং বগিতে প্রবেশ করলো তিনজনেই।
‘জ’ নং বগির ১২৪৫ নং সিটটা খুঁজে পেতেই লাগেজ উপরে উঠিয়ে রেখে সিটে ধপাস করে বসে পড়ল ফাইয়াজ। তার ঠিক সামনে ধ্রুবও ক্লান্ত শরীর নিয়ে বসে পড়ল। মধ্যরাতের দ্বিপ্রহরে আকাশে তারা এবং চাঁদের টিমটিমে আলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। জানালার বাইরে থেকে আলোর মৃদু অংশ এসে ফাইয়াজের আর ধ্রুবর সিটে এসে পড়ছে।
ফাইয়াজ। পুরো নাম ফাইয়াজ আহমেদ মুগ্ধ। শ্যামল বর্ণের একজন সুদর্শন যুবক। লম্বায় প্রায় ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি অধিকারী সে। মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করে বর্তমানে কিছুদিনের অবসর নিয়ে লাইফটাকে ইনজয় করার জন্য চট্টগ্রামে পাড়ি জমানো তার। অবশ্য শুধুমাত্র লাইফ ইনজয় করার জন্য নয় বরং একজন রকস্টার হিসেবে দু একটা কনসার্ট শো জয়েন করার জন্য।
সবেমাত্র চোখ টা লেগে এসেছিল, তখনি চোখের ঘুম ভেঙে গেল সামনের সিটে বসে থাকা ধ্রুবের কথায়।
– ” এই ফাইয়াজ, কিরে শালা এভাবে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস কেন? আঙ্কেল কি বলেছিল মনে নেই? ট্রেনে ওঠার কিছুক্ষণ পর আঙ্কেলকে ফোন করে জানিয়ে দিতে!”
ধ্রুবের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো ফাইয়াজ। একরাশ বিরক্তি নিয়ে প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করতেই খেয়াল করলো রাত প্রায় ২:০০ টা বাজে।
– ” এই দেখ এখন ক’টা বাজে! তোর মতো মাথা খারাপ হয়ে যায় নি আমার এত রাতে বাবাকে কল করে ডিস্টার্ব করবো!
একেবারে সকালে না হয় ফোন করব।”
এটুকু বলে ফোন আবার পুনরায় পকেটে গুজতে নিলে ধ্রুব বাধা দেয়।
– ” এক কাজ কর। ফোন যখন বেরই করেছিস আঙ্কেল কে না হয় একটা টেক্সট করে জানিয়ে দে!”
সরু চোখে ধ্রুবের দিকে তাকাতেই বেচারা ভয়ে চুপসে যায়। ফাইয়াজ ও কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসে ফোন থেকে বাবা ওরফে মিস্টার জাফর আহমেদের নম্বর ঘেঁটে সেখানে ছোট্ট একটা টেক্সট লিখে পাঠিয়ে দেয়।
– ” এবার খুশি হয়েছিস? ”
ধ্রুব মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝাতেই পুনরায় ফাইয়াজ আবারো বলে উঠলো,
– ” তাহলে এবার আমাকে একটু ঘুমোতে দে আর তুই ও একটু ঘুমিয়ে নে!”
ফাইয়াজের কথামতো ধ্রুবও ঝটপট চোখ বুজে নিল।
ধ্রুব। পুরো নাম হলো নির্ঝর আবরার ধ্রুব। আর ফাইয়াজের একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড। দুজনেই একই ডিপার্টমেন্ট থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। উজ্জ্বল রঙের মধ্যে হালকা চাপদাড়ি রয়েছে ধ্রুবের।
কর্ণারের সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে চুপচাপ একমনে বসে আছে সিরাত। পাশেই চন্দ্রিকা আর নিশাত টুকটাক কথা বলে যাচ্ছে। কথা বলার এক পর্যায়ে সিরাতের দিকে চোখ পড়ে চন্দ্রিকার। এটুকু বয়সে এত ঝড় ঝাপটার মধ্য দিয়ে যে কিভাবে মেয়েটা দিন পার করছে তা ভেবেই এক গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে।
– ” কি ব্যাপার পূরবী? এভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেন? কোনো কিছুর জন্য টেনশন হচ্ছে?”
চন্দ্রিকার কথায় হালকা নড়েচড়ে উঠলো সিরাত।
– ” আমি তো একটা কথাই ভাবছি যে সকাল হলে ও বাড়িতে কি হুলস্থুল লাগবে। আমাকে আর নিশাতকে না পেয়ে চাচী আর রিয়ান ভাইয়া তো আগের থেকে আরো বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠবে। আর যদি আমাদের দুজনকে খুঁজতে খুঁজতে চট্টগ্রাম চলে আসে তখন?”
আতংকিত হয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে চন্দ্রিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল সিরাত।
– ” চিন্তা করিস না, তোর আর নিশাতের নাগাল ও পাবে না তোর চাচী আর রিয়ান। আমি ঠিক সেভাবেই সবটা ব্যবস্থা করে রেখেছি! এখান থেকে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়া চট্টগ্রামে পৌঁছাতে পারলেই আর কোনো সমস্যা হবে না!”
চন্দ্রিকার কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো সিরাত।
– ” আচ্ছা এমনটা তো না হলেও পারতো। রঙিন জীবনটা যে একটা দুর্ঘটনায় নিমিষেই এমন ফ্যাকাশে হয়ে যাবে তা তো কখনো কল্পনাও করিনি। কিন্তু এই ফ্যাকাশে, রংহীন জীবন থেকে কি কোনোদিনই আমি পরিত্রাণ পাবো না? আর কত? আর কতদিন এভাবে আমাকে তিলে তিলে ভুগতে হবে আল্লাহ্?”
মনে মনে বিড়বিড় করে উঠলো সিরাত। ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস তার মনকে শান্ত রাখতে পারছে না কোনোক্রমেই। ভাবতে ভাবতেই সিটে মাথা এলিয়ে দিতেই কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুম এসে জড়ো হলো সিরাতের চোখে।
——————-
– ” রিয়ান, বাবা রিয়ান। কোথায় তুই? সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে!”
সেলেনা চৌধুরীর চেঁচামেচি কর্ণপাত হতেই পিটপিট করে তাকালো রিয়ান। সোফায় শোয়া থেকে উঠে বসতেই মাথা একপ্রকার ঝিমঝিম শুরু করে দিয়েছে। কাল রাতে একটু বেশিই নেশা করা হয়ে গিয়েছে। যার ফলস্বরূপ এখন চোখ খোলা ভীষণ কষ্টকর মনে হচ্ছে।
সেলেনা চৌধুরী সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত পায়ে নিচে নামতেই রিয়ানকে দেখতে পায় সোফার উপর।
– ” রিয়ান! ঠিক আছিস তুই? সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। ঐ সিরাত আর নিশাতের মধ্যে একজনও বাড়িতে নেই। দুজনেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে!”
মায়ের কথা শুনে মাথা ঝিমঝিম করাটা চট করে বন্ধ হয়ে গেল রিয়ানের। সিরাতের বাড়ি ছেড়ে পালানোর কথা ঠিক একটা হজম করে উঠতে পারছে না সে।
– ” মানেহ্! কি করে সম্ভব? সিরাত বাড়ি ছেড়ে পালাবে কি করে? আফটার অল সিরাত একটা অন্ধ মেয়ে!”
– ” আমি সত্যি বলছি রিয়ান। সিরাত আর নিশাতের মধ্যে কেউই এ বাড়িতে নেই। আর ঘরেও দুজনের লাগেজ, জামাকাপড় সব উধাও! তার মানে বুঝতে পারছিস?
দুজনেই কাল রাতে আমাদের দুজনকে ফাঁকি দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এখন কি হবে? সিরাত না থাকলে তো এ বাড়ি আমাদের দখলে আসবে না! শুধুমাত্র এসবের জন্যই তো এত আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ঐ সিরাত আর নিশাত যে আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে পালিয়ে যাবে তা কে জানতো?”
বলেই ন্যাকা কান্না জুড়ে দিলেন সেলেনা চৌধুরী।
– ” আহ্ মা, থামবে তুমি? এত টেনশন করছো কেন? আর সিরাত পালিয়ে বা আর কত দূরেই যাবে! সিরাতকে তো আমার পাতানো জালে ধরা দিতেই হবে! সেটা যখনি হোক না কেন। সিরাতকে আবার এ বাড়িতেই ফিরে আসতে হবে।
আর সেটাও খুব শীঘ্রই!”
বলেই কিছুটা বাঁকা হাসলো রিয়ান।
আহমেদ বাড়িতে বিশালাকার হলরুমে সোফার উপর বসে একমনে নিউজপেপারের দিকে তাকিয়ে আছেন মিস্টার জাফর আহমেদ। মিনিট পাঁচেক পর চায়ের কাপ হাতে একটা অল্প বয়সী মেয়ে এসে দাঁড়ালো তার সামনে।
– ” পাপা, এই নাও তোমার চা! খেয়ে দেখো তো কেমন হয়েছে।”
কারো কন্ঠস্বর পেয়ে মাথা তুলে তাকালেন জাফর সাহেব।
– ” আরে ফারিহা মামনি তুমি? এত সকালে কি করছো? আর চা তুমি নিয়ে এলে কেন?”
– ” আহা বাবা! সবসময় বাড়ির কাজ যে সার্ভেন্টরাই করবে এমন তো কোনো কথা নেই তাই না? টুকটাক কাজ নিজেরা করে নিলেও তো হয়। তাহলে ঝটপট খেয়ে বলোতো কেমন হয়েছে চা!”
মেয়ের কথা শুনে আলতো হাসলেন জাফর সাহেব।
– ” বাহ্ খুব ভালো হয়েছে মামনি! তোমার তো আবার কলেজ আছে। তাহলে তুমি গিয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে রেডি হয়ে নাও।”
– ” আচ্ছা ঠিক আছে, পাপা!”
বলেই জাফর সাহেবের গলা জড়িয়ে ধরলো ফারিহা।
ফারিহা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই হলরুমে উপস্থিত হলেন মিসেস সাবিনা আহমেদ ওরফে জাফর আহমেদের স্ত্রী।
– ” কি হলো, মুগ্ধ কি ফোন করেছিল? কতদূর পৌঁছেছে তা সম্পর্কে কি কিছু জানিয়েছে?”
বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলেন মিসেস সাবিনা আহমেদ।
– ” এত হাইপার হচ্ছো কেন সাবিনা? তোমার ছেলে কোনো ছোট বাচ্চা না। মুগ্ধ যথেষ্ট ম্যাচিউর! মুগ্ধকে নিয়ে এভাবে হাইপার হচ্ছো যার কারণে একটু পর ই আবার প্রেশার হাই হয়ে যাবে তোমার!
হ্যাঁ মুগ্ধ কাল রাতে আমায় টেক্সট করে জানিয়ে দিয়েছে যে সে ট্রেনে উঠেছে! তবে এখনো পৌঁছেছে কি না সে সম্পর্কে কোনো ইনফরমেশন দেয় নি।”
জাফর সাহেবের কথার মাঝেই ফোনের ক্রিং ক্রিং শব্দ কানে এলো।
পাশে তাকাতেই খেয়াল করলেন মুগ্ধ নামটা স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে।
চারপাশে মানুষের গমগমে হৈচৈ করার আওয়াজ কর্ণপাত হতেই চোখ দুটো পিটপিট করে তাকালো সিরাত। ট্রেন ইতোমধ্যে থেমে গিয়েছে। মানুষ তাড়াহুড়ো করে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে বাহিরে বের হওয়া শুরু করে দিয়েছে। বাহিরেও মানুষের যথেষ্ট চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে।
– ” উঠে পড়েছিস পূরবী? যাক ভালোই হয়েছে। আমরা চট্টগ্রাম পৌঁছে গিয়েছি। চল চল বাহিরে যেতে হবে।”
চন্দ্রিকার কথামতো নিশাত, সিরাত তিনজনেই নিজেদের লাগেজ নিয়ে ধীরে ধীরে ট্রেনের সিট থেকে উঠে বের হতে শুরু করলো।
– ” হ্যালো বাবা?”
– “ হ্যাঁ মুগ্ধ, বলো। তুমি আর ধ্রুব ঠিকমত পৌঁছেছো? কোনো প্রবলেম হয়নি তো?
– ” না বাবা! কোনো সমস্যা হয় নি!”
জাফর সাহেবের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে ট্রেন থেকে বেরিয়ে পড়লো ফাইয়াজ।
বাইরে হকার, বিভিন্ন মানুষের চেঁচামেচি কানে পৌঁছাতেই অপর পাশের কথা বেশ একটা ভালো ভাবে শুনতে পেল না ফাইয়াজ। তাই নীরব একটা জায়গা খোঁজার উদ্দেশ্য সামনে হাঁটা ধরলো সে। পেছন পেছন ধ্রুবও এগিয়ে আসে।
– ” আচ্ছা সামনেই একটা ক্যান্টিন আছে। ওখান থেকে না হয় হালকা কিছু খেয়ে নেই। আর তাছাড়াও সারা রাস্তা জার্নি করে কম বেশি সবারই ক্ষুধা লাগার কথা। চলো ওদিকটায় যাওয়া যাক।”
চন্দ্রিকার কথা শুনে নিশাত আর সিরাত পূর্বের মতোই আবারো হাঁটা ধরলো।
বেশ খানিকটা ভীড় কমার পর যেই সামনে পা বাড়াতে যাবে ওমনি থমকে দাঁড়ালো আপনাআপনি সিরাত। লং জামার বর্ধিত অংশ কোথাও আটকে যাওয়ার মতো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তেই গা শিউরে ওঠে তার।
পরপর কয়েকবার হাত দিয়ে তার ছোটানোর চেষ্টা করলেও বেশি একটা লাভ হলো না। এবার সত্যিই অস্বস্তি আর কান্না পাচ্ছে সিরাতের।
– ” ওকে বাবা, এখানে নেটওয়ার্ক আর অতিরিক্ত শব্দের জন্য কথা শোনা যাচ্ছে না। আমি এখন ফোন রাখছি!”
এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ফোনে জাফর সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো ফাইয়াজ। কল ডিসকানেক্ট হতেই একটা লম্বা শ্বাস নিল সে।
এদিকে কাঁপা কাঁপা হাতে জামার বর্ধিত অংশ হাতে নিয়ে চোখ মুখ খিচে একটু জোরে টান দিতেই পরবর্তীতে যা ঘটলো তা কখনো কল্পনাও করেনি সে।
এদিকে হুট করে গায়ের উপর কেউ পড়ায় ভড়কে উঠলো ফাইয়াজ। কারো হাত তার কাঁধ ছুঁয়ে আছে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে পেছনে তাকাতেই আরেক দফা অবাক হলো সে।
– ” আপনি!! এক মিনিট, আপনি না কাল রাতের ঐ মেয়েটা?”
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ফাইয়াজ।
এদিকে কারো গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনতেই কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠল সিরাত। এভাবে তাকে এমন অবস্থায় পড়তে হবে তা কে জানতো! তার ধ্যান ভাঙে আবারো সেই কন্ঠে,
– ” আচ্ছা আপনার সমস্যা কি বলুন তো? আপনি দেখে শুনেও এভাবে আরেকটা মানুষের গায়ের উপর পড়েন কি করে?”
দ্বিতীয়বার একই কন্ঠ শুনে টনক নড়ে সিরাতের। এটা তো চেনা চেনা কন্ঠ লাগছে। হ্যাঁ এটা তো কাল রাতের ঐ ছেলেটার কন্ঠ।
– ” কি ব্যাপার এখনো এভাবে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি। আপনি দেখেশুনে চলতে পারেন না নাকি!”
ঘাবড়ে যায় সিরাত। কি বলবে এখন সে?
– ” হ্যাঁ, আমি দেখেশুনে চলতে পারি না! আর সেই ক্ষমতা আমার এখন নেই! কেননা আমার দৃষ্টিশক্তি আমার কাছে নেই।”……….
#চলবে 🍂
( কেমন হয়েছে জানাবেন। ভালোবাসা অবিরাম 🖤🖤)