#ভালোবাসার_অনূভুতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্বঃ39 (ধামাকা পর্ব)
“আমি এখন যাচ্ছি।তোরা তোদের কাজ শেষ করে এই মেয়েটার হাত-পা বেধে এখানেই ফেলে রাখবি।”
কথাটা বলে সিয়াম রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।সিয়াম বেড়িয়ে যেতেই ওদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে গিয়ে রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলো।
মেঘ ইনজেকশন দেওয়ার জায়গাটা হাত দিয়ে চেপে ধরে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ ও অনুভব করলো ওর মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ধরে গেছে।চোখের সামনে সব কিছু দুটো দুটো দেখছে।শরীর আস্তে আস্তে কেমন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে।ও ঝপসা চোখে সামনে তাকিয়ে দেখতে পেলো,,ছেলে গুলো ওর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ওদের এভাবে তাকাতে দেখে ঘৃনায় মেঘের গা গুলিয়ে উঠছে।
ওদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে ফোনের ক্যামেরা অন করে মেঘের দিকে ধরে ভিডিও করতে লাগলো।আরেকটা ছেলে মেঘের দিকে তাকিয়ে বাজে একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে একপা একপা করে এগিয়ে যেতে লাগলো।ছেলেটা যতো মেঘের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,মেঘ ততো পিছনের দিকে সরে যাচ্ছে।মেঘকে এভাবে পিছাতে দেখে দাড়িয়ে থাকা ছেলে গুলো অট্টোহাসিতে ফেটে পড়লো।
মেঘ পিছাতে পিছাতে এক সময় ওর পিঠ দেয়ালের সাথে ঠেকে গেলো।ছেলেটাও সুযোগ পেয়ে মেঘের উপরে ঝাপিয়ে পড়লো।মেঘ ছটফট করছে ছেলেটার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য,কিন্তু ওর শরীরে একটুও জোড় নেই।তার উপর শরীর কেমন কাপছে।মেঘ ছেলেটাকে যতো দূরে সরাতে চাচ্ছে,ছেলেটা ততো ওকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরছে।
ছেলেটার সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি করতে করতে এক পর্যায়ে মেঘের হাত ছেলেটার কোমরে চলে যায়।মেঘ বুঝতে পারে ছেলেটার কোমরে প্যান্টের সাথে কিছু একটা গোজা আছে।ও ভালো করে সেটার উপর হাত রাখতেই বুঝে যায় ওটা একটা রিভলবার ।মেঘ চট করে টান দিয়ে রিভলবার টা বের করে এনে ছেলেটার পেটে চেপে ধরে।গানটা চেপে ধরতেই ছেলেটার হুস ফিরে আসে।ও ছিটকে মেঘের থেকে দূরে সরে যায়।মেঘ গানটা ছেলেটার দিকে তাক করে রেখেই আস্তে আস্তে উঠে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে।মেঘের হাতে রিভলবার দেখে সব ছেলে গুলোর মুখ ফ্যাক্যাশে হয়ে যায়।মেঘ দেয়াল ধরে ধরে বসা থেকে দাড়িয়ে ছেলে গুলোকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“খবরদার আমার দিকে কেউ এক পাও এগোলে তার গায়ে গুলি করতে দ্বীতিয় বার ভাববো না।আপনাদের জন্য ভালো এটাই হবে আমাকে এখান থেকে যেতে দিন।নাহলে সবাইকে মেরে দিবো।”
যেই ছেলেটা মেঘের সাথে জবরদস্তি করার চেষ্টা করেছিলো সেই ছেলেটা বললো
“দেখ ওটা কোনো খেলনা না।ওটা আমাকে দিয়ে দে যেকোনো সময় ওটা থেকে গুলি বেড়িয়ে যেতে পারে।”
মেঘ এলোমেলো পায়ে ছেলেটার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে দাতে দাত চেপে বললো
“এটা যে কোনো খেলনা না সেটা আমিও জানি।তাইতো বলছি আমাকে যেতে দে নাহলে সত্যি সত্যি এটা থেকে গুলি বের হবে।আর সেগুলো সব গিয়ে তোদের গায়ে লাগবে।”
ছেলে গুলো অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘের মতো শান্ত,ভদ্র,বোকা টাইপের একটা মেয়ে যে এইরকম ভাবে ওদের হুমকি দিবে সেটা ওরা ভাবতেও পারেনি।যেখানে ঠিকমতো সোজা হয়ে দাড়াতে অবদি পারছে না,সেখানে এতোগুলো ছেলেকে একটা একা মেয়ে হয়ে মারার হুমকি দিচ্ছে?একটা ছেলে বিদ্রুপের স্বরে বললো
“হুহ ঠিক মতো তো দাড়াতেই পারছিস না,, এখান থেকে পালাবি কি করে?”
মেঘ তাছিল্য হেসে বললো
“পালাতে না পারলে দরকার হলে নিজেকে শেষ করে দিবো। কিন্তু তবুও তোদের মতো জানোয়ারদের আমার শরীরটাকে ভোগ করতে দিবো না।”
বলেই মেঘ রিভলবার টা ওদের দিকে পয়েন্ট করেই একপা একপা পিছিয়ে যেতে লাগলো।যেতে যেতে রুমের দরজার কাছে এসে একহাত দিয়ে খুব সাবধানে দরজাটা খুলে বের হয়ে বাইর থেকে দরজা লক করে দিলো।
ছেলেগুলো ভিতর থেকে দরজা ধাক্কাচ্ছে আর মেঘকে উল্টাপাল্টা ভাষায় গালি দিচ্ছে।মেঘের আপাততো সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।ও কোনো রকম ঢুলতে ঢুলতে সামনে এগোতে লাগলো।সামনে এগিয়ে আসতেই দেখতে পেলো এটা একটা গোডাউন।আর ওটা এই গোডাউন টার মধ্যেই পরিত্যাক্ত একটা রুম ছিলো।মেঘ দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা একটু খানি খুলে বাইরে উকি মারতেই দেখলো সিয়াম আর ওর সব লোকজন বাইরেই দাড়িয়ে আছে।মেঘ দ্রুত দরজাটা আটকে দিয়ে দরজার সব গুলো ছিটকিনি লক করে দিলো।সামনের দরজা দিয়ে পালানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।এদিকে সেই ছেলে গুলোও রুমের মধ্যে বসে চেচামেচি করছে।যেকোনো সময় সিয়াম আর ওর লোকেরা ওদের আওয়াজ শুনতে পারবে।
মেঘ এদিক সেদিক তাকিয়ে পালানোর জন্য রাস্তা খুজতে লাগলো।হঠাৎ ওর চোখ গেলো গোডাউন টার ওপর প্রান্তের একটা জানালার দিকে। মেঘ দ্রুত পায়ে জানালার কাছে এসে দাড়ালো।দেখলো জানালা টা একদম ছোট তাই হয়তো কোনো গ্রিলও লাগানো নেই।ও আর বেশি কিছু না ভেবে ভাঙা একটা চেয়ার নিয়ে এসে তার উপর ভর দিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে বের হয়ে গেলো।জানালাটা ছোট হলেও মেঘ শুকনো থাকায় ওর বের হতে কোনো সমস্যা হলো না।
।
এদিকে সিয়াম আর ওর দলের কিছু ছেলেদের এক সাথে ফোন বেজে ওঠায় সবাই অবাক হলো।ফোনের স্কিনে চোখ রাখতেই সবাই বুঝতে পারলো ভিতরের সেই ছেলে গুলো কল করেছে।ওরা ফোন রিসিভি করতেই সেই ছেলে গুলো ভিতরে যাহ যাহ হয়েছে সব গরগর করে ওদের বলে দিলো।সব শুনে সিয়াম রেগে ফোনটাকে ফ্লোরে একটা আছাড় মারলো।তারপর দ্রুত দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করলো।কিন্তু দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় অনেকক্ষন ধাক্কা ধাক্কির পরও খুলতে পারলো না।অবশেষে সবাই মিলে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলো।ভিতরে ঢুকেই জানালার সামনে চেয়ার দেখতে পেয়ে বুঝে গেলো মেঘ ওখান থেকেই পালিয়ে গেছে।ওরা গিয়ে রুমে বন্ধি থাকা ছেলে গুলোকে ছাড়িয়ে এনে, সবাই মিলে গাড়ি নিয়ে মেঘকে খুজতে বেড়িয়ে পড়লো।
।
এদিকে মেঘ দৌড়াতে দৌড়াতে কোথায় চলে এসেছে নিজেও জানে না।একে এতো রাত, চারপাশে একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার।তার উপরে ড্রাগস টা শরীরে এমন ভাবে এফেক্টস করেছে ঠিক ভাবে তাকাতে অবদি পারছে না।এক প্রকার চোখ বন্ধ করেই দৌরাচ্ছে।হাত-পা ধীরে ধীরে অবস হয়ে আসছে হয়তো আর বেশিক্ষন এই ভাবে দৌড়াতে পারবে না।তবে ও মনে মনে সিন্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে যদি পালাতে না পারে তাহলে হাতে থাকা পিস্তল টা দিয়ে নিজেকে শেষ করে দিবে।
মেঘ দৌড়াচ্ছিল তখনই হঠাৎ কোথা থেকে একটা গাড়ি এসে মেঘের সামনে থামলো।গাড়িতে থাকা হেডলাইটের তীব্র রশ্নি মেঘের চোখে লাগতেই ও চোখের উপরে হাত চেপে ধরলো।তারপর ধীরে ধীরে চোখের উপর থেকে হাত সরাতেই দেখতে পেলো ওর সামনে একটা সাদা রঙের গাড়ি দাড়ানো।আর গাড়ির মধ্যে কিছু লোক বসা যাদের সবার মুখে কালো মাক্স লাগানো।মেঘ ভাবলো এগুলো হয়তো সিয়ামের লোক তাই ও অন্য দিকে দৌড় দিলো কিন্তু সেদিক থেকেও একটা গাড়ি এসে ওর সামনে ব্রেক করলো ও গাড়িটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলো এই লোক গুলোও একদম সেইম ধরনের মাক্স পড়ে আছে।ও পিছনে ঘুড়ে আবারও দৌড় দিতে নিলেই দুদিক থেকে দুটো গাড়ি এসে ওকে ঘিড়ে ধরলো।
মেঘ চারপাশে তাকিয়ে দেখলো ওর পালানোর কোনো পথ নেই,,গাড়ি চারটা ওকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে।মেঘের চোখ থেকে আপনা আপনি পানি গড়িয়ে পড়তে লাগলো,,এতো চেষ্টা করেও শেষ পযর্ন্ত এদের থেকে পালাতে পারলো না।এবার হয়তো ওরা ওকে আবার ধরে নিয়ে যাবে।তারপর শেয়াল কুকুরের মতো ওর শরীর টাকে ছিরে ছিরে খাবে।মেঘের এসব ভাবনার মধ্যেই ওর সামনে দাড়িয়ে থাকা সাদা রঙের একটা গাড়ির দরজা খুলে দুজন মাক্স পড়া ছেলে বের হয়ে অন্য একটা গাড়ির কাছে গিয়ে সেটার পিছনের দরজাটা খুলে দিয়ে সরে দাড়ালো।দরজাটা খুলতেই সেখান থেকে কালো হুডি পড়া একটা লোক বের হয়ে আসলো।লোকটা তার পুরো শরীর কালোতে আবৃত করে রেখেছে।
মেঘ ঝপসা চোখে দেখতে পেলো লোকটা ধীর পায়ে ওর দিকেই এগিয়ে আসছে।মেঘ শুকনো একটা ঢোক গিলে হাতে থাকা রিভলবার টা লোকটার দিকে পয়েন্ট করলো।কিন্তু তাতে লোকটার কোনো ভাবান্তর হলো না।লোকটা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আস্তে আস্তে মেঘের কাছে চলে আসলো।লোকটাকে এতোটা কাছে আসতে দেখে মেঘ কোনো উপায় না পেয়ে নিজেই পিছাতে লাগলো।ও চাইলেও কিছু করতে পারছে না, কারন ভয়ে ওর হাত-পা কাপছে।মেঘ পিছিয়ে যেতে যেতে হঠাত করেই ওর গা গুলিয়ে উঠলো,হাত-পা একদম অবশ হয়ে গেলো,হাত থেকে রিভলবার টা মাটিতে পড়ে গেলো,চোখের সামনে সব কিছু অন্ধকার হয়ে গেলো।মেঘ আর স্থির থাকতে পারলো না,মাথা ঘুড়িয়ে পড়ে যেতে নিলেই এক জোড়া বলিষ্ঠ হাত এসে ওকে ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে নিজের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে নিলো।
_________________________
জ্ঞান ফিরতেই পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো মেঘ।তাকায়েই ঝাপসা চোখে দেখতে পেলো কেউ ওর দুইপাশে দুহাত রেখে ভর দিয়ে ওর দিকে ঝুকে আছে।তার চুল থেকে টুপটুপ করে পানির ফোটা এসে ওর চোখে মুখে পড়ছে।ও কয়েকবার পিটপিট করে চোখের পলক ফেলে সামনে তাকাতেই ওর চোখ আটকে গেলো সামনে থাকা সুদর্শন ব্যাক্তিটির উপর।মেঘ হতবম্ভ হয়ে ব্যাক্তিটির দিকে তাকিয়ে আছে।ও ব্যাক্তিটিকে দেখে এতোটাই অবাক হয়েছে যে চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে।
মেঘকে এভাবে শকড হয়ে তাকাতে থাকতে দেখে ব্যাক্তিটি একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেঘের দিকে একটু ঝুকে ওর নাকে নিজের নাক ঘসে বললো
“হোয়াট হ্যাপেন সুইটহার্ট,,এতো শকড হওয়ার কি আছে?”
লোকটার কথা শুনে মেঘের হুস ফিরে আসলো।ও আর এক মুহুর্তও দেড়ি না করে শক্ত করে লোকটাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেদে উঠলো।লোকটা যাষ্ট দুহাতে হালকা ভর দিয়ে মেঘের দিকে ঝুকে ছিলো, তাই মেঘ এইরকম হঠাৎ ঝাপটে ধরায় লোকটা টাল সামলাতে না পেরে মেঘের উপরে পরে গেলো।পড়েই সাথে সাথে আবার উঠতে চেষ্টা করলো কিন্তু মেঘ এমন ভাবে ঝপটে ধরে আছে যে উঠতেই পারছে না।লোকটা মৃদ্যু স্বরে মেঘকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“কি হলো মেঘ পরী কাদছো কেনো?”
লোকটার কথা মেঘের কান অবদি গেলেও ও কিছুই বললো না।বরং ও লোকটাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে লাগলো।লোকটা নিজের একহাত মেঘের মাথায় রেখে আদুরে স্বরে বললো
“মেঘ পরী এইভাবে কাদছো কেনো?এখানে কান্নার কি হলো?তুমি জানোনা আমি তোমার কান্না একদম সহ্য করতে পারিনা।আমার খুব কষ্ট হয়।প্লিজ কান্না থামাও নাহলে কিন্তু আমিও এক্ষুনি কেদে দিবো।”
সেই ব্যাক্তিটি আর কেউ নয় আহান।
মেঘ আহানকে ছেড়ে দিয়ে ওর পিঠে এলোপাথাড়ি কিল ঘুসি দিতে দিতে বললো
“মিথ্যা কথা!সব মিথ্যা কথা,,আমার জন্য আপনার একটুও কষ্ট হয় না।কষ্ট হলে আমাকে ছেড়ে এতো দূরে থাকতে পারতেন না।আপনি খুব,খুব,খুব খারাপ।একদম বাজে একটা লোক।”
বলেই মেঘ ইচ্ছে মতো আহানকে মারতে লাগলো।আহান কোনো রকম মেঘকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে ছিটকে বেডের অন্য পাশে গিয়ে উঠে বসে পিঠ ডলতে লাগলো।তারপর মেঘের দিকে তাকিয়ে চেহারাটা একদম বাচ্চাদের মতো করে কান্নার ভান ধরে বললো
“এ্যা এ্যা এ্যা আমি এখানে থাকবো না।আবার সবাইকে ছেড়ে চলে যাবো।যখন থেকে এসেছি সবাই শুধু মেরেই যাচ্ছে।এ্যা এ্যা এ্যা আমাকে কেউ ভালোবাসে না।”
আহানের এমন অভিনয় দেখে মেঘ কান্নার মধ্যেও ফিক করে হেসে দিলো।মেঘকে হাসতে দেখে আহান আবারও একই ভঙ্গিতে বললো
“ওই দেখো,আমাকে কাদতে দেখে এই মেয়ে আবার হাসছে।এ্যা এ্যা এ্যা আমি আর এখানে থাকবো না।আমাকে কেউ একটা উড়ন্ত ঘোড়া এনে দাও আমি উড়ে উড়ে এখান থেকে চলে যাই।”
আহানের এমন অভিনয় আর বাচ্চা বাচ্চা কথা শুনে এবার মেঘ খিলখিল করে হেসে দিলো।মেঘকে হাসতে দেখে আহানও ঠোটের কোনে একটা মুচকি হাসি ঝুলিয়ে ওর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।মেঘের কান্নারত অশ্রুসিক্ত চোখ আর ঠোটের খিলখিল করা হাসিতে ওকে যেনো এখন কোনো এক মায়া রাজ্যের “মায়া কুমারীদের” মতো লাগছে।এই মুহুর্তে এই মায়া কুমারীর দিকে তাকালে যে কেউ ঘায়েল হতে বাধ্য হবে।আহান নিস্পলক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।কতোদিন পর আজকে মেঘের এমন হাসি উজ্জল মুখটা দেখতে পেলো।এতোদিন মেঘের থেকে দূরে থেকে ওর দম আটকে আসছিলো।কতোবার ইচ্ছে করেছে এক ছুটে মেঘের কাছে চলে আসতে,কিন্তু সব ইচ্ছে যে পূরন করতে নেই।মাঝে মাঝে কিছু কিছু ইচ্ছে অপূর্ন রাখতে হয়,প্রিয় জনদের সুরক্ষিত রাখার জন্য।এসব ভেবেই আহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো তারপর মেঘের দিকে তাকিয়ে এক মলিন হাসি দিয়ে বললো
“মাএ কয়েকটা দিনে নিজের একি অবস্থা করেছো মেঘ পড়ি?তুমিতো সব সময় চাইতে আমি তোমার থেকে দূরে থাকি।তাহলে যখন আমি সত্যি সত্যি তোমার থেকে দূরে চলে গিয়েছিলাম,,তখন তো তোমার সব চেয়ে বেশি খুশী হওয়ার কথা ছিলো।কারন তোমার লাইফ থেকে আহান নামের আপদ টা সারা জিবনের মতো চলে গিয়ে ছিলো।তাহলে তুমি এমন পাগলামি কেনো করেছো ?কেনো আমাকে দেখার জন্য এই ভাবে কান্নাকাটি করেছো?”
আহানের কথায় নিমিশেই মেঘের হাসিটা মিলিয়ে গিয়ে চেহারা আবারও কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে গেলো।চোখে মুখে অদ্ভুত এক বিষাদের ছায়া ফুটে উঠলো।কিছু ক্ষনের জন্যে মেঘ অতীতের সব কথা ভুলে গিয়ে ছিলো।কিন্তু আহানের প্রশ্নে আবারও এই কয়েকদিনে যা যা ঘটেছে সব ওর মনে পড়তে লাগলো।মেঘ আহানের দিক থেকে নিজের চোখ সরিয়ে মাথাটা নিচু করে নিলো।তারপর ধীর কন্ঠে বললো
“জানিনা কেনো পাগলামি করেছি!আর কেনো কেদেছি সেটাও জানি না।আর জানলেও আপনাকে বলতে চাই না।আমার নিজের মনের অনুভূতি গুলো আমি সিকরেট রাখতে চাই।কারো সাথে সেয়ার করতে চাই না।কিন্তু ওই লোক গুলো কেনো বলে ছিলো আপনি আর বেচে নেই?আর আমাকে যে ভিডিওটা দেখিয়ে ছিলো সেখানেই বা সবাই কার লাশ দাফন করেছিলো?সবাই কার জন্যই বা এভাবে কাদছিলো?আর আপনি এতোদিন কোথায় ছিলেন?”
মেঘের কথা শেষ হতেই আহান বসা থেকে দাড়িয়ে শক্ত কন্ঠে মেঘকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“যখন জানোই না যে তুমি আমার জন্য কেনো কেদে ছিলো!তখন তোমার এটা জানারও অধিকার নেই আমি এতোদিন কোথায় ছিলাম!যেদিন তোমার সিকরেট অনুভূতি গুলো আমাকে বলতে পারবে সেদিন নাহয় আমিও তোমার সব প্রশ্নের অ্যান্সার গুলো দিয়ে দিবো।”
বলেই আহান হনহন করে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে লাগলো।ও হেটে দরজা পযর্ন্ত আসতেই মেঘ দৌড়ে গিয়ে ওকে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।তারপর কাদো কাদো গলায় বললো
“আপনি আমাকে ছেড়ে আবার কোথায় যাচ্ছেন?”
আহান ঝাঝালো কন্ঠে বললো
“যেখানেই যাই তাতে তোমার কি?ছাড়ো আমাকে যেতে দাও।তুমি তোমার সিকরেট নিয়েই বসে থাকো।একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবে না।আর কাছে আসবেই বা কিভাবে আমি এক্ষুনি তোমার থেকে দূরে চলে যাবো।আর এতোটাই দূরে চলে যাবো যে তুমি চাইলেও কোনো দিন আমার ধারে কাছে আসতে পারবে না।”
আহানের কথা শুনে মেঘ আরো শক্ত করে আহানকে জড়িয়ে ধরলো।তারপর বললো
“নাহ প্লিজ আপনি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না।আমি আপনাকে কোথাও যেতে দিবো না।”
আহান তাছিল্য হেসে বললো
“যেতে দিবে না মানে?কে আটকাবে আমাকে তুমি?পারলে আটকে দেখাও!”
বলেই আহান মেঘের হাত দুটো এক ঝটকায় ছাড়িয়ে সামনের দিকে দু-কদম এগিয়ে গেলো।আহানকে যেতে দেখে মেঘ গিয়ে সোজা আহানের পা ধরে বসে ফ্লোরে বসে হাউমাউ করে কেদে দিলো।
হঠাৎ মেঘের এমন কান্ডে আহান হকচকিয়ে উঠলো।ও ভাবতেও পারেনি মেঘ এমন একটা কান্ড করে বসবে।
মেঘ আহানের পা শক্ত করে ঝাপটে ধরে কাদতে কাদতে বললো
“আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না প্লিজ।আমি আপনাকে ছাড়া বাচতে পারবো না।আমি আপনাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি।এই কয়েকটা দিনে প্রত্যেকটা সেকেন্ড, প্রত্যেকটা মিনিট আমি উপলব্দি করতে পেরেছি আপনাকে ছাড়া আমি কতোটা অসম্পূর্ণ।এই কয়েকটা দিন আমি আপনাকে দেখার জন্য কতোটা ছটফট করেছি আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো না।যখন শুনে ছিলাম আপনি আর বেচে নেই তখন আমার পৃথিবী উল্টে গিয়েছিলো।তখন কতোটা কষ্ট হয়েছে যদি আপনাকে আমি দেখাতে পারতাম তাহলে হয়তো বুঝতে পারতেন আমি আপনাকে কতোটা ভালোবাসি।প্লিজ আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না।আর যদি যেতেই হয় তাহলে আমাকে নিজের হাতে খুন করে তারপর যাবেন।কারন আমার পক্ষ্যে আপনাকে ছাড়া আর একটা সেকেন্ডও বাচা সম্ভব না।”
মেঘের কথা শুনে আহান হতবম্ভ হয়ে গেলো।ও কয়েক সেকেন্ডের জন্য ষ্টাচু হয়ে গেলো।আহান কখনো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি মেঘ ওকে এতোটা ভালোবেসে ফেলবে।ও মেঘকে হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে শক্ত করে মেঘকে জড়িয়ে ধরলো।খুশীতে আহানের চোখে পানি চিকচিক করছে।ও এক হাত মেঘের মাথায় রেখে বললো
“এই পাগলি এই রকম কেউ করে?আমি তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো?ওগুলো তো যাষ্ট আমি এমনিতেই তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য বলে ছিলাম।তুমি জানো তোমার মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য আমি কতোটা অপেক্ষা করেছি।আর ফাইনাললি আজকে আমার এতো অপেক্ষার অবসান ঘটেছে।এতো অপেক্ষার পর আমি আমার কাঙ্খিত উওর টা পেয়ে গেছি।”
মেঘ আহানের বুকে মুখ গুজে ফোপাতে ফোপাতে বললো
“প্লিজ আপনি আমাকে ছেড়ে আর কখনো কোথাও যাবেন না।তাহলে আমি মরেই যাবো।”
আহান মেঘের ঘাড়ে মুখ গুজে দিয়ে লো ভয়েজে বললো
“আমি তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা কখনো ভাবতেও পারি না।যতোদিন আমার নিশ্বাস চলবে ততোদিন না আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো,আর না তোমাকে আমার থেকে দূরে কোথাও যেতে দিবো।তুমি শুধুমাএ আমার হয়ে থাকবে।তোমার সব কিছুর উপর শুধু আমার অধিকার থাকবে।আজকের পর থেকে যদি তুমি আমি ছাড়া অন্য ছেলেদের কথা কখনো কল্পনাতেও আনো তাহলে আমি তোমার কি অবস্থা করবো তুমি ভাবতেও পারবে না।অনেক জ্বালিয়েছো আমাকে এইবার তোমার পালা।এখন চুপচাপ ভালো মেয়ের মতো কান্না বন্ধ করো।নাহলে বকা তো দিবোই সাথে কানের নিচেও দুটো দিবো।”
আহানের কথা শুনে মেঘের কান্না অটোমেটিক বন্ধ হয়ে গেলো।ও অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গিয়ে চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে ফেললো।ও মনে মনে বললো
কাউকে ভালোবাসি বললে সেও উওরে আমিও তোমাকে ভালোবাসি বলে।বাট এই ছেলে তো ভালোবাসি বললোই না, উল্টে হুমকি দিচ্ছে!এতোক্ষন তো সব ঠিকই ছিলো।কি সুন্দর ভালো ছেলেদের মতো কথা বলছিলো তাহলে হঠাৎ এতোটা রুড হয়ে গেলো কেনো?আচ্ছা ভালোবাসার কথাটা এনার কাছে প্রকাশ করে কি আমি কোনো ভুল করে ফেললাম?এক্ষুনি এই কথা বলছে,,না জানি ভবিষ্যতে কি করবে!
#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্বঃ40 (রহস্যের ফাস)
চৌধুরী বাড়িতে আজকে একদম রমরমা পরিবেশ।সবাই বেশ খুশ মেজাজে আছে।এতোদিন পরে সবার মুখে আবার হাসি ফুটে উঠেছে।আবার সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে।কালকে রাতে আহির,মিহির,সাড়িকা,সাঈফা মোটামুটি আহত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে আসে।ওদের এমন অবস্থা দেখে বাড়ির লোকেরা কি হয়েছে জানতে চাইলে,,ওদের উপরে কিভাবে এ্যাট্যাক হয়েছে সেই কাহিনী ওরা একে একে সবাইকে খুলে বলে।তার কিছুক্ষন পর ওনারা সবাই জানতে পারেন মেঘকে কিডনাপ করা হয়েছে।দিশা আলিশার মাথা ফেটে গেছে ওরা হসপিটালে ভর্তি।অভি হিয়ানও খুব খারাপ ভাবে আহত হয়েছে।সব শুনে আহাদ খান আর আজম রহমানের অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।ওনারা ওনাদের যতো সোর্স ছিলো সব মেঘকে খুজতে কাজে লাগিয়ে দিয়ে ছিলো।আহির মিহিরও ওই রকম আহত অবস্থায় আবার ওতো রাতে বেড়িয়ে পড়েছিলো মেঘকে খুজতে।মেঘের কিডনাপের কথা শুনে মোনা খান,মিড়া রহমানের শরীর আরো খারাপ হতে থাকে।
রাত প্রায় তিনটার দিকে দরজার কলিং বেলের শব্দ শুনে সাঈফা গিয়ে দরজা খুলে দেয়।দরজা খুলতেই মুখে মাক্স পড়া আর হুডি পড়া একটা ছেলের কোলে মেঘকে দেখতে পেয়ে ও ভিষন ভয় পেয়ে যায়।পরে মাক্স সরাতেই আহানকে দেখে কাদতে কাদতে হাটু ভেঙে ফ্লোরে বসে পড়ে।ওর কান্নার শব্দে সবাই দৌড়ে দরজার কাছে আসে।এসেই আহানকে দেখে সবাই প্রথমে অবাক হলেও পরে সবাই ওকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।এটাও জিঙ্গেস করে এতোদিন কোথায় ছিলো।আহান কোনো রকম সবাইকে সত্যি মিথ্যা গুলিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে মেঘকে নিয়ে উপরে চলে যায়।
আহান যেটা বলেছে ওনারা সবাই সেটাই বিশ্বাস করে নিয়েছেন।উল্টে আর কোনো প্রশ্ন করেনি।কারন এক সাথে আহান আর মেঘকে একসাথে সেইফলি পেয়ে গেছেন এটাই ওনাদের কাছে অনেক।আর বেশি কিছু ওনারা জানতে চাননা।
আহান ফোন করে বাসায় ডাক্তারকে ডাকে মেঘের চেকাপ করার জন্য।ডাক্তার টুকিটাকি ট্রিটমেন্ট দিয়ে চলে যায়।সাথে একটা ঘুমের ঔষধও দিয়ে যায়।দিশা আর রিজাকেও সকালে হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়।ওদের ক্ষত টা বেশ গভীরই ছিলো তবে তেমন বেশি কিছু হয়নি ঔষধ খেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
____________________________________________
ছাদের এক পাশে পাতানো চেয়ারের উপর বসে আছে আহান।ওর সামনেই কাচুমাচু করে বসে আছে মিহির,আহির, হিয়ান,অভি।আর ওদের পাশের চেয়ার গুলোতে বসে আছে সাড়িকা,সাইফা, দিশা,আলিশা, মেঘ,রিজা।আহান কিছুক্ষন অভি,হিয়ান,আহির,মিহিরের দিকে বিরক্তি ভঙ্গিতে তাকিয়ে থেকে বিদ্রুপের স্বরে বললো
“মাএ কয়েকটা দিন ছিলাম না,এর মধ্যেই তোদের একেক জনের কি অবস্থা হয়েছে!একজনও অক্ষত নেই,,সবার শরীরে কাটা ছেড়ার দাগ।যদি আর মাএ কিছু দিন দেরি করতাম তাহলে তো হসপিটাল,বিজনেস,পার্টি অফিস ধুলোর সাথে মিশিয়ে ফেলতি তোরা।হুহ,, যারা নিজেদের সেইফ করতে পারে না,তারা আবার ব্যাবসা আর ফ্যামিলির লোক সামলাবে কি করে।”
আহাননের কথা শেষ হতেই আহির কপাল কুচকে আহানকে উদ্দ্যেশ্য করে বিরক্তির স্বরে বললো
“ব্রো প্লিজ এইবার একটু চুপ করো।যখন থেকে এসেছো তখন থেকে শুধু আমাদের একটার পর একটা কথা শুনিয়েই যাচ্ছো।আর আমরা চুপচাপ শুনে যাচ্ছি।আরে আমরা কিভাবে বুঝবো আমাদের নিজেদের সিকিউরিটি গার্ডরাই আমাদের উপর হামলা করবে।”
আহান দাতে দাত চেপে বললো
“তোদের নতুন করে সিকিউরিটি গার্ড কে রাখতে বলেছিলো?আর যখন রেখেইছিলি তখন ওদের ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো চেক করিসনী কেনো?”
মিহির বললো
“ইয়ার ব্রো আমরা রাখতে চাইনি অভি ব্রোই তো জোড় করে রাখতে বললো।আর তখন আমাদের ওদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করার মতো অবস্থা ছিলো না।সব দিক সামলাতে গিয়ে রিতীমতো হিমশিম খাচ্ছিলাম।”
আহান এবার রেগে অভির দিকে তাকিয়ে ওকে ধমক দিয়ে বললো
“ওই তুই আমাকে কেনো বললি না তোরা নতুন করে সিকিউরিটি গার্ড রেখেছিস?তুই তো আমাকে একবার জিঙ্গেস করতে পারতি সিকিউরিটি গার্ড আদৌ রাখবি কিনা।তোকে তো বলে ছিলাম এখানে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটা ঘটনার আপডেট আমার চাই।তাহলে কেনো একবার জিঙ্গেস করে নিলি না।”
মেঘ,আলিশা,দিশা,সাড়িকা, সাঈফা,রিজা ওরা এতোক্ষন একপাশে বসে চুপচাপ মিহিরদের কথা শুনছিলো।আহানের কথা শুনে ওরা সবাই ভীষন অবাক হলো।সবাই অবাক চোখে একবার অভির দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার আহানের দিকে তাকাচ্ছে।
অভি আহানের দিকে তাকিয়ে অসহায় কন্ঠে বললো
“ইয়ার এতো প্রভলেমের মধ্যে ছিলাম তাই তোকে বলতে ভুলে গেছি।”
অভির কথা শেষ হতেই আহান কিছু বলতে যাবে তার আগেই দিশা দাতে দাত চেপে অভিকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“তোকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম মানে?তারমানে আপনি জানতেন আহান ভাইয়া বেচে আছে?ভাইয়া বেচে আছে শুনেও এতোদিন ওনাকে খোজার নাটক করে গেছেন।এতো গুলো মানুষ ভাইয়ার জন্য টেনশনে ছিলো আর আপনি সবটা জেনেও চুপচাপ ছিলেন,কাউকে কিচ্ছু বলেন নি।এতো সুন্দর অভিনয়ের জন্য আপনার মুখের উপর তো এ্যাওয়ার্ড ছুড়ে মারা উচিৎ।আমার কাছে এই মুহূর্তে এ্যাওয়ার্ড টা নেই নাহলে আমিই ছুড়ে মারতাম।সার্থপর,মিথ্যাবাদী, বাটপার,মিচকে শয়তান লোক একটা,,আপনাকে তো আমি পুলিশে দিবো।”
দিশার কথা শুনে সবাই হা করে দিশার দিকে আছে।অভি রেগে দিশাকে ধমক দিয়ে বললো
“এই মেয়ে শাটআপ!একটা থাপ্পর দিয়ে তোমার গাল লাল করে দিবো।বাচাল,ঝগরুটে মেয়ে একটা।আমারই ভুল হয়েছে তোমাকে আমার বাচানোই ঠিক হইনি।উল্টে তোমার মতো একটা শাকচুন্নিকে নিয়ে গিয়ে হসপিটালের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া উচিৎ ছিলো তাহলে অন্তত পৃথীবি থেকে একটা বাচাল কমে যেতো।”
অভির কথা শেষ হতেই হিয়ান রাগি গলায় বললো
“এই তোরা দুজন চুপ করবি?এতো বড় হয়ে গেছিস অথচ বাচ্চাদের মতো পাচ মিনিট পরপর ঝগরা শুরু করিস!”
হিয়ানের কথা শেষ হতেই দিশা আর অভি একে অপরের দিকে তাকিয়ে দুজন দূজনকে ভেংচি কেটে চুপ হয়ে গেলো।হিয়ান এবার সোজা হয়ে বসে আহানের দিকে তাকিয়ে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো
“তুই ওইদিন কিভাবে বেচে গেলি আহান?আর লাশটাই বা কার ছিলো?বেচেই যখন ছিলি এতোদিন কোথায় ছিলি?আমাদের সামনে আসিস নি কেনো?আর তুই যে বেচে আছিস সেটা অভি কবে থেকে জানে?জানেই যখন আমাদের বললো না কেনো?”
হিয়ানের কথার মাঝেই আহান ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো
“উফফ এতো প্রশ্ন একসাথে কেউ করে?আর কিছু জিঙ্গেস করতে হবে না,,চুপচাপ বস।শুরু থেকে সবটা বলছি।”
আহানের কথা শুনে সবাই সিরিয়াস মুখ করে আহানের দিকে তাকালো।আহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো
“ওইদিন যখন গাড়িটা খাদ থেকে পড়ছিলো,তখন গাড়িটা নিচে পড়ার আগেই আমি গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে ছিলাম।আমার থেকে যাষ্ট কয়েক হাত দূরে গাড়িটা ব্লাষ্ট করেছে।আল্লাহর রহমতে একটুর জন্য বেচে গেছি।”
এটুকু বলতেই অভি আহানকে থামিয়ে দিয়ে বললো
“বাকিটা আমি বলছি।”
সবাই উৎসুক চোখে অভির দিকে তাকালো।অভি গম্ভীর কন্ঠে বললো
“সেদিন ফাংসনের পরে আমি সাড়িকা সাঈফাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে,,মিস দিশাকে ওনাদের বাড়িতে দিয়ে এসে ছিলাম।তাই অনেক রাত হয়ে গিয়েছিলো।আর দিশাদের বাসা থেকে আমাদের বাসা অনেকটা দূরে,বাড়িতে যেতে গেলে অনেক রাত হয়ে যেতো।এইজন্য আমি আমার ফ্লাটে চলে গিয়েছিলাম।ওখানে গিয়ে ঘুম আসছিলো না তাই ফোন স্ক্রল করছিলাম,তখনই আহানের ভয়েজ মেসেজটা পাই আর আমি সাথে সাথে বেড়িয়ে পড়ি।তারপর আহানের ফোনের লোকেশন ট্রেস করে আমি আমার গার্ডদের জানিয়ে দেই।ওরা আসার আগেই আমি সেই খাদের কাছে পৌছে যাই গিয়ে দেখি ব্লাক স্নেক গ্যাংয়ের লোকেরা গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।ওদের পোশাক দেখেই আমি ওদের চিনে ফেলেছিলাম।যেহেতু আমি একা ছিলাম তাই আমি আর ওদের সামনে যাইনি আড়ালে দাড়িয়ে ছিলাম।ওরা কয়েকজন গাড়ি থেকে নেমে যখন দিখলো আহানের গাড়িটা ব্লাষ্ট করেছে, তখন ওরা ভেবে নিয়েছিলো আহান আর মেঘ মারা গেছে।তাই ওরা ওখান থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা দিতেই তোরাও এসে ওদের পিছু নিস।তখন তোদের উপর খুব রাগ হয়েছিলো আমার কোথায় আহান মেঘকে খুজবি তা না করে ওদের ধরতে চলে গিয়েছিলি।তোরা সবাই চলে যেতেই আমার গার্ডরাও এসে হাজির হয় ওখানে,,আমরা সবাই কোমরে দড়ি বেধে খাদে নেমে গিয়ে দেখি গাড়িটা পুড়ছে আর আগুনের আলোতে পুরো জায়গাটা মোটামুটি আলোকিত হয়ে ছিলো তাই আমাদের আহানকে খুজে পেতেও তেমন একটা সমস্যা হয়নি।আমরা যখন ওকে পেয়ে ছিলাম তখনও ওর হুস ছিলো।ও বারবার শুধু অসফুট স্বরে মেঘের নাম বলছিলো।তাই আমরা ভেবে ছিলাম মেঘ হয়তো ওখানেই আশে পাশে কোথাও আছে।মেঘকে খুজতে খুজতে হঠাত আমার মাথায় একটা প্লান চলে আসে।আমি আমার কিছু গার্ডদের আহানকে নিয়ে আমাদের ফার্ম হাউজে পাঠিয়ে দেই।আর বাকিদের হসপিটালের মর্গে পাঠিয়ে ছিলাম একটা লাশ নিয়ে আসতে।ওরা সবাই যাওয়ার পর আমি মেঘকে নিচে না পেয়ে উপরে চলে আসি।তারপর উপরে এসে অনেক খুজে ওকে পেয়েছিলাম।ভেবে ছিলাম ওকেও নিয়ে আমাদের ফার্ম হাউজে চলে যাবো।আর সবার সামনে ওদের দুজনকেই মৃত ঘোষনা করে দিবো।কিন্তু তোরা এসে আমার প্লানে এক বালতী পানি ঢেলে দিলি।আমি মেঘকে নিয়ে গাড়িতেই উঠতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই তোরা তিনজন ওখানে এসে পড়লি।”
একসাথে এতো গুলো কথা বলে অভি একটা লম্বা শ্বাস ফেললো।আলিশা অভিকে উদ্দ্যেশ্য করে ব্রু কুচকে বললো
“বাট তোর এই সব ফালতু ড্রামা করার কি দরকার ছিলো?ওদের মেরে ফেলার নাটক করে তোর কি লাভ হলো?আর হিয়ানরা তো লাশটা রাখার আগেই ওখানে এসে পড়েছিলো তো তোরা লাশটা কখন রাখলি?”
অভি একটা ধমক দিয়ে বললো
“কথার মধ্যে বাম হাত ঢুকাস কেনো?বলছি তো আস্তে আস্তে সবকিছু।”
অভির কথা শুনে আলিশা মুখ গোমরা করে বসে রইলো।অভি বললো
“আমাদের কারোরই শএুর অভাব নেই।বিশেষ করে আহানের।আমরা লাইফে ফ্রেন্ড বানাতে পেরেছি কিনা জানিনা তবে আনলিমিটেড শএু ঠিকই বানিয়েছি।কলেজ লাইফ থেকে ঝগরা মারামারি করেছি,,তারপর লন্ডনের ভার্ষিটিতে ওখানকার ষ্টুডেন্টদের সাথে মারামারি ,,তারপর বিজনেস ম্যানদের সাথে ডিল নিয়ে ঝামেলা,,মাফিয়াদের সাথে ঝামেলা সব মিলিয়ে কতো যে শএু আছে তা আমরা নিজেরাও জানিনা।আর প্রায় সবাই সব সময় আহানকে মারার জন্য এ্যাট্যাক করে।ওরা যদি কোনো ভাবে জানতে পারতো আহান বেচে আছে তবে অসুস্থ তাহলে সবাই মিলে এক সাথে আহানকে এ্যাট্যাক করতো।তাই আমি কোনো রিক্স নিতে চাইনি।আহান আর মেঘকে সেইফ জায়গায় রাখতে চেয়ে ছিলাম যাতে কেউ ওদের আশে পাশেও না যেতে পারে।বাকি রইলো লাশ গাড়িতে কখন রাখা হয়েছিলো সেটা?ওটা রাখা হয়েছিলো হিয়ানরা যখন মেঘকে নিয়ে কান্নাকাটি করছিলো তখন আমার লোকেরা চুপিচুপি নিচে নেমে লাশটা গাড়িতে রেখে চলে আসছিলো।ওরা একটা মেয়ের লাশও নিয়ে এসেছিলো কিন্তু আমি মেসেজ দিয়ে রাখতে বারন করে দিয়ে ছিলাম।”
অভির কথা শেষ হতেই সবাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।হিয়ান অভিকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“তারপর কি হয়েছিলো।”
আহান বললো
“আমার হুস আসতেই আমি অভির থেকে সবটা জানতে পারি।তবে আমার জ্ঞান ফিরলেও আমি চলার মতো অবস্থায় একদমই ছিলাম না।বেডে শুয়ে শুয়ে প্রত্যেকদিন মেঘের পাগলামি গুলো আমি দেখেছি।প্রতিটা দিন ও কতোটা যন্ত্রনা ভোগ করেছে সবটা আমি নিজের চোখে দেখেছি,কিন্তু কিছু করতে পারিনি। অভিকে দিয়ে আগেই আমি মেঘের ক্যাবিনে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে ছিলাম ওকে দেখার জন্য।ওর এমন অবস্থা দেখে আমার মাথার ঠিক ছেলো না।তাই আমি আমার কিছু বিশ্বস্ত লোকদের দিয়ে সিয়ামের গোডাউনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলাম।আর তার কয়েক দিনের মধ্যে আমি মোটামুটি সুস্থও হয়ে গিয়েছিলাম।ভেবে ছিলাম খুব তাড়াতাড়ি সবার সামনে চলে আসবো কিন্তু তার আগেই এইসব ,,,,,,”
এই টুকু বলে আহান থেমে গেলো।দিশা এতোক্ষন আহানের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো।হঠাৎ ওর কিছু একটা মনে পড়তেই অভিকে উদ্দ্যেশ্য করে সন্দীহান কন্ঠে বললো
“আচ্ছা আপনি কিভাবে জানলেন ওই লোক গুলোকে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে?আর যখন জানতেনই তখন আগে বলেননি কেনো?একদম যখন এ্যাট্যাক টা করলো তখনই কেনো বললেন?বাই এনি চান্স আপনিই আবার এই সব কিছুর মাষ্টার মাইন্ড নন তো?হতেও তো পারে আপনিই আমাদের সবাইকে মারতে চেয়েছেন!আর এই সব কিছু আপনার প্লান।”
দিশার কথা শুনে সবাই হাহা করে হেসে দিলো।অভি রাগে ফোস ফোস করতে করতে বললো
“আহান এই টাকে আমার চোখের সামনে থেকে নিয়ে যাহ।নাহলে আজকে আমি ওকে সত্যি সত্যি ছাদ থেকে ফেলে মেরে দিবো।”
অভির কথা শুনে আবার সবাই হেসে দিলো।হিয়ান একটু সিরিয়াস হওয়ার ভান করে দিশা উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“দিস ইজ ভেরি ব্যাড দিশা!তুমি এই ভাবে অভিকে মিথ্যা অপবাদ দিতে পারোনা।তুমি জানো? আমাদের বেচারা অভি হসপিটালে গিয়েই সবার প্রথমে ডাক্তারদের কাছে জিঙ্গেস করেছে,, দিশা এখন কেমন আছে?একটা বারও আলিশার কথা জিঙ্গেস করেনি!একটা বার চিন্তা করো অভি তোমাকে নিয়ে কতোটা ভাবে!আর তুমি শেষ পযর্ন্ত ওকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছো?”
হিয়ান কথা শুনে সবাই অভির দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসছে। সত্যিটা বলে দেওয়ায় অভি সবার সামনে অনেকটা লজ্জায় পড়ে গেলো।দিশা বিদ্রুপের স্বরে হিয়ান কে উদ্ধ্যেশ্য করে বললো
“আরে ধুর ভাইয়া,,উনি ডাক্তারের কাছে আমার কথা এই জন্য জিঙ্গেস করে ছিলেন কারন আমি মারা গেছি কিনা সেটা উনি কনফার্ম হতে চেয়ে ছিলেন।”
দিশার কথা শুনে কেনো যেনো অভির খুব রাগ উঠে গেলো।ও চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বললো
“তোরা কথা বল আমি আসছি।আমার একটু কাজ আছ।”
অভির কথা শুনে সবাই বুঝতে অভি রেগে গেছে তাই সবাই মিলে অভিকে সরি বলে আবার আবারও টেনে টুনে বসালো।
আহান আবারও বলা শুরু করলো
“ওই লোক গুলোকে যে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিলো সেটা আমি অভিকে বলেছি।ও আগে থেকে কিছুই জানতো না।ইনফ্যাক্ট আমিও কিছু জানতাম না।ব্লাক স্নেক গ্যাংয়ের লিডারের এসিটেন্ট কবির আমাকে বলেছিলো খবরটা।কবির নিজেও আগে থেকে কিছুই জানতো না।হামলা হওয়ার কিছুক্ষন আগেই সবটা জানতে পেরেছে।আর জানার সাথে সাথে আমাকে বলে দিয়েছে।কবির আমরই লোক।ও অনেক আগে থেকেই সিয়ামের সব খবর আমাকে দিতো। তবে ও সিয়ামের গ্যাংয়ের লোক না,, সিয়ামের অন্য একটা অফিসে জব করে। তাই ও সিয়ামের প্লানের তেমন কিছুই আগে থেকে জানতে পারে না।কবির আমাকে ফোন করার সাথে সাথে আমি মিহির আর অভিকে ফোন করে সবটা জানাই তবে ততোক্ষনে অনেকটা দেড়ি হয়ে গিয়েছিলো, অভি মিহির ওদের উপরে অলরেডি এ্যাটাক করা হয়েছিলো।ওদের প্লান ছিলো একসাথে সবাইকে এ্যাট্যাক করে আটকে দেওয়া যাতে কেউ মেঘকে বাচাতে না পারে।আর ওরা ওদের কাজে সফলও হয়েছিলো।আমি অভি মিহিরকে সবটা জানিয়ে ল্যাপটপ টা অন করে সিসি ক্যামেরার কানেক্ট দিতেই কিছুক্ষনের মধ্যে আমার চোখের সামনে ওরা দিশা,আলিশার উপরে এ্যাট্যাক করে মেঘকে নিয়ে চলে যায়।”
আহানের কথা শেষ হতেই মেঘ ভ্রু কুচকে আহান কে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আপনি আমাকে কিভাবে খুজে পেলেন?আর কিভাবে জানলেন আমি ওই রোডেই আছি?”
আহান স্বাভাবিক কন্ঠেই বললো
“আমরা তোমাকে বাচাতে ওই গোডাউনের কাছাকাছি চলেই এসে ছিলাম।তখনই কবির জানায় তুমি পালিয়েছো ওখান থেকে।তাই আমি ওখানের আশে পাশের সব রাস্তা আমার লোক দিয়ে ব্লক করে দিয়ে ছিলাম।তাই তুমি যে রোড দিয়েই যেতে আমাদের লোকজন তোমাকে চিনে ফেলতো।”
মেঘ ছোট করে বললো
“ওহ আচ্ছা।”
আহান মুচকি হেসে বললো
“জ্বি ম্যাম,,,,”
দিশা বাচ্চাদের মতো হাত উচু করে বললো
“আহান ভাইয়া আমার একটা লাষ্ট প্রশ্ন আছে?জিঙ্গেস করি?”
অভি মুখ বাকিয়ে বললো
“যদি বলি একদম কোনো প্রশ্ন করবে না,,তাহলে তুমি শুনবে?”
দিশা ভেংচি কেটে বললো
“একদমই না।পারমিশন দিলেও করবো আর না দিলেও করবো।”
“তাহলে আর চুপচাপ বষে না থেকে প্রশ্নটা করে আমাদের উদ্ধার করুন।”
কথাটা বলেই অভি মুখ বাকিয়ে বসে রইলো।দিশা সেদিকে পাএা না দিয়ে অনেকটা চিন্তিত ভঙ্গিতে আহানকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আচ্ছা ডি.এন.এ. রিপোর্ট টা আপনার সাথে কিভাবে মিলে গেলো ভাইয়া?ডাক্তারই বা কেনো বললো ওটা আপনার ডেডবডি?”
আহান কিছু বলতে যাবে তার আগেই অভি চেয়ার থেকে দাড়িয়ে রাগি কন্ঠে বললো
“এই মেয়ে তোমার মাথায় কি গোবর ঢুকানো?কমন সেন্স বলতে কোনো জিনিস নেই?আরে আমরা এতো কিছুই যখন করতে পেরেছি তখন একটা সামান্য রিপোর্ট চেইঞ্জ করা কি এমন ব্যাপ্যার!”
দিশা অভির দিকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বললো
“আমি আপনার কাছে জিঙ্গেস করেছি?আহান ভাইয়ার কাছে জিঙ্গেস করেছি।আপনাকে অ্যান্সার দিতে কে বলেছে?অন্যের কথার মধ্যে বাম হাত না ঢুকালে পেটের ভাত হজম হয় না তাইনা?”
ওদের ঝগরা দেখে আলিশা বিরক্তি নিয়ে বললো
“তোদের এই ক্যাট ফাইট দয়া করে বন্ধ করবি প্লিজ।”
বলেই দিশা আহানের দিকে তাকিয়ে ওকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আচ্ছা ভাইয়া সিয়াম নামের ছেলেটা এখন কোথায় আছে?”
আহান একটা বাকা হাসি দিয়ে বললো
“আপাততো জেলে আছে।বাট খুব তাড়াতাড়ি নরকে থাকবে।”
দিশা অবাক হয়ে বললো
“মানে,,,,,,,?”
“তোমাকে এতো মানে বুঝতে হবে না।”
বলেই হিয়ান আলিশার হাত ধরে নিয়ে গিয়ে ছাদ থেকে নিচে নেমে গেলো।
#চলবে,,,,,