—- আপনার জামাটা ঠিক করে নিন ।
—- হোয়াট ! এটা কি ধরনের অসভ্যতামি আমি কিন্তু চিৎকার করবো ।হাত ছাড়ুন আমার ।
——— ছেলেটি এবার ফিসফিস করে বলল আপনার ফর্সা কাধটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বলেই এক মুহূর্ত ও আর অপেক্ষা না করে ছেলেটি গটগট করে চলে গেল ।নাফিয়ার কানদুটো গরম হওয়ার উপক্রম
।আজকে সে তার ফ্রেন্ডের বোনের বিয়েতে এসেছে ।হ্ঠাৎ একটা ছেলে এসে তার হাত ধরে টেনে নিয়ে তাকে আড়ালে নিয়ে যায় ।বিয়ে ভরা মানুষের জন্য ছেলেটার থেকে হাত ছাড়াতেও পারছিল না । তখনি ছেলেটা তাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে কথাটা বলে উঠে ।নাফিয়া কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল ।তারপর চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিজের কাধের দিকে তাকাল ।কাধের দিকে তাকাতেই তার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল ।সত্যি সত্যি জামাটা ঠিক নেই।খুব দ্রুত কাধের জামাটা ঠিকঠাক করে নিল ।আর নিজেকে মনে মনে একশো একটা গালি দিচ্ছে ।ছেলেটার কোনো দোষ ছিল না ।তারই দোষ ।বাড়ি থেকে তার সব ঠিকঠাক করে আসা উচিত ছিল ।বিয়ে বাড়িতে এত এত মানুষ যদি কারো নজরে পরে যেত ? নজরে পরে যেত কি ! ঐ ছেলেটার নজরে তো পরেই গেছে ।কি লজ্জা কি লজ্জা !বান্ধবীর বড় বোনের বিয়ে খেতে এসেছিল আজকে সে ।তার বাবা তো তাকে বিয়েতে আসতে দিতেই চেয়েছিল না ! কত আকুতি মিনতি করে পা টা ধরে সারাদিন সারারাত কান্নাকাটি করে সে বিয়েতে এসেছে ।বান্ধবী তিন্নিকে কথা দিয়েছিল সে বিয়েতে আসবে তাই বাবার পায়ে হাতে ধরে আকুতি মিনতি করে বিয়েতে আসতে পেরেছে ।
—- পুরো বাড়ি তোকে তন্নতন্ন করে খুঁজে চলছি ।তুই কোথায় ছিলি বল তো ?সবাই খেতে বসে গেছে ।চল আমার সাথে এক্ষুণি খেতে বসবি । তিন্নির কথায় নাফিয়ার ধ্যানভঙ্গ হলো ।
—- নাফিয়া ইতস্ততভাবে বলল সরি রে ! এইতো এইখানেই ছিলাম ।শোন তিন্নি আমায় একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে নাহলে তুই তো জানিসি বাবা খুব রাগ করবে !
—– তিন্নি কপট রাগ দেখিয়ে বলল বিয়েই তো খেতেই এসেছিস।কারো সাথ ভেগে তো আর চলে যাচ্ছিস না !তোর বাপ টা যেন কেমন ! তোকে বলেছিলাম গায়ে হলুদের আগে চলে আসতে আর তুই আসলি বিয়ের দিনে ।কি আর করার চল আমার সাথে । তিন্নি আর সময় নষ্ট না করে নাফিয়ার হাত ধরে খাবার টেবিলে নিয়ে যেতে লাগল ।খাবার টেবিলে গিয়ে নাভিলার চোখদুটো কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম ।সেই ছেলেটি একই টেবিলে বসে আছে ।ছেলেটি তার সাথে বসে থাকা আরো কয়েকটা ছেলে মেয়ের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে ।এখন যদি তাকে দেখে ফেলে তাহলে লজ্জার শেষ থাকবে না ।নাফিয়া ছেলেটির থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য ওড়না দিয়ে কোনোমতে মুখটা ঢেকে তিন্নির কানে কানে গিয়ে বলল তিন্নি চল না অন্য টেবিলে গিয়ে বসি।এই টেবিলে না প্লিজ ।তিন্নি নাফিয়াকে জিজ্ঞেস করল কেন এই টেবিলে প্রবলেম কি ? এই টেবিলেই বসব আমরা বলেই নাফিয়াকে বসিয়ে দিল আর নিজেও পাশে বসে পড়ল ।সাথে সাথে ছেলেটির সাথে তার চোখাচোখি হয়ে গেল ।নাফিয়া মনে মনে বলল উফফফ কি যন্ত্রনা !এই ছেলেটাকে বেছে বেছে এই টেবিলটাতেই বসতে হল ।আল্লাহ মাটি ফাঁক কর তোমার এই বান্দাকে উঠিয়ে নিয়ে যাও ।ছেলেটির চোখ এখনো নাফিয়াতে স্থির ।ছেলেটি কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থেকে আবার কথায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল ।
নাফিয়া আড়চোখে দেখল এই টেবিলটাতে তার বান্ধবীরা সহ আরো কয়েকজন ছেলে মেয়ে বসে আছে ।ভয়ে নাফিয়ার কলিজা আঁতকে উঠল ।সে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তার বাবা পইপই করে বলে দিয়েছিল ছেলেদের থেকে দশ মাইল দূরে থাকতে । সে তিন্নির কানে কানে ফিসফিস করে বলে উঠল
—- তিন্নি এই টেবিলে অনেক ছেলেরা বসেছে ।বাবা যদি জানে আমায় খুন করে ফেলবে ।তুই তো জানিস বাবা আমায় ছেলেদের থেকে দূরে থাকতে বলে আর এখানে আমি অচেনা ছেলেদের সাথে একটেবিলে বসে খাচ্ছি ।বাবা জানতে পারলে আমায় মেরে ফেলবে ।প্লিজ বোন আমরা অন্য টেবিলে গিয়ে বসি যেখানে কোনো ছেলে থাকবে না !
তিন্নি নাফিয়ার কথায় দুষ্টু হেঁসে বলল ক্যালাম ডাউন সুন্দরি ।এখানে তোর ঐ ভিলেন বাপটা নেই যে জানলে তোকে মেরে ফেলবে ।তোর ঐ ভিলেন বাপের নজরবন্দী থেকে আজকের দিনটায় মুক্তি পেয়েছিস সো নিজের মত আনন্দ করে নে আজকের দিনটা । কেউ তোকে বকতে আসবে না কেউ তোকে শাসন করতে আসবে না সো চিল কর দোস্ত ।
তিন্নির কথায় নাফিয়া ভাবল আসলেই আজকে কতদিন পর সে শান্তিতে নিশ্বাস নিতে পারছে ।বাড়িতে থাকলে বাবা , চাচা , ভাইদের অতিরিক্ত নজরবন্দীর কারনে শান্তিতে নিশ্বাসও নিতে পারেনা ।শুধু সে-ই না ঐ বাড়ির কোনো বউ , কোনো মেয়েদের নিজেদের মত চলাফেরা করার অধিকার নেই ।তাদের জন্য নেই কোনো স্বাধীনতা ।বাড়ির পুরুষদের কথায় তারা উঠে বসে ।নিশ্বাস দেয়ার ক্ষমতা যদি তাদের হাতে থাকত তাহলে প্রতিটা নিশ্বাসও তাদের কাছ থেকে অনুমতি চেয়ে নিতে হত তার বাড়ির প্রত্যেকটা মেয়ে বৌদের।দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল নাফিয়া ।সে ভাবল আজকের দিনটা সে নিজের মত করে কাটাবে , সবার সাথে আনন্দফূর্তি করবে কেউ শাসন করতে আসবে না ভাবতেই নাফিয়ার মুখে হাসি ফুঁটল জিন্দেগি মিলেগি না দোভারা ।নাফিয়াকে এভাবে হাঁসতে দেখে টেবিলের প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে ।তিন্নি নাফিয়াকে ধাক্কা মারল ।নাফিয়া ভাবনা থেকে ফিরে এল ।সে আড়চোখে দেখল সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে এমনকি সে ছেলেটিও ।ছেলেটি তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ।নাফিয়া ঢোক গিলে নিজের জিবে ছোট করে কামড় দিল ।ইয়া আল্লাহ তাকে এভাবে হাঁসতে দেখে পাগল টাগল ভাবছে নাকি সবাই ! সে সবার দিকে তাকিয়ে একটা সৌজন্যমূলক হাঁসি দিল এই হাঁসি দিয়ে বুঝাল সে কোনো পাগল টাগল না আপনারা আপনাদের নিজদের কাজ করুন ।ইতিমধ্যে টেবিলে খাবার এসে পড়লে সবাই খাবার খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল ।তিন্নি খাবার খেতে খেতে নাফিয়াকে ফিসফিস করে বলল নাফিয়া তোর সামনের ছেলেটার দিকে তাকা একবার ছেলেটা হ্যান্ডসাম না ? কি সুন্দর বিলাই চোখ , কি সুন্দর নাক , ঠোট , চিঁবুক । উনার নাম কি জানিস ?উনার নাম হচ্ছে রওনাফ স্পর্শ আফনান ।আমার আপুর বন্ধু ।আপুর বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে হ্যান্ডসাম ছেলে হচ্ছে এই স্পর্শ ভাই ।আপুর বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে ধনী-ও উনি ।নাফিয়া এতক্ষণ নিঁচু হয়ে খাচ্ছিল আর তিন্নির বকবকানি শুনছিল ।তিন্নির মুখে এত প্রশংসা শুনে তারও একটু দেখতে ইচ্ছে হল ছেলেটাকে ।সে আড়চোখে সামনে তাকাল ।সে বুজতে পারল না তিন্নি কার কথা বলছে ? সে তিন্নিকে ফিসফিস করে বলল কোন ছেলেটা ?
তিন্নি বলল এভাবে নিচা হয়ে থাকলে দেখবি কেমনে কানি কোথাকার ।তোর বরাবর যে ছেলে বসে আছে আমি তার কথা বলছি ।আরে সব থেকে সুন্দর , বিলাই চোখওয়ালা ছেলেটা ।
নাফিয়া ঘাড় উঁচু করে তাকাল তার বরাবর বসা সেই ছেলেটি-ই বসে আছে ।নাফিয়া স্পর্শের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।ছেলেটি সত্যিই অমায়িক সুন্দর ।সে তখন খেয়াল করেনি ।খেয়াল করবে কি !ভালোভাবে ছেলেটার দিকে তাকায়নিইই সে ।হালকা বিলাই কালার চোখের মনি ।খোঁচা খোঁচা দাড়ি ।বিয়েতে আসা প্রত্যেকটা মেয়েই এই ছেলের প্রেমে পরে গেছে সে নিশ্চিত ।নাফিয়া হা করে স্পর্শের দিকে তাকিয়ে তার সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়ে দেখছিল ।অমনি স্পর্শ মাথা উঁচু করে তাকাল ।এতে তার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল ।নাফিয়া থতমত খেয়ে গেল ।সে নিজের চোখ সংযত করে মনে মনে নিজেকে একশো একটা গালি দিল ।সে কি উল্টাপাল্টা কথা ভাবছে ।তার যে কোনো ছেলের দিকে তাকানো টাও যে পাপ ।ঘোর পাপ ।সে মনে মনে নিজেকে সাবধান করল আর তাকাবে না তার দিকে । নিজের মনকে লাঘাম দিল পাপ পাপ পাপ বলে ।পুরোটা সময় নিচু হয়ে খেয়ে , উঠে পড়ল নিচু হয়ে ।
খাওয়াদাওয়া শেষে নাফিয়া বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল ।এমন সময় তাদের এক বান্ধবী তোহা বলে উঠল তিন্নি ঐ ছেলেটা কি হ্যান্ডসাম ইয়ার !কে রে ছেলেটা ? তোহা সবাইকে ইশারা দিয়ে দেখাল ।সবাই তোহার ইশারামত ছেলেটার দিকে তাকাল ।তিন্নি মুচকি হেসে বলল এটা স্পর্শ ভাইয়া ।আপুর বন্ধু ।এবার তিন্নি দুষ্টু হেসে তোহাকে বলল চান্স মেরে কোনো লাভ নাই তরে একটুও মানাবেনা উনার পাশে চেহারা দেখছিস তোর ? অমনি সবাই হেঁসে উঠল ।তোহা রাগে গজগজ করতে বলল তাহলে কার সাথে মানাবে শুনি ?
তিন্নি নাফিয়ার কাধে চাপর মেরে বলল একে মানাবে একদম পারফেক্ট দুজনে ।তিন্নির কথা শুনে নাফিয়া ঢোক গিলে বলল ছিহ কি যা তা বলছিস বাবা … সবাই ওকে থামিয়ে দিয়ে একসাথে বলে উঠল বাবা জানলে আমায় খুন করে ফেলবে বলেই সবাই একসাথে হেসে উঠল ।নাফিয়া একটা ছোট দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল ।নাফিয়া সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছিল সন্ধ্যার আজান কানে আসতেই নাফিয়ার কলিজা ধক করে উঠল সে তিন্নিকে তড়িগড়ি করে বলে উঠল তিন্নি আমায় এক্ষুণি বাড়ি ফিরতে হবে ।আমার খেয়াল-ই ছিলো না বাবা আমাকে সন্ধ্যা হওয়ার আগে বাড়ি ফিরতে বলেছিল ।সন্ধ্যা হওয়ার পর আমায় আর বাড়িতে ঢুকতে দিবেনা ।পড়াশোনা বন্ধ করে দিবে আমার ।ভয়ে নাফিয়ার গলা কাঁপছে ।
এবার তিন্নিরও ভয় হতে লাগল ।সে ভালোভাবেই জানে নাফিয়া বাড়িতে দেরি করে ফিরলে কি হতে পারে । তারপর-ও তিন্নি নাফিয়াকে আশ্বস্ত করে বলল তুই কোনো চিন্তা করিস না ।কিছু হবে না ।চল তোকে আমি রিকশায় উঠিয়ে দিচ্ছি এই বলে তারা দুজনে রাস্তায় এসে রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল ।কিন্তু আফসোস কোনো রিকশা-ই খুঁজে পাচ্ছে না ।ভয়ে নাফিয়ার হাত পা কাঁপছে ।অন্ধকার নেমে গেছে ।কোনো রিকশা না পেয়ে নাফিয়া তিন্নিকে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল ত্ তিন্নি আ্ আমি হেঁটে বাড়ি যাব ।রিকশার জন্য ওয়েট করা আর আমার পক্ষে সম্ভব না বলেই হাঁটতে লাগল ।তিন্নি নাফিয়ার হাত ধরে ফেলল পাগল হয়েছিস ? আধঘণ্টার পথ হেঁটে কিভাবে যাবি ছাগলি আর এই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে আমি তোকে একা কখনো ছাড়বনা ।আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করছি ।
তিন্নিদের একটাই গাড়ি ছিলো সেটাও তার এক আত্মীয় বাড়ি ফেরার জন্য নিয়ে গেছে ।এখন তাদের বাড়িতে একটাই গাড়ি আছে আর সেটাও স্পর্শের ।তিন্নি নাফিয়াকে নিয়ে গুটিসুটি হয়ে স্পর্শের কাছে গেল ।স্পর্শ রা তখন আড্ডা দিচ্ছিল সবাই ।তিন্নি তাদের কাছে গিয়ে স্পর্শকে বলল ভাইয়া শুনুন !
স্পর্শ রা সবাই ভ্রু কুঁচকে তিন্নি আর নাফিয়ার দিকে তাকাল ।স্পর্শ জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে ?
তিন্নি আমতা আমতা করে বলল ভাইয়া আমার ফ্রেন্ডকে একটু তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসবেন প্লিজ ? ওর অনেক প্রয়োজন রিকশাও খুঁজে পাচ্ছে না ।
স্পর্শ নাফিয়ার দিকে একপলক তাকিয়ে বলল ঠিক আছে ।
নাফিয়া তিন্নিকে ফিসফিস করে বলল আমি কোনো ছেলের সাথে বাড়ি যেতে পারব না তিন্নি তোর মাথা ঠিক আছে কেউ দেখে ফেললে !
স্পর্শ মনে হয় নাফিয়ার কথাটা শুনতে পেল ।সে গম্ভীরকন্ঠে বলে উঠল যার ইচ্ছে হয় যাবে আর ইচ্ছে না হলে যাবেনা ।আমার-ও কোনো ঠেকা পরে নাই নিজ ইচ্ছায় বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসতে !বলেই আবার আড্ডা দেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল ।
তিন্নি বলে উঠল না না ভাইয়া ও যাবে আপনার সাথে আপনি ওকে দিয়ে আসুন প্লিজ ।তিন্নি নাফিয়াকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে বলল ভাষন ছাড়িস না ।তোর হিটলার বাপ তোর জন্য হয়ত ঝাটা নিয়ে অপেক্ষা করছে ।তুই ভাইয়ার সাথেই যাবি আর বাড়ির থেকে একটু দূরে নেমে পরবি কেউ দেখতে পাবেনা ।তারপর নাফিয়াকে টেনে নিয়ে স্পর্শের কাছে গিয়ে বলল , দিয়ে আসুন ভাইয়া ওকে ।
অগত্যা নাফিয়াকে স্পর্শের সাথেই বের হতে হল ।স্পর্শ ড্রাইভ করছে আর নাফিয়া তার পাশে ।স্পর্শ আড়চোখে নাফিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখল অনবরত কাঁপছে মেয়েটি ।নাফিয়ার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে ভয়ে ।স্পর্শ সেটা খেয়াল করে বলল কি হল আপনি কাঁদছেন কেন ? নাফিয়া আরো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ।স্পর্শ ভাবল তখনকার ঘটনার জন্যইকি মেয়েটা কাঁদছে নাকি ! কই সেতো তেমন কিছু বলেনি !নাকি মেয়েটার মাথায় ছিট টিট আছে ? তখন দেখেছিল মেয়েটাকে শুধু শুধু হাঁসতে ।স্পর্শ এবার গাড়ি থামিয়ে নাফিয়াকে বলল কি হলো আপনি কাঁদছেন কেন আশ্চর্য ! স্পর্শর কথা শুনে নাফিয়া ফেঁচ করে কেঁদে দিল ।স্পর্শ এবার নাফিয়াকে জোড়ে ধমক দিয়ে বলল চুপ ।আরেকটা শব্দ করলে এখানেই নামিয়ে দিয়ে চলে যাব ।তখন রাস্তায় বসে বসে কাঁদবেন ।স্পর্শের ধমক খেয়ে নাফিয়া ফ্যালফ্যাল করে তার দিকে তাকাল ।স্পর্শ আবার গাড়ি স্টার্ট করল তার জাস্ট বিরক্ত লাগে যখন কেউ কানের সামনে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদে ।মন চায় ঐ ব্যক্তির গালে থাপ্পড় মেরে দিতে যেমন এখন তার মন চাচ্ছে এই মেয়েটির গালে থাপ্পড় মারতে ।
নাফিয়া চুপচাপ বিষন্নমুখে বসে আছে ।কিছুক্ষণ পর সে স্পর্শকে বলে উঠল এখানেই গাড়ি থামান ।
স্পর্শ গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল ।এখানে সে কোনো বাড়ি দেখতে পাচ্ছে না ।সে নাফিয়াকে ভ্রু কুঁচকে বলল এখানে তো কোনো বাড়ি দেখতে পাচ্ছি না ।
নাফিয়া অস্ফুটভাবে বলল বাড়ি একটু দূরে ।আমি এখানেই নামব ।
স্পর্শ মনে মনে বলল কেন বাড়ির সামনে নামিয়ে দিলে কি আমি তার বাড়ি চা খেতে যাবো নাকি আজব ! জাহান্নামে যাক তাতে তার কি ?
সে গাড়ি থেকে নেমে নাফিয়ার সাইডের দরজা খুলে দিল আর অমনি নাফিয়া তড়িঘড়ি করে নেমে হেঁটে চলে যেতে লাগল ।স্পর্শ হতভম্ব তাকে ধন্যবাদ পর্যন্ত দিল না ।সে বিড়বিড় করে বলল পাগল !
চলবে ,
@Nusrat Hossain
#ভয়ংকর_প্রণয়
Part_1
লেখনীতে_#Nusrat_Hossain