মন বিনিময় পর্ব -১৪

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ১৪
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

ভার্সিটির ক্লাসে চুপচাপ বসে আছে রাহিতা। সামনের সাদা বোর্ডে স্যার পড়ালেও আদৌ ওর মাথায় কিছু ঢুকছেনা। কেননা ক্লাসে বসে থাকলেও ওর মনোযোগ এখন অন্যদিকে। কাল সারারাত ভেবেছে স্বপ্নিলের কথাগুলো। ও কি তবে শুধুই দায়িত্ববোধ? নিছক দায়িত্বের খাতিরে স্বপ্নিল ওর এমন যত্ন নেয়? অথচ কাল এক মুহুর্তের জন্য রাহিতার মনে হয়েছিলো স্বপ্নিল মন থেকে ওর জন্য চিন্তা করে, অন্তত ওর আচরণে এমনটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিলো। তবু শেষ মুহুর্তে এসে কেন এসব বললো কে জানে? আনমনেই এসব ভাবছিলো রাহিতা। এরই মাঝে ক্লাস শেষ হয়ে যায়, লেকচারার রুম থেকে বের হতেই মাথা চেপে ধরে নিজের ডেস্কে মাথা নুয়ায় সে। বলতে গেলে সারারাত একপ্রকার ঘুম হয়নি তার, অর্ধেক রাত কেদে আর বাকি অর্ধেক উল্টোপাল্টা চিন্তা করে কাটিয়েছে সে! মাথায় কারও হাতের স্পর্শে ডেস্ক থেকে মাথা তুলে রাহিতা। ওর পাশে বসা রিমিকে দেখে মৃদু হাসে। ইশারায় ওকে রুম থেকে বের হতে বলে রুম ত্যাগ করে রিমি। ওর পিছু পিছু ব্যাগ নিয়ে ক্লাস থেকে বের হয় রাহিতা নিজেও!

ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে কাছের এক পার্কে এসেছে দুজন। সরু বেঞ্চের দুপাশে পাশাপাশি বসে দুই বান্ধবী। স্কুল, কলেজের পাশাপাশি ভার্সিটিতেও একসাথে চান্স পাওয়ায় ওদের বন্ধুত্বে ভাটা পড়েনি কখনো, তাই না বলেও রাহিতাকে সবচেয়ে ভালো চিনে রিমি। ওর মুখ দেখেই বুঝে গেছে প্রিয় বান্ধবী ভালো নেই, কিছু তো হয়েছে তার। তাইতো ওর থেকে নিরিবিলিতে সব শুনার জন্যই এখানে আনা।

—কি হয়েছে, রাহি? বল তো।

—কিছুই না রে। মাথা ব্যাথা করছে। ঘুম হয়নি ঠিকভাবে রাতে।

—ইশ, স্বপ্নিল ভাইয়া খুব জ্বা’লায়, তাইনা? ঠিকভাবে ঘুমোতেও দেয়না আজকাল?

কিটকিটিয়ে হেসে রাহিতাকে ক্ষে’পানোর উদ্দেশ্যে কথাটা বললো রিমি। ভেবেছিলো এখন মেয়েটা হয়তো একটু স্বাভাবিক হবে। হয় লজ্জা পাবে নয়তো হাসবে ওর সাথে৷ কিন্তু ওকে অবাক করে দিয়ে এমন কিছুই হলোনা। স্বপ্নিলের কথা মনে হতেই পুনরায় মূর্ছা গেলো রাহিতার মন৷ উদাসভাবে চেয়ে রইলো আকাশের দিকে। যা চোখ এড়ালোনা রিমির। সন্তপর্ণে রাহিতার হাত দুটো ধরে সিরিয়াস কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

—এখন কিন্তু সিরিয়াসলি জিজ্ঞেস করছি। কি হয়েছে বল আমায়। তুই ঠিক নেই আমি জানি। বল না, রাহি। আমরা তো নিজেদের সাথে সব শেয়ার করি। আজ করবিনা?

বান্ধবীর কথায় জোরেসোরে এক দীর্ঘশ্বাস বেরোয় রাহিতার বুক চিড়ে। যে দীর্ঘশ্বাসের প্রকোপ ছুয়ে যায় পাশে বসা রিমিকেও। প্রিয় বান্ধবীর মনের কস্ট জানতে তর সয়না তার! বারবার অনুরোধ করতে থাকে রাহিতাকে সবকিছু খুলে বলার জন্য। অতঃপর নিজের মনকে রিমিকে সবকিছু খুলে বলার সিদ্ধান্ত নেয় রাহিতা। দিনকে দিন নিজের মনে সব কস্ট একা বয়ে বেড়াতে বেড়াতে যে বড্ড ক্লান্ত সে নিজেও! অতঃপর নিজেকে শান্ত করে লম্বা এক শ্বাস নিয়ে তাদের বিয়ের পর থেকে স্বপ্নিলের সাথে ঘটে যাওয়া সবকিছু রিমিকে খুলে বললো রাহিতা। এক এক করে সবকিছু মনোযোগ দিয়ে শুনার পর রিমি বড়সড় এক ধাক্কা খেলো, থমথমে মুখে থমকে রইলো বেশ কিছুক্ষণ। ওকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে রাহিতা৷

—কি? চমকে গেলি তো? এজন্যই বলতে চাইছিলাম না। নেহাৎ তুই এত জোর করলি আর মনের মাঝে কস্টগুলো পুষে রাখতে রাখতে আমি ক্লান্ত বলেই আজ বলা।

—আম সরি, রাহি। আমি জানতাম না তুই এত প্যারার মধ্যে আছিস দোস্ত। আমার তোর জন্য ভীষণ কস্ট হচ্ছে। তুই কেমনে সহ্য করছিস এতকিছু?

করুণ মুখে আতংকিত স্বরে বলে উঠে রিমি৷ ওর থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে মাটির দিক তাকায় রাহিতা। শান্ত কণ্ঠে বলে,

—আমি ঠিক আছি। বেশি চিন্তা করিস না।

—তুই বললি আর আমি মেনে নেবো? আমি কি তোকে চিনিনা? সেই কলেজ টাইম থেকে স্বপ্নিল ভাইয়াকে পছন্দ করতি তুই৷ যখনি তোদের বাসায় যেতো লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতি তাকে, তোর সাথে কখনো তার কথা হলে পরেরদিন এক্সাইটমেন্টে সব আমার কাছে এসে বলতি। তাইতো আমি যেদিন শুনলাম হুট করেই স্বপ্নিল ভাইয়ার সাথে তোর বিয়ে হচ্ছে সেদিন অবাক হলেও ভীষণ খুশি হয়েছিলাম যে ফাইনালি তুই নিজের ভালোবাসার মানুষকে পাচ্ছিস। কিন্তু জীবন যে তোর সাথে এত নিষ্ঠুর হবে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।

রাহিতাকে জড়িয়ে ধরে ক্রন্দনরত সুরে বলে রিমি। এতক্ষণ নিজেকে কোনোমতে সামলে রাখলেও এবার রিমির সামনে নিজের অনুভুতি আর লুকিয়ে রাখতে পারেনা রাহিতা। ওকে জড়িয়ে ধরেই হঠাৎ ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। সেভাবেই বলতে থাকে,

—কেন উনি এখনো আমায় মেনে নিতে পারছেনা, রিমি? আমার ভালোবাসায় কি কোনো কমতি আছে বল? মানছি উনার নতুন করে ভালোবাসার জন্য সময় দরকার। তবুও কেন তিনি বললেন আমাকে স্ত্রী হিসেবে মানেন না? এ কথা যে আমি মানতেই পারছিনা আর! উনি কি বুঝেন না আমার কস্ট হয় তার মুখে এসভ শুনে? আমার অন্তর যে পুড়ে ছাড়খার হচ্ছে সেটা কি উনি দেখেন না? প্রায় মাসখানেক হয়েছে আমাদের বিয়ের তবুও উনি আগের মতোই আছেন। বাহ্যিকভাবে সহজ হলেও মনের দিক দিয়ে মিশতে পারছেন না আমার সাথে। এভাবে আর কতদিন চলবো বল? কেন আমার সাথেই এরকম হলো রে? কি দোষ ছিলো আমার?

রাহিতার কস্ট শুনে বুক ফেটে যাচ্ছে রিমির। নিজের বোনের চেয়ে কম চোখে কোনোদিনও ওকে দেখেনি সে। সেই বোন সমতুল্য বান্ধবীর সাথে এমন হয়েছে শুনে কস্টে বুক জ্ব’লছে ওর। কিভাবে রাহিতাকে সান্ত্বনা দেবে ভাষা খুজে পাচ্ছেনা যেন! তবুও ওর হারানো মনোবল ফিরিয়ে আনতে রাহিতাকে ছাড়িয়ে ওর চোখের পানি দু’হাতে ওর চোখের পানি নিভিয়ে দিয়ে বললো,

—আরে পাগল, তুই এভাবে ভেঙে পড়লে হবে? এতদিন সবকিছু সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করে কিনা তুই এ সময় এসে মন ছোট করছিস!

—তো আমি কি করবো বল? আমার মাথায় কিছুই আসছে না। ভালোবাসি আমি উনাকে, তার অবহেলা যে সহ্য হয়না আমার!

—তোর কথা শুনে তো মনে হলো এখন স্বপ্নিল ভাই আর আগের মতো উদাসীন নেই তোর ব্যাপারে। বিশেষ করে কালকের ঘটনা যা তুই বললি সেটার উপর ভিত্তি করলে তো আরও নয়! যে মানুষ তোর সামান্য এলার্জি নিয়ে এত চিন্তা করে সে কিনা তোকে নিজের বউ হিসেবে মানেনা এটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য ঠেকছেনা আমার কাছে! আমার মনে হয় স্বপ্নিল ভাই হয়তো ধীরে ধীরে দূর্বল হতে শুরু করেছেন তোর উপর!

রিমির কথায় হা হয়ে ওর দিক তাকিয়ে থাকে রাহিতা। বলছে কি মেয়েটা? স্বপ্নিল আর ওর প্রতি দূর্বল? এটাও আদৌ সম্ভব! পরক্ষণেই তাচ্ছিল্যের সাথে হেসে উড়িয়ে দেয় রিমির কথাকে। এদিকে রাহিতাকে ওর কথা অবিশ্বাস করতে দেখে ওর অগোচরেই এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিমি, যার অর্থ একে এখন কিছুই বুঝানো যাবেনা। যা বলবে তাই অবিশ্বাস করবে! তাই সে নিজেও আর বেশি কিছু বললোনা রাহিতাকে। ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে দিয়ে বললো,

—পানি খা আর ঠান্ডা মাথায় শোন আমার কথা। যেভাবে সবকিছু চলছে সেটাকে চলতে দে। যে স্বপ্নিল ভাই আজ তোকে এত কাছে পেয়েও নিজের বউ হিসেবে ভালোবাসতে নারাজ দেখবি একদিন সে নিজেই তোর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাতর হবে। আমার কথা মিলিয়ে নিস। আর এখন এসব নিয়ে এত মাথা ঘামাস না, আরও কয়েকদিন সময় কাটা দুজন মিলে। দুটো ভাঙা হৃদয় পাশাপাশি থাকলে মনের দূরত্ব ঘুচতে সময় লাগবেনা দেখিস।

ঢকঢক করে পানি শেষ করে ওর জ্ঞানী মার্কা কথা শুনে প্রায় বিষম খেলো রাহিতা। এটা কি ওরই বান্ধবী রিমি? যে কিনা ওকে এমন সিরিয়াস পরামর্শ দিচ্ছে? তাও আবার বৈবাহিক জীবন নিয়ে! ভাবা যায়! মুখ ফুটে ওকে কিছু বলবে তার আগেই স্বপ্নিলের ফোন আসে রাহিতার কাছে। আড়চোখে রিমির দিক তাকিয়ে সে ফোন রিসিভ করে সে।

—হ্যালো রাহি, তুমি কোথায়?

—এইতো ভার্সিটি থেকে বের হয়েছি। কেন? কিছু বলবেন?

—আমি বাসায় যাচ্ছিলাম। তোমার তো এ সময় ছুটি তাই ভাবলাম তোমায় পিক করি। তোমার ভার্সিটির গেটের সামনেই তো আমি। দেখছিনা যে?

স্বপ্নিলকে ভার্সিটির সামনে আসার কথা শুনে বেশ চমকে যায় রাহিতা। তবু বিস্ময়টুকু গিলে সে বলে,

—আসলে আমি রিমির সাথে একটু বাহিরে এসেছি। আপনি গেটেই থাকুন৷ আমি পাচ মিনিটের মধ্যে আসছি।

—ওকে। আম ওয়েটিং। জলদি এসো।

স্বপ্নিল ফোন রাখতেই আলগোছে রিমির দিক তাকায় রাহিতা। তার প্রশ্নবোধক চাহনি লক্ষ্য করে বলে,

—উনি নিতে এসেছেন আমায়। ভার্সিটির গেটে আছেন এখন। চল যাই।

স্বপ্নিলের আসার কথা শুনে রাহিতার মতো চমকে গেলো রিমি নিজেও। বিস্ময়ের রেশ কাটিয়ে বিড়বিড়িয়ে বলে,

—বউ হিসেবে মানেনা আবার অফিস ফেলে ভার্সিটি থেকে নিতে আসছে!

বিড়বিড় করে বল্লেও ওর কথা কর্ণগোচর হলো রাহিতার। চোখ পাকিয়ে বললো,

—অফিস থেকে ফিরছিলো বলেই এ সময় নিতে এসেছে নয়তো আসতেন না। আর বউ হিসেবে না, বন্ধু হিসেবেই লিফট দিতে এসেছেন৷ আর উল্টাপাল্টা ভাবিস না। শেষমেশ আমার মতোই হতাশ হতে হবে!

রাহিতার কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে ধরা পড়া চো’রের মতো হাসে রিমি। সে বুঝলো মেয়েটা কস্ট পেয়ে যথেষ্ট অভিমান করেছে স্বপ্নিলের উপর। তাই এভাবে কথাগুলো বলছে। অতঃপর বেঞ্চ থেকে উঠে ভার্সিটির গেটের কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় দুজনে!

________________

ভার্সিটির মেইন গেটের কাছাকাছি আসতেই ওদের ডিপার্টমেন্টের টপারের সাথে দেখা হয় রাহিতার। ছেলেটার নাম নিবিড়। মুখে না বললেও সেমিস্টারের শুরু থেকেই মনে মনে রাহিতাকে পছন্দ করে সে কিন্তু রিজেক্ট হওয়ার ভয়ে মুখে বলার সাহস হয়ে উঠেনি কখনো। যদিও ছেলেটা হ্যাংলা নয় তবুও বলতে গেলে যেকোনো বাহানায় রাহিতার সাথে কথা বলার সুযোগ খুজে সে। আজও চোখের সামনে রিমি ও রাহিতাকে হেটে আসতে দেখে তার ব্যতিক্রম ঘটলোনা। স্বপ্নিলের গাড়ি খুজতে খুজতে সামনে এগোচ্ছিলো রাহিতা। হঠাৎ করে নিজের সামনের নিবিড়কে দেখে কপালে ভাজ নিয়ে থেমে দাঁড়ায় সে।

—হাই রাহিতা। কি খবর? ক্লাস শেষে কোথায় গিয়েছিলে দুজনে?

—পার্কে গিয়েছিলাম ঘুরতে। কেন কিছু বলবে?

কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বলে উঠে মেয়েটা। সেদিক ভ্রুক্ষেপ না করে নিবিড় নিজের মতো করে বলে,

—না মানে৷ বলছিলাম সেদিন স্যারকে বললে না যে তোমার নতুন চ্যাপ্টারের কিছু ম্যাথে প্রব্লেম আছে? তুমি চাইলে আমি তোমায় এসব ম্যাথে হেল্প কর‍তে পারবো। ফ্রি টাইমে আমরা লাইব্রেরিতে বসে…

নিবিড়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই ওর পেছনে ভ্রু কুচকে দাঁড়িয়ে থাকা লম্বা চওড়া স্বপ্নিলকে চোখে পড়ে রাহিতার৷ সে গম্ভীরমুখে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। রাহিতাকে নিজের পেছনে তাকিয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে নিজেও পেছন ফিরে নিবিড়। ধূসর রঙা প্যান্টের সাথে সাদা শার্ট পরিহিত ফর্মাল গেটাপে থাকা সুদর্শন স্বপ্নিল নজর কাড়ে তার নিজেরও! এক হাতে স্যুট ঝুলিয়ে অপর হাতে ঘড়ি দেখে রাহিতার উদ্দেশ্যে ভারী কন্ঠে স্বপ্নিল বলে,

—কোথায় ছিলে? কতক্ষণ ওয়েট করছিলাম। কাজ শেষ হলে জলদি এসো।

—হু। রিমি, আসি থাক। আর আমরা এ ব্যাপারে পরে কথা বলবো।

শেষের কথাটুকু নিবিড়কে উদ্দেশ্য করে বলে রাহিতা। এতক্ষণ সব পর্যবেক্ষণ করা নিবিড় মাথা নেড়ে সায় দিলো তাতে। স্বপ্নিলের পেছন পেছন হেটে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছিলো রাহিতা। এ সময় আচমকা নিবিড়ের প্রশ্নে কদম থেমে যায় তাদের দুজনেরই।

—ভাইয়াটা তোমার কে হয়, রাহি?

নিবিড়ের প্রশ্নে কিছুটা বিব্রত বোধ করে রাহিতা। কারণটা হলো তার সামনে উল্টোদিক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্নিল। সে কি বলবে স্বপ্নিল তার কে? তার তো গলা ফাটিয়ে বলতে ইচ্ছে করে “এ সুদর্শন লোকটা আমার জামাই, আমার স্বামী, আমার একমাত্র ভালোবাসার মানুষ”। কিন্তু পরক্ষণেই ওর মনে এলো যে লোক ওকে বউ হিসেবেই মানেনা, বলা তো যায়না তালে স্বামী বললে আবার সে যদি রেগে যায়? তাই কিছুক্ষণ স্বপ্নিলের চওড়া শক্তপোক্ত পিঠের দিক তাকিয়ে কম্পিত গলায় বললো,

—উনি বাবার বন্ধুর ছেলে। আমায় ভার্সিটির সামনে দেখেছেন, তাই লিফট দিতে এসেছেন।

ওর কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো নিবিড়, চোখ বড় বড় করে তাকালো রিমি। আর স্বপ্নিল আগের জায়গাতেই তখনকার ন্যায় জমে আছে। এদিকে কোনোমতে কথাটি বলেই আর কোনোদিক না তাকিয়েই দ্রুত পায়ে গাড়ির দিকে হেটে চললো রাহিতা। নিজের অজান্তেই ওর পেছনে ফেলে গেলো এক বি’স্ফো’রিত স্বপ্নিলকে!

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here