#মেঘের_আড়ালে_বৃষ্টি
#ছাব্বিশ
#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা
রোদের পরিক্ষা শেষ হলো কাল। পরিক্ষা শুরু হওয়ায় পড়ার জন্য খুব একটা দেখা বা কথা বলে না প্রয়াস। তাছাড়া প্রয়াস এখন একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে তার ও সময় হয় না খুব একটা। প্রয়াসের এক কথা পরীক্ষা ভালো করতে হবে। রোদের ও পড়ালেখার প্রতি বিষন আগ্রহ তাই প্রয়াসের আদেশ মাথা পেতে নিলো। আজ পরিক্ষা শেষ হওয়ায় রোদের অনেকটা নিজেকে হালকা লাগছে আজ তাড়াতাড়ি খেয়ে রুমে চলে যাবে আজ সারারাত জেগে প্রয়াসের সাথে কথা বলবে সে। তাছাড়া যেদিন থেকে জেনেছে প্রয়াস তার বড় জেঠুর ছেলে সেদিন থেকে অনেক সতর্ক হয়ে গেছে রোদ।
কারণ রিফাত চাইছে দুই পরিবারকে মেলাতে তাই কাল সব ভাই-বোনদের এক হতে বলেছে রাহাদের বাসায়। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবে কি করে দুইভাইকে এক করা যায়। তাদের সাথে থাকবে রাহার বাবা আল মাহমুদ রহমান। কিন্তু দুইভাইকে মেলানো কি এতো টাই সহজ হবে কে জানে?
রোদ খেয়ে প্রয়াসকে কল দিয়েছে কিন্তু প্রয়াসের ফোন ব্যাস্ত এতোদিন পর কল দিচ্ছে তাও যদি এমন ব্যস্ত থাকে কেমন লাগে!
রোদের মেজাজ ক্রমশ বিগড়ে যাচ্ছে।এতোগুলো দিন সে অপেক্ষা করেছে প্রয়াসের সাথে কথা বলার। কিন্তু তিনি জানেন আজ রোদের পরিক্ষা শেষ কিন্তু এড়িয়ে যাচ্ছেন।
ঠিক আছে প্রয়াস রহমান আপনার ফোনও আর আজ আমি ধরবো না।
রোদের রাগ অনেকটা বেড়ে গেছে।মেঘলা কথা বলতে চাইলেও রোদ ভালো লাগছে না বলে এড়িয়ে যায়। এই মুহুর্তে তার কোন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। এখন সে ছাদে যাবে।রোদের যখন মন খারাপ করে তখনই ছাদে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার অনেক ভালো লাগে ছাদের আবহাওয়া। রোদের মন ভালো করে দেয়।
যেই ভাবা সেই কাজ।রোদ ছাদে দাড়িয়ে আছে। তার দৃষ্টি আকাশের দিকে, শীতের শেষে সারাদিন গরম পড়লেও সন্ধ্যার পর একটু শীতল থাকে পরিবেশ। ছাদে বাতাস বইছে, সেই বাতাসে রোদের কোমর অবদি খোলা চুল বাতাসে উড়ছে। কিছু চুল সামনের দিকে এসে পড়ছে। আজ রোদ অন্যদিনের মত অবাধ্য চুলকে বাধ্য করতে চাইছে না। কার্নিশ ঘেষে দাড়িয়ে আছে সে। এর মধ্যে প্রয়াস প্রায় ২০ বার কল দিয়েছে, রোদ ফোন ছাদে নিয়ে আসেনি।
রোদের মন সত্যি বিষন রকমের খারাপ। আকাশে হালকা মেঘ উড়ছে, হলুদ বাতির আলোয় সেজেছে পুরো শহর। জনশূন্য রাতের শহর যখন নিয়ন আলোয় সাজে দেখতে বেশ লাগে রোদের। তার মন হালকা করে ভালো হচ্ছে।হঠাৎ পেছন থেকে কারো হাতের স্পর্শ পেলো রোদ। ভয়ে পুরো শরীর বরফের মত হয়ে গেছে।এই ছাদে সে সবসময় আসে কিন্তু ভুত প্রেতের উপদ্রব কখনো দেখেনি। আজ তবে কি হলো।
চোখ বন্ধ করে দাঁত মুখ খিচে রোদ দোয়া ইউনুস পড়া শুরু করেছে। এর মধ্যে সে অনুভব করলো তার কানের পাশে কেউ ফিসফিসিয়ে বলছে, “ভালবাসি রোদেলা, অনেক অনেক অনেক ভালবাসি!
সাথে সাথে রোদের মন প্রান জুড়ে এক অন্যরকম ছন্দ খেলে গেলো। তার সাথে অনুভব করলো কার এই সুরালো কন্ঠ।
বুঝতে পারলেও চোখ খুলছে না রোদ
“কিছু অনুভূতি চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে হয়।
চোখ খুলেলে সব ধোঁয়াশা আর ঝাপসা হয়ে যায়!”
রোদ ও তাই করলো। প্রয়াস রোদের সাথে কার্নিশে হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। রোদের হাত প্রয়াসের হাতের মুঠোয়, দুটি শরীর হালকা দুরত্বে। তবে একজনের শ্বাস প্রশ্বাস অন্যজন শুনতে পাচ্ছে।
প্রয়াস চোখ বুজে রোদের দিকে তাকিয়ে আছে। হলুদ বাতির শহরে রোদকে কেমন স্নিগ্ধ লাগছে, প্রশান্ত লাগছে। রোদের পুরো মুখে মায়া উপচে পড়ছে। না রোদকে দেখে তার তেমন কোন শারীরিক উত্তেজনা অনুভব না করলেও, এই স্নিগ্ধ মুখটা দেখলে তার কি যেন হয়। মনের ভেতর সুখ খেলে যায়, প্রশান্তি লাগে মনে।
“কিছু অনুভুতি কখনো প্রকাশ করার মত যথাযথ শব্দ পাওয়া যায় না।”
রোদের কাছে আসায় পাশে থাকায় ঠিক সেরকমই শব্দহীন বৃষ্টির অনুভুতি অনুভব করে প্রয়াস। তবে আজকাল ভয় হয় প্রয়াসের রোদকে হারানোর ভয়!
রোদ চোখ খুলে তাকায় অনেকক্ষণ পর প্রয়াসের দিকে। প্রয়াস এই সময়টুকুতে রোদকে কিছুই বলে নি। বরং তার ভালো লাগছে রোদের মায়াভরা মুখটা দেখতে!
রোদের মনের একটু আগের যে রাগ ক্ষোভ ছিলো সব যেন মুহুর্তে উবে গেলো! কিছু অনুভুতি আসলেই অদ্ভুত!
রোদ কিছু বলছে না। প্রয়াস রোদের হাত তার মুঠোয় আরও শক্ত করে ধরে রোদের মুখোমুখি দাঁড়ায়। শান্ত স্বরে বলে, “রাগ করেছো?”
“করেছিলাম। কিন্তু সেটা এখন আর মনে নেই!”
প্রয়াসের দৃষ্টি স্থির! এই চোখের ভাষা বুঝতে পারে রোদ! প্রথম প্রথম বুঝতে না পারলেও আজকাল খুব বুঝে রোদ প্রয়াসকে। প্রয়াস ও বুঝতে পারে রোদ আগের থেকে কিছুটা পরিণত হয়েছে। ইন্টারে ভর্তি হওয়া সেই রোদের সাথে কিছুটা পার্থক্য আছে এই রোদের। আগে সব বলে বুঝাতে হতো কিন্তু আজকাল রোদ কেমন যেন সব বুঝে যায়। হয়তো পুরোটা না, তবে যা বুঝতে পারে তা অনেক।
দুজন অনেক কথা বলে, তবে আজকের কথায় তাদের দুজন নেই, আছে দুটি পরিবারের কথা। যাদের যেকোন উপায়ে এক করতে হবে সে যত কঠিনই হোক! কাল রাহাদের বাড়িতে সবাই বসবে তাই তখন রিফাতের সাথে কথা বলছিলো প্রয়াস।
“এতোদিন দেখা না হওয়ায় যে খারাপ লাগা কাজ করছিলো দুজনের মাঝে। কে কাকে কতটা মিস করেছে। এসব কিছুই কেউ কাউকে বললো না। তবে এই বলার চেয়ে দ্বিগুণভাবে বুঝে নিলো দুটি মন।”
কথা শেষ করে রোদ ছাদ থেকে নেমে যেতে চাইলে প্রয়াস রোদকে পেছন থেকে হাত টেনে নিজের কাছে টেনে নেয়। টাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে রোদ প্রয়াসের বুকে পড়ে। তখন বুঝতে পারে প্রয়াসের বুকের ভেতরকার শব্দ। সেই শব্দে রোদের মন প্রান জুড়ে প্রশান্তি বয়ে আনে।
প্রয়াস হালকা আদুরে গলায় বলে, “রোদ আমি জানি তুমি পরীক্ষা দিলে, স্কলারশিপ পেয়ে যাবে। আর তুমি চলে গেলে আমার খুব কষ্ট হবে!”
প্রয়াসের গলার স্বর ধরে এসেছে। আর কি একটা বলতে গিয়ে বলতে পারলো না।
রোদ প্রয়াসের বুকে থেকেই বলে, “আমি পরীক্ষা দিবো না প্রয়াস।”
রোদ খুব একটা প্রয়াসের নাম ধরে ডাকে না। যখন খুব আবেগী হয়ে যায় তখন বলে।।তাই রোদের এই নাম ধরে ডাকাটা প্রয়াসের কাছে দারুণ লাগে। মনের ভেতর ছন্দ তুলে!
প্রয়াস বলে, “না! প্রয়াসের স্ত্রী কখনো কম পড়ালেখা করলে হবে না। তাকে প্রয়াসের মত পড়ালেখা করতে হবে।”
রোদ বলে, “উঁহু।”
প্রয়াস রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, দেখা যাবে? অনেক রাত হয়েছে রোদ এবার বাসায় যেতে হবে।”
রোদ প্রয়াসের বুক থেকে মাথা তুলে তাকায়। প্রয়াস স্মিত হেসে রোদের কপালে ভালবাসার স্পর্শ এঁকে দেয়। রোদ একটু কেঁপে উঠে। প্রয়াস রোদকে ছেড়ে দেয়।
রোদ দরজা ছাদের দরজা খুলতে গিয়ে বুঝতে পারে ছাদের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। রোদের মনের ভেতর অজানা এক ভয় কাজ করে।
প্রয়াস হেসে বলে, “মেঘলা দরজা দিয়ে গেছে যেন কেউ বুঝতে না পারে তুমি ছাদে আছো। তুমি কল রিসিভ না করায় মেঘলাকে কল দিয়েছিলাম।”
রোদের প্রানে দম আসে। প্রয়াস মেঘলাকে কল দিলে মেঘলা দরজা খুলে দিয়ে যায়।
রোদ প্রয়াসকে বিদায় দিয়ে যেতে নিলে প্রয়াস রোদকে প্যান্টের পকেট থেকে তিনটি গোলাপ এগিয়ে দেয়।
রোদ বলে, “মনে আছে তাহলে।”
প্রয়াস স্মিত হেসে বলে, “থাকবে না বলছো!
রোদ উত্তরে শুধু হাসে।
দুজন বাসায় যায়। ঘুমাতে যায় মনের ভেতর এক আকাশ প্রশান্তি নিয়ে। দুজনই জানে তারা একে অন্যকে ভাবতে ভাবতে ঘুমাতে যাবে।
আর দুজনের স্বপ্নে আসবে দুজন। এই অনুভূতি শুধু তারাই জানে যাদের জীবনে সত্যিকারের ভালবাসা এসেছে।
জীবন সুন্দর, জীবন সহজ,আবার পরক্ষনেই সেই জীবন জটিল থেকে জটিলতর!
ভালো থাকুক ভালবাসা।
★★★
রাহাদের বাসায় বসে আছে সবাই। রোদেরা তিন ভাইবোন, রাহারা দুই বোন। আর প্রয়াসরা দুই ভাইবোন। আর আছে আল মাহমুদ রহমান আর তার স্ত্রী রাহেলা বেগম।
বেশীর ভাগ কথা বলছে রিফাত, প্রয়াস আর আল মাহমুদ বাকিরা শুধু শুনছে।
রিফাত বলে, “কোন মতেই আমাদের দুই বাসায় যেন জানতে না পারে আমাদের এই পরিকল্পনার কথা। যদি জানে তাহলে গড়ার আগেই সব ভেঙে যাবে। আর এবার যদি আরও ভাঙে তাহলে আর কিছুই করার থাকবে না। তাই সবাই খুব সাবধান!”
সবাই সতর্ক থাকবে বলে সম্মতি জানায়। তারা একটা পরিকল্পনা করে।
প্রয়াস বলে, আমি জানি আমার বাবা চাচ্চুকে অনেক ভালবাসে কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে চায় না। কোন এক কারনে সেজো চাচ্চু তুমি বলো কি সেই কারণ যার জন্য দুইভাই এত দূরে?”
আল মাহমুদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে লম্বা দম নিয়ে বলা শুরু করেন।
“ছোট বেলা থেকেই বড় ভাই, মেজো ভাই আর আমাকে অনেক ভালবাসতেন। যত্নবান আর দায়িত্বশীল ছিলেন বড় ভাই আমাদের ব্যাপারে।
আমরা ছোট দুইভাই ও বড় ভাইকে অনেক ভালবাসি। ভাইয়ের কোন কর্তব্য কখনো তিনি অবহেলা করেন নি। আব্বা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেছেন বড় ভাই। তাই বলা যায়, বড় ভাই বাবার মত সব করেছেন তিনি। মেজো ভাই কখনো বড় ভাইকে জিজ্ঞেস না করে কিছু বলতেন না।
এর মাঝেই বড় ভাই মেজো ভাইয়ের বিয়ে ঠিক করে আমার এক খালাতো বোনের সাথে। বিয়ের বিষয়ে বেশি কিছু জানানো হয়নি মেজো ভাইকে। আসলে হুট করেই বিয়ে ঠিক করতে হয়। কারণ খালুর শরীর খুব খারাপ হওয়ায় তিনি চেয়েছিলেন তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাক। বাড়ি এসে যখন বড় ভাই মাকে বিয়ের কথা বলে ঠিক সেই মুহুর্তে মেঝো ভাই বিয়ে করে বউ নিয়ে আসে। মানে রিফাতের মাকে বিয়ে করে আনে।
বড় ভাইকে না জানানো। অন্যদিকে খালুর সাথে কথার খেলাপ হওয়া সব মিলিয়ে বড় ভাইয়ের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তাই তিনি মেঝো ভাইকে দুটি অপশন দেন। এক, মেঝো ভাবিকে ডিভোর্স দেয়া। দুই, বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া।
মেঝো ভাই দুই নাম্বার অপশন বেচে নিয়ে চলে যান বাড়ি থেকে। সেদিন বড় ভাই খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। তিনি ভাবতে পারেন নি মেঝো ভাই এমন করবে। যে ভাইদের জন্য তিনি এখনও বিয়ে করেন নি নিজের কথা ভাবেন নি। সেই ভাই এমন করলে তা মেনে না নেয়া অস্বাভাবিক কিছু না।
আবার মেঝো ভাই ভেবেছেন যে ভাই তাকে জিজ্ঞেস না করে বিয়ে ঠিক করেন। আর তার নতুন বউয়ের সামনে তাকে অপমান করেন, তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে দেন। সেই ভাইয়ের সাথে কোন সম্পর্ক তিনি রাখবেন না। এভাবেই শুরু হয় ভাঙ্গন। আর শেষ হয়ে যায় দুটি সম্পর্ক। আর একটি সুন্দর পরিবার ভাগ হয়ে যায় দুই ভাগে।
এভাবেই শুরু হয় ভাঙ্গন আর সেটা যে এতো বছর পর্যন্ত চলবে আমরা কেউই ভাবিনি।
মেঝো ভাইয়া চলে যাওয়ার পর বড় ভাই অনেক কষ্ট পেয়েছে কিন্তু বুঝতে দিতো না কাউকে। কিন্তু আমরা, বুঝতাম সব কিছু আড়াল করা যায় না।
তারপর মায়ের অনুরোধে বড় ভাইয়া সেই খালাতো বোনকে বিয়ে করে। রেনু আপা, যে বর্তমানে প্রয়াসের মা।
এরপর তারা কেউ কারো সাথে যোগাযোগ করেনি। মেঝো ভাই ক্ষমা চাইলে হয়তো বড় ভাই ক্ষমা করে দিতো। কিন্তু বড় ভাই বিয়ে করেছে সেই মেয়েকে। যদি বিয়ে করেই নেয় তাহলে বড় ভাই কেন মেঝো ভাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিলো?
এসব ভেবে মেঝো ভাই রেগে যায়। তারপর আর তারা কেউ কারো মুখ দেখে না।
তবে রোদ হওয়ার পর রোদকে আমি লুকিয়ে এই বাড়িতে নিয়ে আসতাম। বড় ভাই লুকিয়ে দেখে যেতো রোদকে। আমি কাউকে বলিনি এই কথা আজ তোদের বলছি।”
রিফাত বলে, “যেখানে সব সমস্যা মিটে গিয়েছে সেখানে কেন এতো বছর তারা দূরে রয়েছে? কেন তারা অভিমান ভাঙেনি?”
আল মাহমুদ বলেন, “আসলে বড় ভাই ভেবেছে মেঝো ভাই তার ভুলের জন্য স্যরি বলবে। তখন বড় ভাই আর রাগ করে থাকতে পারবে না। অন্যদিকে মেঝো ভাই ভাবে বড় ভাই নিজে এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যাবে। অথচ তাদের কেউই জানতো না,
“তাদের এই বিন্দু বিন্দু অভিমান একদিন সিন্ধুতে পরিনত হবে।আর সেই সিন্ধু ভেঙে ফেলার শক্তি তাদের কারো থাকবেনা।”
“যেকোন সম্পর্কে অল্প অভিমান থাকতেই তা শেষ করা প্রয়োজন। যদি তা না করে সেই ক্ষুদ্র অভিমান কবে যে এক আকাশ সমান হয়ে যায় তা কেউ জানেনা।”
আমার ভাইদের ক্ষেত্রে ও তাই হলো।
ভেঙ্গে গেল আমাদের সুন্দর একটি পরিবার। তারপর থেকে আমার হাসিখুশি দুই ভাই হয়ে গেলো গম্ভীর।” এসব কথা বলতে বলতে আল মাহমুদ রহমানের গলা ধরে আসে।
অতীতের স্মৃতি ভেসে ওঠে তার দৃশ্যপটে।কত সুন্দর সুখের দিন ছিলো তাদের। ফিরে পাবে কি সেই সোনালী দিনগুলো?
রিফাত আর প্রয়াস দুজন এগিয়ে আসে চাচার কাছে। দুজন দু’পাশে বসে চাচ্চুর কাধে হাত দিয়ে ভরসা দেয়।
“আমরা সব ঠিক করে ফেলবো চাচ্চু।আমরা তোমাদের কথা দিচ্ছি, তোমার আগের দুই হাসি খুশী ভাইকে আমরা ফিরিয়ে দিবো। ফিরে আসবে সেই সোনালী দিনগুলো।”
প্রয়াস আর রিফাতের মিল দেখে রোদ খুব খুশী হয়। আজকে এক অন্য প্রয়াসকে দেখলো সে। দ্বায়িত্ববান প্রয়াস। আর বুঝতে পারলো প্রয়াস অনেক বুদ্ধিমানও। আর তার সাথে বুঝতে পারলো সে কতটা ভাগ্যবতী যার কারনে প্রয়াস তার হয়েছে। পরক্ষনেই মনে এক অন্য ভাবনা আসলো, “আসলেই কি পেয়েছে সে প্রয়াসকে?”
তবে এটা নিশ্চিত প্রয়াস আর রিফাত দুই পরিবারকে এক করবেই!
চলবে….