যদি সত্যি টা জানতে
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ৪
।
আদ্রিতাঃ ঠিক তখনি…..
।
।
।
বাবাঃ এতখন যা বললে সব সত্যি… ( বাইরে থেকে এসে দরজার বাইরের থেকে সব কথা গুলা স্পষ্ট ভাবে শুনতে পেয়েছি)
।
।
আদ্রিতাঃ হ্যা আমি আপনাকে বলেছিলাম না যে আমেরিকা থেকে একজন ইন্টারভিউ নিতে আসবে সে আর কেউ নয় আপনার ছেলে সাঈদ আমি যখন দেখা করতে গেলাম তখন কী বললো জানেন…
।
বললো আগের সাঈদ নাকি মরে গেছে আমি যেনো আমার মেয়ে আর ওনার জীবনে কাটা হয়ে না দাড়াই আরো বললো চাকরি লাগবে তো হয়ে যাবে তবুও যেনো তাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাই বাবা আপনিই বলুন আমি নিজের মেয়েকে কীভাবে ভুলে যাবো….
।
।
বাবাঃ সে তো ঠিকি বলেছে তুমি তো নিজেই নিজের মেয়েকে তার কোলে তুলে দিয়ে সংসার ভেঙ্গে চলে গিয়েছিলে আমিও না বুঝে কত কী বলে ফেলেছি রাগের মাথায় ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি….
।
।
আদ্রিতাঃ আমি তখন বাবা সত্যি টা জানতাম না আর আমিও এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম যে ওনি এমনটা করতে পারে কিন্তু কী জানাতো বাবা যখন মা বাবা বোন তিনজনে বললো ওনি জোরজোবস্তি করেছে আমার বোনের সাথে তখন নিজের উপর থেকে আস্থা উঠে গেছিলো আমি আবেগের বসে সব কিছু বলে ফেলেছি….
।
।
বাবাঃ একটা কথা কী জানা তো বউমা আবেগ কিন্তু একদিন ঠিকি বিবেকের কাছে হেরে যাবে তুমি চাইলেও হয়তো এই সম্পর্কটাকে আর জোড়া লাগাতে পারবে না…
।
সাঈদ ক্ষমা করলেও তোমার মেয়ে তোমাকে কখনো ক্ষমা করবে না এগারো টা বছর মাতৃস্নেহ পাই নি পেয়েছে বাবার ভালোবাসা আর আমি যদি ভুল না হই এত দিন তোমার মেয়ে সব জেনে গেছে কী জেনো নাম কী ছিলো ও তাসফিয়া…..
।
।
।
আদ্রিতাঃ ঠিকি বলেছেন বাবা হয়তো আমার কপালে সুখ লেখাই নেই…
।
।
।
।
সাঈদঃ প্রত্যক দিন ছোটো বাচ্চা মতো খাইয়ে দিতে হয় তোমাকে…
।
তাসফিয়াঃ আমি তো এখনো ছোটোই আছি বড় হয়ে গেলেও তেমাকে খাইয়ে দিতে হবে…
।
সাঈদঃ 😱😱
।
তাসফিয়াঃ😁😁😁😁
।
আচ্ছা আব্বু তুমি কিন্তু আমার কাছ থেকে একটা কথা লুকাইছো…
।
সাঈদঃ কী কথা লুকাইছি শুনি🙄🙄
।
তাসফিয়াঃ এই যে তোমার একটা বোন আছে এটা তো কখনো বলো নি 😒
।
সাঈদঃ 🤣🤣🤣😂🤣😅🤣😂 বোন আবার আমার সত্যি তুমি হাসালে….
।
তাসফিয়াঃ আছে না তো কী তাহলে আমি যে সকালে তোমার বাসায় গেলাম ওখানে একটা মেয়ে দাদু কে বাবা করে বলছিলো….
।
।
সাঈদঃ কীহ্ 😱 ( কথা টা শুনে নিজেরি অবাক লাগলো আমার তো কোনো ভাই বোন নেই তাহলে কী আদ্রিতা বাবা মার সঙ্গে থাকে নাহ এটা কীভাবে হতে পারে সে তো অনেক আগে ছেড়ে চলে গেছে )
।
।
সাঈদঃ হবে হয়তো কোনো কাজের বুয়া টুয়া…
।
তাসফিয়াঃ ওও এখানে কী ওরা বয়স্ক মানুষদের বাবা বলে…
।
সাঈদঃ হুম😁
।
তাসফিয়াঃ আব্বু বাংলাদেশ টা আজব না….
।
সাঈদঃ হুম কিছু টা আচ্ছা আব্বু আমি একদিন দাদু দাদির সঙ্গে থাকবো….
।
সাঈদঃ কেনো 🙄
।
তাসফিয়াঃ এমনি প্লিজ আব্বু আমরা তো চলে যাবো আর হয়তো কখনো আসা হবে না একদিন শুধু মাট একদিন প্লিজ…
।
।
সাঈদঃ আচ্ছা এত করে বলছো যেহেতু…
।
।
তার পর তাসফিয়া কে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম পরের দিন সকাল বেলা নিজে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসলাম কিন্তু ভিতরে যাওয়া হলো না…
।
।
তাসফিয়াঃ কলিং বেলটা বাজাতেই কাজের বুয়া টা দরজাটা খুলে দিলো..
।
।
আদ্রিতাঃ দরজাটা খুলতেই হতবাক হয়ে গেলাম নিজের মেয়েকে নিজের চোখের সামনে দেখেও জরিয়ে ধরতে পারছি না…
।
তাসফিয়াঃ আমি ভিতরে যাচ্ছি কাপড়ের ব্যাগ টা নিয়ে আসেন আর আপনি তো এ বাড়ির কাজের বুয়া তাই না…
।
আদ্রিতাঃ কে বললো আমি বাসার কাজের বুয়া…
।
তাসফিয়াঃ আমার আম্মু…
।
আদ্রিতাঃ ও ভালো আচ্ছা তোমার আম্মু কী করে ( তাহলে বিয়ে করে ফেলেছেন ওনি😥😓)
।
তাসফিয়াঃ মিঃ সাঈদ আমার আম্মু নেই জানেন তো আমার আব্বুই আমার কাছে সব আমার আব্বুই আমার মা পৃথিবীর সব কিছু….
।
।
আদ্রিতাঃ কী করে বলবো সেই হতভাগা মা আমি…
।
তাসফিয়াঃ ব্যাগ টা ভিতরে নিয়ে আসেন…
।
আদ্রিতাঃ কী আছে এর ভিতর…
।
তাসফিয়াঃ কিছু কাপড় আমি আজকে এখানে থাকবো….
।
আদ্রিতাঃ কথাটা শুনে কতটা যে খুলি হললাম বলে বুঝাতে পারবো না একটা দিন আমার মেয়েটার সঙ্গে কাটাতে পারবো….
।
।
ঠিক তখনি বাবা
।
।
বাবাঃ তুমি….
।
তাসফিয়াঃ হুম….
।
বাবাঃ তুমি কেনো কাল বলো নি তুমি আমার নাতনি আমার ছেলের মেয়ে…
।
তাসফিয়াঃ দাদু তুমি কীভাবে জানলে এসব কে বললো তোমায়…
।
বাবাঃ তোর মা বলছে…
।
তাসফিয়াঃ সে তো অনেক আগেই আমাকে আব্বুর কাছে রেখে চলে গিয়েছে সে কীভাবে বললো…
।
।
বাবাঃ হুম কিন্তু তুমি জানো কে তোমার মা…
।
তাসফিয়াঃ না কখনো দেখি নি…
।
বাবাঃ তোমার পিছনে যে দাড়িয়ে আছে সেই তোমার মা আদ্রিতা…..
।
তাসফিয়াঃ সত্যি বলছো দাদু পিছনে তাকাতেই….
।
আদ্রিতাঃ নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে আমিই তোমার মা জরিয়ে ধরে এগারো টা বছর কত কষ্ট কাটিয়েছি আমি ছাড়া আর কেউ জানে না….
।
।
তাসফিয়াঃ তুমি কেনো আমাকে আর আব্বুকে একলা রেখে চলে গেছিলে আব্বু তো কিছু করে নি,…
।
।
আদ্রিতাঃ তখন বুঝতে পারি নি আজ বুঝতে পারছি…
।
।
তাসফিয়াঃ যদি তুমি সত্যি টা জানতে যে তুমি আব্বুকে ছেড়ে যাওয়ার পর কতটা কষ্ট পাইছে তাহলে কখনো ছেড়ে যেতে পারতে না…
।
।
চলবে
🙂