রংধনুতে প্রেমের বাড়ি পর্ব – ১১

#রংধনুতে_প্রেমের_বাড়ি
#পর্ব_১১
#ফারজানা_মুমু

বসন্তের আরো দুটো দিন অতিবাহিত হলো। চাঁদ ভদ্র বাচ্চার মত থাকল চৈতির সঙ্গে। দুটো দিন ছিল অক্ষর-চৈতির সুন্দরতম সময়। তিনবেলা রান্না করাটা ছিল অক্ষরের প্রধান ও মুখ্য কাজ। দু’দিন পর ঝুমুর-চয়ন বাসায় আসে কিন্তু ঝুমুরের মুখে নেই হাসি। চোখ দুটো লাল, ক্লান্ত মুখশ্রী। স্বামীর সাথে ঘুরাঘুরি ভালো হয়নি বুঝা যাচ্ছে। চৈতি মনোযোগ দিয়ে ঝুমুরকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। হাসিখুশি থাকা মেয়েটির মুখে কষ্ট,দুঃখের চিহ্ন। সন্দেহ গলায় প্রশ্ন ছুড়লো, ভাবী তোমার কী হয়েছে?

হঠাৎ করেই চৈতির কণ্ঠ ঝুমুরের বুকে কাচের মত বিধল। চেত করে জবাব দিল, আমায় নিয়ে ভাবতে হবে না তোমাদের। ভাইবোন দুজনই সমান। অন্যর কথা ভাবতে চায় না স্বার্থপর।

আঁধার ঘনিয়ে আসলো চৈতির জীবনে। হঠাৎ ঝুমুরের কি হলো জানার জন্য মন উৎসুখ করে উঠল। চয়ন যে খারাপ কিছু করেছে বুঝতে বাকি নেই চৈতির কিন্তু এখন সে ঝুমুরকে প্রশ্ন করবে না। মেয়েটার মন খারাপ অযথা কষ্ট বাড়িয়ে লাভ নেই তাই তো ভাই আসার পর কথা বলবে সামনাসামনি।

****

রাত আটটা। চয়ন বাসায় এসেছে আধা ঘণ্টা আগে। সকাল থেকে পানি ছাড়া অন্যকিছু মুখে তুলেনি ঝুমুর। চৈতি বললেও শুনেনি বরং উল্টো ঝাড়ি দিয়েছে। ঝুমুর খায়নি বলে সেও খাবার মুখে তুলতে পারেনি। চাঁদকে খাইয়ে-দাইয়ে নিজের সাথে রেখেছে। চয়নের উপর রাগটা চাঁদের উপরে তুলতে চাইছে ঝুমুর, বুঝতে পেরে চৈতি চাঁদকে ঝুমুরের কাছ থেকে দূরে রেখেছে।
-” চাঁদ মামুনি তুমি ঘুমিয়ে পড় আমি আসছি।

চৈতি উঠতে যাবে তখনই ওড়না ধরে চাঁদ। ছোট্ট মুখটি তখন বিষাদের ছায়া। কান্না মাখা গলায় বলে, মাম্মা , পাপা ঝগলা কলেছে তুপ্পি? মাম্মা আমায় কোলে নেয় না। মারে শুধু। আমায় ওলা ভালোবাসে না তাই না!

চাঁদকে বুকে জড়িয়ে ধরে চৈতি। বাবা মায়ের অভিমানের দেওয়ালে চাপা পড়ে আছে ছোট্ট চাঁদ। মনেমনে সিদ্ধান্ত নিলো আজকেই ভাই-ভাবীর সম্পর্ক ঠিক করবে। যেভাবেই হোক।
-” মামুনি, তোমায় আমরা ভীষন ভালোবাসি। তোমার মাম্মা পাপাও ভালোবাসে। আজ তুমি আমার সাথে থাকো দেখবে সকাল হলেই সব ঠিক হয়ে গেছে।
-” তুমি ম্যাজিক কলবে?
-” হ্যাঁ তো আমি ম্যাজিক করব। আমার চাঁদ মামুনির জন্য আমি আজকে ম্যাজিশিয়ান হয়ে যাব। তুমি ঘুমিয়ে পড়। জেগে থাকলে আমি ম্যাজিক করতে পারব না।
-” সিক্কেট তাই না?
-” হুম। যাও ঘুমাও।

চাঁদ বিছানায় চোখ বন্ধ করল। চৈতি মাসি-পিসির ছড়া, চাঁদ মামার ছড়া বলে ঘুম পাড়িয়ে দিল। চাঁদ ঘুমাতেই হাঁটা দিল ভাই-ভাবীর রুমে।

চয়নের রুমের কাছে আসতেই শুনলো ধ’মকের শব্দ। ঝুমুরকে কথা শুনাচ্ছে। আরেকটু মনোযোগী হয়ে কথাগুলো শোনার জন্য আড়ালে দাঁড়াল। শুনতে পেল চয়ন বলছে,
-” তোমার ভাইকে বলবে আমার বাসা থেকে বের হয়ে যেতে। লজ্জা করেনা আমার বোনের সাথে প্রেম করতে। ছি ওনি কী ভুলে গেছেন চৈতি ওনার কত ছোট হবে।

ঝুমুরও কম যায় না। চয়নের মুখের উপর বলতে লাগল, তোমার বোন তাহলে ধোঁয়া তুলসী পাতা? আমার দাদাভাই বাসা থেকে বের হলে তোমার বোনকেও বের হতে হবে। তোমার বোনের দোষ নেই? সে কী আমার দাদাভাইয়ের সাথে প্রেম করছে না?

-” আমার রাগ উঠাবে না ঝুমুর। আমি কিন্তু বাধ্য হবো গায়ে হাত তুলতে। ধৈর্যের পরীক্ষা নিও না।

-” বোনের কথা বলতেই রাগ উঠে যাচ্ছে তাহলে আমার আপন বড় ভাইকে নিয়ে যখন বাজে কথা বলো আমার রাগ উঠে না? তোমার বোনের বয়স এত কমও নয় যে তাঁর সাথে আমার দাদাভাই জোরাজোরি করবে। চৈতি পাত্তা না দিলে আমার ভাই তোমার বোনের সাথে প্রেম করতো না। আগে নিজের বোনকে সামলাও তারপর আসবে আমার দাদাভাইকে নিয়ে কথা বলতে।

চয়ন এবার অসম্ভব একটি কাজ করে বসল। ঝুমুরের গায়ে হাত তুলল। ঝুমুর গালে হাত দিয়ে অশ্রু চোখে তাকিয়ে রইল ভালোবাসার মানুষটির মুখ পানে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। চয়ন তাঁর গায়ে হাত তুলেছে সে ভাবতে পারছে না। চোখের পানি এবার রাগে পরিণীত হলো। ক’লার চেপে ধরল চয়নের তারপর স্পষ্ট ভাষায় বলল, আমাকে নিয়ে ঘুরাঘুরি ছিল তোমার প্ল্যান তাই তো। আমাকে একা রেখে তুমি বাসার আশেপাশে সময় কাটিয়েছ। আমি ফোন দিলে বন্ধ করে রেখেছ। ভালোবাসার কথা বলে বিশ্বাসঘা’ত’ক’তা করেছ। বিশ্বাস করে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে এখানে রেখে তোমার সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম আর তুমি কী করলে? আমাকে রিসোর্টে তালাবন্ধ করে চলে আসলে। আমার যদি কিছু হয়ে যেত তখন? আমাকে নিয়ে ভাবার সময় আছে তোমার? তোমার সময় তো সব তোমার বোনকে নিয়ে। তাহলে থাকো তোমার বোনকে নিয়ে আমি এক্ষুনি চলে যাব আমার মেয়েকে নিয়ে। স্বার্থপর মানুষের সাথে আমরা থাকবো না।

ঝুমুরের মুখ চে’পে ধরল চয়ন। রক্তিম কণ্ঠে বলল, আমার বাসা থেকে বের হলে মে’রে ফেলব। তুমি আমার শুধুই আমার। আমাকে একা রেখে যাবার কথা বললে খু’ন করে নিজেকে শে’ষ করে ফেলব। আগেই বলেছি আমার জীবনে তুমি, চাঁদ ও চৈতি তিনজন নারীর অবস্থান অনেক। রাগ দেখাবো, ভালোবাসা দেখাবো তাই বলে চলে যাবে তা মানতে পারবো না।

-” আমি ব্যা’থা পাচ্ছি চয়ন।

চৈতির চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। তারই জন্য ভাই-ভাবীর মাঝে ঝ’গড়া। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসলো মুহূর্তেই। দো’ষা’রো’প করতে লাগলো নিজেকে। উল্টো হাতে চোখ মুছে শব্দ করে বলল, আসবো?

চৈতিকে দেখা মাত্রই চয়ন ঝুমুরের মুখ ছে’ড়ে দিল। ঝুমুর চোখ মুছে উল্টো ঘুরে দাঁড়াল। চয়ন স্বাভাবিক ভাবেই বলল, কিছু বলবি?

-” চাঁদ কান্না করছে। ছোট্ট মেয়ের সামনে ঝ’গড়া না করলে চলে না ? মেয়েটার কষ্ট তোমরা বাবা মা হয়ে বুঝ না। এই বয়সে যদি দেখে ঝ’গড়া তাহলে ওর মনের ভিতরে কী চলবে বুঝতে পেরেছ?

চয়ন তখন ঝুমুরকে উদ্দেশ্য করে বলল, চাঁদকে নিয়ে আসো।

ঝুমুর সময় ন’ষ্ট করল না। দ্রুত পায়ে রুম ত্যাগ করল। চৈতি তখন চয়নের সামনে দাঁড়িয়ে শান্ত কণ্ঠে বলল, আমায় নিয়ে তোমরা ঝ’গড়া করো না ভাইয়া। আমার কষ্ট হয়। ভাবি ভীষন ভালো। ভাবির মত মেয়ে তুমি দুটো পাবে না। ভুল বুঝে হারাতে দিও না। মিটমাট করে নাও। মেয়েটা খুবই কষ্ট পেয়েছে। যে হাতে থা’প্প’ড় মে’রে’ছ সেই হাত দিয়ে গালে ভালোবাসার স্পর্শ দাও দেখবে কষ্ট কম হবে।

চৈতি পা বাড়াল তখনি পিছন থেকে চয়ন বলল, অক্ষরের সাথে কথা বলা আজকের পর থেকে বন্ধ। আমি কোনোদিন অক্ষরকে বোন জামাই হিসেবে মেনে নিবো না।

ছোট্ট একটা দম ছাড়ল চৈতি কিন্তু কথা বলল না। নিজের রুমে এসে দেখল ঝুমুর কান্না করছে। হাত রাখল কাঁধে। চৈতির স্পর্শ পেয়ে ঝুমুর জড়িয়ে ধরল চৈতিকে। তারপর বলল, আমি ভীষন খা’রাপ চৈতি। তোমার সাথে খা’রাপ ব্যাবহার করেছি আমায় ক্ষমা করা দাও প্লিজ। যা করেছি সব রা’গের বশে।

চৈতি ঝুমুরকে জড়িয়ে ধরল। ক্রন্দন মিশ্রিত কণ্ঠে বলল, আমার জন্যই তোমাদের মাঝে অ’শান্তি ভাবি পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও।
-” দাদাভাইয়ের সাথে তুমি প্রেম করছ?

জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ল তারপর বলল, হুম ভাবি। ভেবেছিলাম তোমায় প্রথম জানাবো। সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু এভাবে সারপ্রাইজড হবো ভাবিনি।

-” চয়ন মেনে নিবে না।
-” জানি ভাবি কিন্তু আমি কি করব? তোমার ভাইকে ছাড়া বেঁ’চে থাকা দায় আমার।
-” যা বলব মানতে পারবে তো?

হকচকিয়ে উঠল চৈতি। ঝুমুর কী বলবে বুঝতে চাইলো। কাঁপা গলায় বলল, কী করতে হবে আমাকে?
-” আজকেই তোমরা বিয়ে করবে লুকিয়ে। বিয়ে হলে চয়ন কিছুই করতে পারবে না। পুনরায় ঘটবে পাঁচ বছর আগের ঘটনা।

পাঁচ বছর আগে অক্ষর চয়নকে বোন জামাই হিসেবে মানতে চায়নি। কারণ চয়নকে তার ভালো লাগতো না। ছেলেটা কাজের থেকে অলসতায় বেশ পারদর্শী । অলস প্রজাতির লোক পছন্দ নয় অক্ষরের কিন্তু তারই একমাত্র ছোট বোন কিনা প্রেম করে অলস প্রজাতির গুরু চয়নের সাথে। রা’গা’রা’গি’র এক পর্যায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পালিয়ে বিয়ে করবে তারা। ভার্সিটির কথা বলে চয়নের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে ঝুমুর। বিয়ের পর অক্ষর এ-ব্যাপারে কথা বলেনি। চুপচাপ নিজের কাজ করেছে।

চৈতি তখন নিরাশ হয়ে বলে, তোমার ভাই পালাতে রাজি হবে না ভাবি। ওনি ভীষন ঘা’ড়’ত্যা’রা।

-” সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হয় ভুলে গেছো? দাদাভাই যদি তোমার প্রতি কনসার্ট থাকে তাহলে ইমোশনাল ব্ল্যাক’মে’ই’ল কর দেখবে বাধ্য হবে বিয়ে করতে। আমি চাঁদকে নিয়ে যাচ্ছি। তুমি এই সুযোগে বাসা থেকে বের হয়ে দাদাভাইকে ফোন দাও। তোমার ভাই ভালোবেসে বিয়ে করতে পারলে আমার দাদাভাই কেন পারবে না? দুজনেই তো ভালোবেসেছে। তাহলে একজন পূর্ণতা লাভ করবে আরেকজন শূন্যতা কেন? অন্যায় হবে না?

একটু আগে রা’গী-রা’গী মেয়েটা হঠাৎ বদলে গেল। যার জন্য বরের হাতে থা’প্প’ড় খেয়েছে তাকেই সাহায্য করার জন্য আইডিয়া দিল। চৈতি কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। অক্ষরকে সে ভালোবেসে ফেলেছে তাকে ছেড়ে অন্য কাউকে সে বিয়ে করতে পারবে না। থাক না বড় ভাইয়ের অমতে বিয়ে। সে নিজেই তো আরেকজনের বোনকে না জানিয়ে বিয়ে করেছে তাহলে নিজের বোনের ক্ষেত্রে নিষেধ কেন? পুনরাবৃত্তি ঘটবে আবার। মনে করিয়ে দিবে কষ্টের পাহাড়।

চৈতি ফোন দিল অক্ষরকে……..
-” হ্যালো?
-” বলুন ম্যাম।
-” কোথায় আপনি?
-” এই তো বাসার কাছাকাছি। কী হয়েছে?
-” আপনি মোড়ে দাঁড়ান আমি আসছি।
-” পাগল হয়েছেন? রাতে আপনি বাসা থেকে ভুলেও বের হবে না।
-” আজ আপনার নিষেধ শুনবো না। যদি আমার কথা অমান্য করেন তাহলে আমায় আপনি পাবেন না।
-” মানে?
-” দাঁড়ান আসছি।

ফোন কাটল চৈতি। ভয়ে চোখ মুখ শুকিয়ে কাঠ। ঝুমুরের কথা শুনে চয়নকে কষ্ট দিতে চাচ্ছে না কিন্তু নিজের কথা ভেবে আজ স্বার্থপর হতে হচ্ছে।

ড্রইং রুমে পা বাড়াল দেখল ঝুমুর দাঁড়িয়ে আছে। চৈতিকে দেখা মাত্রই বলল, দাদাভাই সহজে রাজি হবে না। বুদ্ধি দিয়ে রাজি করাবে। যদি না পারো ব্ল্যা’ক’মে’ই’ল করবে। আমি আছি তোমার সাথে। আর শুনো বিয়ের পর চয়নকে কিছু বলতে হবে না। সময় হলে আমিই বলব। আমি দাদাভাইকে ফোন দিয়ে জানাবো সে যেন এ বাড়িতে না আসে। নতুন ফ্ল্যাট নেয়। তুমি চলে এসো বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলেই। বুঝেছ?

চৈতি মাথা ঝাঁকাল। সদর দরজা থেকে বেরিয়ে পড়ল। ঝুমুর দরজা বন্ধ করে বিড়বিড় করল, চয়ন এবার দেখো আপন মানুষের কাছ থেকে ধোঁকা পেলে কত কষ্ট হয়। তোমার কথায় আমার দাদাভাইকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি কিন্তু শেষে কী হলো? তুমি আমার গা’য়ে হা’ত তুললে? ভালোবাসার বিনিময়ে থা’প্প’ড় বাহ। তোমাকে তো আমি ছেড়ে দিবো না। মিথ্যা বলেছো আমায়। ভালোবাসার কথা বলে আটকে রেখেছিলে। তাই তোমারও শা’স্তি প্রয়োজন। তুমি আমায় পেয়েছ তাই আমার উচিৎ তোমার বোনের ভালোবাসা পাইয়ে দেওয়া। বড় ভাবি এবং বোনের দায়িত্ব পালন করলাম। জানি ভুল পথে কিন্তু তুমি যে ওদেরকে এক হতে দিবে না।
-” ঝুমুর কোথায় তুমি? পানি আনতে এত সময় লাগে?

চয়নের চিৎকারে ঝুমুর সজ্ঞানে ফিরে আসলো। সদর দরজা বন্ধ করে পানি নিয়ে নিজ রুমে হাঁটা দিল। আজ সে ভীষন খুশী। আবারও মিলন হবো দুটো হৃদয়ের…….!

##চলবে,
®ফারজানা মুমু

[বিঃদ্রঃ একটা মিসটেক করে ফেলেছি। অক্ষরের জব নিয়ে। দুঃখিত তারজন্য। গল্প তো গল্পই হয় একটু মানিয়ে নিন প্লিজ। সংশোধন করার উপায় নেই।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here