#রংধনুর_রঙ_কালো
২৩.
অরিন হতাশার নিঃশ্বাস ফেলে দরজাটা বন্ধ করলো। তখনও সোফিয়ার দুইহাতের বাহুতে ইলহানের গলা আবদ্ধ। নুসাইবা দৃষ্টি আকর্ষণ উদ্দেশ্যে জোরে গলা পরিষ্কার করলেন। সোফিয়া এইবার তাকালো নুসাইবার দিকে। ইলহান আগেই তাকিয়ে ছিল। সে সাথে সাথেই উঠে সোফিয়ার থেকে নিজেকে ছাঁড়িয়ে স্বাভাবিক হওয়ার মতো হাসি দিল। তারপর হৃষ্টচিত্তে বললো,
” কেমন আছো সোফিয়া? তোমার আগমনে আমি খুব খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ আমাকে দেখতে আসার জন্য। ”
সোফিয়ার বিভ্রান্ত দৃষ্টি। ইলহান নুসাইবার দিকে ইশারা করে বললো,” পরিচিত হও, আমার মা।”
সোফিয়ার টনক নড়লো। সে এতোক্ষণ নুসাইবাকে খেয়াল করেনি একদম। ইলহানের ফোনে তার বাবা-মায়ের ছবি সে দেখেছে অনেকবার। তাই সরাসরি দেখে চিনতে একদম অসুবিধা হলো না। সোফিয়া দ্রুত কপালে হাত উঠিয়ে সালাম দিল। সালামের উচ্চারণটা কেমন বিকৃত হয়ে গেল। আগে কখনও কাউকে সালাম দিতে হয়নি তার। সোফিয়া ঠোঁটে আন্তরিক হাসি আনার চেষ্টা করলো। খুবই ভয় পেয়েছে সে। সহজে হাসি আসছে না। সোফিয়ার কণ্ঠে সালামের ভুল উচ্চারণ শুনে নুসাইবার আরও মেজাজ খারাপ হলো। তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং রাগান্বিত স্বরে বললেন,” কে এই মেয়ে? সালাম পর্যন্ত ঠিকঠাক দিতে জানে না?”
নুসাইবার বাংলা উচ্চারণ সোফিয়ার বোধগম্য হলো না। কিন্তু সে এটা বুঝতে পারলো যে নুসাইবা রেগে গেছেন। তাই ভীত দৃষ্টিতে ইলহানের তাকিয়ে ঢোক গিলতে লাগলো। ইলহান সবকিছু সামলানোর জন্য হাসি দিয়ে বললো,” ও তো খ্রিস্টান মা। সালাম যে দিতে পেরেছে এই তো অনেক! ”
নুসাইবা অসন্তুষ্ট গলায় জিজ্ঞেস করলেন,” কে এই মেয়ে?”
” আমার বেস্টফ্রেন্ড। ভার্সিটিতে আমরা একসাথে পড়েছি।”
নুসাইবা অরিনের দিকে তাকিয়ে বললেন,” অরিন, তুমি চেনো ওকে?”
অরিন ডানে-বামে মাথা নাড়লো। যার অর্থ ‘না’। নুসাইবা আরও রুষ্ট হলেন। ক্ষীপ্ত চেহারায় ইলহানের দিকে তাকালেন। সোফিয়া মিষ্টভাষায় বললো,” আন্টি, আপনি ভালো আছেন? আমি ইলহানের কাছে আপনার অনেক ছবি দেখেছি। ছবির থেকেও বাস্তবে আপনি আরও বেশি সুন্দর।”
নুসাইবা ভ্রু উঁচু করে বললেন,” তাই?”
” ইয়েস, ইয়েস! আপনাকে দেখে তো মনেই হয় না ইলহানের মা। আমার তো মনে হচ্ছে কোনো ইয়াং লেডি দাঁড়িয়ে আছে।”
” আর তোমাকে দেখে আমার কি মনে হচ্ছে জানো?একটা সুন্দরী ছিনাল মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।”
অরিন কথাটা শুনে চমকে উঠলো। ইলহানেরও চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কিন্তু সোফিয়া হাসছে। সে হয়তো ভাবছে নুসাইবা তার প্রশংসা করেছেন। কারণ তিনি কথাটা হেসে বলেছেন আর ভাগ্যিস বাংলায় বলেছেন। সোফিয়া শুধু হাসিতেই থেমে থাকলো না। আহ্লাদী কণ্ঠে বললো,” সো সুইট আন্টি। আপনি অনেক কিউট। আমি কি আপনাকে একটা হাগ দিতে পারি?”
একথা বলেই সে নুসাইবাকে জড়িয়ে ধরতে এলো। কিন্তু নুসাইবা ধরতে দিলেন না। সোফিয়াকে থামিয়ে বললেন,” আই ডোন্ট লাইক হাগস। ইউ ক্যান সিট ডাউন হেয়ার।”
সোফিয়া খুশি খুশি ভাব নিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে অনেক আনন্দিত! নুসাইবার রাগান্বিত চেহারায় হাসি আনতে পেরে সে যেনো বিশ্বজয় করে ফেলেছে। কিন্তু নুসাইবা কেনো হাসছেন সেটা সোফিয়া না বুঝলেও ইলহান-অরিন ভালো করে বুঝলো। দু’জন একদৃষ্টে সোফিয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। সোফিয়া খাবার মুখে তুলতে নিয়েও থেমে গেল। ।সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে বললো,” হোয়াট হ্যাপেনড?”
ইলহান হাসলো। সোফিয়ার পাশে বসতে বসতে বললো,” তেমন কিছু না। তুমি খাও।”
এই কথা বলে সে সোফিয়ার পাশেই বসলো। অরিন বেডরুমের দিকে চলে যাচ্ছিল। নুসাইবা বললেন,” তুমি আবার কোথায় যাচ্ছো অরিন? খাবে না?”
” মা, আমার পেটে মনে হয় গ্যাস জমেছে। খাবার দেখেই বমি আসছে। এখন আমি কিছুই খেতে পারবো না।”
অরিন কথাটা হাসিমুখে বললেও নুসাইবা চট করে বুঝে ফেললেন হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা গভীর বিষাদের ছাঁয়া। তিনি বললেন,
” একটা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ তোমার বাবার থেকে নিয়ে খেয়ে ফেলো। তাহলেই তো হলো।”
” পরে খাবো মা। এখন আমার একটু শুঁয়ে থাকলে ভালো লাগবে।”
নুসাইবা আঁড়চোখে একবার সোফিয়ার দিকে তারপর ইলহানের দিকে তাকালেন। ইলহান মায়ের কড়া দৃষ্টি লক্ষ্য করলো। তাই অরিনের দিকে ঘুরে বললো,” আমার পাশে এসে বসো অরিন৷ না খেলেও অন্তত বসে থাকো।”
অরিন কটমট করে তাকালো ইলহানের দিকে।নুসাইবা সেটাও খেয়াল করলেন। তারপর বললেন,” অরিন, তুমি এসো। আমার পাশে বসো। নাহলে আমিও কিন্তু খাবার রেখে উঠে আসবো এখন।”
অরিন বাধ্য হয়ে আসলো। সোফিয়া মনে মনে বললো,” ড্রামা কুইন। ওহ নো, ব্ল্যাক ড্রামা কুইন।”
অরিন ঠিক নুসাইবার সাথে গিয়েই বসলো। নুসাইবা বললেন,” আমি খাইয়ে দিলে খাবে তো?”
অরিন মুচকি হেসে মাথা দুলালো। এতো আদর ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। সোফিয়া ইলহানের দিকে আশ্চর্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করলো। বলতে পারলো না। কিন্তু তার তাকানোর অর্থ বলে দিচ্ছে,” এতো বাড়াবাড়ি করার কি আছে ওকে নিয়ে? ফালতু!”
ইলহান চুপচাপ খেতে লাগলো। যদিও তার গলা দিয়ে খাবার নামার মতো অবস্থা নেই। তার একপাশে কুমির অন্যপাশে যম। নুসাইবা অরিনকে খাওয়াতে খাওয়াতে সোফিয়াকে উদ্দেশ্য করে বললেন,” তুমি কি করো সোফিয়া?”
” মডেলিং।”
” বাহ!”
” আন্টি, আপনি মডেলিং ট্রাই করবেন? একটা বিশেষ এডভারটাইজে আমাদের বেংগলি লুক দরকার। আপনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে তো সবকিছু তাক লেগে যাবে। কি গ্ল্যামার আপনার!”
ইলহান সোফিয়াকে ইশারায় থামতে বললো। কারণ প্রশংসা বেশি হয়ে যাচ্ছে। মা একটু পর রেগে-মেগে সোফিয়াকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিতে পারেন। হাব-ভাব দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে। নুসাইবা বললেন,” না না, আমার এসবে ইন্টারেস্ট নেই। আমার কাছে আমার সংসারটাই মিডিয়া। আমার পরিবারের সুখ-শান্তি হলো গ্ল্যামার। আর আমার ছেলে-মেয়েরা হলো আমার পপুলারিটি। এসব নিয়েই আমি অনেক হ্যাপি আছি।”
‘ছেলে-মেয়ে’ শব্দটা বলার সময় নুসাইবা অরিনের গালে হাত রাখলেন। এতে সোফিয়ার মনে ঈর্ষার পরিমাণ আরও বেড়ে গেল। সোফিয়া প্রসঙ্গ বদলে বললো,” আচ্ছা ইলহান, যে সন্ত্রাসী তোমাকে এটাক করেছিল তাকে খুঁজে বের করার ব্যাপারে পুলিশ কি বলেছে?”
অরিন একটু থমকালো। কারণ সে জানে গোপন সন্ত্রাসীটা আসলে কে? ইলহান অরিনের দিকে এক পলকের জন্য তাকিয়ে বললো,” পুলিশ আর কি বলবে? তাকে ধরার সাধ্য পুলিশেরও নেই। তাই কোনো রিপোর্টও করিনি।”
” কেনো করোনি? আজব, তোমাকে এইভাবে ছুঁড়ি মেরে সে পার পেয়ে যাবে নাকি? তুমি জানো এটা কত রিস্কি?”
নুসাইবা এতোক্ষণে সোফিয়ার কথায় তাল খুঁজে পেলেন। তিনিও বললেন,” আসলেই ইলহান, তোর পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা উচিৎ ছিল। সন্ত্রাসীর ধরা পড়া উচিৎ না?”
” ধরা পড়ার ইচ্ছে থাকলে সে নিজে থেকেই পড়বে। জোর করে কি আর কাউকে ধরা যায়?”
অরিনের এইবার বিষম আসলো। নুসাইবা তাকে পানি ঢেলে দিয়ে বললেন,
” আমি তো এটাই বুঝলাম না তোকে সন্ত্রাসী ধরলো কিভাবে? আর তোকে ছুঁড়ি মারলো কেনো?”
ইলহান অরিনের দিকে তাকিয়ে বললো,
” সে ছিনতাইকারী ছিল মা। ভয়ানক ছিনতাইকারী।”
নুসাইবা আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,” কি কি ছিনতাই করেছে রে?”
ইলহান দুই পকেটে হাত দিয়ে বললো,” এটা, এটা.. আর এটা।”
শেষবার হাত বুকে রাখলো। নুসাইবা বললেন,” এটা, এটা, এটা মানে? আরে বুঝিয়ে বল!”
অরিন মাঝখান থেকে বলে উঠলো,
” মা আমি যাচ্ছি। আমার খেতে ভালো লাগছে না।”
সে সত্যি সত্যি উঠে চলে গেল। যাওয়ার আগে ইলহানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। এই খাটাশের সাথে এক বাড়িতে থাকা অসম্ভব। এতোকিছুর পরেও তার বিন্দুমাত্র লজ্জা নেই। নির্লজ্জের মতো যা ইচ্ছা তাই করছে। ছি! অরিন রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিল। নুসাইবা আঁড়চোখে সোফিয়ার দিকে আবারও তাকালেন। তাঁর বিচক্ষণ মস্তিষ্ক বলে দিচ্ছে, ইলহান আর অরিনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আর খুব সম্ভবত এই ঝামেলার কারণ হতে পারে সোফিয়া। নুসাইবা সোফিয়াকে একটুও পছন্দ করলেন না। কিন্তু সরাসরি কিছু বলতেও পারলেন না। ব্রেকফাস্ট শেষ হওয়ার পর নুসাইবা বারান্দায় ডেকে নিয়ে ইলহানকে বললেন,” সত্যি করে বলবি, এই মেয়ে কে? এসেই তোকে ওইভাবে জড়িয়ে ধরলো কেনো? এইসব কেমন আচরণ ছি!”
” বললাম তো মা, আমার বেস্টফ্রেন্ড ও। আর শুধু আমার সাথে না সবার সাথেই ও এমন করে। তুমি যতটা খারাপভাবে নিচ্ছো বিষয়টা তত খারাপ না৷”
” তাই? আমাকে নতুন করে সব শিখাবি নাকি তুই? মেয়েটা আমাকে প্রথমে খেয়াল করেনি৷ হঠাৎ করে দেখেই ভ্যাবাচেকা খেয়েছে, আমি লক্ষ্য করেছি।যদি তার মন পরিষ্কার হতো তাহলে আমাকে দেখে চমকে উঠতো না। অরিনের মুখটাও তখন এতোটুকু হয়ে গেছিল। ও সোফিয়াকে দেখেই না খেয়ে চলে গেছে। কেউ না বুঝলেও আমি বুঝেছি সেটা। মেয়েটাকে যে আরও কি কি সহ্য করতে হচ্ছে আল্লাহই জানে। তুই এসব ঠিক করছিস না ইলহান। অভিশাপ লেগে যাবে অরিনের। ও তোকে কত ভালোবাসে বুঝিস?”
” ওহ গড! কি ভাবছো তুমি মা এসব? আচ্ছা এতো নেগেটিভলি কেনো নিচ্ছো? বিশ্বাস করো সোফিয়া শুধুই আমার ফ্রেন্ড৷ আর ও তো রেগুলার এখানে এসে বসে থাকে না। আমি অসুস্থ তাই আজকে একটু দেখা করতে এসেছিল। ”
” সে তো শুধু দেখা করাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এসে রীতিমতো ঢলাঢলি শুরু করেছিল। আমাকে না দেখলে তো মনে হয় থামতো না। ”
” মা, এখানে হাগ করা তো একটা ফরমালিটির মধ্যে পড়ে।”
” তাহলে চুমু দিল কেনো? এখন বল সেটাও কি ফরমালিটি? আমি নির্বোধ না।”
ইলহান কি বলবে বুঝতে না পেরে কোমরে হাত রেখে অন্যদিকে তাকালো। নুসাইবা আরও বললেন,” ফ্রেন্ড হোক আর যাই হোক, মেয়ে তো। সে কেনো তোকে জড়িয়ে ধরবে তাও তোর বউয়ের সামনে? কি বিছরি লাগছে ব্যাপারটা একবার চিন্তা কর। এই মেয়েকে আমার একটুও পছন্দ হয়নি৷ কেমন যেনো বেহায়া মেয়ে। জামা-কাপড়ের ছিড়ি দেখেছিস? আস্তাগফিরুল্লাহ! এইসব কি ধরণের মেয়ের সাথে মিশিস তুই? ”
” এখানে তো সবাই এমনই হয় মা। তুমি এইসব হঠাৎ কি মিন করার জন্য বলছো আমি লিটরেলি বুঝতে পারছি না। কোনো মানে হয় এসবের?”
ইলহানের রেগে যাওয়া দেখে নুসাইবা আফসোসের স্বরে বললেন,
” অরিন মনে হয় লজ্জায় আমাকে কিছু বলতে পারছে না। কিন্তু ওর মুখ দেখেই আমি বুঝে গেছি মেয়েটা ভালো নেই এখানে। তুই ওকে ভালো রাখিসনি।”
” উফফ! মা, তুমি একটা ছোট্ট ঘটনাকে টেনে এত্তো লম্বা করে ফেলছো৷ ইটস আ সিম্পল ম্যাটার।”
” সিম্পল ম্যাটার না। ধর, তোর সামনে কোনো পুরুষ অরিনকে চুমু দিল। তখন তোর কেমন লাগবে?”
” ঘাড় মটকে দিবো। আর কিচ্ছু না।”
” তাহলে অরিনেরও উচিৎ সোফিয়ার ঘাড় মটকে দেওয়া।”
” এইটার সাথে এইটার তুলনা করছো?”
” কেনো করবো না? তোর যদি জড়াজড়ি করার জন্য মেয়ে বন্ধু থাকতে পারে তাহলে অরিনের কেনো থাকতে পারবে না।”
” হায় আল্লাহ! আচ্ছা স্যরি, আমার অনেক বড় ভুল হয়েছে। মাফ করে দাও।”
” অরিনের কিন্তু অনেক ধৈর্য্য। যেখানে আমার নিজেরই রাগ উঠে গেছে সেখানে অরিন কিছুই বললো না। শান্ত হয়ে বসে ছিল।”
ইলহান ফিসফিসিয়ে বললো,” বলবে কিভাবে? ওর কি আর ইন্টারেস্ট আছে আমার উপর?”
নুসাইবা ক্ষোভ প্রকাশ করলেন,” মেয়েটা যখন অরিনকে দেখেও ঠাস করে তোকে এসে জড়িয়ে ধরলো, আমার ইচ্ছে করছিল ওর নুডলসের মতো চুল কেচি দিয়ে কেটে একদম ন্যাড়া বানিয়ে দেই।”
ইলহান মুখে হাত ঠেকিয়ে হেসে দিল। নুসাইবা চোখ রাঙিয়ে বললেন,” ঠাট্টা করছি না আমি। তুই কি আসলেই গাঁধা নাকি গাঁধা সাজার ভাণ করছিস কে জানে? অরিনের কাছে ক্ষমা চাইবি। আর কখনও যদি এসব সোফিয়া-টোফিয়া বাসায় আসে তাহলে সেদিন মনে রাখিস, আমিই তোকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবো।”
নুসাইবা বারান্দা থেকে বের হয়েই দেখলেন অরিন দাঁড়িয়ে আছে। সে সমস্ত কথা শুনেছে। এটা তার চেহারা দেখেই বোঝা গেল। অরিন ইতস্তত কণ্ঠে বললো,” মা, বাবা ড্রয়িং রুমে বসে আপনাকে ডাকছেন। ”
” ঠিকাছে তুমি যাও। আমি আসছি।”
অরিন চলে যেতেই নুসাইবা বললেন,” দেখলি? মেয়েটার মুখ কেমন শুকিয়ে আছে?”
ইলহান কোনো জবাব দিল না। আকস্মিক প্রবাহে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ড্রয়িংরুমে গিয়ে বাবার সামনেই অরিনের হাত ধরে টেনে তাকে রুমে নিয়ে এলো। অরিন মুখ ফুটে কিছু বলবে তার পূর্বেই ইলহান ধড়াম করে দরজা আটকালো।
চলবে
– Sidratul Muntaz