রোদ্দুরে মেঘের বর্ষন পর্ব -২৯+৩০

#রোদ্দুরে_মেঘের_বর্ষন❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ২৯

“সোফার সামনে দাঁড়িয়ে লাগাতার পায়চারি করছে রিয়াদ!’ঘড়ির কাটায় তখন ১১ঃ০০টা বেজে ছাড়িয়ে গেছে!’এখন প্রচুর টেনশন হচ্ছে রিয়াদের কারন তানজু বলেছিল এক দেড় ঘন্টার ভিতর চলে আসবে কিন্তু এখনও আসছে না!’কতক্ষণ আগে ফোন করেছিল রিয়াদ তানজুকে কিন্তু ধরে নি পরের বার ফোন করতে ফোন অফ!’রিয়াদ ভাবলো হয়তো চার্জ নেই!’কিন্তু এখনও তানজুকে আসতে না দেখে কিছুটা অস্থিরতা ফিল হচ্ছে তার!’রিয়াদ আর বেশি কিছু না ভেবে মুখে মাস্ক পড়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো!’

__

“রেস্টুরেন্টে মাতাল হয়ে টেবিলের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছে তানজু,,আর ওর সামনেই অনন্যা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে!’এমন সময় অনন্যার একজন লোক বলে উঠলঃ

—“ম্যাম আমাদের তো কাজ শেষ এখন কি করবো?’

—“কিছু করতে হবে না চল এখান থেকে…

—“আর তানজু…

—“ওকে কিছু করতে হবে না ওর ফোনটা অন করে টেবিলের ওপর রাখো…

—“ওকে ম্যাম…

“অনন্যার কথা মতো তানজুর ফোনটা অন করে তানজুর মাথার পাশেই টেবিলের ওপর রাখলো!’তারপর একে একে সবাই বেরিয়ে গেল রেস্টুরেন্ট থেকে!’অনন্যা কিছুক্ষন তানজুর দিকে তাকিয়ে থেকে বললোঃ

—“কালকের সকালের সারপ্রাইজের জন্য তৈরি থাকো রিয়াদ,সাথে তুমিও তানজু?’…

“এতটুকু বলে সেও বেরিয়ে গেল রেস্টুরেন্ট থেকে!’

.

“ঘড়ির কাঁটায় ১২টা বেজে ৪ মিনিট!’এমন সময় একজন ওয়েটার এসে ডাকলো তানজুকে!’কারো আওয়াজ পেতেই তানজু মাথা তুলে তাকালো!’কিন্তু অতিরিক্ত নেশা করে ফেলায় সব কিছু ঘোলা ঘোলা দেখছে সে!’তানজু আবছা আবছা কন্ঠে বলে উঠলঃ

—“হুম…

—“ম্যাম আপনি কি বাড়ি যাবেন না আমরা তো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই রেস্টুরেন্ট অফ করে দিবো…

“তানজুর আবছা আবছা বুঝতে পারলো লোকটার কথা!’আস্তে আস্তে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো সে!’তারপর বললোঃ

—“ওহ ওকে!’

“এতটুকু বলে টেবিলের উপর থেকে ব্যাগটা নিলো তানজু!’তারপর ওয়েটারকে থ্যাংক ইউ বলে চলতে শুরু করলো!’ঠলতে ঠলতে এগোচ্ছে তানজু!’তানজু দু’পা এগোতেই ওয়েটার টেবিলের উপর তানজুর ফোনটা দেখে বলে উঠলঃ

—“ম্যাম আপনার ফোন?’

“ওয়েটারের কথা শুনে দু’পা এগিয়েও আবার পিছন ফিরে তাকায় তানজু!’তানজুকে দাঁড়াতে দেখে ওয়েটার হেঁটে এসে ফোনটা দিতে নেয় তানজুর হাতে!’এরই মাঝে তানজুর ফোনটা বেজে উঠল ওয়েটার কিছু একটা ভেবে ফোনটা তুলে বললোঃ

—“হ্যালো….

“তানজুর ফোনে একটা অপরিচিত ছেলের কন্ঠ পেতে চিন্তিত কন্ঠে বলে উঠল রিয়াদঃ

—“হ্যালো তানজু, এটা তো তানজুর নাম্বার…

—“জ্বী স্যার এটা ওনারেই নাম্বার…

—“তাহলে তানজুু কোথায়..?’

“ওয়েটার তানজুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলঃ

—“উনি তো মাতাল হয়ে আছে স্যার…

“ওয়েটারের কথা শুনে রিয়াদ অবাক হয়ে বললোঃ

—“কি,,এসব কি বলছেন?

—“ঠিকই বলছি স্যার…

—” আচ্ছা ও একজেকলি এখন কোথায় আছে…?’

—“উনি তো এখন চলে যাচ্ছে স্যার…

—“ওকে যেতে দিও না আমি এক্ষুনি আসছি এড্রেস বলো…

“রিয়াদের কথা শুনে ওয়েটারও এড্রেস বললো রিয়াদকে!’রিয়াদ ওয়েটারের কথা শুনে বললোঃ

—“ওকে আমি এক্ষুনি আসছি,আর দেখো ও যেন কোথাও না যায়…

—“ওকে স্যার…

“উওরে রিয়াদ আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে গাড়ির স্পিড বারিয়ে দেয়!’

_____

“টেবিলে বসে আবারো ড্রিংক করছে তানজু!’এমন সময় রেস্টুরেন্টের ভিতর ছুট্টে আসলো রিয়াদ!’তানজুর এমন অবস্থা দেখে অবাক হয়ে বললো সেঃ

—“এসব কি করছো তানজু?’

“তানজু কিছু বলবে তার আগেই ওয়েটার আসলো রিয়াদের সামনে!’তারপর বললোঃ

—“দেখুন স্যার অনেক্ক্ষণ যাবৎ বারন করছি ওনাকে কিন্তু উনি শুনছেনই না…

“ওয়েটারের কথা শুনে তানজু বলে উঠলঃ

—“কে বলেছে আমি শুনি নি,উনি মিথ্য বলছে স্যার…

—“shut up তানজু…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বসে পড়লো!’রিয়াদ ওয়েটারকে থ্যাংক ইউ জানিয়ে আর রেস্টুরেন্টের বিল মিটিয়ে তানজুকে কোলে তুলে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে আসলো!’রিয়াদকে কোলে তুলতে দেখে তানজু বলে উঠলঃ

—“এসব কি করছেন স্যার?’

—“চুপ থাকো তানজু,এসব কি করে হলো আর তুমি তো বলেছিলে তোমার ফ্রেন্ড আছে কোথায় সে…

—“কি জানি…

—“তুমি তো ড্রিংক করো না তানজু তাহলে…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু রিয়াদের গলা জড়িয়ে ধরে বললোঃ

—“আপনি কত্তো ভালো স্যার…

“তানজুর মুখে এমন আহামরী কথা শুনে রিয়াদ কিছুটা রাগান্বিত কন্ঠ নিয়ে বললোঃ

—“আমি তোমায় কিছু জিজ্ঞেস করেছি তানজু…

—“আমি কিছু জানি না স্যার,

“উওরে আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না রিয়াদ,কারন সে বুঝে গেছে এখন আর তার কোনো কথাই তানজুর মগজে ঢুকবে না!’কিন্তু রিয়াদ এতটুকু শিওর এখানে কিছু তো একটা হয়েছিল!’

“তানজুকে কোলে করে গাড়ি পর্যন্ত আসতে না আসতেই তানজুর কাশতে শুরু করে সাথে বমি বমি ভাব!’রিয়াদ বুঝতে পেরেছে এখন কি হবে, তাড়াতাড়ি তানজুকে কোল থেকে নামিয়ে রাস্তার এক সাইডে দাঁড় করিয়ে মাথা নুড়িয়ে দিল রিয়াদ!’অতিরিক্ত হারে নেশা করার ফলে বমি করে বসে তানজু?’এভাবে কিছুক্ষন পর রিয়াদ কোনোভাবে তানজুকে নিয়ে যায় গাড়ির কাছে!’তারপর তানজুকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে চললো বাড়ির উদ্দেশ্যে!’কিছুতেই রিয়াদের মাথায় আসছে না হুট করে তানজু এত ড্রিংক কেন করলো?’কি হয়েছিল এখানে….?’

“রাতের জোৎসা ভরা আলোতে নীরব রাস্তা পেরিয়ে এগিয়ে চলছে রিয়াদ!’পাশেই তানজু কতক্ষণ চোখ বন্ধ করছে আবার খুুলছে!’আবার কতক্ষণ হাসছে,নয়তো রিয়াদকে জড়িয়ে ধরছে!’আজ রাতে এ মেয়ে যে রিয়াদকে জ্বালিয়ে ছাড়বে এটা ভালোই বুঝতে পেরেছে রিয়াদ….

_____

“বেশকিছুক্ষন পর….

“রিয়াদ তার গাড়ি থামালো তার বাড়ির সামনে!’তারপর গাড়ি থেকে বেরিয়ে তানজুকে আবার কোলে তুলে নিয়ে চললো বাড়ির ভিতর!’

“বাড়ির ভিতর ঢুকে রিয়াদ তানজুকে সোফায় বসিয়ে দিল!’তারপর নিজের মুখের মাস্কটা খুলে জোরে জোরে শ্বাস ফেললো!’তানজু পাগলামিতে গাড়িতে বসেও মাস্ক পড়ে ছিল রিয়াদ!’এবার রিয়াদ তাকালো তানজুর মুখের দিকে,,কিছুটা লালচে বর্নধারন করেছে তানজুর চোখ!’রিয়াদ কিছু একটা ভেবে তানজুর পাশে বসলো তারপর তানজুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“তুমি এত ড্রিংক কেন করেছো তানজু?’

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু রিয়াদের কাছে এসে ওর গাল স্পর্শ করলো!’আচমকা তানজুর এমন এটাকে কিছুটা চমকে উঠলো রিয়াদ!’তানজু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিয়াদের দিকে,,তানজুকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল রিয়াদঃ

—“কি হলো তানজু,কথা বলছো না কেন,এত ড্রিংক কেন করেছো তুমি…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু রিয়াদের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বললোঃ

—“হুস,আস্তে বলুন স্যার কেউ শুনে ফেলবে..

“কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বললো রিয়াদঃ

—“কেউ শুনবে না তানজু,তুমি বলো…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু রিয়াদের দু’গাল চেপে ধরে বললোঃ

—“আমি…

“তানজুর কথা শুনে রিয়াদ অতি আগ্রহের সঙ্গে তানজুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“হুম তুমি…

“তানজু ছলছল চোখে রিয়াদের গাল আর একটু টাইট করে ধরে বললোঃ

—“আমি…

—“তারপরের গুলো তো বলো, তুমি কি…

—“আমি জানি না স্যার…

“বলেই হেঁসে রিয়াদের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে তানজু!’তানজুর কান্ডে রিয়াদ বোকা বনে যায়!’কিছুটা বিরক্ত নিয়ে তাকায় সে তানজুর দিকে!’চোখ বন্ধ করে রয়েছে তানজু,ফর্সা গাল হাল্কা লাল বর্ন ধারন করেছে তার,সাথে গোছালো চুলগুলো একদম এলেমেলোভাবে ছড়িয়ে ছিটে রয়েছে চারপাশে,,রিয়াদ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তানজুর মুখের দিকে,কিছু একটা ফিল হচ্ছে তার,তানজুর চোখ, মুখ,ঠোঁট সব কিছুতেই এক অন্যরকম অনুভূতি ফিল হচ্ছে!’তানজুর চোখের পাশে ছোট্ট একটা দাগ আছে যেটা আরো বেশি আকৃষ্ট করেছে রিয়াদকে!’

“হঠাৎই চোখ খুলে ফেললো তানজু,আচমকা এমনটা হওয়াতে রিয়াদ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে,তানজু রিয়াদের দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“এভাবে কি দেখছেন স্যার…

“তানজুর কথা শুনে অন্যদিক মুখ ঘুরিয়ে ফেলে রিয়াদ!’রিয়াদ অন্যদিক মুখ ঘুরাতেই তানজুর চোখের সামনে ভাসছে রিয়াদের গাল!’তানজু কিছুক্ষন সেদিকে তাকিয়ে থেকে হুট করেই তার মাথাটা একটু উপরে উঠিয়ে রিয়াদের গালে চুমু দিয়ে বসে!’গালে কিছু একটা স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠলো রিয়াদ!’অবাক চোখে তাকায় সে তানজুর দিকে!’তানজু রিয়াদের গালে চুমু দিয়ে আবার শুয়ে পড়ে রিয়াদের কোলে তারপর চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে বললোঃ

—“আপনি এত সুন্দর কেন স্যার,মাঝে মাঝে মনে হয় আপনি আমায় সত্যি সত্যি ভালোবাসেন কিন্তু আবার ভাবি এটা কি করে সম্ভব, কোথায় আপনি আর কোথায় আমি…

“বলেই রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে তানজু!’অন্যদিকে তানজুর কান্ডে রিয়াদ এতটাই শকট হয়েছে যে স্বাভাবিক হতে তার কিছুটা সময় লাগে!’তাই তো তানজুর কথাগুলো তার কান অবদি পৌঁছায় নি…

“ঘড়ির কাঁটায় একটার উপরে বেজে গেছে!’তানজু বেঘোরে ঘুমিয়ে আছে রিয়াদের কোলে মাথা দিয়ে তার রিয়াদ তাকিয়ে আছে তানজুর মুখের দিকে!’নানান কল্পনায় জল্পনায় বিভক্ত সে!’রিয়াদ কিছুক্ষন তানজুর দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের গায়ের জ্যাকেটটা খুলে তানজুর গায়ে জড়িয়ে দিলো!’তারপর তানজুর কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে সোফায় বসেই ঘুমিয়ে পড়লো!”

“রাতের জোৎসা ভরা আলো চিকচিক করছে বাড়ির বাহিরে!’রুমের চারিপাশে থাকা থাইগ্লাসের সাদা পর্দা ভেদ করে উঁকি মারছে চাঁদ মামা,হয়তো নতুন কিছু আগমনের আভাস পেয়েছে সে…

.
.

“নিজের রুমের বিছানায় বসে আছে অনন্যা,ঠোঁটে রয়েছে তার রহস্যময়ী হাসি আর হাতে মোবাইল!’অনন্যা তার মোবাইলটার দিকে তাকিয়ে হেঁসে বলে উঠলঃ

—“সকালের সারপ্রাইজের জন্য তৈরি থেকো রিয়াদ,,আমায় বিয়ে করবে না বলে এতো নাটক রিয়াদ,কালকেই এই নাটকের The End হবে,just wait and see Riyad…..

____

“সকালে…..
সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো তানজুর!’মাথাটা প্রচন্ড ভাড় হয়ে আছে তার,,আশেপাশে তাকাতেই তানজু বুঝতে পারলো সে বাড়িতে আছে,কিন্তু কিছুতেই তার মাথায় আসছে না সে বাড়ি কি করে আসলো সে তো তানিশার সাথে রেস্টুরেন্টে ছিল!’হাল্কা নড়তেই তানজুর সামনে রিয়াদের ফেসটা ভেসে আসলো,সোফার কর্নারে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে সে!’তাড়াতাড়ি লাফ মেরে শোয়া থেকে উঠে বসলো সে!’মাথার ওজনে ঠিকভাবে মাথা উঁচু করতে পারছে না তানজু!’দু’হাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরলো তানজু,সাথে মনে করতে লাগলো কাল রাতের কথা “কিন্তু না তার কিছুই মনে পড়ছে না”,….

“এরই মাঝে রিয়াদের ঘুম ভেঙে যায় সামনেই তানজুকে মাথা চেপে ধরে রাখতে দেখে কিছুটা বিস্মিত কন্ঠে বলে উঠল সেঃ

—“কি হয়েছে তানজু?’

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু তাকায় রিয়াদের দিকে তারপর বললোঃ

—“কাল রাতে কি হয়েছিল স্যার,আমি বাড়ি কখন আসলাম আর আপনি আমি সোফায়…

“তানজুর কথা শুনে রিয়াদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললোঃ

—“সে অনেক বড় কাহিনি তানজু,আগে বলো তুমি কাল রাতে ওতো ড্রিংক কেন করেছিলে…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু ভিষণ অবাক হয়,অবাক হয়ে বলে সেঃ

—“কিসব বলছেন স্যার,আমি ড্রিংক করি না আপনি তো জানেন?’

—“সেটা তো আমারও প্রশ্ন?,একটু মনে করার চেষ্টা করো তানজু কাল রাতে কি হয়েছিল তোমার সাথে…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু চিন্তিত মুখ নিয়ে তার মাথাটা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলে!’তারপর কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললোঃ

—“আমার যতদূর মনে পড়ছে স্যার আমি জুস খেয়েছিলাম তারপরই কেমন একটু লাগছিল আমার,জুসের টেস্টটাও যেন কেমন ছিল তারপর আর কিছু মনে নেই স্যার…?

—“তার মানে তোমার জুসেই কেউ কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল,,?’

—“কিন্তু কেউ এমন কেন করবে স্যার…

—“কারন তো একটা আছেই তানজু..

“রিয়াদের কথা শুনে তানজু চোখ খুলে তাকালো রিয়াদের দিকে!’রিয়াদও তাকালো তানজুর দিকে….

“এরই মাঝে রিয়াদের বাড়ির সামনে প্রচুর চেঁচামেচির আওয়াজ শোনা গেল!’চেঁচামেচির আওয়াজ পেতেই রিয়াদ তানজু দুজনেই দুজনের দিকে দুপলক ফেলে চললো বাহিরে!’

“দরজার বাহিরে যেতেই….
!
!
!#রোদ্দুরে_মেঘের_বর্ষন❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ৩০

“রিয়াদের পুরো বাড়ি জুড়ে ভিড় জমিয়েছে প্রেস মিডিয়ার লোকেরা!’তাদের সবার একটাই প্রশ্ন রিয়াদ তানজুর সম্পর্কটা নাকি মিথ্যে ছিল এটা সত্যি কিনা,,আর এটা সত্যি হলে রিয়াদ কেন কানাডায় বসে মিথ্যে বলেছিল!’

“সকাল সকাল মিডিয়াদের এমন প্রশ্ন শুনে রিয়াদ তানজু দুজনেই বেশ অবাক হচ্ছে!’তানজুর তো সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে!’এমন সময় রিয়াদের গার্ডেরা এসে মিডিয়াদের দূরে সরিয়ে রিয়াদ তানজুকে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দিল!’রিয়াদ বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

—“এগুলো কি হচ্ছে আর কেনই বা হচ্ছে…

“রিয়াদের কথা শুনে রিয়াদের গার্ড আশরাফ বললোঃ

—“কেউ একজন তানজুর কিছু ভিডিও ভাইরাল করে দিয়েছে স্যার..?

“আশরাফের কথা শুনে ভিষনভাবে অবাক হয় তানজু রিয়াদ!’রিয়াদ আশরাফের দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“কিসের ভিডিও…?’

“রিয়াদের কথা শুনে আশরাফ তার ফোনটা বের করে একটা ভিডিও অন করে দেখালো রিয়াদকে!’

“ভিডিওটা হচ্ছে কাল রাতের,তানজু রেস্টুরেন্টে মাতাল হয়ে রিয়াদ আর তার মিথ্যে সম্পর্কের কথা বলে দেয়,সাথে ওদের ৬ মাসের চুক্তির কথাও বলে!’এসব ভিডিও দেখে তানজুর কলিজা কেঁপে উঠল,কখন এসব হলো তানজুর কিছুই মনে নেই!’তানজু ভয়ে ভয়ে তাকালো রিয়াদের দিকে,সে বুঝতে পারছে না এখন কি হবে?’

“রিয়াদ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষন!’এবার রিয়াদের মাথায় আসলো কাল রাতে তানজু এত ড্রিংক কেন করেছিল,কেউ ইচ্ছেকৃতভাবে তানজুর মুখ থেকে সত্যিটা জানার জন্য এমন করেছে!’রিয়াদ বুঝতে পারছে না এই মুহূর্তে তার কি করা উচিত,বাহিরে মিডিয়ার লোকেরা লাগাতার দরজায় নক করে চলেছে!’সাথে চেঁচামেচিও করছে!’

“রিয়াদ মুখে হাত দিয়ে বসে পড়ে সোফায়!’অন্যদিকে তানজু চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ভয়ে কিছু বলতে পারছে না সে!’কতক্ষণ বাহিরের দিকে তাকাচ্ছে আবার কতক্ষণ রিয়াদের দিকে,তানজুর কান্না পাচ্ছে এখন?কতবড় ভুল সে করে ফেলেছে কাল রাতে,তানজু তার মাথাটা চেপে ধরলো শক্ত করে মাথা যন্ত্রণা করছে তার,সাথে প্রচন্ড ভাড়ও হয়ে আছে!’

“এভাবে কিছুক্ষন পর…

“তানজু তার মাথা থেকে হাত নামিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল রিয়াদের দিকে!’তারপর কান্নাভেঁজা কন্ঠে বলে উঠলঃ

—“আই এক্সট্রিমলি সরি স্যার, বিশ্বাস করুন আমি বুঝতে পারি নি এমন কিছু হবে…

—“এখন আর সরি বলে কি হবে তানজু?যা করার তুমি তো করেই ফেলেছো…

“উওরে মাথা নিচু করে ফেলে তানজু,সত্যি তার ধারা অনেক বড় ভুল করে হয়ে গেছে!’তানজুর বিশ্বাস হচ্ছে তানিশা তার সাথে এমন করবে!’ মাথা নিচু করে আবারো বলে উঠল তানজুঃ

—“সরি স্যার…

“বাহিরে ধীরে ধীরে মিডিয়াদের চেঁচামেচি আরো বেড়ে গেছে,তানজু তো পারুক এখানে কেঁদেই ফেলুক!’এরই মাঝে রিয়াদের একজন গার্ড এসে বললোঃ

—“এখন কি করবো স্যার মিডিয়ার লোকেরা তো কিছুতেই মানতে চাইছে না আপনার সাথে সরাসরি কথা বলতে চাইছে ওঁরা….

“রিয়াদ কিছু একটা ভেবে বললোঃ

—“তোমাকে কিছু করতে হবে না যা করার এখন আমিই করবো…

“এতটুকু বলে জোরে শ্বাস ফেলে সোফার উপর থেকে জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে পড়ে নিলো রিয়াদ!’তারপর তানজুর হাত ধরে চললো সে বাহিরে!’

“আচমকা রিয়াদের হাতের স্পর্শ পেতে হাল্কা চমকে উঠলো তানজু,,তবে কিছু বলতে পারলো না!’ভয়ে তার মুখ থেকে কথাই বের হচ্ছে না,তাই রিয়াদের সাথেই হাঁটতে শুরু করলো সে…..

____

“নিজের রুমের টিভির সামনে সোফায় বসে আছে অনন্যা,ঠোঁটে রয়েছে তার রহস্যময়ী হাসি!’আর থাকবেই বা না কেন এসব তো ওই করেছে,কাল রাতের তানজুর প্রতিটা কথা মেবাইলে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছে সে!’আর ভিডিও পেতেই রাতারাতি ভাইরাল হয়ে এখন রিয়াদের বাড়ির সামনে মিডিয়া!’টিভিতে লাইভে রিয়াদের বাড়ির সামনের ঘটনা দেখানো হচ্ছে এটা অবশ্য অনন্যা টাকা খাইয়ে করাচ্ছে,কারন সে সবটা সরাসরি দেখতে চায়!’ কিছুক্ষন আগের রিয়াদের ফেসও সে দেখেছিল!’সব দেখে খুশি খুশি লাগছে তাঁর,এখন শুধু অপেক্ষা রিয়াদ সবার সামনে সত্যিটা বলে দিক,এরই মাঝে মাঝে মিডিয়ার সামনে এসে হাজির রিয়াদ তানজু দুজনে,অনন্যা অতি আগ্রহের সঙ্গে তাকিয়ে রইলো সেদিকে….

.
.

“রিয়াদ তানজু মিডিয়াদের সামনে আসতে না আসতেই সবার হাজারটা প্রশ্ন!’রিয়াদ কেন মিথ্যে বললো?’তানজু তার গার্লফ্রেন্ড নয় তাহলে এতদিন কেন মিথ্যে সম্পর্কের বাহানা দিয়েছিল?’কেনই বা কানাডায় বসে এত বড় মিথ্যে সাজিয়েছে রিয়াদ?আর তানজুই বা কেন এসব করতে রাজি হলো, হাজার হাজার প্রশ্ন সবার মুখে,চারিদিকে ক্যামেরা, ফটোসুট সবকিছুই যেন ঘিরে ধরেছে রিয়াদ তানজুকে!’তানজু জীবনেও ভাবে নি এরকম একটা পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তাকে!’ভয়ে শরীর কাঁপছে তাঁর,,,

“এমন সময় রিয়াদ তানজুর হাত ছেড়ে দিয়ে একজন মিডিয়ার লোকের কাছ থেকে মাইক নিয়ে বলে চেঁচিয়ে উঠলঃ

—“স্টপ গাইস,,আমি আপনাদের সবার প্রশ্নের উত্তর দিবো,তবে তার আগে সবাই চেঁচামেচি করা বন্ধ করুন!’

“রিয়াদের কথা শুনে মিডিয়ার লোকেরা চেঁচামেচি করা বন্ধ করে দিলো!’তারপর এদের মাঝখানে থাকা একটা মেয়ে বলে উঠলঃ

—“এখন তাহলে বলুন স্যার এত বড় মিথ্যে কেন বলেছিলেন,সাথে এতদিন মিথ্যে অভিনয়ই বা কেন করছিলেন…?তার চেয়েও বড় কথা আমরা যে ভিডিওটা পেয়েছি সেটা সত্যি না মিথ্যে…?’

“রিয়াদ তার মাইকে হাত দিয়ে বললোঃ

—“হুম সব বলবো…

“তানজু তো ভেবেই নিয়েছে রিয়াদ এখন সব সত্যি বলে দিবে,কারন এর চেয়ে ভালো ছলিওশন আর কিছু দেখছে না তানজু!’তানজুও বাকি সবার মতো তাকিয়ে আছে রিয়াদের দিকে!’

“রিয়াদকে চুপ থাকতে দেখে বলে উঠল সামনের মেয়েটিঃ

—“কি হলো স্যার বলছেন না, আমরা যে ভিডিওটা পেয়েছি সেখানে তানজু ম্যাম যেসব কথাগুলো বলেছে সব কি সত্যি স্যার,আপনার আর ওনার সম্পর্কটা নাকি একটা চুক্তি ছিল…?’

“রিয়াদ মেয়েটির কথা শুনে তানজুর হাত ধরে সবার সামনে বলে উঠলঃ

—“আপনারা কি শুনেছেন বা কি দেখেছেন সেটা আমার দেখার বিষয় নয়,কারন আমি আর তানজু আগামী দশদিনের মধ্যে বিয়ে করছি,আর সেখানে আপনাদের সবার ইনভাইট রইলো…

“রিয়াদের কথা শুনে তানজুর চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম!’সে ভাবতেই পারে নি রিয়াদ এমন কিছু একটা বলবে,রিয়াদের কথা শুনে মিডিয়ার লোকেরা বলে উঠলঃ

—“তাহলে আমরা যে ভিডিওটা পেয়েছি সেটা কি মিথ্যে ছিল স্যার…

—“না মিথ্যে কেন হবে,সত্যিই ছিল…

—“মানে…

—“মানে এটা বিষয়টা সত্যি ছিল, কিন্তু একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে…

—“আপনি কি বলতে চাইছেন স্যার,একটু বুঝিয়ে বলবেন…

—“হুম অবশ্যই বলবো আসলে কাল রাতে আমার সাথে তানজুর একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল,আর ঝগড়ার বেগ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে আমি রেগে গিয়ে বলেছিলাম তোমায় আমি বিয়ে করবো না তানজু,মানে ব্রেকআপ করার কথা বলি তবে সেটা মন থেকে ছিল না রেগে বলেছিলাম,আর তানজু আমার কথাটা সিরিয়াসলি নিয়ে রেগে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়!’তারপর রেগে গিয়ে ড্রিংক করে বসে আর সেটারই কেউ ফায়দা তুলে এমন ভিডিও বানিয়ে ভাইরাল করে দিয়েছে…

—“তার মানে আপনি বলতে চাইছেন,কালকে তানজু রেগে গিয়ে এসব বলে…

—“একজেকলি,আপনারা সবাই দেখেছেন তানজু কি অবস্থায় কথাগুলো বলেছিল?’…

—“তাহলে চুক্তি কিসের ছিল স্যার,আপনারা নাকি ছয়মাস চুক্তির সম্পর্কে ছিলেন…

—“ওগুলো সব মিথ্যে কথা,আর আমি তো বলেই দিলাম আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমরা বিয়ে করছি,আর আগামী দশদিনেই সব বুঝতে পারবেন আপনারা, কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে,চুক্তির বিষয়টা নিছোকি কেউ বসিয়ে দিয়েছে…

—“কিন্তু স্যার,আমাদের তো মনে হচ্ছে না তানজু রেগে গিয়ে এসব বলেছে?’…

—“আপনার কি মনে হয় বা না মনে হয় সেটা আমার দেখার বিষয় নয়, কাল রাতে যেগুলো হয়েছিল সবকিছুই জাস্ট একটা ভুল বোঝাবুঝি যেটা এখন চলে গেছে,,আশা করি আপনারা সবাই আপনাদের উওর পেয়ে গেছেন,আর তো কারো কোনো প্রশ্ন নেই,আর রেগে গিয়ে মানুষ কতই কিছুই বলে আমি ও বলে ফেলি যার জন্য এতো সমস্যা,এর জন্য আমি আপনাদের এবং তানজুকেও সরি বলছি….

“রিয়াদ তানজুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“আই এক্সট্রিমলি সরি তানজু,কাল তোমার সাথে ওভাবে কথা বলা ঠিক হয় নি আমার…

“এতটুকু বলে জড়িয়ে ধরে তানজু রিয়াদকে!’তানজুর তো কিছু মাথায় ঢুকছে না সব যেন তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,,মাথার যন্ত্রণায় আরোই কিছু ঢুকছে না,তানজু শুধু ছলছল চোখে তাকালো রিয়াদের দিকে!’…

“এমন সময় একজন মিডিয়ার ছেলে বলে উঠলঃ

—“আপনি কিছু মনে না করলে আমি একটা প্রশ্ন করতে পারি স্যার…?’

“রিয়াদ মুচকি হেঁসে বললোঃ

—“হুম অবশ্যই…

—“আপনাদের ঝগড়ার কারনটা কি বলবেন স্যার,না মানে আপনি বলতে না চাইলে আমি জোর করবো না….

—“বলতে কেন চাইবো না,আসলে আমরা বিয়ের পর হানিমুনে কোথায় যাবো এটা নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল ও বলেছিল সমুদ্রে আর আমি বলেছিলাম পাহাড়ে…

—“এখন কি ভাবলেন স্যার…

—“এটাই প্রথমে সমুদ্রে তারপর পাহাড়…

—“গুড আইডিয়া স্যার…

—“থ্যাংক ইউ,এখন আশা করি সবার ভুল আর বাজে ধারনাগুলো চলে গেছে,আর হ্যাঁ আমাদের বিয়েতে আপনারা সবাই আসবেন কিন্তু,বিশেষ করে এই আপনারা (ক্যামেরা ম্যানদের দিকে তাকিয়ে) আপনারা সবাই আমাদের বিয়ের ফটো শুট করে দিবেন…

“উওরে সবাই হেঁসে বললোঃ

—“অবশ্যই স্যার…

—“এখন তাহলে আমরা ভিতরে যেতে পারি….

—“জ্বী স্যার…

“উওরে রিয়াদ আর কিছু বললো না তানজুর হাত ধরে সবার সামনে দিয়ে চললো সে বাড়ির ভিতরে!’

____

“রাগে গা জ্বলছে অনন্যার,সে ভাবতেই পারে নি রিয়াদ এমন কিছু বলবে!’রেগে গিয়ে নিজের রুমের টিভিটা ভেঙে ফেলে অনন্যা!’এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে তার,তানজুর ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করে ফেললো সে!’রাগে জোরে চেঁচিয়ে উঠলো অনন্যা!’অনন্যার চেঁচানো শুনে পাশের রুম থেকে অনন্যার বাবা চলে আসলো অনন্যার রুমে!’অনন্যার রুমের অবস্থা দেখে প্রচন্ড ঘাবড়ে যান উনি,সাথে এটাও বুঝতে পেরেছেন রিয়াদের বিয়ের কথা শুনেই এত রেগে গেছে তার মেয়ে..নিজের রুমে বসে এতক্ষণ অনন্যার বাবাও লাইভ দেখছিল রিয়াদ আর তানজুর বিষয়টা!’অনন্যা রিয়াদকে ভালোবাসে এটা অনন্যার বাবা আগেই জানতো,অনন্যার বাবা চলে যায় মেয়ের কাছে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললেন উনিঃ

—“এসব কি করেছিস তুই…

“অনন্যা তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলঃ

—“বাবা এটা কি করে ফেললাম আমি,তানজুর ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করে বসলাম…

—“তার মানে কাল রাতে তুমি তানজুর ভিডিও বানিয়েছো অনন্যা…

“উওরে চুপ হয়ে যায় অনন্যা!’অনন্যাকে চুপ থাকতে দেখে অনন্যার বাবা অনন্যার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে উঠলঃ

—“দেখ মা জোর করে কখনো ভালোবাসা হয় না,ভালোবাসা হয় হৃদয় থেকে রিয়াদ হয়তো সত্যি সত্যি তানজুকে ভালোবাসে,তাই বলবো তুমি শুধু শুধু ওদের লাইফে ঢুকো না,এতে ওদের চেয়ে নিজের ক্ষতি করবে বেশি…

“বাবার কথা শুনে আরো রেগে যায় অনন্যা!’রেগে গিয়ে বাবাকে ছাড়িয়ে বললোঃ

—“আমি ওদের কিছুতেই সুখে থাকতে দিবো না বাবা,,ওরা আমায় যতটা না কষ্ট দিয়েছে তার থেকেও বেশি কষ্ট আমি ওদের দিবো…

“বলেই রেগে হন হন করে বেরিয়ে গেল অনন্যা!’আর অনন্যার বাবা চেয়েও কিছু বলতে পারলেন না মেয়েকে,কিছুক্ষন মেয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে অনন্যার রুমের থাকা ওর মায়ের একটা ছবির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন…

____

“বাড়ির ভিতর ঢুকে তানজু কিছু বলবে তার আগেই তার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো!’সাথে ঢলে পড়লো সে রিয়াদের বুকের উপর!’তানজুর অবস্থা দেখে রিয়াদ তানজুকে ধরে বলে উঠলঃ

—“কি হলো তানজু…?’

“উওরে তানজু আর কিছু বলতে পারলো না!’রিয়াদ তানজুর অবস্থা বুঝতে পেরে কোলে তুলে নেয় তানজুকে!’তারপর কোলে নিয়ে এগিয়ে যায় তানজুর রুমের দিকে!’কারন সে বেশ বুঝতে পেরেছে অতিরিক্ত নেশা করার ফলে মাথা ভাড় হয়ে আছে তানজুর সাথে সকাল সকাল এত পেশার নিতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেছে!’রিয়াদ তানজুকে কোলে তুলে রুমে ঢুকে বিছানায় শুয়িয়ে দিল!’তারপর কাঁথা জড়িয়ে দিয়ে বসলো তানজুর পাশে!’তারপর তানজুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“আমি জানি তানজু তুমি হয়তো আমার ডিসিশনটা নিতে পারো নি,বিশ্বাস করো আমার এমনটা করার একদমই ইচ্ছে ছিল না কিন্তু কি করবো বলো এটা ছাড়া আর তো কোনো উপায় ছিল না,সবাইকে সত্যিটা বলে দিলে নানান প্রশ্ন তোমায় ঘিরে ধরতো,সাথে অনেক বাজে বাজে মন্তব্য করতো,যেটা আমি মেনে নিতে পারতাম না,তাই সরি তানজু,….

“এতটুকু বলে বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রিয়াদ,আর তানজু বিছানায় চুপটি করে শুয়ে থাকে,সে জানে না এরপর কি হবে বা কি হতে চলেছে?’……
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে………

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here