#শালিকা_যখন_বউ
#part_13+14
#Adnan_Sami_Raj
নিশি ওয়াশরুমে যাওয়ার বাহানাই সেখান থেকে চলে আসে আর ওয়াশরুমে গিয়ে কান্না শুরু করে আর বলতে থাকে।
নিশিঃ কি এমন অন্যায় করেছিলাম যার জন্য আমি আর আমার ছেলে এত শাস্তি পাচ্ছি। এখন তো আমার ছেলে বাবা থাকতেও অনাথ। এমন সময় নিশির ফোন বেজে উঠে আর সে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে বাসা থেকে বুয়া ফোন করেছে। তখন নিশি তার চোখের পানি মুছে নিয়ে ফোনটা পিক করে তখন বুয়া বলতে শুরু করে।
বুয়াঃ ম্যাডাম মেহমেত বাবুর তো জ্বর আরো বেরেছে আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিনা।( মেহমেত রাজ ও নিশির ভালোবাসার অংশ যা রাজ জানে না সে মনে করে নিশি অন্য কাউকে বিয়ে করেছে)
নিশিঃ তুমি বাবুকে একটু ঘুমপাড়ানো চেষ্টা করো আমি কিছুক্ষন পরে আসছি।
নিশি তার বুয়ার সাথে কথা বলছিল এমন সময় আমি নিশি কে ডেকে পাঠাই।
।
।
তখন নিশি এসে বলে।
নিশিঃ May i come in sir..
আমিঃ yea come in..
নিশিঃ স্যার আমাকে ডেকেছিলেন।
আমিঃ হুম,, তুমি মনে হয় স্টাফ দের কাছ থেকে শুনেছো তবুও তোমায় বলছি নেক্সট উইক আমার বিয়ে।
নিশিঃ হুম স্যার শুনেছি ( কথাটি বলার সময় নিশি গলাটা ধরে আসছিলো আর ওর চোখের কোনায় পানিও জমতে শুরু করেছিল যা আমার চোখ এড়াই নাই)
আমিঃ আমি চাচ্ছি আমার বিয়ের সকল এরেজমেন্ট তুমি। যদি তোমার আপত্তি না থাকে।
নিশিঃ না স্যার আমার কোনো আপত্তি নেই,, আর আমি তো আপনার পিএ এগুলো করা আমার কর্তব্য।( করুন সুরে)
আমিঃ হুম তাহলে কাজে লেগে পরুন( আমাকে যত কষ্ট দিয়েছো তার চেয়ে বেশি কষ্ট আমি তোমায় দিবো নিশি)
।
।
হঠাৎ আমার ফোনটি বেজে উঠে দেখি আম্মু ফোন করেছে তারপর আমি ফোন রিসিভ করি আর আম্মুর সাথে কথা বলা শেষ করে নিশি কে বলি।
আমিঃ মিস নিশি আমার সাথে চলুন।
নিশিঃ কোথায় স্যার।
আমিঃ এত প্রশ্ন না করে চলুন তো
তারপর আমি আর নিশি অফিস থেকে বেরিয়ে আমার গাড়িতে গিয়ে বসি আর তখন দেখি নিশি পেছনের সিটে গিয়ে বসছে তাই আমি তাকে বলি।
আমিঃ আমাকে দেখে কি আপনার ড্রাইভার মনে হয় নাকি।
নিশিঃ তা কেন মনে হবে।
আমিঃ তাহলে তুমি পিছনে কেন বসছো??
তারপর নিশি সামনের সিটে এসে বসল আর আমি গাড়ি ড্রাইভ করা শুরু করলাম। কিছক্ষন পরে গাড়ি একটা রেষ্টরেন্ট এর পাশে দার করালাম আর নিশি কে বললাম।
আমিঃ চলো ভেতরে।
নিশিঃ আমরা এখানে কেন আসলাম।
আমি ওর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ভেতরে ডুকে গেলাম আর পেছন ফিরে দেখি নিশিও আসছে।
।
।
আমি রেষ্টুরেন্ট এ ঢোকার পরে একটা মেয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে আর আমিও নিশিকে দেখিয়ে মেয়েটি কে জড়িয়ে ধরি। আর নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ও এখুনি কান্না করে দিবে এমন অবস্থা। তারপর আমি বলি।
আমিঃ নিশি এ হলো মায়া আমার বাগদত্তা। আর মায়া এ হলো নিশি আমার পিএ
আমার মুখে নিশি হইতো পিএ শব্দটা আশা করে নি। আর মায়ার পরিচয় পাওয়ার পর নিশি এবার আর নিজের চোখের জল আটকে রাখতে পারে নাই।
যার কারনে ওর চোখ থেকে অবাধ ধারাই জল পরতে থাকে।
আর আপনারা হইতো ভাবছেন মায়া এখানে কেমন করে আসল আর আমিই বা ওকে কেমন করে চিনলাম তাহলে শুনুন…..
চলবে…..!
#শালিকা_যখন_বউ
#part_14
#Written_by_Adnan_Sami_Raj
আমি যখন অফিসে ছিলাম তখন আম্মু ফোন দেয় আর বলে মায়ার সাথে দেখা করার কথা। যদিও আমি প্রথম দিকে আম্মু কে নিষেধ করে দিই যে আমি মায়ার সাথে দেখা করবো না। কিন্তু পরে আমার নিশির কথা মনে হয় তারসাথে মনে হয় ওর ধোকা দেওয়ার কথা। তাই আমি মায়ার সাথে দেখা করতে রাজি হয়ে যাই আর আমার সাথে নিশিকেও নিয়ে আসি। তো গল্পে ফেরা যাক।
।
।
মায়ার পরিচয় দেওয়ার পর আমি নিশির দিকে তাকায় তখন দেখি নিশির চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে। কেন জানি নিশির চোখেত জল আমার সহ্য হচ্ছিল না তাই আমি ওকে বলি।
আমিঃ Nisi are you okk??
নিশিঃ yes sir I’m..
আমিঃ তাহলে তোমার চোখে জল কেন?
নিশিঃ কই নাতো ( চোখে পানি গুলো মুছে) আসলে স্যার প্রচুর গরম পরছে তো তাই এমন মনে হচ্ছে। স্যার আপনারা বসুন আমি ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসছি।
তারপর নিশি ওয়াশরুমে চলে যাই।
।
।
ওয়াশরুমে গিয়ে নিশি জোরে কান্না করতে থাকে কিন্তু তার এই কান্না দেখার কোনো মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলো না। তাই হইতো সে কান্না করতে পারছিলো। নিশি কান্না জড়িত কন্ঠে বলছিলো।
নিশিঃ হে আল্লাহ আমার সাথেই কেন এরকম হয় ভালোই তো ছিলাম আমি ওকে ছাড়া তবুও কেন ওকে আবার আমার জীবনে ফিরিয়ে আনলে। যখন আনলে তাহলে কেন সে অন্য কারো হয়ে যাচ্ছে। আমি আর আমার বাচ্চা তো ভালোই ছিলাম ওকে ছাড়া তবুও কেন হচ্ছে এমনটা। আমার বাচ্চা কি কোনোদিন তার বাবার পরিচয় আর আদর পাবে না।
কিন্তু নিশি কোনো ভাবেই নিজের কান্না থামাতে পারে না। কিন্তু সে তার বাচ্চার কথা ভেবে নিজে কে শক্ত করে আর বোঝাই তার বাবুর জন্য হলেও নিজেকে শক্ত রাখতে হবে।
।
।
প্রায় আধা ঘন্টা পরে নিশি ওয়াশরুম থেকে বের হয়। আর রাজ তার চেহারা দেখে রিতিমত ভয় পেয়ে যাই কারন তার চোখ গুলো লাল হয়ে আছে তার সাথে ফুলেও আছে। আর মানে নিশি এতক্ষন কান্না করছিলো। কিন্তু নিশির কান্না করার তো কোনো কারন এখনে নেই তবুও সে কেন কান্না করছিলো আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তখন নিশি আমাদের কাছে আসল আর চেয়ারে বসে পরলো। আর আমি রেস্টুরেন্ট এর একজন স্টাফ কে ডেকে খাওয়ার অডার করলাম কিছুক্ষন পর খাওয়ার আসলো। আমি নিশিকে দেখানোর জন্য মায়া কে নিজের সাথে খাইয়ে দিচ্ছিলাম আর এটা দেখে নিশি আর ঠিক থাকতে পারলো না তার চোখ গুলো আবার জলে ভরে গিয়েছিল। তাই সে এগুলো আড়াল করার জন্য বলল।
নিশিঃ স্যার আমায় এখন যেতে হবে এমনিতেও আমার অফিস টাইম শেষ হয়ে গেছে( কথা বলতেও ওর কষ্ট হচ্ছিল যা ওর কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছিল)
আমিঃ তুমি তো কিছুই খেলে না খাওয়া শেষ করে তারপর যাও।
নিশিঃ না স্যার এখন আর খাইতে মন চাইছে না।
আমিঃ ওকে তাহলে যাও। আর কাল থেকে আমার বিয়ের এরেজমেন্ট এর সকল কাজ শুরু করে দিও। যদি কারো সাহায্য প্রয়োজন জন তাহলে আমাকে বইলো।
নিশিঃ ঠিক আছে স্যার,, আমি এখন আসি।
তারপর নিশি চলে যাই আর আমি ও মায়া কিছু গল্প করতে থাকি যদিও মায়ার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছা আমার নেই তাও আম্মুর কথা ভেবে বলছিলাম।
।
।
অন্যদিকে নিশি বাড়িতে গিয়ে নিজের ছেলে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেই আর বলতে থাকে।
নিশিঃ তোর বাবা খুব পচা আমাকে একটুকুও বিশ্বাস করে না। এমনি তোকেও ভালোবাসে না তাই তো আজ অন্য একটা মেয়েকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু একদিন আমাকে বলেছিলো আমাকে ছাড়া আর অন্য কোনো মেয়েকে সে টাচ করবে না ( এসব কথা বলছিল আর কান্না করছিলো একসময় কান্না করতে করতে নিশি ঘুমিয়ে পড়ে)
।
।
আমি আর মায়া কিছুক্ষন গল্প করার পরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসি আর মায়া তার গাড়িতে করে বাসাই চলে যাই। আমি যখুনি নিজের গাড়িতে উঠতে যাবো তখনু কেউ আমার নাম ধরে ডাক দেয় পেছন ফিরে দেখি নিশির বেষ্টফ্রেন্ড মীম। তাই আমি তাকে বলি।
আমিঃ কেমন আছো মীম আর দেশে কবে ফিরলে( আসলে মীম দেশের বাইরে থাকতো)
মীমঃ ভালো আছি ভাইয়া আর কিছুদিন হলো দেশে ফিরেছি। নিশি কেমন আছে আর ওকে আমি ফোন দিই কিন্তু ওর ফোন বন্ধ দেখাই কেন।
আমিঃ নিশি কেমন আছে সেটা নিশিই হইতো ভালো জানে।
মীমঃ আপনার কথার মানে বুঝলাম না। আর নিশিতো আপনার স্ত্রী তাহলে কেমন সেটা আপনি জানবেন না কেন।
আমিঃ নিশি আমার স্ত্রী ছিলো কিন্তু এখন নেই।
মীমঃ কি বলছেন এগুলো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
আমিঃ এখনে না বুঝার তো কিছুই নেই। মানে আমি আর নিশি আলাদা হয়ে গেছি।
মীমঃ কিন্তু কেন আপনার দুজন দুজনাকে তো ভালবাসতেন।
আমিঃ শুনতে চাও কেন তাহলে শুনো।
তারপর আমি ১ বছর আগের সকল ঘটনা মীম কে বলি আর ঐ ছবি গুলোও মীম কে দেখাই। আর মীম এগুলো দেখে আমায় যে কথা বলে সেগুলো শুনে আমার পুরো শরীল টা কপতে থাকে আমি কিভাবে এমন টা করতে পারলাম এগুলো ভেবেই কান্না চলে আসে আমার। আর মীম আমায় যে কথা গুলি বলে তা হলো।
মীমঃ আপনি…….
চলবে