শিশির ভেজা রোদ্দুর পর্ব -৫১+৫২

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_51
#রহস্য_সমাধান
#Writer_NOVA

মাঝে কেটে গেছে দুই দিন। আজ থেকে কলেজ খোলা।আমি কলেজে এসে মনোযোগ দিতে পারিনি। কেমন জানি সবকিছু বিস্বাদ ঠেকছে। এই দুইদিনে এনাজের সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি। তাকে ভীষণ মিস করছি ।গতকাল রাতে তায়াং ভাইয়া বলেছিলো তার পায়ে একটু ব্যাথা পেয়েছে। তারপর থেকে কতবার যে তাকে কল করতে চেয়েছি কিন্তু সাহসে কুলায়নি। কেন জানি ভীষণ ভয় এসে ঘিরে ধরছিলো। তবে তার খোঁজ নেওয়ার জন্য তো কল করা উচিত আমার। শারমিনের সাথে নিরবে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। তন্বী ক্লাশ করছে।অন্য সময় হলে এতখনে শারমিনের কান পচিয়ে ফেলতাম। কিন্তু আজ আমি চুপচাপ। শারমিন হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে আমাকে বললো,

— কিরে কি হয়েছে তোর? সকালে কলেজে আসার পর থেকে দেখছি তুই কেমন মনমরা হয়ে আছিস।

— কিছু না। আমি ঠিক আছি।

— বিয়ের আনন্দ কেমন কাটলো?

— আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

— গ্রামের বিয়েতে অনেক মজা হয় তাই না?

— হুম অনেক।

— শুনলাম এনাজ ভাইয়া নাকি তোদের সাথে গিয়েছিল।

— হ্যাঁ। কিন্তু তুই জানলি কি করে?

— তওহিদ ভাইয়া বললো।

— তার সাথে তোর দেখা হলো কি করে?

— একদিন চাচাতো বোনের সাথে শপিং করতে গিয়েছিলাম সেদিন দেখা হয়েছিলো।

— ওহ্ আচ্ছা।

— কফি হাউসে যাবি?

— না ভালো লাগছে না।

ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে ডায়াল লিস্টে গেলাম। এনাজের মোবাইল নাম্বারটা এনজিও সংস্থা দিয়ে সেভ করা আছে। কিন্তু আজ অব্দি কখনো কল করা হয়নি। কল দিবো কি দিবো না তাই ভেবে দ্বিধাদ্বন্দে পরে গেলাম। ভাবতে ভাবতে কল দিয়ে ফেললাম। বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে।এই বুঝি কল ধরে ফেললো। একসময় কল রিসিভও হয়ে গেলো। অপরপাশ থেকে তার কণ্ঠস্বর পাওয়া গেলো।

— আসসালামু আলাইকুম।

আমি দ্রুত কল কেটে দিলাম। হুট করে এতো ভয় এসে হানা দিলো যে মনে হলো সে আমাকে বকবে।যদি জিজ্ঞেস করে কেন কল করেছি তাহলে কি বলবো? তাও তো জানি না। তার শরীরের কন্ডিশন কেমন তা আদোও জিজ্ঞেস করতে পারবো কিনা সন্দেহ। হাত-পা কাঁপছে আমার।তাকে মিস করছি তাতো বলতে পারবো না। এখন তো কথা বলার সাহস পাচ্ছি না। শারমিন আমার কান্ড দেখে বললো,

— কিরে কাকে কল করিস?

— কাউকে নয়, চল তো।

হঠাৎ পেছন থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠে কেউ ডেকে উঠলো,

— রাই দাঁড়া!

কণ্ঠস্বরটা ভীষণ পরিচিত লাগছে। আমি থমকে দাঁড়িয়ে পেছনে তাকাতেই আরেকদফা অবাক। এ আমি কাকে দেখছি! আমার সামনে স্বয়ং জারা দাঁড়িয়ে আছে। এতদিন পর একে দেখে আমার কপাল কুঞ্চিত হয়ে গেলো। জারা সামনে এসে বললো,

— তুই শুরু করেছিসটা কি?

আমি কপালে কুঞ্চিতভাব রেখে শারমিনের দিকে তাকাতে দেখলাম ওরও সেম দশা। আমি বিস্মিত কন্ঠে বললাম,

— সরি!

— এখন সাধু সাজছিস?

— দুই গালে দশ আঙুলের ছাপ বসাতে না চাইলে আমার চোখের সামনে থেকে ভাগ তুই কাল নাগিনী।
নয়তো কানের নিচে এমন থাপ্পড় দিবো কানে কিছু শুনবি না।

আমার কথা শুনে জারা, শারমিন দুজনেই অবাক হয়ে গেলো। আমার মাথায় চিনচিন করে রাগ উঠছে। কখন জানি সত্যি আমি এই জারার সাদা গাল লাল করে ফেলি। জারা সম্ভবত আমার কথাটা হজম করতে পারলো না। কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

— তুই তো এরকম ছিলি না।

— আগের নোভার সাথে এই নোভার আকাশ-পাতাল তফাৎ। গাল দুটো লাল না করতে চাইলে আমার সামনে থেকে সরে যা।

— আমি থাকতেও আসিনি। তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।

— বৈইমানের সাথে আমার কোন কথা থাকতে পারে না। ভালো থাকলে রাস্তা মাপ কাল নাগিনী। তোর মতো বান্ধবীতো দূরে থাক শত্রুও যাতে কারো না হয়।

— তুই কিন্তু এবার বেশি বলছিস।

— তুই আমার সামনে থেকে না সরলে বলার সাথে সাথে হাতও চলবে।

— রোশানকে মার কেন খাইয়েছিস?

আমি চমকে ওর দিকে তাকালাম। আমি রোশানকে মার কেন খাওয়াবো? কি বলে এসব? আমি মুখটাকে থমথমে করে বললাম,

— মানে?

— রোশান রাত থেকে হসপিটালে ভর্তি। ওকে একটা ছেলে ইচ্ছে মতো ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মেরেছে।

— মরে নাই?

—গুরুতর আহত হয়ে হসপিটালে ভর্তি আছে। এক হাত, এক পা ভেঙে দিয়েছে।রোশান বললো ঐ ছেলেটা নাকি তোর নতুন প্রেমিক।

— একদম ঠিক করেছে। তা তোর নাগর রোশান দেওয়ান কি আছে নাকি পটল তুলেছে?

জারা রেগে বললো,
— কি ধরনের কথাবার্তা এসব?

আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,
— কেন শুনতে পাচ্ছিস না?

— তুই কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছিস।

— আমি কোনকালেই বেশি বাড়াবাড়ি করিনি। করেছে রোশান তাই ও হসপিটালে ভর্তি। তুই করলে তোকেও ভর্তি করবো। যাতো কাল নাগিনী পথ ছাড় আমার। তোর মতো ফালতু মেয়ের সাথে কথা বলে আমি আমার মুড নষ্ট করতে চাই না। চল তো শারু।

শারমিন আমাদের মাঝে একটা কথাও বলেনি।ওকে নিয়ে পেছনে ঘুরতেই জারা বললো,

— এই সবকিছুর পেছনে আহাদ ভাইয়া ছিলো। সেই ছিলো মেইন কালপ্রিট। সে আমাকে তোর বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য করেছিলো। রোশানের কানে বিষ ঢুকিয়েছিলো। তোর ছবি অন্য ছেলের সাথে এডিট করে ওকে দেখিয়েছিলো। তোকে রোশানের কাছে খারাপ করেছে।

💖💖💖

আমি ওর দিকে ঘুরে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললাম,
— আমি জানি।

জারা অবাক হয়ে বললো,
— তুই জানিস?

— হ্যাঁ, আমি জানি। তাও দেড় বছর আগের থেকে।

— কে বললো তোকে?

— রোশানের আরেক বন্ধু। ফয়সাল ভাইয়াকে চিনিস সে বলেছে।আহাদ আমাকে একবার কুপ্রস্তাব দিয়েছিলো। তাতে আমি রাজী হয়নি বলে এতো কিছু করেছে। রোশান জানতে পেরে আহাদকে আমার কাছে মাফ চাইয়েছিলো।এতে আহাদের প্রেস্টিজে লেগেছে। তাই আমার ও রোশানের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হয়েছিলো। দুজনের ওপর প্রতিশোধ নিতে এমন করেছে। সে ভেতরে ভেতরে ছকের গুটি সাজাতে লাগলো। অথচ সে উপরে আমাকে রোশানের সাথে সেটিং করে দিলো।এমন একটা ভান ধরেছিলো যে আমাদের দুজনকে সেটিং করে দিয়ে সে এতো খুশি, সাথে তার পুরনো কাজের জন্য সে লজ্জিত।আর সে মাঝ থেকে ভালো হয়ে গেলো।
আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে সে ভালো সাজতে আমাকে পরে অনেক হেল্পও করেছে। সব বন্ধুদের বিপরীতে সে যখন আমাকে এসে হেল্প করেছে তখুনি আমার খোটকা লেগেছে। কথায় আছে না অতিভক্তি চোরের লক্ষণ। তুই রোশানকে পছন্দ করতি। তাই তোকেও হাত করে নিলো।ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য বান্ধবীর সাথে বৈইমানী করলি।তোর কাছে বন্ধুত্বের থেকে রোশান বেশি হয়ে গেলো।তুই তো জেনেশুনে আমার সাথে এমন করেছিস। দোষ তিনজনেরি। কারো একটু কম কিংবা কারো একটু বেশি নয়। বরং সবারই সমান।নিজে এখন এসে রোশানের মতো ভালো সাজছিস? হাহ, তোদের তিনজনকে ক্ষমা আমি জীবনেও করবো না। ভাগ এখান থেকে। নয়তো রোশানের পাশের সিটে তোকে ভর্তি হতে হবে। না আমার প্রেমিক মারবে না, আমি মারবো তোকে।

জারার উত্তরের অপেক্ষা না করে আমি শারমিনের হাত ধরে দ্রুত অন্য দিকে চলে এলাম। আরেকটু সময় থাকলে জারার গালে ঠাটিয়ে দুটো চড় মারতাম। কিন্তু আমি ওর মতো মেয়েকে থাপ্পড় মেরে নিজের হাত নষ্ট করতে চাই না। তবে একটা বিষয় ক্লিয়ার হয়ে গেলো গতকাল রাতে রোশানকে একা পেয়ে এনাজই মেরেছে। একদম ঠিক করেছে। কিন্তু সমস্যা হলো মারতে গিয়ে নিশ্চয়ই রোশানের হাতে কয়েক ঘা খেয়েছে। সাথে পায়ে ব্যাথাও পেয়েছে। এবার হিসাব পুরো মিলে গেলো।

এই সবকিছুর পেছনে আহাদ ছিলো। হ্যাঁ সেই মেইন কালপ্রিট। সে এখন আব্দুল্লাহপুর জেলে আছে। না আমার জন্য নয়। ড্রাগের ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। মাস দুই আগে ফয়সাল ভাইয়ার থেকে খবর পেয়েছিলাম। ফয়সাল ভাইয়া আমার সাথে হওয়া অন্যায়টা মেনে নিতে পারেনি। তাই পরবর্তীতে আমাকে সব জানিয়ে দিয়েছিলো। সব বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ নষ্ট করে দিয়েছে। তাও শুধুমাত্র এই জন্য যে ওরা আমার সাথে সবাই অন্যায় করেছে বলে। ভাইয়া আমাকে হাতজোড় করে বলেছিলো,

—আমি যদি প্রথম থেকে এসব জানতাম, তাহলে কখনো তোমার সাথে এমনটা হতে দিতাম না নোভা। তাই আমাকে কেউ কিছু বলেওনি।আমি তখন ঢাকায় ছিলাম। ঢাকা থেকে এসে যখন সব জানতে পারলাম তখন সব শেষ। তবু্ও আমি হাল না ছেড়ে সবকিছু খুঁজে বের করে তোমাকে বলে দিলাম। তুমি এসব ভুলে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করো।যারা তোমাদের সাথে এমন করেছে তাদের পাপের ফল তারা অবশ্যই পরবর্তীতে ভোগ করবে।

আমি নিরব চোখে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এর জন্য আমি বলি পৃথিবীর সব ছেলে খারাপ নয়। খারাপ হলে পৃথিবী ঠিক থাকতো না।

আমাকে চুপ থাকতে দেখে শারমিন বললো,

— মন খারাপ?

— না তো!

— তুই এতকিছু সহ্য করেছিস কি করে? আমি হলে সত্যি মরে যেতাম।

— মরতেই তো চেয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি৷ তবে এখন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। কি ভুল করতে গিয়েছিলাম।এত সুন্দর জীবনটাকে আমি নিজ হাতে নষ্ট করতে চেয়েছি।

— এই নোভা ঐদিকে দেখ।

— কি দেখবো?

— দেখনা।

আমি শারমিনের দৃষ্টি বরাবর তাকাতেই দেখি এনাজ এক পায়ে হালকা খুড়িয়ে আমাদের দিকে দৌড়ে আসছে। আমি তাকে এভাবে আসতে দেখে বেশ অবাক হলাম।সে সামনে এসে দুই হাত হাঁটুতে রেখে কিছুটা দম নিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,

— তুমি ঠিক আছো?

— আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?

— এতখন খারাপ ছিলাম। এখন ঠিক আছি।

— আপনি এমন দৌড়ে কোথা থেকে এলেন?

এনাজ আমার কথার উত্তর না দিয়ো শারমিনের দিকে তাকিয়ে বললো,

—তোমাকে তওহিদ গেইটের সামনে যেতে বলেছে। তুমি একটু গিয়ে দেখে এসো।

শারমিন কপাল কুঁচকে বললো,
— কেন?

— আমি বলতে পারবো না। তুমি গিয়ে দেখো।

শারমিন চলে গেল। ও হয়তো বুঝতে পেরেছে আমাদেরকে একটু স্পেস দেওয়া দরকার।তাই অমত না করে সেদিকে রওনা দিলো। এদিকে মানুষ একদমি নেই। ক্লাশ চলাকালীন সময় মানুষের আনাগোনা কমই থাকে। শারমিন যেতেই আমার গালে শক্ত করে একটা চড় পরলো৷ ঘটনার আকস্মিকতায় আমি গালে হাত দিয়ে বোকা বনে গেলাম। তাকিয়ে দেখি এনাজ ফুঁসছে। আমি গালে হাত দিয়ে কাঁদো কাঁদো ফেস করে বললাম,

— কি হয়েছে মারলেন কেন🥺?

— আরেকটা কথা বলবে আরো দুটো দিবো। সাধারণ কমোন সেন্স নেই তোমার?

— কি করেছি আমি?

— আবার জিজ্ঞেস করো কি করেছো? মারবো আরেকটা?

উনি হাত তুলতেই আমি দুই হাতে মুখ ঢেকে কুজো হয়ে গেলাম। উনি হাত নামিয়ে এক হাতে কোমড়ে রেখে আরেক হাতে কপালের অর্ধেক অংশ স্লাইড করতে করতে রাগী গলায় বললো,

— তোমার ধারণা আছে আমি কি একটা অবস্থায় ছিলাম। কল দিয়েছিলে কেন? কল দিয়ে কথা কেন বলোনি? কতবার কল দিয়েছি আমি, তা কি জানো? আমি ভেবেছিলাম তোমার কোন বিপদ হয়েছে। তাই দ্রুত বাইক নিয়ে চলে এলাম। এটলাস্ট আমার কলটাতো পিক করতে পারতা। আমি এক মুহুর্তের জন্য চোখ, মুখে অন্ধকার দেখছিলাম। আমি ভেবেছিলাম তোমার কোন ক্ষতি হয়েছে। কলিজা শুকিয়ে গিয়েছিল। তায়াং থাকলে এতখনে আরো দুটো থাপ্পড় তোমার গালে পরতো।

আমি গালে হাত দিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। চোখ দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গরিয়ে পরলো।থাপ্পড় মেরেছে তার জন্য নয়,অভিমানে। ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখলাম ২৭ টা মিসড কল। মোবাইল সাইলেন্ট করে রেখেছিলাম তাই রিং হয়নি। আর উনি আমার বিপদ ভেবে এখানে চলে এসেছে। নিজের পা ব্যাথা সেদিকেও খেয়াল নেই। কিন্তু আমি কোন কথা বলবো না। আমাকে মারছে কেন? আমি কি জানতাম তাকে কল দিলে সে ভাববে আমার বিপদ হয়েছে। আর এভাবে ছুটে আসবে। সেগুলো না হয় বাদ দিলাম। তাই বলে আমায় মারবে? এত জোরে কেউ থাপ্পড় দেয়? আমার গাল জ্বলে যাচ্ছে। আরেকটু আস্তে দিলে কি হতো? হু হু আমি একটুও কথা বলবো না তার সাথে। মোবাইল যে সাইলেন্ট ছিলো তাও বলবো না।তাকে মিস করছিলাম, তার শরীরের খবর নেওয়ার জন্য কল দিয়েছিলাম সেটাও বলবো না। কোন কথাই বলবো না। মারলো কেন আমায়? ছোট বাচ্চা মেয়েকে কেউ এভাবে মারে🥺?
#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_52
#Writer_NOVA

এক সপ্তাহ পর……

সময় যেন চোখের পলকে কেটে যাচ্ছে। মনে হলো সেদিন এনাজের ওপর অভিমান করে বাসায় চলে এলাম আজ এক সপ্তাহ কেটে গেলো। এতো দ্রুত কিভাবে সময় যাচ্ছে তাও বুঝতে পারছি না। সেদিনের পর থেকে আমি এনাজের সাথে কোন কথা বলি না। এনাজ বেসরকারি এক কোম্পানিতে জব পেয়েছে। তাই মাঝে এনাজ একদিন মিষ্টি নিয়ে এসেছিলো।তারপর আর খবর নেই। জিদ করে একদিন কলও দেইনি। সে দিলেও রিসিভ করে তন্বীর হাতে দিয়ে দিতাম। গত পরশু বিকেলে তায়াং ভাইয়ার দাদী এসেছে।শরীর অসুস্থ তাই ডাক্তার দেখাতে। অবসরে তার সাথে গল্প করেই সময় কেটে যায়। সকালের খাবার খেয়ে কলেজের জন্য তৈরি হতেই কোলিং বেল বেজে উঠলো। মাথার হিজাবটা ঠিক করতে করতে তন্বীকে বললাম,

— তন্বী দেখতো কে এলো।

— তুমি একটু যাও না নোভাপু। আমি হিজাবটা ঠিক করছিলাম। এখন গেলে আমার হিজাব বাধাটাই ভুলে যাবো।

— আচ্ছা তাহলে আর কি করার। আমিই যাই। খালামণি তো দাদীকে ঔষধ খাওয়াচ্ছে।

আরেকবার কলিং বেল বাজতেই আমি দৌড়ে সেদিকে ছুটলাম। দরজা খুলতেই ইফাতের আম্মুকে দেখতে পেলাম। আমি হাসিমুখে বললাম,

— আরে শাশুড়ী আম্মা যে! তা কি মনে করে হঠাৎ? আপনি কষ্ট করে কেন আসতে গেলেন? আমাকে ডাকলে আমিই চলে যেতাম।

— ভাবী কোথায়?

— দাদীর কাছে। কোন দরকার আন্টি?

— একটু পর হসপিটালে যাবো। তাই ভাবলাম তোমাদের সাথে দেখা করে যাই। যদি বেঁচে না ফিরতে পারি। তাহলে তো আর দেখা হবে না।

উনি কথাগুলো বলতে বলতে চোখের পানি ফেলে দিলেন। আমি এক হাতে আলতো করে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,

— কি হয়েছে? এমন উদ্ভট কথাবার্তা কেন? আপনার কিচ্ছু হবে না। আল্লাহ আছে তে।

— হসপিটালে যাবো আজ। ডক্টর বলেছে বাচ্চার কন্ডিশন ভালো না হলে আজ রাতেই সিজার করবে।আর যদি ভালো হয় তাহলে ১৫ দিন পর। আমার ভয় করছে নোভা। মনে হচ্ছে এবার আমি বাঁচবো না। আমি মরে গেলে ইফাত,সিফাতকে একটু দেখো।

— ছিঃ কি বলেন এসব! খবরদার বাজে কথা বলবেন না। আল্লাহ আছে তো সাথে। উনি চাইলে সব ঠিক হবে। আপনি খামোখা টেনশন করছেন।

উনি আঁচলে চোখ মুছে আমার দিকে তাকিয়ে করুন মুখে বললো,

— কোন অপরাধ করলে মাফ করে দিও মা। নিজের অজান্তে যদি কোন কষ্ট দিয়ে ফেলি তাও মাফ করে দিয়ো। হায়াতের মালিক আল্লাহ। তবুও ভয় করে। যদি বেঁচে না ফিরতে পারি।

— আহ্ আন্টি, কি শুরু করলেন? এবার থামুন তো। আল্লাহ ভরসা কিছু হবে না। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।

উনি আঁচলে চোখ মুছলেও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলেন।কিছু সময় কান্না করে আমাকে সাইড কাটিয়ে ভেতরে চলে গেলেন। আমি এক দৃষ্টিতে তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে একজন মা তার সন্তানকে জন্ম দেন। আর বর্তমানে সেই মা-কেই তার সন্তান বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে দুইবার ভাবে না।

💖💖💖

বিকেলে……..

দাদীর সাথে বসে তার পুরনো দিনের গল্প শুনছিলাম। তন্বী দুই মগ কফি নিয়ে এসে আমার দিকে এক মগ বারিয়ে দিলো। আমি কফির মগে হালকা করে এক চুমুক দিয়ে বড় করে একটা নিশ্বাস নিয়ে সাথে সাথে ছাড়লাম। দাদী আমাদেরকে বললো,

— কি খাস তোরা এসব? চায়ের মতো কি আর কিছু আছে? কিরকম তিতা, তিতা লাগে!

আমি মুচকি হেসে বললাম,
— তুমি খাবা সতিন? খেলে বলো বানিয়ে দেই। তবুও একে চায়ের সাথে তুলনা দিও না। চায়ের স্বাদ আলাদা, কফির স্বাদ আলাদা। কারো সাথে কারো তুলনা হয় না। যার যার জায়গায় সেই বেস্ট।

তন্বী সোফায় বসে বললো,
— তুমি কি চা খাবা? বানিয়ে দিবো?

— দে একটু আদা কুচি দিয়ে রং চা বানিয়ে দে।

— আচ্ছা আমি বানিয়ে আনছি।

তন্বী সোফা থেকে উঠে কিচেনে চলে গেলো। আমি কফি শেষ করে চুপ করে বসে রইলাম। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে দাদী বললো,

— কি সতিন এতো চুপচাপ কেন? টেনশনে পরে গেলি নাকি?

— টেনশনে পরবো কেন?

— তোর জামাইয়ের ভাগ বসাতে চলে এসেছি। সতিন এলে তো মাথায় চিন্তা আসবেই। তোর থেকে যদি তোর জামাইকে হাত করে নেই।

— এত সোজা নাকি? তুমি যত জাদু করো আমার জামাইকে সে আমারি থাকবে।

— দেখি কতদিন আঁচলে বেঁধে রাখতে পারিস।আমি জাদু করে আমার কাছে নিয়ে যাবো।

— এক মিনিট সতিন সাহেবা! আমার জামাই কোথায়? আগে জামাই দাও। তারপর এসব চিন্তা করো। এখন জলদী আমায় জামাই দাও। বুড়ি হয়ে গেলাম এখনো জামাই পেলাম না।

আমি দাদীর দুই হাত ধরে ফ্লোরে পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে কান্নার অভিনয় শুরু করলাম। জোরে চেচিয়ে বললাম,

— ও দাদী জামাই দাও। শীতকাল চলে আসছে তো। এই শীতে জামাই ছাড়া থাকতে চাই না। আমার দাবী, আমার দাবী মানতে হবে মানতে হবে। এবার শীতে জামাই দিতে হবে, দিতে হবে। ইহা আমার ক্ষুদ্র দাবী।জামাই চাই🥺। ঠিক বয়সে বিয়ে হলে এখন দুটো পোনাইয়ের(বাচ্চার) মা হয়ে যেতাম। ও দাদী জামাই দাও। আমার জামাই লাগবো।

— বাড়িতে বলবো?

— জলদী বলো।দেরী করছো কেন? আমি বিয়া করমু।

দাদী আমার কাহিনি দেখে হেসে কুটিকুটি। আমি অপলক চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। দাদীর আদর কি হয় আমি তা জানি না। আমার দাদী মারা গেছে আমার আব্বু-আম্মুর বিয়ের আগে। কিন্তু উনাকে পেলে মনে হয় নিজের দাদীকে পেয়েছি। উনি তায়াং ভাইয়া, তন্বী, আমাকে সমান আদর করে। দাদী হাসি থামিয়ে বললো,

— দেরী কর তুই। আমি এই শীতেই তোর বিয়ের ব্যবস্থা করছি।

— জলদী করো। আমি জামাই চাই।

— তানভীর কোথায়?

— জানি না দাদী। সেই যে সকালে বেরুয়েছে এখনো আসিনি।

— নাতীটা আমার একদম ওর দাদার মতো হয়েছে। সতিন, আমার পানের বাটাটা নিয়ে আসবি একটু? পান চাবাইতে মন চাইতাছে।

“আরে বিয়া করায় দে, আরে বিয়া করায় দে।” গান গাইতে গাইতে রুমের দিকে যেতে নিলেই দাদী বললো,
— অপেক্ষা কর নাতনী। আমি বিয়ার ফুল ফোটানোর ব্যবস্থা করছি।

আমি লজ্জায় ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে দৌড়ে তার রুমে ছুটলাম। খালামণি রুমে ঘুমাচ্ছে।তাই আস্তেধীরে সেই রুম থেকে বের হলাম।দরজা খটখটানির শব্দ হতেই আমি ওঠার আগে সেদিকে ছুটলো তন্বী।আমি দাদীর সাথে একটা পান সাজিয়ে মুখে দিলাম।তখুনি পেছন থেকে কেউ বললো,

— ও ডার্লিং! কেমন আছো?

এনাজের কণ্ঠ পেয়ে দরজার দিকে তাকালাম। এনাজ ও তায়াং ভাইয়া এসে দাদীর পাশে বসলো। দাদীকে জড়িয়ে ধরে এনাজ বললো,
— ভুলেই গেছো ডার্লিং। একটা খবরও নাও না।

দাদী অভিমানী সুরে বললো,
— আমার দুই নাম্বার জামাইয়ের আজকে হুশ এলো। আমি দুদিন ধরে এলাম আর তুমি আজকে এলে।

— চাকরী পেয়েছি দাদী। অন্যের চাকরী করলে কি হুটহাট আসা যায়। সময়ই পাই না আজকাল। আজকে একটু সময় পেলাম তাই চলে এলাম। তোমার শরীর কেমন?

—আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোর?

— আল্লাহর রহমতে আর তোমাদের দোয়ায় আছি আলহামদুলিল্লাহ।

এনাজ দাদীর সাথে গল্পের ঝুলি খুলে বসলো। অনেক আগের থেকেই এনাজের এই বাড়িতে চলাচল। সেই সুবাদে দাদী এনাজকে ভালো করেই চিনে। দুজনের বন্ডিংও মনোমুগ্ধকর। তায়াং ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

— কিরে শাঁকচুন্নি হা করে তাকিয়ে কি দেখছিস? যা গিয়ে আমাদের জন্য চা-নাস্তা কিছু নিয়ে আয়।

আমি মুখ ভেংচি দিয়ে শব্দ করে পান চাবাতে লাগলাম। যার মানে তোর কথার কোন গুরুত্ব আমার কাছে নেই। এনাজ একবার আমার দিকে তাকিয়ে এক হাতে কান ধরে ইশারায় সরি বললো। আমি চোখ ঘুরিয়ে ফেললাম। কিছু সময় পর আবার তাকাতেই সে ঠোঁট চোখা করে চুমু দেখালো। আমি একটা খাইয়া ফালামু লুক দিয়ে উঠে কিচেনে চলে গেলাম।

💖💖💖

রাতে…..

আমি ও তন্বী রাতের জন্য আলু পরোটা বানাচ্ছি। এনাজ কিছু সময় পরপর কিচেনে এসে ঘুরে যাচ্ছে। কিন্তু আমি তাকে পাত্তাও দিচ্ছি না। সে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আমাকে কত কিছু বলছে। আমি কোন কথাই শুনছি না। এনাজ, তায়াং গিয়ে সোফায় বসে লুডু খেলতে লাগলো। দাদী এসে বললো,

— হ্যাঁ রে বড় নাতনী আমাদের তানভীরকে তোর কেমন লাগে?

আমি রুটি বেলতে বেলতে ভ্রু কুঁচকে দাদীর দিকে তাকিয়ে বললাম,

— হঠাৎ এই প্রশ্ন?

— বল না তানভীরকে কেমন লাগে?

— পাঠারে আর কেমন লাগবে?

— আমি জিজ্ঞেস করছি তানভীরকে কেমন লাগে?

— হ্যাঁ মানুষের মতোই লাগে। আবার মাঝে মাঝে ভিনগ্রহের এলিয়েনর মতোও লাগে।

— নাহ এই পাগলনীর মাথা ঠিক নেই।

— এই সতিন কি বলো আমায়? আমি পাগলনি না।

— হু তাতো দেখছি।

— তন্বী আমার সাথে একটু আয় তো।

তন্বী তাওয়ায় তেল দিয়ে দাদীর দিকে তাকিয়ে বললো,
— হ্যাঁ, আসতাছি তুমি যাও।

দাদী চলে যাওয়ার কিছু সময় পর তন্বী চলে গেল। আমি রুটি বেলে পরোটার ভাজ দিলাম। তাওয়ার পরোটা উল্টে দেওয়ার জন্য খুন্তি নাড়াতে গেলে এনাজ গলা খাকরি দিয়ে বললো,

— সরি, টিডি পোকা। এবার তো মাফ করে দাও।

উনি দরজার সাথে হেলান দিয়ে বুকে হাত গুজে দাড়িয়ে আছে। আমি একবার তার দিকে তাকিয়ে পরোটা উল্টাতে মনোযোগ দিলাম। খুন্তি দিয়ে পরোটা উল্টাতে গেলে এক ঝাটকা গরম তেল এসে আমার হাতে লাগলো। আমি আল্লাহগো বলে চেচিয়ে উঠতেই এনাজ দৌড়ে এসে ব্যস্ত হয়ে পরলো।

— একটু সাবধানে কাজ করতে পারো না। আমার জিদ পরোটার ওপর তুলতে কে বললো? এখন জ্বালাটা কে সহ্য করবে? আমি নাকি তুমি?

উনি এগিয়ে এসে হাত টেনে নিয়ে বেসিনের কল ছেড়ে দিয়ে পানির নিচে হাত ধরে রাখলো। তারপর দৌড়ে ফ্রীজ থেকে বরফ বের করে নিজে ডলে দিলো। আমি দুই-তিনবার হাত সরিয়ে নিতে গেলে চোখ পাকিয়ে তাকালো।তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

— কিছু বলছি না বলে ভেবো না পার পেয়ে গেছো। তুলে এমন আছাড় দিবো যে সারাদিন আমার নাম জপবা। ভালো আছি ভালো থাকতে দাও। খারাপ হলে কিন্তু তোমার ক্ষতি। আমার খারাপ রূপ এখনো দেখোনি। বেশি তিড়িং বিড়িং করবা সত্যি তুলে আছাড় দিবো। তখন এই এনাজকে দেখে ভয়ে কাঁপবে।

আমি তার রাগী গলা শুনে অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ে ভয়ে মাথা হেলিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলাম। উনি তেল ছিটকে আসার জায়গায় যত্ন সহকারে ফুঁ দিয়ে বরফ ডলে দিচ্ছে। আমার কান্না শুনে ধমক দিয়ে বললো,
— একদম চুপ। আরেকটা শব্দ যেন না হয়। কি বাচ্চাদের মতো শুরু করছো? মুখে তালা দাও।

— এ্যাঁ, এ্যাঁ, এ্যাঁ ও খালামণি😭।

— চুপ। বলছি না কোন শব্দ হবে না।

— ই-ই-ই-ই-ই-ই-ই-ই-ই-ই🥺।

— তুমি সত্যি আমার হাতে আরেকটা থাপ্পড় খাবে টিডি পোকা।

আমি ঠোঁট উল্টে ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি চুলোটা অফ করে দিয়ে আমাকে টুলে বসালো। তারপর ফার্স্ট এইড বক্স এনে বার্ণ মলম দিয়ে দিলো। চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বললো,

— সরি পাগলী। সেদিন আমার মাথা ঠিক ছিলো না। তোমার কল দেখে আমি পাগল হয়ে গেছিলাম। ভেবেছিলাম রোশান লোক দিয়ে তোমার কোন ক্ষতি করেছে। আমি এক মুহুর্তের জন্য নিজের মধ্যে ছিলাম না। তোমার কিছু হলে আমার কি হবে বলোতো? ভালোবাসি পাগলী।

— ছাড়েন, একদম ধরবেন না আমায়। আপনি অনেক জোরে থাপ্পড় মেরেছিলেন। আমি ভুলি নাই 😭।এখন আবার কতগুলো বকা দিছেন।

— সরি বললাম তো।

— কাজ হবে না।

— কি করতে হবে?

— কিছু না। সরেন এখান থেকে। ছাড়েন আমায়। সাহস হয় কি করে আমাকে জড়িয়ে ধরার? ছাড়ুন বলছি।

এনাজ আগের থেকে জোরে আমাকে শক্ত করে ধরে কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে বললো,

— সরি টিডি পোকা। আর কখনো এমন করো না। তোমার সামান্য বিষয় নিয়ে আমি সিরিয়াস।

আমি তার বুকে কতগুলো আলতো করে কিল-ঘুষি বসিয়ে তাকে ছেড়ে অন্যদিকে চলে এলাম। এভাবে কেউ অভিমান ভাঙালে তার সাথে কি অভিমান করে থাকা যায়? একটুও না। ইস, আমার এখন লজ্জা করছে। সে আমায় জড়িয়ে ধরে ছিলো। উনি আমায় লজ্জা না দিয়ে আমার সাথে হাতে হাতে কাজ করতে লাগলো। আমি আর তার দিকে তাকালাম না। তন্বীকে সে আর কাজ করতে দিলো না। তন্বীকে জোর করে কিচেন থেকে পাঠিয়ে দিলো।আমি পরোটা বানিয়ে দিলাম সে ভেজে দিলো। রাতের খাবার টেবিলে দিয়ে আমি খালামণি ও দাদীকে ডেকে আনতে গেলাম। তারা দুজন কিছু নিয়ে কথা বলছে। তাদের রুমের সামনে যেতেই আমি যা শুনলাম তাতে আমার হাত-পা ঠান্ডা হওয়া শুরু হলো। মনে হচ্ছে পুরো পৃথিবী ঘুরছে। যেকোনো সময় মাথা ঘুরিয়ে পরে যাবো।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here