পরপর কয়েকবার ইচ্ছে করে হিমির ঠোঁটে চুমু খেলাম, হিমির শরীর কাঁপছে আর বিস্ফারিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে হয়তো এক অন্য আমিকে দেখে অবাক হচ্ছে ভীষণ!
আবারও হিমির ঠোঁটে চুমু খেয়ে বললাম,– কিছু স্মৃতি কখনও ভোলা যায়না হিমি, আমি তেমন কিছু স্মৃতি আজ তোমায় দিলাম, চাইলেই ভুলতে পারবে না।
হিমি কম্পিত কণ্ঠে বললো,– আমি ভাইয়াকে সবকিছু বলে দেবো।
হিমির কথা শুনে আমি হেসে ফেলে বললাম,– এটা করতে তুমিই আমায় বাধ্য করেছো হিমি, ভালোবাসা জিনিসটা নেই খেলতে নেই, যতটা পোড়াবে, ততটাই পুড়বে, অন্তত আমার বিষয়ে আমি বলতে পারি, ভালো যখন বেসেই ফেলেছি, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে তোমাকে আমি আমার করেই ছাড়বো, এই যে অসংখ্য বার তোমার ঠোঁটে আমার ঠোঁট স্পর্শ করালাম, কারণ কি জানো, অন্য কাউকে নিয়ে ওমন কিছু ভাবতে গেলেও যেন এই স্পর্শ আমার কথা তোমায় মনে করিয়ে দেয়।
হিমির চোখ মুখ রাগে ভয়ে লাল হয়ে আছে, মনে হচ্ছে এক্ষুনি আমাকে গিলে খাবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে হিমি বললো,– জোর করে চুমু খেয়ে নিজেকে বাহাদুর প্রমাণ করলেন?! এভাবে কারো মন পাওয়া যায়না।
আমি হিমির চোখে চোখ রেখে বললাম,– হিমি, যখন একটা মানুষ কারো প্রেমে পড়ে, তখন প্রেমকে ঘিরে অনেকগুলো স্বপ্ন মিলে একটা প্রেমের পৃথিবী তৈরি হয়। সেই স্বপ্ন গুলোর কিছু থাকে স্পর্শের, কিছু মেলামেশার, কিন্তু একথা কেউ প্রকাশ করেনা, লজ্জায় হয়তো। কিন্তু প্রত্যেকেই রোজ তার প্রেমিক অথবা প্রেমিকার ঠোঁটে হাজারটা চুমু খায় মনে মনে। আদরে আদরে মাতিয়ে তোলে কল্পনায়। শুধুমাত্র মোবাইল যদি নিজে সাক্ষী দিতে পারতো, তবে লক্ষ কোটি চুমুর কথা প্রকাশিত হতো সেই কবেই, ফোনে ফোনে হয়ে যাওয়া কত বাসর ঘরের গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হতো! ভাগ্য ভালো যে মোবাইল আমাদের কথোপকথন আদান প্রদান করতে পারলেও নিজে কিছু বলতে পারেনা। আমার কথা শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য।
হিমি চুপচাপ আমার কথা শুনছে নীরবে, আর ফর্সা গালে রাগ জমে লাল হয়ে আছে তার।
এক টানে হিমিকে বুকে এনে শক্ত করে চেপে ধরে বললাম,– এই যে যৌবন, এই যে তোমার সমুন্নত বক্ষ যুগল স্পর্শ করেছে আমার বুক, আমি এসব নিয়ে ভাবছি না, ভাবছি আমার ভালোবাসার মানুষটা আমার বুকেই আছে, এটাই প্রকৃত সুখ।
আমার বুকে হিমির বুক লেগে আছে, হিমির হৃৎস্পন্দন আমি স্পষ্ট অনুভব করছি, হিমির হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আমি হিমির পিঠে হাত বুলিয়ে বললাম,– এই যে নবযৌবনা শরীরটা তোমার, এই মূহুর্তে আমি যদি চাই, তোমার মন না করলেও তোমার শরীর ফেরাতে পারবে না জানো! কিন্তু শরীরের প্রতি এই টান হয় কিছু সময়ের মাত্র, উত্তেজনা শেষে এটাও শেষ। কিন্তু মনের ভালোবাসা আজীবন একই রকম থাকে, কমেনা বরং বাড়ে দিনে দিনে। সুঠাম সুন্দর দেহের অহংকারে সত্যিকারের ভালোবাসা দূরে ঠেলে দিয়ো না কখন, পরে পস্তাবে। যে তোমার শরীরের লোভে পড়ে ভালোবাসার মুখোশের আড়ালে শরীরের প্রতি লোভ নিয়ে তোমার জীবনে প্রবেশ করবে, সে তোমাকে ঐ নির্দিষ্ট কয়েক মিনিটের জন্যই ভালো বাসবে, তারপর তার কাছে তুমি মূল্যহীন। তার তুমি আজীবন ঐ কয়েক মিনিটের জন্যই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, আবার শারীরিক চাহিদা মিটে গেলেই মূল্যহীন। এবার তুমি ভেবে বলো, যে তোমাকেই ভালোবাসে তার জীবন সঙ্গী হওয়া ভালো? নাকি শুধু মাত্র তোমার শরীরের লোভির শয্যাসঙ্গী?
হিমি আমতা আমতা করে বললো,– এসব বলতে আপনার একটুও লজ্জা হয়না?
আমি বললাম,– হিমি, তুমি আমি দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক, এটা আমিও যেমন বুঝি, তোমারও বুঝবার কথা। যেজন তোমায় ভালোবাসে তুমি তার হও, ফুল প্যাকেজ পাবে, ভালোবাসা, আদর সোহাগ, সারাজীবনের ভরসা। আর যেজন তোমার চেয়ে তোমার শরীরের প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করে, তার কাছে তুমি দামী কেবল মাত্র বিছানায়, কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই চরম সত্যি। হঠাৎ করেই তুমি আমাকে অবহেলা করতে শুরু করলে, দূর্বল হচ্ছো তার প্রতি যে কিনা ইতিপূর্বে কয়েকটা মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। তোমার শরীরের উষ্ণতা শুষে নিয়ে তোমাকে যে সে ছুড়ে ফেলবেনা তার গ্যারান্টি কি বলো?
হিমি কিছু বলবে এমন সময় নিচে দরজা খোলার শব্দ…
চলবে…
গল্পঃ শুধু তোমাকে চাই।
( প্রথম পর্ব )