শুভ্র বর্ষণ পর্ব ২

#শুভ্র_বর্ষণ
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_২

বিয়ের একঘন্টা আগেও যার সাথে কথা বলতে চায়নি লজ্জায়, তার সাথেই এক ঘরে ঘুমাতে হবে এখন। মিহার ইচ্ছা করছে অদৃশ্য হয়ে যেতে। কিভাবে মানুষটার সামনে দাঁড়াবে, কিভাবে কথা বলবে বা একসাথে থাকবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। নিশান্তের পরিবার বিদায় নিয়েছে কিছুক্ষন। তবে নিশান্ত রয়ে গেছে। সে এখন মিহার রুমে। আজ ছোট্ট করে ওদের বাসর রাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই রাত নিয়ে মানুষের হাজারটা আকাঙ্ক্ষা সন্তর্পণে লুকায়িত থাকে মনের ভেতর। অথচ মিহার মনে হচ্ছে রাতটা এখন না আসলেও ভালো হতো।

শোভা মিহার রুম থেকে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বেড়িয়ে এলো। মিহা ডাইনিং টেবিলে বসে আজগুবি চিন্তা ভাবনা করছে। যার বেশিরভাগই ছেলেমানুষী ভাবনা। একুশ বছর বয়সী একটা মেয়ে একজন পুরুষের সাথে পরিচিত হতে ভয় পাচ্ছে। সেই পুরুষ তারই স্বামী। তার আকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি।

শোভা এসে মিহাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে পাশে বসে পড়লো। বললো,
“ভাইয়া খুব হ্যাল্পফুল বুঝলি। রুমটা সাজাতে আমাকে হ্যাল্প করেছে। মনেই হলো না আজই প্রথম আলাপ।”

মিহা আলতো হাসলো কথাটা শুনে। বললো,
“কি দিয়ে সাজালি শুনি?”

“কি আর আছে বলো। বাগানের ভেজা নেতিয়ে পড়া সব ফুল নিয়ে এসেছি। ফ্যানের নিচে কতক্ষন শুকাতে চেষ্টা করেছি। ধৈর্য ধরতে না পেরে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চেষ্টা করেছি। তারপর সেই আধ ভেজা ফুল আর মোম দিয়ে তোমার বাসর ঘর সাজালাম। গাদা, গোলাপ, পর্তুলিকা, রজনীগন্ধা, তোমার শখের বেলীফুল সব মিলিয়ে জগাখিচুরি। মোমের আইডিয়াটা অবশ্য ভাইয়া দিয়েছে। ভাইয়া মনে হয় খুব রোমান্টিক।”

মিহা মাথা নিচু করে ফেললো। সবার সাথেই লোকটার ভাব হয়ে গেছে। অথচ আসল মানুষটার সাথে এখনো কথাই হয়নি।

“লজ্জা পাওয়ার অনেক সময় পাবে। এখন রুমে যাওতো। ভাইয়া বেচারা বোধহয় তোমার অপেক্ষায় ঘুমিয়েই যাবে।”

মিহা নাক ফুলালো। বললো,
“ওহ এখন ভাইয়া বেচারা। আর আমি কেউ না তাই না?”

“তোমার দিন শেষ। এখন ভাইয়ার দিন। উনি আমার নতুন এটিএম কার্ড বুঝলে। তাই হাতে রাখতে হবে।”

মিহা ঘরে ঢুকলো আরো মিনিট দশেক পরে। বুকের ভেতর ঢোল বাজছে। মনে হচ্ছে বাহিরে থেকেও শোনা যাবে। দরজা ঠেলে ঢুকতেই দেখলো রুম ফাকা। মিহা দরজা আটকে ধীর পায়ে রুমের মাঝখানে আসতেই নিশান্ত বারান্দা থেকে রুমে প্রবেশ করলো। ক্ষনেই দুজনে একদম মুখোমুখি হয়ে পড়ায় মিহা ভরকে গেলো। সেই সুদর্শন মুখটা আবারো দেখতে পেলো মিহা। এখন যেন আগের থেকে একটু বেশিই ভালো লাগলো। তবে বেশিক্ষন তাকাতে পারলো না। মাথা নিচু করে ফেললো সাথে সাথে।

দুইবার চোখে দেখেই কারো প্রতি এতো দুর্বল হওয়া যায় নাকি? ইচ্ছে করছে আবারো দেখতে। কিন্তু সাহস হচ্ছে না। কোথায় যে গেলো সব সাহসেরা বুঝে পেলো না। লালাভ আভা ফুটে উঠলো মিহার মসৃন, হলদে গালে। ওর এখন কি করা উচিৎ? সামনে থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাবে? নাকি দাঁড়িয়ে থাকবে? ভাবতে ভাবতেই খেয়াল হলো নিশান্ত আরো একটু এগিয়ে এসেছে।

নিশান্তই প্রথম কথা বললো। এই প্রথম তার কন্ঠস্বর শুনতে পেলো মিহা। মনে হলো গলাটা চেনা। নিশান্ত সালাম দিলো ওকে। মিহার লজ্জা লাগলো ভীষণ। কাজটা ওর আগে করা উচিৎ ছিলো। ভ্যাবলাকান্তের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কি ভাবলো কে জানে? মিহা আস্তে করে উত্তর দিলো। কিন্তু কন্ঠটা শোনালো কাপাকাপা। কোনো অসুস্থ বা বৃদ্ধা যেন সালামের উত্তর নিলো এমন শোনালো। মিহা নিজের কাজে ভীষণ বিরক্ত হলো।

নিশান্ত মিহার কাপাকাপি দেখে হেসে ফেললো। বললো,
“আমি কোনো বাঘ বা ভাল্লুক নই। আমি আপনারই স্বামী। মুখটা তুলুন। দেখুন ঠিক মানুষটা কিনা।”

মিহার থুতনি বুকের সাথে ঠেকে গেছে। নিজেকে স্বাভাবিক করার প্রানপন চেষ্টা করলো। কিন্তু মানুষটাকে দেখলে কেমন আড়ষ্টতা এসে হানা দিচ্ছে।

নিশান্ত শান্ত স্বরে ডাকলো,
“মাহযাবীন।”

মিহা সাথে সাথেই মুখ তুললো। চোখাচোখি হলো দুজনের। এবার আর মিহা মুখ নামালো না। বরং ওর চোখ ছলছল করে উঠলো। কতদিন পর কেউ এই নামটায় ডাকলো। মিহাকে মাহযাবীন বলতো একমাত্র ওর বাবা। বাকি সবাই ওকে মিহা বলেই ডাকে এবং অনেকে ওর মাহযাবীন নামটা জানেও না। অনেকদিন পর আবার কেউ সেই আদুরে কন্ঠে ডাকতেই মিহার বাবার কথা মনে পড়ে গেলো।

নিশান্ত ওর ছলছল করা চোখ দেখে এগিয়ে এলো আরো কিছুটা। দূরত্ব এখন একহাত পরিমান। বললো,
“আপনি কাদছেন মাহযাবীন? আমি কি কোনো ভুল করলাম?”

মিহা নিচের দিকে তাকিয়ে ডানে বামে মাথা নেড়ে বললো,
” না। আসলে বাবার কথা মনে পড়লো। তিনিও আমাকে সবসময় মাহযাবীন বলে ডাকতেন।”

“আজকের দিনে আর মন খারাপ করবেন না প্লিজ। আপনি কষ্ট পেলে আমি আর এই নামে ডাকবো না।”

মিহা মাথা নেড়ে বললো,
“ডাকুন। আমার ভালো লাগবে।”

নিশান্ত নিঃশব্দে হাসলো। শোভা ঠিকই বলেছে। মেয়েটা একটু নরম মনের এবং বোকা।
“আচ্ছা ডাকবো। এবার একটু দেখে বলুনতো রুমটা কেমন সাজানো হয়েছে। বাসর বাসর ফিল হচ্ছে কিনা।”

মিহা আড়ষ্ট ভঙ্গিতে তাকালো একবার চারিদিকে। অল্প বিস্তর ফুলে সাজানো ঘরটা। আসলেই কিছুটা জগাখিচুরি কিন্তু সুন্দর। শোভা বাগানে যত ধরনের ফুল ছিলো তুলে এনেছে। এর মধ্যে কিছু ফুল যে পাশের বাড়ির বাগান থেকে চুরি করা সেটাও বুঝতে পারছে মিহা। এতো ফুল ওদের গাছে ফোটেনি নিশ্চিত।

নিশান্ত এগিয়ে এসে মিহার পাশাপাশি দাড়ালো। বললো,
“চলুন বসে কথা বলি।”

মিহা এবং নিশান্ত খাটের ওপর মুখোমুখি বসলো। মিহা পারলে মাথার ঘোমটা নাক অবধি টেনে রাখে। কি অদ্ভুত লাগছে ওর। লোকটা সেই কখন থেকে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। দেখছেতো দেখছেই। কি কথা বলবে ভেবে পাচ্ছে না মিহা।
নিশান্ত মিহার উশখুশ করতে থাকা মুখটা দেখেও চোখ সরালো না। বরং ওর ভালো লাগছে মেয়েটার ভীতু, লজ্জাবনত চোখদুটো। বললো,

“আমাদের কিন্তু পূর্বেও সাক্ষাৎ হয়েছে। আপনি যে আমাকে চিনতে পারেননি তা আমি বেশ বুঝতে পেরেছি। আমার দিকে তাকান। দেখুন চেনা চেনা লাগছে কিনা।”

মিহা নিশান্তের কথা শুনে চোখ তুলে তাকালো। সবার আগে চোখ গেলো নিশান্তের কালো এবং ঘন ভ্রু জোড়াতে। চেহারার সৌন্দর্য যেন অনেকটাই এই ভ্রু জোড়াতে বিদ্যামান। ক্লিন শেভ করা শুভ্র মুখ, খয়েরী আভা মিশ্রিত ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি। মিহা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে গিয়ে আসল ব্যাপারটাই ভুলে গেলো। সারামুখে চোখ বুলিয়ে মিহার দৃষ্টি যখন নিশান্তের দৃষ্টির সাথে বদল হলো তখন ওর বোধদয় হলো এতোক্ষন কিভাবেই না দেখছিলো। সাথে সাথে মুখ নামিয়ে ঘোমটা আরেকটু টেনে নিলো। মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বললো,

“আপনাকে প্রথম দেখেই চেনা চেনা লেগেছিলো। কিন্তু ঠিক মনে পড়ছে না।”

নিশান্ত ঠোঁটের হাসি বজায় রেখেই বললো,
“হুম.. আচ্ছা যখন মনে পড়বে আমাকে একটা থ্যাংকস দেবেন কিন্তু। আমি একটা ধন্যবাদ পাওনা আপনার থেকে।”

মিহা ভেতরে ভেতরে অধৈর্য হয়ে উঠলো। কোথায় দেখা হয়েছিলো তার সাথে? আর ধন্যবাদ কেনো দেবে? ধন্যবাদ তো দেওয়া হয় উপকার করলে। মিহার এবার নিজের স্মরণ শক্তির ওপর রাগ হলো।

নিশান্ত ওর অস্থিরতা টের পেলো। বললো,
“এতো ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই। এখনতো আমরা এক সাথেই আছি। দেখবেন ঠিক মনে পড়ে যাবে। আর তখন আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।”

মিহা অবাক হয়ে বললো,
“শাস্তি?”

“হুম শাস্তি।”

“ক’কি শাস্তি?”

নিশান্ত একটু হেসে বললো,
“সেটা না হয় আপনার মনে পড়ার পরেই জানবেন। আপাতত সেই কথাটুকু উহ্য থাকুক। এখন আপনার কথা বলুন। আমাদের একে অপরের সাথে এখনো ভালোমতো চেনা জানা হলো না।”

মিহা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে নিশান্তের সাথে। স্মিত হাসি দিয়ে বললো,
“আমার তেমন কিছু বলার মতো নেই। আমি মায়ের একমাত্র মেয়ে। বাবা দুই বছর আগে স্ট্রোক করে মারা গেছেন। বাবার স্মৃতি আকড়ে মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। বাবা নেই কিছুতেই মানতে পারছিলাম না। তখন মামা আমাদের অবস্থা দেখে আমাদের বাড়ি থেকে জোর করে এখানে নিয়ে এসেছে। সেই থেকে মামা বাড়ি থাকছি। এখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। বন্ধুবান্ধব নেই বললেই চলে। আমার প্রিয় বন্ধু এবং বোন একমাত্র শোভা। বাবা বেঁচে থাকতে জীবনে অনেক কিছু করার ইচ্ছা ছিলো। তবে তিনি চলে যাবার পর জীবনের লক্ষ্য বলতে আর তেমন কিছু নেই। বাবার মৃত্যু আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে জীবন অনেকটা ছোট। এবং আপন মানুষগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ছোট জীবনে আমি সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। ব্যস্ততার পেছনে ছুটে জীবন উপভোগ করা ভুলে যেতে চাই না। একটা সুখী সংসারের অধিকারী হতে চাই। সকলের সাথে ভালো থাকতে চাই। অবসরে বারান্দায় বসে আকাশ দেখি, বাগানে গাছদের সাথে সময় কাটাই, বই পড়ি। এইতো। আমার কোনো বিশেষত্ব নেই।”

নিশান্ত এক দৃষ্টিতে মিহাকে পুরোটা সময় দেখে গেলো। মিহা বিছানার মাঝখানে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বানানো লাভ শেইপের দিকে তাকিয়ে পুরো কথাটা বললো। কথা বলার মাঝে দুইবার ঘোমটা পড়ে গিয়েছে। মিহা পুনরায় তা মাথায় উঠিয়েছে। নিশান্ত মিহার থুতনি স্পর্শ করলো। প্রথম স্পর্শ। মিহা কেপে উঠলো। নিশান্ত ওর কম্পন অনুভব করতে পারলো। মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে উঁচু করে বললো,
“সকলকে বিশেষ হতে নেই। কেউ কেউ সাধারণেই অসাধারণ। অনন্য।”

লোকটার কথার সাথে হাসিটাও বড্ড সুন্দর। মিহার ইচ্ছে করে নিশান্তের মুখের দিকে তাকিয়েই থাকে। কিন্তু সেই চোখে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকা দায়। নিশান্ত ওর থুতনি থেকে হাত নামিয়ে নিলো। মিহা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি অবসরে কি করতে ভালোবাসেন?”

“আমি? আমি অবসরেও বেশিরভাগ সময় কাজই করি। কখনো বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের সাথে আড্ডা দেই কিংবা মোবাইলে সময় কাটাই। তবে মাঝে মাঝে মন খুব ভালো থাকলে রান্না করতে ভালোবাসি।”

“রান্না! আপনি রান্না করতে জানেন?”

“জি জানি। মূলত শখের বসেই করি।”

মিহা এবং নিশান্তের আলাপ চললো অনেকক্ষন। বাহিরে মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ কাপিয়ে গর্জন করে বাদল ধারা নামতে শুরু করলো। বিদ্যুৎ চলে গেলো সাথে সাথে। মিহার রুমটা অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া থেকে আটকালো মোমগুলো। সেগুলো ধীরে ধীরে পুরো ঘরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে সোনালি করে তুললো পরিবেশ। সেই ছায়াময় আলোয় নিশান্তের স্থির অথচ মুগ্ধ দৃষ্টি মিহার ওপর নিবদ্ধ রইলো। সোনালি আভায় মিহার অস্তমিত সূর্যের মতো লালাভ মুখটা বেশ আদুরে লাগছে। নাকের ওপর বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে। মেয়েটা এতো লজ্জা পায় কেনো?

মিহার খুব অস্বস্তি হচ্ছিলো। নিশান্তের নজর থেকে বাচতে মিহা উঠে গিয়ে জানালা খুলে দিলো। বৃষ্টির ছাট এবং বাতাস হুড়মুড় করে ঢুকতে লাগলো। আধশেষ মোমবাতিগুলো কেপে উঠলো জোরে। কয়েকটা নিভেও গেলো। তা দেখে মিহা জানালার গ্লাস পুনরায় লাগিয়ে দিতে চাইলো। নিশান্ত উঠে এসে মিহার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে হাত আটকে বাধা দিলো। বাতাসের ঝাপটায় একে একে রুমে আলোর পরিমান কমতে লাগলে মিহা শিউরে উঠলো। বিদ্যুৎ চমকানো সে এমনিতেই ভয় পায়। প্রতিবার বিদ্যুৎ চমকানো এবং মেঘের গর্জনেই মিহা কেপে উঠছে। তার থেকে বেশি কাপছে মিহার হৃদয়। কাপছে পাশের মানুষটার উষ্ণ নিশ্বাসের ফলে। নিশান্ত মিহার পাশ ঘেঁষে দাড়ানোয় ওর নিশ্বাস পড়ছে মিহার ঘাড়ে। মিহা জমে রইলো জানালার পাশে। নিশান্ত মৃদুস্বরে ডাকলো,
“মাহযাবীন।”

মিহা ছোট করে উত্তর দিলো,
“হু।”

“আমি আপনাকে তুমি করে ডাকি?”

“ডাকুন।”

“তুমি কি ভয় পাচ্ছো?”

মিহা কোনো উত্তর দিলো না। ওর মনে হলো নিশান্তের আপনি ডাক থেকে তুমি ডাকটা আরো সুন্দর। খুব বেশি সুন্দর। প্রত্যুত্তর না পেয়ে নিশান্ত মিহার ঘোমটা সরিয়ে ফেললো। মিহা আতকে উঠে সরার আগেই নিশান্ত মিহার খোপায় বেলী ফুলের মালা প্যাচিয়ে দিলো। মিহার বেলীফুল পছন্দ শুনে শোভার আনা বেলীফুল থেকে মালাটা নিজে গেথেছে নিশান্ত। মিহার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো,

“আমি কি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারি মাহযাবীন?”

কথাগুলো শ্রবন হতেই মিহার শরীরে শিহরণ খেলে গেলো। কোনো উত্তর দিতে পারলো না। গলার স্বর কোথাও যেন নিরুদ্দেশ হয়ে গেলো। কাল বৈশাখী ঝড়ের মতো একরাশ অনুভূতি মিহার অন্তরে আছড়ে পড়লো। নিশান্ত মিহার নিরব সম্মতি পেয়ে ওকে নিজের বুকে টেনে নিলো। হঠাৎ মেঘের তীব্র গর্জনে মিহা নিশান্তকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

নিশান্ত ফিসফিস করে বললো,
“আপন করে না নিলে আপনজন হবো কি করে?”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here