#সাইকো_বর
#Writer_Tabassum_Tajnim
#Part _18
আল্লাহয় জানে রিপোর্টে কি আসে,,, খুব চিন্তা হচ্ছে হচ্ছে,,, আরে দূর চিন্তা করে কি হবে। আর আমার তেমন কিছুই হবে না। এতদিন পরে বাইরে বেরুতে পারছি তাও আবার মেঘের সাথে,,, চিন্তা না করে একটু ইনজয় করি। মেঘ গাড়ি চালাচ্ছে,, আমি ওর পাশে বসে আছি। কেউ কেনো কথা বলছি না। অবশ্য আমি কিন্তু কথা না বলে থাকতে পারছি না। মেঘকে দেখছি,, আমি এখনো মনে হয় ওকে ভালো করে চিন্তেই পারি নি,, মাঝে মাঝে মনে হয় ও আমাকে খুব ভালোবাসে,, আবার মাঝে মাঝে মনে হয় একটুও ভালোবাসে না। পুরাই সাইকো। অবশ্য সে যেমনি হোক,, আমি তাকে খুব ভালোবাসি। মেঘকে ছাড়া মনে হয় আমি এক মুহূর্তও থাকতে পারবো না। বোধহয় একটু বেশিই ভালোবাসি। আচ্ছা আমি কি কখনো ওর হাসির কারন হয়েছি?? নাহ্ , কখনো হয় নি। শুধু কষ্টই দিয়েছি। আসলেই তো ও যতবার আমার কাছে আসতে চেয়েছে, আমি তো ততবারই ওকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি। নাহ্,, আজ থেকে আর দূরে সরাবো না। কিন্তু তবুও,,,
মোবাইলটা বাজছে,,, কিন্তু এখন ফোন ধরতে ইচ্ছে করছে না। আমি তো মেঘকেই দেখছি মুগ্ধ হয়ে।
মেঘ— ও হ্যালো ম্যাডাম,,,ফোনটা বাজছে,,রিসিভ করেন? আর কত আমাকে দেখবেন?
অথৈ— তোমাকে দেখার চাইতে বানর দেখা অনেক ভালো।
কথাটা বলেই বাইরের দিকে তাকালাম। ইসসস্ কি লজ্জাটাই না দিলো। এভাবে বলার কি কোনো দরকার ছিলো, হারামি একটা। আবার ফোনটা বেজে উঠলো। মা কল দিয়েছে, কিন্তু কেনো?
হয়তো ওনারা পৌঁছে গেছেন এটা জানাতেই কল দিয়েছেন,, নয়তো ডাক্তার কি বললো তা জানার জন্য। রিসিভ করলাম।
মা— অথৈ,,, ডাক্তার কি বললো??
হুম,, যা ভেবেছিলাম তাই। সত্যি ওনারা আমাকে নিয়ে খুব ভাবেন, খুব ভালোবাসেন,, বড় ভাগ্য করেই জন্মেছিলাম আমি।
অথৈ— রিপোর্ট কালকে দিবে।
মা— ওহ,, একটা ভালো খবর আছে,,তোমার বাবাও রাজি হয়ে গেছেন।
আমি জানতাম রাজি ওনি যে রাজি হবেন। এখন শুধু মেঘকে জানাতে হবে। ওনারা যখন রাজি হয়ে গেছে তাহলে আর মেঘ বাধা দিবে না।কি যে খুশি লাগছে আমার বলে বুঝাতে পারবো না।
মা—আচ্ছা, তাহলে রাখি।
ওপাশ থেকে ফোনটা কেটে দিলো। ওনারা পৌঁছে গেছে নাকি তা তো জিজ্ঞাস করলাম না। অবশ্য পৌঁছে গেছে মনে হয়। আচ্ছা পরে আরেকবার ফোন করে জিজ্ঞাস করে নিবো। আচ্ছা এখন কি মেঘকে বলবো,,,,
হুম বলেই দেই।
আমি ওর দিকে ঘুরলাম। ওর দিকে তাকিয়ে আমার আর বলার সাহস হলো না,,থাক রাতেই বলবো। হঠাৎ গাড়িটা থেমে গেলো। আমি সামনের দিকে ঝুকে পড়লাম, হঠাৎ ব্রেক করাতে।
মেঘ আমাকে ভ্রু কুচকে দেখলো।
মেঘ— কি হয়েছে???
অথৈ— কই,, কিছু হয়নি তো,,,
মেঘ— তাহলে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??
অথৈ—হুহ,, কই তাকিয়ে আছি,, আমি তো,,,,
আমি সত্যি সত্যিই ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।এখন কি বলবো,,
মেঘ— তুমি তো কি???
অথৈ— খাবো,,,
মেঘ একটু আমার কাছে আসলো। তারপর ভ্রু নাচালো।
মেঘ— খাবে!!! এইখানে?? অবশ্য আমার কোনো প্রবলেম নাই।
মেঘ আমার দিকে এগুচ্ছে। আমি মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম।
অথৈ— আমার ক্ষুধা লাগছে,,, খালি উল্টা পাল্টা চিন্তা করো কেন??
মেঘ— ওহ,, তাহলে এইটা বলতে পারো না,, শুধু খাবো বললে যে কেউ এইটাই ভাববে। তা কি খাবে???
কি খাবো!! কি খাবো,, আমার এখন চকলেট খেতে ইচ্ছা করছে। চকলেট খাবো।
অথৈ— চকলেট!!!
মেঘ— কি!!!!
মেঘ মনে হলো আকাশ থেকে পড়ছে,, আমার কথা শুনে।তাতে আমার কি,, আমার এখন চকলেট খেতে ইচ্ছা করছে।
অথৈ— চকলেট,,, আমি চকলেট খাবো।
মেঘ— তুমি এখন চকলেট খাবে??? সত্যি সত্যি!
অথৈ—এখানে সত্যি-মিথ্যের কি হলো??
মেঘ— না মানে,, বুঝি না,, মাঝে মাঝে তোমার আচরনে আমি খুব কনফিউজড হয়ে যায়। সত্যিই তুমি আমাকে একদিন পাগল বানিয়ে দিবে। কি উদ্ভট উদ্ভট বায়না করো!!
অথৈ— ও মা,,, চকলেটেই তো খেতে চায়ছি,,তাই বলে এতো কথা শুনাচ্ছো,,
যাও,, খাবো না,,
কিপটা মানুষ,, একটু চকলেটেই তো খেতে চেয়েছি। এইটা নাকি উদ্ভট বায়না,, ভাগ্যিস দামি কোনো খাবারের কথা বলিনি,, তাহলে না জানি কি বলতো। মেঘের দিকে তাকালাম। একি!!! মেঘ কই?? ওমা,, আমাকে একলা রেখে কই চলে গেলো??
সেই কখন থেকে বসে আছি। প্রায় পনেরো মিনিট,,, কোনো মানে হয়,,একা একা রেখে চলে গেছে,, কোথায় গেলো তাও বলে যায় নি। রাগ হচ্ছে খুব রাগ হচ্ছে। একটা কল দিয়ে দেখি,,, কল দিলাম,
একি মোবাইলটা এখানে রেখে গেছে। দূর,,,
বসে আছি,,, হঠাৎ গাড়ির দরজা খুলার শব্দ হলো। দেখি মেঘ দাড়িয়ে আছে। কিছু বলতে যাচ্ছিলাম কিন্তু ওর হাতের দিকে তাকিয়ে আটকে গেলাম।
চকলেটের বক্স,, তারমানে চকলেট আনতেই গিয়েছিলো। আমার দিকে চকলেটের বক্স টা বাড়িয়ে দিলো। আমি চকলেটের বক্স টা নিতে গিয়ে থেমে গেলাম। এত কিছু শুনিয়ে আবার চকলেট এনে দিয়েছে। খাবো না,, দরকার নাই।
অথৈ— না,,, আমি খাবো না,,,
মেঘ— রিয়েলি,,, থাক তাহলে খেয়ো না।
চোখের সামনে এত্তগুলা চকলেট। আর আমি খাবো না,, তা কি করে হয়,,
আমি তো মেঘের উপর রাগ করছি,, কিন্তু চকলেট খাবো না কেনো??
আর কিছু না ভেবেই চকলেটের বক্সটা খুলে একটা চকলেট খেতে লাগলাম।
অনেকদিন পরে চকলেট খাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। যাই হোক মেঘকে একটা থ্যাংকস দেওয়া দরকার। আরেকটু খেয়ে নেই,, তারপর দিবো। চকলেট টা মুখের কাছে নিতেই,, আমার হাত থেকে প্যাকেট টা টান দিয়ে নিয়ে গেলো। মেঘ,,,,
আমার হাত থেকে নিয়ে ও খেতে লাগলো।
অথৈ— এটা কি হলো?? তুমি নিয়ে নিলে কেনো?
মেঘ— তুমি তো খাবে না,, তাই
নিয়ে নিলাম।
উফফ,, তখন কেনো যে বলতে গেলাম খাবো না,,
চলবে,,,,,